বাড়ির ছোট মেয়ে আমি। আমি ছাড়া বাড়িতে আছেন মা, বাবা (৬৫ বছর), দাদু(৮২ বছর, হাই প্রেশার), দিদা(৭৬ বছর, Alzheimer's patient), দিদি, জামাইবাবু আর তাদের দুই বছরের ছোট ছেলে।
লকডাউনের বেশ কিছুদিন আগেই আমার দাদু দিদা আমাদের বাড়িতে এসে আটকে পড়েন। এসেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। লকডাউনের কারণে ফেরা হয়নি। দিদি জামাইবাবুও তাই।
লকডাউনে আমরা সেভাবে কেউ বাড়ি থেকে বেরোতাম না। আমি কেবল ওষুধ কিনতে যেতাম। কখনো দিদি, কখনো আমি বাড়ির আবর্জনা ফেলতে যেতাম। তাও মাস্ক পরে বেরোতাম। বাড়ি ফিরে স্নান করে নিতাম। সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যেত। সেগুলো আলাদা একটা ঘরে রাখা হত এবং পরে তা তুলে এনে ব্যবহার করা হত। এমনকি খবরের কাগজও নিইনি। মাঝে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেছিলাম বাবা মাকে। তাও বাড়িতে ঢোকার সময় ওই একইভাবে সতর্কতা বজায় রেখে ঢুকেছি। আমরা নিজেরাও বুঝিনি এত সতর্কতার পরেও আমাদের বাড়িতে কীভাবে করোনা আসতে পারে! জানিনা কোন গাফিলতির জেরে এমন ঘটনা ঘটল। আজও আমি এর উৎস খুঁজে পাইনি।
এদিকে দাদুর জ্বর আসে ৩০ শে এপ্রিল। বাবা, মা, দিদি, জামাইবাবুর জ্বর আসে পয়লা মে। তখনও অবধি আমার জ্বর আসেনি। জ্বর আসেনি আমার ছোট্ট বোনপোর আর আমার দিদার। সকলে ভেবেছিলাম সাধারণ জ্বর। তবে সে জ্বর যখন আর কমছিল না, মনে সন্দেহ জাগে। ডাক্তার দাদা, বন্ধু সকলের সঙ্গে কথা বলতে থাকি। আমাদের কি করণীয় সেসব জানতে থাকি। তারপর আমরা স্বেচ্ছায় প্রাইভেটে দাদুর টেস্ট করাই। রিপোর্ট আসে দাদুর কোভিড পজিটিভ।
১০ তারিখ রাত্রে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে আমাদের ওই রিপোর্ট জানানোর কয়েক মুহূর্ত পরেই দাদুর হঠাৎ শ্বাস নিতে অসুবিধে শুরু হয়। তখনও সুস্থ বলতে আমি একাই। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মাঝরাতে দাদুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। অ্যাপোলোতে বেড পাইনি। ওরা রেফার করে এম আর বাঙুরে। ওখানে দাদুকে ভর্তি করানো হয়।
এরপর শুরু হয় যুদ্ধটা। সকাল হতে না হতেই আমরা প্রায় সকল প্রতিবেশীকে ফোন করে জানাই যে আমাদের বাড়িতে কোভিড কনফার্মড। কাউকে না জানাতে পারলেও খবর পৌঁছে দিই। আতঙ্কিত হয়ে চারপাশের বাড়ির সবাই দরজা জানালা বন্ধ করে দেন এবং কেউ কেউ আমাদেরও জানালা বন্ধ করতে নির্দেশ দিতে থাকেন। ভেবেই রেখেছিলাম, যদি বাড়াবাড়ি হয়, তাহলে পুলিশে খবর দেব। যদিও অতদূর যেতে হয়নি। আমরা ভালোভাবে বোঝাই এবং জানালা খুলে রাখি।
আমি ফেসবুক স্টেটাসে জানিয়ে দিই আমাদের বাড়িতে কোভিড পজিটিভ এবং আমি মনে করি আমি সচেতন নাগরিক এবং সকলকে আমাদের থেকে দূরে রাখা ও কিছু ভ্রান্ত ধারণা দূর করা আমার কর্তব্য। তবু দাদুর কথা জানাতেই অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আমার বাবা আমাদের বাড়ির কাছেই একটি স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। তাঁর জ্বর আসছে শুনে তাঁর ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে ফোন করতে থাকে। অনেক পরিবার পরিজন অপরিচিত হায় হায় করতে থাকেন। বোধ হয় ভাবতে থাকেন, এই বুঝি সব গেল আর কি।
বিশ্বাস করুন, হারব না জিতব ভাবিনি। বারবার ভেবেছি, লড়তে হবে। ভেবেছি মন দিয়ে লড়লে ৮২ বছরের দাদুকে ( হাই প্রেশার) ফিরিয়ে আনা যাবে, ৬৫ বছরের বাবাও সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ফেসবুকে স্টেটাস দেওয়ার পর কেউ কেউ হা হা রিয়্যাক্ট দেন। কমেন্টে উত্তেজিত করতে থাকেন। আমি ধরে ধরে হয় কমেন্ট ডিলিট করি, নয়তো ব্লক করতে থাকি। কারণ মনে হয়েছিল কান আর চোখ দুটো বন্ধ রেখে আমাদের লড়াইটা মন দিয়ে লড়তে হবে। নইলে এইসব কমেন্ট পড়ে গালমন্দ খেয়ে অপরাধ না করেও অপরাধবোধে ভোগার কোনো মানেই হয়না। বন্ধ করলাম চোখ।
ছাদে জামাকাপড় মিলতে ওঠার পর দূর থেকে চিৎকার শুনেছি। আমার দিকে আঙুল দেখিয়ে চিৎকার করে ব্যঙ্গের সুরে বলে গেছেন কেউ কেউ, ' দেখ, আরে যে জামাকাপড় মিলছে, ওদের বাড়িতেই করোনা।' তাঁরা চিহ্নিত করতেই পারেন। তবে মানুষের এতটাই রুচিবোধের অভাব যে, তাঁদের সেই কথাগুলো যে আমার কান অবধি আসছে, সেটা তাঁরা বুঝতেই পারেননি। আমি ছাদ থেকে নেমে আসি।
আতঙ্কে ফোন আসতে থাকে, খবর রটে যায় আমার দাদু এক্সপায়ার করে গেছেন। বাবাও নাকি এক্সপায়ার করে গেছেন। দাদু নাকি বাঙুর হাসপাতালের মেঝেতে গড়াগড়ি দিচ্ছে। যাই হোক, এবার কান বন্ধ করলাম।
তারপর সরকারিভাবে বাড়ির সকলের টেস্ট হল যেহেতু আমরা সকলেই দাদুর সঙ্গে ছিলাম। রিপোর্টে জানা গেল আমাদের কারও কোভিড পজিটিভ (asymptomatic) , কারও নেগেটিভ, কারও 'inconclusive'..হেলথ ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কথা হল। আমরা CMOH এর পারমিশন নিয়ে সকলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। তারপর থেকে যে কোনো প্রয়োজনে পাশে ছিলেন ডাক্তার বন্ধু, দাদা আরও অনেকে। এদিকে আমি ফেসবুকে প্রতিদিন সকলের সেরে ওঠার আপডেট দিতে থাকি। অনেকে তাতে আশ্বস্ত হন। ফেসবুক মারফৎ অনেক পরিচিত - অপরিচিতদের সন্ধান পাই যাঁরা আমাকে সাহায্য করতে থাকেন।
খুব কঠিন ছিল দু বছরের বোনপোকে ঘরে আটকে রাখা বা দূরে সরিয়ে রাখা। ওকে আটকানোর জন্য ওর দিকে মোবাইল বাড়িয়ে দিতে হয়েছে। কঠিন ছিল দিদাকে সামলানো। Alzheimer's patient - তাঁকে শুতে বললে সেটা তিনি বুঝতে সময় নেন কমপক্ষে ১৫ মিনিট। কিছুই আর বুঝতে পারেন না। কাউকে চেনেন না। খাইয়ে দিতে হয়। নিজের ঠাকুমার কাছে যেতে চান। এর ওর ঘরে ঢুকে পড়েন। এসবের মাঝে দিদাকে সামলানো সত্যিই একটা চ্যালেঞ্জ ছিল।
ইতিমধ্যে ভালো কিছু ঘটে গেছে। যাঁদের সঙ্গে বিবাদের কারণে কথা হত না, তাঁরা খোঁজ নিতে থাকেন। অনেকে শুভ কামনা করতে থাকেন। প্রতিবেশীদের মধ্যে একটি পরিবার ছাড়া সক্কলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। কেউ খাবার পৌঁছে দেন। কেউ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, ওষুধ এনে দেন। কেউ তা না পারলেও খোঁজ নিতে থাকেন কেমন আছি, কিছু দরকার কিনা.... ইত্যাদি। আমাদের প্রাক্তন কাউন্সিলর থেকে শুরু করে এখানকার নোডাল অফিসার, বাবার কিছু ছাত্রছাত্রী, দিদির বন্ধু, আমাদের আত্মীয়, অনেকে মিলে যথেষ্ট সহযোগিতা করতে থাকেন।
ওদিকে দাদুরও ধীরে ধীরে শারীরিক উন্নতির খবর পাই। বাঙুর থেকে প্রতিদিন ভিডিও কল করানো হত। দাদু কানে কম শোনার কারণে খুব বেশি কথা বলা হয়ে উঠত না। তবু দাদুর হাসিমুখ দেখলেই মনে বল পেতাম। ওখানে সকলের সঙ্গে নাকি গল্প করতেন। যে নার্স দিদি কথা বলিয়ে দিতেন, তিনি বলতেন, 'আপনার দাদু তো খুব মজা করেন!'
দাদুও তাঁকে চিনিয়ে দিতে থাকেন,'এই দেখ, এটা আমার নাতনি, ওটা আমার গিন্নি, আমার মেয়েকে দেখ! '
দুপুরের ফোনে এভাবেই যেন একটা ছোট পরিবারের সঙ্গে দেখা হত। নার্স দিদিকে আমরা ধন্যবাদ জানিয়ে বলতাম, ' আপনিও ভালো থাকবেন, সাবধানে কাজ করবেন, সুস্থ থাকবেন। ' আসলে এক তরফা মানবিকতা দেখালেই সবাই মিলে বাঁচা যায়না। এই যুদ্ধটা সব্বার। আমরা নাগরিক বলে শুধু নিজের পাওনাটুকু বুঝে নেব বললেই হয়না। যাঁরা জীবনকে বাজি রেখে, পরিবারকে ছেড়ে দিনের পর দিন বাইরে থেকে আমার আপনার মত হাজার হাজার মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছেন, তাঁরাও তো মানুষ! তাঁদেরও নিশ্চয়ই মন খারাপ হয় বাড়ির ছোট মেয়ের জন্য, বুড়ো বাপ মার জন্য.. তাঁরাও নিশ্চয়ই ক্লান্ত হন।
বাঙুর নিয়ে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, তা দেখে আমিও ভয় পেয়েছিলাম। তবু এই মধ্যবিত্ত চাহিদায় যেটুকু পেয়েছি, সেটুকুতে আমরা ধন্য। ফেসবুক মারফৎ অনেকে জেনে যাওয়ার ফলে কেউ মাঝে মাঝে দাদুকে শুকনো খাবার, ফল পৌঁছে দিতেন। কেউ কিন্তু একটা পয়সাও নেননি। দাদু সেগুলো খেয়েছেন। ভালো থেকেছেন। যাঁরা সেসব খাবার পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদের মন ভরে আশীর্বাদ করেছেন। বাঙুরে পরিচিত নার্স গিয়ে দেখেও এসেছেন দাদুকে - দাদু সুস্থ, সবল, হাসিখুশি, স্বাভাবিক।
আমরাও এদিকে সেরে উঠতে থাকি। আর কারও জ্বর আসেনা। দিদি, জামাইবাবু সবাই মিলে হাতে হাতে কাজ করতে থাকি। বাড়িতে গান শোনা থেকে শুরু করে দূরত্ব বজায় রেখে মজা করা, সব করি। কেউ কেউ আমাদের সুস্থ হয়ে উঠতে দেখে, এতটা আনন্দে থাকতে দেখে প্রশ্ন করে বসেন, 'তোদের আদৌ করোনা হয়েছিল তো?!'
আসলে করোনার ভয় এমনভাবে সকলকে গ্রাস করেছে যে অনেকে ধরেই নিয়েছেন করোনা মানেই মৃত্যু। একেবারে তা নয় কিন্তু। এসব ভেবে নিজের ঘুম বিসর্জন দেওয়ার চেয়ে ইমিউনিটি বাড়ানো ভালো। প্রয়োজন প্যানিক না করে সতর্ক থাকা। ভালো থাকুন, সতর্ক থাকুন, জল খান, ভালো ভালো খাবার খান, ছাদে যান, আনন্দে বাঁচুন। এটা যেভাবে asymptomatic হয়ে উঠেছে, হয়তো বুঝতেই পারবেন না আপনার করোনা হয়েছে বা আপনি হয়তো কবেই তাকে জয় করে ফেলেছেন! আর একটা কথা, প্রতিবেশীর মধ্যে কারোর করোনা হলে সহানুভূতিশীল হন। সতর্কতা বজায় রেখে এগিয়ে যান, পাশে দাঁড়ান।
যাই হোক, তারপর একদিন হঠাৎ কলিং বেল- দরজা খুলে দেখি আমার ৮২ বছরের দাদু মাস্ক পরে হাসছে। চোখদুটো উজ্জ্বল। হাসপাতাল থেকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। সত্যি বলতে কি, সরকারি হাসপাতাল থেকে এভাবে পরিষেবা পাব, আমরাও ভাবিনি। দাদু বিশ্রাম নেওয়ার পর সব কথা বলতে শুরু করেন, কেমন ছিলেন, কীভাবে কেটেছে।
বলেন,' অত খাবার পাঠিয়েছিলি, অত সব খাওয়া যায়! পারিনি রে। ওখানে যারা আমার মত কিছু বয়স্ক লোক ছিল, তাদের দিয়ে এসেছি। আমি কিন্তু বেশ ভালোই ছিলাম! প্রথম কয়েকদিন জ্বর এসেছিল। তারপর আসেনি। কিছুই তো হয়নি আমার! কি করোনা! কিচ্ছু না। গল্প করে দিব্যি কদিন কাটালাম। সকলকে হাসাতাম। আরে অত ভয় পেলে হয়!? যাই বলিস, ওরা কিন্তু দিনে তিন চারবার করে জায়গাটা মুছত। খাবার দিত ভালোই। আসার সময় আবার নার্সরা আমাকে বলল, দাদু , টাটা - বাই বাই, ভালো থাকবে। আসলে এই কদিনে ভালোবেসে ফেলেছিল তো.... '
Thakuma 76 ar baba 65?
M. R Bangur এ এতো ভালো পরিষেবা আর treatment পাওয়া যায় শুনে খুব আশ্বস্ত লাগছে l এরকম positive post খুব কম দেখেছি l আপনার দাদু, বাবা আর বাড়ির সবার মঙ্গল করুন ঈশ্বর l
সবাই সুস্থ জেনে ভীষণ ভালো লাগল।
বাহ সত্যি পরে মনে জোড় পেলাম,
খুব ইনস্পায়ারিঙ লেখা। ধন্যবাদ।
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। অনেক ভ্রান্তি নিরসন করলেন। ধন্যবাদ।
যদুনাথমুখোপাধ্যায় সম্মিলিত ভাবে করোনা কে সঙ্গে নিয়ে দিব্যি থাকা, সুস্থ হয়ে সেই অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করার মাধ্যমে তাদের মনের গহনে প্রোথিত অহেতুক করোনা ভীতি দুর করার এই অনবদ্য প্রচেষ্টার জন্য লেখিকা কে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।গভীরে গিয়ে ভাবলে আমরা বুঝতে পারবো উল্লিখিত এই পরিবারটি বাস্তবে করোনার সঙ্গে নয়, করোনা সর্ম্পকে প্রচারিত তথাকথিত হাফজান্তা,কপি-পেস্ট বিশারদ ডাক্তারবাবুদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত আত্মীয়স্বজন,প্রতিবেশীদের অমানবিক ব্যবহার কে অপার সহ্যশক্তি সংহত করে মোকাবিলা করেছেন। তাদের অধিকাংশ কে মানবিকতার অর্থ বুঝতে সাহায্য করেছেন। গুরুচন্ডালি কে লেখাটি প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ।
খুব দরকারি লেখা । মনে বল আনে । জীবন থাকবে কি যাবে সেটা পরের কথা- কিন্তু দুবেলা মরার আগে মরে যাওয়ার থেকে কিছু সদর্থক ভাবনা নিয়ে থাকা অনেক বেশী কাম্য । রাশি রাশি গুজবের পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে দমবন্ধ অবস্থা অধিকাংশ মানুষের । মনোবল কমে তলানিতে গেলে শুধু ইমিউনিটি বেড়ে আর কী হবে ? মানুষ যেকোনো রোগের একটা বড় অংশকে জয় করে মানসিক শক্তিতে । এই লেখা নিঃসন্দেহে তা বাড়ায় । জয় হোক ।
Aapnar lekha pore aamar chokhe jol ese gelo.Aapnara sobai bhalo thakun R Ishwar e bhorasa rakhun.Aamar mobile phone number 9433418083. Aami Abhjit Goswami. Andul Howrah.
Aapnar lekha pore aamar chokhe jol ese gelo.Aapnara sobai bhalo thakun R Ishwar e bhorasa rakhun.Aamar mobile phone number 9433418083. Aami Abhjit Goswami. Andul Howrah.
আমার দিদা বলতে মায়ের মা। ওনার বয়স ৭৬... আর আমার বাবার বয়স ৬৫.... এটুকু বুঝতে মানুষের সমস্যা কি হল কে জানে।
Why you are expecting any opinion from others ?
You fought for your family, it might be your moral duty.
You are advertising on behalf MRBSH. I leave the video footage which was viral. But why mobile ph. Phone was just snatched from the patients ?
We have a great sympathy being a Bengali.
But it is very difficult to digest that your patient got admitted MRBSH easily.You can be good script righter .
I pray to god may dadu dida & other live for long time.
Thanks
যারা যারা মাননীয়া কে অভিভাবিকা থেকে শুরু করে আরো কত কি বানিয়ে ফেলেছে তাদের জন্য একটা ছোট্ট উদাহরণ রইলো।
বুকে ধক থাকলে পড়ে দেখুন,
পশ্চিমবঙ্গে থাকেন, মমতা ব্যানার্জীর শাসনে? জ্বর, গলা ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে? আপনার সাথে কী হবে, তার ক্রনোলজি রইল।
১. বরানগরের বাসিন্দা, ছাত্র৷ বয়স ২০। গতকাল থেকে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গলায় ব্যাথা। নিজের এবং পরিবারের উদ্যোগে এলাকার থানায় যোগাযোগ করে হাসপাতালে যেতে চায়। কোভিড টেস্টের জন্য। সারা সকাল হেল্প লাইনে ফোন করে, কেউ ধরে নি। গাড়ির ব্যবস্থা করে। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পৌঁছে যায় বেলা বারোটার মধ্যে।
২. বেলেঘাটা আইডিতে কী কী উপসর্গ হচ্ছে জেনে নেওয়া হয়। এম আর বাঙুর হাসপাতালে রেফার করা হয়। রেফারেন্স লেটারটি লেখার সময়ে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি জরুরি তথ্যগুলিকে ভয়ানকভাবে বিকৃত করা হয়। রোগী ও বাড়ির লোক বারবার বলা সত্ত্বেও সঠিক বানান, পিন কোড, বাসস্থানের অঞ্চল লেখা হয় নি।
৩. এরপর রুগীর জায়গা আইডির ওপিডিতে। অনির্দিষ্টকালের অপেক্ষা। আশেপাশে অজস্র কাশতে, হাঁচতে, শ্বাসকষ্টে হাঁপাতে থাকা রুগী। খোলামেলা। কোনো শারীরিক দূরত্বের অবকাশ রাখা হয় নি। অধৈর্য্য হয়ে রোগী ও বাড়ির লোক পুলিশকে জিজ্ঞেস করে, কখন বাঙুরে নিয়ে যাওয়া হবে, উত্তর আসেঃ "চুপ চাপ থাকো। যখন সময় হবে, নিয়ে যাওয়া হবে।"
৪. একটা অ্যাম্বুলেন্স আসে ঘন্টা দেড়েক বাদে। এম আর বাঙুর পোঁছায় ওরা। গেটেই রুগীকে নামিয়ে চালক বলেন, ডিপার্টমেন্ট খুঁজে নিতে। বিঃদ্রঃ প্লিজ চালককে অমানবিক ভাববেন না। বিন্দুমাত্র রক্ষাকবচ ছাড়া উনি সারাদিন রুগী নিয়ে যাতায়াত করছেন। সরকার ওনার কোনো দায়িত্ব নেয় নি। ওনারও বাড়িতে বাবা মা, স্ত্রী, সন্তান আছে।
৫. পুরো ওয়ার্ড জুড়ে রুগীদের হাহাকার। কেউ শ্বাসকষ্টএ ভুগে চলেছেন আর অপেক্ষা করে চলেছেন কখন ডাক্তার আসবে। ছেলে আর বাবা, মা'কে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা চিকিৎসার অপেক্ষায়। কাঁদছেন রীতিমতো। দক্ষিণ চব্বিশের দুই রুগীর মৃত্যু সংবাদ এসেছে ইতিমধ্যে। প্রথমে লেখা হয়েছে কোভিড ১৯. তারপর মৃত্যুর কারণ লেখা নতুন কাগজ এসেছে হৃদরোগ, ফুসফুসের অসুখ ইত্যাদি। এই গোটাটা রুগী আর রুগীর বাড়ির লোক দেখছেন।
৬. ডাক্তারের ডাক এলো। "আমায় আইডি থেকে রেফার করা হয়েছে এখানে", বছর কুড়ির রুগী জানাল। ডাক্তারের স্পষ্ট উত্তর " এতো কথা জানতে বসে নেই এখানে। রোগ হলে বলো, চিকিৎসা করব". ছেলেটি জানাল যাবতীয় উপসর্গ। শরীরের উষ্ণতা মাপা হল। বলা হল "কিছুই হয় নি। বাড়িতে থাকো। যে ওষুধ লিখে দিচ্ছি, খাও।" রুগী তখনো শ্বাসকষ্টে হাঁপাচ্ছেন। গলায় ব্যাথা।
৭. এই ছেলেটি জেদ করে, টেস্ট করাবোই, কোন ভরসায় বাবা-মার কাছে ফিরব নাহলে? পরিবারের বাকীদেরই বা কী হবে! অসুস্থ শরীরে হাসপাতালে অনেক ঘোরাঘুরি করে জানতে পারে, রাজারহাটে চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হস্পিটালের দ্বিতীয় চত্ত্বরে টেস্ট হচ্ছে।
৮. গাড়িটা নিয়ে এবার রাজারহাট। জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যাথা নিয়ে বাবা মা সহ- সিঁথি থেকে বেলেঘাটা আইডি, তারপর এম আর বাঙুর, এবার রাজারহাট। এখানে পৌঁছে দৃশ্যটা ভয় শুকিয়ে যাওয়ার মতো। খান পাঁচেক লাইন। এক, হাসপাতাল থেকে যাদের হোম ক্যুওরিন্টিন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে এখানে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা লাইন দিয়ে অপেক্ষা করছেন, আবার কোনো সরকারি গাড়ি তাদের বাড়ি পৌঁছে দেবে। আর কোনো উপায় নেই বাড়ি ফেরার। সকাল থেকে লম্বা লাইন। দুই, যারা টেস্ট করতে চান, সকাল থেকে লাইনে। সন্ধ্যে সাতটা অবধিও ডাক আসেনি। ওখানেই শুয়ে পড়েছেন জ্বর-শ্বাসকষ্টের দরুন৷ তিন, যাদের সরকারিভাবে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে, যেমন করোনায় মৃত মায়ের সন্তান ও পরিবার, এরা অপেক্ষা করছেন, কোথায় আইসোলেশনে রাখা হবে তার ব্যবস্থার। এই গোটাটায় "শারীরিক দূরত্ব" একটা স্ট্যান্ড আপ কমেডি।
৯. রাত আটটার একটু আগে, শারীরিক ধকল আর নিতে না পেরে, বিনা টেস্টে ছেলেটি বাড়ি এসেছ। সাথে বাবা মাও। ওষুধ খাবে। বাড়িতে থাকবে। শুধু জানে না ওর করোনা হয়েছে কিনা। বাড়িতে মা বাবা দুজনেই উচ্চরক্তচাপের রুগী। সাথে মায়ের বেশ কিছু সমস্যা আছে।
সাড়ে ছয় ঘন্টা কলকাতা শহরে মোট ৬৪ কিলোমিটার ঘুরে বিনা চিকিৎসায়, বিনা টেস্টে ফেরৎ এসেছে।
এটা আমাদের রাজ্য সরকারী স্বাস্থ্য পরিষেবা, করোনা আতংক
নিজের অভিজ্ঞতা বোধয় নয়। এটা কারো ফেসবুক পোস্ট, খুব সম্ভবত মুছে ফেলা হয়েছে এখন, তবে তার আগে শেয়ার ইত্যাদি হয়েছে, কয়েকটা ওয়েবজিনে প্রকাশিতও হয়েছে। পোস্টটাকে সন্দেহ করার কারন নেই, অব্যবস্থা তো আছেই। তবে কারো নিজের অভিজ্ঞতাকে কাউন্টার করার জন্যে যথেষ্ট নয়।
ইনফ্যাক্ট নিজের বক্তব্য ছাড়া ব্ল্যাটান্ট ফেসবুক কপি পেস্টকে স্প্যাম হিসেবে কনসিডার করা হবে কিনা সেটা নিয়ে তর্ক হতে পারে।
সেনবাবু, আমি অমৃতা। আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে অমৃতা পান্ডা নামে। চাইলে আমার টাইমলাইন ঘুরে আসতে পারেন। প্রয়োজনে যোগাযোগও করতে পারেন। এখানে আমি আমার অভিজ্ঞতাটুকু লিখেছি। ঝড়টা সামলাতে আমার/আমাদের সময় লেগেছে ঠিকই। কিন্তু এটুকু বলি, আমি নিজে গিয়ে দাদুকে বাঙুরে ভর্তি করিয়েছি। সেক্ষেত্রে ব্যাপারটা সহজ ছিলনা বলতে কি বলতে চাইছেন, বুঝলাম না। কিছু জানতে চাইলে বলুন, আমি সব তথ্য দিতে রাজি। সবার অভিজ্ঞতা তো একই হবেনা, এটা একদমই ঠিক কথা। তাই আমার লেখা নিয়ে কোথাও কোনো সন্দেহ থাকলে প্রশ্ন করুন আমাকে। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা লিখতে গিয়ে যদি বলেন আমি ভালো স্ক্রিপ্ট রাইটার, তাহলে আর কি বলব বলুন! আপনি যেটুকু মানতে পারছেন না, সেটুকু আমার থেকে জেনে নিন বরং। আমি তো হাত বাড়ালাম। এবার আপনি কি করবেন, আপনার বিষয়।
আর হ্যাঁ, পরে দেখলাম কমেন্টে আপনি আমাকে Script 'Righter' লিখেছেন। এটা দেখে খুব কষ্ট পেলাম। আপনি Script 'Writer' বললেও না হয় ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা শুরু করতাম।
Sorry for the spelling mistake .It should be script writer. Thanks for catch the mistake by you. Your case is false, I never feel so. My only question was that your patients " very easily got admitted in the Hospital "
Remember the news, when Suman Dey's friend (ABP Anando) was asking a bed for his mother. After that what happened you might know.
And after the viral video of mrbsh
Mobile phone was banned inside the hospital ,was it false ?
অমৃতা পান্ডা কে সাধুবাদ লড়াকু মনোভাবের জন্য। সবাই মিলে আনন্দ নিয়ে বাঁচুন।
হা হা রিয়েক্টকারী সেন বাবুদের জন্য করুণা (corona নয়, খেয়াল করে), তাদের উপেক্ষা করাই ভাল।
শুভ কামনা
Mr. Biplab,
U r a great man. I am a small man.I don't know your profession. Will you tell me ?
Your beloved sympathy is not required for me at all. I did not react
On Ms. Panda's post. My only question was the easily admission of patient in MRBSH. Finally I realized that " apnar kata gha a number chite poreche "
Mr. Bilab
Please read nun ( salt) in place of number.