এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • ধ্যান ও  স্নায়ুবিজ্ঞান 

    অরিন লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৬৫০২ বার পঠিত | রেটিং ৩.৮ (৪ জন)
  • | |

     
    গোড়ার কথা: কি, কেন, ইত্যাদি 
     
    এই প্রবন্ধটির আলোচনার বিষয় ধ্যান এবং স্নায়ুবিজ্ঞানএর পারস্পরিক সম্পর্ক, বা বলা যেতে পারে স্নায়ুবিজ্ঞান এর "চোখ" দিয়ে ধ্যানের মতো একটি বিষয়কে বোঝার চেষ্টা করা। আজ অবধি এই বিষয়ে মোটামুটি যা যা জানা হয়েছে ও জানা হচ্ছে তার একটি অতি সংক্ষিপ্ত, হয়তো কিছুটা লঘু ধরণের অবতরণিকা পেশ করা। এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে হঠাৎ করে এইরকম একটি বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে ধ্যান ও স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে দু চার কথা পাড়তে গেলে যা হয়, আপনারা যারা পাঠক আপনাদের কারো কারো মনে হতে পারে যে কোথায় কি নিয়ে গপ্পো? মানে কোথায় ধ্যানের মতো গুরুগম্ভীর ধর্মীয় বিষয়, রীতিমতন সাধারণ ভাবে যার সঙ্গে নানারকমের ধর্ম কর্মের যোগ প্রবল, আর কোথায় নিউরোসায়েন্স, অতি জটিল বিজ্ঞান, বিশেষত মস্তিষ্কের জটিল অন্তর্জগতের হদিস দেওয়া যার কাজ - এই দুটো বিপ্রতীপ বিষয় কি তেল আর জল মেশানোর মতো অসম্ভব ব্যাপার নয়? এখানে আমার উত্তর "না নয় :-) ",  কিন্তু কেন নয়, ক্রমশ প্রকাশ্য । 
     
    এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিজ্ঞান অতি জটিল বিষয়, এবং অনেকেই হয়তো ভাবেন যে যাদের ও বিষয়ে ব্যুৎপত্তি নেই, তাদের পক্ষে ও বিষয় না যায় বোঝা, না যায় বোঝানো । তার থেকে অপেক্ষাকৃত ভাবে ধ্যান ব্যাপারটি আপাতভাবে আরেকটু সোজাসাপ্টা ও হাতেকলমে করে দেখা যেতে পারে। এইটা আমার মনে হয়, তাই এই লেখাটিতে প্রথমে ধ্যান ব্যাপারটিকে নিয়ে চর্চা করা যাক। তারপর পর্যায়ক্রমে ধ্যানের সঙ্গে নানান রকমের ব্যবহারিক প্রয়োগ, এই করে আমরা স্নায়ু, মস্তিষ্ক, সেখান থেকে নির্গত সংবেদনাকে ধরার জন্য ইলেক্ট্রোএনকেফালোগ্রাফি (EEG), মস্তিষ্কের অভ্যন্তর দেখার জন্য MRI ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে, কারণ ধ্যান, এবং মনোবিজ্ঞান এবং স্নায়ুবিজ্ঞান ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ের অবতারণা করতে গেলে এই বিষয়সমূহ আসবেই ।
     
    লেখাটার গোড়ায় এখানে একটা কৈফিয়ত দেবার ব্যাপার আছে। সেটা এই যে আমাদের এই আলোচনা কিন্তু ধ্যানের ধর্মীয় দিকগুলো নিয়ে আমরা করব না, আমরা বরং বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখার চেষ্টা করব। তার অর্থ অবশ্য এই নয় যে ধ্যানের ধর্মীয় ব্যাপারটি কম গুরুত্বপূর্ণ, বরং উল্টোটা। ধ্যানের অবশ্যই একটি ধর্মীয় দিক রয়েছে, এবং সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এবং সে দিকটি বিভিন্ন ধর্মের ধ্যানের চর্চায় দেখা যায়। উপনিষদিক ব্রাহ্মণ্যাধৰ্মে যেমন হঠযোগ (বিশেষ করে প্রাণায়াম প্রক্রিয়া ইত্যাদিতে) এবং রাজযোগে ধ্যানের অপরিসীম গুরুত্ব, তেমনি বৌদ্ধধর্মে অনপনসতী (শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রেখে ধ্যান), বা কায়াগত সতী (শরীরের বিভিন্ন অংশে নজর রেখে ধ্যান) বা বিপাসনা (আসলে বলা উচিত বিপস্যনা), তেমনি আবার খ্রীষ্ট ধর্মেও সুপ্রাচীন কাল থেকে ধ্যানের তাৎপর্য রয়েছে (মরু যাজকদের সূত্রে, desert fathers , দেখুন, https://www.contemplativeoutreach.org/the-christian-contemplative-tradition/ ), তেমনি ইসলাম ধর্মেও ধ্যানের  ভূমিকা রয়েছে।  সেইসব জটিল পারমার্থিক বিষয়ের মধ্যে না গিয়ে আমরা আপাতত ধ্যান কি সেই দিকটায় প্রাথমিক মনোনিবেশ করি, কারণ ধ্যান কি ও কত রকমের । এছাড়াও ধ্যান বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যে কতরকমের অদ্ভুত ধারণা আমাদের সমাজে আছে, সে সমস্ত নিয়ে দু একটি কথা আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে নয়। এখানে আরেকবার লিখে রাখা যাক যে  ধ্যান মানেই ধর্ম-কর্মের ব্যাপার নয়, এই ব্যাপারটা স্পষ্ট করে না লিখলে এ আলোচনা এগোনো যাবে না। 
     
    ধ্যান বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা 

    এক কথায় ধ্যান কথার সঙ্গে  মনোনিবেশ বা মনঃসংযোগ ব্যাপারটির একটি যোগাযোগ রয়েছে, যদিও সচরাচর বাংলা ভাষায় ধ্যান কথাটি বললে সেই ব্যাপারটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে না । সে তুলনায় হিন্দি ভাষায় যদি "মন দিন" বলতে হয়, বলা হয় "কৃপয়া ধ্যান দিজিয়ে"। আমরা বাংলা ভাষায় ধ্যান বলতে অনেকটা এইরকম একটা ছবির কথা ভাবি সাধারণত :
     

    (জনৈকা ধ্যানরতা)
     
    ছবিটা "মন দিয়ে" দেখুন । ছবিতে যে মানুষটিকে দেখা যাচ্ছে তাঁর চোখদুটি বন্ধ, দুই হাত দুই হাঁটুতে রেখে, তিনি  বসে আছেন। ধ্যানরত লিখলাম বটে, তিনি কি প্রকৃত পক্ষে ধ্যান করছেন? অস্যার্থ , কারোর এই রকম ছবি দেখে কি বোঝা যায় যে  তিনি সত্যি সত্যি ধ্যান করছেন? সেটা আমরা জানছি কি করে? ধ্যান ব্যাপারটা কি শুধুই হাতের মুদ্রা আর বিশেষ রকম পিঠ টান টান  করে বসে থাকার ব্যাপার? ইনি  ধ্যান আদৌ করছেন কিনা আমরা কিন্তু জানি না, কাজেই যে কেউ তাঁর ধ্যানস্থ অবস্থায় বসে থাকার নানাবিধ ছবি দেখাতে  পারেন (আজকাল বৈদ্যুতিক সামাজিক মাধ্যমের যুগে অনেকেই সেই ধরণের ছবি পেশ করে থাকেন), তা থেকে কিন্তু প্রমাণিত হয় না যে তিনি অভিনয় করছেন, না সত্যিকারের ধ্যান করছেন । আপাত ছবি দেখে যদি সত্যিকারের ধ্যানের কথা ভাবা যায়, তাহলে ভুল হবে । একথা লিখছি কেন?  একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করি । 
     
    চুপটি করে বসে থাকো, কিছু কোরো না
    যেমন ধরুন, ছোট বয়েসে  "চুপটি  করে বসে থাকো, কিচ্ছু করো না" এই কথাটা আমরা হয়তো অনেকেই শুনেছি । কিন্তু এই ব্যাপারটাই, যে কোন কাজ কর্ম না করে চুপ করে বসে থাকার ব্যাপারটি প্রাপ্ত বয়েসে কেমন হয়?   মনে করুন আপনি স্থির হয়ে বসে থাকা মনস্থ করলেন। আরো মনে করুন আপনি স্থির করলেন প্রায় ২০-২৫ মিনিট মতন ঐরকম এক ঠায় একটি চেয়ারে বা আসনে বসে থাকবেন। কাজ কর্ম কিছু করবেন না, শুধু এক জায়গায় চোখ বুজে চুপ করে বসে থাকবেন। প্রথমত ঐরকম করে বসে থাকা, নেহাত সহজ নয়, বা করলেও যেটি অবধারিত ভাবে হবে, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসতে থাকবে, মন যেন জংলী বাঁদরের  মতন, এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে বেড়ায় (বৌদ্ধ ধর্মে এই মনের অবস্থাকে বলে "কপিচিত্ত ", আমরা আপাতত ধর্মকর্ম জাতীয় আলোচনা না করা মনস্থ করেছি, অতএব এ নিয়ে কথা বাড়াবো না)। এখন "কপিচিত্ত " দশা প্রাপ্ত হলে যা হয়, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসে, এক চিন্তা অন্য চিন্তায় মিশে যায় বিস্তর দিবাস্বপ্ন দেখা হয়। বাইরে থেকে আপনাকে দেখলে মনে হবে আপনি বুঝি গভীর ধ্যানে নিমগ্ন, আসলে তা তো নয়। এবং এই ব্যাপারটি ধ্যানও নয় কারণ ধ্যানের অন্যতম শর্ত  মনোনিবেশ করা, সেটি না হলে ধ্যান বলা যাবে না।
     
    এবার আমরা আরেকবার বিষয়টিকে বিবেচনা করে দেখি । এইবার, আবার, বসে থাকার একই ব্যাপার, কিন্তু আগের থেকে এবারের তফাৎ, এবার চোখ বন্ধ করে ও সুখাসনে উপবেশিত হয়ে আপনি "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে একেবারে লাগামহীন অবস্থায় ছেড়ে দেবেন না । অতএব আবার সেই  ব্যাপার, একই রকমের বসার ভঙ্গি, এবারও ২০ মিনিট ঘড়ি ধরে একটি নরম গদিতে ধরুন আসন পিঁড়ি হয়ে বসলেন, বা একটি চেয়ারে বসলেন । চোখ বন্ধ করলেন, এবং , এইবার স্থির করলেন যে "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে লাগামহীন ঘুরতে দেবেন না । এই অবধি তো হল, এখন মনোনিবেশ করবেন কিসে? 
     
    সব ধ্যান একরকম নয় (যে ধরণের ধ্যানের কথা আমরা এই প্রবন্ধে আলোচনা করছি না )
     

    এইখানে দুটি কথা বলার আছে। প্রথমত, মনে করুন মনোনিবেশ করবেন কোনো একটি রূপকল্পনায়, কোনো একটি  শব্দে, বা কোন একটি  মন্ত্রে ।  মহাঋষি মহেশ যোগী বলতেন শব্দের ওপর "ধ্যান দিতে", যাকে এখন বলা হয় transcendental meditation । এই ধরণের ধ্যান করার সময় অন্য কোন কিছুকে মনে স্থান দেওয়া যাবে না । অনেকে তাই এই ধরণের ধ্যান কে চিন্তাশূণ্য ধ্যান বলেন । এই জাতীয় ধ্যান বা মনোনিবেশ আমাদের এই আলোচনার বিষয় নয়, অন্য কোনো সময় একে নিয়ে চর্চা করা যাবে। দ্বিতীয়ত, আমরা যে ধরণের ধ্যান নিয়ে এই প্রবন্ধে আলোচনা করতে চাই তাকে "মুক্ত ধ্যান" (open awareness meditation) বলা যেতে পারে। সে কিরকম ধ্যান? আসছি সে কথায় ।
     
    আমাদের আলোচ্য ধ্যান: মনোনিবেশিত ধ্যান বা Mindfulness Meditation
     
    আগের বারের মতন এবারেও আপনি মনে করুন ২০-২৫ মিনিট সময় নিয়ে ঘড়ি ধরে ধ্যান করতে শুরু করেছেন। এইবার আপনি "মন" দেবেন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি, আপনার নাসারন্ধ্রে শ্বাস নেবার সময় হাওয়া প্রবেশ করছে, শ্বাস নির্গত হচ্ছে ওই পথে, আপনি তার প্রতি মনোনিবেশ করবেন । এবার দেখবেন কিছু পরে পূর্ববর্ণিত কপিচিত্তের কার্যকলাপ শুরু হবে, আপনার মনে নানান রকমের চিন্তাভাবনা আসতে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি সেইসব চিন্তাসমূহ দূরে কোথাও সরিয়ে রাখবেন না, বরং নিজেকে বলুন যে "আমি আর আমার মন আমার চিন্তা এক নয়, অতএব সবিশেষ কৌতূহল নিয়ে তাদের দেখি", এই বলে  নিজের শরীর থেকে মন সরিয়ে নিয়ে কৌতূহল সহকারে এই যে নানান ধরণের চিন্তা মনে আসছে, তাদের দেখতে থাকুন ।  এই ব্যাপারটা মোটেও সহজ নয়, এই কাজটি করতে আপনার সময় লাগবে, ধৈর্য্য লাগবে । আপনার ভাবনাচিন্তা এমন ভাবে  "দেখতে" থাকুন, যেন গ্যালারিতে বসে খেলা বা নাটক দেখছেন । চিন্তার উদয় হওয়া মাত্রই, তাদের একটি নাম দিন, এবং তারপর আবার পুনরায় আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি  মনোনিবেশ করুন। যেমন ধরুন, ধ্যান শুরু করেছেন, শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছেন, এমন সময় মনে একটি চিন্তা উদিত হল  যে অমুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, এখন অবধি করা হয়ে ওঠেনি । সে চিন্তা ভারী প্রবল হয়ে মনে উপস্থিত হল । এখন আপনি ধ্যান করা ছেড়ে উঠে গিয়ে অমুকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা না করে, এই চিন্তাটির যে উদয় হয়েছে, তার প্রতি কৌতূহল প্রকাশ করে মনে মনে নিঃশব্দে নিজেকে বলতে লাগলেন "যোগাযোগ", "যোগাযোগ", এবং একাগ্র মনে আবার শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতি নজর ফিরিয়ে আনলেন । এই ধরণের যে ধ্যান, যেখানে মনোসংযোগ করা হচ্ছে ঠিকই, তবে অন্যান্য ধারণাকে দেখে, তাদের অগ্রাহ্য করা হচ্ছে না, এই ধরণের ধ্যান নিয়ে আমাদের আলোচনা (এর ইংরেজি পরিভাষায় "open awareness meditation" বলা হয়, আমরা বাংলা করে বলতে পারি "মুক্ত চেতনার ধ্যান" ।
     
    আকাশ ও মেঘ 
     
    এবার এখানে একটা ব্যাপার নজর করুন । এই যে পদ্ধতিতে ধ্যানের কথা বলা হচ্ছে, এই যে শ্বাসের প্রতি মন নিবিষ্ট রেখে অন্যান্য যে সমস্ত চিন্তা ভাবনা মনে আসছে তাকে চিহ্নিত করতে থাকছেন, তাতে করে কিন্তু মন থেকে চিন্তা "দূর" করার কোন  ব্যাপার নেই,  মনকে "চিন্তাশূণ্য" করার কোন প্রয়োজন নেই। ক্রমাগত যদি চিন্তা ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের উদয় এবং অস্ত যাওয়া লক্ষ করতে থাকেন , তাহলে একটা ব্যাপার অচিরে বুঝতে পারবেন।  প্রতিবার এই যে চিন্তাভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করতে থাকবেন, এরা একবার করে উদিত হবে, তারপর আবার মিলিয়ে যাবে। ধ্যানের বিভিন্ন ঘরানায় (বিশেষত বিভিন্ন ধর্মে), এর একটা উপমা দেওয়া হয়, এ যেন অনেকটা নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনার মতন ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের পূজা ও প্রার্থনা পর্যায়ের "মাঝে মাঝে তবে দেখা পাই" গানের কথা স্মরণ করলে দেখবেন কবি লিখেছিলেন, "কেন মেঘ আসে হৃদয়-আকাশে তোমারে দেখিতে দেয় না", এও তাই । আপনার হৃদয় একটি আকাশের মতন, সেখানে নানান চিন্তা ভাবনা মেঘের মতন আসে, কিছু সময় যেন ভেসে বেড়ায়, তারপর মিলিয়ে যায় । আপনার মন আকাশ, আর চিন্তা ভাবনা, ধারণাসমূহ মেঘের মতন ভেসে বেড়ায় ।  উপনিষদেও "চিদাকাশ" কথাটির ঐরকম একটি  ধারণা পাওয়া যায় । এই রকম করে, আপনি যতক্ষণ অবধি  ধ্যান করবেন, আপনার মনে একেকবার একেকটি চিন্তা আসতে থাকবে, আপনি তাদের চিহ্নিত করবেন, তারপর আবার ধীরে ধীরে শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মন নিবদ্ধ করতে থাকবেন । কালক্রমে ক্রমশ এলোমেলো চিন্তা ভাবনার মনে আসা যাওয়া কমে আসবে, মন পুরোপুরি শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি নিবদ্ধ হবে। আমি যেভাবে লিখলাম, কথাটা লেখা সহজ, কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি অমন সহজ নয় । বেশ কয়েকদিন নিয়ম করে ধ্যান করতে থাকলে তখন দেখবেন এই ব্যাপারটি হয়তো কিছুটা সম্ভব হবে, তবে সে হতে দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে প্রায় প্রতিদিন কিছুটা সময় ধ্যানে ব্যয় করতে হবে ।

    তার পর লক্ষ  করবেন, মন হয়তো কিছুক্ষন এর জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসে নিবেশিত হয়েছে । তারপর, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান রকমের ব্যাথা বেদনা  সংবেদনা এসে উপস্থিত হবে। আপনি এই অবস্থায় ধ্যান করার অভ্যাসে রণে ভঙ্গ দিতে পারেন, আবার  নাও পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে হয়তো ক্ষণকালের জন্যে আপনার  মনকে শরীরের থেকে "আলাদা" করে নিয়ে ভাবতে শেখাতে হবে যে, এই সাময়িক শারীরিক সংবেদনা নেহাতই শারীরিক ব্যাপার, একে আপাতভাবে শরীরের "হাতেই" ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে । তবে এখানে একটা কথা মনে রাখবেন  বলে সব রকমের শারীরিক সংবেদন উপেক্ষা করার বিষয় নয়, কোনটা করার আর কোনটা নয় ধরে নেওয়া যেতে পারে সে বোধ আপনার রয়েছে । বেশ কিছুক্ষন যদি এইভাবে স্থির থাকেন, তখন দেখবেন ঠিক যেমন প্রাথমিক উড়ো চিন্তাভাবনা গুলো প্রথমে জড়ো হয়ে তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল (অবিশ্যি মিলিয়ে আর গেলো কোথায়, মনের গভীরে কোথাও সে রয়ে গেলো, শুধু আপনাকে আপনার ধ্যান থেকে সরিয়ে দিতে পারল না), এই শারীরিক ব্যাপারগুলো সেইরকম, উদিত হবে, কিছুক্ষন জ্বালাতন করবে, তারপর অস্তমিত হবে। তারপর আবার যখন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করেছেন, তখন আবার অন্য রকমের কিছু মানসিক চিন্তা ভাবনার উদয় এবং অস্ত হতে থাকবে। এরকম চলতেই থাকবে। ব্যাপারটি অনেকটা এইরকম,
     

     
    এখন, এই যে ধরুন মনের মধ্যে একেকটি ভাব চক্রাকারে চলতে থাকছে এবং একে যদি আপনি নিয়ম করে প্রতিনিয়ত ধ্যান করে যেতে থাকেন, বিশেষ করে এই যে নানান রকমের ভাব উদিত হচ্ছে, তা থেকে আপনি নিজেকে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হন, কোনো রকম আলাদা করে ভালো মন্দর বিচারবোধ দিয়ে তাকে না দেখেন, এই ব্যাপারটিই  মনোনিবেশিত ধ্যান যাকে ইংরেজি পরিভাষায় mindfulness meditation বলা হয় । একে যদি  আপনি মাস দুয়েক নিয়ম করে চালিয়ে যেতে সক্ষম হন, আপনি  "নিজের মধ্যে" দুটি ব্যাপার লক্ষ  করবেন :
     এক, আপনার শারীরিক, মানসিক বা চেতনায় যে সমস্ত সংবেদন আসবে, তার কোনটির প্রতি কতটা মনোসংযোগ করবেন, আপনি স্বয়ং তার নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ, ক্রমাগত আস্তে থাকা অনুভূতি গুলো আপনাকে আপনার একাগ্রতা থেকে সরাতে সক্ষম হবে না ।
    দুই, এই যে আপনার বিভিন্ন রকমের অনুভূতি, সে যা হোক, ব্যাথা,  বেদনা,মানসিক উদ্বেগ, বিষন্নতা, প্রতিটির প্রতি আপনার এক ধরণের ঔৎসুক্য বলুন, কৌতূহল বলুন, এমন একটা সম্পর্ক স্থাপিত হবে, যেন আপনি আর তারা আলাদা, আপনি ও আপনার অনুভূতি, আপনার মন এক নয়, ব্যাপারটির  উপলব্ধি হবে  । বিশেষ করে, যত দিন যাবে, তত ক্রমশ নিজের মধ্যে নজর করবেন মনের মধ্যে এক ধরণের পরিবর্তন আসছে  যে আপনি যা ছিলেন, তার তুলনায় আরো অনেক নিস্পৃহ ও শান্ত হয়ে পড়ছেন । আপনাকে বাইরে থেকে দেখলে হয়তো কেউ বুঝতে পারবে না, সে পরিবর্তন অন্তরের পরিবর্তন । আপনার উদ্বেগ, রাগ, একই  কথার চর্বিতচর্বন, এই ধরণের চিন্তা ভাবনা গুলো ক্রমশ কমতে থাকবে  ।  সে ধরণের পরিবর্তন হয়তো আপনি নিয়মিত ধ্যান না করলে হত  না, আর আপনি যদি ধরুন কয়েক সপ্তাহ ধ্যান করা বন্ধ করে দেন, আপনি আবার আপনার পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাবেন ।  এই ব্যাপার গুলো থেকে মনে হতে পারে আপনার অন্তরের যে পরিবর্তন তাতে ধ্যানের একটা প্রভাব রয়েছে ।
     
    স্নায়ুবিজ্ঞানের কথাটা আসছে  কেন?
     
    এই  ব্যাপারগুলো যেহেতু সাধারণ মানুষের মধ্যে লক্ষ করা যায়, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে যে কি কারণে এমন হচ্ছে? তাহলে কি ধ্যান ব্যাপারটি কোন ভাবে আমাদের চেতনায় একটা পরিবর্তন আনছে? তাই যদি হয়, তাহলে তাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে? যেহেতু মস্তিষ্ক এবং চেতনার কথা উঠছে, তাই স্নায়ু এবং সেই সূত্রে স্নায়ুবিজ্ঞানের বিষয়টিও আসছে । সেই সূত্রে যে প্রশ্নগুলো অবধারিত ভাবে আসবে, ধ্যান যদি/হয়ত "কাজ" করে, কিন্ত তার কারণ কি? এখন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন অনেকবার হয়েছে যে প্রামাণ্য তথ্য মিলেছে, কিন্তু তার মূল কারণ কি জানতে বহু সময় পেরিয়েছে । হাতের কাছে চটজলদি  উদাহরণ  ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জন স্নো সাহেবের লন্ডনে  কলেরা মহামারীর প্রতিকার । যখন তিনি প্রতিকার করেছিলেন, তখন কলেরার জীবাণু কি তাই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না,  কলেরার জীবাণু  আবিষ্কার করবেন  ১৮৮৩ তে রবার্ট কখ (তার সঙ্গে অবশ্য কলকাতার একটি যোগাযোগ আছে, এখানে সে সব আলোচনার অবকাশ নেই) । এইরকম আরেকটি আবিষ্কার, অষ্টাদশ শতাব্দীতে, ১৭৪৭ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জেমস লিন্ড স্কার্ভি অসুখের চিকিৎসা করার জন্য এর নাবিকদের লেবু খাবার পরামর্শ দেওয়া ১৯৩৩ সালে চার্লস কিং এর  ভিটামিন সি  আবিষ্কার করবেন । অতএব চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস ঘাঁটলে  এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যেখানে ডাক্তাররা কিছু একটা লক্ষ করছেন, রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছেন, পুরো ছবিটা তৎক্ষণাৎ  জানা যায় না, পরে জানা যাবে ।  এই ধরণের ব্যাপারগুলো কেন্দ্র করে আজকের দিনের  evidence based medicine গড়ে উঠেছে, কাজেই আজকে ধ্যান কেন কাজ করে, তার একেবারে ঠিক মূল্যায়ন যদি আমরা নাও জানি, কাল যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে না, কেউ বলতে পারেন না ।  সে সব পরের কথা, আপাতত যে বিষয়টি নিয়ে শুরু করেছিলাম,তার উত্তর খোঁজা যাক,যে, এই যে মনোনিবেশিত ধ্যান  (mindfulness meditation ) এর কথা আলোচনা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে মনোবিজ্ঞান,  সাইকিয়াট্রি, চিকিৎসা, এমনকি স্নায়ুবিজ্ঞান কে জড়ানোর কারণটি কি? এই ধরণের ব্যাপারগুলো কারা শুরু করেছিলেন এবং কোথা  থেকে শুরু হয়েছিল? 
     
    অন্তত বাংলায় বা বাঙালির পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্নগুলো অবান্তর নয় । কারণ ধ্যান ব্যাপারটা আমরা যতদূর বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ বুঝি তাতে সাধু বা ধরুন, সাধু সন্তদের ভেক ধরে  যারা ধর্মের বা ধর্মের "ব্যবসার" সঙ্গে জড়িত, এই সমস্ত লোকজন লোক দেখানো ধ্যান ইত্যাদি করে থাকেন । দুঃখের বিষয়, এদের সবাই যে সৎ , এমন বলা যাবে না, অনেকেই নানারকম অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার নিয়ে মানুষকে হতচকিত করে ঠকিয়ে দেবার চেষ্টা করেন, শুধু তাই নয়, যুক্তির বদলে, তর্কের বদলে, এরা  চান মানুষ এদের বিশ্বাস করুন, যার জন্য এমনিতেই যুক্তিবাদী লোক এদের ব্যাপারে বিরক্ত , বিশ্বাস করার প্রশ্নই ওঠে না । আরো একটা ব্যাপার রয়েছে । মনে করুন  যদি ধ্যান ব্যাপারটায় মানুষের সত্যি সত্যি মানসিক পরিবর্তন হয়ও, যারা ধর্মের ব্যবসায়ী, তারা ব্যাপারটাকে "ধর্মীয় কীর্তি"  বলে চালিয়ে দেবেন, সে পরিবর্তনের পশ্চাৎপটে নিয়মিত  ধ্যান করার একটা "মনস্তাত্বিক" ব্যাপার আছে, সেই প্রসেস  বা সেই প্রচেষ্টাকে সেভাবে এরা গুরুত্ব দেবেন না । এই সমস্ত নানান কারণে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, যে হঠাৎ মনোবিদ, স্নায়ু বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার, যারা পেশাগত ভাবে বিজ্ঞান চর্চা করেন, এরা  এইসব নিয়ে কেন মাথা ঘামাচ্ছেন । তো এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখতে দুটি ভিন্ন বিষয়ে লিখতে হয়, দুটিই এই ধরণের ধ্যানের সঙ্গে সম্পৃক্ত । স্নায়ুবিজ্ঞানের সূত্রে ধ্যানের তাৎপর্য নিয়ে লেখার আগে ধ্যান ও স্নায়ুগত আরো দুয়েকটা ব্যাপার দেখা যাক:  (১) একটা ধ্যান এবং Flow (জানিনা, বাংলায় ইংরেজির ফ্লো  কথাটিকে হয়তো প্রবাহ বলা যেতে পারে), (২) ধ্যান এবং আধুনিক মনোবিজ্ঞানে ও চিকিৎসায় তার তাৎপর্য ।
     
    (এর পরের পর্বে বাকিটা, চলবে  )
     
     
     
    ---
    তথ্যপঞ্জী 
    ১) Keng SL, Smoski MJ, Robins CJ. Effects of mindfulness on psychological health: a review of empirical studies. Clin Psychol Rev. 2011 Aug;31(6):1041-56. doi: 10.1016/j.cpr.2011.04.006. Epub 2011 May 13. PMID: 21802619; PMCID: PMC3679190
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | |
  • প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৬৫০২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Debasis Bhattacharya | ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৫:৫২534330
  • 'তাহলে শেষতক'-বাবু, 
     
    গুরু আর বিচারক কোত্থেকে পাবে, বিচারকদের অনেক মাইনেকড়ি। বলি কি, কাজটা আপনিই করে দিন। 
  • বিচারক | 103.249.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৭:৪৭534337
  • দেবাশিসবাবু আমায় বিচারকের চেয়ারে অধিষ্ঠিত করায় সম্মানিত বোধ করছি। আশাকরি চন্দ্রবোড়ার মত পাল্টিবাজ বিচারক হব না
  • Debasis Bhattacharya | ০৭ জুলাই ২০২৪ ২০:৩৯534352
  • উনি রাজনীতি বোঝেননা বলে কুসঙ্গে পড়ে বিপথগামী হয়েছেন এবং ভুলভাল আচরণ করছেন, কিন্তু মানুষটা ব্যক্তিগতভাবে খারাপ নন বলেই আমার ব্যক্তিগত ধারণা। চাকরির সূত্রে সামান্য কয়েকবার ওনার কোর্টে হাজিরা দিতে হয়েছে, কথাবার্তা বলতে হয়েছে, এবং আমার পদের দায়িত্ব হিসেবে ওনার নির্দেশ পালনও করতে হয়েছে। কিঞ্চিৎ মেজাজী এবং খেয়ালী, কিন্তু এমনিতে লোক খারাপ নন, এটাই আমার অভিজ্ঞতা। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন