এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • চ্যাং মুড়ি কানি এবং অন্যান্য

    Somnath Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৫ মার্চ ২০১৬ | ২৮৫৩ বার পঠিত
  • পার্লামেন্টে সাম্প্রতিক জেএনইউ বিতর্কের শুরুর দিন স্মৃতি ইরানি জেএনইউর ছাত্রদের প্রচারিত একটি লিফলেট থেকে পড়ছিলেন, যেখানে দুর্গাকে একজন বেশ্যা হিসেবে দেখানো হয়েছে যিনি মূলবাসী রাজা মহিষাসুরকে ছলনা করে বধ করেন। স্মৃতিজি পড়ছেন যখন সংসদ জুড়ে শেম শেম ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এরপর তিনি বলেন যে, এই কী বাক্‌ স্বাধীনতা, কলকাতার রাস্তায় কেউ এরকম বলতে পারবে? পুরাণেতিহাসের এই ভিন্নতর ভার্সন নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে। একটি মত শুনছি কোনো জনজাতির মধ্যে নাকি এইরকম লোকগাথা আছে। দুর্গাপ্রতিমা গড়তে বাংলায় বেশ্যাদ্বারমৃত্তিকা ব্যবহার হয়; কিম্বা দেবীমাহাত্ম্যে যেভাবে বিভিন্নদেবতার তেজ বা অগ্নি (যা এক অর্থে, বীর্য) নিয়ে দুর্গার সৃষ্টি বর্ণনা আছে, তা থেকে এই আলোচনার সূত্র পাওয়াও যেতে পারে হয়ত। আবার এরকম মতও শুনছি, যে লিফলেটটি নাকি ভুয়া। তো এইসব ডিসকোর্সের বাইরে যেটা আমাকে প্রভূত খটকা দিল, তা হল, এই কথাগুলো নাকি কলকাতার রাস্তায় বলা যাবে না। হয়ত আমি এবং মন্ত্রী মহোদয়া পৃথক কলকাতা চিনি। কিন্তু, প্রথমেই মনে হল, কলকাতার রাস্তায় তো আমরা কলেজকাল থেকে মহায়ন আবৃত্তি করে বড় হয়েছি। মহায়ন প্রসঙ্গ পরে আবার আসবে বলে এখন দু কথায় ভূমিকা সেরে নিই। মহাভারত এবং রামায়ণের বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে যৌনসংসর্গের এক শহরপাঁচালি মহায়ন। মহায়নের সাহিত্যগুণ হয়ত একটা পৃথক লেখার দাবি রাখে, যেখানে এইসব পদগুলি পাওয়া যায়-
    ‘আকাশের প্রেক্ষাপটে সারিসারি নুনু/ তাহাতে দোলায় পাছা মহাবীর হনু’—পাঠক চিত্রকল্প, জাস্ট চিত্রকল্পটি ভাবুন। কিম্বা ‘কলিযুগে ব্যাভিচার বিচিত্র রকম/ গান্ধারীর বিছানায় অঙ্গদের লোম’। বা এই ‘অন্ধমুনি গন্ধে চেনে চোখেতে দেখেনা’
    অনুপ্রাসে অন্ধত্বের এই বর্ণনা লিখতে পারলে যেকোনও কবি গর্ববোধ করতেন। তো নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে দেখেছি গুণকর্মবিভাগসহ কলকাতা ও আশেপাশের প্রায় সব কলেজের ছেলেদেরই মহায়ন আউড়ে যেতে। এবার কলকাতার রাস্তার এই সহনশীলতা নেই যে সে দুর্গানামের ব্ল্যাসফেমি সইতে পারবে না এ বিশ্বাস হয় না। তাও একবার ভাবলাম, যেমন আজকাল অনেকে বলে, যে এসব শহুরে এলিটপনা, মাটির গল্প আলাদা। কিন্তু, আমাদের ঐতিহ্য বলে যে সাংস্কৃতিক চর্চার কথা আসে, তাতে তো এধরণের প্রয়োগ অজস্র। মনসামঙ্গলে সবচেয়ে বেশি খিস্তি তো মনসাকেই করা হয়েছে, রূপ নিয়ে, অন্ধত্ব নিয়ে। কিম্বা আমাদের গ্রামবাংলার কবি পদ বাঁধছেন- কদমগাছে উঠিয়া আছে কানু হারামজাদা! শুধু লোকশিল্পই বা কেন, স্বয়ং মহাভারত কৃষ্ণকে স্থানে স্থানে কী খিস্তিমন্দই না করেছে। এইখানে, আমার একটা হাইপোথিসিস লিখে ফেলি। হিন্দুধর্ম বলে আমরা যেটাকে আজ দেখি, সেটা অতটা খারাপও নয়, যতটা আরএসএস-সংঘপরিবার পোর্ট্রে করে। আমার খানিকটা মনে হয় মারাঠারাজের একটা ক্ষয়িত চেহারা এই আরএসএস এর রাজনীতি। ফলে কিছু বিশেষ মতবাদকে হিন্দুত্বের নামে এগিয়ে দ্যায় এরা, যেগুলো আগ্রাসী এবং অসহিষ্ণু, আর হ্যাঁ, তুমুলভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদী, পেশওয়াপন্থের মতন। ফলে এই ভার্সন, এই যে দুর্গাকে বেশ্যা বললে লোকে পার্লামেন্টে ‘শেমশেম’ করবে, এর বাইরে বাংলা তো বটেই সম্ভবতঃ বাকি ভারতেও সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মের এবং মূলস্রোতী সমাজের আসল স্পেসটা পড়ে আছে। মনসামঙ্গলের কথায় আসি, মনসার জন্ম বর্ণনা করতে গিয়ে কবি লিখছেন শিবের হস্তমৈথুন, বাঁহাতে আঁজলা করে নিজের বীর্য নেওয়া এবং জল ভেবে পাখি এসে সেই বীর্য খেয়ে নিচ্ছে- এরকম বর্ণনা, যা আজকের দিনে পড়লে সুকুমারমতি ভদ্রলোক ভদ্রমহিলার বমনের উদ্রেক হবে। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে রাধাকৃষ্ণের পারস্পরিক উক্তি, দূতীর বক্তব্য কিম্বা শাক্ত/তান্ত্রিক ধারার সাধক কবিদের কালীবর্ণনা এইসব গায়ে মেখে যে ধর্ম গড়ে উঠেছে, সেখানে আর যাইহোক বাকস্বাধীনতার চোখ রাঙানোটা অধর্মাচরণ। আর, অন্যান্য দেবতাদের, যাদের হ্যাটা করা হত, বাংলা সংস্কৃত দুইভাষার সাহিত্য জুড়ে তাদের নিয়ে কী লেখা হত সে না হয় এখন তোলাই থাকুক।
    এইবার মারাঠারাজের পরে আরেক যুদ্ধবাজ রাজ ভারতে আছড়ে পড়ে, খুবই প্রবলভাবে পড়ে। এবং ব্রিটিশরাজের পিঠে ছিল আরও বড় আগ্রাসী ধর্মের বোঝা। সুচতুরভাবে সাবাথ ডে হয়ে যায় সেকুলার দেশের ছুটির দিন। এভাবে সেই ধর্ম আমাদের চারদিকে এমনভাবে ছড়িয়ে যায়, বিদ্যুৎ মেঘে যেমন লুকালে না পাই অন্বেষণ। ফলে আমরা ব্ল্যাসফেমি শিখি। যে শ্রীরামকৃষ্ণ নিজের গুরুকে ন্যাংটা বলে মেনশন করতেন, তাঁর ঔপনিবেশিক শিষ্যেরা লেখেন- ‘ভৈরবী কীরূপে তাঁহাকে দীক্ষা দিয়েছিলেন, তাহা আমরা আলোচনায় আনিতে চাহি না’।
    তো আমরা দেখতে পাই, বাক্‌স্বাধীনতা এবং বিভিন্ন অদ্ভুত মত, বিরোধীমত, অশ্লীল গা গুলিয়ে দেওয়া কথাবার্তা চালানোর এক চর্চা আমাদের প্রচলিত ধর্মের মধ্যে দিব্যি চলে আসছিল, ঔপনিবেশিক শিক্ষা যার মধ্যে পুরোটা দাঁত বসাতে পারে নি।
    কিন্তু, এইখানে ধর্ম বলতে এতক্ষণ আমরা একটা ধর্মের কথাই বলছি, এখানে সংখ্যাগুরুর ধর্ম যেটা। আর, তার পাশাপাশিই প্রচুর আদানপ্রদান ও প্রচুর পাঁচিলসহ প্রায় হাজার বছর আরো কিছু ধর্ম এখানে এক্সিস্ট করে গ্যাছে। তাদের মধ্যে অবশ্যি প্রবলতম ইসলাম। এইখানে এসে অস্বস্তির জায়গাটা শুরু হয়। সম্প্রতি ইলমবাজারে সুজন মুখার্জি নামে এক তরুণ ইসলামি মহায়ন লেখে। মানে মহম্মদ, আল্লাহ, খাদিজা, আমিনা,আয়েশা, আলি প্রমুখের মধ্যে যৌনসম্পর্ক বিষয়ক ছড়া। এর ফলশ্রুতিতে সেখানে প্রায় দাঙ্গা হয়ে যায়, সুজন ঘরছাড়া হয়। অসমর্থিত সূত্রে একজনের মৃত্যু অবধি হয় সেই দাঙ্গায়। এইধরণের ঘটনা এর আগে তসলিমা নিয়ে কলকাতায় হয়েছে এবং বাংলাদেশে সম্প্রতি অনেক মুক্তমনা লেখককে আহত ও নিহত হতে হয়েছে এই কারণে। এখানে আমাদের অস্বস্তির জায়গা দুভাবে আসে। একদিকে বাক্‌স্বাধীনতায় বিশ্বাস থেকে ইসলামের নামে স্বাধীনভাবে বলাকে সমর্থন করতে হয়, আর করতে গেলেই দেখি সেই স্বাধীনতার বিনিময়ে হত্যা এমন কী দাঙ্গা অবধি হয়ে যাচ্ছে। একজনের একটা ফেসবুক পোস্টের দায় মেটাচ্ছে সহস্র জনতা। আমরা ঘেঁটে যাই, মানবিক অবস্থান থেকে বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে যাব না কি নিজের প্রতি বিশ্বাস্ত থেকে দাঙ্গার বিনিময়েও একজনের ইচ্ছেমতন লেখা/বলার অধিকারকে সমর্থন জানাব। আরেকদিকে, আরএসএস পন্থীদের দিক থেকে টিপ্পনী আসে যে ফ্রিডম অফ স্পিচের ধ্বজাধারীদের ক্ষমতা শুধু নির্বিবাদী হিন্দুধর্মকে আক্রমণ করার। ইসলাম নিয়ে মুখ খোলার ঔকাদ তাদের নেই।
    অবশ্য বাংলাদেশ ইরান এমন কী পাকিস্তানেও আমরা দেখছি ইসলামিক দুনিয়ার মধ্যে জঙ্গির চাপাতি উপেক্ষা করে লোকে বাক্‌স্বাধীনতার লড়াই লড়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, ভারতে কাজটা হয়ত আরেকটু অন্যরকম। আমাদের হাতে অলরেডি একটা মডেল আছে যেখানে ধর্মের অঙ্গ হিসেবেই দেবতা অবতার-আদিকে নিয়ে যথেচ্ছ খিল্লির চর্চা আছে। চারদিকে প্রবলতররা যদি ব্ল্যাসফেমি চাপাতে আসে, আমি আমার লৌকিক হিন্দুধর্মের মধ্যে থেকে উল্টো মডেলটাকে তুলে ধরব। আর সবার আগে সেটা বিজেপিবাহিনীর উল্টোদিকে তুলে ধরব, কারণ তারা আমাদের ঐতিহ্যের নিজস্ব অর্জনগুলির ওপর আগ্রাসী একরোখা ধর্মমত চাপিয়ে দিচ্ছে। আর তার পাশেই কাজটা হবে পাঁচিলের ফোকরগুলো দেখার। ইসলামের যে ভার্সনটা আমি জানি, তাতে আল্লাহ,কোরাণ,নবি কারুর নামেই কিছু বলা নিতান্ত নাজায়েজ। কিন্তু সেই একটাই কি ভার্সন? এক হাজার বছরের আদান প্রদানের ইতিহাসে ভারতের বিভিন্ন লৌকিক মত আর ইসলামের অজস্র সংমিশ্রণ হয়েছে, সেখানে কি নির্মিত হয়েছে স্বাধীনতার কোনও সূত্র? এখানে চর্চার দরকার, লোকের মাঝে গিয়ে জানার দরকার। কেঁদুলির মেলায় দেখেছি নাকে তিলক বোষ্টম পরিবার মুসলমানের দোকানে রাতের ভাত খাচ্ছেন। এইসূত্র বাদ দেব কেন? বোষ্টম কানুকে হারামজাদা বলে দিতে পারেন গানে, তার পাশের ঝুপড়ির ফকির আলি-ফতিমার প্রেম কী ভাষায় গান?
    সব থেকে বড়কথা, হিন্দুধর্মের মোড়কে যত লোকায়ত ধর্ম আছে, তারা রন্ধ্রে রন্ধ্রে কালিকে ল্যাংটোমাগী বলার কৃষ্ণকে ছুঁকছুঁকে কামার্ত বলার স্পৃহা ও সাহস বহন করছে। যে দুর্গাকে বেশ্যা বলতে চায় তাকে পিটিয়ে মারার কথা বলার জায়গা সেখানে থাকে না। বরং কেন বলছে দেখার, তার বলা ভুল কীনা তা নিয়ে বাহাসের আয়োজন থাকে। যে আজ চ্যাং মুড়ি কানি কাল তাকে ফুল দিয়ে পুজো দিতে হবে এই সম্ভাবনা নাকচ হয় না। আমার মনে হয়, অন্ততঃ এই ঐতিহ্যটুকুকে তুলে ধরাও সভ্যতার একটা বড় লড়াইয়ের অংশই।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৫ মার্চ ২০১৬ | ২৮৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কল্লোল | ***:*** | ০৬ মার্চ ২০১৬ ০২:০১56068
  • এই লেখাটা একটা অনেক বড় অলোচনার পরিসর তৈরী করে দিলো। সোমনাথকে ধন্যবাদ।
    প্রশ্ন - কেন এমন হয় ?
    হিন্দু ধর্মের বাংলা সংষ্করণে এরকম নানন কথা ওঠে। আমি অন্য অঞ্চলের হিন্দু ধর্মের বিষয়গুলো ততো জানি না। তবে অসমে ও উড়িষ্যায় এরকম আছে।
    সোমনাথের এই বক্তব্যটি নিয়ে কি দুপয়সা দেবে কেউ? "হিন্দুধর্মের মোড়কে যত লোকায়ত ধর্ম আছে" - বিষয়টা এমন, নাকি উল্টো? বিভিন্ন জায়গায় লোকায়ত ধর্মকে নিজের মধ্যে ঢুকিয়ে নেবার কাজ হিন্দু ধর্ম বহু করেছে। তার সবচেয়ে গাঁঠমার্কা উদাহরণ বুদ্ধকে অবতার ঘোষনা।
    পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ভারতের তান্ত্রিক দেবীদের ৬৪ যোগীনী করে নেওয়াও তারই একটা। এমনকি এদের অনেকের iconography মিলিয়ে মিশিয়ে হিন্দু কালী তৈরী হয়েছে, এমনও দেখা গেছে। হাতের কাছে সূত্র নেই তাই দিতে পারলাম না। আগে এরকমই কোন একটা আলোচনায় কিছু সুত্র ছিলো।
  • Ekak | ***:*** | ০৬ মার্চ ২০১৬ ০২:৫০56071
  • "যৌনতা আমদানি করে" শব্দবন্ধের মানে কী ? একটা মাদার টেক্সট ছিল যেটা "রিয়েল " তার ওপরে এটা সেটা আমদানি হয়েছে ? এর ইন্টিগ্রিটি গত প্রমান কী ? খেয়াল করবেন "অত দিন আগের কথা কিছুরই প্রমান নেই " বলে কাটানো যাবেনা, স্ট্রাকচারাল ইন্টিগ্রিটি দিয়ে প্রুফ চেয়েছি। কাহিনীর নিজের মধ্যে যুক্তিপরম্পরা দিয়ে প্রমান করুন একটাই মাদার টেক্সট , পুরো কাহিনী ঢপ হলেও কিস্যু যায় আসেনা।

    আমি একটা আলাদা মডেল রাখলুম। কোনোকাএল কোনো এস ইউনিক সাচ মাদার টেক্সট ছিলনা। হাজার হাজার আমদানি-রপ্তানি টেক্সট থেকে যারা যখন ক্ষমতায় এসেছে ও "মূলধারা" মেন্টেন করেছে তারা তাদের মত মাদার টেক্সট বানিয়ে নিয়েছে। অপোস করুন :)
  • i | ***:*** | ০৬ মার্চ ২০১৬ ০৫:৫৮56069
  • একবার পড়লাম, আরো পড়তে হবে। লেখাটা ইন্টারেস্টিং। লেখককে ধন্যবাদ।
    বিষ্ণু দে র 'সাহিত্যের ভবিষ্যত'এ আছে," সংস্কৃত ঐতিহ্যের অতি নিকট হলেও বাংলার প্রাকৃত ঐতিহ্যের স্বভাব ভিন্ন। এমনকি কৃষ্ণকীর্তনের মতো প্রাচীন ও কাঁচা রচনাতেও আমরা সংস্কৃতের রাজসভা শোভন প্রথাসিদ্ধ মানস ও দেশজ লৌকিক মানসের অস্পষ্ট কিন্তু সুস্থ প্রাকৃত ধর্মের বিরোধ দেখতে পাই। লোক মানসের এই স্বাতন্ত্র্য শুধু গ্রাম্যতা বা স্থুলতা ভাবলে ভুল হবে। এ মানস জীবনধর্মী, জীবনভোগী, প্রত্যক্ষ বোদ্ধা মন যা জনসভ্যতারই প্রাণময় লক্ষণ।"

    অন্য প্রদেশের কথা অত বলতে পারব না, তবে যতটুকু পড়েছি, বাংলার সংস্কৃতি আলাদা করে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম বা খ্রীষ্ট কোনদিনই ছিল না; তিন হাজার বছরের্বাংলার ইতিহাস মোটামুটি তাই বলে। এর প্রকৃতি প্রাকৃত বা লোকজ।
    লোকজ সংস্কৃতির প্রধান ধর্মই হল প্রচলিত রীতিনীতি আচার আচরণের সীমা অতিক্রম।

    একবার, এই নিয়ে এক নেট তর্কে খানিকটা লিখেছিলাম এখান সেখান থেকে টুকে। এখন হাতের কাছে কোনো বই নেই যে টুকব।
    লেখক স্বয়ং বা আর কেউ বিশদ লিখলে ভালো হয়।
  • hmm | ***:*** | ০৬ মার্চ ২০১৬ ০৮:১৩56070
  • র‌্যাশনাল অবধি ঠিক অছে, কিন্তু, ভারতচন্দ্র ইত্যাদি যাঁরা রাজসভার প্রভাবে যৌনতা আমদানি করে পুরাণ বেসড সাহিত্য রচনা করেছেন একদা, তাদের কীর্তি সাপোর্টিং এভিডেন্স হিসেবে না এলেই ভালো। ইন ফ্যক্ট মহায়ণ ব্যপারটার সাথে ওয়ান টু ওয়ান ম্যাপিং গন্ডোগোলের। বাকিটা লেখা হলে পড়ব।
  • hmm | ***:*** | ০৭ মার্চ ২০১৬ ০৬:১৪56072
  • অপোজ করবো কেন? বরং সেই কারণেই, একটি দুটি বা, এমনকি, কয়েকটি ক্ষমতাসীনের সময়কার "মূলধারা"র টেক্সটের উদাহরণ দিয়ে - ইহাই ছিল প্রকৃত ভারতীয় সংস্কৃতি, যা মূলত অকপট যৌন - বলা যাবে না। তাই না?
    ঠিক যেমন আজকের শুচিশুভ্র বস্ত্রাবৃত সরস্বতী ইমেজারি প্রামাণ্য মেনে হুসেনের শিল্পকীর্তিকে ব্লাসফেমি কনডেম করা মূর্খামি বলছি। কিন্তু উল্টোভাবে প্রাকৃত ও লোককৃষ্টিগত আঙ্গিকে নগ্নতাই সরস্বতীর আদি অকৃত্রিম তথা, বরং প্রকৃত ইমেজারি বলতে গেলেও যৌক্তিক সমস্যা থাকছে, তাই না?
  • hmm | ***:*** | ০৮ মার্চ ২০১৬ ০১:০০56074
  • "হুদুর দূর্গা" ব্যপারটা বুঝে তাপ্পর বলছি।
  • Ekak | ***:*** | ০৮ মার্চ ২০১৬ ১১:২৯56073
  • না যৌকিক সমস্যা থাকছেনা । কারণ যুক্তি সর্বদাই মডেল নির্ভর।আপনি একটা মডেল এর বাইরে থেকে দেখা ভিশন কে মডেল এর ভেতরে বসে ইমপ্লিমেন্ট করেতে চাইছেন । ভেবে দেখুন :)

    যখন মূলধারা একটা কিছুকে চাপিয়ে দেয় তখন ওরকম "তত পথ " লজিকে সেটাকে বিরোধিতা করা যায়না। কারণ যারা বিরোধী তারা ফিলোসফার বা ঐতিহাসিক নয়। সেটা হলে তারা বিরোধিতাই করতে পারবে না । কোথাও কিছু এগোবে না। তাদের সর্বদাই একদম উল্টো রাস্তা বেছে নিয়ে বিরোধিতা করতে হবে। আপনি যে "লজিক " এর কথা বলতে চাইছেন ওটা ভয়েরিস্ট লজিক। বাইরে থেকে সিস্টেম টাকে দেখা। যারা ফিল্ডে লড়ছে তারা ওই লজিকে চললে বেঘোরে মরবে। তারা যদি দুর্গার এই বেনারসী -বেলাউজ পরা অসুর বিনাশিনী মূর্তির একদম উল্টো মডেল দাঁড় করায় হুদুর দূর্গা আশ্রয় করে সেটাই তাদের পথ। কোনো টেক্সট ই মাদার না কিন্তু যখন একদল ক্ষমতাসীন একটাই টেক্সট কে মাদার বলে চালাতে চায় তখন তার কাছে গিয়ে দেখো বাপু তুমিও ঠিক আম্মো ঠিক বলে লাভ হয়না :)) ইউ আর আইদার এটাচদ অর আ ভিউআর। লজিক ও সেইমতই ।
  • Abhyu | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০২:০২56077
  • নির্মোহ ব-র টইটা কেউ তুলে দাও প্লিজ। সর্বত্র একই কথা আর পোষায় না।
  • Ekak | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৩:৩৩56078
  • ইন্ডিয়া তে মাওবাদী রা ফেইল করে জনসমর্থন পায়নি বলে ইটা একেবারেই লিবারেল ম্যাঅব্যাথী দের বানানো সেল্ফ স্তায়িস্ফ্য়াক্ষণ । যাতে আসল সত্য তা ঢাকা পরে যে ওদের জেনেরাল রা ফেইলীয়র ছিল । একদল মানুষ কে নিলে কেও তীর ধনুক নিয়ে লড়তে পাঠায় না আগ্নেয়াস্ত্র র বিরুদ্ধে । সারা পৃথিবীর বাম অভ্যুত্থান এর পাশে ভারতের মাওবাদী বা নকশাল অভ্যত্থান কে রাখলে ওই ফেইলীয়র গুলি চোখে পরে । সেনা সুলভ নিয়মানুবর্তিতার অভাব , নির্বোধ সেনাপ্রধান , শক্তিশালী রাষ্ট্রের থেকে অস্ত্র আমদানি করতে না পারা এইসব । মাওবাদী রা সাকসেসফুল হলে কি ঘোড়া উরত আমি জানিনা , তাদের সাকসেস চাই ও না , কিন্তু এই জায়গা তা বেজায় হাস্যকর এস ইফ সারা পৃথিবীর সমস্ত বাম অভ্যুত্থান ভোটিং করে -সভা দেকে বৃহত্তর জনগণ কে সঙ্গে রেখে হয়েছে । দিস গাইস ওয়ার ফেইলীয়র ইন ব্যাত্ল্ফীল্ড ম্যানেজমেন্ট । দ্যাটস অল । সেটা মাওবাদের দোষ না । ভারতীয় আবেগসর্বস্ব হেউরেপনার দোষ :)

    বাত এনিওয়ে , এখানে যাদের নিয়ে কথা হচ্ছে তারা আদৌ মাওবাদের মত কোনো চরম্পন্থায় যাচ্ছেনা । এখনো পর্যন্ত ধর্মের যে ভার্সন এরা তুলে ধরেছে তা ভারতীয় ধর্মের ই ভার্সন । তার বাইরে কিস্যু না । বাংলাদেশের ব্লগার হত্যা কলকে পাচ্ছেনা এই তা শুধু সামাজিক কারণ দিয়ে দেখলে তো হবেনা । তাহলে বারংবার ঐরকম এপলোজিস্ট লজিকেই পৌছবেন যে ব্লগার দের উচিত বুঝে শুনে লেখা । বাংলাদেশ একটা প্রচন্ড গরীব দেশ যে সৌদির টাকার ওপর পুরোপুরি হাত তোলা। ওদের ক্ষমতায় নেই প্রশাসন কে মৌলভি দের এগেইনস্ট এ নিয়ে যাওয়ার ।

    ইন্ডিয়ার অবস্থা আদৌ সেম না । একদল গুজ্জু মাইল একটা জোকার কে খাড়া করেছে মানে ওরাই শেষ কথা না । আগরওয়াল লবি আছে। মারাঠি রা আছে । সমাজবাদী পার্টি আছে । প্রচুর ফ্লেভার এখনো আছে যাদের সঙ্গে নিয়ে ইকনমিক স্বার্থ বুঝে বুঝে খলেতে পারলে সরকার কে ধাক্কা দেউআ সম্ভব। দেশ্শুধ্ধু চাদ্দি হয়ে গ্যালো ইটা একটা সৌখিন প্রচার। ওই চাদ্দির মধ্যেই এত রং এর পার্থক্য যে মারামারি লাগানো হাইলি সম্ভব। এর সঙ্গে মাওবাদী-বাংলাদেশী এসব প্রান্তিক সমস্যার যোগ সামি দেখছিনা। ইন্ডিয়ার পরিস্থিতি অতটা প্রান্তিক নয়। প্রান্তিক দেখানো হচ্ছে। এটাও একদরনের ফিয়ার সাইকোসিস ।
  • dd | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৪:৪৭56079
  • "স্তায়িস্ফ্য়াক্ষণ" ?? অ্যাঁ ?

    হ্যাঁ। বিজেপিও একটা হোমোজিনিয়াস মনোলিথিক এনটিটি কিছু নয়। এইত্তো কিছু ছেলে মনুস্মৃতি পোড়ালো। বা অনুপম খের কলকেতায় গিয়ে বলে আসলো ইয়োগী আদিত্যনাথ আর স্বাধ্বী (কী জানি নামটা?)কে বিজেপি থেকে দূর করে দেওয়া উচিৎ। নট ওনলি দ্যাট, জেলে পুরে দেওয়া উচিৎ।

    বেশী বাড়াবাড়ি কল্লেই হুমড়ি খেয়ে পড়বে। পর পর ইলেকশনে দুমদাম হেরেছে।

    ইন্ডিয়া এতো বড়ো দেশ, এতো গভীর ফাউন্ডেশন প্লাস জোরদার জুডিসিয়রী আর মিডিয়া। ফেসবুক। টুইটার। ইন্টারন্যাশনাল নজরদারি। প্লাস গু চ তো রয়েছেই। তব্বে?

    খালি লোককে জুজু দ্যাখানো।
  • hmm | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৫:৪৭56075
  • বুঝলাম। কিন্তু ফিল্ড লজিক যদি গ্যালারি লজিকের তথা ভয়ারিস্ট লজিকের কছে অ্যাক্সেপ্টেবল না হয়, তাহলে আর জনসমর্থনের আশা কোথায়? ওদিকে গ্যালারিতে সর্বদাই ফিল্ডের চেয়ে বেশি জনতা। লড়াইটাই মুখ থুবড়ে পড়বে তথা যোদ্ধারা বেঘোরে মরবে।
    নকশালরা ক্ষমতাসীনদের লজিকের বিরুদ্ধে নিজেদের যে ফিল্ড লজিক অ্যাপ্লাই করেছিল, মাওবাদীরা যেটা করছে, সেগুলো কখনই জনগণসমর্থন পায়নি, যাকে গ্যালারি লজিক বলছি, আর সেটা পাবেও না। সাফল্যও তাদের আসেনি আসছে না। সিমপ্যাথাইজার থাকতেই পারে, কিছু, বিচ্ছিন্নভাবে, সম্পূর্ণ অসহমত নিয়েই। তাতে বিশেষ লাভ হবে কি?

    বাংলাদেশের ব্লগার হত্যাও এই ভাবেই যদি দেখা যায়, আস্তিকদের কাউন্টার করার নাস্তিক ফিল্ড লজিক গ্যালারিকে পাশে আনতে পারেনি। বেঘোরে কে মরছে, মরেছে দেখাই গেছে।

    মোদ্দা কথা, ফিল্ড লজিককে গ্যালারি লজিকের কাছাকাছি না নিয়ে যেতে পারলে লাভ নেই।

    ঐ সম্পূর্ণ উল্টো মডেল দাঁড় করানোর পথটা সঠিক নয়, পলিটিকালি বা টেকনিকালি কোনোভাবেই। আবেগাশ্রয়ী হতে পারে, কৌশলী নয়। ওভাবে জেতা মুশকিল।
  • hmm | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৬:৫১56080
  • পৃথিবীর কোন দেশের বাম অভ্যুত্থান বৃহত্তর জনগণের সাপোর্ট ছাড়া হয়েছে? ভোটিং বা সভার কথা নয়, ক্ষমতা হস্তান্তরের অ্যাজেন্ডা দেশবাসী সমর্থিত নয়, স্রেফ গায়ের জোরে কিছু বামপন্থী ক্ষমতা দখল করে নিল আর বহু বছর সেই সিস্টেম চালালো এটা কোথায় হয়েছে?

    বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনমত ব্লগারদের পক্ষে থাকলে তাদের এভাবে মারা সম্ভব হতো? ৭১ দেখেও শাহবাগ দেখেও এই কথা?

    হুদুর দূর্গা পুজো করা বা করার অধিকারের দাবি এক, আর কোনো এক আদিবাসী কৃষ্টিতে সেই পুজোপ্রথা শোকবাহী বলে সারা দেশে দূর্গাপুজোর আনন্দউৎসব সেন্সর করতে হবে বলা বা সেই আদিবাসী বিশ্বাস দিয়ে দেশের মেইনস্ট্রীম সাংস্কৃতিক রিচুয়ালকে ডিসপ্লেস করতে চাওয়া -এই লড়াইটা লিফলেট বিলি করে সম্ভব? বেনারসী ব্লাউজ পরা অসুর বিনাশিনী গল্পটাও তো বহু বহু মানুষের কৃষ্টির অংশ। নেহাৎ বিজেপি আরেসেসের ক্ষমতায় আসার ফলে নেওয়া চাড্ডিবুস্টিং প্রোগ্রামের অন্তর্গত তো নয়। সেটা দুম করে থোরাই মার্জিনে সরে গিয়ে হুদুর দুর্গাকে আসন ছেড়ে দেবে?

    এইটা বাস্তবায়িত করতে প্রথমে অ্যাকাডেমিক রিসার্চ, সোসিওপলিটিকাল স্কলারদের থেকে রেকগনিশন আর ব্যপকতর জার্নাল অ্যাপ্রুভড মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সিং দরকার ছিল মনে হয়। এনিওয়ে যে মডেলটা নেওয়া হয়েছে সেটা প্রোন টু ফেলিওর মনে হচ্ছে গ্যালারি থেকে। যে গ্যালারিতে দেশ।
  • sosen | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৭:৫৯56081
  • অত্ত পুজো করারই বা দরকারটা কি বাপু?
  • avi | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৮:১১56082
  • ইয়ে, শুনেছি বাংলাদেশের ব্লগার হত্যা নাকি আসলে শাহবাগেরই প্রতিশোধ, বিশুদ্ধ রাজনৈতিক কারণে। নাস্তিক, ইসলামবিরোধী ওগুলো নাকি ওপরের মোড়ক। যে কারণে পাক সার জমিন সাদ বাদ লেখার পর হুমায়ুন আজাদের ওপর কোপ পড়েছিল।
  • pi | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৮:২৯56083
  • সেটা হলে স্পেসিফিক্যালি আওয়ামি লিগের লোকজনের উপরে কোপ পড়ছে না কেন ?
  • hmm | ***:*** | ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৮:৫৮56076
  • ইন ফ্যাক্ট একদা বিবেকানন্দের ব্রিলিয়ান্স নিয়ে কথা হচ্ছিল। তো, এই এক মোক্ষম উদাহরণ যেখান থেকে ধারনা করা যায়, রামকৃষ্ণের মৃত্যুর সময়ের ১২ জন শিহ্য থেকে আজকের রামকৃষ্ণ মিশনের অবস্থায় (পৃথিবীব্যপী ১৮০ টা শাখা) আনার জন্য কতখানি দূরদর্শিতা, কৌশল ও রাজনীতিজ্ঞান প্রয়োজন। সারা পৃথিবীতে ভারত নামক একটি পরাধীন, অপ্রধান-ধর্মগরিষ্ঠ, দরিদ্র দেশকে অতুল স্পিরিচুয়ালিটি ও দার্শনিক জ্ঞানের আকর হিসেবে গন্য করানোর পিছনে কতখানি গেমপ্ল্যান থাকতে পারে। এই সেই ফিল্ড লজিক, যা শিক্ষণীয়, যা গ্যালারি লজিকের সাথে দূরত্ব কমানোর, তার কাছে পৌছনোর, তার সাপোর্ট অর্জনের ইমপ্লিমেন্টেশন, যেখানে গ্যালারিতে পৃথিবী। প্রতিপক্ষকে আঘাতের মাধ্যমে অসহিষ্ণু করে তোলার বদলে তাকে শ্রদ্ধাশীল করে তোলার কৌশল।
  • Ekak | ***:*** | ১০ মার্চ ২০১৬ ০১:০১56087
  • "হুদুর দূর্গা পুজো করা বা করার অধিকারের দাবি এক, আর কোনো এক আদিবাসী কৃষ্টিতে সেই পুজোপ্রথা শোকবাহী বলে সারা দেশে দূর্গাপুজোর আনন্দউৎসব সেন্সর করতে হবে বলা বা সেই আদিবাসী বিশ্বাস দিয়ে দেশের মেইনস্ট্রীম সাংস্কৃতিক রিচুয়ালকে ডিসপ্লেস করতে চাওয়া -এই লড়াইটা লিফলেট বিলি করে সম্ভব? বেনারসী ব্লাউজ পরা অসুর বিনাশিনী গল্পটাও তো বহু বহু মানুষের কৃষ্টির অংশ। নেহাৎ বিজেপি আরেসেসের ক্ষমতায় আসার ফলে নেওয়া চাড্ডিবুস্টিং প্রোগ্রামের অন্তর্গত তো নয়। সেটা দুম করে থোরাই মার্জিনে সরে গিয়ে হুদুর দুর্গাকে আসন ছেড়ে দেবে?"

    কেও কাওকে সমস্ত আসন ছাড়বেনা । কিন্তু ক্রমাগত বিভিন্ন ভার্সন উঠে আসতে থাকলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হবে । সেটাই যথেষ্ট । সারা ভারতবর্ষে হিন্দি সিনেমা - ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যম দিয়ে একটা ধারণা জোর করে চাপানোর চেষ্টা চলছে যে দেশ্শুধ্ধু লোকের কাছে রাম হলো প্রাতঃস্মরণীয় ভগবান । যেখানে গবলয় বাদে "রাম " নামক চরিত্রের এরকম কোনো বিশেষ স্টেটাস নেই । ন্যাচেরালি এটার বিরোধিতা করতে হবে । এবং বিরোধিতা করতে গিয়ে "না বাপু রাম ও থাক রাবন ও থাক " বললে হবেনা । রাম ভার্সাস রাবন এরকম ভাবেই চাপ সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে আমরা একটা লড়াই পাব যার পর যারা রামভক্ত রাম নিয়ে থাকবে যারা রাবন্ভক্ত রাবন নিয়ে । এটা খুবই আইডিয়াল কন্ডিশন জাস্ট বোঝাবার জন্যে বলা , বাস্তবে দেখা যাবে দুপক্ষের ই প্রবল চাপে রাম ও রাবনের এক্স্প্যানিস্ট একটিভিটি কিছুটা কমেছে । আর কি চাই ? ক্রমাগত এই প্রেসার ক্রিয়েশন ই দরকার।

    মানুষ ইন্দিভিদুয়ালি সাদা কালো কিন্তু কালেক্তিভ্লি গ্রে । তাই ইন্ডিভিজুয়াল কে ওই রাম ও ভালো রাবন ও ভালো মার্কা ঝোলার গুর থিওরি বুঝিয়ে লাভ হয়না । রাম-রাবনে লড়িয়ে দিতে হয় ।
  • d | ***:*** | ১০ মার্চ ২০১৬ ০৪:৩০56084
  • ডায়রেক্ট আম্লীগকে আক্রমণ করলে দেশবিরোধী, দেশের উন্নয়ন বিরোধী, দেশকে পাকিস্তানের কোলে তুলে দিতে চায় --- এরকম একটা গণধারণা হাসিনার নেতৃত্বে অম্লীগ তৈরী করতে সফল হয়েছে। বিএনপি আর জামাত অনেকদিন আম্লীগকে আক্রমণ করেছে, সফলও হয়েছে। ২০০৬ সালে রাজাকারদের ছেলেদের বলতে দেখেছি তাদের গায়ে আঙুল ছোঁয়ানোর সাধ্য কারো নেই। মুক্তিযোদ্ধা; নামক ধারণা ও মানুষগুলো (যারা সত্যিই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল) তাদের নস্যাৎ করা মোটামুটি ২০০৭-০৮ এও বহাল ছিল। কিন্তু বাংলা ব্লগের সুবিধা নিয়ে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রো-মুক্তিযুদ্ধ জেনারেশান মতামত দিতে শুরু করে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতে শুরু করে। ২০০৯ এ হাসিনা ক্ষমতায় আসেন এই প্রতিশ্রুতি নিয়ে যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। তো সেখানেও ঐ বিচার প্রক্রিয়ায় নানাভাবে স্যাবোটেজ করা বা বিচার ভন্ডুল করার চেষ্টা হয়। কাদের মোল্লা জেলে ঢুকেছিল ভি সাইন দেখিয়ে।

    সেখান থেকেই শাহবাগের আন্দোলন। এবং আবারও সেইটা গঠিত হয় ফেসবুকের গ্রুপ, ব্লগ থেকেই। শাহবাগের মূল দাবী ছিল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি, কাদের মোল্লার ফাঁসি। স্বেই দাবীটা তারা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে এমনটাই মনে করে শাহবাগে অংশ নেওয়া অনেকেই। এবং যতই ফাঁসিগুলো কার্য্যকর্ত হতে থাকে ততই প্রো-পাকিস্তান লবিটা মরীয়া হয়ে ওঠে।

    ফলে নজর ঘোরাতে শাহবাগের মাঝামাঝি সময় থেকেই 'নাস্তিক' ইস্যু টেনে বের করা হয়। ঠিক যেমন মালিয়াকে পালাতে দেওয়া, বা আরও পাঁচটা জিনিষকে চাপা দিতে আফজল গুরুর নিস্যু খুঁচিয়ে তোলা হয়, একই কথা ব্লগার হত্যা দিয়্তেও।

    এবারে সরোল গোলগাল প্রশ্ন আসতে পরে হোয়াই অভিজিৎ, অভিজিত তো প্রো-মুক্তিযুদ্ধ বা প্রো-শাহবাগী হলেও এইসব ইস্যুতে তত ভোক্যাল ছিলেন না, যতটা ধর্মাধর্ম বিষয়ে। তো সেখানে উত্তর হল হ্যাঁ অভিজিতের মূল প্রায়োরিটি ধর্মাধর্ম হলেও তাঁর বাবা অজয় রয় নিজে যে শুধু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তাই নয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়েও সরব ছিলেন। খালেদা জিয়ার আমলে যখন বিভিন্ন অঞ্চলে অকথ্য হিন্দু নির্যাতন চলছে ত্রখন উনি অনেক জায়গায় গিয়ে গিয়ে লোকজনকে সাহায্য, করেছেন, প্রতিবাদ জানিয়েছে। এবার বলতে পারেন হওয়াই নট অজয় রয়? তার কারণ হল অজয় রায়কে মারলে ডায়রেক্ট বার্তা যাচ্ছে যে প্রো মুক্তিযুদ্ধ, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব লোকজনকে মারা হচ্ছে, কাজেই সাবধান। মুশকিল এই বার্তাটা ২০০৭ অবধি কার্য্যকরী ছিল। জেনারেল জিয়া বা এরশাদের আমলে বড় হওয়া লোকজন, মেজরিটি এই বার্তাটাকে ভয় পেত। কিন্তু ২০০৬ থেকে খেলাটা আস্তে আস্তে ঘুরে গেছে বাংলা ব্লগ আর ফেসবুকের হাত ধরে। ফলে ২০১৩-১৪ নাগাদ প্রো মুক্তিযোদ্ধাকে ভয় দেখানোটা একটা বড় অংশ সম্ভবতঃ মেনে নেবে না।

    তাই অভিজিত, তাই থাবাবাবা। এতে করে প্রো মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু ইসলামকে চোখ বুজে ফলো করা অংশটার মন আস্তে করে ঘোরানো সম্ভব। এবং ঠিক সেটাই হয়েছে, হচ্ছে।
  • pi | ***:*** | ১০ মার্চ ২০১৬ ০৫:২২56085
  • ভাল করে পড়ছি এসে।
  • aranya | ***:*** | ১০ মার্চ ২০১৬ ০৫:৪০56086
  • প্রো মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু ইসলামকে চোখ বুজে ফলো করা অংশ' - এই সহাবস্থান-টা - মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক অথচ ধর্মান্ধ - এটা বেশ আশ্চর্য লাগে
  • Ekak | ***:*** | ১১ মার্চ ২০১৬ ০১:০০56090
  • "রাম-রাবন " সরিয়ে রেখে একটা জেনেরাল মডেল কে কিভাবে ব্যালান্স করে অপসিট এনটিটি না ঢুকিয়ে সেটা একটু বলুন :) রাম-রাবন এলেই "তাহলে তো দাঙ্গা হবে " এই অনুসন্গ্য এসে যাচ্ছে বলে চিন্তা ব্যাহত হচ্ছে। স্টেপ বাই স্টেপ বলুন ঠিক কিভাবে বিপরীত দিক থেকে ধাক্কা না দিয়ে ইকুএশোন ব্যালান্স করা সম্ভব ।
  • sinfaut | ***:*** | ১১ মার্চ ২০১৬ ০২:০৯56088
  • "মানুষ ইন্দিভিদুয়ালি সাদা কালো কিন্তু কালেক্তিভ্লি গ্রে"

    এই অ্যাফোরিজমটাকে যদি উল্টে দিই তাও সত্যি "শোনাচ্ছে"ঃ

    মানুষ ইন্ডিভিজুয়ালি গ্রে কিন্তু কালেক্টিভ্লি সাদা বা কালো।
  • sosen | ***:*** | ১১ মার্চ ২০১৬ ০২:২৯56089
  • রামের পুজো নিয়ে বাড়াবাড়ি আটকাতে গেলে রাবণের পুজো করতে হবে এটা একদম হজম হচ্ছে না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন