এত উত্তর দিতে গেলে তো মুখে পাথর গজিয়ে যাবে।ঝাঁঝিয়ে ওঠেন। দোষের মধ্যে এই, জিজ্ঞেস করেছিলাম, বঙ্গলক্ষ্মী কবে বন্ধ হল?
তা ত্রিশ বছর?
তিরিশ বছর? আর কোনো কিছু করেননি কেউ?
দেখতেই তো পাচ্ছেন, বন্ধ।
মালিকরা কেউ আসেন না?
এই কথার জবাবেই পাথর গজানো গর্জন।
নয়ের দশকে কলকাতায় ভালো খাবার বাঙালি হোটেল বলতে বৌবাজার চৌমাথার বঙ্গলক্ষ্মী।
মুখে লেগে থাকার মতো পাঁঠার মাংসের ঝোল। ১৯৯৫ এ ১৬ টাকায় চার খণ্ড পাঁঠার মাংস।
তখন কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজের উত্তরদিকের গলিতে স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেল, কলেজ স্ট্রিট মার্কেটে ভবানী ও জগন্নাথ হোটেল, যদুবাবুর বাজারে একটা হোটেল, গড়িয়াহাট মার্কেটে মা তারা আর শিয়ালদহের আহার তখন মাথা তুলছে।
কিন্তু বঙ্গলক্ষ্মী সত্যিকারের লক্ষ্মী।
খাওয়ার জন্য আদর্শ হোটেল।
রাণাঘাটের আদর্শ হিন্দু হোটেল বা বর্ধমানের ব্যানার্জি হোটেল বা আসানসোলের গঙ্গা হোটেল কিংবা শিলিগুড়ির চলন্তিকার সঙ্গে লড়তে পারতো কেবল কলকাতার বঙ্গলক্ষ্মী।
রুই মাছ পোস্তও ছিল অসাধারণ।
কলাপাড়ায় চুড়ো করে ভাত।
কলকাতা বইমেলার সম্পাদক লেখক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বসে বিকেলে আক্ষেপ চলছিল বঙ্গলক্ষ্মী নিয়ে।
দোতলায় বসে কত খেয়েছি।
দোতলায় এখন মুথুট স্বর্ণ ঋণের দোকান।
এখন বহু শত বাঙালি হোটেল, কিন্তু বঙ্গলক্ষ্মীর তুলনীয় কেউ নন।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।