দিল্লী প্রবাসীনি বাণীকার ও সংলাপ-লেখিকা অন্বিতার পরিচালিত প্রথম ছবি ‘বুলবুল’ (উচ্চারণবিধি সম্পর্কে নিশ্চিত নই; রোমান হরফে এ ছবির নাম ‘Bulbbul’) নেটফ্লিক্সে রিলিজ করেছে গত চব্বিশে জুন। অন্বিতা বম্বের মূলধারার ছবিতে নবাগতা নন-- লিরিকের পাশাপাশি ডায়লগ লিখে চলেছেন অন্তত দেড় দশক; কেরিয়ার ঠিক আকর্ষণীয় না হলেও খারাপ বলা চলে না, বিশেষ করে গত সাত বছরে এমন কিছু ছবির জন্য উনি কলম ধরেছেন যেগুলি আদ্যন্ত শহুরে, মোটামুটি জনপ্রিয় এবং একধরণের আধুনিক দর্শকমণ্ডলীর কাছে ‘কাল্ট’। ‘বুলবুল’ প্রচারিত হয় ভয়ের ছবি হিসেবে, মুক্তির পাওয়ার পর দেখা যায় ‘ ভয়’-এর ধারণাটি ঠিক ভৌতিক নয়, বরং কিছুটা একাকীত্ব, কিছুটা গার্হস্থ্য-হিংসা, কিছুটা সামাজিক নিপীড়ন-জনিত স্নায়বিক আতঙ্কই ছবির সার। অতিপ্রাকৃত-ও রয়েছে অবশ্য: জমিদারবাড়ির অত্যাচারিতা যুবতী বধূটিকে পুনর্জীবন দান করেন মা কালী, তার শরীরে দেন অলৌকিক ক্ষমতা। ‘ভর’ বা possession-এর ট্রোপটিকে অন্বিতা নিয়ে আসেন নারীবাদের আঙ্গিকে, বার বার রক্ত বা সিঁদুরের মত ঘোর লালফিল্টার ব্যবহার করে বুঝিয়ে দেন উনি প্রকৃত প্রস্তাবে একটি প্রগতিশীল ছবি বানানোর জন্যই কোমর বেঁধেছিলেন। ছবির শেষটি প্রায় দুর্বোধ্য, তবু বোঝা যায় নারীবাদী প্রেতিনী বুলবুল গ্রামের নিপীড়ক পুরুষের রক্তপান করে একধরণের দৈবিক বিচার প্রতিষ্ঠা করল, এবং ছবির একেবারে শেষ দৃশ্যে ফিরে এলো খল জমিদার-স্বামীর ওপর প্রতিশোধ নিতে। এমত ছবিটি দর্শককুলকে আপাতত দুভাগে ভাগ করে দিয়েছে-- প্রথম শিবির তুলে এনেছে অন্বিতার দুর্বল নির্দেশনা, কালপ্রমাদ, মাঝারি অভিনয়, রঙের বেখাপ্পা ব্যবহার এবং চিত্রনাট্যের ্মত কিছু পয়েন্ট। অন্য শিবির জটিলতর প্রতর্কের অবতারণা করেছে-- ভারতীয় মূল ধারার ছবি তো তার জন্মলগ্ন থেকেই ইত্যাকার দোষে দুষ্ট, তবে শুধুশুধু ‘বুলবুল’-কে নিয়ে টানাটানির অর্থ কী? এই গোষ্ঠীর একাংশের মতে, এই কঠিন সময়ে এরকম বৈপ্লবিক, অতি-প্রগতিশীল বিষয়ে ছবি বানানোর সাহসটুকু দেখানোর জন্যই বুলবুলের শত দোষ মার্জনীয়। যদিও কিছুটা সরলীকরণ করলাম, তবু এই মতভেদের মডেলটির মধ্যে একধরণের তাত্ত্বিক চিন্তাভাবনার খোরাক পাওয়া যায়। বুলবুল-- নারীবাদী প্রগতিশীলতার দিক দিয়ে-- সত্যিই কি বৈপ্লবিক? এর উত্তর খুঁজতে গেলে প্রথমে তাকাতে হয় ‘হিন্দী-পপুলার’-এর চালচিত্রে বুলবুলের অবস্থানের দিকে, যেটা মোটামুটি বুঝে ফেললেই আমরা ছবিটির ‘revolutionary-claim’ সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যাবো।
কিন্তু তার আগে কয়েকটি কথা বলা জরুরি বলে মনে হয়, কারণ, নানাবিধ কারণে এই মিতায়তন লেখাটি প্রথাগত ‘ফিল্ম রিভিউ’ নয়। এক, এ লেখায় কিছু তত্ত্ব, সমাজদর্শন আর ইতিহাসের অনুপ্রবেশ ঘটেছে, কারণ রিলিজের পর ক’সপ্তাহ কেটে যাওয়ায় যে কোনো ছবির অভিঘাত-ই কিছু ‘তাত্ত্বিক বিশোধন’-এর মধ্য দিয়ে আসতে পারে; তাতে ছবিটিকে তলিয়ে বুঝতে সুবিধা হয়। দুই, নানা বিতর্কের ফলে ‘ বুলবুল’ সোশাল মিডিয়ায় যে প্রভূত জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তারপর তার গল্প, কুশীলব, এমনকি সাহিত্যগুণ সম্পর্কে বিশদে বলার অর্থ কেঁচেগণ্ডূষ করা-- পাঠক/পাঠিকা ও বিষয়ে জ্ঞাতব্য সবই জানেন। আমি সেসব ছেড়ে মূলত দুটি পয়েন্টে কথা বলতে চাই। এক, একটি জনপ্রিয় ভারতীয় ছবি হিসেবে বুলবুলের সময়গত অবস্থান; দুই, বুলবুলের (অ-)রাজনীতি। বন্ধনীর ব্যবহার সচেতনভাবেই করলাম, আশা করি সঠিক সময়ে বুঝিয়ে বলতে পারবো। অনেক পাঠকের কাছেই যা ত্যাজ্য, সেই ‘উন্নাসিক বিভাষা (jargon)’র ব্যবহার আমি যতটা সম্ভব পরিহার করেছি; বরং কঠিন জিনিসের কিছু অতি-সংক্ষিপ্ত, সহজ ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা গেল। “ সে বড় কঠিন কর্ম, সে বড় মুশকিল/ লাগে যন্ত্রপাতি লাগে লেবারের স্কিল”।
আপনি যদি সোশাল মিডিয়ায় কমবেশি সক্রিয় হ’ন, এবং শহুরে শিক্ষিত বুর্জোয়া সমাজ আপনার বন্ধুতালিকার একটা অংশ জুড়ে থাকেন, তাহলে ইতিমধ্যে আপনার চোখে পড়েছে বুলবুল সম্পর্কিত বিতর্কের একটা মূল দিক-- কালপ্রমাদ। ইতিহাসনিষ্ঠায় বুলবুল ডাহা ফেল, এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটিশিক্ষিত অনেকেই সরব, এবং সেটা অকারণে নয়। চরিত্রগুলি যেন উনিশ শতকের অন্তিমলগ্নে বসবাস করার পক্ষে বড় বেশি আধুনিক। পাঞ্জাবীর কাট থেকে বেনারসি-ব্লাউজ-পেটিকোটের অবাধ ব্যবহার, ঘোমটা বা পর্দার যৎসামান্য চলন, গ্রামের রাস্তায় অতি শৌখিন ফিটন, ফায়ারপ্লেস, খাপছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র, এমন গানের ব্যবহার যা সে সময় লেখাই হয়নি-- এমন বহুবিধ, যেন প্রায় ইচ্ছাকৃত ভ্রান্তিসমূহ আমদানির মাধ্যমে বুলবুল আদতে যা করে, তা কিন্তু ‘ হিন্দি-পপুলার’ -এর একটা কালোত্তর ট্র্যাডিশন। ্মূল ধারার বলিউড যত রিয়ালিজমধর্মী হবে, ততই সে সরে যাবে একটা কল্পবিশ্বের দিকে; তার দাবী হবে বাস্তবানুগ (বুলবুলের প্রথমেই স্ক্রীনে বাণী ফুটে ওঠে-- “বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি”, লগান-এর শুরুতে ভয়েসওভার দাবী করে-- ১৮৯২এর ভারত), কিন্তু আনুগত্য আদতে হবে এক বিচিত্র মিশ্র কালসংস্কৃতির প্রতি। কেন? কারণ, পপুলার ছবি, তার জন্মলগ্ন থেকেই, দায় নিয়েছে ভারতের অতি-জটিল রাজনীতির মুখ্য প্রবক্তা হবার, আবার সে রাজনীতির বিনোদনের যোগান দেবারও বটে।ভারতীয় রাজনীতি-- এবং তার বিনোদনের চাহিদা-- পালটায় প্রতি দশকে, পালটায় তার জননীতি, জনসমর্থন এবং অনুভাগগুলি। সংস্কৃতির এক বিচিত্র নিয়মে অন্তত পঞ্চাশের দশক থেকেই হিন্দি ছবি তাল মিলিয়ে চলছে এই পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে। একে শুধু রাষ্ট্রীয় রাজনীতির অনুগমন বললে ভুল হবে, বরং হিন্দি ছবির রূপান্তর অনেকসময়েই তার সহোদরা-- দেশীয় রাজনীতির সাথে সম্পূর্ণ সমান্তরাল, কখনও কখনও মাসেরও বিলম্ব হয় না, উনিশশো পঁচাত্তরের জরুরী অবস্থার (জুন) বজ্রনির্ঘোষের ক’মাস আগে পরের মধ্যে রিলিজ করে যায় ‘দিওয়ার’ (জানুয়ারী) এবং ‘শোলে’ (অগস্ট)। দুটি ছবিই প্রবল প্রতিষ্ঠানবিরোধী এবং ভিজিল্যান্টিজমের সমর্থক; একপাশে দস্যুরূপী অসুরদলনের রূপকথা, অন্যদিকে সমসাময়িক ধূমায়িত গণ-অসন্তোষের আগুনে হাত সেঁকা। গব্বর সিং আপাত-অরাজনৈতিক, কিন্তু সে কী সত্তরের ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রশক্তির প্রতিভূ নয়? সমাজচ্যুত ‘ভিজিল্যান্টি’র জিতে যাওয়া কি নিছক কল্পনা না দুবছর পরে মিলিজুলি সরকার প্রতিষ্ঠার দ্যোতক?। আবার বছর কেটে যাওয়ার পর যখন জরুরী অবস্থার দাত-নখ কিছুটা ভোঁতা, অমিতাভ বচ্চন হাজির হন সোশাল জাস্টিসের বিপ্রতীপে-- এক নরমস্বভাব শহুরে বুর্জোয়া কবির চরিত্রে (‘কভি কভি’, ১৯৭৬)।রাজনীতি-বিনোদন, বাস্তব-কল্পনা-- এই জাঁতিকলে পড়ে হিন্দি-পপুলারের এক পা রয়ে গেছে রূপকথায়, অন্য পা রূঢ় বাস্তবে। ফল : যেন সালভাদর দালির আঁকা ল্যাগবেগে জিরাফ; জানেনা পরের পদক্ষেপ আকাশে পড়বে, না দেশীয় বাস্তবের মাটিতে। একেই বলা যেতে পারে (অ-)রাজনীতি।
বিষয়টা ভালো করে বুঝে নিন। হিন্দি ছবি একই সাথে প্রবল রাজনৈতিক এবং গভীরভাবে আত্মনিমগ্ন; সে নিজে ভারতীর জনচেতনার প্রবক্তা আবার একইসাথে বাস্তবের সাথে আপাতসম্পর্কবিহীন কল্পজগতের ধ্বজাধারী। অন্যভাবে বললে, রিয়ালিজম আর এসকেপিজমের উদ্ভট মিশেল। এ জিনিস কেন ঘটে তার পূর্ণ সন্তোষজনক উত্তর পণ্ডিতেরা আজও দিতে অপারগ, কিন্তু তাতে করে আমাদের বুল্বুলে ফিরে যাওয়া আটকাবেনা। দমবন্ধ করা পিতৃতন্ত্র, ধর্ষণ, বাল্যবিবাহ, গোপন অনুরাগ-- প্রিমডার্ণ বাংলার এই ‘বাস্তব’ মোটিফগুলির সাথে রয়েছে মূর্তিমান অসমঞ্জস কস্টিউম, গয়না, সংস্কৃতি। বুলবুল সচেতনভাবেই চেষ্টা করে চলেছে দুই শিবিরের কাছে একইরকম গ্রহণযোগ্য হবার, যার একমাত্র পন্থা হচ্ছে এই (অ-)রাজনীতি। আপনি যদি সর্বভারতীয় মেজাজের গোঁড়া দর্শক হ’ন, বুলবুল তার আস্তিনের লাল তাসটি বের করে আপনাকে অভয় দেবে-- ‘তিষ্ঠ ক্ষণকাল। আমার সারা গায়ে অরাজনীতির অভিজ্ঞানচিহ্ন-- চোখ ধাঁধানো শাড়ি গয়না, উচ্চকিত আবহ, সুন্দর স্লো-মোশন, রহস্যময়ী নায়িকা, দৈবশক্তি।’ মোদ্দা কথা, যা যা দেখতে এবং ভালো লাগাতে আপনাকে অভ্যেস করিয়েছেন কে আসিফ থেকে সঞ্জয় বনশালী, সব হাজির। বাস্তব এখানে ব্যাকসিটে। কিন্তু নতুন সহস্রাব্দের নতুন ধারা’র ‘সচেতন’ ছবি হওয়ার দায়-ও রয়েছে ষোলোআনা। ফলে বুলবুলের তাসটি এবারে খেলা হবে একধরণের পপ-নারীবাদের উদ্দেশ্যে-- যৌন স্বাধীনতা, চেতনার উন্মেষ, পৌরুষের মুখোশ উন্মোচন, প্রতিশোধ এবং এজেন্সি-প্রতিষ্ঠা। ‘ সচেতন’ ছবির যুগপুরুষ অনুরাগ কশ্যপ প্রত্যাশিত ভাবেই টুইট করে জানাবেন এটি শতকের শ্রেষ্ঠ ছবি।
ফলে, না, বুলবুল বৈপ্লবিক নয়। তবে নতুন সময়ে হিন্দি ছবির পুরোনো মডেলটির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে ছবিটি বেশ সফল। অন্বিতা অন্তত প্রথম ছবির নিরিখে তেমন সাঙ্ঘাতিক কোনো প্রতিভার ছাপ রাখতে পারেননি, এবং চিত্রনাট্যের ঢিলেঢালা ভাবটির কারণে একটা ছোটো দর্শকগোষ্ঠীর চোখ বারে বারেই চলে যাচ্ছে ওই কালপ্রমাদগুলির দিকে। তাতে করে ছবিটির জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছেনা কোনভাবেই, বরং প্রগতিশীল ভোট বুলবুলের সমর্থনেই ঢলে আছে বেশিরভাগ। তাত্ত্বিক নারীবাদের প্রেক্ষিতে বুলবুল আসলে সমকাল থেকে শতহস্ত দূরেই বিরাজ করে, কারণ ছবিটির লিঙ্গ রাজনীতি আদতে সত্তর দশকীয়। অন্বিতার সাম্যের ধারণা খুবই একমাত্রিক, শরীর যেন বৃহত্তর রাজনীতির বাইরের একটি আলাদা বিষয়, যেন দৈবসাহায্য ছাড়া উত্তরণের পথ নাস্তি, এবং ছবির শেষে ভালো/খারাপের বিভাজন এতটাই চড়া যে সরলমতি দর্শক ছাড়া তার সাথে একাত্ম হওয়া প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে। এখানেও সেই ইচ্ছাপূরণ-- জয়-বীরুর হাতে দুষ্টের দমন, হলভর্তি দর্শকের সমবেত স্বস্তির শ্বাসত্যাগ। নায়কের বলিদান এখানেও আছে, এবং সে বলিদান হিন্দি-পপুলার বৈধতা দিয়েছে সেই সত্তরের দশকেই। তাই শেষ কথা বলার আগে বুঝে নেওয়া জরুরী যে বুলবুলের revolutionary-claim আসলে অক্ষরে অক্ষরে হিন্দি ছবির revolutionary-claim-এর অনুবর্তী। আপনার কি হিন্দি ছবির এই চিরকালীন হাইব্রিড অবস্থানকে বৈপ্লবিক বলে মনে হয়?ব্যালান্স করে চলার অলৌকিক ক্ষমতাটিকে কি র্যাডিকাল বলা চলে? উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে আপনার সমর্থনে হাত তুলবে বেশিরভাগ দর্শক। বাকিদের কথা কে আর কবেই বা শুনেছে!
eimatro bulbbul dekhe uthlam ... sanghatik khaja cinema ... eto sorolikrito cinema je chennai express er kachakachi maaner -- ei cinema ke niye eto nacha nachi korar ki aache ke jaane
শুধু হিন্দি সিনেমা কেন, এই হাইব্রিড অবস্থান বর্তমান বাস্তবের একটি সামাজিক মানসিক অভিজ্ঞানও বটে। আমরা সেক্টর ফাইভে চাকরি করি, পোর্শে চাপি, এক পেগ পানীয় কিনি কারো সারামাসের বেতনের সমপরিমাণে। ওদিকে মা ষষ্ঠীর সুতো থেকে গোমূত্র, পতঞ্জলির করোনানিধন সবেতে প্রবল বিশ্বাস। বুলবুলের বোলবোলাও হবে, আশ্চর্য কী!!
শুধু হিন্দি সিনেমা কেন, এই হাইব্রিড অবস্থান বর্তমান বাস্তবের একটি সামাজিক মানসিক অভিজ্ঞানও বটে। আমরা সেক্টর ফাইভে চাকরি করি, পোর্শে চাপি, এক পেগ পানীয় কিনি কারো সারামাসের বেতনের সমপরিমাণে। ওদিকে মা ষষ্ঠীর সুতো থেকে গোমূত্র, পতঞ্জলির করোনানিধন সবেতে প্রবল বিশ্বাস। বুলবুলের বোলবোলাও হবে, আশ্চর্য কী!!
শুধু হিন্দি সিনেমা কেন, এই হাইব্রিড অবস্থান বর্তমান বাস্তবের একটি সামাজিক মানসিক অভিজ্ঞানও বটে। আমরা সেক্টর ফাইভে চাকরি করি, পোর্শে চাপি, এক পেগ পানীয় কিনি কারো সারামাসের বেতনের সমপরিমাণে। ওদিকে মা ষষ্ঠীর সুতো থেকে গোমূত্র, পতঞ্জলির করোনানিধন সবেতে প্রবল বিশ্বাস। বুলবুলের বোলবোলাও হবে, আশ্চর্য কী!!
শুধু হিন্দি সিনেমা কেন, এই হাইব্রিড অবস্থান বর্তমান বাস্তবের একটি সামাজিক মানসিক অভিজ্ঞানও বটে। আমরা সেক্টর ফাইভে চাকরি করি, পোর্শে চাপি, এক পেগ পানীয় কিনি কারো সারামাসের বেতনের সমপরিমাণে। ওদিকে মা ষষ্ঠীর সুতো থেকে গোমূত্র, পতঞ্জলির করোনানিধন সবেতে প্রবল বিশ্বাস। বুলবুলের বোলবোলাও হবে, আশ্চর্য কী!!
শুধু হিন্দি সিনেমা কেন, এই হাইব্রিড অবস্থান বর্তমান বাস্তবের একটি সামাজিক মানসিক অভিজ্ঞানও বটে। আমরা সেক্টর ফাইভে চাকরি করি, পোর্শে চাপি, এক পেগ পানীয় কিনি কারো সারামাসের বেতনের সমপরিমাণে। ওদিকে মা ষষ্ঠীর সুতো থেকে গোমূত্র, পতঞ্জলির করোনানিধন সবেতে প্রবল বিশ্বাস। বুলবুলের বোলবোলাও হবে, আশ্চর্য কী!!
আমি তো অলৌকিকতা বলতে বুঝি উইলিং সাস্পেনশন অফ ডিসবিলিফ। বুলবুলে তা আছে নাকি ! সুন্দর রূপকথা হয়ে উঠতে পারলে এতো ছ্যা ছ্যা করতাম না।
এ লেখা যে অনেকে পড়ছেন এ-ই যথেষ্ট। যাই হোক, কিছু মতামত এসেছে, তার মধ্যে একটিকে বেছে নিয়ে একটু এক্সপ্লেইন করার চেষ্টা করছি। এটা আমি মূল লেখাতেও বলেছি, হ্যাঁ, বুলবুল একটি হাইব্রিড; বস্তুত শোলে যেমন হাইব্রিড, বুলবুল ঠিক তেমনই হাইব্রিড। হাইব্রিড= প্রগ্রেসিভ+স্ট্যাটাস-কো, যেটাকে আদতে স্ট্যাটাস-কো-ই বলতে হবে কারণ বহু, বহুবার রিপিট হয়ে চলেছে হিন্দি পপুলারের নিরিখে। মজাটা হচ্ছে, এই হাইব্রিড তৈরি হবার জন্য কিরকম উপকরণ লাগবে সেটার রকমফের আছে। বুলবুল নিয়েছে গুচ্ছের উপকরণ-- এখানে পোশাক, ওখানে পরকীয়া, এখানে পুজো আর্চা, ওখানে সংস্কৃতি, সেগুলোকে আবার জোরজার করে ফেমিনিজমের মধ্যে 'ফিট' করানোর চেষ্টা। ফলে ছবিটা কোনো মাত্রাতেই বিশেষ দাগ কাটেনা, খুব সরলীকৃত ব্যাখা দেবার চেষ্টা করে।