এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • উপন্যাস নিয়ে

    সৈকত চ্যাটার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ৩১ জানুয়ারি ২০১১ | ২১৭৭ বার পঠিত

  • অন্তত: আট বছর আগে কলেজ স্ট্রীটে পুরোন বইয়ের দোকানে অসীম রায়ের প্রবন্ধ গ্রন্থ "রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর উত্তরাধিকার" ওল্টাতে গিয়ে চোখে পড়েছিল জীবনানন্দ দাসের "মাল্যবান' উপন্যাসের আলোচনা। কী ছিল সেই লেখায় সেটা প্রায় সম্পূর্ণ ভুলে গেলেও যত দূর মনে আছে লেখাটির শেষাংশে অসীম রায় এরকম লিখেছিলেন - আর কোন লেখা না লিখলেও শুধু "মাল্যবান' উপন্যাসের জন্যই
    জীবনানন্দ দাস পাঠকের মনে থেকে যাবেন! বাংলা গদ্য সাহিত্যের এই দুই স্টলওয়ার্টকে নিয়ে ঘটনাটি মনে পড়ে গেল অসীম রায়ের "রক্তের হাওয়া' উপন্যাসটি পড়া শেষ ক'রে এবং আমার এই সিদ্ধান্তসহ, যে দুই লেখকের মধ্যে উপন্যাস সম্বন্ধে চিন্তাভাবনার স্তরে এক সখ্যতার জন্যই হয়ত - যে সখ্যতাকে নির্দেশিত করা যায় অসীম রায়েরই ব্যবহার করা "চৈতন্যের আলোড়ন' কিংবা "ক্রিয়েটিভ ভিশন' শব্দবন্ধের দ্বারা - অসীম রায় "মাল্যবান' উপন্যাসটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন।


    "রক্তের হাওয়া' উপন্যাসটি অমর নামে এক ঔপন্যাসিক/আর্টিস্টের জীবনের সমস্যা। একটি উপন্যাস লিখে ফেলা - যে উপন্যাসে রমা নামে এক নারীর সাথে অমরের সম্পর্কই প্রকাশ পেয়েছে - এবং সেই উপন্যাস প্রকাশের পর তার বন্ধুবান্ধব, মা এবং রমার সাথেও অমরের সম্পর্ক ক্রমশই জটিল হতে থাকে। রমা তার থেকে দূরে সরে যেতে থাকে এই অনুযোগ করেই, যে অমর ঐ উপন্যাসে তাকে "কাঁচামালের' মত ব্যবহার করেছে। কিন্তু অমরের মতে সমস্যা এটাই - ""যে সম্বন্ধ সে তুলে ধরবার চেষ্টা করছে তা নিয়ে যদি সে নাটক করত তাহলে এ আলোড়ন হত না। সে যদি এমন আষ্টেপৃষ্টে নিজেকে বেঁধে না ফেলত তার বইয়ের সঙ্গে, তাহলে তার মা এমন মর্মান্তিকভাবে অভিভূত হতেন না, আত্মীয়স্বজনেরা এমন ভাবে চাইত না তার দিকে। লোকে জানত অমর আজকাল সাহিত্য করছে। সেখানেই চুকেবুকে যেত ব্যাপারটা, কেউ এ নিয়ে মাথা ঘামাত না। কিন্তু তার বই পড়ে এ কথা সুস্পষ্ট যে এ বই লেখকেরই এক অবিচ্ছিন্ন ডায়েরী। ডায়েরীর মত নগ্নভাবে প্রায় শিল্পকে বিপন্ন করে নিজেকে মেলে দেওয়ার চেষ্টা অনেকেই নিতে পারেনি।'' অংশটিতে আমার চোখে পড়ে "আষ্টেপৃষ্টে নিজেকে বেঁধে না ফেলত' এবং "অবিচ্ছিন্ন ডায়েরী' শব্দগুলি। এই শব্দ কটি জীবনানন্দ দাসের সমগ্র গদ্যকর্মের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করতে পারি কারণ এ আমরা পড়েছি যে জীবনানন্দ দাস উপন্যাস সম্বন্ধে 'diversified autobiography' - র প্রসঙ্গ এনেছিলেন এবং তাঁর দিনলিপি ও "লিটারারি নোটস'-এর মধ্যে কোন ফারাক থাকে না। বলতে পারি , উপন্যাসের অমর আর জীবনানন্দ দাস দুজনের প্রকল্পই যেন উপন্যাসের মাধ্যমে কীভাবে নিজের জীবনকেই অনুসরণ করা যায়, কীভাবেই বা নিজের জীবনকে আবিষ্কারের বিষয় করে তোলা যায় তারই অনুসন্ধান।

    অসীম রায়ের অন্বিষ্টও কী এটাই ছিল? "লেখকের জবানবন্দী' নামে একটি প্রবন্ধে তিনি লেখেন - ""শুধু কালের ডকুমেন্টারি নয়, নিজেকে সেই কালের নাট্যে ফেলে নিজেকেই আবার খুঁজে পাওয়া বিভিন্ন চরিত্রের মাঝখানে - এই নিরবচ্ছিন্ন ডায়েরী তুলে ধরার ক্রমাগত চেষ্টাই বস্তুত লেখকের কাজ বলতে কোন মানে দাঁড়ায় তাই।'' এবং এই কাজ করতে গিয়ে গল্প বলার চেনা ছকের বাইরে
    অসীম রায়কে যেমন উপন্যাস রচনা করতে হয়েছিল - "গোপাল দেব', "রক্তের হাওয়া' কিংবা "দ্বিতীয় জন্ম' যেমন তার প্রমাণ - তেমনি জীবনানন্দ দাসও কিছু আগে থেকেই তাঁর গল্প-উপন্যাসে একই কাজ করছিলেন, আরও ব্যাপকভাবে নিজেকে ঐ সকল লেখায় এনে, গল্প তৈরীর কথা না ভেবে, ঘটনার কার্যকারণত্বকেও অস্বীকার করে,ঢের বেশী পরিমাণে চৈতন্যের আলো-অন্ধকার, মানুষের কাদা-ঘাম-শয়তানি আর হেরে যাওয়া নি:সঙ্গ মানুষের বর্ণনা দিয়ে।


    লেখক নিজেকে তাঁর উপন্যাসের বিষয় করবে তুলবেন, চেনা-জানা মানুষদের প্রতিচ্ছবি উপন্যাসে এসে যাবে - অসীম রায়ের এই উপন্যাস ভাবনা বাস্তবেও তাঁর আশেপাশের মানুষদের পছন্দের হয়নি। এই লিখনশৈলী কারওর কাছে মনে হয়েছে অরুচিকর, কেউ এতে শিল্পগুণ বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখেছেন এবং কেউ ক্ষুব্ধ হয়েছেন তাঁদেরকে উপন্যাসে ব্যবহার করার লেখকের এই মনোবৃত্তি দেখে। অনুরূপভাবে সমগ্র গদ্যকর্মকে বাক্সবন্দী করে রাখার পেছনেও হয়ত জীবনানন্দ দাসের মনে ক্রিয়াশীল ছিল (অন্য কারণের সাথেও) চারিপাশের মানুষদের ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠার চিন্তা। কিন্তু বাস্তবিক ঔপন্যাসিকের কোন দায় নেই এরকম উপন্যাস রচনা করার, যার মাধ্যমে লেখকের জীবন,সন-তারিখ আর ব্যক্তিগত সম্পর্কের সাথে ঐ উপন্যাসকে পাঠক মিলিয়ে পড়তে পারে। লেখক শুধু এরকম উপন্যাস লেখার কথা ভাবতে পারেন যা রচনা করার সময়ে তিনি নিজেই নিজের অস্তিত্বের মুখোমুখি হতে পারেন,অমর যেমন তার
    বন্ধু সন্তোষকে বলেছিল - ""যে শিল্প আমার সমস্ত অস্তিত্বের শিকড় ধরে না ঝাঁকি দেয়, তাকে আমি শিল্প বলি না। ...... আমি শিল্পের কাছে যাই অস্তিত্বের তল পর্যন্ত দেখতে পাব বলে।'' যেমন জীবনানন্দ দাস সমগ্র গদ্যকর্মে অস্তিত্ব অনুসন্ধানের এই কাজই করে যান - হেমের কারুতান্ত্রিকতার মধ্যে দিয়ে, সিদ্ধার্থর লুক্রেশিয়াসের লেখা বই খোঁজার মধ্যে দিয়ে, শিশ্নোদরতন্ত্রী সভ্যতাকে মাল্যবানের লক্ষ্য করে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে, সমসময়ের সমাজ ও রাজনীতির মধ্যে নিশীথ ও হারীতের অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে। এই সব চরিত্র ও লেখার মাধ্যমে তিনি আসলে অস্তিত্বের অযুত সম্ভাবনার কথাই লিপিবদ্ধ করেন আর সেই কাজ করতে গিয়ে এই সব গদ্যগুলির সিদ্ধি কত অনায়াসে সত্য করে তোলে আগে উল্লিখিত প্রবন্ধটিতে অসীম রায়ের লেখা - ""উপন্যাস আমাদের সামনে এই বিরাট দিগন্ত খুলে দিয়েছে, মানুষের অস্তিত্বের বিভিন্ন ব্যঞ্জনাময় উপলব্ধির চাবি আমাদের তুলে দিয়েছে।''


    যদি এমন একটা ছবি কল্পনা করি যাতে আছে কিছু সমকেন্দ্রিক বৃত্ত, যার কেন্দ্রে আছে একজন মানুষ এবং ঐ সব বৃত্তগুলিকে পরিবার-সমাজ-দেশ-সময় ইত্যাদির নির্দেশক বলে ভাবি, তাহলে এই লেখাটিতে আমি সেই রকম উপন্যাসের কথাই বলতে চেয়েছি - উক্ত দুই ঔপন্যাসিকের লেখাকে ব্যবহার করে - যা "কল্পনাপ্রতিভা'-র দ্বারা ব্যক্তিচৈতন্যেকে ভিত্তি ক'রে মানুষটির সাথে ঐ সকল বিষয়ের (বৃত্তের) যুক্ত থাকা (বা বিযুক্তিও) প্রকাশ করে।

    উপন্যাস আমার কাছে,এখনও,এমন একটি ফর্ম যার প্রধান কাজই হোল ব্যক্তিমানুষের জটিলতাকেই তুলে ধরা, তার স্মৃতি-স্বপ্ন-অবদমন-ক্রোধ প্রকাশ করা এবং সেই সুত্রেই সমাজ,দেশ ইত্যদি বিষয়গুলিকে উপন্যাসের অংশ করে তোলা।

    বিজ্ঞান বা দর্শন পড়ে আমি জগৎ ও জীবনের মূল সূত্রগুলি সম্বন্ধে জানতে পারি ,সংবাদপত্র পড়ে সমসময়ের ঘটনা সম্বন্ধে জানতে
    পারি ,সমাজতত্ব পড়ে জানতে পারি সামাজিক সংগঠন সম্বন্ধে, কিন্তু উপন্যাসের কাছে আমি যাই কিছু "জানার' জন্য নয়। উপন্যাস আমি পড়ি কারণ একমাত্র এরই মাধ্যমে আমি মানুষের অস্তিত্বের এক একটি সম্ভাবনা - যা সে হতে পারে, হওয়ার চেষ্টা করে - তার বিবরণ পাব বলে।

    কিন্তু উপন্যাসের এই গড়ন অধুনাতন বাংলা উপন্যাসে প্রায় অনুপস্থিত। গত বিশ-তিরিশ বছরে, বাংলা উপন্যাসকে (পশ্‌চিমব্‌ঙ্গের অন্তত) মধ্যবিত্তমদির জগৎ থেকে বের করে আনার জন্যই হয়ত যে উপন্যাস লেখা হয়েছে, অল্প কিছু উদাহরণ বাদ দিলে তা মূলত: সমষ্টিপ্রধান ও আঞ্ছলিক। ইতিহাস-ভূগোল বিস্তৃত ক'রে, ক্ষেত্র সমীক্ষা, নৃতত্ত্ব ও ডকুমেন্টেশনের মারফত অসাম্য-সমস্যা-শোষণ কন্টকিত নিম্নবর্গের মানুষের কথা এনে লেখাকে দিয়ে অতি মাত্রায় "সমাজ সচেতনতার' ভার বওয়ানো হলেও, এক রকমের সমাজতাত্বিক বর্ণনা রীতির ওপর ভিত্তি করে লেখা (যদিও এই সময়ই দেশীয় আখ্যানরীতি, উপন্যাসের দেশীয় মডেল ইত্যাদি নিয়ে ভাবনাচিন্তা হয়েছে) এই সকল উপন্যাসে ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে "অস্তিত্বের বিভিন্ন ব্যঞ্জনাময় উপলব্ধির' কথা লেখা হয়ে ওঠে না।

    অনুযোগ বলতে এটাই।

    --------------------------------------------------------------------------------------------------------------
    * "এবং মুশায়েরা' থেকে প্রকাশিত "অসীম রায় রচনাসমগ্র(২)' বইটিতে "রক্তের হাওয়া' উপন্যাসটি ছাপা হয়েছে।
    * "লেখকের জবানবন্দী' প্রবন্ধটি পাওয়া যাবে "প্রতিক্ষণ' প্রকাশিত "অসীম রায়ের গল্প' বইটিতে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ৩১ জানুয়ারি ২০১১ | ২১৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • h | ***:*** | ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৬:১৬89168
  • আজে বাজে জিনিসের কত ভালো জিনিস হারিয়ে যায়, সৈকত (দ্বিতীয়) কে দিয়ে যে লেখানো গেছিলো এটা মনেই ছিল না। থ্যা'ম্ক্স সৈকত।
  • Prativa Sarker | ***:*** | ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৮:২৩89166
  • অসীম রায় হারিয়ে গিয়েছিলেন। আবার তাকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করবার চেষ্টায় এই লেখাটি একটি মূল্যবান সংযোজন।
  • Sakyajit Bhattacharya | ***:*** | ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৮:২৮89167
  • ইন্টারেস্টিং আলোচনা। উপন্যাসটা পড়িনি। পড়ব
  • শিবাংশু | ***:*** | ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৭89169
  • 'রক্তের হাওয়া' পড়েছিলুম বছর চল্লিশ আগে। চাইবাসার রামমোহন লাইব্রেরিতে। কে যে বইটি আনিয়েছিলেন, জানিনা। আমি ছাড়া তখনও পর্যন্ত কেউ ইস্যুও করেননি পড়ার জন্য। আমার পড়া অসীম রায়ের প্রথম উপন্যাস। ক্ষীণতনু লেখাটি অন্তত বার পাঁচেক পড়তে হয়েছিল লেখকের উদ্দেশ্য-বিধেয় বুঝতে। এরকম লেখা তখনও পড়িনি। মাল্যবান পড়েছি আরও পরে। আমার তখনকার পাঠকমনে রচনাটি 'ব্যক্তিকেন্দ্রিক' মনে হয়েছিল। সমষ্টি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মধ্যে একধরনের উচ্চমন্যতা থাকে। অনেক সময় আমাদের মতো অদীক্ষিত পাঠক তার সঙ্গে নিজেকে চিহ্নিত করতে পারেনা।'একক' থাকার উদগ্রতা মানুষকে হয়তো কিছুটা উৎকেন্দ্রিক করে দেয়। আমাদের কথকতার দেশে এই ধরনের লেখা স্রোতের বিপরীতমুখে চলে। মফস্সলের তরুণ পাঠক হিসেবে অসীম রায়ের ব্যক্তি অবস্থান সম্পর্কে সচেতন ছিলুম না। খোঁজ করে তাঁর স্টেট্সম্যান ও বিদেশী সাহিত্যের শিকড়ের কথা জেনেছিলুম।

    সত্যিকথা বলতে কী, একক মানুষের 'অস্তিত্ত্বের শিকড় খোঁজা'র রীতিপ্রকৃতি একমুখী নয়। বোধের বৃত্তান্তরও সরলভাবে হয়না। সবাই নিজের নিজের মতো যাত্রা করেন। 'পথে চলে যেতে যেতে কোথায় কোনখানে' ব্যক্তিসাপেক্ষ অনুভব। অসীম রায়ের খোঁজ একান্ত নিজস্ব। মেধাবী পাঠকের পঠন পরিসরে জায়গা বেশি থাকে। তাঁরা যতোটা স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে বিভিন্ন মাত্রার শৈলী নিয়ে ভাবতে পারেন, সবাই পারেন না।

    অস্তিত্বের শিকড় ধরে ঝাঁকুনি দেওয়ার ঈপ্সা যিনি প্রথম জানিয়েছিলেন, সেই দস্তয়েভস্কি কিন্তু সাধারণ পাঠকদের থেকে দূরে যেতে চাননি। অসীম রায় আক্ষেপ করতেন 'গোপাল দেব' প্রত্যাশিত স্বীকৃতি পায়নি। সম্প্রতি তাঁর আত্মকথা পড়তে গিয়ে তার সঙ্গে লেখাগুলি মেলানো পাঠক হিসেবে আমার কাজটি সহজ করে দিচ্ছে।

    তিনি ব্যতিক্রমী মননের লেখক, ব্যতিক্রমীই থাকতে চেয়েছেন। তাঁকে সেভাবেই গ্রহণ করতে হবে।
  • h | ***:*** | ২৭ জুলাই ২০১৮ ০৬:১৯89171
  • গোপাল দেব, আজ থেকে প্রায় ৩৫ বছর আগে পড়া , অভিঘাত আমার কোনোদিন যায়নি কিন্তু তাতে মূল সমস্যা টার সমাধান অন্তত আমি কখনো করতে পারিনি, সেটা অথেন্টিসিটির সমস্যা। কতটা ব্যক্তি আর কতটা সময়ের কথা লিখবো, আর কতটা অটোবায়োগ্রাফিক হবে সেই অলিখিত ম্যাগনাম ওপাস বা চটি নভেলাটি।
  • সৈকত | ***:*** | ২৭ জুলাই ২০১৮ ০৯:৫১89170
  • যারা লেখাটি পড়লেন এবং মন্তব্য করলেন, তাদের ধন্যবাদ।

    লেখাটাতো বেশ পুরনো। এই দুই লেখকেরই লেখা ছুঁয়েছেনে বেশ কয়েক্বারই দেখা হয়েছে, কম নয়, তা প্রায় পনের বছর বা তার বেশী সময় ধরে। ইদানীং আর বইগুলো ফিরে পড়া হয় না। কিন্তু উপন্যাস সম্বন্ধে আমার ধারণা হয়ত কমবেশী এই জায়্গাতেই থেমে আছে।
  • h | ***:*** | ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৩89172
  • দুটি কথা ছিল,
    ১। আপনাদের/তোমাদের কি মনে আছে গোপাল দেব এর একটা অংশ ছিল , এগ্জ্যাক্ট মনে নেই, একটা বড় করে আন্দোলন/মাউন্টেড পুলিশের সঙ্গে আন্দোলন কারী দের সংঘর্ষের হয় সমান্তরাল ভাবে, বা অল্প পরে একটা ইন্টিমেসির বর্ণনা ছিল। এই লেখা পড়ার বহুদিন পরে তাও প্রায় বছর পঁচিশ তিরিশ আগে , আমি অফ অল পিপল ফুয়েন্তেস আর জুলিও/হুলিও ওর্তেগা সম্পাদিত একটা বই পাই, পিকাদোর বুক অফ লাতিঅ আমেরিকান স্টোরিজ। তার ভূমিকাটি ফুয়েন্তেস এর প্রখ্যাত একটা প্রবন্ধ, কিন্তু এই সংকলনে, কিউবার সেনেল পাজ বলে এক ছোটোগল্প লেখকের একটা মারাত্মক গল্প পড়ি। গল্পটার বিষয় মোটামুটি এই, একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে হাবানা শহরে গিয়ে হোটেল ভাড়া করে শোবে ঠিক করেছে, প্রচন্ড প্রেম ও উত্তেজনা, কিন্তু সেদিন হাভানায় খবর পৌচছে, চে বলিভিয়ায় খুন হয়েছেন, চে র হাত এর রিমেন্স আনা হবে, এবং গোটা হাভানা উত্তাল, এবং বড় বড় মিছিল বেরিয়ে যাছে, তাতে শ্লোগান উঠছে, সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক, এর মধ্যে , তাদের সেকসুয়াল ফ্যান্টাসির মধ্যে একটা আশ্চর্য্য পাপবোধ জন্মাচ্ছে, এবং একটা কিন্তু কিন্তু ভাব নিয়ে তাদের ভালোবাসার অঙ্গীকার সম্পন্ন হচ্ছে ইত্যাদি।

    এটা পড়ার পরে আমার মনে হয়েছিল, অসীম দের প্রজন্মের , বা তার পরের প্রজন্মের নবারুণ সহ অনেক প্রতিভাবান লেখকের একটা সমস্যা থেকে গেছে, যৌনতা সম্পর্কে প্রাক ষাঠ দশকীয় কুন্ঠা টা তাঁদের তাড়া করেছে। তার উপরে সমালোচনা সাহিত্য বা রাজনৈতিক ক্যাম্পের , এবং স্বীকার করে নেওয়া উচিত কবিতার প্রচুর সামাজিক কমিটমেন্টের চাপের চোটে বেশ কয়েক দশক ধরে প্রচন্ড প্রতিভাবান লেখক দের পুরো আত্ম প্রকাশে একটা বাধা থেকে যাচ্ছে। বড় বিষয় বলতে গিয়ে ছোটো ইন্টিমেট বিষয় বলা হচ্ছে না, বা দুটি দিকের মধ্যে যাতায়াত অনায়াস হচ্ছে না। ফিকশনের ফর্ম, ভাষা ইত্যাদির এক্সপেরিমেন্টে যাঁরা এগিয়ে তাঁরা মনের দিক থেকে আরোপিত সংযমে নিজেরাই কারারুদ্ধ হচ্ছেন। একটা উদাহরণ ই যথেষ্ট, কেরুয়াক বা পল অস্টার, শুধু প্রতিভার বিচারে অসীম রায় এর থেকে বড় লেখক কিনা সন্দেহ আছে (পল অস্টারের যেটা আত্মজীবনী মত, সেটাতে প্র্যাকটিকালি হিলারিয়াস সেকসুয়াল এনকাউন্টারের গল্প ছাড়া বিশেষ কিছু নেই, কেরুয়াকের মধ্যে যেটুকু দেশ এবং আর্টকে উদ্ধার করছি ভাব আছে, সেই মিনিমাম প্রিটেনশন নেই, গোটাটাই প্র্যাকটিকালি যৌবনের গান) , কিন্তু নিজেদের ফ্রিডম, আবিষ্কৃত মুক্তির বোধ এঁদের এমন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে, যেটা আমরা অসীম দের জন্য পাচ্ছি না। কালের চাপ আর কি। তবু তো অসীম রায় এর সাহস ছিল গোপাল দেব লেখার জন্য, কত লোকের তাও সাহস ছিল না।

    বলছি যে, এই বিষয়টাও সৈকত/শিবাংশুর পরের প্রবন্ধের বিষয় হতে পারে , পাঠকবর্গ আপনাদের অনেক ভালোবাসা দেবেন।

    ২। সৈকত/ (২য়) এরকম ছোটো করেই মাঝে মাঝে হলে ভালো হয়। তুমি মিতভাষী লোক, আমার মত বেশি ভ্যাজর ভ্যাজর তোমার দ্বারা হবে না, কিন্তু এরকম (বা যেরকম খুশি) একেবারে সাহিত্য বিষয়ে আরো দু চারিটি একটু নিয়মিত লিখলে , আন্তরিক ভাবে বলছি, অসম্ভব খুশি হতাম। সকলের চোখ থাকে না, তোমার আছে, সেটা হালকা শেয়ার করলে উপকার হত।
  • পাঠক | ***:*** | ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫৭89173
  • অসীম রায় বা নবারুণ বাদেও ধরা যাক অমিয়ভূষণ, অভিজিৎ সেন, দেবর্ষি সারগী ও যে ইন্টিমেসির দিকে মন খুলে নজর দিলেন না, সেটাও কি তবে তাদের সমস্যা ও কালের চাপ বলা হচ্ছে? মানে ইন্টিমেসির দিকে নজর দেওয়ার মতো এত লোক যখন আছেই, এবং শুধুই ইন্টিমেসির দিকে নজর দিয়েই এত লোকও যখন বেস্ট সেলার ইত্যাদি হয়ে করে কম্মে খাচ্ছে, তখন একটু নন ইন্টিমেট বিষয়ে অধিকতর মনোযোগ দেওয়ার মতো লেখক যে আদৌ কিছু জন্মেছেন এবং লিখে গেছেন সেজন্য পাঠক হিসেবে খানিক কৃতজ্ঞতাও থেকে যায় না কি? "প্রচন্ড প্রতিভাবান লেখক দের পুরো আত্ম প্রকাশে একটা বাধা" থেকে যাওয়া বলে যেটা মনে হচ্ছে, "বড় বিষয় বলতে গিয়ে ছোটো ইন্টিমেট বিষয় বলা হচ্ছে না, বা দুটি দিকের মধ্যে যাতায়াত অনায়াস হচ্ছে না" বা "মনের দিক থেকে আরোপিত সংযমে নিজেরাই কারারুদ্ধ হচ্ছেন" এই দৃষ্টিভঙ্গীটাকে এভাবেও তো দেখা যায়, যে, বিষয়ভিত্তিক লেখার রাজনীতিতে তাঁরা ইন্টিমেসির বর্ণনাকে সমাধিক, সমান বা ও অন্তত কাছাকাছি গুরুত্বও দিতে চাইছেন না এবং তাঁদের সে রাজনীতির সমর্থন ও সে রাজনীতিকে ভালোবাসাও এক শ্রেণীর পাঠকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
  • শিবাংশু | ***:*** | ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৯:০২89174
  • h on 28 July 2018 09:03:31 IST

    নিজের পিঠ চাপড়ালুম। সম্ভবত প্রথম আমি hএর পুরো লেখা আর বক্তব্যটি ডিকোড করতে পারলুম। ঃ-))

    ইয়ার্কি থাক।
    "এটা পড়ার পরে আমার মনে হয়েছিল, অসীম দের প্রজন্মের , বা তার পরের প্রজন্মের নবারুণ সহ অনেক প্রতিভাবান লেখকের একটা সমস্যা থেকে গেছে, যৌনতা সম্পর্কে প্রাক ষাঠ দশকীয় কুন্ঠা টা তাঁদের তাড়া করেছে। তার উপরে সমালোচনা সাহিত্য বা রাজনৈতিক ক্যাম্পের , এবং স্বীকার করে নেওয়া উচিত কবিতার প্রচুর সামাজিক কমিটমেন্টের চাপের চোটে বেশ কয়েক দশক ধরে প্রচন্ড প্রতিভাবান লেখক দের পুরো আত্ম প্রকাশে একটা বাধা থেকে যাচ্ছে।"

    যৌনতা বিষয়ক কুণ্ঠাটি ষাট দশকের নয়। এটা মধ্যযুগের পর থেকে অভিজাত মননে (যার মধ্যে 'বাম'মনস্ক মননও রয়েছে) আবহমান। গান্ধিজি সারাজীবন আক্ষেপ করেছেন তাঁর পিতার মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রীসহবাসে রত ছিলেন। যৌনতার ব্যাপারটি আমাদের মানসিকতায় পাশব প্রবৃত্তি। প্রথম প্রস্তাবে 'অনৈতিক'।সামাজিক দুঃখশোক, বিড়ম্বনার সময় সে প্রবৃত্তির প্রকোপ দূষনীয়। প্রথম সমাজতন্ত্রী মননের অংশ রুশ সাহিত্যে এ নিয়ে বিশেষ সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের ছিল। সে মহারাণী ভিক্টোরিয়া বা হেরম্বচন্দ্র, যাকেই দোষ দিই না কেন, বিশেষভাবে ছিল। এদেশে ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে বা পৌরাণিক মূল্যবোধের বিপক্ষে যাঁরাই যেতে চেয়েছেন অবচেতনে ব্রাহ্ম সংস্কারবাদের মডেলটাই অনুসরণ করেছেন। তাই 'সমাজতন্ত্রী' নন্দনতত্ত্বেও কুণ্ঠাটি জয় করা যায়নি।

    অসীম চেষ্টা করেছিলেন। কিছুটা সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু সবটা কেন জানিনা, পারেননি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধক ছিল না তাঁর। অতিমাত্রায় নাগরিক সমর্পণ হয়তো একটা কারণ হতে পারে। নিঃসন্দেহে 'গোপালদেব' তাঁর শ্রেষ্ঠ লেখা। গদ্যশৈলী হয়তো আরও প্রাঞ্জল হলে ভালো হতো। প্রাঞ্জল মানেই পোলেমিকস নয়। কিন্তু মূলস্রোতের অংশ ছিলেন না তিনি। ষাট দশকের ব্যতিক্রমী পাঠকের ব্যতিক্রমী লেখক। যাঁর কোনও ক্যাম্প ছিলনা। ছিলনা কোনও নিবেদিত মোসাহেব বা মাফিয়ার শুশ্রূষা। তবু সমসাময়িকদের মধ্যে উজ্জ্বলতর ছিলেন তিনি। হ্যাঁ, কমলকুমারের থেকেও। কমলকুমারের জন্য সুনীল ছিলেন। অসীমের জন্য কেউ ছিলনা।

    আর 'পাঠক' যেমন বলছেন সেটা তো নতুন নয়। মূলস্রোতের পাঠক যৌনতায় তাড়নার (টিটিলেশন) অংশটি বেশি ভালোবাসেন। যৌনতায় কামনার (প্যাশন) বিশ্লেষন হয়তো তাঁদের নাপসন্দ। যৌনতার সেরিব্রাল চর্চা সময়, বোধ ও মনন দাবি করে। তাড়নার স্ফুলিঙ্গ উড়ে গিয়ে ফুরিয়ে যায়। হয়তো আমাদের সামাজিক নির্মাণে বিষয়টি নিয়ে গভীর মনোনিবেশ একটি ট্যাবু হয়েই রয়ে গেছে। উল্লেখিত লেখকরা সমান্তরালেই থাকেন। মূলস্রোতের বাণিজ্য দাক্ষিণ্য জোটেনা তাঁদের।
  • h | ***:*** | ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৯:৪১89175
  • পাঠক , অনেকটাই এগ্রিড , আমি যেটা বলব ভাবছিলাম, সেটা শিবাংশু বলে দিলেন, এবং প্রাক ষাট দশকীয় কথাটিতে আপত্তি করে আবার বিস্তার করে প্রাঞ্জল করে দিলেন। বেশ ভাল হল। এক শ্রেণীর পাঠক কেন, সব শ্রেণীর পাঠক দের কাছেই এরা বড় শ্রদ্ধার ভালোবাসার নাম। তবে আমার পারসোনালি মনে হয়েছে, উদয়ন ঘোষ, বিপুল দাস এবং ইলিয়াস যেরকম ভাবে সেকসুয়াল টেনশনে তাঁদের কাহিনীর অবয়বে রিজনেবলি সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহার করেছেন, সেটা তথাকথিত বিকল্প ধারার অনেক সাহিত্যিক রা সেটা পারেন নি। এবং এর জন্য কাউকে দায়ী না করে সময় আর সেন্সিবিলিটি কে চিহ্নিত করা যেতে পারে। দুটৈ বদলাচ্ছে এটা আশার কথা। সমাজে ডিসকানেক্ট বাড়লে, বড়লোকের অবস্থান পুনরায় জোর পাবে আর কি করা যাবে। ফকিরমোহনের সাধনা ব্যর্থ হবে, আবার মানুষ ঘুরে দাঁড়াবে , নিজের কথা বলবে এ ছাড়া কি বলতে পারি।

    মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ফ্রয়েডিয় যুগ আর মার্কসীয় যুগ বলে যে বিভাজন করা হয়, আমি সেটা তে স্বস্তি পাই না, তাই তাঁর লেখার প্রসঙ্গ ই্ছে করেই এড়াচ্ছি।

    হ্যাঁ কি হয় নি, ভেবে লাভ নেই, সমাজ যেমন তার লেখাও তেমন হবে, কিন্তু বিষয় হল, সময় সমাজ কে অতিক্রম করেছেন অন্য অনেক বিষয়ে বা এখন করছেন, কিতু এই বিষয় টাতে হয় নি। আমার ঐ একটু হিংসে হয় আর কি, অসীম রায় কে আমরা যদি ঠিক করে পড়ে অনুবাদ করে সম্মান দিতে পারতাম একটা দুর্দান্ত ব্যাপার হত। এবং ঘটনা হল এটা পরিষ্কার করে বলা দরকার, এটা এক ধরণের সামাজিক রিপ্রেসন, এটা খুব চয়েস কিসু না। এই যেমন আমি নিজের কথা বলতে পারি, আমি বিয়ের আগে ভালো করে বান্ধবী দের সঙ্গে শুতে পারি নি, এটা খুব ই দুঃখের কথা, আমার এবং সম্ভবত তাদের পক্ষে, সম্ভবত সেই জন্যেই তারা হাঁটা দিয়েছিলেন নানা দিকে, কিন্তু ঘটনা হল যত টুকু যা সামান্য এদিক ওদিক নেকিং গোত্রীয় অভিজ্ঞ্তা আমি সেটা নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে পারলেও কাহিনী লিখতে পারব না। তাই বলে কি নানা হার্ট বার্ন হয় নি, হয়েছে কি আর করা যাবে, এখন না হয় চর্বিতে ঢাকা পড়েছে, কিন্তু বসন্ত তো শুধু নীল লোহিতের ছিল না। এই কুন্ঠা টা আমার কাছে, আমাদের ঐতিহ্যের পার্ট, সেই ঐতিহ্যে গান্ধী , রবীন্দ্র, সিপিআই সবাই আছেন ঃ-)))))))))))))))) এই চাপটা তো অসীম রায় দের আমলে আরো বেশি ছিল, সেটা তিনি কিছুটা অতিক্রম করেছেন বিরাট ব্যাপার। বামপন্থী ভাবনা চিন্তার যখন এক প্রকার মোনোপোলি চলছে, তখন নানা ক্ষতি ও হয়েছে। কোয়ান্টাম মেকানিক্স থ্রু মার্কসিস্ট আইজ গোছের বিচিত্র লেখা পত্র হয়েছে। অফ অল পিপল অ্যাজ লেট অ্যাজ এইটিজ, তরুণ কবি অনন্য রায় এর অনেক লেখায় দেখেছি, একটা থিয়োরাইজেশন প্রচেষ্টা আছে, যেটা হয়তো ওরকম প্রোফিউজলি ট্যালেন্টেড লেখক, অন্য সময় করতেন ই না। রাজনৈতিক বিতর্কে পক্ষাবলম্বন করতে হবে, এটা যেমন অ্যাভয়েড করা মুশকিল, বিশেষত ফিকশনে, তেমনি রাজনৈতিক ছাড়া কোন বিষয় থাকবে না, এ মানে ভাট। অবশ্যই সেকসুয়ালিটি মানে সেই এক কালের দেশ পত্রিকার গল্পের মত প্রতি প্যারাগ্রাফে একবার 'শায়ার দড়ি' শব্দবন্ধের উল্লেখ এ মানে ফুল ভাট কিস্যু হয় নি ঃ-))))) যৌনতা বিষয় টা সহজ করে ট্রিট করা সহজ না, সেটা নানা সামাজিক কারণে আমাদের ওভারল শিখতে এখনো বাকি আছে। অনেকদিন লাগবে। এটাই বলছিলাম।

    এই যেমন মেয়েরা তেড়ে ফুড়ে নিজেদের কথা পরিষ্কার করে বলার আগে তাঁদের কথা বলা হয় নি। কি আর করা যাবে, তাঁরা ও মোটামুটি সমাজের প্রগতিশীলতায় ভরসা না রেখে নিজের কাজ নিজেরাই করে নিয়েছেন, সেটাই ভালো হয়েছে।

    শিক্ষা, ব্যবসার প্রয়োজনে বাড়বে, এবং তাতে শেষ পর্যন্ত বিচিত্র সব লেখা আসবে, তাতে আমরা প্যালারাম এর টেনিদা দর্শনের মত শুধু মুগ্ধ হব, এটুকু ভাবতে পারি, আমি জেনেরালি অপটিমিস্ট, বাংলাদেশে যে অল্প বয়সীরা বিচিত্র কান্ড করছেন, সেসব এখানেও হবে, কিছু কিছু তো হচ্ছেও। ভারতীয় ইংরেজি তে বলা যায়, দুর্দান্ত কিছু এক্সপেরিমেন্ট যে হয় নি তাতো না, আমার ঐ মার্কেটিং ইত্যাদি টু মাচ জ্যাজ দেখে বিরক্ত লাগে তাই বেশি কিসু কই না, কিন্তু তা ছাড়া খবর ই বা পেতাম কি ভাবে তাও খইতে ফারি না ঃ-))))))

    তবে এটুকু বলে দিলাম, মিলিয়ে নেবেন, বীরভূমের দক্ষিন দিকটায় যেদিন প্রকৃত সমাজতান্ত্র আসবে, সেদিন নানারকম লেখা পত্রে দেশ তোলপাড় হয়ে যাবে ঃ-)))
  • r2h | 96.23.***.*** | ২৯ আগস্ট ২০২২ ০১:১৭511467
  • এই লেখাটার দু'টো পর্ব তুলি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন