এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • মেয়েদের কষ্টে অর্জিত কড়ি ডাকাতি হয়ে যায়

    ডাঃ শর্মিষ্ঠা দাস লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৮ মার্চ ২০২০ | ৪৩৩২ বার পঠিত
  • যে অঙ্গুলিতে কদিন আগেই 'ভ্যালেন্টাইন্স ডে রিং' উঠেছিল --পার্সের সামর্থ্য অনুযায়ী ঝুটো অথবা খাঁটি হীরের , আহ্লাদে খিলখিল করে হেসে উঠেছিল মেয়ে ! নারীদিবসে সেই আঙুল সেই হাত মেলে ধরল দগদগে হাজা সহ । হাতের মালিক হতে পারে নিখাদ গৃহবধূ অথবা রোজগেরে । 'জল কম ঘাঁটবেন' ডাক্তারি ফতোয়া এক ফুঁ'তে উড়ে যায় --"সম্ভব নয় , ঘরের কাজ কে করবে ?" তাহলে অন্ততপক্ষে দস্তানা পরবেন । " তা কি করে হয় দিদি -- শ্বশুরবাড়ির লোকজন ভাববে কোনো খারাপ অসুখ আছে "
    পাশের রোমিও জিনসের পকেটে হাত ঢুকিয়ে নায়কোচিত ভঙ্গিতে প্রশ্ন করে--"এটা কি জল ঘাঁটলে সবারই হয় না ওর একার সমস্যা ? হাজা টাজা তো মেয়েদের একটু আধটু থাকবেই, দেখুন তো ওর মুখে একটু গ্ল্যামার আনা যায় কিনা কোনো ওষুধে "
    আমার নারীদিবসের সকালের কথোপকথন এভাবেই শুরু হয় ।

    যে দেশে মেয়েদের রক্তাল্পতার হার -- গর্ভবতী মহিলার 50.4 % আর গর্ভবতী নয় এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে 53.2% . সেই দেশেই সবচেয়ে দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে ও মুনাফা করছে প্রসাধন শিল্প ।
    বাজার হাতছানি দেয় সেই মেয়েকে যে মেধাবী খাটের তলার ঝুল ঠিকমতো ঝাড়া হল কিনা অথবা পাঁচফোড়নের কৌটোয় তেলচিটেপনা রইল কিনা দেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ছাড়ল । বাজার ডাকে সেই মেয়েকে যে পাঁচ বাড়ি বাসন মেজে মাস গেলে সাকুল্যে হাজার দুয়েক পায় । বাজার ডাকে উচ্চ মাধ্যমিকের বই আধখোলা রেখে যাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল । উঁচু পদের টেবিলে বসে আছে যে মেয়ে , তাঁর থাক থাক ফাইলের নীচেও বাজারের গোপন চিঠি পৌঁছে যায়--সে চিঠি আবার তাঁর অফিস ঝেঁটোনো মেয়ে কুড়িয়ে পায় । "বাজার" কুহকিনীর মায়া যে সাবানের ফেনার মত ক্ষনস্থায়ী বুদ্বুদ তা না বুঝেই এই 'জোর করে মস্তিষ্কে স্থাপিত ধারনা' মা থেকে মেয়ে-- পরের প্রজন্মের হাতেও যত্নে তুলে দেওয়া হয়ে চলেছে ।
    দৌপদী বা ক্লিওপেট্রার গায়ের রঙ 'কালো' বলে তাদের সৌন্দর্যখ্যাতিতে কিছু কম পড়েনি --মিডিয়াবিহীন যুগে । আজ গৃহকর্মসহায়িকা মেয়ে বলে-
    -- "পুজোয় শাড়ী নেব না , টাকা দেবে " । ---বেশ তো ভালো কথা--কি করবি টাকা দিয়ে?
    --একটা ইস্পেশাল ফেসিয়াল করাব ।
    আলো ঠিকরানো মুখের মালিক আদিবাসী মহিলা আঁচলের গিঁট খুলে সিকি আধুলি গুনতে গুনতে লাজুক দাবী জানায়--"একটা ফর্সা হবার ক্রীম লিখে দাও দিদিমণি "
    নীচু ক্লাসের ছাত্রীর হাত ধরে এনে কাঁদো কাঁদো মুখে মা --"বুঝতেই পারছেন মেয়ের তো বিয়ে দিতে হবে--একটু গ্লো কিসে হবে ?"
    এমন 'ফর্সা আর গ্লো' পৌনঃপুনিক দোষে দুষ্ট হাজারো গল্প দিবারাত্র ঘোরে আমাদের ঘরদুয়ারে, আমাদের সমাজে ।
    অকারণ হীনমন্যতায় ভুগতে ভুগতে মেয়েরা স্টেরয়েড মেশানো ক্রীম মাখার নেশায় পড়ে । যা ব্যবহারের ফলে মেলে সাময়িক একটু চাকচিক্য -- আসলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া । এরপর আজীবনের জন্য অনেক সমস্যা । ফর্সা হবার বিনিময়ে মুখ ভর্তি ব্রণ,লোম এসব কোনো ব্যাপার হল নাকি !! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি-- শুধুমাত্র ভারতে, ফর্সা হবার জন্য স্টেরয়েড ক্রীম মাখার ফলে --চিকিৎসাশাস্ত্রে একটা নতুন অসুখের নামের সংযোজন হয়েছে--"টিএসডিএফ--Topical Steroid Dependent Dermatitis Face "

    যা শুধু "ঘরের কোণে পাঁচের মুখের কথা " সেই দু মুহূর্তের আলো ঠিকরানোর জন্য পোচের পর পোচ রূপটান , প্রসাধনী দ্রব্য ---নিদারুন মন্দা-র সময়েও ভারতের মতো গরীব দেশেও এই একটিমাত্র ইন্ডাস্ট্রির ব্যবসা বেড়ে চলেছে বছরে 20% হারে । গবেষণা বলছে যে বৃদ্ধির হার 2025 সালে গিয়ে 22% হবে । ভারতে সৌন্দর্য ও প্রসাধনী দ্রব্য ব্যবসার এই বৃদ্ধির হার ইংল্যান্ড ও আমেরিকার চাইতে দ্বিগুণ ! কেমন একটা অন্য রূপকথা --তাই না ?
    এই বৃদ্ধির জন্য যাদের পকেটকাটা পড়ে তাদের ভাতের পাশে মাছের পিসটা ছোট থেকে আরো ছোট হতে বাধ্য । প্রসাধন নারীজন্ম যাপনের না লেখা পূর্বশর্ত--পূর্বরাগও বটে । তবু--অজান্তে কখন যে তা সেই মেয়েটির " নিজস্ব পরিচয় " কে ছাপিয়ে যায় তা সে জানেনা । "তোর মুখে কি গ্লো --কোন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী " র আড়ালে চাপা পড়ে যায় "তুই কি ভালো রে --" এই নাম । বিজ্ঞাপন অনুযায়ী অমুক তমুক জুয়েলারীর ডিজাইন বা নামই হয়ে যায় আচার অনুষ্ঠানে মেয়েটির নাম পরিচয় । সেই 1959 সালে সিমোন যা বলেছিলেন --সেই পিতৃতান্ত্রিক সমাজ দ্বারা "নারী" র নির্মাণের ওপর আর এক ধাপ এগিয়েছে সমকালীন পৃথিবী । আরো এক অন্যরকম অবদমন যাকে ছদ্ম স্বাধীনতা ছদ্ম মুক্তি ভাবতে শুরু করেছে মেয়েরা । শুধু বিনুনি বাঁধা , ফ্রক পরা, পুতুল খেলা মেয়েতেও আর সন্তুষ্ট নয় সমাজ । এবার "সুন্দরী" মেয়ে হতে হবে । কেমন সুন্দরী ? সমাজ ও বিউটি ইন্ডাস্ট্রি তার যেমন ছক বেঁধে দেবে --তাদের মুনাফা যাতে বেশী সেই ছাঁচে ঢালা "সুন্দরী" হতে হবে মেয়েদের । পৃথিবীর প্রথম দশটি বিউটিপ্রডাক্ট ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে নজন সিইও পুরুষ । সুতরাং প্রডাক্ট বেচতে তারা সব মিডিয়াতে মেয়েদের নিজস্ব সত্ত্বা মুছে তাদের "বস্তু" বানাবে তাতে আর আশ্চর্য কি ! চিত্র সমালোচক লরা মালভি "Male gaze " থিওরিতে বলেন পুরুষের চোখে মেয়েদের একটা কামনার বস্তু হিসেবে দেখানোই এদের লক্ষ্য । সেই চোরাবালির ফাঁদে পা দেয় মেয়েরা । পুরুষতান্ত্রিক বণিকসমাজ বলে --এই লোশন লাগিয়ে সব লোম তুলে ফেলো , তবেই তুমি সুন্দরী হবে ! যাদের পূর্বনারীরা অন্তর্বাস পুড়িয়ে সম মর্যাদা দাবী করেছিল , তারা "সৌন্দর্য " এর এই সব রকম অবাস্তব সংজ্ঞা মেনে নেয় । ইংল্যান্ডবাসী এক ডাক্তার মেয়ের মুখে অনেক বছর আগে শুনেছিলাম -'হাত পায়ের লোম না তুলে হাসপাতালে গেলে সবাই বনমানুষ দেখার দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে ' । সেই ঢেউ এদেশেও এসেছে । গরম আবহাওয়ার দেশ -- অনাকাঙিক্ষত সঙ্গী হিসেবে ওয়াক্সিং বা হেয়ার রিমুভার ব্যবহার -এর পর কিছু লোমফোঁড়া , অ্যালার্জি তো আসবেই , কুছপরোয়া নেহি --সংজ্ঞা অনুযায়ী সুন্দরী হচ্ছি ! এমন স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকর রূপচর্চার উদাহরণ হাজারো আছে ।
    2012 সালে ভারতে বিউটি ইন্ডাস্ট্রি থেকে মাথা পিছু রেভিনিউ আদায়ের অঙ্ক ছিল 12.69 ডলার, 2020 সালে সেই অঙ্ক গিয়ে দাঁড়িয়েছে 19.5 ডলার । মাথাপিছু আয় বাড়ার হিসেব দিয়ে এ সমীকরণ মিলবে না কারণ গড় হিসেবে এর পাশাপাশি এসে যাবে ধনীর আরো ধনী হওয়া আর গরীবের চাকরি হারানোর গল্প । বরং কোন রঙের শেডের 'কনসিলার' দিয়ে রক্তাল্পতার ফ্যাকাশেভাব ঢাকা যায় ,সব আর্থসামাজিক গ্রুপের সাজটেবিলে কিভাবে এসব প্রোডাক্ট জায়গা করে নিচ্ছে --সেখানে উঁকি মারলে এই ব্যবসা বৃদ্ধি ভালোভাবে বিশ্লেষিত হবে ।
    দেশের বাজেটের মত পারিবারিক বা ব্যক্তিগত বাজেটেও একটা হিসাব থাকে কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ । আগে মাসকাবারির থলেতে থাকত বড়জোর একটা বোরোলীন বা একটা হিমানী স্নো , কিউটিকুরা পাউডার , সঙ্গে কিছু নিখরচার ঘরোয়া প্রসাধনীতেই কাজ চলে যেত । আজকাল সব মিডিয়া জুড়ে অবিরত পুঁজিবাদী কর্পোরেট দুনিয়ার ইস্কুল চলে । রোগা ভোগা গ্রামীণ গৃহবধূ ও অভাবী সাফাইকর্মী সবাই সেই ইস্কুলের ছাত্রী--এরকম সব রোগীরা দেখাতে এসে ঝোলা থেকে উপুড় করে নামিয়ে দেখায় -- নামী ব্রান্ডের হাজার হাজার টাকার অপ্রয়োজনীয় বিউটি প্রডাক্ট --"এইসব মাখি ,তবু গ্লো আসছে না "। যদি প্রশ্ন করি -"সকালে কি খাও মা? দুপুরে? রাতে?" তাদের বিরক্ত চোখমুখ বলে সুষম খাদ্যের কোনো বালাই নেই । যদি বা এতবছর ধরে এত লড়াই করে মেয়েদের হাতে সামান্য ক্রয়ক্ষমতা এল --সেই অর্থ এমন বিপথে ডাকাতি হয়ে যায় ! 2020 সালেও দেখি--বহু কষ্টে পড়াশোনা করে পাওয়া চাকরি , বরের আবদারে ছেড়ে দেয় মেয়ে আর বিবাহবার্ষিকীর উপহার, মিনে করা সোনার লকেট তুলে গদগদ ভাবে সবাইকে দেখায় । প্রায় একশ বছর আগে সমাজবিজ্ঞানী W.E.B. Du Bois মেয়েদের যে "দ্বৈত চেতনা " র কথা বলেছিলেন - অধিকাংশ পুরুষ জানে মেয়েদের মনস্তত্ত্বের এই দুর্বল জায়গাটা ব্যবহার করলে তাদের বেশ কব্জা করা যায় । নারী আয়নাতে নিজের চোখে নিজেকে একরকম দেখে আবার পুরুষের চোখের তারার স্তুতি ও মুগ্ধতায় তাদের মতো করে দেখে । যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হলে সহজেই পুরুষ বা অন্য নারীর দেখাকেও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যায় । নারীশরীরকে "বস্তু" বানিয়ে নারীর মাথার খুলির নীচের মস্তিষ্ককে নস্যাৎ করার চক্রান্ত চিরকাল --অবদমনকারীর মুখোশ শুধু বদলে যায়--'পল্লীসমাজ' থেকে 'বিউটি ইন্ডাস্ট্রি' !
    বেগম রোকেয়া, সাবিত্রীবাঈ ফুলে, আশাপূর্ণা,আমাদের আরো আরো পূর্বনারীরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে খাঁচার দরজা যেটুকু ফাঁক করে দিয়েছিলেন--সে খাঁচা থেকে বেরিয়ে মেয়েরা যদি সোনার শিকলিকে "মুক্তি" ভেবে বুকে জড়িয়ে ধরে --তাহলে এ এক অন্য পিছুহাঁটা ।
    মেয়েরা কি একটু তলিয়ে ভাববে ?

    " একা মেয়ে,তার গায়ে জ্বলছে রাশি রাশি টুনি বাল্ব, বুকজল ঠেলে বয়ে নিয়ে বেড়ায় অমঙ্গলের বার্তা । বেঁধে দেয় সংযোগের ছেঁড়া সুতো । ওপাশে যে সালঙ্কারা বধূটি মাথা হেঁট করে বসেছিল , সে এবার একে একে ভাসিয়ে দিল কনকচূড় , সিঁথি , সীতাহার । খড়কুটোর মতো ভেসে যাচ্ছে গহনা " ( বিজ্ঞাপনের মেয়ে --চৈতালী চট্টোপাধ্যায় )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৮ মার্চ ২০২০ | ৪৩৩২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • খাতাঞ্চী | 172.69.***.*** | ০৮ মার্চ ২০২০ ১৯:২৬91294
  • নতুন লজিকে নতুন লেখা সময়ানুক্রমিক না চাপলে বুবুভার লিস্টে আসছে না। তাই তুলে দিই।
  • π | ০৮ মার্চ ২০২০ ২০:১০91304
  • সত্যি।!! জানিনা এ চাকা কীকরে ঘুরবে! সেই পুঁজিবাদ বাজারের হাত ধরেই কি, কালো মেয়েদের টার্গেট করে, তাদের মডেল করে.?
  • | 162.158.***.*** | ০৯ মার্চ ২০২০ ১২:১৫91337
  • ভাল লেখা।

    এই নিয়ে দু'এককথা বলবো বলেছিলাম সেই গতবছর শুচিস্মিতার লেখাটা বেরোল সময়েই। কিন্তু সে আর হয় নি।

    যাই হোক এই লেখার নীচে বা পাশে রিডিং সাজেশান হিসেবে হুচির গতবছরের লেখাটা ডিসপ্লে করা গেলে বেশ ভাল হোত। ও ল্যাদোষ একটু দেখো না।
  • | 162.158.***.*** | ০৯ মার্চ ২০২০ ১২:১৫91338
  • ভাল লেখা।

    এই নিয়ে দু'এককথা বলবো বলেছিলাম সেই গতবছর শুচিস্মিতার লেখাটা বেরোল সময়েই। কিন্তু সে আর হয় নি।

    যাই হোক এই লেখার নীচে বা পাশে রিডিং সাজেশান হিসেবে হুচির গতবছরের লেখাটা ডিসপ্লে করা গেলে বেশ ভাল হোত। ও ল্যাদোষ একটু দেখো না।
  • | 162.158.***.*** | ০৯ মার্চ ২০২০ ১২:১৫91339
  • ভাল লেখা।

    এই নিয়ে দু'এককথা বলবো বলেছিলাম সেই গতবছর শুচিস্মিতার লেখাটা বেরোল সময়েই। কিন্তু সে আর হয় নি।

    যাই হোক এই লেখার নীচে বা পাশে রিডিং সাজেশান হিসেবে হুচির গতবছরের লেখাটা ডিসপ্লে করা গেলে বেশ ভাল হোত। ও ল্যাদোষ একটু দেখো না।
  • | 162.158.***.*** | ০৯ মার্চ ২০২০ ১২:৩৩91343
  • হ্যাঁ লিংক ঠিক আছে। কিন্তু আমি চাইছিলাম অন্যসব সাজেস্টেড বুবুভার লেখার মত এটাও দেখাক।
  • tester | 172.68.***.*** | ০৯ মার্চ ২০২০ ১৩:১২91344
  • সাজেস্টেড লেখা তো এখন অটোমেটিক্যালি সিলেক্টেড হয়ে আসছে --- ট্যাগ ধরে বা কিওয়ার্ড ধরে কিছু লেখা কানেক্টেড করার কাজ হবে। কিছুদিন পরে।
  • o | 108.162.***.*** | ০৯ মার্চ ২০২০ ১৩:৩৭91345
  • ভাল লাগল।
  • একলহমা | ১০ মার্চ ২০২০ ০৬:৫৫91359
  • ভালো লেখা।
  • সুকি | 172.68.***.*** | ১৪ মার্চ ২০২০ ২৩:০৮91460
  • গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খুবই - এবং বাস্তব সমস্যার কথা খুব সুন্দর তুলে এনেছেন। ভারতে এই প্রসাধন শিল্পের প্রভাব যেদিকে এগুচ্ছে তাতে করে আশঙ্কার কথা তো বটেই।

    তবে কিনা র‍্যান্ডাম স্টেট্মেন্ট এবং অতি সরলীকরণেও ভর্তি যখন লেখিকা এই প্রসাধন শিল্পের বিস্তারের কারণ খুঁজতে গেছেন। যেমন,

    "পৃথিবীর প্রথম দশটি বিউটিপ্রডাক্ট ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে নজন সিইও পুরুষ । সুতরাং প্রডাক্ট বেচতে তারা সব মিডিয়াতে মেয়েদের নিজস্ব সত্ত্বা মুছে তাদের "বস্তু" বানাবে তাতে আর আশ্চর্য কি !"

    ব্যাপারটা এতো সোজা! শুধু একজন সিইও একাই ডিরেক্ট করছে সব কিছু! কোম্পানীর বোর্ড মেম্বার, এক্সিকিউটিভ কমিটি এরা কি করছে? একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, যে দশটি প্রধান কোম্পানীর নাম করা হয়েছে, তাদের এক্সিকিউটিভ কমিটিতে ২৫-৪০% মহিলা আছেন। তাঁরা কি করছেন? তাঁদের কোন দায়িত্ব নেই এই ব্যাপারে? বেচারা একা সিইও সব দোষ নেবেন?

    পুরুষ অবশ্যই ধোয়া তুলসী পাতা নয় - বদের হদ্দ অনেক সময়। এবং তারা যে মেয়েদের সুন্দর দেখতে অনেক কিছু চাপিয়ে দিয়েছে এটাও ঠিক। তবে শুধু তাদের দোষ দিলে হবে?

    লেখিকা যে বলেছেন, "মেয়েরা কি একটু তলিয়ে ভাববে ?" এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

    ছেলেরা যে কিছুই করছে না এই ব্যাপারে সেটা তো দেখাই যাচ্ছে, আর তারা কিছু খুব শিগগিরি করবে তেমন লক্ষণও নেই। তাহলে মহিলারা নিজেদের দিক থেকে শুরু করুন না কিছু একটা - বয়কট দিয়েই শুরু করা যেতে পারে।

    গ্রামের মেয়েরা তো রোল মডেলদের দেখেই শেখে। এই রোল মডেলরা প্রসাধন দ্রব্য বর্জন করা শুরু করুন।
  • | 162.158.***.*** | ১৫ মার্চ ২০২০ ১০:৩২91461
  • ইয়ে মানে এটা ঠিক সিইওরা পুরুষ আর এগজিকিউটিভ বোর্ডে কত মেয়ে এরকম ব্যপার নয়। ব্যপারটা হল খানিক পিতৃতন্ত্র আর খানিক হোয়াইট সুপ্রেমেসির ধারণা গেঁথে যাওয়ার ফল। পুরুষই হোক কি মহিলা সে চিন্তা ভাবনা মানসিকতায় পিতৃতান্ত্রিক হতে পারে। পুরুষরা সবাই পিতৃতান্ত্রিক নয়, মহিলারাও সবাই নারীবাদী নয়।
  • সুকি | 172.68.***.*** | ১৫ মার্চ ২০২০ ১২:০৯91464
  • হ্যাঁ, 'পিতৃতন্ত্র আর খানিক হোয়াইট সুপ্রেমেসির' ব্যাপারটা মন হয় বুঝতে পেরেছিলাম এবং তাতে কোন দ্বিমত নেই।

    কিন্তু আমার কনফিউশনটা ছিল "পৃথিবীর প্রথম দশটি বিউটিপ্রডাক্ট ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে নজন সিইও পুরুষ। সুতরাং প্রডাক্ট বেচতে তারা সব মিডিয়াতে মেয়েদের নিজস্ব সত্ত্বা মুছে তাদের "বস্তু" বানাবে তাতে আর আশ্চর্য কি !" এই স্টেটমেন্টটা নিয়ে।

    যাক কে বাদ দাও - হয়ত আমার বোঝার ভুল হয়েছিল!
  • | 162.158.***.*** | ১৫ মার্চ ২০২০ ১২:১৮91465
  • হ্যাঁ লেখক ঐ স্টেটমেন্টটা ঘাঁটাই লিখেচেন তো। লেখকের জন্যও অমর পোস্টটা ভ্যালিড।
    আমি আসলে গোটা ব্যপারে এরকম বনাম হয় না সেটাই বলতে চাইলাম।
  • সে | 162.158.***.*** | ১৬ মার্চ ২০২০ ০৮:২১91493
  • শুধু ভারতে নয়, গোটা দুনিয়াতেই এরকম কেস। বিউটি ইনডাসট্রি এভাবেই চলছে। হোয়াইট সুপ্রিমেসি কোতথেকে এলো?
  • b | 172.68.***.*** | ১৬ মার্চ ২০২০ ১০:৪৬91496
  • কিন্তু সবাই শাদা হতে চায় না কি? সাহেবরা শুনেছি সমুদ্রের ধারে রোদ পুইয়ে বা প্রাণপণে ক্রিম ট্রিম মেখে বাদামী হবার চেষ্টা করে।
  • | ১৬ মার্চ ২০২০ ২০:১৯91499
  • ফর্সা হওয়ার প্রতি অসম্ভব টান, 'সর্বদোষ হরে গোরা' জাতীয় প্রবাদ থেকে এটাই মনে হয় যে ফর্সা হওয়াই মোক্ষ, ত সেটা সম্ভবত সাদা চামড়া মানেই সব ভাল এরকম ধারণা থেকে এসেছে।,
    সেই অর্থেই বললাম।
  • সে | 162.158.***.*** | ১৯ মার্চ ২০২০ ১৫:৩২91572
  • সহমত।
  • নিতাই দত্ত। | 103.18.***.*** | ০২ নভেম্বর ২০২০ ১৭:২২99567
  • শর্মিষ্ঠা , তোর লেখা  যত  পড়ছি , অবাক হচ্ছি।  শ্য়়্্

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন