এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ‘সূর্যাস্তের শিল্প’ আর কতদিন দিনের আলো দেখবে ?

    ছন্দক জানা
    আলোচনা | বিবিধ | ০৫ অক্টোবর ২০২০ | ৪৬৫৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • অজন্তার গুহায় চিত্রিত রয়েছে প্রাচীন ভারতের তাঁতশিল্পের উদাহরণ

    ভারতবর্ষের তাঁতশিল্পের ইতিহাস বেদের মতোই প্রাচীন। ভারতের প্রথম তাঁতের উল্লেখ পাওয়া ঋকবেদে ও তারপরে সঙ্গমকাব্যে। প্রাচীন ভারতের বস্ত্র ছিল সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। মিশর থেকে শুরু করে রোম, পারস্য পর্যন্ত রপ্তানি হত ভারতের সুতির কাপড়। প্রধানত গাঙ্গেয় সমতলে বোনা এই হালকা সুতির কাপড়কে রোমানরা তুলনা করত জলভরা মেঘের সাথে। বাংলার তৈরি স্বচ্ছ মসলিনের উপর সোনা ও রত্ন দিয়ে কাজ করা কাপড় রপ্তানি হত ব্যাবিলনে। ভারতে রেশমের প্রচলন ছিল সুতির তুলনায় কম। রেশম বলতে অবশ্য তসর, যা পরিচিত ছিল কৌষেয় নামে। কণিষ্কের সময় চিনের সাথে সিল্ক-রুট চালু হলে ভারতে রেশমের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারতে পশমের প্রচলন তো ছিলই। ইসলামি শাসনের সাথে এল পারস্যের কাপড়। ভারতীয় কাপড়ের সাথে পারস্যের নকশার এক অপূর্ব মেলবন্ধন হল। এইভাবেই ভারতের প্রতিটি প্রান্তে তৈরি হয়েছে নিজস্ব ঘরানার তাঁতশিল্প। প্রত্যেকটি শিল্প তার বুননপদ্ধতি থেকে শুরু করে রঞ্জন পদ্ধতি, সবেতেই স্বতন্ত্র। হাজার হাজার বছর ধরে এই দেশে যে তাঁতশিল্প গড়ে উঠেছে, যা ভারতের গর্ব, তা যে আজ এই দেশের মাটিতে শেষনিশ্বাস ফেলছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মিউজিয়ামে সংরক্ষিত মাত্র ২০০-৩০০ বছর আগের শাড়িতেও যা কারিগরি নৈপুণ্য দেখা যায়, তা বর্তমানের কোনো কাপড়ে খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন।

    ভারতবর্ষে বস্ত্রশিল্পের পতন শুরু হয় ব্রিটিশ আমল থেকে। সপ্তদশ শতাব্দীর পর্যন্ত ভারতীয় বস্ত্র রপ্তানি ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সেইসময় সারা পৃথিবীর ২৫% কাপড় তৈরি হত ভারতে। তাঁতিরা নিজেরাই বাড়িতে উল ও সুতির সুতো কেটে কাপড় তৈরি করত। তারা সরাসরি ব্যাবসার সাথে যুক্ত ছিল। এইসময় ইংল্যান্ড পর্যন্ত ভারতীয় কাপড় রপ্তানি হত। কিন্তু সব বদলে গেল ব্রিটিশ শাসন শুরু হওয়ার পর। ভারতে আধিপত্য বিস্তারের সাথে সাথে তারা এদেশের টেক্সটাইলের উপর একচেটিয়া অধিকার জমায়। ১৭৭০-এর পর তাঁতিদের অত্যন্ত কমদামে ব্রিটিশদের কাছে কাপড় বিক্রি করতে বাধ্য করা হত। কাপড়ের দামও ঠিক করত ব্রিটিশরা। বেশির ভাগ সময় দাম এত কম রাখা হত যে তাঁতিরা খরচের ৮০% দামও তুলতে পারত না। তাঁতিরা যদি কোনোভাবে ডাচ বা ফ্রেঞ্চ ব্যবসায়ীদের কাপড় বিক্রি করত, তাহলে তাদের বন্দি করে চাবকানো হত। শুধু তাই নয়, ভারতীয় কাপড়ের রপ্তানিতে অত্যধিক কর চাপানো হয়। ভারতীয় হাতে তৈরি কাপড় (chintz)-এ বসানো হয় ৮৫% কর এবং মসলিনে ৪৪%, যেখানে ব্রিটিশ কাপড়ে কর ছিল মাত্র ৫%। ১৮২০ সালের মধ্যে ভারতীয় সুতোর দাম হয় বিলাতি সুতোর দ্বিগুণ। তারপর ব্রিটেনে পাওয়ার-লুম চালু হতে দেশের বাজার ছেয়ে যায় বিলাতে তৈরি সস্তার কাপড়ে। ভারতের কাপড় (chintz)-এর সস্তা নকল করে সেটাই আবার ভারতীয়দের বিক্রি করা হত। ১৮৫১ সাল থেকে শুরু হয় টেক্সটাইলের ট্রেড শো, যেখানে প্রদর্শিত হত সারা ভারত থেকে সংগ্রহ করা টেক্সটাইল। সেইসমস্ত স্যাম্পল পাঠানো হত ইংল্যান্ডের আর্ট স্কুলে। সেখানে এই টেক্সটাইল নকল করা হত ইউরোপীয় বাজারের উপযোগী করে। যা এদেশের ব্যবসায়ীরা জানতেও পারত না। এইভাবে বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ভারতীয় টেক্সটাইলের বাজার ২৫% থেকে হয় ২%। এরপর গান্ধিজির নেতৃত্বে স্বদেশি আন্দোলনের সময় খাদির প্রচলন আবার শুরু হলেও, তা ছিল মোটা কাপড়। ভারতের সূক্ষ্ম কাপড় ততদিনে অবলুপ্তির পথে।



    ভারতীয় ও বিদেশী chintz-এর নমুনা

    স্বাধীনতার পর ১৯৫০ সালে হ্যান্ডলুম অ্যাক্টিভিস্ট পুপুল জয়াকার ভারতের লুপ্তপ্রায় হ্যান্ডলুম সেক্টরের খোঁজ করে তাদের পুনরুত্থানের কাজ শুরু করেন। তাঁর সাথে যোগ দেন স্বাধীনতা সংগ্রামী কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের উদ্যোগে ১৯৫২ সালে শুরু হয় ‘অলইন্ডিয়া হ্যান্ডিক্রাফট বোর্ড’। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় হস্তশিল্প ও তাঁতশিল্পের পুনরুত্থান ঘটানো।



    অল ইন্ডিয়া অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রিস প্রদর্শনী, নতুন দিল্লী ১৯৫৪।

    এই তাঁতশিল্প পুনরুত্থানের একটা পরিচিত উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ‘অলইন্ডিয়া হ্যান্ডিক্রাফট বোর্ড’-এর পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা ছিলেন সুভ ঠাকুর। তাঁর নেতৃত্বে নতুন করে শুরু হয় বিষ্ণুপুরের বালুচরি শাড়ির বুনন। আমরা এখন যাকে বালুচরি বলে চিনি তা সবই এইসময় বানানো শুরু হয়। এর সঙ্গে যদিও প্রাচীন বালুচরির মিল খুবই কম। এর প্রধান পরিবর্তন হল বুননপদ্ধতিতে। আগে এই শাড়ি বোনা হত কাতুয়া পদ্ধতিতে, জালা তাঁতে। যা ছিল অনেক সময়সাপেক্ষ। একটা শাড়ি বুনতে সময় লাগত প্রায় একবছর। নকশা হত খুব সূক্ষ্ম আর ঘন। কোনো নকশার মাঝে কাটা দাগ থাকত না। সুভ ঠাকুর যে পদ্ধতি চালু করেন তা হ্যান্ডলুম হলেও নকশা কাটার পদ্ধতি বিদেশি। এই বিদেশি তাঁতের নাম ‘জ্যাকার্ড-লুম’। এতে মাত্র দশদিনে একটা শাড়ি বানানো সম্ভব হলেও নকশার সূক্ষ্মতা কম। এখন যে-কোনো বালুচরির নকশা লক্ষ করলে দেখতে পাবেন তার নকশায় কোনাকুনি ভাবে অনেক কাটা দাগ আছে। বর্তমানে ব্রোকেড জাতীয় যে-কোনো শাড়ি, সে বেনারসি থেকে কাঞ্জিভরম যাই হোক না কেন, সব শাড়ি এই জ্যাকার্ড-লুমেই তৈরি হয়। এখন আবার জ্যাকার্ড-লুম পাওয়ারেও চলে। একটা বোতাম টিপলেই একঘণ্টায় বেনারসি শাড়ি তৈরি।



    প্রাচীন জালা তাঁতে তৈরি বালুচরি শাড়ী। নবাবের হুঁকো খাওয়ার চিত্রের মাঝে আছে পারস্যের নক্সা। তাপি কালেকশান, সুরাট।

    যাই হোক নতুন পদ্ধতি হলেও অল ইন্ডিয়া হ্যান্ডিক্রাফট বোর্ডের কাজে অনেক লুপ্তপ্রায় টেক্সটাইল আবার বানানো শুরু হল। দাম কম হওয়াতে রাজার ঘরের ধন আমাদের মধ্যবিত্তের ঘরেও জায়গা করে নিল। অলইন্ডিয়া হ্যান্ডিক্রাফট বোর্ডের সাথে খুলল সেন্ট্রাল কটেজ ইন্ডাস্ট্রিস এম্পোরা, ন্যাশনাল ক্রাফট মিউজিয়াম এবং উইভারস সারভিস সেন্টার। ১৯৯২ সালে তৈরি হল ‘অল ইন্ডিয়া হ্যান্ডলুম বোর্ড’। যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও যোগ দিল তাঁতশিল্পীদের প্রতিনিধিরা। এখানে তাঁতিরা সরাসরি সরকারি প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করতে পারত। তাদের সুবিধা-অসুবিধা বিচার করে নতুন পলিসি গঠন করা হত।

    হারানো হ্যান্ডলুম ইন্ডাস্ট্রি পুনরুদ্ধারের সাথে সাথে এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল তাঁতিদের উপার্জন বৃদ্ধি করা, আরও দক্ষ তাঁতশিল্পী তৈরি করা, নতুন তাঁত বানানো, তাঁতিদের সস্তায় কাঁচামাল পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। তারা বাজারের চাহিদার অনুযায়ী নতুন পণ্যের উদ্ভাবন করতে সাহায্য করত। নতুন পণ্য যাতে সঠিক বাজারে বিক্রি করা যায় তার দিকেও লক্ষ রাখা হত। শুধু তাই নয় অনেক গ্রামে তারা নতুন হ্যান্ডলুম ক্লাস্টার বানিয়ে দক্ষ কারিগর তৈরি করে, তাদের উপার্জনের পথ তৈরি করত।

    ‘মিনিস্ট্রি অফ টেক্সটাইলে’র অন্তর্গত কলেজ ‘ন্যাশানাল ইন্সটিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি’র ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবছর এই হ্যান্ডলুম ক্লাস্টারে গিয়ে কাজ করে। আমি নিজেও যখন দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলাম, অনেক প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে কাজ করেছি। আমাদের কাজ ছিল এই হ্যান্ডলুম ক্লাস্টারের কাজ নিরীক্ষণ করে তাদের নতুন প্রোডাক্ট ডিজাইন করে দেওয়া। আমরা তাদের প্রচলিত কাজ শিখতাম আর সেই পদ্ধতি ব্যবহার করেই আধুনিক বাজারে বিক্রি করা যাবে এরকম জিনিস বানিয়ে দিতাম। নিফটের দ্বিতীয় বর্ষে আমাদের ছয়জনের একটি দলকে পাঠানো হয় কর্ণাটকের শিমগা জেলার সাগর অঞ্চলের এক গ্রামে। পশ্চিমঘাট পর্বতের উপর জঙ্গলে ঘেরা একটা গ্রাম। গ্রামটি কত পুরোনো তা আন্দাজ করা যায় প্রায় চারশো বছরের পুরোনো দুটি পাথরের মন্দিরা দেখে, যা হয়তো বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সময় তৈরি। এই গ্রামের ক্লাস্টারে মহিলারা চরকায় সুতো বানিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে রং করে তা দিয়ে কাপড়, শাড়ি, চাদর বোনে। এই কাপড় সেলাই করে তারা জামা, পাঞ্জাবি, কুর্তি তৈরি করে। আবার প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করে ব্লক প্রিন্টও করে। কিন্তু ডিজাইনে অভিনবত্ব খুব বেশি ছিল না। আমরা প্রথম দুই সপ্তাহ তাদের সব কাজ শিখলাম। তারপর তাদের শেখালাম এম্ব্রয়ডারির সহজ কিছু পদ্ধতি। আমরা লক্ষ করেছিলাম, গ্রামের সব বাড়ির দেয়ালে খুব সুন্দর ছবি আঁকা আছে। জানা গেল ছবির নাম ‘হাস্যে চিত্তর’। আমরা এম্ব্রয়ডারি ও ব্লক প্রিন্টের নকশা হিসেবে বেছে নিলাম তাদের সব থেকে পরিচিত ছবি। জামার কোথায় কীভাবে নকশা করলে তা আকর্ষণীয় হবে, তা নিয়েও চর্চা হল। হ্যান্ডলুম টেক্সটাইল শুধু শাড়ি বা জামা হিসেবে না রেখে, তা দিয়ে স্কার্ফ, ব্যাগ, ল্যাম্প, ওয়াল হাঙ্গিং, ঘর সাজানোর সরঞ্জাম ও আরও অনেক ছোটোখাটো জিনিস বানানোর খসড়া করা হল। এগুলো মূলত বিদেশি ও শহুরে ক্রেতাদের আকর্ষণের জন্য বানানো। প্রসঙ্গত বর্তমানে দেশের যা হ্যান্ডলুম পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হয়, তার ৫০% হল ঘর সাজানোর জিনিসপত্র।



    ঘরের দেওয়ালে করা হাস্যে চিত্তর। কর্মরত গ্রামের মহিলা তাঁতি ও শিল্পিরা।

    এইরকম সরকারি সংস্থার সাথে সমান তালে কাজ করে চলেছে অনেক বেসরকারি ও ননপ্রফিট সংস্থা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতের সর্বপ্রথম এনজিও ‘বেঙ্গল হোম ইন্ডাস্ট্রিস অ্যাসোসিয়েশন’। এর উদ্যোক্তা ছিলেন স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি। ওনার সাথে সহায়তায় করেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বর্ধমান ও কোচবিহারের মহারাজা। এর উদ্দেশ্য ছিল বাংলার কটেজ ইন্ডাস্ট্রির পুনরুত্থান করা। এনাদের কাজে বাংলার কাঠের ব্লক প্রিন্টের বিশেষ উন্নতি ঘটে। ব্লক প্রিন্টের প্রথম স্কার্ফ ডিজাইন করেছিলেন গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এ ছাড়াও টেরাকোটা, ডোকরা, শোলা ও পাটের হস্তশিল্প আবার বানানো শুরু হয়। এ ছাড়াও ১৯৬৪ সালে কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘ক্রাফট কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া’। ১৯৮১ সালে লায়লা তায়াবজি ও ছয়জন মহিলা মিলে শুরু করেন ‘দস্তকার’। ১৯৮৬ সালে জয়া জেটলির উদ্যোগে শুরু হয় ‘দস্তকারি হাট সমিতি’। এদের প্রতিষ্ঠিত দিল্লি হাট আজ সুপরিচিত হস্তশিল্প বাজার।

    হ্যান্ডলুমের কথা হলে স্বভাবতই মনে আসে ফ্যাশন ডিজাইনারদের কথা। বহুদিন ধরে ভারতীয় ফ্যাশন জগৎ ছিল প্রধানত ব্রাইডাল বা বিয়ের পোশাকসমৃদ্ধ। কিন্তু বিগত দুই দশক ধরে এখানে একটা পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের অনেক ফ্যাশন ডিজাইনার এখন হ্যান্ডলুমের দিকে ঝুঁকছে। হ্যান্ডলুম শাড়ি যেমন আছেই, তার সাথে ডিজাইনাররা হ্যান্ডলুম টেক্সটাইল দিয়ে বানাচ্ছে আধুনিক পোশাক, যা দেশি-বিদেশি নাগরিকের কাছে সমান আকর্ষণীয়। অনিত আরোরা, অনাভিলা মিশ্র, গুরুং শাহ, বিবি রাসেল… কয়েকটি পরিচিত নাম। এই নতুন ডিজাইনারদের কাজের ফলে অনেক তাঁতি বেশি কাজের সুযোগ পাচ্ছে।



    উপাসনায় তাঁতে তৈরি করছি সুতির কাপড়ের স্যাম্পেল।


    উপাসনার বেনারস কালেকশান।

    ২০১১ সালে আমি ইন্টার্নশিপ করি অরভিলের উপাসনা নামের একটি সংস্থায়। এটির প্রতিষ্ঠাতা ও ডিজাইনার হলেন ন্যাশনাল ইন্সিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজির প্রাক্তনী উমা প্রজাপতি। তার প্রধান উদ্যোগ হল কার্পাস চাষিদের দিয়ে কীটনাশকমুক্ত সুতির চাষ করানো। যাতে তারা কম খরচে কার্পাস চাষ করে বেশি দামে বিক্রি করতে পারে। প্রতিবছর বহু কার্পাসচাষি দারিদ্র্যের চাপে আত্মঘাতী হয়। তাদের দারিদ্র্য থেকে বাঁচাতে নতুন জীবিকা দেওয়াই উমার প্রধান উদ্দেশ্য। এ ছাড়াও বেনারসের অনেক বন্ধ তাঁত তারা চালু করে প্রাচীন জরির কাজ আবার শুরু করেছে। মুম্বাই ও দিল্লির ফ্যাশনউইকে থাকছে হ্যান্ডলুম টেক্সটাইল নিয়ে কাজ করা ডিজাইনারদের বিশেষ জায়গা। ২০১৬ সালে দিল্লির এক ফ্যাশনউইকে আমার অংশগ্রহণের সুযোগ হয়। সেখানে একটি দিন শুধু হ্যান্ডলুম ডিজাইনারদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। হয়তো নতুন প্রজন্ম বুঝেছে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন জগতে ভারতের ডিজাইন স্বতন্ত্র রাখতে আমাদের আরও শিকড়ের দিকে ফিরে যেতে হবে।

    কিন্তু এত সরকারি, বেসরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও হ্যান্ডলুম শিল্পের অবস্থার অবনতি ঘটছে কেন? সরকারি বিবরণ অনুযায়ী ভারতে এখন ৫০০ টির বেশি হ্যান্ডলুম ক্লাস্টার রয়েছে এবং প্রায় ২৪ লক্ষ তাঁত। অল ইন্ডিয়া হ্যান্ডলুম সেন্সাস’ অনুযায়ী ১৯৭০ সালে ১২৪ লক্ষ, পরিবার তাঁতশিল্পের সাথে যুক্ত ছিল। ১৯৯৫ সালে তা হয়ে দাঁড়ায় ৬৪ লক্ষ এবং ২০১০ সালে ৪৪ লক্ষ। বর্তমানে ৩১.৪৫ লক্ষ পরিবার তাঁতশিল্পের সাথে যুক্ত আছে। যে হারে এখন তাঁতিদের সংখ্যাই কমছে তাতে বোঝাই যায় হ্যান্ডলুমের ভবিষ্যৎ খুবই আশঙ্কাজনক। এই জন্য দায়ী অনেকাংশেই পাওয়ার-লুম। হ্যান্ডলুমের প্রধান প্রতিযোগী অবশ্যই পাওয়ার-লুম।

    ভারতীয় সরকার হ্যান্ডলুমের বিকাশের জন্য তৎপর হলেও পাওয়ার-লুমের উপর বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। যার ফলে সমস্ত প্রাচীন শাড়ি সহজেই পাওয়ার-লুমে নকল করা হচ্ছে। যা সাধারণ ক্রেতার পক্ষে চেনা খুব সহজ নয়।

    এখানে বলে নেওয়া ভালো, ভারতের সব প্রাচীন টেক্সটাইল কিন্তু শুধুমাত্র হ্যান্ডলুমে তৈরি হয় না। তাতে যুক্ত থাকে অনেক আরও হাতের কাজ। বাগ, আজরাখ বানানো হয় ব্লকপ্রিন্ট করে। কলম দিয়ে হাতে এঁকে তৈরি হয় কলমকারি ও মাতানি পছেড়ি। পাটোলা, ইক্কত, পোচমপল্লি তৈরি হয় এক বিশেষ রকম রঞ্জন প্রক্রিয়ায়। সুতোগুলো এমনভাবে হিসাব করে রং করা হয়, যাতে বোনার সময় ওই রং ঠিক একে অপরের উপর এসে পড়ে নকশা তৈরি করে। বাঁধনি আর বাটিকের কথা তো আমরা সবাই জানি। চিকন, ফুলকারি, কসুতির মতো অসংখ্য সূচিশিল্প আছে যা ভারতীয় টেক্সটাইলকে অন্য সুন্দর করে তোলে। এ ছাড়াও আছে হাতে গিঁট বেঁধে তৈরি করা কাশ্মিরি কার্পেট। এসবই প্রাকৃতিক উপাদানে অনেক সময় নিয়ে তৈরি করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এইসব শিল্পই এখন তৈরি করে ফেলা হচ্ছে মেশিনের সাহায্যে। স্ক্রিনপ্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট আর মেশিন এম্ব্রয়ডারি করা কাপড়ে এখন বাজার ভরতি। প্রাকৃতিক রঙের পরিবর্তে এসেছে রাসায়নিক রং। কটন, সিল্ক ও উলের জায়গায় এসেছে পলিয়েস্টার, ভিস্কস, নাইলন ও অ্যাক্রিলিক। এইসব সস্তার নকলের কাছে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা খুবই কঠিন কাজ।

    এখন আমরা শুধু সরকারের উপর হ্যান্ডলুম রক্ষার দায়িত্ব দিতে পারি না। এর প্রধান দায়িত্ব কিন্তু এসে পড়ে ক্রেতাদের সচেতনার উপর। শিল্পীরা যতই সুন্দর কাপড় তৈরি করুক না কেন, তা যদি বিক্রি না হয়, তাতে শিল্পের আদৌ কোনো উপকার হয় না। আমি ২০১৩ থেকে হ্যান্ডলুম শিল্পের সাথে যুক্ত। দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা সহ দেশের অনেক শহরের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছি। তাতে সব থেকে বেশি যা চোখে পড়েছে তা হল হ্যান্ডলুম সম্পর্কে ক্রেতাদের উদাসীনতা। শাড়ি আসল না নকল তা নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ থাকতে দেখিনি। দেখেতে ভালো আর দামে কম হলেই হল। এমনকি যারা নিজেদের খুব হ্যান্ডলুম-সচেতন মনে করেন, তাঁরাও বেশি দামের চেয়ে কম দামের অনেক জিনিস কেনায় প্রাধান্য দেন। এতে যদিও দোষের কিছু নেই। কিন্তু দামি জিনিস বেশি বিক্রি না হলে শিল্পীরাও তা বানাতে কোনো উৎসাহ পায় না।

    এরপর আছে আমাদের আর-এক অভ্যাস, সবকিছুতে দরদাম করা। দিল্লির দস্তকার প্রদর্শনী দরদাম-বিরোধী। তারা সব দেয়ালে দরদাম-বিরোধী স্লোগান লিখে রাখে। মাইকে বারবার ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করে,যাতে তারা দরদাম না করেন। কিন্তু এত বারণ সত্ত্বেও খুব কম ক্রেতাকেই দেখেছি যারা দরদাম করেন না। এমনকি অনেককে দেখেছি হাতে দুই লক্ষ টাকা দামের লুই ভিঁতো ব্যাগ নিয়ে ঘুরছেন, অথচ দশহাজার টাকার শাড়িতে দুইহাজার টাকা না কমালে কিনতে চান না। এতেই বোঝা যায় আমরা বিদেশি ব্র্যান্ডের অতিসাধারণ একটা ব্যাগ কিনে গর্ব বোধ করলেও, নিজের দেশে র একটা ঐতিহ্যবাহী শাড়ির উপর অতটা শ্রদ্ধা রাখি না। আমরা যখন শপিংমল বা কোনো নামি ব্র্যান্ডের দোকানের যাই, সেখানে দরকষাকষি করতে আমাদের লজ্জা লাগে, কিন্তু একজন গরিব শিল্পীর হাতে তৈরি শিল্পের দাম দিতে গিয়ে দরাদরিটা আমাদের অধিকার মনে হয়।

    আবার ফেরা যাক ডিজাইনারদের কথায়। সব ডিজাইনার যে নৈতিক সততার সাথে ব্যাবসা করে তা নয়। অনেকেই হ্যান্ডলুমকে শুধু ব্যাবসার চোখে দেখে। ধনতান্ত্রিক মানসিকতায় তাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র অর্থ উপার্জন করা। তাতে হ্যান্ডলুমের শুদ্ধতা বজায় থাকল কি না বা তাঁতিরা তাদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক পেল কি না কিছুই যায় আসে না। আবার অনেকে আছেন যাঁরা হয়তো হ্যান্ডলুম ভালোবাসে, কিন্তু প্রথাগত টেক্সটাইলের শিক্ষা নেই। ফলে তারা নিজের অজান্তেই নকল কাপড় বিক্রি করে ফেলে। ২০১৫ সালের একটা ঘটনা বলি, দিল্লির একটি হস্তশিল্প এনজিও-র সাথে প্রদর্শনী করছিলাম। আমার পাশেই এক ব্র্যান্ড তাদের ‘পিচওয়াই’ আঁকা কাপড় ও হস্তশিল্প বিক্রি করছিল। সুন্দর দেখতে বলে বিক্রিও ভালো হচ্ছিল। দুদিন পরে দেখা গেল তারা যা বিক্রি করছে অধিকাংশই ডিজিটাল প্রিন্ট করা। তারা নাথদ্বার থেকে পিচওয়াই শিল্পীদের দিয়ে কিছু ছবি আঁকিয়ে নিয়ে সেগুলোর ডিজিটাল অনুকরণ করে কাপড়ে প্রিন্ট করেছে। জানতে পারার পর এনজিও-র কর্মীরা তাদের স্টলের সামনে ‘ডিজিটাল প্রিন্ট প্রোডাক্ট’ লিখে দিলেও তাতে ক্রেতাদের কোনো ভ্রূক্ষেপ ছিল না। ডিজিটাল প্রিন্ট করে তারা কীভাবে পিচওয়াই-এর মতো লুপ্তপ্রায় শিল্পের ক্ষতি করছে, তা তাদের শেষপর্যন্ত বলে বোঝানো যায়নি।




    এইধরনের নকলের থেকে আসল আলাদা করতে সরকার অনেক ধরনের মার্ক চালু করেছে। সোনার গয়নায় যেমন হলমার্ক হয়, তেমনি টেক্সটাইলের ক্ষেত্রে আছে হ্যান্ডলুম মার্ক, কটন মার্ক, সিল্ক মার্ক, উল মার্ক ইত্যাদি। রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এই মার্ক নিতে হয়। প্র্যত্যেক মার্কে আলাদা কোড করা থাকে, যা থেকে ক্রেতারা আসল নকল যাচাই করতে পারবে। যদি নকল মনে হয় তাহলে ওই কোড দিয়ে সরকারের কাছে অভিযোগও জানানো যায়। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ক্রেতাকে এই মার্ক আছে কি না তা পরীক্ষা করতে দেখিনি। তাই ডিজাইনার ও ব্যবসায়ী কেউই এটাকে কোনো গুরুত্ব দেয় না। এই মার্ক সম্বন্ধে যদি ক্রেতা-সচেতনতা তৈরি করা যায়, তাহলে অনেকটা চাপে পড়েই সকলে এই মার্ক লাগাতে বাধ্য হবে।

    এরই মধ্যে এই বছরে জুলাই মাসের ২৭ তারিখে ‘অল ইন্ডিয়া হ্যান্ডিক্রাফট বোর্ড’ ও ‘অল ইন্ডিয়া হ্যান্ডলুম বোর্ড’ বাতিল করা হয়, সরকারের ‘মিনিমাম গভর্নমেন্ট, ম্যাক্সিমাম গভর্ন্যান্স’ পলিসি বাস্তবায়িত করার জন্য। এই দুই বোর্ড বাতিল করাতে কোনো ক্ষতি হল কি না তাই নিয়ে এখন মতবিরোধ চলছে। অনেকের মতে এতে যে-কোনো হ্যান্ডলুম প্রোজেক্টের অনুমোদন পেতে কম সময় লাগবে ও দুর্নীতি অনেক কম হবে। আবার অনেকে বলছেন তাঁতিরা তাদের অভাব-অভিযোগ জানানোর জায়গা হারাল। বহু প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিগত কয়েক বছরে তাঁতশিল্পের অবস্থার অবনতিই হচ্ছে। হ্যান্ডলুম কাপড় আগে ছিল

    করমুক্ত, এখন তাতে চাপানো হয়েছে ৫% জিএসটি। তাঁতশিল্পে আয় এতই কমে গেছে যে অনেকেই পারিবারিক শিল্প না শিখে অন্য চাকরি করতে চাইছে। এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে এখন প্রয়োজন অনেক সরকারি ভর্তুকি। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ‘অল ইন্ডিয়া হ্যান্ডিক্রাফট বোর্ড’ ও ‘অল ইন্ডিয়া হ্যান্ডলুম বোর্ড’ বাতিল করা কতটা যুক্তিসংগত তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

    শেষে এই বলব, আমরা যারা তাঁতশিল্প ও হস্তশিল্প ভালোবাসি, তারা যদি আর একটু সচেতন হই, যদি আমাদের ভূমিকা ঠিকভাবে পালন করি ও অন্যদের সচেতন করার চেষ্টা করি, তাহলে হয়তো আরও কিছুদিন এই ‘সূর্যাস্তের শিল্প’ দিনের আলো দেখবে।


    http://www.myindiamyglory.com
    https://www.rediff.com/getahead/report/silk-yarns-let-the-baluchari-bewitch-you/20190307.htm
    https://artservice.auroville.org/photos-upasana-market/
    http://collection.cooperhewitt.org/objects/18481811/
    https://www.inditales.com/
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৫ অক্টোবর ২০২০ | ৪৬৫৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কোয়েল Maria | ০৫ অক্টোবর ২০২০ ২৩:০০98089
  • বেশ ইনফর্মেটিভ লেখা। বেশ লাগল পড়ে। আর কাজের ছবি গুল..... উফফ

  • r2h | 73.106.***.*** | ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০০:০০98092
  • কদিন আগেই শর্বরী দত্তর প্রসঙ্গে বিবি রাসেলের নামও উঠেছিল। ফ্যাশন ডিজাইনার গরীব মানুষ গামছা ইত্যাদি কথা হচ্ছিল।

    ভালো লাগলো লেখাটা, ছন্দক লিখুন আরো।

  • রমিত | 202.142.***.*** | ০৬ অক্টোবর ২০২০ ১২:০৫98122
  • খুব ভালো লাগলো পড়ে। সস্তার নকল থেকে ক্রেতাদের বার করে আনতে হবে। কিন্তু ভারতবর্ষ একটা দেশ যদি একটা ভেজাল তেল 40 টাকায় বিক্রি হয় ও আরেকটা খাঁটি তেল 80 টাকায় বিক্রি হয় 76% লোকে জেনেও 40 টাকার তেলটাই কিনবে। উপায় হল ভেজাল টা নিষিদ্ধ করা বা খাঁটি কে ভর্তুকি দেওয়া। এছাড়াও আছে চিনা সুতো, চিনা বেনারসি র উৎপাত। 


    বারাণসী তো এই নকল বেনারসি তে ছেয়ে গেছে। আমি কুলুতে গেছিলাম, ওখানে কুলুর শালের আলাদা g i ট্যাগ আছে, কিন্তু ক্রেতারা সচেতন ই নয় বা জেনেও কমদামি নকলটাই কিনছে, ভাবছে ওই তো গিফট দেবো, কি আছে তাতে। কিন্তু এটা আসল কুলু শালের জন্য ভয়ংকর ব্যাপার, কে বানাবে আর শুধু শুধু আসল শাল যদি কেউ না কেনে। আমার মনে হয় নকলটা থাকাই উচিত নয়, হয়তো আমার কথাটা নাক উঁচু শোনাচ্ছে, কিন্তু সব জিনিসকে নকল করে সবার সাধ্যের মধ্যে আনতে হবে এই দিব্যি কে দিয়েছে। বরং আসল টাকেও পাশাপাশি কিছুটা ভর্তুকি দিতে হবে যাতে অন্তত কিছুটা  বড়ো সখ্যাক লোকের কিনতে পারে।


    আরো সচেতনতা দরকার মানুষের ও সরকারের।

  • Upasana | 103.24.***.*** | ০৬ অক্টোবর ২০২০ ১৭:৫০98132
  • অসাধারণ লেখা এবং রিসার্চ। পৃথিবী ভুলেগেছে আমাদের ভারতবর্ষের ব্রিটিশ এসিস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং ব্রিটিশ রাজ্ এর অধিপত্যের মাইন্ কারন ছিল আমাদের তন্তু এবং হস্ত শিল্প , তৎকালীন 'ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি '। ভারতবর্ষের অবোদান এই শিল্পে এতো বড়ো আকারে যা কহতব্য নয়। কিন্তু আমরা স্বশিন ভারতীয় হিসাব এখন কি করছি এই  শিল্পকলা, আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য কে বাচানোর জন্য ?  

  • হৈমন্তী পাল | 2405:201:8808:bf85:9d79:a2e:4f9f:***:*** | ০৬ অক্টোবর ২০২০ ২২:২৯98146
  • খুব সুন্দর লাগলো পড়ে। অনেক কিছু জানতে পারলাম। আরো ভালো কাপড়ের খবর পড়া র আশায় রইলাম ❤️❤️

  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 2405:201:8008:c82b:819:bb60:642:***:*** | ০৭ অক্টোবর ২০২০ ০৭:৩৭98155
  • খুব ভালো লেগেছে, শাড়ির বা‌ স্টোলের বুনন, ডিজাইন, রং, সুতোর ট্রেড, জরি ইত্যাদি র ফাব্রিকেশন, এবং ট্রাডিশন জিনিস টা যেখানে যা ইনভেন্টেড হচ্ছে, সেই টেস্ট বদলের একটা ছাপ, ট্রেড নেটওয়ার্ক, এ মানে সবটাই প্রচন্ড ইন্টারেস্টিং।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন