এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • ধ্যান ও  স্নায়ুবিজ্ঞান 

    অরিন লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৬৫০৭ বার পঠিত | রেটিং ৩.৮ (৪ জন)
  • | |

     
    গোড়ার কথা: কি, কেন, ইত্যাদি 
     
    এই প্রবন্ধটির আলোচনার বিষয় ধ্যান এবং স্নায়ুবিজ্ঞানএর পারস্পরিক সম্পর্ক, বা বলা যেতে পারে স্নায়ুবিজ্ঞান এর "চোখ" দিয়ে ধ্যানের মতো একটি বিষয়কে বোঝার চেষ্টা করা। আজ অবধি এই বিষয়ে মোটামুটি যা যা জানা হয়েছে ও জানা হচ্ছে তার একটি অতি সংক্ষিপ্ত, হয়তো কিছুটা লঘু ধরণের অবতরণিকা পেশ করা। এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে হঠাৎ করে এইরকম একটি বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে ধ্যান ও স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে দু চার কথা পাড়তে গেলে যা হয়, আপনারা যারা পাঠক আপনাদের কারো কারো মনে হতে পারে যে কোথায় কি নিয়ে গপ্পো? মানে কোথায় ধ্যানের মতো গুরুগম্ভীর ধর্মীয় বিষয়, রীতিমতন সাধারণ ভাবে যার সঙ্গে নানারকমের ধর্ম কর্মের যোগ প্রবল, আর কোথায় নিউরোসায়েন্স, অতি জটিল বিজ্ঞান, বিশেষত মস্তিষ্কের জটিল অন্তর্জগতের হদিস দেওয়া যার কাজ - এই দুটো বিপ্রতীপ বিষয় কি তেল আর জল মেশানোর মতো অসম্ভব ব্যাপার নয়? এখানে আমার উত্তর "না নয় :-) ",  কিন্তু কেন নয়, ক্রমশ প্রকাশ্য । 
     
    এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিজ্ঞান অতি জটিল বিষয়, এবং অনেকেই হয়তো ভাবেন যে যাদের ও বিষয়ে ব্যুৎপত্তি নেই, তাদের পক্ষে ও বিষয় না যায় বোঝা, না যায় বোঝানো । তার থেকে অপেক্ষাকৃত ভাবে ধ্যান ব্যাপারটি আপাতভাবে আরেকটু সোজাসাপ্টা ও হাতেকলমে করে দেখা যেতে পারে। এইটা আমার মনে হয়, তাই এই লেখাটিতে প্রথমে ধ্যান ব্যাপারটিকে নিয়ে চর্চা করা যাক। তারপর পর্যায়ক্রমে ধ্যানের সঙ্গে নানান রকমের ব্যবহারিক প্রয়োগ, এই করে আমরা স্নায়ু, মস্তিষ্ক, সেখান থেকে নির্গত সংবেদনাকে ধরার জন্য ইলেক্ট্রোএনকেফালোগ্রাফি (EEG), মস্তিষ্কের অভ্যন্তর দেখার জন্য MRI ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে, কারণ ধ্যান, এবং মনোবিজ্ঞান এবং স্নায়ুবিজ্ঞান ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ের অবতারণা করতে গেলে এই বিষয়সমূহ আসবেই ।
     
    লেখাটার গোড়ায় এখানে একটা কৈফিয়ত দেবার ব্যাপার আছে। সেটা এই যে আমাদের এই আলোচনা কিন্তু ধ্যানের ধর্মীয় দিকগুলো নিয়ে আমরা করব না, আমরা বরং বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখার চেষ্টা করব। তার অর্থ অবশ্য এই নয় যে ধ্যানের ধর্মীয় ব্যাপারটি কম গুরুত্বপূর্ণ, বরং উল্টোটা। ধ্যানের অবশ্যই একটি ধর্মীয় দিক রয়েছে, এবং সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এবং সে দিকটি বিভিন্ন ধর্মের ধ্যানের চর্চায় দেখা যায়। উপনিষদিক ব্রাহ্মণ্যাধৰ্মে যেমন হঠযোগ (বিশেষ করে প্রাণায়াম প্রক্রিয়া ইত্যাদিতে) এবং রাজযোগে ধ্যানের অপরিসীম গুরুত্ব, তেমনি বৌদ্ধধর্মে অনপনসতী (শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রেখে ধ্যান), বা কায়াগত সতী (শরীরের বিভিন্ন অংশে নজর রেখে ধ্যান) বা বিপাসনা (আসলে বলা উচিত বিপস্যনা), তেমনি আবার খ্রীষ্ট ধর্মেও সুপ্রাচীন কাল থেকে ধ্যানের তাৎপর্য রয়েছে (মরু যাজকদের সূত্রে, desert fathers , দেখুন, https://www.contemplativeoutreach.org/the-christian-contemplative-tradition/ ), তেমনি ইসলাম ধর্মেও ধ্যানের  ভূমিকা রয়েছে।  সেইসব জটিল পারমার্থিক বিষয়ের মধ্যে না গিয়ে আমরা আপাতত ধ্যান কি সেই দিকটায় প্রাথমিক মনোনিবেশ করি, কারণ ধ্যান কি ও কত রকমের । এছাড়াও ধ্যান বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যে কতরকমের অদ্ভুত ধারণা আমাদের সমাজে আছে, সে সমস্ত নিয়ে দু একটি কথা আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে নয়। এখানে আরেকবার লিখে রাখা যাক যে  ধ্যান মানেই ধর্ম-কর্মের ব্যাপার নয়, এই ব্যাপারটা স্পষ্ট করে না লিখলে এ আলোচনা এগোনো যাবে না। 
     
    ধ্যান বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা 

    এক কথায় ধ্যান কথার সঙ্গে  মনোনিবেশ বা মনঃসংযোগ ব্যাপারটির একটি যোগাযোগ রয়েছে, যদিও সচরাচর বাংলা ভাষায় ধ্যান কথাটি বললে সেই ব্যাপারটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে না । সে তুলনায় হিন্দি ভাষায় যদি "মন দিন" বলতে হয়, বলা হয় "কৃপয়া ধ্যান দিজিয়ে"। আমরা বাংলা ভাষায় ধ্যান বলতে অনেকটা এইরকম একটা ছবির কথা ভাবি সাধারণত :
     

    (জনৈকা ধ্যানরতা)
     
    ছবিটা "মন দিয়ে" দেখুন । ছবিতে যে মানুষটিকে দেখা যাচ্ছে তাঁর চোখদুটি বন্ধ, দুই হাত দুই হাঁটুতে রেখে, তিনি  বসে আছেন। ধ্যানরত লিখলাম বটে, তিনি কি প্রকৃত পক্ষে ধ্যান করছেন? অস্যার্থ , কারোর এই রকম ছবি দেখে কি বোঝা যায় যে  তিনি সত্যি সত্যি ধ্যান করছেন? সেটা আমরা জানছি কি করে? ধ্যান ব্যাপারটা কি শুধুই হাতের মুদ্রা আর বিশেষ রকম পিঠ টান টান  করে বসে থাকার ব্যাপার? ইনি  ধ্যান আদৌ করছেন কিনা আমরা কিন্তু জানি না, কাজেই যে কেউ তাঁর ধ্যানস্থ অবস্থায় বসে থাকার নানাবিধ ছবি দেখাতে  পারেন (আজকাল বৈদ্যুতিক সামাজিক মাধ্যমের যুগে অনেকেই সেই ধরণের ছবি পেশ করে থাকেন), তা থেকে কিন্তু প্রমাণিত হয় না যে তিনি অভিনয় করছেন, না সত্যিকারের ধ্যান করছেন । আপাত ছবি দেখে যদি সত্যিকারের ধ্যানের কথা ভাবা যায়, তাহলে ভুল হবে । একথা লিখছি কেন?  একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করি । 
     
    চুপটি করে বসে থাকো, কিছু কোরো না
    যেমন ধরুন, ছোট বয়েসে  "চুপটি  করে বসে থাকো, কিচ্ছু করো না" এই কথাটা আমরা হয়তো অনেকেই শুনেছি । কিন্তু এই ব্যাপারটাই, যে কোন কাজ কর্ম না করে চুপ করে বসে থাকার ব্যাপারটি প্রাপ্ত বয়েসে কেমন হয়?   মনে করুন আপনি স্থির হয়ে বসে থাকা মনস্থ করলেন। আরো মনে করুন আপনি স্থির করলেন প্রায় ২০-২৫ মিনিট মতন ঐরকম এক ঠায় একটি চেয়ারে বা আসনে বসে থাকবেন। কাজ কর্ম কিছু করবেন না, শুধু এক জায়গায় চোখ বুজে চুপ করে বসে থাকবেন। প্রথমত ঐরকম করে বসে থাকা, নেহাত সহজ নয়, বা করলেও যেটি অবধারিত ভাবে হবে, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসতে থাকবে, মন যেন জংলী বাঁদরের  মতন, এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে বেড়ায় (বৌদ্ধ ধর্মে এই মনের অবস্থাকে বলে "কপিচিত্ত ", আমরা আপাতত ধর্মকর্ম জাতীয় আলোচনা না করা মনস্থ করেছি, অতএব এ নিয়ে কথা বাড়াবো না)। এখন "কপিচিত্ত " দশা প্রাপ্ত হলে যা হয়, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসে, এক চিন্তা অন্য চিন্তায় মিশে যায় বিস্তর দিবাস্বপ্ন দেখা হয়। বাইরে থেকে আপনাকে দেখলে মনে হবে আপনি বুঝি গভীর ধ্যানে নিমগ্ন, আসলে তা তো নয়। এবং এই ব্যাপারটি ধ্যানও নয় কারণ ধ্যানের অন্যতম শর্ত  মনোনিবেশ করা, সেটি না হলে ধ্যান বলা যাবে না।
     
    এবার আমরা আরেকবার বিষয়টিকে বিবেচনা করে দেখি । এইবার, আবার, বসে থাকার একই ব্যাপার, কিন্তু আগের থেকে এবারের তফাৎ, এবার চোখ বন্ধ করে ও সুখাসনে উপবেশিত হয়ে আপনি "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে একেবারে লাগামহীন অবস্থায় ছেড়ে দেবেন না । অতএব আবার সেই  ব্যাপার, একই রকমের বসার ভঙ্গি, এবারও ২০ মিনিট ঘড়ি ধরে একটি নরম গদিতে ধরুন আসন পিঁড়ি হয়ে বসলেন, বা একটি চেয়ারে বসলেন । চোখ বন্ধ করলেন, এবং , এইবার স্থির করলেন যে "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে লাগামহীন ঘুরতে দেবেন না । এই অবধি তো হল, এখন মনোনিবেশ করবেন কিসে? 
     
    সব ধ্যান একরকম নয় (যে ধরণের ধ্যানের কথা আমরা এই প্রবন্ধে আলোচনা করছি না )
     

    এইখানে দুটি কথা বলার আছে। প্রথমত, মনে করুন মনোনিবেশ করবেন কোনো একটি রূপকল্পনায়, কোনো একটি  শব্দে, বা কোন একটি  মন্ত্রে ।  মহাঋষি মহেশ যোগী বলতেন শব্দের ওপর "ধ্যান দিতে", যাকে এখন বলা হয় transcendental meditation । এই ধরণের ধ্যান করার সময় অন্য কোন কিছুকে মনে স্থান দেওয়া যাবে না । অনেকে তাই এই ধরণের ধ্যান কে চিন্তাশূণ্য ধ্যান বলেন । এই জাতীয় ধ্যান বা মনোনিবেশ আমাদের এই আলোচনার বিষয় নয়, অন্য কোনো সময় একে নিয়ে চর্চা করা যাবে। দ্বিতীয়ত, আমরা যে ধরণের ধ্যান নিয়ে এই প্রবন্ধে আলোচনা করতে চাই তাকে "মুক্ত ধ্যান" (open awareness meditation) বলা যেতে পারে। সে কিরকম ধ্যান? আসছি সে কথায় ।
     
    আমাদের আলোচ্য ধ্যান: মনোনিবেশিত ধ্যান বা Mindfulness Meditation
     
    আগের বারের মতন এবারেও আপনি মনে করুন ২০-২৫ মিনিট সময় নিয়ে ঘড়ি ধরে ধ্যান করতে শুরু করেছেন। এইবার আপনি "মন" দেবেন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি, আপনার নাসারন্ধ্রে শ্বাস নেবার সময় হাওয়া প্রবেশ করছে, শ্বাস নির্গত হচ্ছে ওই পথে, আপনি তার প্রতি মনোনিবেশ করবেন । এবার দেখবেন কিছু পরে পূর্ববর্ণিত কপিচিত্তের কার্যকলাপ শুরু হবে, আপনার মনে নানান রকমের চিন্তাভাবনা আসতে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি সেইসব চিন্তাসমূহ দূরে কোথাও সরিয়ে রাখবেন না, বরং নিজেকে বলুন যে "আমি আর আমার মন আমার চিন্তা এক নয়, অতএব সবিশেষ কৌতূহল নিয়ে তাদের দেখি", এই বলে  নিজের শরীর থেকে মন সরিয়ে নিয়ে কৌতূহল সহকারে এই যে নানান ধরণের চিন্তা মনে আসছে, তাদের দেখতে থাকুন ।  এই ব্যাপারটা মোটেও সহজ নয়, এই কাজটি করতে আপনার সময় লাগবে, ধৈর্য্য লাগবে । আপনার ভাবনাচিন্তা এমন ভাবে  "দেখতে" থাকুন, যেন গ্যালারিতে বসে খেলা বা নাটক দেখছেন । চিন্তার উদয় হওয়া মাত্রই, তাদের একটি নাম দিন, এবং তারপর আবার পুনরায় আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি  মনোনিবেশ করুন। যেমন ধরুন, ধ্যান শুরু করেছেন, শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছেন, এমন সময় মনে একটি চিন্তা উদিত হল  যে অমুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, এখন অবধি করা হয়ে ওঠেনি । সে চিন্তা ভারী প্রবল হয়ে মনে উপস্থিত হল । এখন আপনি ধ্যান করা ছেড়ে উঠে গিয়ে অমুকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা না করে, এই চিন্তাটির যে উদয় হয়েছে, তার প্রতি কৌতূহল প্রকাশ করে মনে মনে নিঃশব্দে নিজেকে বলতে লাগলেন "যোগাযোগ", "যোগাযোগ", এবং একাগ্র মনে আবার শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতি নজর ফিরিয়ে আনলেন । এই ধরণের যে ধ্যান, যেখানে মনোসংযোগ করা হচ্ছে ঠিকই, তবে অন্যান্য ধারণাকে দেখে, তাদের অগ্রাহ্য করা হচ্ছে না, এই ধরণের ধ্যান নিয়ে আমাদের আলোচনা (এর ইংরেজি পরিভাষায় "open awareness meditation" বলা হয়, আমরা বাংলা করে বলতে পারি "মুক্ত চেতনার ধ্যান" ।
     
    আকাশ ও মেঘ 
     
    এবার এখানে একটা ব্যাপার নজর করুন । এই যে পদ্ধতিতে ধ্যানের কথা বলা হচ্ছে, এই যে শ্বাসের প্রতি মন নিবিষ্ট রেখে অন্যান্য যে সমস্ত চিন্তা ভাবনা মনে আসছে তাকে চিহ্নিত করতে থাকছেন, তাতে করে কিন্তু মন থেকে চিন্তা "দূর" করার কোন  ব্যাপার নেই,  মনকে "চিন্তাশূণ্য" করার কোন প্রয়োজন নেই। ক্রমাগত যদি চিন্তা ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের উদয় এবং অস্ত যাওয়া লক্ষ করতে থাকেন , তাহলে একটা ব্যাপার অচিরে বুঝতে পারবেন।  প্রতিবার এই যে চিন্তাভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করতে থাকবেন, এরা একবার করে উদিত হবে, তারপর আবার মিলিয়ে যাবে। ধ্যানের বিভিন্ন ঘরানায় (বিশেষত বিভিন্ন ধর্মে), এর একটা উপমা দেওয়া হয়, এ যেন অনেকটা নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনার মতন ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের পূজা ও প্রার্থনা পর্যায়ের "মাঝে মাঝে তবে দেখা পাই" গানের কথা স্মরণ করলে দেখবেন কবি লিখেছিলেন, "কেন মেঘ আসে হৃদয়-আকাশে তোমারে দেখিতে দেয় না", এও তাই । আপনার হৃদয় একটি আকাশের মতন, সেখানে নানান চিন্তা ভাবনা মেঘের মতন আসে, কিছু সময় যেন ভেসে বেড়ায়, তারপর মিলিয়ে যায় । আপনার মন আকাশ, আর চিন্তা ভাবনা, ধারণাসমূহ মেঘের মতন ভেসে বেড়ায় ।  উপনিষদেও "চিদাকাশ" কথাটির ঐরকম একটি  ধারণা পাওয়া যায় । এই রকম করে, আপনি যতক্ষণ অবধি  ধ্যান করবেন, আপনার মনে একেকবার একেকটি চিন্তা আসতে থাকবে, আপনি তাদের চিহ্নিত করবেন, তারপর আবার ধীরে ধীরে শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মন নিবদ্ধ করতে থাকবেন । কালক্রমে ক্রমশ এলোমেলো চিন্তা ভাবনার মনে আসা যাওয়া কমে আসবে, মন পুরোপুরি শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি নিবদ্ধ হবে। আমি যেভাবে লিখলাম, কথাটা লেখা সহজ, কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি অমন সহজ নয় । বেশ কয়েকদিন নিয়ম করে ধ্যান করতে থাকলে তখন দেখবেন এই ব্যাপারটি হয়তো কিছুটা সম্ভব হবে, তবে সে হতে দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে প্রায় প্রতিদিন কিছুটা সময় ধ্যানে ব্যয় করতে হবে ।

    তার পর লক্ষ  করবেন, মন হয়তো কিছুক্ষন এর জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসে নিবেশিত হয়েছে । তারপর, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান রকমের ব্যাথা বেদনা  সংবেদনা এসে উপস্থিত হবে। আপনি এই অবস্থায় ধ্যান করার অভ্যাসে রণে ভঙ্গ দিতে পারেন, আবার  নাও পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে হয়তো ক্ষণকালের জন্যে আপনার  মনকে শরীরের থেকে "আলাদা" করে নিয়ে ভাবতে শেখাতে হবে যে, এই সাময়িক শারীরিক সংবেদনা নেহাতই শারীরিক ব্যাপার, একে আপাতভাবে শরীরের "হাতেই" ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে । তবে এখানে একটা কথা মনে রাখবেন  বলে সব রকমের শারীরিক সংবেদন উপেক্ষা করার বিষয় নয়, কোনটা করার আর কোনটা নয় ধরে নেওয়া যেতে পারে সে বোধ আপনার রয়েছে । বেশ কিছুক্ষন যদি এইভাবে স্থির থাকেন, তখন দেখবেন ঠিক যেমন প্রাথমিক উড়ো চিন্তাভাবনা গুলো প্রথমে জড়ো হয়ে তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল (অবিশ্যি মিলিয়ে আর গেলো কোথায়, মনের গভীরে কোথাও সে রয়ে গেলো, শুধু আপনাকে আপনার ধ্যান থেকে সরিয়ে দিতে পারল না), এই শারীরিক ব্যাপারগুলো সেইরকম, উদিত হবে, কিছুক্ষন জ্বালাতন করবে, তারপর অস্তমিত হবে। তারপর আবার যখন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করেছেন, তখন আবার অন্য রকমের কিছু মানসিক চিন্তা ভাবনার উদয় এবং অস্ত হতে থাকবে। এরকম চলতেই থাকবে। ব্যাপারটি অনেকটা এইরকম,
     

     
    এখন, এই যে ধরুন মনের মধ্যে একেকটি ভাব চক্রাকারে চলতে থাকছে এবং একে যদি আপনি নিয়ম করে প্রতিনিয়ত ধ্যান করে যেতে থাকেন, বিশেষ করে এই যে নানান রকমের ভাব উদিত হচ্ছে, তা থেকে আপনি নিজেকে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হন, কোনো রকম আলাদা করে ভালো মন্দর বিচারবোধ দিয়ে তাকে না দেখেন, এই ব্যাপারটিই  মনোনিবেশিত ধ্যান যাকে ইংরেজি পরিভাষায় mindfulness meditation বলা হয় । একে যদি  আপনি মাস দুয়েক নিয়ম করে চালিয়ে যেতে সক্ষম হন, আপনি  "নিজের মধ্যে" দুটি ব্যাপার লক্ষ  করবেন :
     এক, আপনার শারীরিক, মানসিক বা চেতনায় যে সমস্ত সংবেদন আসবে, তার কোনটির প্রতি কতটা মনোসংযোগ করবেন, আপনি স্বয়ং তার নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ, ক্রমাগত আস্তে থাকা অনুভূতি গুলো আপনাকে আপনার একাগ্রতা থেকে সরাতে সক্ষম হবে না ।
    দুই, এই যে আপনার বিভিন্ন রকমের অনুভূতি, সে যা হোক, ব্যাথা,  বেদনা,মানসিক উদ্বেগ, বিষন্নতা, প্রতিটির প্রতি আপনার এক ধরণের ঔৎসুক্য বলুন, কৌতূহল বলুন, এমন একটা সম্পর্ক স্থাপিত হবে, যেন আপনি আর তারা আলাদা, আপনি ও আপনার অনুভূতি, আপনার মন এক নয়, ব্যাপারটির  উপলব্ধি হবে  । বিশেষ করে, যত দিন যাবে, তত ক্রমশ নিজের মধ্যে নজর করবেন মনের মধ্যে এক ধরণের পরিবর্তন আসছে  যে আপনি যা ছিলেন, তার তুলনায় আরো অনেক নিস্পৃহ ও শান্ত হয়ে পড়ছেন । আপনাকে বাইরে থেকে দেখলে হয়তো কেউ বুঝতে পারবে না, সে পরিবর্তন অন্তরের পরিবর্তন । আপনার উদ্বেগ, রাগ, একই  কথার চর্বিতচর্বন, এই ধরণের চিন্তা ভাবনা গুলো ক্রমশ কমতে থাকবে  ।  সে ধরণের পরিবর্তন হয়তো আপনি নিয়মিত ধ্যান না করলে হত  না, আর আপনি যদি ধরুন কয়েক সপ্তাহ ধ্যান করা বন্ধ করে দেন, আপনি আবার আপনার পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাবেন ।  এই ব্যাপার গুলো থেকে মনে হতে পারে আপনার অন্তরের যে পরিবর্তন তাতে ধ্যানের একটা প্রভাব রয়েছে ।
     
    স্নায়ুবিজ্ঞানের কথাটা আসছে  কেন?
     
    এই  ব্যাপারগুলো যেহেতু সাধারণ মানুষের মধ্যে লক্ষ করা যায়, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে যে কি কারণে এমন হচ্ছে? তাহলে কি ধ্যান ব্যাপারটি কোন ভাবে আমাদের চেতনায় একটা পরিবর্তন আনছে? তাই যদি হয়, তাহলে তাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে? যেহেতু মস্তিষ্ক এবং চেতনার কথা উঠছে, তাই স্নায়ু এবং সেই সূত্রে স্নায়ুবিজ্ঞানের বিষয়টিও আসছে । সেই সূত্রে যে প্রশ্নগুলো অবধারিত ভাবে আসবে, ধ্যান যদি/হয়ত "কাজ" করে, কিন্ত তার কারণ কি? এখন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন অনেকবার হয়েছে যে প্রামাণ্য তথ্য মিলেছে, কিন্তু তার মূল কারণ কি জানতে বহু সময় পেরিয়েছে । হাতের কাছে চটজলদি  উদাহরণ  ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জন স্নো সাহেবের লন্ডনে  কলেরা মহামারীর প্রতিকার । যখন তিনি প্রতিকার করেছিলেন, তখন কলেরার জীবাণু কি তাই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না,  কলেরার জীবাণু  আবিষ্কার করবেন  ১৮৮৩ তে রবার্ট কখ (তার সঙ্গে অবশ্য কলকাতার একটি যোগাযোগ আছে, এখানে সে সব আলোচনার অবকাশ নেই) । এইরকম আরেকটি আবিষ্কার, অষ্টাদশ শতাব্দীতে, ১৭৪৭ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জেমস লিন্ড স্কার্ভি অসুখের চিকিৎসা করার জন্য এর নাবিকদের লেবু খাবার পরামর্শ দেওয়া ১৯৩৩ সালে চার্লস কিং এর  ভিটামিন সি  আবিষ্কার করবেন । অতএব চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস ঘাঁটলে  এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যেখানে ডাক্তাররা কিছু একটা লক্ষ করছেন, রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছেন, পুরো ছবিটা তৎক্ষণাৎ  জানা যায় না, পরে জানা যাবে ।  এই ধরণের ব্যাপারগুলো কেন্দ্র করে আজকের দিনের  evidence based medicine গড়ে উঠেছে, কাজেই আজকে ধ্যান কেন কাজ করে, তার একেবারে ঠিক মূল্যায়ন যদি আমরা নাও জানি, কাল যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে না, কেউ বলতে পারেন না ।  সে সব পরের কথা, আপাতত যে বিষয়টি নিয়ে শুরু করেছিলাম,তার উত্তর খোঁজা যাক,যে, এই যে মনোনিবেশিত ধ্যান  (mindfulness meditation ) এর কথা আলোচনা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে মনোবিজ্ঞান,  সাইকিয়াট্রি, চিকিৎসা, এমনকি স্নায়ুবিজ্ঞান কে জড়ানোর কারণটি কি? এই ধরণের ব্যাপারগুলো কারা শুরু করেছিলেন এবং কোথা  থেকে শুরু হয়েছিল? 
     
    অন্তত বাংলায় বা বাঙালির পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্নগুলো অবান্তর নয় । কারণ ধ্যান ব্যাপারটা আমরা যতদূর বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ বুঝি তাতে সাধু বা ধরুন, সাধু সন্তদের ভেক ধরে  যারা ধর্মের বা ধর্মের "ব্যবসার" সঙ্গে জড়িত, এই সমস্ত লোকজন লোক দেখানো ধ্যান ইত্যাদি করে থাকেন । দুঃখের বিষয়, এদের সবাই যে সৎ , এমন বলা যাবে না, অনেকেই নানারকম অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার নিয়ে মানুষকে হতচকিত করে ঠকিয়ে দেবার চেষ্টা করেন, শুধু তাই নয়, যুক্তির বদলে, তর্কের বদলে, এরা  চান মানুষ এদের বিশ্বাস করুন, যার জন্য এমনিতেই যুক্তিবাদী লোক এদের ব্যাপারে বিরক্ত , বিশ্বাস করার প্রশ্নই ওঠে না । আরো একটা ব্যাপার রয়েছে । মনে করুন  যদি ধ্যান ব্যাপারটায় মানুষের সত্যি সত্যি মানসিক পরিবর্তন হয়ও, যারা ধর্মের ব্যবসায়ী, তারা ব্যাপারটাকে "ধর্মীয় কীর্তি"  বলে চালিয়ে দেবেন, সে পরিবর্তনের পশ্চাৎপটে নিয়মিত  ধ্যান করার একটা "মনস্তাত্বিক" ব্যাপার আছে, সেই প্রসেস  বা সেই প্রচেষ্টাকে সেভাবে এরা গুরুত্ব দেবেন না । এই সমস্ত নানান কারণে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, যে হঠাৎ মনোবিদ, স্নায়ু বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার, যারা পেশাগত ভাবে বিজ্ঞান চর্চা করেন, এরা  এইসব নিয়ে কেন মাথা ঘামাচ্ছেন । তো এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখতে দুটি ভিন্ন বিষয়ে লিখতে হয়, দুটিই এই ধরণের ধ্যানের সঙ্গে সম্পৃক্ত । স্নায়ুবিজ্ঞানের সূত্রে ধ্যানের তাৎপর্য নিয়ে লেখার আগে ধ্যান ও স্নায়ুগত আরো দুয়েকটা ব্যাপার দেখা যাক:  (১) একটা ধ্যান এবং Flow (জানিনা, বাংলায় ইংরেজির ফ্লো  কথাটিকে হয়তো প্রবাহ বলা যেতে পারে), (২) ধ্যান এবং আধুনিক মনোবিজ্ঞানে ও চিকিৎসায় তার তাৎপর্য ।
     
    (এর পরের পর্বে বাকিটা, চলবে  )
     
     
     
    ---
    তথ্যপঞ্জী 
    ১) Keng SL, Smoski MJ, Robins CJ. Effects of mindfulness on psychological health: a review of empirical studies. Clin Psychol Rev. 2011 Aug;31(6):1041-56. doi: 10.1016/j.cpr.2011.04.006. Epub 2011 May 13. PMID: 21802619; PMCID: PMC3679190
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | |
  • প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৬৫০৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | 132.18.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ০৬:২৩533355
  • লেখা চালিয়ে যাবার উৎসাহ দেবার জন্য কৃতজ্ঞ, নিশ্চই চালাবো ।
     
    "বিএসসি ফেল যুক্তিবাদী আর ফুট কাটবে না। জোঁকের মুখে নুন ফেলে দিয়েছি।"
     
    মাইকেল পসনারদের আর্টিকেলটির লিংক দিয়ে অশেষ উপকার করেছেন। 
    দেখুন দেবাশিসবাবু কি বলেন।
     
    গতকালের দেবাশিসবাবুর পোস্টগুলো দেখছিলাম। ভদ্রলোক বিষয়গুলো না জেনে একটু বাড়াবাড়ি রকমের ঔদ্ধত্য দেখিয়ে ফেলেছেন।
     
    এঁর এই কথাটা প্রসঙ্গে,
     
    " বৈজ্ঞানিক প্রমাণের জন্য তা যথেষ্ট নয়। যথেষ্ট সংখ্যক উচ্চমানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, তার সিস্টেম্যাটিক রিভিউ, নির্ভরযোগ্য জার্নালে তার প্রকাশ, নানা প্রশ্ন ও আপত্তি পেরিয়ে একটা জায়গায় থিতু হয়ে দাঁড়ানো, 'ককরেন ডেটাবেস'-এ অন্তর্ভুক্তি, বিজ্ঞানী সমাজের মূলস্রোতের কাছে স্বীকৃতি, চিকিৎসার টেক্সটবুক-এ অন্তর্ভুক্তি --- এই হল কোনও বিশেষ চিকিৎসা-পদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতার কঠিন ও দীর্ঘ পথ। এবং, না, ধ্যানের উপকারিতা সে পথ এখনও অবধি পেরোতে পারেনি।” কিন্তু সাদা বাংলা কথা বোঝেননা, কী করা যাবে!"
     
    ভদ্রলোক ধ্যান ব্যাপারটা নিয়ে সমকালীন মনোবিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে যে কতটা কাজকর্ম হয়েছে ও হচ্ছে তার বিশেষ খবর রাখেন না, কিন্তু মতামত জাহির করার ব্যাপারে কার্পণ্য করেন নি, এবং আমাকে তাঁর জ্ঞান বিতরণ করতেও দ্বিধা করেন নি, "সাদা বাংলা কথা বোঝেন না" এইসব বলে ধমক দিচ্ছেন, যেন উনি একাই সব জানেন  । 
    এবার ব্যাপারটা দেখুন। 
    ভদ্রলোক একটু খোঁজ নিলে জানতেন, যে ১৯৮২ সালে জন কাবাত জিনের প্রথম গবেষণার রিপোর্ট বেরোনোর পর মনোচিকিৎসা এবং মনোবিজ্ঞানে mindfulness মেডিটেশন নিয়ে একটা চিকিৎসার নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। 
     
    তারপর তাঁর নানারকম মনগড়া ধারণা রয়েছে, যেমন লিখেছেন, " নানা প্রশ্ন ও আপত্তি পেরিয়ে একটা জায়গায় থিতু হয়ে দাঁড়ানো, 'ককরেন ডেটাবেস'-এ অন্তর্ভুক্তি "
     
    এইরকম একটা কথা যদি কেউ লেখে, তা থেকে একটা ব্যাপার বোঝা যায় যে ভদ্রলোক কোন সূত্রে হয়তো ককরেন রিভিউ (cochrane database) ব্যাপারটার হয়তো নাম শুনেছেন, কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক  কি সেটা জানেন না, নাহলে "ককরেন ডাটাবেসে অন্তর্ভুক্তি" র মত আজগুবি কথা বলতেন না, আর্চি ককরেন একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে সিস্টেমেটিক রিভিউ বা মেটা এনালিসিস করার ডাটাবেস, সেখানে আলাদা করে অন্তর্ভুক্তি বহিৰ্ভূক্তির কোন ব্যাপার নেই। ভদ্রলোক যদি ওখানে ওপর ওপর  খুঁজেও  দেখতে ন, তাহলেও দেখতে পেতেন অন্তত ১৭টি রিভিউ লিস্টেড। 
     
     
    ভদ্রলোক এইসব ব্যাপার হয় জানেন না, নয় দেখেন নি, তো সেক্ষেত্রে উদ্ধত মন্তব্য করার খুব প্রয়োজন আছে কি?
     
    তারপর লিখেছেন,
     "বিজ্ঞানী সমাজের মূলস্রোতের কাছে স্বীকৃতি, চিকিৎসার টেক্সটবুক-এ অন্তর্ভুক্তি --- এই হল কোনও বিশেষ চিকিৎসা-পদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতার কঠিন ও দীর্ঘ পথ। এবং, না, ধ্যানের উপকারিতা সে পথ এখনও অবধি পেরোতে পারেনি।"
     
    এ কথাটাও ঠিক নয়, আসলে খবর রাখেন না বলেই এই ধরণের কথা লেখেন। ধ্যানের উপকারিতা সে পথ পেরিয়েছে কিনা তার খোঁজ না নিয়েই মন্তব্য করে ফেললেন। 
     
    সে পথ যে সে পেরিয়েছে, তার স্বপক্ষে এখানে দেখুন, তিনটে উদাহরণ, ২০০৪ থেকে ২০২৪ অবধি (আরো দেওয়া যায়, কিন্তু সে করতে গেলে বিশাল লিস্ট হয়ে যাবে, সেটি করা এর উদ্দেশ্য ও নয়):
     
    (2004 )
    Paul Salmon, Sandra Sephton, Inka Weissbecker, Katherine Hoover, Christi Ulmer, Jamie L. Studts,
    Mindfulness meditation in clinical practice, Cognitive and Behavioral Practice, Volume 11, Issue 4,
    2004: Pages 434-446: ISSN 1077-7229,
    https://doi.org/10.1016/S1077-7229(04)80060-9.

    “integration of meditative practice is now occurring in both medical and mental health care areas, as well as in the newly emerging subfield of "positive psychology" (see, for example, Levine, 2000). One of the first applications of mindfulness meditation was by Jon Kabat-Zinn and colleagues who developed a group-based stress reduction program for medically ill patients known as Mindfulness-Based Stress Reduction (MBSR; Kabat-Zinn, 1982). The essence of mindfulness is learning to focus one's attention on present-moment experience in a nonjudgmental way. Learning to pay attention to presentmoment experience offers an alternative to the constant worry about past and future events, which tends to diminish the quality of one's life. The purpose of this article is to discuss the MBSR program in the context of clinical practice.
    … 
    Early adaptations of meditation to clinical practice reflect the influence of Transcendental Meditation, including Benson's Relaxation Response (Benson, 1975) and Carrington's Clinically Standardized Meditation (Carrington, 1993) and are reminiscent of cue-controlled relaxation techniques in which a stimulus--the mantra-- becomes associated with a sustained state of prolonged and deep relaxation. Whatever form one's practice may take, meditation is increasingly being viewed as offering a unique way of viewing and responding to one's world in a manner that is marked by a deepening of experience derived from being focused in the present moment. In this context, Horowitz commented on the potential of meditative practices to serve as a lens with which to view the business of the mind and modern-day life, potentially capable of "reworking... mental schemata and attitudes in a unique way" (Horowitz, 1986, p. ix)

    By far the most widely referenced clinical intervention explicitly employing mindfulness meditation is the MBSR program originally developed at the University of Massachusetts Medical Center byJon Kabat-Zinn and colleagues, and described in several studies published by this group (Kabat-Zinn, 1982; Kabat-Zinn & Chapman-Waldrop, 1988; Kabat-Zinn, Lipworth, & Burney, 1985; Kabat-Zinn, Lipworth, Burney, & Sellers, 1987). Since its inception, the program has emphasized application of stress-reduction principles primarily for medical patients, reflecting an underlying belief that illness and disease are powerful stressors, whose effects can be amplified beyond their immediate medical consequences”
     
    পনেরো বছর পর, 

    (2019)
    “... the Office of Patient Centered Care and Cultural Transformation at the Department of Veterans affairs recently made the first step toward implementing a new model of care called Whole Health that places mindful awareness at the heart of the delivery model. You can see this depicted at the center of the Whole Health model’s Circle of Health visual, which can be found along with a variety of other resources on the Whole Health online library of open-access resources.17 The Whole Health model of patient care aims to treat more than a symptom or disease but rather places emphasis on recognizing the patient as a whole person and partnering with each patient to empower him or her to be an active participant in his or her own health”
    (Shurney D. Employing Mindfulness in Lifestyle Medicine. Am J Lifestyle Med. 2019 Aug 8;13(6):561-564. doi: 10.1177/1559827619867625. PMID: 31662722; PMCID: PMC6796219.)
     
    এ বছরের জানুয়ারি, 

    2024
    The interprofessional team plays a crucial role in the evaluation and treatment of individuals with pain, stress, depression, and anxiety. Collaborating professionals, including physicians, psychologists, psychiatrists, and therapists, work together to assess and comprehensively address the multifaceted aspects of these conditions. Through shared decision-making and effective communication, the interprofessional team tailors personalized treatment plans that may include a combination of pharmacological interventions, psychotherapy, mindfulness-based interventions like MBSR, and other complementary approaches. MBSR therapy is an evidence-based approach in the Lifestyle Medicine Board Review Manual.[46] 
    (Statpearls, https://www.ncbi.nlm.nih.gov/books/NBK599498/ )
     
    এই তিনটে লেখা যদি পড়েন তাহলে দেখবেন যে কালক্রমে ধ্যান ব্যাপারটা কিভাবে চিকিৎসার মূলস্রোতে চিকিৎসকেরা গ্রহণ করেছেন। 
     
    তাছাড়া আমি নিজে একজন চিকিৎসক, এবং ধ্যানের গুরুত্ব আমি বুঝি ।
     
    ভদ্রলোকের অনবধানবশত ঔদ্ধত্য এবং তার পর তাঁর অনুগামীদের আমাকে শিক্ষা দেওয়ার বহর দেখে স্তম্ভিত হলাম ।
  • wow | 2a0b:f4c2::***:*** | ১৭ জুন ২০২৪ ০৮:০৯533356
  • দেবা বিএসসি ফেল নাকি?
    তাই জন্যই dc ফিসির মত ফ্যানবয় জুটেছে।
    কি দাপট!
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:ecb5:aa8c:177e:***:*** | ১৭ জুন ২০২৪ ০৯:২০533359
  • বোঝ অবস্থা! laugh
  • শুভ্রনীল | ১৭ জুন ২০২৪ ০৯:৩০533361
  • আচ্ছা ধ্যান - চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লেসিবোর কি কোনো ভূমিকা থাকতে পারে ? 
  • অরিন | ১৭ জুন ২০২৪ ১০:০৮533362
  • @শুভ্রনীল, এটা খুব ভাল প্রশ্ন।
    প্লেসিবো ব্যাপারটা যদি ভেবে দেখেন, হুবহু আসল জিনিসটার মত, কিন্তু তা নয়। যেমন ধরুণ, আসল ওষুধ একটা ট্যাবলেট ফর্মে দেওয়া হচ্ছে, প্লেসিবোটা ঐরকম দেখতে,কিন্তু তাতে চিনি টাইপের কিছু দেওয়া।
     
    এখন ধ্যানের প্লেসিবো কি হবে?
     
    অনেক সময় বা অনেক স্টাডিতে ধ্যান ব্যাপারটায় একটা গাইডেড মেডিটেশন হয়। যে গ্রুপটা ট্রিটমেন্ট পাচ্ছে, তারা এসে ধ্যানের গাইডেড মেডিটেশনের ক্লাস করল। আর যারা প্লেসিবো গ্রুপে,তারা আরেকদিন এল, এসে বই টেপ এইসব নিয়ে গেল, গল্প করল, কিন্তু তাদের ধ্যান হল না।
    আরেক ধরণের স্টাডি হয়, ক্রস ওভার ট্রায়াল। ব্যাপারটা আপিস কাছারীতে চলে। এক দল আট সপ্তাহ মেডিটেশন করল,তখন বাকীরা এমনি অন্য কিছু করল,বা আলাদা করে কিছু করল না। তার পর দু সপ্তাহ বিরতি , দিয়ে ব্যাপারটাকে রোটেট করানো হল, এবারে আগের বার যে দলটা কিছু করেনি,তারা মেডিটেশন সেশন করল। এতে সবাই একটা "প্লেসিবো" ধরণের ইনটারভেনশন পেল।
  • অরিন | ১৭ জুন ২০২৪ ১০:১৩533363
  • ও,এবার চিকিৎসা ।
    ধ্যানকে সাধারণত প্লেসিবো বলে মনে করা হয় না । :-),যদিও,ধ্যানের একটা pleasing effect রয়েছে। মানে এরকম সচরাচর ভাবা হয় না যে, আসলে ধ্যান করলে কিছু হয় না , লোকে মনে করে তাই।  যে যে কারণে ধ্যান করতে বলা হয়, anxiety ইত্যাদিতে, সেখানে ধ্যান না করে ধ্যানের ভান করলে কাজ হবে না।
  • অরিন | ১৭ জুন ২০২৪ ১০:৪৬533366
  • শুভ্রনীল, এটা দেখুন,
    "Mindfulness-Based Analgesia or Placebo Effect? The Development and Evaluation of a Sham Mindfulness Intervention for Acute Experimental Pain" 
    এদের sham mindfulness ব্যাপারটা খুব interesting । 
     
     
  • সিএস  | 103.99.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ১০:৫৩533367
  • লেখাটার মাথায় অরিননবাবু যে ছবিটা দিয়েছেন সেটা প্রবলেম্যাটিক, ধ্যান - পাহাড় - পরিবেশ - মুনিঋষি ইত্যদির সাথে এই ছবিটি যুক্ত, যেন ধ্যান ঐ পরিবেশেই ঘটতে পারে বা ধ্যান করলে মানুষ তার ভেতরে ঐ পরিবেশ ফিরে পাবে। এই ইমেজটির সাথেই প্রাচীন ভারতের ধ্যানের 'ইমেজ' যুক্ত হয়ে আছে এবং প্রাচীন ভারত - ধ্যান, এই যোগটি তৈরী হলেই তার ক্রিটিসিজম হবে, যারা করছেন তারা 'হয়ত" এই লাইন থেকে করছেন। আজকালকার দিনে 'ধ্যান' মূলতঃ মনে হয় দু'ভাবে করা হয়, একটি পা থেকে মাথা অবধি নিজেকে দেখা বা বোঝা, শরীরের কোণায় কোণায় নিজের 'মন' -কে নিয়ে যাওয়া আর দ্বিতীয় পদ্ধতি হল শ্বাসপ্রশ্বাস - প্রাণায়ম ইত্যাদি। দ্বিতীয়টি মনে হয় হঠযোগ, সেসব নিয়ে আবার অতীতের গল্পকথা আছে। এই দুটি পদ্ধতিই নিয়মিতভাবে প্র‌্যাকটিস করা প্রভূত কষ্টকর, তার থেকে ঢের সোজা হল ছবিটিতে যে পরিবেশের সেখানে গিয়ে দিন কয়েক কাটিয়ে আসা বা উপায় থাকলে মাঝেমধ্যে চলে যেতে পারে, রোগ - স্ট্রেস ইত্যাদি আর থাকবে না, ধ্যান সেখানে এমনিই ঘটবে।

    আর এক ব্যাপার হল, মিউজিক থেরাপি করলেও কি মাথার ভেতরে কোন পরিবর্তন হয়, স্ট্রেস রিলিফ হয়, সে নিয়ে কি পেপার ইত্যাদি আছে। যদি থাকে, তাহলে ধ্যানের সাথে তার কী বা পার্থক্য, বা এইগুলো কী একই, নানা উপায় মনকে শান্ত করার ? এইসব প্রশ্নগুলো আসবে মনে হয়, ধ্যানের মূল্য কি সর্বাধিক না নানারকমের পদ্ধতি আছে ?
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:ecb5:aa8c:177e:***:*** | ১৭ জুন ২০২৪ ১১:৩৪533369
  • না, আমি ঠিক প্রাচীন ভারত = ধ্যান = মুক্তি লাইনের জন্য ক্রিটিসাইজ করছি না, কারন ওটা তো বাই ডেফিনিশান সুডোসায়েন্স। ওটা নিয়ে খোরাক করা যায়, সিরিয়াস আলোচনা করা যায় না। 
     
    মাইন্ডফুল মেডিটেশান নিয়ে এখন অনেক রিসার্চ হচ্ছে জানি, তবে আমার এইসব রিসার্চের মেথডোলজি আর বিশেষত জেনারালাইজেবিলিটি নিয়ে সন্দেহ আছে। এগুলো নিয়ে লিখবো, অরিনবাবুর লেখাটা পুরো হয়ে গেলে। 
  • অরিন | ১৭ জুন ২০২৪ ১১:৩৭533370
  • ছবির ব্যাপারটা খুব ইন্টারেষ্টিং , আমি এই দিকটা ভাবিনি সিএস । হতে পারে ।
    মিউজিক থেরাপি করলে তো স্ট্রেস কমে বটেই । এইগুলো সবই একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে । আসলে ধ্যানের মূল্য কতটা এই ব্যাপারগুলো ঠিক বলা যায় না মনে হয়, :-) 
  • অরিন | ১৭ জুন ২০২৪ ১২:৪৮533371
  • তবে এই সব ধ্যান তো শুধু ভারতে হয় না, সারা পৃথিবীতে লোকে করে। আর যে ধরণের ইন্টারভেনশন নিয়ে লেখা হচ্ছে, তার সঙ্গে আলাদা করে ভারতের সম্পর্ক নেই। পৃথিবীর বহু দেশেই পাহাড়, জঙ্গল, নদী ইত্যাদি আছে। কাজেই এই ফ্যাকটরগুলো খুব একটা ম্যাটার করার কথা নয়, তবে কে কোন ভিস্যুয়াল কিভাবে নেবেন, সে তো আর ভেবে লাভ নেই। তাহলে এ লেখাটাই না লিখলে হত।  এত নেগেটিভ ভাইব, বাপরে বাপ! 
     
    ভাগ্য ভাল, বেশ কয়েকজন সিরিয়াস লোকজনের মন্তব্য এবং উৎসাহও পাওয়া যাচ্ছে। দিনের শেষে সেইটুকুই মনে থাকে, সেইটুকুর জন্যেই নতুন জিনিস নিয়ে পড়াশোনার উৎসাহটা থেকে যায়। একেক সময় মনে হয়, "ধ্যান" কথাটা নিয়ে এখানে যারা নেগেটিভ কমেন্ট করছেন, প্রবলেম খুঁজে পাচ্ছেন, তাদের কিছু একটা সমস্যা আছে হয়ত। হয়ত। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:ecb5:aa8c:177e:***:*** | ১৭ জুন ২০২৪ ১৩:৩২533372
  • এটা একটু অ্যাড হোমিনেম হয়ে গেল মনে হচ্ছে :-) 
     
    "ধ্যান" নিয়ে আমার ​​​​​​​যথেষ্ট সন্দেহ ​​​​​​​আছে, ​​​​​​​এটাকে আদৌ ​​​​​​​সায়েন্টিফিক ​​​​​​​মডেল ​​​​​​​এর ​​​​​​​মধ্যে আনার ​​​​​​​মতো ​​​​​​​কোন ​​​​​​​কাজ ​​​​​​​হয়েছে ​​​​​​​বলেও ​​​​​​​দেখিনি। এটা খানিকটা ​​​​​​​হোমিওপ্যাথির ​​​​​​​মতো ​​​​​​​ব্যাপার। ​​​​​​​এটা ​​​​​​​বলার ​​​​​​​জন্য ​​​​​​​কি ​​​​​​​আমার ​​​​​​মধ্যে ​কোন ​​​​​​​সমস্যা আছে? ​​​​​​​মেরেছে। ​​​​​​​
     
  • সিএস  | 103.99.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ১৪:০৮533374
  • ধ্যান বস্তুটি loaded, ধর্ম - দর্শন - সংস্কৃতি - অতীত - বর্তমান - wellness - well being ইত্যাদি নিয়ে loaded।

    ধ্যানের মাধ্যমে যদি মাথার ভেতরে পরিবর্তন হয়, সেরকম পরিবর্তন মিউজিক থেরাপি, লাফটার থেরাপি, ফুটবল পেটানো, খোলা হাওয়ায় হন্টন, ব্যায়াম ইত্যাদির মাধ্যমেও ঘটে।

    অর্থাত, নানা কিছু মিশে আছে, ধ্যান একক বা স্বয়ম্ভু নয় মনে হয়। তার শারীরবৃত্তিয় দিক আছে, সোশিওলজিও আছে।

    অতএব নানারকমের কথা তো হবেই।

    তদুপরি, আমার কর্মস্থলে দেখছি মেইল এসেছে, তার বিষয় হল ঃ

    Yoga Day - 21st June - A day of Yoga and mindfulness

    দেখতে দেখতে কর্পোরেটে 'ধ্যান' চলে এসেছে।

    এবার যদি নিছকই বিজ্ঞান কী বলে সেই তথ্য দিতে চান, তাহলে হয়ত সেগুলি তথ্যই হবে, সেরকম তথ্য বিভিন্ন বিষয় নিয়েই দেওয়া যায়। কিন্তু বস্তুটি loaded বলেই, শুধুই বিজ্ঞান দেখিয়ে হয়ত বেরিয়ে যাওয়া যাবে না, বা সেদিক দিয়েও প্রশ্ন আসবে।

    হয়ত, এত বড় বিষয় যখন, তখন গুছিয়ে পুরো লেখাটি লিখে ফেলে এখানে দিলে ক্যাও একটু কম হত।
     
     
  • অরিন | ১৭ জুন ২০২৪ ১৪:১৯533375
  • কোনটা আবার ad hominem ? কারুর নাম করিনি তো? নাকি করেছি মনে হলো? 
     
    '"ধ্যান" নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ ​​​​​​​আছে, ​​​​​​​এটাকে আদৌ ​​​​​​​সায়েন্টিফিক ​​​​​​​মডেল ​​​​​​​এর ​​​​​​​মধ্যে আনার ​​​​​​​মতো ​​​​​​​কোন ​​​​​​​কাজ ​​​​​​​হয়েছে ​​​​​​​বলেও ​​​​​​​দেখিনি।'
     
    ও আচ্ছা, এবার বুঝলাম কেন লিখলেন ।
    আমার মনে হয় সমস্যাটা "ধ্যান" কথাটাকে নিয়ে ।
    বাংলা সেন্টেন্স টা jumbled হয়ে গেছে ।
     
    ধ্যান কে যে scientific model এ আনা হয়নি এমন নয় কিন্তু ।
    ব্যাপারটাকে নানান ভাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে ।
    যেমন ধরুন এই পুরো neuroscience দিয়ে প্রচুর experment ,মানে রীতিমতন brain এর attention নেটওয়ার্ক নিয়ে প্রচুর কাজ কর্ম হয়েছে । যেটা সবথেকে ইন্টারেষ্টিং , এইরকম একটা সহজ intervention , সেখান থেকে এই যে নানান রকমের "প্রভাব" লক্ষ করা যাচ্ছে (যেগুলো মানুষের ওপর rigorous  পরীক্ষা করে দেখা গেছে), এর কারণটা সত্যি enigmatic , এবং এই challenge টাকে বোঝার জন্য এতো ব্যাপার স্যাপার । যেমন ধরুন মাইক্রোসেকেন্ড স্কেলে EEG ডাটা আনালিসিস ( microstate ) করে দেখা । 
    ডেভিড ভ্যাগোর লেকচারটা শুনে দেখুন,
     
     
    তখন ব্যাপারটার সমস্যাটা এবং মডেল তৈরির ব্যাপারটা কিছুটা বোঝা যাবে ।
  • অরিন | ১৭ জুন ২০২৪ ১৪:২৬533376
  • সিএস, "য়ত, এত বড় বিষয় যখন, তখন গুছিয়ে পুরো লেখাটি লিখে ফেলে এখানে দিলে ক্যাও একটু কম হত।"
    সেটাই হয়েছে ।
    তাই পরের লেখাটায় পুরোটা লেখার পর কমেন্ট এলে সুবিধে হয় ।
    আমার এই কাজের ফাঁকে ফাঁকে লেখা লেখার ব্যাপারটা কাজে লাগছে না, খুব disruptive ।
    দেখছি ।
  • সিএস  | 103.99.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ১৪:২৬533377
  • এই লেখাটায় mindfulness-কে তদন্ত করা হয়েছে, দার্শনিক দিক থেকে, অরিনবাবু বলতে পারবেন, কতখানি ঠিক - ভুল ইত্যাদি।

    https://aeon.co/essays/mindfulness-is-loaded-with-troubling-metaphysical-assumptions
     
     
  • অরিন | ১৭ জুন ২০২৪ ১৪:৪৪533378
  • ঠিকই লিখেছে, এই mcmindfulness ব্যাপারটা সাংঘাতিক গোলমেলে বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
    বেশ কয়েক বছর আগে Chris Goto -Jones  একটা প্রবন্ধ লিখেছিলো Zombie Apocalypse নাম দিয়ে, পড়ে দেখতে পারেন,
     
    Slavoj Zizek এই নিয়ে প্রচুর লিখেছেন, দেখি খুঁজে পেতে কিছু পাই  কি না ।
     
  • একক | ১৭ জুন ২০২৪ ১৬:৩৩533381
  • যেটুকু পড়েচি ; জিজেকের ব্যথা হলো  উইজডমের ডম নিয়ে। কারণ উহা পুঁজি। এটা একদম ঠিক কথা। ধ্যান আপনাকে গিল্ট ফ্রী ট্রিপ দেবে,  সে জিনিস শোষিতের পক্ষে ভালো  নয়। জিজেক সুজুকি পড়ে বুদ্ধিজমের উপর ক্ষেপেচেন। তা বাপু,  শ্রেষ্ঠীদের ধর্ম যোদ্ধাদের ধর্ম রাষ্ট্রবাদী হবেনা ত কী হবে। প্রচুর গাল দিয়েচেন এসব কে। 
     
    কিন্তু তাতে,  যিযেক বলেচেন ধ্যান অসার এটি প্রমাণ হয় না। ওই রাজনীতিটি গোলমেলে এটুকুই বোঝা যায়। 
     
    তা,  তোমার সামনে :  সারা বিশ্বের গিল্ট মাথায় নিয়ে সিন্দবাদ হওয়া আর ধ্যান নামক মাইক্রো ডোজ কোকেইন নিয়ে সুস্থ থাকা এইদুটি অপশন থাকলে কোন টি নেবে??  
     
    যিযেক প্রথমটার দিকেই ঠেলবেন। ব্যাটা পলিটিকালি কেরেস্তান।  মাথায় পাপের বোঝা না নিলে ওদের অম্বল হয়। 
  • kk | 172.58.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ২০:২৪533385
  • 'ধ্যান' ব্যাপারটার সাথে ধর্ম, দর্শন, সংস্কৃতি, এইসব মিশিয়ে ফেলা হয় বলেই মুশকিল। তারওপর কিছু লোকে একে ব্যবসা বানিয়ে ফেলেছে বলে আরো মুশকিল। আমি এগারো বছর ধরে ধ্যান করছি। স্পষ্ট ডিসক্লেমার দেবো যে আমি কোনো রকম ধর্মে বিশ্বাসী নই, কোনো দেশের দর্শন বা সংস্কৃতিকেও ধ্যানের সাথে আদোয় জুড়ি না। আমি যা বুঝেছি, ধ্যান একটা প্র‌্যাকটিস। কার্ডিও এক্সারসাইজের মত, ওয়েট ট্রেনিং এর মতো একটা প্র‌্যাক্টিস। এর সাথে কোনো রকম ধর্ম, দর্শন, পাহাড়ের গুহা, সমুদ্রতীর, বটগাছের তলা, ইত্যাদির কোনো সম্পর্ক নেই। এটা একটা পদ্ধতির অভ্যেস করা যা দিয়ে নিজের অ্যাওয়ারনেস বাড়ানো যায়। আর তার ফলে আবেগ, উদ্বেগ, নেগেটিভ ইমোশনের ঢেউ এ ভেসে না গিয়ে কী ভাবে গ্রাউন্ডেড থাকা যায়, কীভাবে কঠিন সময়কে হ্যান্ডল করা যায় সেই রাস্তা খুঁজে পাওয়া। আরেকটা কথাও একটু ছুঁয়ে যাই -- ধ্যান মানে শুধু বডি স্ক্যানিং কিম্বা ব্রিদিং মেডিটেশন নয়। আরো অনেক রকম ধ্যান আছে। এই লেখা অরিনবাবুর লেখা। এখানে আমি বেশি বকবক করবোনা। লেখা শেষ হোক। এই কটা কথা না বলে পারলামনা, কারণ সবার মতামত দেখে এটাই মনে হচ্ছে যে ধ্যান সম্পর্কে অনেক ভুল বোঝাবুঝি আছে, ভুল ধারণা আছে।
    অরিন লানকে অনুরোধ, "এই লেখাটা না লিখলেই হতো" এরকম প্লিজ মনে করবেন না। সব মতেরই পাঠক তো আছেন। নেগেটিভ ভাইব আসছে বলে আপনার মনে হচ্ছে। কিন্তু এমন পাঠকও আছে যারা আরো জানতে চায়। কাজেই আমার মনে হয়, আপনি এখনই  কমেন্টের উত্তর দেবার রাস্তায় না গিয়ে আগে পুরো লেখা লিখে নিলে হয়তো কিছু সুবিধা হবে। তারপরে ফিরে পড়ে নাহয় কমেন্টগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। জাস্ট সাজেশন।
  • kk | 172.58.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ২০:২৮533386
  • * আদৌ
    এখানে র এ য ফলা আকার লিখতে পারিনা। pryaakTis লিখলে প্র‌্যাকটিস হয়ে যায়! এ তো মহা মুশকিল!
  • যাইহোক | 59.94.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ২০:৪৯533388
  • ব্যক্তিগত মত ---
    মেডিটেশন : মেডিকেশন :: সাইকোলজি : সাইকিয়াট্রি 
     
    মেডিটেশনরত সকল মানুষের ব্রেন ইমেজিং একরকম আসার কথা নয়, কারণ সকলে একইরকম মাইন্ডফুলনেস অ্যাটেইন করতে পারবেন না। সকলের ঘুমের সময়ের ব্রেন ইমেজিং ও কি একই হয়? সম্ভবত না। কে কখন ডিপ স্লিপে বা আধোঘুমে, কে কখন স্বপ্ন দেখছে ইত্যাদি নিশ্চয় ফারাক করে দেয়।
     
    টই ছেড়ে ভাটে গিয়ে একই বিষয় নিয়ে মতামত ও আলোচনা করে, গুরুত্বপূর্ণ লিংক দিয়ে কী বাড়তি সুবিধে হয় - দুর্বোধ্য।
  • প্র্যাকটিস | 2600:1002:b055:97a1:10a6:1bad:b9f0:***:*** | ১৭ জুন ২০২৪ ২০:৫৩533389
  •  prJaakaTisa 
     
  • kk | 172.58.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ২০:৫৫533390
  • প্র্যাকটিস, থ্যাংকিউ :-)
  • &/ | 151.14.***.*** | ১৭ জুন ২০২৪ ২৩:৫৩533392
  • আমিও আছি। পড়ছি। মন খোলা রেখে পড়ছি। সবটা লেখা এলে একসঙ্গে আবার পড়ব ধীরে ধীরে।
  • &/ | 151.14.***.*** | ১৮ জুন ২০২৪ ০০:০১533395
  • কমেন্ট সেকশনে কুরুক্ষেত্র দেখে ঘাবড়ে গেছি। এটা বিজ্ঞান নাকি বিজ্ঞান নয় এই নিয়ে দক্ষযজ্ঞ লেগেছে। তবে কিনা বিজ্ঞান জিনিসটাই তো আসলে একটা প্রক্রিয়া, খোলা মনে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়া। বিজ্ঞান তো কোনো কিছু 'বিশ্বাস' করতে বলে না। বলে মাপো, গোনো, হিসেব করো, পরীক্ষানীরিক্ষা করো, বাজিয়ে দেখো, তারপরে ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখো কী সাব্যস্ত হল।
  • আনন্দম | 173.62.***.*** | ১৮ জুন ২০২৪ ০৬:২৪533403
  • ধ্যান বিষয়ে আমার বক্তব্যঃ 
    ধ্যান বলতে সাধারণভাবে দুটি ব্যাপারকে একসাথে যুক্ত করে ফেলা হয়। 
    অ) ধ্যান হচ্ছে মনঃসংযোগের পদ্ধতি। মনোনিবেশের  টুল বললেও ভুল হয় না হয়তঃ। 
    আ) গভীর চিন্তাভাবনা করা। 
     
    এই গভীর চিন্তাভাব্না তো জগজ্জুড়ে মানসিক কাজ যারাই করে তারাই করছে, তার জন্যে সবাই হাঁটু গেড়ে পা মুড়ে বসছে না। তবে প্রাচীন ভারতে, হয়ত অন্যত্রও, ঐভাবে বসে মনোনিবেশ করে লোকে গভীরতর চিন্তা ভাবনা করত। তখন তো ল্যাবে গিয়ে রিসার্চের যুগ আসে নি, মনই একমাত্র রিসার্চ সেন্টার। 
     
    বস্তুতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষ ধ্যান বলতে অ) য়ের কথাই বলা হয়। 
    ধ্যান শীর্ষক টুলটির প্রধানতম কাজ হল মনের ব্যালেন্স আনা। "দুঃখেসু অনুদ্বিগ্নমনা সুখেসু বিগতস্পৃহ" খুবই বড় টার্গেট। ভক্তিবাদী বলবে, যেমতি কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন সেরকম করতে - সব বসের হাতে ছেড়ে কর্ম করতে থাক। জ্ঞানবাদী বলবে উঁহু, বসের নিজের অ্যাজেন্ডা থাকে, তার চেয়ে নিজের রাস্তা নিজে দেখ। কিন্তু তার তো গাইডলাইন লাগবে। 
     
    ধ্যান ঐ "দুঃখেসু অনুদ্বিগ্নমনা সুখেসু বিগতস্পৃহ" করতে সাহায্য করে। অনেকে স্বভাবগতভাবেই ব্যালেন্সড মন, অনেকে ছোটবেলা থেকে ঘা খেয়ে খেয়ে ব্যালেন্সড মন অর্জন করে ফেলেন। তবে মনের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হল ইমোসানগুলিতে হারিয়ে যাওয়া। 
     
    ধ্যানের টেকনিকগুলি মনের ঐ সমতা আনতে সাহায্য করে। শরীরচর্চায় যেমন শরীরের বিবিধ অংশ শক্তিশালী হয়, ধ্যানে সেরকম মনের মাসলগুলি শক্তিশালী হয়, নিজের ওপর ক্ন্ট্রোল বাড়াতে সাহয্য করে।  মনের সমতা থাকলে কি কি উপকার হতে পারে, সেকি আর ব্যাখা করার দরকার আছে?!  তবে আমার ভারি আনন্দ হয় যখন বুঝতে পারি নিজের মনের ওপর অনেক কন্ট্রোল, কিন্তু চারপাশের কারোরি সেটা নেই। মুশকিল হল, তারপরেই, নিজের কন্ট্রোল ফের হারিয়ে যায় - কিনা চক্রবত পরিবর্তন্তে ইত্যাদি ...
     
    তো স্কিলড ধ্যানীরা, বহুদিন নানাবিধ টেকনিকে প্র্য্যাকটিস করেছেন , তেনাদের ওরকম চট করে টসকান যাবে না ...
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:50c7:c0e9:22fb:***:*** | ১৮ জুন ২০২৪ ০৭:২১533404
  • আনন্দম এর কথাগুলোতে এমনিতে আমার কোন আপত্তি নেই। 
     
    তবে কিনা, এখানে "ধ্যান" এর একটা সায়েন্টিফিক মডেল বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছ, তাহলে "মনের সমতা" ইত্যাদি ব্যাপারগুলোর ডেফিনিশান দরকার হয়। আমার প্রিয় ফিজিসিস্ট সাবিন হসেনফেল্ডার একটা কোট দিয়ে দিঃ 
     
    Every once in a while I thik that scientists stray over into the territory that is religion. And I don't have a problem with them doing it, I just wish they would be clearer about they are actually doing religion.
  • অরিন | 132.18.***.*** | ১৮ জুন ২০২৪ ০৯:১০533405
  • "এখানে "ধ্যান" এর একটা সায়েন্টিফিক মডেল বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছ, তাহলে "মনের সমতা" ইত্যাদি ব্যাপারগুলোর ডেফিনিশান দরকার হয়।"
     
    সমতার ডেফিনিশন দেওয়া হয়েছে, এখানে আনন্দম নামের নিক নিয়ে যিনি লিখছেন, তিনিও দিয়েছেন, একটু বুঝে নিতে হবে ।
     
     সমতা একটি  "শান্ত"  তন্ময় অবস্থা যেখানে মনের কোন রকম উত্তেজনা থাকে না । এটা একটা "অবস্থা" ("state ") । এই অবস্থায় পৌঁছতে হলে সর্বপ্রথমে  আপনাকে মনের "দিকে" দেখতে হযে । এই কাজটি করতে গেলে মন বা শরীর বহির্ভূত কোনো অবলম্বন (external )  দিয়ে করা সম্ভব হবে না (যেমন ধরুন কোন গান শুনে বা ওষুধ নিয়ে বা অন্য কোন রকম artifiical clutch দিয়ে পারবেন না, বাই ডেফিনিশন ) । সেই কারণেই  "মনের দিকে" "দেখবার" একমাত্র যে পথ মানুষের জানা আছে, সেটাকেই ধ্যান বলে । এখানে ধ্যানের  scientific model  বলে যাকে বলা হচ্ছে সেটা এই ধ্যানএর মাধ্যমে  সমতার state যদি পেতে হয়, তাহলে কোন কোন parameter কে identify এবং specify করতে হবে  । 
    এখানে একটা ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে যে ধ্যানের সঙ্গে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই, । যদিও প্রায় সমস্ত রকমের চেনা জানা ধর্মে ধার্মিকরা কোন না কোন প্রকার মনোসংযোগ করেন  । 
     
    আরো একটা ব্যাপার খেয়াল করতে হবে, সমতার এই "অবস্থা" মানুষের সহজাত নয়, এর জন্য "তালিম" নিতে হয় । হাত ঘোরানো পা ছোঁড়া মানুষের সহজাত, কিন্তু সাঁতার কাটা মানুষের সহজাত নয়, মানুষকে  শিখতে হয়, যিনি সাঁতার জানেন না, তাঁকে জলে ফেলে দিলে ডুবে যাবেন, যিনি সাঁতার জানেন তিনি ডুববেন না । সাঁতারের scientific model হাত পা শরীর ব্যবহার করে শরীরকে জলের মধ্যে ভাসিয়ে রাখার শারীরিক ভারসাম্য অর্জনের মডেল । 
    আরেকটি উদাহরণ, হাত পা ঘোরানো মানুষের সহজাত হতে পারে, তাই বলে  সাইকেলে চড়া সহজাত নয়, তাকে  শিখতে হয়, মানুষ জন্ম থেকেই সাইকেলে চড়তে পারে না । যে কোনোদিন সাইকেল দেখেনি, তাকে আচমকা সাইকেল চড়তে দিলে সে সাইকেল থেকে পড়ে যাবে, তার পক্ষে সাইকেল চালানো সম্ভব হবে না, অথচ সেই মানুষই যদি কয়েকদিন সাইকেল চালানোর ট্রেনিং নেন, কয়েকদিন পরে সাইকেল চালাতে সক্ষম হবেন । সাইকেল চালানোর তত্ত্বের বা মডেল হচ্ছে কি করে একটা দু-চাকার চলমান যন্ত্রের ওপর নিজের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, তার জন্য কি কি ধরণের অবস্থানগত পরিবর্তন আনতে হয়, তার parameter গুলো identify করা specify করা  ।
     
    ঠিক ঐরকম, ধ্যানের উদ্দেশ্য মানুষের মনে সমতা আনা । শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া, কোন একটা ব্যাপার কে মন দিয়ে চিন্তা করা মানুষের সহজাত, কিন্তু নিজের চিন্তা বা শ্বাস প্রশ্বাস কে মন দিয়ে দেখা ব্যাপারটা মানুষের সহজাত নয়, এই কাজ  মানুষকে শিখতে হয় । যে লোকটি ধ্যানের ব্যাপারে untrained , তাকে যদি ধ্যান করতে বসিয়ে দেন কোথাও, তার মনে অজস্র এলোমেলো চিন্তা আসবে, কোন কাজের কাজ হবে না । সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানোর সঙ্গে তফাৎ এই জায়গায় যে এ ব্যাপারটার কোন external appearance নেই, মানে কেউ ধ্যান না করতে জানলে তার কোন আপাত ভাবে ক্ষতি হবে না ।  ধ্যান ব্যাপারটায় মানুষকে শিখতে হয় কি করে নিজের মনের প্রতি নজর দিতে হয়, মনের মধ্যে অজস্র চিন্তার যাওয়া আসার মাঝখানে কি করে মনে একটা ব্যালান্স আনতে হয় । এ কাজটা এক দিনে হয় না, এবং  তার অনেক পদ্ধতি আছে, আমার লেখাটায় লেখাটার সময় একটা পদ্ধতির বর্ণনা দিয়ে সূত্রপাত করেছিলাম । সব চেয়ে সহজ পদ্ধতি মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের দিকে "নজর" বা "মনোযোগ" দেওয়া । ক্রমাগত দিতে থাকলে একটা সময়ে মনে এক ধরণের ব্যালান্স (ভারসাম্য) আসে । ব্যালান্স যে এসেছে সেটা বুঝতে পারা যায় এক ধরণের প্রশান্তি বা গভীর শান্তির উপস্থিতি থেকে । যেমন সাঁতার আর সাইকেল চালানোর scientific model  এর কথা লিখলাম, সেইরকম সমতার সাইন্টিফিক মডেল হল সতত সদাব্যস্ত মনের অজস্র  চিন্তাভাবনার মধ্যে দিয়ে কি করে মনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, "সুখী' (happy ) থাকতে হয়, তার  কি কি parameter , সেগুলোর identification , স্পেসিফিকেশন, সেইসব প্যারামিটার গুলোর মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক এইগুলো নির্ণয় করা । 
  • সোমনাথ | 45.64.***.*** | ১৯ জুন ২০২৪ ০৯:০৮533463
  • অরিনবাবুর জন্য প্রশ্ন:  ঠিক কি ভাবে ধ্যান করা উচিত?  যাতে সর্বোচ্চ মানের আত্মোন্নতি হয়? কতদিনে লক্ষণীয় পরিবর্তন অনুভব করা যাবে? ধ্যান করলে, ঠিক কোন জায়গায় কোন স্নায়ুতে গিয়ে কিভাবে কাজ হয়? সেই ব্যাপারগুলোর কোনো মেইনস্ট্রিম মেডিক্যাল প্রমান আছে কি? এই ব্যাপারগুলো জানাটা ভীষণ জরুরি। 
     
     
  • অরিন | ১৯ জুন ২০২৪ ০৯:৫৬533467
  • সোমনাথ, সেই সব ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করার জন্যই এই ব্লগটি খুলেছিলাম । দ্বিতীয় পর্বে এগুলো নিয়ে আলোচনা করব । তবে ঠিক ঠিক কি ভাবে ধ্যান করা " উচিত" এর এক কথায় কোন উত্তর নেই । হতেও পারে না । কারণ অনেক রকমের ধ্যান রয়েছে, তার প্রত্যেকটাই মানুষের কিছু না কিছু উপকার হয়, সব কিছুর উত্তর তো জানা যায় নি । ঠিক কোন জায়গায় কোন 'স্নায়ু' তে গিয়ে কাজ হয়, সেরকম কিছু হয় না, যেটা দেখা গেছে দীর্ঘদিন ধরে যারা ধ্যান করেন  তাঁদের ব্রেন নেটওয়ার্ক আর ব্রেনের বেশ কিছু অঞ্চলে যেমন anterior cinguate cortex , বা insula বলে কিছু কিছু জায়গায় কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে । সে সবের কি তাৎপর্য কে জানে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন