এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় - সাক্ষাৎকার (২০০০)

    আর্কাইভ লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৮ মে ২০২০ | ৩০৩০ বার পঠিত

  • বছর কুড়ি আগে কলকাতায় এই সাক্ষাৎকারটি দেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। যিনি সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন তার অনুমতিক্রমে এটি এখানে প্রকাশ করা হল।
    জুন, ২০০০ । কলকাতা ।

    প্র: আপনি লেখা শুরু করেন প্রথম কবে, কীভাবে?

    উঃ এ প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয় যে সমাজের প্রতি এক ধরনের বিতৃষ্ণা থেকে লেখার আগ্রহ জন্মায়। সমাজে চারিদিকে যখন বৈপরীত্য দেখি, যেমন যে লোকটি অপরকে বলছে সৎ হতে সে নিজে অসৎ, যে বলছে মদ খাওয়া কমান সে নিজে মাতাল, এ সব দেখতে দেখতে মনে এমন একটা ক্রোধ জন্মাল, যে সারা পৃথিবীটা কি চিরকাল এমন ভণ্ডামি করেই চলবে। আর আমি সে সময় সরকারি কর্মচারী ছিলাম, ফলে এইসব আরও বেশি চোখে পড়ত। এসবের বিরুদ্ধে কিছু করবার জন্য আমার মনে হল একটি উপায় আছে, সীমিত ক্ষমতার মধ্যে দেখা যাক চেষ্টা করে – সেটি হল স্যাটায়ার – ব্যঙ্গাত্মক লেখা। আমাদের সাহিত্যে ব্যঙ্গাত্মক লেখার একটা রিচ ট্র্যাডিশন আছে, বঙ্কিমচন্দ্র থেকে শুরু করে পরশুরাম অবধি। ইংরেজদের সংস্পর্শে বেশি আসে বাঙালিরা। স্যাটায়ার উইথ টাচ অফ হিউমার – এ ব্যাপারটা ইংরেজদের থেকে এসেছে। তারা এটাকে সুন্দরভাবে ম্যানেজ করতে পেরেছে, অর্থাৎ, সাহিত্য হবে কিন্তু স্লোগান হবে না, তার মধ্যে অনেক সূক্ষ্মতা থাকবে, ভাষা থাকবে, গঠন থাকবে, লেখাপড়া থাকবে। এরকম ধরনের লেখার ইচ্ছে আমার মধ্যে হল।

    সেন্স অফ হিউমার ব্যাপারটা অবশ্য কিছুটা পারিবারিক সূত্রে পেয়েছি। আমাদের ফ্যামিলিতে লোকজন শিক্ষিত ছিলেন, শিক্ষিত বলতে ডিগ্রি ডিপ্লোমা ইত্যাদি দিয়ে যে শিক্ষিত বোঝায় ঠিক তা নয়, একটা ওয়েল ভার্সড, ওয়েল কালচার্ড ব্যাপার ছিল – পড়াশোনা, নাচ, গান, বাজনা, খেলাধুলা সব বিষয়ে চর্চা ছিল। আমার বাবা বলতেন – ইউ মাস্ট নো সামথিং অফ এভরিথিং – সবকিছু অল্প করে হলেও জেনে রাখা ভাল। তিনি খুবই রসিক মানুষ ছিলেন, তার সঙ্গে কথা বললে মানুষ ভুলতে পারত না। উত্তরাধিকার সূত্রে বাবার কিছু জিনিস আমিও পেয়েছি। আমার মামা ছিলেন সেকালের বিখ্যাত উচ্চাঙ্গসংগীত শিল্পী জহর মুখোপাধ্যায়, খেয়াল এবং ঠুংরিতে খুবই পারদর্শী ছিলেন। মাতুল বংশের থেকে পেলাম সংগীতবোধ। এইসব মিলিয়ে আমার মধ্যে একটা জিনিস তৈরি হয়েছিল – এর সঙ্গে ছিল এই অনেককিছুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ, একটা ক্রোধ। এরই বহিঃপ্রকাশ লেখার মাধ্যমে হতে থাকল।

    সে সময় আমি একটা কেমিক্যাল ফার্মে কাজ করতাম কেমিস্ট হিসেবে। যার কাছে আমি রিপোর্ট করতাম সেই ভদ্রলোক আমার প্রথম লেখাটি পড়ে বললেন – ঠিক আছে, চালিয়ে যাও। এই ব্যাপারটা আমার ‘শ্বেতপাথরের টেবিল’-এ আছে, পরিতোষ বলে একটা ছেলে আমার সঙ্গে সিনেমা দেখতে গেছে, পরিতোষের সিনেমা – গল্পটা আছে। ওটা আমার প্রথম লেখা। খুব ছোট একটা ম্যাগাজিনে লেখাটা বেরিয়েছিল। তারপর আমি সেই চাকরি ছেড়ে সরকারি অফিসে যোগ দিই। সরকারি চাকরির শেষের দিকে যখন আবার লেখালেখি শুরু করেছি, তখন গেলাম এক বিখ্যাত সাহিত্য পত্রিকায় লেখা দিতে, ওখানে যখন তিনি এসব দেখেন, তিনি পড়ে বললেন – একটা গল্প ছেপে কি হবে, আপনি বরং একটা ধারাবাহিক লিখুন। তখন আমার ওই ‘জীবিকার সন্ধানে পশ্চিমবঙ্গ’ এক বছর ধারাবাহিকভাবে বেরোল। তারপরে আস্তে আস্তে গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি।


    প্র: আপনি বললেন স্যাটায়ার উইথ টাচ অফ হিউমার নিয়ে, যা কিনা ইংরেজদের থেকে এসেছে, আপনার কি মনে হয় যে আপনি যদি ভারতবর্ষের অন্য কোথাও জন্মগ্রহণ তাহলে এই প্রভাব থেকে বিচ্যুত হয়ে অন্য ধরনের লেখা লিখতেন।

    উঃ তোমার পুরো এলাকায় যদি বন্যা হয়, তাহলে যতই জানালা-দরজা বন্ধ রাখ না কেন দরজার নীচ দিয়ে জল ঢুকবেই। ইংরেজরা তো ছিলেন বিদেশী শাসক, এই শাসক-ইংরেজদের প্রতি আমাদের ঘৃণা থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু ইংরেজি সাহিত্য – তা তো আমাদের শেক্সপিয়রের মতন লেখক উপহার দিয়েছে, বায়রন, শেলি, মিলটন, কিটস, টেনিসন, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, ডিকেন্স, এলিয়ট – এ ভাস্ট গ্যালাক্সি অফ লিটারেচার স্টার্স – এরা তো আসবেনই। এই স্রোত তো আটকানো যাবে না। প্রথমে যেখানেই আসুক সব জায়গাতেই পৌঁছবে। সাহিত্যের ভাষা ভৌগোলিকভাবে যেখানকারই হোক না কেন তা তো কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই চলবে। সুতরাং, আমি যেখানেই থাকি, আমার মাতৃভাষা যাই হোক, এই ছোঁয়া ঠিক লাগবেই। কারণ, একমাত্র একজন লেখকই অনুসন্ধান করেন আর কোথায় কি লেখা হচ্ছে। অবশ্য লেখক যদি কট্টর জাতীয়তাবাদী বা সুইসাইডাল হন – যে, আমার মাতৃভাষা ছাড়া আর কিছু পড়ব না, চর্চা করব না – তিনি তো নিজেকে একটি গন্ডীতে আবদ্ধ করে রেখে স্ট্যাগনেসন এনে ফেলবেন। সুতরাং লিটারেচারই হোক, বা আর্টই হোক, এর ভাষা কিন্তু একটাই, বিশ্বজনীন ভাষা।

    ইংরেজদের সমাজব্যবস্থা, জীবনযাত্রার সঙ্গে আমাদের মেলে না, অতন্ত গত একশো বছরে মিলিত না। আমরা যৌথ পরিবারে থেকেছি, বাবা, মা, মাসিমা, পিসিমা – আমাদের ভ্যালু আলাদা, চিন্তাধারা আলাদা। আবার আমি অনেকসময় বলি, যে আমাদের জীবনে ঘটনা এত কম, আমরা তো টেক্সাসের কাউবয় নই, যে এক্ষুনি ঘোড়া ছুটিয়ে যাব, নানারকম ঘটনা ঘটবে – ফাস্ট কার, ফাস্ট লাইফ, কিস্যু নেই – সেই সকাল, সেই বিকেল, সেই মন্থর গতির জীবন। এখন একটু গতি এসেছে, তাও সে গতি কি রকম, অটোর গতি, টেম্পোর গতি। আমরা তো আর জেট যুগে বাস করি না।

    তাহলে ওদের লিটারেচার থেকে আমরা কি নিতে পারি? একটা জিনিস লক্ষ্য করবে, প্রকৃত সাহিত্য মানুষের যে জিনিসটা নিয়ে কারবার করে, যা তুলে ধরতে চায়, তা হল – এই যে মানুষ, তার একাকীত্ব, তার ভেতরের ফ্রাস্ট্রেশন, নিরন্তর দ্বন্দ্ব, জগৎ ও জগতাতীতের মধ্যে যে নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পাবার চেষ্টা করছে – দিস ইজ এভরিহোয়্যার। কন্টিনেন্টাল লিটারেচার দেখো – মান (Thomas Mann), কামু (Albert Camus), কাফকা (Franz Kafka) – এদের লিটারেচার পড়ো, বা এখনকার সিঙ্গার (Issac Singer) বা মার্কেজ (Gabriel Garcia Marquez) পড়ো, তাঁদের সকলের লেখায় একটা সার্চ আছে – এই সার্চটা কী? না আমি একজন মানুষ, আমি একটা সোসাইটিতে জন্মসূত্রে একটা লাইফস্টাইল পেয়েছি, আমি এটাকে ভেঙে ফেলতে চাই, ভেঙে ফেলে এর বাইরে অনুসন্ধান করতে চাই, এবং সে যখন ভেঙে বেরোতে চাইছে, সে কিসে করে যাবে, একটা ভেহিকল তো চাই, কি ধরে যাবে – সেটা ধরো, প্রেম ধরে বেরোতে চায়। যেমন, মান (Mann) হতাশার হাত ধরে বেরোতে চাইছে – আমার এ পৃথিবীতে কোনো স্থান নেই। কাফকার মতন একজন লেখক, তিনি বললেন – I am metamorphozed – মেটামরফসিস তাঁর শ্রেষ্ঠ গল্প। হল (Radclyffe Hall) হলেন নিঃসঙ্গতার ভক্ত। তাহলে কী হচ্ছে? আমাদের লিটারেচার আর ক্লাসিক্যাল ওয়েস্টার্ন লিটারেচারের কোথাও একটা মিল পাওয়া যাচ্ছে – ঘটনা কম, ফিলসফি বেশি থাকছে। শেক্সপিয়র যে নাটক লিখেছিলেন, তাতে ঘটনা আছে, খুন আছে, কিন্তু বেশির ভাগ ব্যাপারটাই তো দর্শন। যার ফলে শেক্সপিয়র এখনও quotable quotes – একটা কোটেশনের বই দেখো, দেখবে প্রথম কয়েক পাতা শুধু ওনার কোটেশনে ভর্তি। তারপরে দেখবে বাইবেলের কোটেশন। শেষে পাবে জর্জ সান্তিয়ানা (George Santayana) ইত্যাদি লেখক-দার্শনিকদের কোটেশন।

    সাহিত্য – এ এক অদ্ভুত ব্যাপার, এর একটা ইউনিভার্সাল ল্যাঙ্গুয়েজ আছে। এই যে আজকাল হয়েছে না – নানারকমের রান্না, বাঙালি রান্না, পাঞ্জাবি রান্না, পশ্চিমি রান্না, সব শেখায় নানারকম মশলা দিয়ে – তো সাহিত্য রান্নার মশলা কী হবে? মানুষ, তার আশা আকাঙ্খা, প্রেম-প্রীতি-ভালবাসা এবং আল্টিমেটলি – আইদার অ্যাকসেপট্যান্স অর রিজেকশন। লিটারেচার হল একটি সাইকোলজিক্যাল প্রসেস। আমাদের মনের তিনটি স্তর আছে – কনশাস, সাবকনশাস, আনকনশাস। শেষেরটি তো সাধকরা জানার চেষ্টা করেন – যেটা আমার সঙ্গে খেলা করেছে, কিন্তু আমি জানি না, অনেকটা ঈশ্বরের মতন। আর সাবকনশাস – যেটা খেলা করে ঘুমের মধ্যে – আমি যা কিছু পাচ্ছি সব আমার স্টোরড মেমরি থেকে আসছে – কে আমায় কবে অপমান করেছিল, কেউ আমার প্রশংসা করেছিল, কে আমায় ভালোবেসেছিল – সব কিছু মেমরিতে আছে। আর, যখন আমি আমার মনের কনশাস সেক্টরে বসে আমি লিখছি, তখন কিন্তু আমার সাবকনশাস অংশ এগিয়ে এসে হাত ধরছে, আমার কাঁদার কথা নয়, কিন্তু দেখা যাচ্ছে আমি কেঁদে যাচ্ছি আমার সাহিত্য সৃষ্টিতে। মোহিতলাল বলেছিলেন না – যত ব্যথা পাই তত গান গাই, গাঁথি যে সুরের মালা। বিষন্নতা খুব পবিত্র জিনিস, বিষন্নতা মানুষের anchor, বা, খোঁটা। একটা মানুষ হৈ হৈ করে সারা জীবন বেঁচে মারা যেতে পারে, কিন্তু সে যদি একটু পেনসিভ (pensive) হয়, তবে কেমন হবে – তার একটা খোঁটা থাকবে, তাইতে সে বাঁধা থাকবে, সেটা হবে তার কিনোট (keynote)। সে নিজে কখনও বেচাল হবে না, অন্য কাউকে রামমোহন রায়ের মতন বলবে – হেসে নাও দু’দিন বই তো নয়, কার যে কখন সন্ধে হয়।

    এবার ধরো যদি একশো বছরের লিটারেচার দেখো, তাহলে দেখা যাবে যে – সেই সাহিত্য কালজয়ী হয়েছে যাতে মানুষে মানুষে একটা সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে, মানুষের গল্প, মানুষের কাহিনী। দেখা যাবে, যে মানুষটা নষ্ট হয়ে গেছে, যে মানুষটা হত্যা করেছে, যে লোকটা মদ্যপ হয়েছে – তার কাহিনী লোকের কাছে একটা অ্যাডভেঞ্চার-এর মতন। তার সাথেও মানুষ নিজেকে মেলাতে চাইছে। সেই লেখাই লোকের মনে দাগ কাটে যার সঙ্গে মানুষ নিজেকে আইডেন্টিফাই করতে পারে। আমাদের বাংলা সাহিত্যে প্রেমাঙ্কুর আতর্থী নাম একজন লেখক ছিলেন – তিনি ‘মহাস্থবির জাতক’ নাম চার খন্ডে বই লিখেছিলেন। প্রথম খন্ডটি এক কথায় অদ্বিতীয়। তাতে দেখা যায় সেই সময়ের কলকাতা, কলকাতার মানুষ, বয়স্করা পুরোনো ভ্যালুগুলো ধরে রাখতে চাইছেন, অল্পবয়েসীরা সেটাকে ভেঙে ফেলতে চাইছে, সেখানে টিনএজার লাভ আছে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়া আছে – একটা আইডেন্টিফিকেশন হচ্ছে, আমিও চাইছি এরকম হতে, আমি হতে পারছি না কিন্তু আমি যেন চরিত্রের মধ্যে ঢুকে তার সঙ্গে বেড়াচ্ছি। একই কারণে শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত – মোর আর লেস সেম টাইপ। আমরা যারা শাসনে থাকি, শাসন মানে শুধু পারিবারিক শাসন নয়, সামাজিক শাসন, আদর্শের শাসন, ধর্মের শাসন, শিক্ষকমশাইয়ের শাসন, অনুশাসন – নানারকমের শাসন, আমরা যদি ধরি যে আমরা একটা খাঁচার মধ্যে আছি তাহলে তার একটা গার্ড হচ্ছে পিতার শাসন, একটা মাতার স্নেহ, একটা জ্যাঠামশায়ের একটু ইনডালজেন্স, আবার একটা হল মাতুলের একটু ‘আয় না বেরিয়ে আসি’ – এই যে খাঁচা, এগুলোকে সব ভেঙে ফেলা, এই রোমান্টিকতা, এটা মানুষের মধ্যে আছে, ওয়েস্টার্ন মানুষের মধ্যেও আছে, যেমন মার্ক টোয়েনের – অ্যাডভেঞ্চার্স অফ হাকলবেরি ফিন – আমাদেরও মনে হয় ওরকম একটা নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ি, অমন ভাসতে ভাসতে চলে যাই, যেমন ইন্দ্রনাথের সঙ্গে শ্রীকান্ত ভাগলপুরের গঙ্গায় ভাসতে ভাসতে গেছিল। কোথায় যেন একটা মিল – এটার সঙ্গে ওটার – প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর সঙ্গে মার্ক টোয়েনের সঙ্গে শরৎচন্দ্রের। মিলে যাচ্ছে কেন? মানুষগুলো আলাদা, ভাষা আলাদা, জামাকাপড় আলাদা, অর্থনৈতিক জীবনযাত্রা আলাদা, বিশ্বাস আলাদা, ধর্ম আলাদা – কিন্তু মানুষ তো? আমাকেও যদি কেউ ডাইসেকটিং টেবিলে ফেলে কাটে, আর যদি একজন রাশিয়ান বা কানাডিয়ান বা আফ্ৰিকানকে কাটে – দেখবে সেই এক হার্ট, লাংস, সেই ধমনী শিরা রক্ত।

    বন্দুকের খুব মজা আছে, একবার একজন আমার হাতে একটা বন্দুক দিয়ে বলল – ছোঁড়ো। আমি তো সেই ভারী বন্দুক বগলে নিয়ে একেবারে, এমনিই বন্দুকটাই আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। আমাকে বলল সে – ছুঁড়বে কী করে? আমি বললাম – কেন, মারবো দুম করে। উনি বললেন – তাহলেই হবে! দেখো ওই নলের মাথায় একটা মাছি আছে, একটা প্রজেকশন, তুমি ঐটার দিকে তাকিয়ে, ঐটার ওপর নিজের দৃষ্টি রেখে, ইন রিলেশন টু দ্যাট, তোমাকে টার্গেট ঠিক করতে হবে। তা আমায় এরকম বলার পর আমি দুম করে মারলাম, পাঁচিলের ওপর একটা বোতল বসানো ছিল, অন্তত ১০-২০ গজ দূর দিয়ে গুলি বেরিয়ে গেল। আমি বললাম – কি হল? উনি বলেলন – তুমি দিক ঠিক করতে পারো নি। তুমি মাছিটার সাথে অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করতে পারো নি।

    যদি একটি মানুষকে জীবনরূপ রাইফেলের মাছি বলে ধরি, এবং ওটার রেসপেক্টে যদি টার্গেট করি, টু অল হিউম্যান বিইংস – তাহলে দেখা যাবে, বেসিক প্রিন্সিপিলস, বেসিক ভ্যালু, বেসিক বক্তব্য এই যে – আমি মানুষ হয়ে পৃথিবীতে এসেছি, আমি ভালোবাসা চাই, একটু অ্যাটেনশন চাই, আমি পরিবার-পরিজনের মধ্যে থাকতে চাই, লোনলি হয়ে পাহাড়ের মাথায় হয়ত তিনদিন থাকব, কিন্তু আমি নেমে আসবো, আমি আনন্দ করব, আমি বিয়ে করব, আমার সন্তানসন্ততি হবে, আমি গাড়ি চালাবো, আমি yachting করব, আমি আকাশের মাথায় চাঁদ দেখব, আমি সানসেট দেখব, আমি ভাল ভাল দেশ বেড়াতে যাব, আমি পাখির গান শুনব, আমি দুরন্ত নদীর স্রোত দেখব, মন্থর নদীর জলধারার গান শুনব – কিন্তু জীবিকা মানুষকে টেনে টেনে বের করে নিয়ে আসছে, আর প্রতিযোগিতা বলে একটা শব্দ এখন চলছে, যেমন আজই পড়ছিলাম, আমেরিকান সোসাইটিতে – you get some education, land in a good job, earn decent salary, get a wife, live ever happily – এটাই ছিল তো, এখন বলছে – if you get a fat pay package even before you complete your education – তার মানে যাদের মাথা ভাল, প্রযুক্তিবিদ্যায় উন্নত, যেমন কম্পিউটার স্কিল আছে, তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পড়াশোনা বা আরও জানার ইচ্ছা পূর্ণ হবার আগেই, মোটা মোটা টাকা দিচ্ছে, তাদের পরিবারের লোকজন বলছে – লেখাপড়াটা ভাল করে শেষ কর। তারা বলছে – কি দরকার! লেখাপড়া করি তো টাকার জন্যে, সেই টাকাই যদি আগে চলে আসে তাহলে আরও জ্ঞানান্বেষণ করে কি লাভ।

    এখন এই সিস্টেম পৃথিবীতে চলছে। রেসের মাঠে সে সব ঘোড়া দৌড়য় তারাও একসময় আস্তাবলে ফেরত আসে, কিন্তু মানুষ নামক ঘোড়া কখনই দৌড় থেকে ফিরে আসতে চায় না। যারা সমাজের মাথা বা বিজনেস টাইকুন, তারা কিন্তু ঘুমোতে পারে না। সবসময় নানা প্ল্যান তাদের মাথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। হয়ত তারা একটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে কোনোরকমে শরীরটাকে একটু বিশ্রাম দিচ্ছে, কিন্তু তাদের মনের কোনো বিরাম নেই। দে আর হিউম্যান, বাট আল্টিমেটলি দে বিকাম ইনহিউম্যান – সমস্ত ব্যাপারটাকে, সে তার মত করে নিচ্ছে, তার মূল কথা – দৌড়ও, ছোটো, বি এ গুড হর্স ।

    কিন্তু তা হবে কেন, পৃথিবীতে কত সুন্দর সুন্দর ব্যাপার ঈশ্বর তৈরি করে রেখে গেছেন, সূর্য নিভে গেলে চাঁদ জ্বলে ওঠে – তারার সভায় বসে গান গাইতে, উল্কা ছোটে, সুন্দর বাতাস বয়, দিনের পাখি ঘরে ফিরে যায়, রাতের পাখি বেরোয়, কিরকম অ্যারেঞ্জমেন্ট। নায়েগ্রা ফলস গিয়েছিলাম – সন্ধেবেলা আলো জ্বলবে বলে দাঁড়িয়ে আছি, নানারকম আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠছে জলের ধারা, দূর দূর থেকে মানুষ এসেছে টাকা খরচ করে কী দেখতে? দেখতে এসেছে কেমন করে জল পরে! ইন্টারেস্টিং! কোন দেশের মানুষ এসেছে? যে দেশের মানুষ ডলার-পাউন্ড ছাড়া কিছু জানে না, তারাও এসেছে এবং সেখানে দাঁড়িয়ে তারা যেন উদ্ভাসিত, তারা যেন কবি হয়ে গেছে। সেইজন্য পৃথিবীতে আমরা যে জিনিস পেয়ে উদ্ভাসিত, আলোকিত সেগুলো – not in terms of money, but in terms of impulse, in terms of sensation, in terms of revelation – মানুষ তা জানে, কিন্তু এসব সে সিন্দুকে তুলে রেখে দেয়। বলে সে যাবার কালে একবার খুলে দেখবে, আপাততঃ যা পেয়েছি তাতেই চলুক। আমাদের ছেলেবেলায় মনে পড়ে, বাবা বলতেন, এই আজকের দিনে তোমাকে টাকা দেওয়া হল – কলেজ যাবে, বাড়ি ফিরবে একটু কিছু খাবে। ধরুন একটা টাকা দিয়েছেন। তার মানে এক টাকার দিন। সেইটাই নানারকম কায়দায় খরচ করে বাড়ি ফিরে আসা। এখন মানুষও তাই, অনেক রকম তার আছে বটে স্টোরে, কিন্তু একটি মাত্র জিনিস সে বের করে রেখেছে। সেটা হচ্ছে তুমি নিজেকে ভাঙিয়ে টাকা রোজগার করো।

    You just become a check, cash it and live – এই হচ্ছে কথা। জীবনের প্রতি দিন যেন একটি করে চেক, কাউন্টারে ঢুকিয়ে দিচ্ছি, এই করতে করতে আমি তো ফুরিয়ে যাবো। একটা গল্প আছে। একটি লোক, ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ডের, প্রচুর টাকা রোজগার করেছে, এত টাকা রোজগার করেছে যে তার আর টাকার প্রয়োজন নেই। কিন্তু রোজগারের নেশা যায় না। শেষে তিনি একদিন ঠিক করলেন – তিনি আর কিছু করবেন না – আই উইল এনজয় মাই লাইফ। এই বলে তিনি তার বিলাসবহুল কক্ষে বারান্দায় আরামকেদারায় বসেছেন, চারদিক ঝলমলে আলোয় আলোকিত, আর তিনি ভাবছেন, আজ থেকে আমি মুক্ত, আজ থেকে আমি আমার মতন চলব। এমন সময় দেখা গেল কালো পোশাক পরা তিনটে লোক হঠাৎ যেন আকাশ থেকে নেমে এল। এসে বলল – আমরা যমদূত, আপনার সময় হয়ে গেছে, চলুন। লোকটি বলল – সেকি! আমি তো আজ থেকে প্রকৃত বাঁচা বাঁচব ঠিক করেছি, আমাকে কিছু সময় দাও। ওরা বলল – তা তো হবে না, সময় হয়ে গেছে। লোকটি বলল – আমাকে আর একটা দিন সময় দাও, আমি তোমাদের তিনশো কোটি ডলার দিচ্ছি। ওরা হেসে বলল – না আমাদের ওখানে ঘুষটুষ চলে না, চটপট তৈরী হয়ে নাও। লোকটি দাম বাড়িয়ে দিল – ঠিক আছে আমাকে এক মিনিট সময় দাও, আমি এক লক্ষ কোটি ডলার দিচ্ছি। ওরা তা শুনল না, এবং লোকটিকে তুলে নিয়ে রওনা হল। লোকটি তখন আকাশ থেকে পৃথিবীর মানুষের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকল – ওহে বোকার দল, তোমরা মিথ্যেই চেষ্টা করছ, যতই টাকা করো, এক মিনিটও কিনতে পারবে না – পরমায়ু থেকে এক মুহূর্ত সময় কেনার মতন ক্ষমতা তোমাদের নেই, দেখো আমার অবস্থা।

    এই নিয়ে ভারতীয় দর্শনে একটি কথা আছে, সেটা হচ্ছে যে তুমি সবসময় মনে রাখবে যে তুমি খরচ হয়ে যাচ্ছ। তোমার ধনসম্পদ সব লকারে সুরক্ষিত আছে, কিন্তু তোমার সবচেয়ে মূল্যবান যে জিনিস, তোমার পরমায়ুর এক একটি মুহূর্ত, তা কিন্তু খরচ হয়ে যাচ্ছে। মহাকালের প্রতিনিধি আসছেন, দিন শেষ হয়ে গেলে একটি করে দিন তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। ওই যে চেক বইতে থাকে না, এক সময় আসে যখন আর পাঁচটা চেক অবশিষ্ট আছে, সেইরকম একসময় তোমার আর কিছুদিন অবশিষ্ট থাকবে, হয়ত আর কয়েক দিন, বা কয়েক মাস, বা কয়েক বছর। কিন্তু চেক বই-এর সঙ্গে তফাৎ হল যে আর নতুন করে চেক বই অর্ডার দেওয়া যায় না। তখন তাকে বলে দেওয়া হবে যে তোমার এই কটি দিন আছে তুমি ঠিক করো কীভাবে খরচা করবে। মানুষ তখন এমন কোনোভাবে দিনগুলি খরচ করতে চায় যা দিয়ে সে জানতে চায় জীবনের অর্থ কী ? যে কটা দিন বাকি আছে তা খরচ করে এমন একটা কিছু তখন সে পেতে চাইবে যা জীবনের পরম সম্পদ হবে। সেই রাস্তা দিয়ে যেতে চাইবে যেখান দিয়ে গেলে জীবনের শেষকালে গিয়ে বলা যায় – I’ve lived my life, and I can teach others how to live.


    প্র: আপনি যে ধরনের স্যাটায়ার লিখতেন আজকাল আর লেখেন না কেন?

    উঃ তার কারণ হল, আমার মনে হয় এজ অফ হিউমার আগের মতন নেই। এখন মানুষ অনেক বেশি ম্যাটেরিয়ালিস্টিক, দিনে দিনে আরও ব্লান্ট হয়ে যাচ্ছে চিন্তাভাবনা। এখন আপনাকে লিখতে হবে এমন গল্প যা থেকে টিভি-সিরিয়াল হবে, বা সিনেমা হবে – এর থেকে দুঃখের কিছু নেই।

    সব কিছুই তো অনুশীলন করতে হয়। হাঁ করলেই গান বেরোয় না, আবার গান বেরোলেই তা যখন ফিরে আসে কানে তা কি গান হচ্ছে নাকি অন্য কিছু হচ্ছে সেটা বোঝার মতন তো একটা মগজ থাকা চাই। যখন এই বোধটা মানুষের কমতে থাকে তখন সবকিছু খুব লাউড হয়ে যায়। সেই কারণে যে গান এখন বেশি জনপ্রিয় হয়েছে তা বেশি রিদমিক এবং বিট সেখানে – টক্‌ টরা টক্‌ টক্‌ টরা টক্‌, ধুম ধুম। গান সেখানে কিছু নয়। সেখানে শুধু বিট, তাল – খুব খানিকটা ঘেমে টেমে ক্লান্ত হয়ে সব এলিয়ে পড়ল। কিন্তু কেউ যদি আপনাকে একটা কমপ্লিট খেয়াল শোনাতে চায়, আলাপ ও রাগের বিস্তার সহ, কোনো লোকে শুনবে না, হাই তুলবে বা হল ছেড়ে বেরিয়ে যাবে। কারণ, কান তৈরী হয় নি। কান তৈরি হয় কী করে, টেস্ট তৈরি হয় কী করে। আমি একটা অন্য জগৎের কথা বলি, যারা প্রথম বিয়ার খায়, তারা বলে এ কি জঘন্য জিনিস, খাওয়া যায় না। খেতে খেতে যখন টেস্ট এসে যায় তখন বিয়ার ছাড়া অন্য কিছু আর ভাল লাগে না। সে অ্যালকোহলিক হয়ে যায় ধীরে ধীরে। টেস্ট শুধু জিভের আছে তা নয়, মনেরও একটা টেস্ট বাড আছে। সেটাকে খুব সহজে ব্লান্ট করে দেওয়া যায়। সেই ব্লান্ট করার পদ্ধতি মডার্ন মিডিয়ার মাধ্যমে চালু হয়েছে। এখন শুধু গান গাইলে হবে না, কত ডেসিবেলে সেটাকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে শ্রোতাদের মধ্যে সেটা দেখতে হবে। মনে আছে যখন ওসিবিসা (Osibisa) এসেছিল, তখন মূল আকর্ষণ ছিল কত ওয়াট পাওয়ার, কত ডেসিবেল-এর আওয়াজ। আজকাল যারা আসরে গান গাইতে যায় তারা নিজেদের মিউজিক সিস্টেম নিয়ে যায় এবং সেগুলি হাই ওয়াটের হওয়া বাঞ্ছনীয়।


    প্র: মানুষের টেস্ট, রুচি, চিন্তাভাবনা তাহলে কোন দিকে এগোচ্ছে?

    উঃ এশিয়ান ব্লাইন্ড দেখেছ, ওই যে টানলে, নব ঘোরালে পাখনাগুলো খুলে যায়, বাইরের আকাশ দেখা যায়, আবার ইচ্ছেমত কমিয়ে দেওয়া যায়, ওগুলোকে বলে ভেন্ট। তো মানুষের কি হবে জানো, মনের ভেন্টগুলো সব খুলতে ভুলে যাবে, একটা দুটো ভেন্ট খুলবে এবং তার মধ্যে দিয়ে শুধু ঢুকবে টাকা, নানারকম গ্যাডজেট, ভোগের উপাদান ইত্যাদি। এবং সেগুলোকেই মানুষ নানারকম ভাবে দেখতে চাইবে।

    আবার ধরো এখন একটা কথা এসেছে – মানুষ মাইনাস রিলিজিয়ন। মানুষকে ধর্ম থেকে বের করে আনার চেষ্টা। মানুষকে আরও টাফ হতে হবে। একটা দেশ তো দীর্ঘকাল মানুষকে ধর্মের সংস্পর্শে আসতে দেয় নি। ধর্ম বলতে কী? ধর্ম মানে কোনো বড় ব্যাপার নয়। ধর্ম মানে প্রেম, ধর্ম মানে একটা ফিলিংস ফর অল, ধর্ম একটা ডিসিপ্লিন, ধর্ম মনের ভিটামিন। তুমি একা বাঁচবে আর তোমার সামনে একজন মানুষ অসহায়ভাবে পড়ে থাকবে, তুমি তাকে ধাক্কা মেরে চলে যাবে। তাহলে মানুষ আর গাড়ির মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না। এখন যেন যন্ত্রের মানুষ। ইন্টারনেট, ইমেইল, ডটকম – এখানে মানুষ থাকলেও হয় না থাকলেও হয়। টাকা ইচ্ছে করলে ছাপিয়ে নাও, রিজার্ভ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে চলেছে। টাকার শেষ নেই। কিন্তু ভগবান পৃথিবীকে যে সম্পদ দিয়েছেন সেগুলো ভোগ করতে করতে যেদিন ফুরিয়ে যাবে – সেদিন কী করবে মানুষ? পেট্রল ফুরিয়ে গেলে কী হবে? আমাদের শাস্ত্রে বলেছে সভ্যতা একটা পিন্যাকেলে উঠে ডেস্ট্রয়েড হবে। বাঁচতে বাঁচতে আমাদের বাঁচার ওপর একটা বার্থ রাইট জন্মেছে, রাস্তায় চলতে চলতে আমাদের রাস্তার ওপর এমন একটা নির্ভরতা জন্মেছে, আকাশে হয় নীল আকাশ, বা একটু পেঁজা মেঘ, বা একটু সাদা মেঘ, একটু কালো মেঘ, একটু বর্ষণ, বিদ্যুৎ-চমকানি – এর বাইরে কখনও অন্য কিছু হয় নি – এসব দেখে আমাদের মনে হয়েছে এরকমই চলবে। কিন্তু আল্টিমেটলি অন্য কিছু ঘটবে। বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, দেখছেন, অনেকের মতে আমাদের এই সভ্যতার আয়ু দশ হাজার বছর। দশ হাজার বছরের স্প্যানে আমাদের মতন মানুষ কতবার জন্মাচ্ছে, মারা যাচ্ছে। আমাদের এক একটা জীবন, এক একটা পৃথিবী – ষাট, সত্তর, আশি বছরের। আমাদের ইতিহাসই বা কদ্দুর, যতদিনের ইতিহাস লেখা হয়েছে ততদূর। তার আগের কিছু জানা নেই. ভবিষ্যৎ জানা নেই। আমাদের সময়টুকু মহাকালের হিসেবে নাথিং।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৮ মে ২০২০ | ৩০৩০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ভূতো | 2a0b:f4c2:1::***:*** | ২৮ মে ২০২০ ০৮:৫৪93801
  • ভাল লাগল।
  • V Majumder | ২৮ মে ২০২০ ১২:২৭93802
  • কুড়ি বছরে বাঙালি  আত্মার দিক থেকে আরো কতোখানি পিছিয়ে গেছে তা একবার মিলিয়ে নিন।

  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 42.***.*** | ২৮ মে ২০২০ ১৪:২৫93803
  • ২০০০ সালে কোন কাগজে বা ওয়েবসাইটে এই ইনটারভিউ ছাপা হয়েছিল, তারিখ সহ থাকলে ভালো হত।
    আর্কাইভটা গুরুচন্ডালির নিজের হবার চান্স কম, আমার যদ্দূর মনে হয়, ২০০০ সালে গুরুচন্ডালি শুরু হয় নি। এটা যদি পরবাস বা বাংলা লাইভ থেকে নেবা হয়ে থাকে, তাইলে সেটা বলে দেবাই ভালো। বাংলা কন্টেন্ট এর পুনর্মুদ্রন ভালো জিনিস, তবে ঐ আর কি কোথা থেকে কনটেন্টটি পাওয়া গেল, সেটা জানা গেলে ভালো হত। আর্কাইভাল এর সেটা প্রাথমিক শর্ত।

    আর ইনটারভিউটা ঐরকম আর কি, একটা প্রফেটিক ভাবে ভদ্রলোকের কথা বলার, লেখার অভ্যাস ছিল। আধুনিকতা, বিদেশী সাহিত্য প্রসংগে বিতর্কের সময়ে কারো যদি এটা মনে পড়ে থাকে, বা নেহাতই কোইন্সিডেন্স হয় সুন্দর ব্যাপার।

    যাঁরা তর্ক করলেন বা শুনলেন, পুঁচকে লোক হিসেবে তাঁরা প্রত্যেকেই (আমি বাদ দিয়ে) নিজেদের কিছু বক্তব্যের একজন ক্লিয়ারলি গ্র্যান্ড ওল্ড ওয়াইজ ম্যানের বক্তব্য শুনে আনন্দ পাবেন, উৎসাহিত হবেন।

    তবে প্রফেসি (হয়তো কথামৃতর মত করে বলা) আমার কোনদিনই ভালো লাগে নি, এই ধরণের উইসডমে একটা ইনহেরেন্ট হায়ারার্কি আছে, যেটা আমার সিম্পলি পোষায় না। তবে অনেকের পোষায়। এবং সেই জন্যেই সঞ্জীববাবুর বড় দের জন্য বেরোনো, প্রখ্যাত পত্রিকায় বেরোনো লেখাগুলো অসম্ভব পাওয়ারফুল হলেও, আমার ভালো লাগে নি, আই ওয়াজ নেভার ইম্প্রেস্ড। এবং এই যেটা একটা এসেনশিয়ালি নন-অ্যানালিটিকাল অ্যাপ্রোচ, হয় পশ্চিম একদম আলাদা, নয় এই তো সবই এক, সব গোল মত মানববন্ধন। ইত্যাদি এই সব অ্যানালিসিস অর্থহীন।

    একটা মিথই ভাঙে অবশ্য। সেটা হল বাংলা ভাষা চর্চা করার জন্য বিশ্ব সাহিত্য পড়ার কোন দরকার নেই বলে যারা মনে করেন, তাকে একেবারে মেনস্ট্রীমস্য মেনস্ট্রীম লেখকও চ্যালেঞ্জ করছেন এটুকুই পাওয়ার। এমনকি ন্যাশনালিজমও যে পশ্চিম থেকেই শেখা, সেটারও এভিডেন্স প্রায় গোটাটাই, সেটাকে চ্যালেঞ্জ করে স্বল্প পঠিত সাহিত্য। বাংলা এবং অন্যান্য ভাষায়।

    বিদেশী লেখক যে কজনের নাম করলেন, প্রতিটি লেখকের স্পেসিফিসিটি এতটাই বেশি, একটা প্যারাগ্রাফে নাম করার কোনো মানেই হয় না।

    এবং পরের কমেন্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে, পুনরায় কেউ বা কাহারা আবার ছোটোবেলা কে মিস করছেন। তো ভালো, আমাদের কাছ থেকে মার্কেজের নাম শুনে খোচে গিয়ে বাশেভিচ সিংগার আর কাফকা বা মান এর নাম শুনে বা ঘুরে ফিরে মার্কেজ এর নাম শুনলে মজাই লাগে।

    সঞ্জীববাবু লেজেন্ড, তাঁর কাছ থেকে অন্তত লোকে শিখুন। তবে এই ইনটারভিউ পড়ে শেখার মত বিশেষ কিসু নেই। উল্লেখিত লেখকদের লেখা পড়া যেতে পারে, বা সঞ্জীব বাবুর নিজের লেখাও পড়া যেতে পারে, তাঁরা বড় লেখক।

    এক সঙ্গে নাম করার কোনো মানে হয় না, কেন বলছি একটু স্পষ্ট করে বলি। বাশেভিচ সিংগার ইডিশ ভাষায় লিখতেন, সম্ভবত পত্রিকাও চালাতেন, যুদ্ধের পরে আমেরিকায়। মাই ফ্রেন্ড কাফকা বলে একটা হিলারিয়াস গল্প ওনার আছে। বিংশ শতকের যে কোনো ছোটো গল্প কালেকশনে বাশেভিচ সিংগার এর এই এন্ট্রিটি থাকে। আর ঐ ফ্যামিলি মোস্কাট বলে বোধ হয় একটা উপন্যাস ছিল। পোল্যান্ড এর একটি ফ্যামিলির যুদ্ধের পরে কোনো মতে প্যালেস্টাইন এ পালানোর কাহিনী। অনেকেই বলেন টমাস মান এর প্রখ্যাত ফ্যামিলি সাগা বাডেনব্রুক্স এর প্রভাব রয়েছে। কিন্তু একটা কথা বোঝা দরকার জেয়ুইশ স্পেসিফিসিটি এতটাই বেশি বাশেভিচ সিঞ্গার এর লেখায়, যে তার সংগে ব্যবহৃত ভাষাটি মূলত য়িড্ডিশ, তাই তাঁর জগতে, তিনি সত্যিই অনন্য। কিন্তু প্রথম যেটা বোঝা দরকার, সিংগার কিন্তু মূলতঃ কনটেম্পোরারি বিষয়ের জার্নালিস্টিক রাইটার, এমনকি অনুবাদেও মান এর লেখার সৌন্দর্য্যের ধারে কাছেও নেই। আমি আরেকটা উপন্যাস পড়েছিলাম, মনে পড়ছে নাম, ৮০র দশকের শেষের দিকে পড়েছিলাম, এক বান্ধবী যার সঙ্গে শুতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সুযোগ হয় নি, তার বাড়ি থেকে সেটা ঝড়া ছিল বলে মনে হয়ঃ-))) কি নাম সেটা নিউ ইয়র্ক এর এই ডক ইয়ার্ড সিন নিয়ে।

    কাফকা যাকে বলে ক্যাপিটলিজম এর সম্ভবত সবচেয়ে সর্বজনগ্রাহ্য ক্রিটিকটি লিখেছেন, শুধু বাবাকে ভয় পেয়ে আর প্যাচালো গোছের প্রেম করেঃ-)))

    কামু, যিনি কলোনিয়াল এক্সপেরিয়েন্সটাকে স্বীকারই করেন নি, আলজেরিয়ায় থাকা সত্ত্বেও, অস্বীকার করেও প্লেগ লিখে ফেলেছেন, আমি যে এডিশনটি পড়েছি, সেটা বোধ হয় সালিভান এর অনুবাদ।

    আর মার্কেজ বরাবর বলে এসেছে এঁদের সঙ্গে তাঁর প্রচন্ড মিল, আর লিখেছেন সম্পূর্ণ আলাদা এক বা একাধিক বস্তু।

    সঞ্জীববাবুর কাছে এঁরা সকলেই মেটেরিয়ালিজম এর ক্রিটিক, সেটা অনেকটা, এটা বলার মত, এঁরা সকলেই লেখক, মানে মহা মিল আর কি। কিন্তু যে সব স্পেসিফিক হিউম্যান কন্ডিশন আর ইতিহাস এর কথা লিখে গেছেন এঁরা এবং সঞ্জীববাবু, তাতে ইনটারভিউ বা ভাটে দু ছত্তর কেরামতি দেখানো যায় নেম ড্রপ করে, কিন্তু স্পেসিফিসিটি দিয়ে উৎসাহ বর্ধন করা হয় না। আরেকটা করা যায়, আমাদের ছোটোবেলা হা হা বলে হাহাকার। তো সেটা আমি 'আমাদের শান্তিনিকেতন'-এ এত করেছি যে ক্লান্ত লাগে ঃ-)))) বাংলা সাহিত্য চর্চা, ডেফিনিটলি, বাঙালির পাঠের প্রকোষ্ঠিকরন এর থেকে বড়।

    বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 42.***.*** | ২৮ মে ২০২০ ১৪:৩৮93804
  • একটা সেন্টেন্স বাদ পড়ে গেল, মার্কেজের পক্ষে কলোনিয়াল এক্সপেরিয়েন্সকে বাদ দিয়ে লেখা সম্ভব যে হয় নি, যদিও তার উদাহরণ তাঁর বেড়ে ওঠার আমলেও, লাতিন আমেরিকার স্প্যানিশ সাহিত্যেই কম ছিল না, বোরহেস-ই ছিলেন, শুরুর কোর্তাজার-ও ছিলেন। এবং এই যে সম্ভব হয় নি, সেই জন্যেই তিনি তিনি, আর কামু কামু, দুজনের দু রকমের বিশালত্ত্ব। টমাস মান আস্ত ইউরোপের প্রতিফলন, তাঁর কথাই আলাদা। টলস্তয় যদি রাশিয়া হন, মান তাহলে ইউরোপ, কিন্তু তাঁকে হজম করতে হচ্ছে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগেকার, দুটো যুদ্ধের মধ্যের আর এমনকি তার পরের জার্মানি। তিনি যে ডেথ ইন ভেনিস লিখছেন, এটা তাঁর পক্ষে আশ্চর্য্য যন্ত্রনার, তিনি একাধারে উনবিংশ শতকের এবং বিংশ শতকের গ্রেট। তাঁর নিজের সময়ে প্রায় সুর্যের মত একা। এখন এটা ব্লিডিং অবভিয়াস। এটা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় স্পেসিফিক করে বললে পারতেন ঠিকাছে কিন্তু এটা শুধু গোল চিরকালীন মানবতা না। আরো অদ্ভুত হল, এই কয়েকটা নাম বলতে পারা বা একটা সবই মিলে গেছে গোছের পজিশন, আর যাই হোক ২০০০ সাল নাগাদ বাঙালি মননের মহত্ত্বের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে না, তৎঅকালীন উৎকর্ষের অন্য উদাহরণ আছে, হয়ত তর্ক সাপেক্ষে কিছুটা সঞ্জীববাবুর নানা প্রফেসিতে আছে, প্রফেসি এবং এই জাতীয় সিন্থেসিস ইন ওয়ান সেন্স ইজ অ ডিফেন্স অফ দ্য স্টেটাস কুয়ো, সেটা তাঁর উল্লেখিত লেখকরা বেশি ক্ষেত্রেই ভেঙেছেন। বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
  • বোধিসত্ত্ব | 2402:3a80:a5f:1fc:250a:549:8145:***:*** | ২৮ মে ২০২০ ১৫:১৯93807
  • একটা বোধহয় ক্ল্যারিফিকেশন জরুরি, আমি বলেছিলাম, "যাঁরা তর্ক করলেন বা শুনলেন, পুঁচকে লোক হিসেবে তাঁরা প্রত্যেকেই(আমি বাদ দিয়ে) নিজেদের কিছু বক্তব্যের একজন ক্লিয়ারলি গ্র্যান্ড ওল্ড ওয়াইজ ম্যানের বক্তব্য শুনে আনন্দ পাবেন, উৎসাহিত হবেন।"
    আমার যোগ করা উচিত ওজন, আয়তন, প্যান্টের বেড়, ঘাড়ে পাউডার এর পরিমাণ ছাড়া সব কিছুতেই আমি প্রকৃত অর্থেই পুঁচকে। 'আমি ছাড়া' কথাটি বলার অর্থ আমি মতে বিশেষ মিল পাইনি এই প্রখ্যাত লেখক এর সঙ্গে। এই সাক্ষাৎকার-এ। অন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অ্ংশগ্রহণ কারীরা কিছু মিল পেতে পারেন। এই অর্থে 'আমি ছাড়া' শব্দ বন্ধ।
  • বিপ্লব রহমান | ৩১ মে ২০২০ ০৯:১৫93835
  • সাক্ষাৎকারটি  কৌতুহল উদ্দীপক ও গুরুত্বপূর্ণ, সন্দেহ নাই। তবে ইতিহাস বিচারে লেখকের ধর্মীয় দর্শন হাস্যকর। বিশেষ করে কাল্পনিক ভিটামিন! 

    বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত'র বক্তব্যের প্রথম বাক্যে এ ক ম ত।         

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন