এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  বইপত্তর

  • ইতিহাস লেখা

    সিএস লেখকের গ্রাহক হোন
    বইপত্তর | ০৭ মে ২০২০ | ৪২০৩ বার পঠিত
  • গত ক'দিনে কয়েকটা কথা মনে হচ্ছিল, ইতিহাস নিয়ে তক্কাতক্কির সময়ে, ইতিহাস লেখা নিয়ে যা। সেগুলো লিখে রাখা, ইতিহাস কেন আর কীভাবে লেখা হয়, অন্তত আমি যেরকম লেখা পড়তে চাই বা ইতিহাস লেখার মধ্যে দিয়ে যা আশা করি সে সম্বন্ধে দু-তিনটি প্যারাগ্রাফ -

    ইতিহাস খুঁড়ে বার ক'রে একজন ব্যক্তিকে - অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যারা সমাজ-্সভ্যতায় প্রভাব বিস্তার করেছেন এক সময়ে - দাগিয়ে দেওয়াই কী ইতিহাস লেখার উদ্দেশ্য ? হিটলার ইহুদী বিদ্বেষী, স্টালিন খুনী আর গান্ধী বর্ণবাদী, ঘটনা আর তথ্য দিয়ে এইটুকু প্রমাণ করে দিলেই কী ইতিহাস নিয়ে যারা লিখছেন তাদের কাজ শেষ ? হ্যাঁ, বিশেষ উদ্দেশ্য থাকলে, সমসময়ে যা প্রচলিত, হয়ত হেজিওগ্রাফি যা , তার বিরুদ্ধে তর্ক করতে গেলে এরকম মত প্রতিষ্ঠিত হয়, কিন্তু সেরকম করলে ইতিহাসের কতটুকু জানা যায়, কিছু ঘটনা আর তথ্য বাদ দিলে ?

    ইতিহাস এক সময়ে ছিল রাজচরিত, সভাসদদের বর্ণনা, তার মধ্যে দিয়ে সেই সময়ের অবস্থার ছবি, পরে হয়ত সেটাই হল হেজিওগ্রাফি, বিশ্রুত ব্যক্তিত্বদের ব্রণবিরহিত জীবনী, কিন্তু এসবের কোন মূল্যই ঐতিহাসিকরা স্বীকার করেন না। শুধু করেন না নয়, ব্যক্তি থেকে সরে এসে ইতিহাস অনেক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে - ফরাসীদের অ্যানালস স্কুল বা এদেশের সাব- অল্টার্ণ চর্চা, সেরকম উদাহরণ। এই যে ছড়িয়ে পড়া তার একটা কারণ হল ঐতিহাসের ঝোঁকটা বড় মানুষদের থেকে সরিয়ে এনে অনেক বেশী সংখ্যক মানুষদের মধ্যে এনে ফেলা আর দ্বিতীয় কারণ হল ইতিহাসিক যেটা বুঝতে চায় যে, এক বিশেষ সময়ে ব্যব্স্থাটা কেমন ছিল, কী সেই পরিস্থিতি ছিল - অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি সব মিলিয়ে - যেটা থেকে হয়ত আরো গভীরে গিয়ে বোঝা যাবে যে একজন বিশেষ ব্যক্তিত্ব বিশেষ রকমের আচরণ করেছিল কেন (যথা - হিটলার, স্টালিন বা গান্ধী)। এরকম করলে যেটা হয় যে ঝোঁকটা ব্যক্তি থেকে সরে এসে সময়ের ওপরে পড়ে। ব্যক্তিকে দায়ী করলে প্রশ্ন উঠবে যে ব্যক্তিটি ঐরকম কেন (শুধু হিটলার ইহুদী বিদ্বেষী বলে সিদ্ধান্তে এলে প্রশ্ন উঠবে হিটলার সেরকম কেন), কিন্তু ইতিহাস লেখক সেই ব্যক্তি চরিত্র বিশ্লেষণ করে সেকরম উত্তরে পৌছতে পারবে না, সেটা ইতিহাস লেখার কাজ নয়, ইতিহাস অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তির মনস্তত্ব অথবা তার শৈশব আর পরিবারের ব্যাপারে চিন্তিত নয়, বয়সকালে গিয়ে চরিত্রটি কী করেছিল সেগুলোই তার অনুসন্ধানের বিষয়, আর সেই অনুসন্ধান করতে গেলে ইতিহাস লেখককে সময়টারই অনুসন্ধান করতে হবে।

    অশ্বিন দেশাইয়ের গান্ধী সংক্রান্ত বইয়ের প্রসঙ্গ উঠেছিল। আমি সেই বই পড়িনি, পড়বও না কিন্তু লেখক পরিচিতি দেখে মনে হচ্ছিল গান্ধীকে যে রেসিস্ট সে রকম স্থির সিদ্ধান্তে পৌছনই কী লেখকের উদ্দেশ্য ছিল ? তো তারপর খুঁজে পেলাম এই লেখাটি (https://www.huffingtonpost.in/ashwin-desai/writing-the-south-african_b_8224498.html), অশ্বিন দেশাইয়েরই, উৎসাহীরা পড়ে দেখতে পারেন, এবং পড়ে যেটা মনে হল আমি যেভাবে ইতিহাস লেখাকে দেখতে চাই তার থেকে খুব বেশী দূরত্বে ইনি অন্তত নেই। অশ্বিন যেমন বলছেন যে গান্ধীকে নিয়ে বইটি লেখার উদ্দেশ্যই ছিল গান্ধীকে critical scrutiny- মধ্যে নিয়ে যাওয়া, আর গান্ধী ভক্তরা গান্ধীকে ঘিরে যে ধূপ-মালা চর্চিত ছবি তৈরী করেছে (ধূপ-মালা আমার ব্যবহার, একেই হেজিওগ্রাফি বলা যায়) তার বিরুদ্ধে অন্য মত উপস্থিত করা। এখন ইতিহাসের দায়ই এই, নির্মোক মোচন করা, সে ব্যক্তির হোক বা সমাজ-্সময়ের, বইটিতে সেরকম হলে একজন পোক্ত ইতিহাসকার হিসেবেই কাজটি করা হচ্ছে।

    কিন্তু আমার কাছে আরো গুরুত্বপূর্ণ হল লেখাটির Leaving Gandhi? অংশটি। অশ্বিন লিখছেন যে বইটি লিখে দুটি শিক্ষা পেলেন - একটি হল বিনয় (humility), অন্যটি aspiration(উচ্চাকাঙ্খা) ! বিনয় কেন, না বইটি লিখতে গিয়ে গান্ধী চরিত্রটির মধ্যে দিয়ে তারা বুঝতে পারলেন যে একজন ব্যক্তির সৎ উদ্দেশ্য থাকলেও সমাজ নির্ধারিত জায়গা থেকে সে মুক্তি পেতে পারেনা, উল্টোদিকের কঠোর আর নিপীড়ক শক্তির ওপর দীর্ঘস্থায়ী ছাপ রেখে যাওয়া কতখানি কষ্টকর একজন ব্যক্তির পক্ষে, ভারতীয়দের উন্নতিকল্পেই গান্ধী ইচ্ছাকৃতভাবেই শাসকদের সাথে সেই গোষ্ঠীর সহযোজন ঘটিয়েছেন (যা অনেক ক্ষেত্রেই খুবই বিসদৃশ) কিন্তু এও বোঝা যায় যে সেরকম না করে গান্ধীর হয়ত উপায় ছিল না কারণ তার প্রতিপক্ষের জোর অনেক বেশী। (ভারতীয়দের পক্ষই কেন শুধুমাত্র নিতে হয়েছিল গান্ধীকে সেই নিয়েও বোধ করি সেই সময়ের বিশ্লেষণ আছে যার কারণ রয়ে গেছে সেই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়রা যেভাবে পরিচিত হত, যেমন তামিল শ্রমিকরা বা অনেক ভারতীয় বংশোদ্ভূতই আবার নিজেদের 'আরব' বলে পরিচয় দিত, কিন্তু সেসব অনেক জটিল ও অন্য প্রসঙ্গ)

    ফলে আমার কাছে ইতিহাসকারের বিনয়শিক্ষাটা জরুরী। বিনয় শিক্ষা (হয়ত একে দীনতাও বলতে পারি) এই জন্যই যে একজন সৎ ইতিহাসকার ইতিহাসের বিশ্লেষণ করতে করতে হয়ত বুঝতে পারেন যে সময় আর সমাজ কী বা জটিল, সহজ উত্তর বা সমাধান সেখানে বিশেষ নেই, ব্যক্তি আর গোষ্ঠী শুধুমাত্রই সৎ আর স্বাধীন মনোভাব নিয়েই চললেই তাদের উদ্দেশ্য সব সময়ে সাধিত হবে না, অনেক রকমের ফোর্স ক্রিয়া করে একই সময়ে, তার মধ্যে দিয়েই পথ কেটে চলতে হয় সে সময়ে (এই পুরো ব্যাপারটিকেই হয়ত বলা যায় 'ইতিহাসের শিক্ষা') এবং সেরকম ক্রমাগত ঘটে চলে বলে পরে এসে ব্যক্তিত্বদের জীবনী আর ইতিহাস পড়ি যখন তখন মনে হয় তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ঠিক আচরণ করেনি। সেই ভুল আচরনের মধ্যে সেইসব ব্যক্তির অসৎ উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া যাবে নাকি তাদের অসাফল্য (গান্ধীকে যে অসফল বলে বলা হয়েছে, শেষ জীবনে নিজেও মেনেও নিয়েছিলেন, তার কারণ হয়ত এটাই যে সময়ের যে জটিলতা তাকে পুরোপুরি সঙ্গতি তাঁর কাজ আর আদর্শের মাধ্যমে দিতে পারেননি, অনেক বড় মানুষের ক্ষেত্রেই যা ঘটে থাকে) সেটা নির্ভর করবে যে ঐ ইতিহাস পড়ছে, ইতিহাস আর সময় সম্বন্ধে তার ধারণার ওপর, আর এই বোধের ওপর যে সহজ উত্তর কোন সময়েই নেই, না বর্তমানে না সেই বর্তমান অতীত হয়ে গেলে, তখন; ইতিহাসের ব্যক্তিদের মতই ইতিহাস নিয়েও যারা লিখছেন, তাদেরও তথ্য আর ঘটনার মধ্যে দিয়ে পথ কেটে চলতে হয়, অ্যাজেন্ডা আর স্ট্রং ওপিনিয়নকে মান্যতা দেওয়াই ইতিহাস লেখকের উদ্দেশ্য হতে পারে না, অনেক দিনই সেসব নেই।

    (অশ্বিনের লেখাটিতে এও লক্ষ্য করার যে দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধীর কাজকর্মের তদন্ত করার পরেও কিন্তু লেখক গান্ধীবাদকে অপ্রাসঙ্গিক বলছেন না, সেই ধারণাকে মেনেই নিচ্ছেন, সেই ধারণাকে মূল্যবান বলে মনে করছেন শেষ পর্যন্ত ন্যায়সঙ্গত পৃথিবী প্রতিষ্ঠার উপায় হিসেবে। )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • বইপত্তর | ০৭ মে ২০২০ | ৪২০৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • বোদাগু | 202.142.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২০ ০১:১৬94964
  • এলে, আমার মনে হয় তোমার নানা কষ্টের মেন কারণ হল তুমি গুরু চন্ডালির ইউজার দের নিজের আইডিয়ার ভ্যালিডেশনের জায়গা হিসেবে দেখছ, যেটা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়, আর ও সমস্যা হল এই ইউজারবেস কে যেকোন কারণে ই হোক কলকাতার সারস্বত সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে দেখছ। দুটোই অর্থহীন আপদ, এরকম অকারণ গুরু দায়িত্ব কেউ কারো কাঁধে নেয়নি, কেউ দেয় ও নি, সুনীল মরার আগে গুরু চন্ডালির ইউজারদের বলে যান নাই, ভাই প্রত্যন্তের প্রতিভা এবার থেকে তোরা দেখিস, গুরু কোথাও কোন কন্টিনিউইটির দাবি করে নি, অন্তত প্রথম
    সৈকতের কোন লেখায় এরকম কিছু মনে পড়ছে না। :---))))))) কাজকর্ম করো এসব ফালতু কথা মন থেকে হটাও। কাজ আপ্রিসিয়েশন পাবেনা জেনেই করবা আর কি বা করবা, লেখা ভালো হলে অপরিচিত কর্নার থেকেই উৎসাহ পাবে। আর শুধু আপ্রিসিয়েশন পর্ন ছাড়া কোন কিছুত ই পাবেনা , ;-))))))
    যাই হোক... আর ফাইনালি অন্তত সি এস এর ট ই দেখেই বুঝছো তাঁর বক্তব্য সুসংহত এবং বিতর্ক এ আগ্রহী, এ‍‌‌‍বং বিষয়ানুগ ডিবেট ছাড়া অনেকেই কিছুতে আগ্রহ পাবেন না, শিওর খুঁজলে সেন্সিবল কমেন্ট‌ পাবে, কিন্তু কাজের রিয়াকশনে এ এত ব্যাকুল হবার কিসু হয়নি। ,
    কমেন্ট ঘাঁটতে আর বোসো না, প্লিজ, ছোট মুখে বড় কথা বলে থাকলে, ক্ষমা কোরো, আমার মনে হচ্ছিল তুমি অকারণ চাপ নিচছ।
  • অর্জুন | 223.223.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২০ ০১:২৮94965
  • History is chiefly an understanding of the past. ইতিহাসবিদেরা সত্যান্বেষী নন। সত্যি কি ঘটেছিল কেউ জানেনা। অতীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা rewind করা যাবেনা । ইতিহাসবিদের কাজ অতীতকে বিশ্লেষণ করা। পর্যালোচনা করা । এটা করা জন্যে তাদের ব্যবহার করতে হয় বিভিন্ন মেথডলজি এবং সেটার থেকে অতীত সম্পর্কে একটা understanding তৈরিতে পৌঁছবার চেষ্টা করা হয় । কিন্তু এই understanding থেকে তারা কোনো conclusion এ আসতে পারেনা। উদ্দেশ্যও সেটা নয় ।

    এবার এই মেথডলজি ব্যবহারের সঙ্গে আসে লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গী । ইতিহাসবিদ তো একজন লেখক ।

    এখানে আরেকটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল the question of identity ! Who is writing the history ? এবং এখানে 'নিরপেক্ষ' এবং ‘গুরুচণ্ডালী’ সংস্কৃতি অনুযায়ী ‘নির্মোহ’ (বিশ্লেষণ) একটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যায় ! 'নিরপেক্ষ' এবং 'নির্মোহ' র আক্ষরিক ডেফিনেশন এখানে একেবারে অচল ।

    ইতিহাসচর্চায় নিরপেক্ষ বা নির্মোহ’র অর্থ খুব জটিল । নিরপেক্ষ কেউ নয়। নির্মোহও কেউ নয়। এবং এটার থেকেই ম্যাটার করে কিরকম আর্কাইভল সোর্সেস তিনি ব্যবহার করবেন তার লেখায়  এবং তার ওপরেই নির্ভর করবে তার বিশ্লেষণ । ইতিহাসবিদের নির্বাচন করার অধিকার অবশ্যই আছে কিন্তু সেখানে তিনি কতটা সিলেক্টিভ হচ্ছেন? 

    কারণ এই সিলেকশন থেকেই আসছে লেখকের মূল উদ্দেশ্য যেটার সঙ্গে তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন লুকিয়ে আছে । 

    রমিলা থাপার বলেছেন ‘We are all bias. The question is are we aware of our bias? Do we explain that there will be a bias which will come through while writing history ? The test is actually not on whether we are bias or unbiased ! The test is whether  the evidence we are quoting is reliable !  If we are establishing a point then we need to have a very reliable source.  What is a reliable source ? Evidence which is written and which is easier and convincing. So evidence is important.

    History is also a study in causal relationships. Because A happened which led to B. Because B happened it led to C. A whole chain of events that connect.

    These causal relationship when analysed and written must be based on logic and rationality.' 

  • অর্জুন | 223.223.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২০ ০১:৫৯94966
  • ১৯৫৬য় প্রকাশিত হল দামোদর কোসাম্বীর 'An Introduction to the study of Indian history' । তার অপরেই '৬০ র শুরু থেকেই ভারতীয় ইতিহাসচর্চায় একটা বড় পরিবর্তন এল। কোসাম্বীর বইটিকেই একটি paradigm shift আখ্যা দেওয়া হয়। 

    এর আগে ভারতীয় ইতিহাসচর্চা largely ছিল narration of the past । সুশোভন সরকারের 'Notes on Bengal Renaissance'ও তার বাইরে বেরতে পারেনি (একদম শেষ চ্যাপ্টারে নীরদ চৌধুরীর 'auntobiography of an unknown Indian র এক্তা রিভিউ মত আছে)। 

    এই ষাটের দশক থেকে ইতিহাস লেখার স্টাইলে , ভাবনায়, তত্ত্বে যেসব চেঞ্জ এল এবং ইতিহাস একটা সস্যাল সায়েন্সে পরিণত হল । সোশ্যাল সায়েন্সের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠল সেটার একটা ইতিহাস লেখারও সময় হয়েছে । 

    এই নব্য ইতিহাস বিষয়টি হিউম্যানিটিজ স্টাডিজে খুব ইনফ্লুয়েনশিয়াল এবং এর পর জীবনী এমনকি আত্মজীবনী (স্মৃতিকথা)  লেখাতেও আমি অন্তত বড় পরিবর্তন পাই। 

    এখানে বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্তের উপস্থিতিতে খুশী হলাম। :-) 

  • সম্বিৎ | ০৭ জুলাই ২০২০ ০২:৩৪94967
  • "আমি নিজে মনে করি বর্তমানের প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে একজন সৎ, পরিশ্রমী ইতিহাস চর্চাকারীকে (সে তিনি যতই অ্যামেচার হন না কেন) তিনটে দৃষ্টিভঙ্গী থেকে গোটা সময়টাকে বিবেচনা করতে হবে - মার্ক্সিস্ট ধারা, পোস্ট-কলোনিয়াল ধারা এবং সাব-অল্টার্ন ধারা।"

    এখানে একটা ধারা বাদ পড়েছে। এবং যেটা নিয়ে লোকজনকে বিশেষ উচ্চবাচ্য করতে দেখিনা। সেটা হল, অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশ্লেষণ। বাকি তিনটেতেই এটা আসে, বিশেষতঃ মার্ক্সিস্ট হিস্টোরিয়ানরা এটা করেন, কিন্তু তাঁরা যেহেতু সবই ক্লাস কনফ্লিক্টের কাঁচ দিয়ে দেখেন, এই আলোচনা ঠিক জমে না। আমি কিন্তু ইকনমিক হিস্ট্রির কথা বলছিনা, যথা হাবিবের মিডিভাল বা মুঘল আমলের ইকনমিক হিস্ট্রি। আমি বলছি যেকোন হিস্টারিকাল ইভেন্টকে তৎকালীন সোশিওর সঙ্গে ইকনমিকাল এনভায়রনমেন্টের প্রেক্ষিতে বিচার করা।

  • অর্জুন | 223.223.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২০ ০৩:২৫94968
  • @এলেবেলে, খুব lucidly নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন । (৬ জুলাই '২০, ১৬ঃ২১ র মেসেজ) 

    তবে দুটো প্রশ্ন আছে 

    'তবে বাঙালি রবীন্দ্রনাথের আর কিছু না নিলেও, অন্তত ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে এই চারিত্রপূজা-র ধাঁচাটাকে আপন করে নিল। ফলে বিদ্যাসাগরের প্রথম যে চারটে জীবনী লিখলেন শম্ভুচন্দ্র, চণ্ডীচরণ, বিহারীলাল এবং সুবল চন্দ্র মিত্র সেখানে নির্ভেজাল ব্যক্তিপুজো শুরু হল। একই কথা খাটে গান্ধীর ক্ষেত্রেও। তাঁর প্রথম জীবনীকার তাঁরই নির্দেশে জীবনী রচনা করেছেন (যেমন নারায়ণচন্দ্রের অনুরোধে জীবনী রচনায় নেমেছিলেন চণ্ডীচরণ) এবং তার পরে সেই জীবনীকে আকর গ্রন্থ বিবেচনা করে একের পর গান্ধী-জীবনী রচিত হয়েছে। এই ব্যাপারটা জিবি সিং-এর বইতে ডিটেলে আছে।' 

    তাহলে 'চারিত্রপূজা' প্রভাবের আগে কি জীবনী রচনার ধরণ অন্য ছিল ? বা অনেক বাস্তব ভিত্তিক ছিল !  শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম জীবনী 'শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জীবনবৃত্তান্ত' লিখেছেন রামচন্দ্র দত্ত। সেই জীবনীটি সম্ভবত প্রকাশিত হয়েছিল রামকৃষ্ণের জীবদ্দশায়। বইটি চরম বিতর্কের মুখে পড়ে । বইটিতে রামকৃষ্ণের সাধনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর যৌনতার কিছু বিষয় উল্লেখ ছিল। বইটির প্রকাশ বন্ধ করা হয়। বিবেকানন্দ লেখকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বলেও শোনা যায় এবং কোনো চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন 'এমন কিছু লেখা যাবেনা যেখানে ঠাকুর কলঙ্কিত হবেন  .....' !  

     'সেটা জিন্না-নেহরু-সুভাষ-আজাদ-আম্বেদকর-জিন্না হয়ে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত সুবিস্তৃত এবং লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এঁদের কারও গান্ধী-মূল্যায়নই অবিমিশ্র শ্রদ্ধাজনিত নয়। ' 

    জিন্না-নেহেরু-সুভাষ-আজাদ-আম্বেদকর' এঁদের সকলের সঙ্গে গান্ধীর সম্পর্ক ছিল সম্পূর্ণত রাজনৈতিক । রবীন্দ্রনাথ এবং গান্ধীর সম্পর্ক,  একমাত্র রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গান্ধীর সম্পর্ক সম্পূর্ণত রাজনৈতিক ছিল না। সম্পর্কটা ছিল বহুমাত্রিক । গান্ধী সম্ভবত আর কারো সঙ্গে এত বিষয় নিয়ে মতামত আদান প্রদান করেননি। এখানে একটা pure camaradarie ছিল । এবং রবীন্দ্রনাথ রাজনৈতিক ব্যক্তি নন। একজন আন্তর্জাতিক ইন্টলেকচ্যুয়াল বলেই সম্পর্কটা  ছিল অনেক ইন্ডিপেনডেন্ট । কেউ কারো ধার ধারতেন না । Hence it was a honest friendship or relationship. 

    বাকীদের সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত ছিল । 

    ভুল বললাম কিনা জানিনা । 

  • sm | 2402:3a80:a6d:3e65:0:63:7f6b:***:*** | ০৭ জুলাই ২০২০ ১৩:০৫94971
  • ইতিহাস চর্চা করতে গেলে কিছুটা নির্মহ দৃষ্টির তো প্রয়োজন।এলেবেলে বহু জায়গায় লিখছেন ,আম্বেদকর, জিন্না, এঁরা গান্ধীকে ধুইয়ে দিয়েছেন। অনেক রূঢ় কমেন্ট করেছেন। করতেই পারেন।এঁদের ভক্তরা গান্ধী কে আরো অবমুল্যায়ন করেছেন।করতেই পারেন।বিভিন্ন লোকের পারসেপশন আলাদা ! তো,তাই বলে,এনারা গান্ধীর এই এই অবমুল্যায়ণ; এই এই জায়গায় করেছেন,তাই গান্ধী খারাপ।এটাকেই খণ্ডিত দর্শন বলে।

    সাউথ আফ্রিকা থাকাকালীন গান্ধীর কার্যকলাপ নিয়ে ম্যান্ডেলা এট অল যথেষ্ট অবহিত ছিলেন।জানতেন গান্ধী স্থানীয় দের কি নামে ডাকতেন,জুলু দের ওপর কতোটা আন্তরিক ছিলেন,ব্রিটিশ দের কতোটা অনুরক্ত ছিলেন। এরপরেও জীবনের শেষদিন অবধি গান্ধীর প্রশংসা করে গেছেন।কারণ গান্ধীর এই নন ভায়োলেন্ট মুভমেন্ট এঁদের পরবর্তী কালে এপার্থেইড সরকারের বিরুদ্ধে কাজে এসেছিল।

    আম্বেদকর,জিন্না,এনারা বাস্তব বাদী নেতা।নিজেদের কম্যুনিটির উন্নতির জন্য লড়ে গেছেন।গান্ধী আক্ষরিক অর্থে বাঁধা সৃষ্টি করেছেন।

    গান্ধীর চরিত্র ভীষণ কমপ্লেক্স। মরালিটি ও বাস্তব বাদী গান্ধী যেন আলাদা ব্যক্তি।উনি ব্রিটিশ দের ডিভিসিভ রাজনীতি ভালো করে বুঝতেন।দলিত রিপ্রেজনটেশন নিয়ে অসুয়া ছিলো না।কিন্তু সেপারেট ইলেকটরেট নিয়ে ছিলো।

    প্রশ্ন উঠতেই পারে কে ঠিক কে ভূল?কিন্তু কারোর উদ্দেশ্য ই অসৎ ছিলো না।

    গান্ধী প্রথম জীবনে প্রেজুডিসড ছিলেন।আজকের বিচারে রেসিস্ট লাগতেই পারে।কিন্তু রেসিস্ট বলে কোন ইতিহাসবিদ দাগিয়ে দিলে,সেটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত মনে হয়।
  • পাঠক | 182.76.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২০ ১৬:০১94977
  • https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=13686

    গান্ধী নিয়ে কথাবার্তা ওইখানে হলেই ভালো। - sm কে অনুরোধ।

  • সিএস | 2405:201:8803:be5f:109a:eb0c:380b:***:*** | ০৭ জুলাই ২০২০ ১৬:২২94979
  • এরকম কয়েকটা কথা মনে হচ্ছিল -

    এলেবেলে জীবনীপ্রসঙ্গ এনেছিলেন, রবিবাবুর চারিত্রপূজা, বিদ্যাসাগরের জীবনী, গান্ধী জীবনী ইত্যাদি। কিন্তু জীবনীকে কি ইতিহাস বলব, যদিও বা কোন জীবনী দিয়ে সেই ব্যক্তির সমসময়ের কথা জানা যায় ? ইতিহাসের যা সাধারণ সংজ্ঞা, সেই অনুযায়ী ইতিহাস তো অতীতের ঘটনা বা বড় সময়ের ছাপ কীভাবে অনেক মানুষের ওপরে পড়েছিল তার বর্ণনা আর বিশ্লেষণের উপায়। অনেক মানুষ বা গোষ্ঠীই সেই অনুসন্ধানের বিষয়, একা মানুষ বা নিঃসঙ্গ মানুষ কেমন করে বাঁচে সেসব জানানোর কাজ ইতিহাসের নয়, তার দায়িত্ব তো সাহিত্যের; উদাহরণ দিলে এরকম যে একজন ইতিহাসকার বা হয়তবা অর্থনীতিবিদ এই বিশ্লেষণটা করবে যে পথের পাঁচালীর গল্পের সময়ে দারিদ্র কেমন ছিল বা তার কারণ কী ছিল কিন্তু সেই দারিদ্রের মধ্যেও অপু-দূর্গা কীভাবে জীবনের সৌন্দর্য সন্ধান করত সেটার বর্ণনা ইতিহাসকার দেন না, সেটা ঔপন্যাসিকের কাজ। অতএব অনেক মানুষের ওপর সময়ের প্রভাব কেমন, যুদ্ধ বা রাষ্ট্রবিপ্লবের প্রভাব অথবা সামাজিক রদবদলের প্রভাব কেমন সেটা জানানোই ইতিহাসের প্রধাণ কাজ ঐসব ঘটনাগুলির বিবরণ দেওয়া ও সেসকল কেন ঘটেছিল সেসবই জানানোর সাথে। জীবনী বা আত্মজীবনীতে তো অনেক মানুষের কথা বলা হয়না, ব্যক্তি মানুষের কথা বলা হয় - তার শৈশব থেকে যৌবন, কাজকর্ম, জীবনের কথা ইত্যাদি - ফলে জীবনীকে ইতিহাস বলছি না। কিন্তু ইতিহাস না হলেও জীবনী তো ইতিহাসের উপাদান, পরে যখন ইতিহাসকার একটা বিশেষ সময় নিয়ে ইতিহাস লিখছেন তখন সেই সময়ের তথ্য হিসেবে তো জীবনীসাহিত্য-দিনলিপি-চিঠি ইত্যাদি সবই ব্যবহার হয়ে চলেছে। কিন্তু শুধু ইতিহাসের উপাদানই নয়, ইতিহাসকারের কাছে এই রকমের লেখার আরো এক মূল্য থাকতে পারে বলে মনে করি; সেটা হল জীবনী-আত্মজীবনী ইত্যাদি যা লেখা হচ্ছে সেসবের মধ্যে দিয়ে সেই সময়টাকে জানা। কিন্তু সেই জানাটা ঐ লেখাগুলি যা বলছে, তথ্য, ঘটনা ইত্যাদি যা সরাসরি ঐসকল লেখায় আছে, যা আজকে ইতিহাস হয়ে গেছে শুধু সেইসব জানা নয়। বরং এরকম প্রশ্নের অনুসন্ধান করা যে রবিবাবু চারিত্রপূজা লিখলেন কেন অথবা বিদ্যাসাগরের জীবনী ঠিক ঐরকম করেই লেখা হচ্ছিল কেন অথবা সারা উনিশ শতক জুড়েই জীবনী আর মেমোয়ার্স লেখার প্রকোপ কেন, এই সব লেখার সাথে ইংরেজ আমলে, কলোনি শাসিত একটি গোষ্ঠীর কী সম্পর্ক, শাসকের সাথে সমঝোতা করতে করতেও একটি জাতির যদি আত্মপ্রতিষ্ঠার দরকার হয়, জাতি গঠনের জন্য বা নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করার জন্য কী তাহলে জীবনী সাহিত্যের প্রয়োজন হয়ে পড়ে, ঠিক কীভাবেই বা ঐসব লেখা সমসময়কে প্রভাবিত করত, আদৌ করত কিনা ইত্যাদি।

    অর্থাৎ বলতে চাইছি বিশেষ রকমের কিছু লেখা নিছক ইতিহাস নয়, শুধু ইতিহাসের উপকরণ নয় বা সময়টাকে জানানোরই মাধ্যম নয়, বরং লেখাগুলির বিশেষ ধরণকে ব্যবহার করে ঐ সময়েরই তদন্ত করা যায়।

    আরো একটা উদাহরণ আনা যায়। ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের শেষের দিকের একটি লেখা ছিল, 'স্বপ্নলব্ধ ভারতবর্ষের ইতিহাস', আজকের লব্জ অনুযায়ী একে অল্টারনেট হিস্ট্রি বা বিকল্প ইতিহাস বলতে পারি, বিষয়বস্তু ছিল যে তৃতীয় পাণিপথের যুদ্ধে ইংরেজরা পরাস্ত হয়েছে, ভারতের রাজা হয়েছেন মারাঠা অধিপতি রামচন্দ্র, সাথে রয়েছেন হিন্দু নরপতিরা এবং নবাব সুজাঔদ্দলা, শলাবত জং প্রভৃতি মুসলমান নবাব বাদশাহরা, সিংহাসন আরোহণের পরে মন্ত্রণাসভা বসেছে দিল্লীর জামা মসজিদে এবং তৎপরবর্তী ঘটনা ! আজকে ভারতবর্ষের প্রেক্ষিতে লেখাটি পড়লে লেখাটিকে শুধু বিকল্প ইতিহাসই মনে হবে না বরং প্রগতিশীল একটি লেখা বলে গণ্য করা যাবে, ভূদেব মুখোপাধ্যাকেও সেই সারিতে অবস্থিতি দেওয়া যাবে। কিন্তু ভূদেব মুখুজ্যে তো তাঁর সমসময়ে অথবা এখ্নও তাঁর লেখাপত্রের কারণে রক্ষণশীল বলেই পরিচিতি পাবেন কারণ যে লেখাগুলির জন্য ভূদেব বেশী প্রসিদ্ধ, যেমন পারিবারিক প্রবন্ধ বা আচার প্রবন্ধ অথবা সামাজিক প্রবন্ধ সেই সব লেখায় প্রগতিপন্থা খুঁজে পাওয়া যাবে না, আজকের দৃষ্টিতে। ঘর কেমন হবে, সংসার কেমন হবে, স্বামী-স্ত্রীর সম্বন্ধ কেমন হবে,সকাল-্সন্ধ্যার আচার কেমন হবে, সন্তান পালন কেমন করে করতে হবে, শিক্ষার প্রকৃতি কেমন হবে, সমাজের বিভিন্ন লোকের মধ্যে সম্পর্ক কেমন হবে, বাল্যবিবাহ কেন ভালো, মুসলমান বা খ্রীস্টান চরিত্র কেমন, এরকম অজস্র বিষয় যা ঘরের কথা আর বাহিরের কথা মিলিয়ে তৈরী হওয়া, সেগুলো পড়লে বোঝা যায় যে ভূদেববাবু তর্ক জুড়েছেন কলোনির মধ্যে বসে কলোনির সমাজ, তার প্রভাব আর সমসময়ের সাথে। উনিশ শতকের শেষ তিনটি দশক তো বিশেষ করেই এই তর্কের সময়ে যখন একই সাথে ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত দেশীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরী হচ্ছে (যা মূলতঃ হিন্দু ভদ্রলোকই) আবার একই সাথে ঐ শ্রেণীটি বিদেশী মতের কতখানি মেনে নেবে, কতখানি সমঝোতা করবে বা কতখানি বিরোধিতা করবে বা তর্ক করবে ,তার ঘর ও বাহির কেমন হবে সেই বিষয়গুলিকেও গুছিয়ে নেওয়ার সময় কিন্তু এইসব করতে গিয়ে সমাজে টানাপোড়েন তো যথেষ্টই, সোজা উত্তর পাওয়া মুশকিল, পিছুটান আর অগ্রগতি একই সাথে থাকছে, ফলে ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের প্রবন্ধ আর কাল্পনিক কাহিনি, এই দুটিকে যদি পাশাপাশি রাখি তাহলে লেখক রক্ষনশীল না প্রগতিশীল সেই তর্কে না গিয়ে বেশী স্পষ্ট হয় কীভাবে ঐ সময় লেখাগুলিকে তৈরী করছে। তখন লেখক ব্যক্তিত্বটিকে বা ব্রাহ্মণটিকে বিচার না করে এরকম বিচার উপস্থিত করা যায় যা দিয়ে বোঝা যেতে পারে যে ভূদেবের প্রবন্ধগুলি যা ঘর আর সমাজের মধ্যে যাতায়াত করত, সেরকম করতে করতে বিকল্প ইতিহাসটি ভূদেব লিখে ফেললেন কেন, রক্ষণশীল হিন্দু বলেই যাকে মনে হয় তার লেখায় হিন্দু-মুসলিম সংমিশ্রণ কীভাবে চলে এল, দুই জাতি সরে গিয়ে কীভাবে মহাজাতির ধারণা লেখাটিতে এল, সমসময়ে কী সেরকম ধারণা ক্রমশঃ তৈরী হচ্ছিল, মহাজাতির ধারণাটি কী যুগের প্রয়োজনেই ক্রমে রবীন্দ্রনাথে আরো স্পষ্টতা পাবে - অর্থাৎ লেখাগুলি দিয়ে লেখককে বা তার প্রতিভাকে বিচার না করে, সেগুলিকে ইতিহাসের উপকরণ হিসেবেই শুধু না ব্যবহার করে, বরং ঐ লেখাসকল দিয়ে কী ইতিহাসের অনুসন্ধান করা যায় ?
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন