এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নারী দিবসে দু’চার কথা

    শারদ্বত লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৮ মার্চ ২০১৬ | ৩৪৮০ বার পঠিত
  • এমনিতে দিবস-টিবস নিয়ে আমার মাথাব্যথা থাকে না। কারণ দিবস বানিয়ে যদি কিছু উদ্‌যাপন করতে হয়, বুঝতে হবে, সমস্যা আছে বলেই তার এত আড়ম্বরের ঘটা। নারী দিবস তাই আর পাঁচটা দিনের চেয়ে আলাদা। আর কোনো তন্ত্রে বা সিস্টেমে (সিস্টেম বললেই ব্যাপারটা বোধগম্য হয় আরও) শোষক এবং শোষিত এত কাছাকাছি অবস্থান করে না। আর কোনো সিস্টেমে এই দুই শ্রেণি চার দেওয়ালের মধ্যেও থাকে না, এক বিছানায় শোয় না দরজা বন্ধ করে। অন্য আর পাঁচটা সিস্টেমের থেকে এখানেই পুরুষতন্ত্র আলাদা, তাই পুরুষতন্ত্রের মধ্যে ‘নারী দিবস’ সেই সংখ্যালঘুর, গুরুত্বহীনের কোটা (quota) উদ্‌যাপন মাত্র।

    নারীবাদ আমার কাছে নারী কর্তৃত্বের হাতিয়ার নয়, সমানাধিকার অর্জনের অস্ত্র। পুরুষ তার শিশ্নের জোরে ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করলে যেরকম সমস্যার সৃষ্টি হয়, নারী তার স্তন-যোনির জোরে ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করলে তার থেকে খুব আলাদারকম সমস্যার সৃষ্টি হবে না বলেই আমার মনে হয়। মাতৃপ্রধান সমাজব্যবস্থার যে চিহ্নটি আমাদের মধ্যযুগের সাহিত্যে বিভিন্ন রূপে মাঝে মাঝেই প্রতিভাত হয়েছে, সেই ফার্টিলিটি কাল্টও আমার কাছে খুব স্বস্তিদায়ক রিচুয়াল নয়। এ কেমন রীতি, যেখানে সঙ্গমের পর একটি শারীরিক নিখুঁত পুরুষকে কেটে তার রক্তে স্নান করাতে হবে ধরিত্রীকে, উর্বরতার জন্য! সম্প্রতি খাসি সম্প্রদায়ের মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা নিয়ে একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে দৈনিক পত্রিকায়, যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা হয়তো লৈঙ্গিক রাজনীতির এই সমস্যাটা ধরতে পেরেছেন কোথাও। আমার কাছে নারীবাদ অন্য কথা বলে। যতদিন নারী-পুরুষের সমানাধিকার অর্জিত না হচ্ছে, ততদিন আমি নারীর অধিকারের লড়াইয়ে আছি, তার প্রাপ্য বুঝে নেওয়ার লড়াইয়ে আমিও আছি। ততদিন পর্যন্ত আমি নারীবাদী।

    এই লেখা সেজন্য নয়। এই লেখা আর্কেটাইপের বিরুদ্ধে। আমাদের সবকিছুরই আর্কেটাইপ থাকে। আমাদের প্রগতিশীলতার আর্কেটাইপে অনেক বেনোজল ঢুকে পড়েছে, তারই দু’চারটি যদি চিনিয়ে দেওয়া যায়, আমাদের বুঝে নিতে সুবিধে হয় ‘তুমি কোন দলে’।

    * * *

    সুমনের একটি বিখ্যাত গান আছে, আমার অনেক বন্ধুর ফোনের রিংটোন সেটি, অনেক গানের আড্ডায় চোখে জল নিয়ে এই গানটা গাইতে দেখেছি তাদের।

    “আমি চাই সাঁওতাল তার ভাষায় বলবে রাষ্ট্রপুঞ্জে
    আমি চাই মহুল ফুটবে শৌখিনতার গোলাপ কুঞ্জে।
    আমি চাই নেপালি ছেলেটা গিটার হাতে
    আমি চাই তার ভাষাতেই গাইতে আসবে কলকাতাতে।”

    আমি কোনোদিন গানটাকে গাইতে পারিনি। আমার গানটাকে মনে হয়েছে, সিস্টেমের আপোষকাম। সাঁওতালের কী দরকার পড়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের? রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতির যে মান্য-ন্যাকামি, সাঁওতাল তার থোড়াই কেয়ার করে। সাঁওতালের কোনো দায় নেই ওই সিস্টেমের চূড়ায় যাওয়ার, সিস্টেম তার কাছে, তার গল্প শুনতে, তার লড়াইয়ের কথা শুনতে আসবে তার ঘরে, সিস্টেমের নিজের টিকে থাকার গরজে। একই যুক্তিতে নেপালি ছেলেটার কলকাতায় গান গাইতে আসারও কোনো দায় নেই। তা না হলে রাষ্ট্রপুঞ্জ-রাজধানী-রাষ্ট্রযন্ত্র নামক রাষ্ট্রীয় ন্যাকামির গুরুত্বই স্বীকার করে নেওয়া হয় প্রকারান্তরে।

    নারী নিয়ে আলোচনায় হয়তো এটার প্রত্যক্ষ গুরুত্ব নেই, কিন্তু এই একই বুনোট, একই কাঠামো আমাদের মেকি প্রগতিশীলতায়, আমাদের মেকি আধুনিকতায়, মেকি নারীবাদে বার বার ব্যবহৃত হয়েছে, সেই কাঠামোটাকে চিনে নিতে হবে।

    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই বিখ্যাত কবিতাটা মনে করা যাক, ‘কবির মৃত্যুঃ লোরকা স্মরণে’। কবিকে যখন বেঁধে রাখা হয়েছে,
    “কবির স্বতঃপ্রবৃত্ত ঠোঁট নড়ে উঠলো
    তিনি অস্ফুট হৃষ্টতায় বললেন :
    বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক!
    মানুষের মুক্তি আসুক!
    আমার শিকল খুলে দাও!”

    কী অসাধারণ লাইনগুলো না? মনে হয়, এই কবির মত সাম্যবাদ আর কে পালন করেছে জীবনে? লোরকা যেমন সাম্যের আদর্শে বিশ্বাসী, সুনীলও তেমনই, আমাদের মনে হতে থাকে। পরের লাইনে এসেই...
    “কবি অত মানুষের মুখের দিকে চেয়ে খুঁজলেন একটি মানুষ
    নারীদের মুখের দিকে চেয়ে খুঁজলেন একটি নারী
    তিনি দু’জনকেই পেয়ে গেলেন”
    হোঁচট খেতে হয়। এই লাইনগুলোর মানে একটাই। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বাভাবিক চেতনায়-অবচেতনে মানুষ মানে শুধুই পুরুষ! আর নারী? আক্ষরিক অর্থেই মনুষ্যেতর! অন্তত ভিন্ন! বা, আর যাই হোক, মানুষ বলতে যা বোঝায়, তা নয়! তাই, তারপর যখন পড়ি,
    “কবি আবার তাদের উদ্দেশ্যে মনে মনে বললেন,
    বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক! মিলিত মানুষ ও
    প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব বিপ্লব!”
    মনে হয়, রাখ তোর পুরুষগন্ধী বিপ্লব! এদের জন্যই মেয়েরা বিপ্লবের সেবাদাসী হয়, তারা আর বিপ্লবী হয়ে ওঠে না।

    শীর্ষেন্দু, আমাদের কালের জনপ্রিয়তম কথাশিল্পী। তিনি আদ্যন্ত একটি ‘মনু’। অসাধারণ গদ্য বলার ঢং, বিনীত স্বরের আড়ালে অমানবিক কিছু কথা তিনি আমাদের বলে যান, আমরা আহা-বাহা করতে করতে খেয়ালই করি না, কতটা পিছিয়ে গেলাম আমরা। ‘পরিহাটির হরিণ’ উপন্যাসে মধুরা বলে একটি চরিত্র আছে, খানিকটা রোহিণী-টাইপ। সেই উপন্যাসে ‘পবিত্রতা’র একটা মাপকাঠি আছে, সেটা হল ওই সোনালি হরিণটা। অর্থাৎ, যারা ‘ভার্জিন’, ‘পবিত্র’, তারা ছাড়া সেই হরিণটাকে কেউ দেখতে পায় না। তো, সেই মধুরা, স্বামীর পরনারী সংসর্গের শোধ নিতে নিজেও পরপুরুষ সংসর্গ করে, তারপর গর্ভস্থ সন্তান নিয়ে আত্মহত্যা করতে যায়। একটি ‘পবিত্র’ কিশোরী তাকে নিরস্ত করলেও সে কাঁদতে থাকে, কারণ, সে পরিহাটির সেই ‘নিষ্পাপ’, ‘অপাপবিদ্ধ’ হরিণটিকে আর দেখতে পাবে না। হ্যাঁ, এই উপন্যাস বিশ শতকে লেখা। আরো অনেককিছু আছে। ‘যাও পাখি’তে রিখিয়া আর সোমনাথের বয়সের পার্থক্য নয় বছর, তার পেছনে যুক্তি, বয়সের পার্থক্যে পরস্পরের শ্রদ্ধা বাড়ে, ‘চক্র’তে সোহাগ আর বিজুর প্রেমে বয়সের ফারাকেও একই যুক্তি। কোন শ্রদ্ধা? কীসের শ্রদ্ধা? একজন মানুষ আরেকজনকে খামোখা ‘শ্রদ্ধা’ই বা করতে যাবে কেন? বয়সের ফারাক থাকলে, অর্থাৎ মেয়েটি পুরুষটির চেয়ে বয়সে ছোট হলে, বেশ অনেকটা ছোট হলে ডমিনেট করতে বা শ্রদ্ধা পেতে কোনো অসুবিধে হয় না তার, শীর্ষেন্দু, এসব বিশ্বাস করেন বলেই, এসব লিখতে কোনো অসুবিধে হয় না তাঁর।

    বঙ্কিমের উপন্যাসের কথা ছেড়ে দিই বরং, তিনি সামাজিক জ্যাঠামশাইগিরি করতে গিয়ে, হিন্দুত্ব আর পুরুষতন্ত্রকে মজবুত করতে গিয়ে নিজের বহু উপন্যাসের বহু অকল্পনীয় আধুনিক সম্ভাবনাকে গর্ভেই খুন করেছেন। আমরা বরং আমাদের প্রফেট রবীন্দ্রনাথের দিকে তাকাই।

    ‘চিত্রাঙ্গদা’র একটি অংশ, নারীদিবসে যেটা শেয়ারের হিড়িক ওঠে, অনেকে নারী-স্বাধীনতার রাবীন্দ্রিক সার্টিফিকেট হিসেবেও ধরিয়ে দেন লাইনগুলিকে, সেটাকে দেখা যাক -
    ‘আমি চিত্রাঙ্গদা।
    দেবী নহি, নহি আমি সামান্যা রমণী।
    পূজা করি রাখিবে মাথায়, সেও আমি
    নই; অবহেলা করি পুষিয়া রাখিবে
    পিছে, সেও আমি নহি। যদি পার্শ্বে রাখ
    মোরে সংকটের পথে, দুরূহ চিন্তার
    যদি অংশ দাও, যদি অনুমতি কর
    কঠিন ব্রতের তব সহায় হইতে,
    যদি সুখে দুঃখে মোরে কর সহচরী,
    আমার পাইবে তবে পরিচয়।’

    এই মেয়েটি, ছদ্ম আধুনিকা, যে স্বনির্ভর নয়। তাকিয়ে আছে পুরুষেরই দিকে। সে পুরুষের পাশে থাকতে চায়, নিজে কিচ্ছুটি করতে পারে না, পুরুষের সমস্ত কঠিন কাজে পুরুষেরই পাশে সে থাকবে, যদি পুরুষটি অনুমতি দেয়, তবেই। ‘অনুমতি’ শব্দটা আছে বলেই মনোভাব চিনতে অসুবিধে হয় না। আরো অনেক অনেক চিহ্ন আমাদের চিনিয়ে দিয়েছেন হুমায়ুন আজাদ, তার একটি উল্লেখ করলাম মাত্র।

    * * *

    এগুলোকে, এই মিথ্যেগুলোকে, চালাকিগুলোকে রিজেক্ট করতে শেখা উচিত আমাদের। যুদ্ধে বেনোজল ঢুকে পড়লে সে আর যুদ্ধ থাকে না, লড়াই হয়ে যায়।

    ধর্ষণের প্রতিবাদে সংগঠিত মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ‘কেন হাঁটছ?’ প্রশ্ন করা হলে যে ছেলেটি জবাব দেয়, ‘আমার মা-বোনের জন্য হাঁটছি আমি’, তাকে যেমন ছুঁড়ে ফেলা উচিত, এই লেখাগুলোকে, এই সূক্ষ্ম দ্বিচারিতাকেও সেভাবেই ছুঁড়ে ফেলা উচিত আমাদের। এই ‘মা-বোন’ মনোভাবের পিছনেই আছে পুরুষের সম্পত্তির অধিকারের কথা, যেখানে প্রত্যেকটি মেয়েই কোনো না কোনো ভাবে কোনো পুরুষের সম্পত্তি।

    যেদিন আমরা আমাদের সহ-নাগরিকের অধিকারের জন্য, আমার মত আরেকটি মানুষ তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত বলেই সোচ্চার হব, তাকে আমাদের সম্পত্তি ভাবব না, সেদিন থেকেই যুদ্ধ শুরু হবে, নয়তো এ সেই লড়াই-লড়াই খেলা হয়েই থেকে যাবে। যুদ্ধটা সাহিত্য দিয়েই শুরু হোক না।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৮ মার্চ ২০১৬ | ৩৪৮০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | ***:*** | ১৩ মার্চ ২০১৬ ০৫:৪৯56359
  • "দুজন বন্ধু হবে, মতবিনিময় ঝগড়া সব করবে। কিন্তু কেন নিজস্ব ব্যক্তিত্ব বিকিয়ে দেবে? "

    এক হাজারবার সমর্থন, এক্কেবারে মনের কথা লিখেছেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধুত্বই যদি না হলো তো গোটা জীবনটা একসাথে কাটাবো কিভাবে? কোথায় একজন আরেকজনের সাথে মজা করবে, দরকারে সাথ দেবে, তা না করে একজন আরেকজনের ওপর গার্জেনি ফলাতে গেলে পুরো জীবনটাই কি বোরিং হয়ে যায় না?
  • | ***:*** | ১৩ মার্চ ২০১৬ ০৮:৪৯56360
  • ওহো! সে দেখলাম বাণী বসুর লেখাটার কথা জিগ্যেস করেছিলেন। ওটা প্রতিদিন কাগজের 'রোব্বার' সেকশানে বেরিয়েছিল গত রবিবার। epratidin.in খুললে দেখবেন উপরের দিকে রোব্বার নামে একটা ট্যাব আসে।। ওখানে থেকে গত সপ্তাহেরটা পাওয়া যাবে।

    এখানেই বাকীদেরও জানিয়ে রাখি, আমার মাথা গরম হয়েছিল তার কারণ হল উনি সমানে 'নিম্নশ্রীণীর মানুষ' 'ইতরশ্রেণীর মানুষ' ধর্ষণ করতে নেমে পড়েছে --- এইসব লিখে যাচ্ছিলেন। আমি শেষ অবধি পড়তে পারি নাই, খানিক পড়েই অন্য লেখায় চলে গেছি।
  • 0 | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৩:০০56361
  • মার্কেট তার মুনাফার লোভে ফেন্স্‌-সিটার হতেই পারে। যেমন অ্যাডাল্ট্‌ লোকজন নিজেদের ইচ্ছে-রুচি মতন পোষাক পরতেই পারেন। গায়ের জোর, মেধা, যৌন আবেদন, এসবও চিরকাল ধ'রে নিজেদের মতো ক'রে প্রভাবিত করা অথবা ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করে যাবে।
    কিন্তু কাউকে শুধু মানুষ হিসেবেই তার প্রাপ্য বেসিক অধিকার, সম্মান, এ'সব দেওয়াটা যে শুধুমাত্র আইনী ন্যায়ের খাতিরে নয়, বরং সেটা ছাড়িয়ে সেই আইনটা যার ভিত্তিতে তৈরী, সেটা যে সেই মনুষ্যত্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটা গুণ, এবং সেটা না দেওয়াটা মনুষ্যত্ব/মানবিকতার বিরোধিতা, এ'টুকু বোঝানো/শেখানোর চেষ্টা করায় আপত্তি উঠছে কেন?
  • সে | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৩:০৬56362
  • এইখানেতেই তো মুশকিল। একদম ঠিক জায়গাটা ধরেছেন। "কাউকে শুধু মানুষ হিসেবেই তার প্রাপ্য বেসিক অধিকার, সম্মান, এ'সব দেওয়াটা যে শুধুমাত্র আইনী ন্যায়ের খাতিরে নয়" - এইটে যারা বুঝতে চায় না, তাদের দরজায় মাথা কুটে মরলেও তারা বুঝবে না। তানানা বানানা করে হাজারটা বিভেদ বৈষম্যের যুক্তি সাজিয়ে দেখিয়ে দেবে, পাছে সমানাধিকার দিতে হয়।
  • pi | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৩:৪৬56363
  • অরণ্যদা, আপনাকে বা আপনার পোস্ট নিয়ে কিছু বলিনি তো !
  • sm | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৪:০৯56364
  • যা বাব্বা,সমান অধিকার দেওয়া অত সোজা নাকি?রিক্সা চেপে তো অনেক ঘুরেছেন, প্রেম করেও থাকতে পারেন। তাবলে কোনো দিন স্বপ্নে ভেবেছেন, রিক্সাওয়ালা কে সিটে বসিয়ে; আপনি টানছেন।জমাদার এর বাড়ি গিয়ে বছরে একদিন, তার বাড়ি এজ এ, গুড জেস্চার পায়খানা সাফ করে দিয়ে আসছেন।মুখে মারিতং জগত হলে তো চলবেনা।
    যার যে কাজ সেই কাজ করতে দিন।
    স্বামী, স্বামীর মতো,আর স্ত্রীকে তার মতো থাকতে দিন।গলায় গলায় বনধু না হলেও চলবেক। পারলে দুজন দুজন কে হেল্প করুন।
    রোল রিভার্সাল খুব কাজের কথা না।
  • pi | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৪:৩০56365
  • কোনটা স্ত্রীর মত, কোনটা স্বামীর মত সেটা কে ঠিক করে দিয়েছে ?

    যাহোক,' স্বামী, স্বামীর মতো,আর স্ত্রীকে তার মতো থাকতে দিন।' এটা একটু বুঝিয়ে দেবেন ?
    স্বামী বাইরের কাজ করবেন আর স্ত্রী ঘরের কাজ ?
  • dc | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৪:৩২56366
  • জমাদারের কাজ বুঝি জমাদারি করা?
  • Santanu | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৪:৪৪56368
  • স্বামী, স্বামীর মতো,আর স্ত্রীকে তার মতো থাকতে দিন।' এটা একটু বুঝিয়ে দেবেন ?

    দেখি পাই কে বোঝাতে পারি কি না।

    এর মানে হলো জি লে আপনি জিন্দেগী, স্ত্রী বাইরের কাজ করতে চাইলে, স্বামী ঘরের কাজ করতে চাইলে, কেউ কিছু না করতে চাইলে, যার যা প্রাণে চায় কর।
  • হেঁহেঁ | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৪:৪৪56367
  • স্ম রোলের সঙ্গে প্রফেশনকে গুলিয়েছেন।

    রোল রিভার্সাল নয়, রোল রিডিফাইন করা। সেটা স্ম এবং আরো কিছু মানুষ না চাইলেও আটকানো যাবে না।

    ভারতে আরো দু তিন জেনারেশন লেগে যেতে পারে অবিশ্যি।

    কিন্তু রোখা যাবে না হে স্ম।

    এমন দিন আসছে যখন বাবাদের বাচ্চাদের ডায়াপার বদলাতে অস্বীকার করা, কিম্বা রান্না না করতে পারা সামাজিক লজ্জার কারন হিসেবে গন্য হইবে।
  • dc | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৪:৫১56369
  • মেট্রো শহরগুলোতে কিন্তু রোল রিডিফাইন এর সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। স্বামী-স্ত্রী একসাথে সংসার চালায়, যে যখন পারে সংসারের কাজে হাত লাগায়, স্ট্রিক্ট কোন বাউন্ডারি নেই, এরকম পরিবার আজকাল অনেক চোখে পড়ে। তবে হ্যাঁ, বাকি ভারতে এই রোল ব্রেকিং বা হয়ারার্কি ব্রেকিং ছড়াতে হয়তো আরো এক দু জেনারেশান লাগবে।
  • pi | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৫:০১56370
  • শান্তনুদা, উনি সেটা বলতে চাইলে রোল রিভার্সাল কাজের কথা নয় বললেন কেন ?

    আপনি যেটা বল্লেন, সেটা আমিও বলি। ও নিয়ে কোন তক্কো নাই।
  • santanu | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৫:১৬56371
  • বোঝাতে বললে, বুঝিয়ে দিলাম, কোনো তক্ক নাই। (কি যে ভালো ব্যাপার)।
    তুমি বল, আর আমার স্কুলের জুনিয়র ও (তোমার বর উত্তরপাড়া গভমেন্ট তো?) যদি বলে, তালে তো হু লা লা।
    বাকি 'উনি' রোল রিভার্সাল না কি বললেন, তাতে কি বা এলো গেল।
  • pi | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৫:২৪56372
  • ঃ))
  • sm | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:১০56373
  • পাই, না বোঝার চেষ্টা করলে বোঝানো মুশকিল। শান্তনু অনেকটা বলে দিয়েছেন।
    আমার ক্ষেত্রে বলি।বাপের জম্মে, বাচ্চার ন্যাপি চেঞ্জ করতে, বনধু বান্ধব কাউকে দেখিনি। তা,বাচ্চা জন্মানোর পর, ঝুনো নারকেল, বুড়ি নার্স টি, আমাকে আদেশ দিল, বাচ্চার প্রথম ন্যাপি, বাবা চেঞ্জ করিবেক।অগত্যা-
    বাড়িতে এসে বউই চেঞ্জ করত। তবে দরকারে, বা বউ বাইরে শপিঙে গেলে, আমি করতাম।দুজনেই ভালোমত, এনজয় করতাম। প্রায় হপ্তা তিনেক আমি ই রান্না করতাম। তাতে কি হলো? দরকারমত সাহায্য করা হলো। অতো গলায় গলায় বন্ধুত্ব না পাতিয়েও।
    কেউ এখনো অবধি কাউকে দিকতেট করেনি, এটা তোমার কাজ আর এটা আমার। কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ে, অন্যের কাজটা নিয়ে নিতেও চায় নি।
    আমি যদি বাচ্চাদের পড়ানো টা ভালো পারি; আমার সেটা করা উচিত আর বউ যদি রান্না ভালো পারে, সেটা তারই করা উচিত।
    তবে এটা ঠিক, মা হলে কাজের চাপ একটু বেশি থেকেই থাকে।দি এন্ড।
  • aranya | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:২৯56374
  • 'দুজনেই ভালোমত, এনজয় করতাম'

    - ইয়ে, sm, এই 'এনজয়' শব্দ টা কি ঠিক?

    আম্মো গুচ্ছ বার বাচ্চার ডায়াপার চেঞ্জ করেছি বটেক, তবে খুব একটা এনজয়েবল কাজ না :-)
  • সে | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:৩৬56375
  • বর বৌ গলায় গলায় বন্ধু না হলে সে সংসার কেমন হবে? তাতে ভালবাসাই তো থাকবে না।
  • sm | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:৩৮56376
  • না, না প্রথম প্রথম ভালই লাগে ।পরে রাত্তিরে ঘুম ভাঙ্গলে বড়ই বিরক্ত লাগে।
    তবে কি অভ্যেস হয়ে যায়।আর কাজ করার মধ্যে আনন্দ আছে বই কি।
    প্রতিদিন পড়াশোনা করা নিশ্চয় ভালো লাগতো না। কিনতু এই যে টকা টক পাস করে, করে খাচ্ছেন , এটা তে আনন্দ নেই। পরীক্ষায় পাস করলেও তো আনন্দ হয়।
    বাচ্চা কে একটু একটু বড় হতে দেখলে আর তাতে কিঞ্চিত আমার অবদান আছে; এই ভেবে একটুস আনন্দ; এই আর কি!
  • sm | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:৪০56377
  • অত ভালোবেসে কাজ নাই। ওতে সংসার করা হবে না।যা পাচ্ছেন; সেটাই যথেষ্ট। বেশি ভালো বাসতে চাইলে; পরকিয়া করতে হবে।সাফ কথা।
  • sm | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:৪১56378
  • আর হ্যা, ভালবাসা একমুখী। অর্থাত হাঁদা একটাই থাকে আর অন্যজন সেটা এনজয় করে।
  • সে | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:৪৩56379
  • aranya | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:৪৭56380
  • জাস্ট জোকিং। মেয়ের ছোটবেলাটা খুব মিস করি। কি করে যেন বড় হয়ে গেল
  • pi | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:৫৫56381
  • বর যদি রান্নাটা ভাল পারে আর বউ বাচ্চাকে পড়ানো, তাহলে সেটাই করা উচিত। এবং ভাইসি-ভার্সা।
    এটা বলে থাকলে বুঝ্লাম ও কোন তর্ক নাই ঃ)
  • sm | ***:*** | ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৬:৫৭56382
  • থ্যান্ক ইউ, ভেরি মাচ।
  • Atoz | ***:*** | ১৫ মার্চ ২০১৬ ০১:২৪56383
  • হাঁদা একটাই, অন্যজন সেটা এনজয় করে। অন্যজন ভোদা। সে ভোদাফোন ব্যবহার করে।
    ঃ-)
  • :-P | ***:*** | ১৫ মার্চ ২০১৬ ০২:০৬56384
  • অন্যজনকে চন্দ্রবিন্দু দেওয়া হোক। হিনী-ফিনি জেন্ডার গ্যাপগত কারনে মুলতুবী।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন