এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  সমাজ

  • বাসতেই হবে ভালো

    অম্লানকুসুম চক্রবর্তী
    আলোচনা | সমাজ | ২২ জুন ২০২৩ | ১৩৫৯ বার পঠিত | রেটিং ২.৫ (২ জন)


  • ফুটদুয়েক দূর থেকে বাহারি মোবাইলটা আচমকা আমার ল্যাপটপের কি বোর্ডের দিকে উড়ে এল। স্ক্রিনের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রাফ কেঁপে উঠল হঠাৎ। বিস্ময়ে মুখ ঘুরিয়ে দেখি, মোবাইলের মালকিন, মধ্যতিরিশের জয়তী দুহাত দিয়ে নিজের মাথা চেপে রয়েছে। বলে চলেছে, “এদের কি কোনও লজ্জা নেই! কি ইতরের দেশে রয়েছি আমরা। এতে আবার লাইক পড়ে..!” বিড়বিড় করে আরও অনেক কথা আউড়ে যাচ্ছিল আমার সহকর্মী জয়তী। ওকে সামলানোর চেষ্টা শুরু করতেই শুনতে হয়েছিল, “আগে মোবাইলটা দ্যাখ্।”

    জয়তীর মুখ কালো হয়ে গেলেও তখনও উজ্জ্বল ছিল ওর মোবাইলের স্ক্রিন। মানে, লক হয়ে যায়নি আর কি। দেখলাম, খোলা রয়েছে ইনস্টাগ্রাম। খবরের শিরোনাম, ‘নৃশংসভাবে কুপিয়ে, থেঁতলে খুন করা হল কিশোরীকে।’ দিল্লির ঘটনা। হত্যাপুরীতে ভরসন্ধেবেলা যখন এই ঘটনা ঘটেছে, পথচলতি লোকজনদের মধ্যে ফিরেও তাকাননি কেউ। প্রতিবাদ না করে নির্বিকারে হেঁটে গিয়েছেন যে যাঁর নিজের কাজে, গন্তব্যে। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়া এই ভিডিও এর মধ্যেই নাকি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। স্ক্রিনের দিকে চেয়েছিলাম আমি। জয়তী গর্জে উঠে বলল, “লাইকগুলো দেখেছিস?” চোখ বড় বড় করে দেখি, ইতিমধ্যেই ১৪,২২৮ জন লাইক করে দিয়েছেন ইনস্টাগ্রামে এক টিভি চ্যানেলের সেই নিউজফিড। ফোনটা ফিরিয়ে দিই আমার সহকর্মীকে। ও বলছিল, “আমাদের কি লজ্জা করে না? বোধশক্তি কি একেবারে হারিয়ে ফেলেছি সবাই?” এই খবর এবং তারও উপরে অ্যাসিড বৃষ্টির মতো লাইক দেখে হয়তো স্থির থাকতে পারেনি জয়তী। না হলে কথা বলতে বলতে ওর দুচোখ দিয়ে জল নেমে আসবে কেন?

    টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে এক সমাজবিদকে বলতে শুনেছিলাম, “সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে আমরা দুনিয়ে পাল্টে দেওয়ার কথা বলি, দিনবদলের স্বপ্ন দেখি। তবে অসহায়ের মতো এই মাধ্যম শুধু লাইক করার কথা বলে। কোনও জিনিসকে আমার যদি ঘেন্না করতে ইচ্ছে করে খুব, তার কোনও অপশন এই সোশ্যাল মিডিয়া দেয় না।” পাশে বসে থাকা অর্থনীতির অধ্যাপক জুড়ে দিলেন, “আরে এমন অপশন দিলে যে কোম্পানির বাজারদর কমবে। এ তো পুঁজিবাদের যুগ মশাই। কোন জগতে থাকেন?” ঘন্টাখানেকের সেই তর্ক শেষ হয়ে গেলেও কথাগুলো মনের মধ্যে বুড়বুড়ি কাটে আজও। মোবাইল স্ক্রিনে সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাপে যখন আঙুল চালিয়ে আরও ‘সামাজিক’ হয়ে ওঠার চেষ্টা করি, এমন খবর এবং তার সঙ্গে এঁটুলি পোকার মতো লাইক-কাউন্ট দেখলে গা গুলিয়ে ওঠে অজান্তে। অ্যালগোরিদম মেনে কয়েকটি পোস্টের পরেই নিয়ম করে চলে আসে নিউজফিড। তার অধিকাংশই স্বঘোষিত ব্রেকিং নিউজ। মানসিক অবসাদ সহ্য না করতে পেরে দশতলা থেকে ঝাঁপ দিলেন এক তরুণী, মদের টাকা না পেয়ে বাবাকে বেধড়ক পেটাল ৩৫ বছরের যুবক, খেলতে গিয়ে কুয়োয় পড়ে প্রাণ হারালো ৩ বছরের শিশুকন্যা, ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত অন্তত ২৫০—এমন খবরের ফিডও কলার তুলে জানান দেয় প্রাপ্ত লাইকের সংখ্যা। অবাক হয়ে দেখি, শুধু অন্তর্বাস পরিধান করে কোনও নায়িকার গোয়ার সমুদ্রে জলকেলির ব্রেকিং নিউজে যে পরিমাণ লাইক পড়ে, একই রকম ভাবে লাইকবন্যায় ডুবে যায় থেঁতলে খুনের খবরও। দু-চার-পাঁচশ নয়, এমন লাইকের গণনা হয় হাজারে। অন্তর্বাস কন্যা এবং ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু—উভয়পক্ষই চোখ বন্ধ করে পেয়ে যায় পনেরো কিংবা সতেরো হাজার লাইক। এমন মাধ্যমে হাজার লাইক আবার পরিচিতি পায় ইংরিজির কে অক্ষর দিয়ে। স্ক্রিন জুড়ে খেলা করে ফিফটিন কিংবা সেভেনটিন কে লাইকের গরিমা। কিছুক্ষণ পরে সেই স্ক্রিনে ফিরে এসে দেখি হাজারের উপরে হাজার চেপেছে আরও। শ্রীহরিকোটার রকেটের মতো লাইক-যান মুহূর্তে আকাশ ছোঁয়। আমি চেয়ে চেয়ে দেখি সারাদিন।

    পরিচিত এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্তাকে কপাল কুঁচকে বলতে শুনেছিলাম, “চারপাশে এত লাইক কেন? এতো অনেকটা ভালবাসবেনা মানে কি, বাসতেই হবে ভালো গানটার মতো ব্যাপার হয়ে গেল। ভাল না বাসার কি কোনও উপায় থাকতে পারে না সামাজিক মাধ্যমে?” আরও অনেককিছু বলে চলেছিলেন ভদ্রলোক। কানে এসেছিল, “ভালোবাসা জানানোর কাউন্ট বাড়ানো নিয়ে আমরা ভাবি যতটা, তার দশ শতাংশও যদি প্রতিবাদ জানানোর উপায় নিয়ে খরচা করত জুকারবার্গের দলবল, দুনিয়াটা আজ হয়তো অন্যরকম হতো।” আকাশের দিকে চেয়ে আরও কি সব বিড়বিড় করে চলেছিলেন উনি। হয়তো প্রলাপ। জানি না।

    বাইনারি দুনিয়ায় কোনও লিঙ্কে ক্লিক করতে না করতেই দেখি, পর্দাজুড়ে হুটোপাটি করছে শেয়ার করার বিভিন্ন আয়োজন। আমার এক কবিবন্ধুর কথায়, “সুরাসিক্ত লিঙ্ক আঁকশি বাড়িয়ে বিষ-আলিঙ্গনের কথা বলে।” যখন কোনও খবর পড়ি, পনেরো সেকেন্ড যেতে না যেতেই দেখি, লাইক করার হরেক টুল নেমে আসছে স্ক্রিন জুড়ে। পড়া স্তব্ধ করে দিয়ে বলে, লাইক করো আগে। কিভাবে করতে চাও বলো। তুবড়ির ফুলকির মতো উড়ে আসে হোয়্যাটসঅ্যাপ, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম আর ইমেলে শেয়ার করার আইকন। কোনও বিষন্ন খবরে তুমুল রেগে এমন অপশন বন্ধ করে দিয়ে দেখেছি, দশ সেকেন্ড পরে ফের হাজির হয়েছে অপশন অমনিবাস। মানেটা হল, শুধু আমি পড়লেই হবে না, মেঘের ওপাশ থেকে গর্জনের মতো তা বিলিয়ে দিতে হবে বিশ্বচরাচরে। আমি জানি, প্রতিটি লিঙ্কের পর্দার ওপারের ডেটাবেস আমার শেয়ার করার দলিলের খবর রাখে। যত বেশি শেয়ার করব, সংস্থার আরও বড় প্রিয়পাত্র হব আমি। আমার সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে ফুটে উঠবে ওই সংস্থার এমন খবরের আরও, আরও ফিড। পালাবার পথ নেই।

    এই আকালেও স্বপ্ন দেখার মতো যে সাইবার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সামান্য হলেও বপন করা আছে সমাজ সচেতনার বোধ, তাঁরা সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন কয়েক বছর আগেই। যে কোনও খবরে তালে তাল দিয়ে ইয়েস ম্যান হওয়ার বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিরোধের আঁচ পাচ্ছি বিভিন্নভাবে, সমস্বরে। নিজেরা ব্লগ খুলে তাঁরা আর্জি জানাচ্ছেন, যে পোস্টে, খবরে কিংবা লিউজফিডে মনের মধ্যে অস্বস্তির দামামা বাজে, তাতে আর যাই করুন, লাইক করবেন না। ওয়াশার নষ্ট হয়ে যাওযা জলের কলের মতো যে সংস্থাগুলো নিউজফিডের বন্যা রচনা করে, যে সামাজিক মাধ্যমের কর্তারা সেই পেইড নিউজ ফিড নিয়ন আলোর ঝালরের মতো সাজিয়ে রাখেন তাঁদের অ্যাপের আনাচে কানাচে, তাঁদের উদ্দেশে বলা যেতেই পারে, পোস্ট কিংবা খবরকে ঘেন্না করারও সুযোগ দিন মশাই। লাইকের পাশে স্থান করে নিক ডিজলাইকের সুযোগও। আমিও তো বলতে পারি, মর্মান্তিক এমন খবর আমার মোটে পছন্দ হয়নি মশাই। হিজিবিজবিজ প্রশ্নগুলো মাথার মধ্যে চমকায়। উত্তর মেলেনা।

    এক মনোবিদের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে কথা বলে জেনেছিলাম, কোনও পোস্ট লাইক করার পিছনেও আমাদের মনের গভীরে লুকিয়ে থাকে আত্মপ্রচারের এক প্রচ্ছন্ন ইচ্ছে। মনে হয়, কোনও সংস্থার মার্কেট ইনটেলিজেন্স টিম যদি বিশদে দেখতে চায় লাইক করার বাইনারি দস্তাবেজ, তার সতেরো হাজার লোকের মধ্য লুকিয়ে থাকবে আমারও নাম। হয়তো এর ফলে কপালে জুটবে এক ডজন নতুন বন্ধুতার রিকোয়েস্ট। আর এভাবে ফেসবুকে হাজার পাঁচেক বন্ধুর কোটা পার করে দিতে পারলেই আমি রাজা। তখন শুধুই ফলোয়ার। পাঁচ হাজার বন্ধু উপচে পড়া বহু মানুষকে সোনালি দাঁতের হাসিতে বলতে শুনেছি, “আমাকে রিকোয়েস্ট পাঠাবেন না। সরি। আই হ্যাভ একসিডেড দ্য লিমিট। বদলে ফলো করুন আমায়।” এমন কথা বলার সময় সারা শরীর দিয়ে হাসতে থাকে ওই ডিওডোরেন্ট দেহ। সবকিছুতেই লাইক ঠুকে দেওয়ার নেপথ্যে এমন কারণের সন্ধান পেয়ে অবাক হয়েছিলাম। প্রৌঢ় মনোবিদ বলছিলেন, “এ আমার মনগড়া কথা নয়। দুনিয়াজুড়ে বিভিন্ন গবেষণা মানব মনের এমন বিচিত্র গতিরই জানান দিচ্ছে।”

    সামাজিক মাধ্যমকে নতুনভাবে দেখতে চাওয়ার স্বপ্নসন্ধানীদের অনেকেই চান, লাইক করার সঙ্গে যেন যোগ করে দেওয়া যেতে পারে ব্যবহারকারীর ওয়ালেট। প্রতিটি লাইকের সঙ্গে কেটে নেওয়া হবে সামান্য হলেও কিছু অর্থ। তাঁদের মতে, লাইক যোগে অর্থ বিয়োগের কথা উঠলেই সোশ্যাল মিডিয়ার চিরাচরিত সমীকরণ পাল্টে যাবে। একই সঙ্গে যোগ করা যেতে পারে অপছন্দ করার অপশন। সেটি হতেই পারে একেবারে ফ্রি। যুক্তিগুলো আপাতভাবে হাস্যকর। তবে ‘গভীরে যাও, আরও গভীরে যাও’ গাইতে গাইতে এ নিয়ে ভাবতে বসলে এক অন্যরকম ডিজিটাল যাপনের ছোঁয়া পাই। কাল্পনিক। তবে ভেবে আনন্দ হয়।

    এমনটা হলে প্রতিটি পোস্ট করার আগে আমরা ভাবব যতটা, অন্যকে লাইক দিতেও নিজের কাছে নিজে প্রশ্ন করব। হতেই তো পারে। এ সব নিয়ে চর্চা করা মানুষদের একটা বড় অংশের ধারণা, এর ফলে লক্ষ্যণীয়ভাবে কমে যাবে অপ্রাসঙ্গিক, আত্মপ্রচারমুখী পোস্ট। কমবে উল্টোপাল্টা নিউজফিডও।

    দাড়ি টানার আগে বলা যায়, এখন তো আমাদের শয়নে স্বপনে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স। আমরা নাকি এখন আর নিজেদের বুদ্ধিতে চলি না, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই আমাদের চালিত করে। এ আই নাকি নিজে নিজে রচনাও লিখতে পারে। অঙ্ক করতে ভুল হলে, সফটওয়্যারের কোডে গলদ হলে চোখে আঙুল দিয়ে ধরিয়ে দেয়। হয়তো বলবে, ‘পাঁচমাথার মোড়ে চোখে পড়ে থাকো গান্ধারীর আবরণ। ভরসা রাখো। আমি পার করিয়ে দেবো রাস্তা।’ হয়তো কেন, বলবেই। থেঁতলে খুনকে লাইক করার সময়ে সেই অ্যালগোরিদম যদি একটু বুদ্ধি খাটিয়ে বলতে পারতো—করছোটা কি? যদি স্ক্রিনের উপরে বিরাট ফন্টে গর্জে উঠত কোনও লেখা—আপনি কি উন্মাদ?
    কে যেন দেবতা গড়ে, তাহারই কৃপার পরে, করে দেব মহিমা নির্ভর।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২২ জুন ২০২৩ | ১৩৫৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Prativa Sarker | ২২ জুন ২০২৩ ১১:০২520633
  • কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা হারানো  মূল্যবোধগুলো যদি শেখায় মন্দ কী! আমাদের সত্যিই হারিয়ে হারিয়ে আর হারাবার কিছু নেই। 
    লেখাটি চিন্তার খোরাক ফিল।
  • দুদ্দুর | 43.252.***.*** | ২২ জুন ২০২৩ ১১:১০520634
  • এজ ইউজুয়াল ভাটের লেখা। অম্লান চক্কোত্তির যে কটা লেখা পড়েছি এখানে, সবই এই টাইপের সেন্টিমেন্ট সর্বস্ব হাবেগ।
  • Kishore Ghosal | ২২ জুন ২০২৩ ১৭:০৮520638
  • "তাঁদের মতে, লাইক যোগে অর্থ বিয়োগের কথা উঠলেই সোশ্যাল মিডিয়ার চিরাচরিত সমীকরণ পাল্টে যাবে"।
     
    এই ব্যাপারটি ভীষণ জরুরি - আহা যদি সত্যি হত।  
     
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ২২ জুন ২০২৩ ২১:৪৭520642
  • Facebook, instagram, like - এসব করতেই হবে কে দিব্যি দিয়েছে? না করলেই হয়। বই পড়ুন, গান শুনুন । নিজেরা না দেখলেই হয় তা না দোষ সব অন্যের।
  • | 2406:7400:63:494e::***:*** | ২৩ জুন ২০২৩ ০০:৫৫520647
  • এই সেই বিখ্যাত লবেজান লেখক যিনি একটি পোষ্যবিরোধী চালিয়াৎ ​​​​​​​লেখা ​​​​​​​লিখেছিলেন | এখন ​​​​​​​আর ​​​​​​​একঝুড়ি অর্থহীন ​​​​​​​চালিয়াতি  ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​হাজির | প্রায় ​​​​​​​গরু ​​​​​​​রচনা |
     
     
     
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৩ জুন ২০২৩ ১৪:৪২520656
  • লাইক করতেই হবে এই মাথার দিব্যি কে দিয়েছে। তারপর সব প্লাটফর্মে যে লাইক এর অপশনই শুধু থাকে এটাও বাজে কথা। ফেসবুকে লাইক, হাসি, ঘৃণা/রাগ, দুঃখ অনেক ইমোজি দেওয়া থাকে। রেডিটে শুধু আপভোট ডাউনভোট। মেসেজটা আরো বেশি লোকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন কিনা নির্ধারিত হয়।
     
    এর সাথে লাইকের ইনফ্লেশন সংক্রান্ত কিছু ডিবেট টেনে এনেছেন লেখক। প্রথম হলো লাইকের ইনফ্লেশন যা ইন্সটা বা ফেসবুকে হচ্ছে। এবার এটা কমব্যাট করার একটা উপায় হতে পারে ডেইলি লাইকের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া- ধরুন দিনে 50 টা লাইক দেওয়া যাবে সর্বাধিক। তাহলে লোকে ভেবে চিন্তে লাইক দেবে। টাকা দিয়ে লাইকের ব্যবস্থা করলে লোক পালিয়ে যাবে সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে। 
    কিন্তু আমার মনে হয় ফেসবুকে কি হচ্ছে মাথা না ঘামানো টাই সবচে ভালো। আমৃগায় শুধু বয়স্ক আর রেসিস্টরা ছাড়া কেউ ফেবু করেনা। ভারতেও ফেবুতে কিছু গাদা গুচ্ছের ফালতু অশিক্ষিত লোকের ভিড়। মোটামুটি সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই যত দূরে থাকা যায় তত নিজের মস্তিষ্কের সুস্থ্যতা বজায় থাকবে। 
    এখন প্রশ্ন হল গুরুও তো সোশ্যাল মিডিয়া, তাহলে আমি এসব কথা বলে, কেন গুরু করছি ? গুরু ঠিক তথাকথিত সোশ্যাল মিডিয়া নয়, অনেকটা অনলাইন ফোরামের মতো এবং অনেকক্ষেত্রে
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৩ জুন ২০২৩ ১৪:৪৪520657
  • এনোনিমাস। প্লাস ভিড় একটু কম বলে কিছু কিছু ক্ষেত্র বাদ দিলে মোটামুটি এক্সপিরিয়েন্স ভালো এবং সমমনস্ক পাবলিকের দেখা পাওয়া যায়। তাই গুরু করি।
  • সোশ্যাল মিডিয়া | 192.139.***.*** | ২৩ জুন ২০২৩ ১৯:০৮520661
  • হুঁ, ফেসবুকের বাইরেও বিপুল দুনিয়া আছে, যারা ফেসবুকে অস্থানে লাইক দিদ্চ্ছে তারা যদি আপদ হয় তাহলে যারা সেই লাইক গুনে কম্পিউটারের দিকে মোবাইল ছুঁড়ে মারছে তারাও সুবিধের লোক না। ফেসবুকে লোকে সময় কাটায়, ওটাকে সময় কাটানোর যন্ত্রের থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে মাথায় তোলা হয়েছে।

    আরব বসন্তে বোধয় ফেবুর অবদান ছিল, তবে পরে তো সবাই বললো সিয়ার চক্রান্ত। শাহবাগে বোধয় যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে ভালোই। অথবা কলরব। সে তো ঐ ত্রৈলোক্যনাথ না কী যেন নামের ছেলেটি গজাননবিরোধি কস্টিউম পরে ভেস্তে দিল।
    এমনিতেও, রোজরোজ কী আর বিপ্লব হয়?

    সে যাই হোক, ফেসবুক নিয়ে এত বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আর লেখাটাও নিতান্ত নিরেস হয়েছে।

    রমিতবাবুর সঙ্গে একমত।
    গুরুই ভালো। আমি অবশ্য গুরুকে ঠিক সোশ্যাল মিডিয়া মনে করি না, ঠেক মত আরকি। কেউ খবরের কাগজ কেউ দফা ৩০২ হাতে নিয়ে আসছে, চাট্টি তর্কবিতর্ক হচ্ছে। বুবুভা আবার পত্রিকা মত, যুগের সুযোগে ইন্টারঅ্যাক্টিভ।
  • | 157.33.***.*** | ২৩ জুন ২০২৩ ২০:০১520662
  • লেখাটা কিরম ঘাঁটা আর ঘিসাপিটা টাইপ। 
     
    শাহবাগের যোগাযোগ মাধ্যম ফেবু ছিল আবার পরবর্তী জামাতি খুনগুলোও ফেবু থেকে লোকেশান বের করে করেছে।  আমার পরিচিত একজন আজও বাংলা&এশে স্মার্টফোন অন করে না। দেশের বাইরে গেলে হন্তব্য দেশের ইমিগ্রেশান পার করে তবে অন করে, এতটাই আতঙ্ক।
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ২৩ জুন ২০২৩ ২৩:৩৯520667
  • Reddit ও ভাল - anonymous. Fb তে লোকে ফলো করে - এটা স্ট্যাটাস! ফুল গাম্বাট।
  • স্বাতী রায় | 117.194.***.*** | ২৪ জুন ২০২৩ ১৮:১৭520684
  • ভাল লাগল না। যে কোন মিডিয়াই ঠিক করে ব্যবহার না করতে পারলে সর্বনাশ। আবার ঠিক ঠাক মানুষ খুঁজে বার করতে পারলে সব মিডিয়াই ভাল। নন- ভার্চুয়াল জগতে লোকে মন রাখা মিথ্যে কথা শোনা যায় না? প্রবল রকমের যায়। যারা মিঠে সুরে মনরাখা তুমি কি ভালো বলে আমার আবার তাদের দিকেও কম্পিউটার ছুঁড়ে মারতে ইচ্ছে করে ( মানে থান ইঁট লিখতে গিয়েও "মা হিংসী" স্মরণ করে থেমে গেলাম। ) কিন্তু কত আর ছোঁড়ার জিনিস পাওয়া যায়! অমন লোক তার থেকে ঢের ঢের বেশি। যে কোন সোশ্যাল মিডিয়াই ইঙ্কলুডিং গুরু বাস্তব জগতের প্রতিফলন। যতই লোকে ভার্চুয়াল বলে নাক সিঁটকাক। 

    তবে খুব সম্ভবত আগেকার দিনে লোকে মুখই খুলত না। এখন লোকে বলে আমার মত আমি বলছি,তাতে কার কি! এটা তো যে কোন সোশ্যাল মিডিয়ার বিস্ফোরণের ভাল গুণ। সেটা অবশ্য অনেকের পছন্দ হয় না।  
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন