এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • সংঘর্ষ নয়, সমন্বয়ের কথা বলে এই উন্নয়ন

    তৃণাঞ্জন চক্রবর্তী ও অভিজিৎ কুন্ডু
    আলোচনা | বিবিধ | ১০ এপ্রিল ২০০৭ | ১১৮৬ বার পঠিত
  • বিশ্বায়িত অর্থনীতিতে ভারতের অংশগ্রহণের প্রধান যোগসূত্র হিসেবে যখন স্বীকৃত হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তির মত মেধাভিত্তিক শিল্প, তখন কৃষি বনাম শিল্প : রাজ্য স্তরে এই বিতর্ককে কেন্দ করে রক্তাপ্লুত চাপান উতোর বড়ই বেমানান ।

    বুঝতে অসুবিধা হয়, কৃষি অর্থনীতিকে কেন উন্নয়নের বিপুল কর্মযজ্ঞে নিজের জায়গা করে নিতে এত বেগ পেতে হচ্ছে। কৃষিজমিকে নিয়ে কাজিয়ার গল্পটা এতাবৎ আমরা কৃষি সমাজের শ্রেণীবিন্যাসের মধ্যেই আবদ্ধ দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম। জোতদার-বর্গাদার বা মধ্যচাষি-ভূমিহীন চাষির চিরন্তন দ্বান্দ্বিক সম্পর্ককে মুছে দিয়ে কৃষি ও শিল্পের দ্বান্দিকতায় দেশের ইসিহাস যে আবার অবগাহন করবে তা আমাদের হিসেবের মধ্যে ছিল না।

    অথচ বিশ্বব্যাপী, বিশেষত উন্নত দেশগুলোর ইতিহাসের গতিপ্রকৃতিকে অনুধাবন করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবী ক্রমশ নেশন স্টেট থেরকে নলেজ স্টেটের দিকে এগিয়ে চলেছে। ভাষা সংস্কৃতিকে পেছনে গেলে জায়গা করে নিচ্ছে কোনো বিশেষ দেশের জ্ঞানভিত্তি। জনগণের চাহিদা মেটাতে কীভাবে একটি দেশ তার জ্ঞানভিত্তিকে নির্মাণ ও পরিচালিত করছে, সেখানেই নিহিত দেশটির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। এই প্রেক্ষিতে, কৃষি অর্থনীতিকে সামনে রেখেও, ভারতের মত দেশ যে এক বিকল্প জ্ঞানভিত্তির সন্ধান জানাতে পারে সে কথার সাক্ষ্য বহন করে যোজনা কমিশন ও নলেজ কমিশনের বহু সুপারিশ ও আলোচনা।

    জ্ঞান যেমন পবিত্র, ভূমিও তাই। জমি ও কৃষকের মধ্যে যে সম্বন্ধ তা নন্দীগ্রাম-কাণ্ডএর প্রথম পর্বের অনতিবিলম্বেই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম । শ্রমিক কৃষকের নেতা আমাদের বামফ্রন্ট মুখ্যমন্ত্রীর বোধোদয় হবার বহু আগেই এ রহস্য বুঝে যান তামিল ব্রাক্ষ্মণ সন্তান ।

    জমির প্রতি শিল্পের আগ্রাসী রূপ - যে রূপের প্রতিফলন দেখা গেল আমাদের রাজ্যের বামপন্থী নেতৃবর্গের বাচনে ও আচরণে, তা শিল্পোন্নয়নের প্রকল্পকে বেশ কয়েক পা পেছিয়ে দিল - এটাই আজকের বাস্তব। জমি মানেই পশ্চাৎপদতা, শিল্প মানেই মেধাবী প্রগতি, এমন একটা দ্বিবিভক্ত বিরুদ্ধতামূলক ধারণাকে প্রচার করে তাঁরা বোধ হয় আধুনিক গণ অংশগ্রহণমূলক উন্নয়নের পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন শুধু নয়, এই বিচ্ছিন্নতা প্রায় অনতিক্রম্য এবং এমনকি সংবিধানের রাস্তায় চলা বামপন্থী-শক্তি গুলির ভাঙন, রাজ্য ও দেশিয় স্তরে প্রায় অবশ্যম্ভাবি।

    বিজন ভট্টাচার্যের নবান্নের বাংলায় যে মুহূর্তে মুখ থেকে দেশ শব্দটি উদ্ভূত হয়, সে মুহূর্তেই চেতনায় অনিবার্যভাবে জড়িয়ে যায় "মাটি", "জমি" ইত্যাদি আবেগ সন্ধানী শব্দকুল । সেই নবান্নর সঙ্গে কোথায় যেন এক নিরন্ন বাংলা এক হয়ে যায়। অথচ এই দেশের কোটি বর্গমাইলব্যাপী ছড়িয়ে থাকা সমতলভূমি যে অন্য এক নবান্ন-র উপজীব্য হয়ে উঠতে চাইছে, তার ইঙ্গিত ছিল কেন্দ্রীয় কমিটিগুলির বিভিন্ন খসড়ায় । গুরুত্ব পাচ্ছিল দেশের অর্থনীতিতে কৃষিভিত্তিক বা কৃষি-অনুসারী শিল্পের ভূমিকার কথা । উচ্চ প্রযুক্তির সাথে যার কোন সংঘাত তো নেইই, বরং থাকা উচিত এক অনিবার্য ও নিবিড় সংহতি ।

    জ্ঞানের ব্যাপ্তি আদিগন্ত জমির মত । সে বিশেষ কারো কুক্ষিগত নয়। সেই জ্ঞানের ভিত্তিভূমি যে-ভূখন্ড বা জমি তাকে সঠিকভাবে পরিচালিত করে সামগ্রিক সম্পদ বৃদ্ধির দিকটা অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে। তাই জমি-অধিগ্রহণের পথে নয়, গণ-অংশ গ্রহণের পথেই নব্য উন্নয়নের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে - এ মন্ত্র তাদের যতই গেলানোর চেষ্টা হোক না কেন, বামপন্থী পরিপাক-যন্ত্রে তা মোটেই সইবে না।

    অথচ সংঘর্ষ নয়, সমন্বয়। এই রাস্তাই বাতলাচ্ছে, আমরা যাদের রোল মডেল হিসেব দেখি, পশ্চিমের সেই উন্নত দেশেরা। আর মুক্ত বাজার অর্থনীতির ঘেরাটোপে, উন্নয়ন-প্রসঙ্গে, দিনে দিনে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে তৃতীয় বিশ্বের প্রচলিত বামপন্থী রাজনীতির শ্রেণী সংঘর্ষের পথ। কেননা ওই পথ আকীর্ণ সন্দেহ আর অবিশ্বাসের কাঁটায় ।

    ১৯৯৯ সনে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের "দ্বিতীয় প্রজন্মের সংস্কারে" ফ্রাঁসিস ফুকুয়ামা জোর দেন সামাজিক সংস্কারের গুরুত্বের উপরে । যে মূলধনের গোড়ায় নিহিত মানবগোষ্ঠীগুলোর মধ্যকার পারস্পরিক বিশ্বাস ও গ্রহণ সক্ষমতা। মনে রাখতে হবে, এই ফুকুয়ামারাই কিন্তু জর্জ বুশকে ইরাকে মার্কিন সন্ত্রাস তৈরী করতে সাদ্দামের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করেছিল।

    এই বিশ্বাস ও গ্রহণ সক্ষমতার অন্তরায় হয়ে ওঠে আমলাতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা। বিষয়টি আরো জটিল হয়ে যায় যখন প্রশাসনিক আমলান্ত্রের সঙ্গে মিলেমিশে যায় পার্টির গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা। যে কোন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত উপর থেকে নীচের দিকে নামতে অযথা কালক্ষেপ হয়। তার চেয়েও বিপদের কথা, এর ফলে তথ্যের বিকৃতি ঘটে। সেই তথ্যবিকৃতির ফলশ্রুতিই হল নন্দীগ্রাম।

    রাজ্যের বাম প্রশাসন এদিকে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চাৎপদতার দাওয়াই হিসেবে ৫০ বছর আগে বাতিল হওয়া একটি উন্নয়ন প্রকল্পকে পুন:অর্পিত করতে চাইছেন ।

    ১৯৫১ তে রাষ্ট্রপুঞ্জের পুরনো নথি বহুদিন তামাদি হয়ে গেছে, যেখানে বলা হয় : " প্রাচীন ধ্যানধারণা লোকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া দরকার, ভেঙে দেওয়া দরকার পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলো ... যাঁরা এই প্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে অক্ষম, সেইসব মানুষের সুখী জীবনের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হতে বাধ্য।" এই ছিল বিগত শতকের ৫০ ও ৬০ এর দশকের আধুনিকতাবাদীদের উন্নয়ন প্রকল্পের চেহারা ।

    খুব সঙ্গত কারণেই। যেমন তাদের হৃদয়ের কেন্দ্রে এখনও বাসা বেঁধে থাকে সেই পুরোন বামপন্থী মেজাজ, তাঁরা এখনও করুন ভাবে আঁকড়ে থাকেন একটি ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া মতাদর্শ। তাঁদের মনোভাবে যেহেতু আজ অব্দিও লেগে থাকে ১৯৬৭-তে কেন্দ্রের চক্রান্তে ফ্রন্ট সরকার পড়ে যাওয়ার আদি ভয়, কেন্দ্রের বঞ্চনার দীর্ঘ ইতিহাস, ১৯৯১-এর অর্থনৈতিক সংস্কারের মনমোহনীয় কার্যক্রমগুলির সাথে তাঁরা এখনও জলচল হয়ে উঠতে পারেন নি।

    কিন্তু ইতিহাস তো থেমে নেই। তারপর অনেক জল গড়িয়েছে । ১৯৭০-এর দশকে প্রাদুর্ভাব ঘটল ওয়ার্লড সিস্টেম তাত্ত্বিকদের। তাঁরা তুলে ধরলেন অনুন্নত বিশ্বের উন্নয়নে কর্পোরেট ও রাজনৈতিক এলিটদের মধ্যে সামাজিক মেলবন্ধনের প্রশ্নটি। এরও পর, নব্বইয়ের দশকে এল যুক্তিবাদী মানুষকে একত্রিত করে একটি উন্নয়ন মডেলের তত্ত্ব । পরিশেষে এই শতকের গোড়ায় উঠে এল "সামাজিক মূলধনের " দিগ্‌ দর্শন, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে গোষ্ঠী, নেট-ওয়ার্ক, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ ও সমন্বিত কার্যক্রম বা সিনার্জির ধারণাগুলি। (ওয়ার্লড ব্যাংক রিসার্চ অবসার্ভার, ভল্যুম ১৫, সংখ্যা ২, আগস্ট ২০০০)।

    তাই উল্লম্ব বা খাড়াখাড়ি শাসনতন্ত্র নয়, আনুভূমিক সাংগঠনিক পরিচালন বিধি। একথা কিন্তু গোড়ার থেকেই বলে আসছেন মেধা পাটকার। নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের অভিজ্ঞ ওই সমাজকর্মী যথার্থই হৃদয়ংগম করেন বিশ্বায়িত সমাজে উন্নয়ন প্রকল্পের আধুনিক ধ্যান ধারণাগুলি।

    তিনি বা তাঁর মত আরো এন জি ও কর্মী যাঁদেরকে তথাকথিত নির্বাচনী রাজনীতির নিরিখে হয়তো জনপ্রতিনিধি বলা যায় না, বরং যাঁদের গায়ে সহজেই তকমা পড়ে যায় বহিরাগতের, তাঁরাই কিন্তু তুলে ধরতে চান সংঘাতবিহীন উন্নয়নের সূত্র। তাঁরাই হয়ত উন্নয়নের নয়া প্রকল্পকে তৃণমূল স্তর অবধি পৌঁছে দেবার প্রধান সূত্রধর ।

    এই প্রতীতি আমাদের মনে আরো দৃঢ় হয়ে ওঠে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বিগত ৮ জানুয়ারির বিবৃতি শুনে। স্পষ্টতই তিনি উল্লেখ করলেন উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় "মানবিক মাত্রা" যোগ করবার কথা। কেননা এই উন্নয়নে "শিল্প বনাম কৃষি" বা "অমুক বনাম তমুক" এরকম কোনো সংঘাতমূলক ভাবনারই সম্ভাবনা নেই । এমনকি "পাবলিক বনাম প্রাইভেট"এর আদি বৈরিতারও অবসান হতে চলেছে। মনে থাকতে পারে, রতন টাটা, যিনি কেন্দ্রীয় সরকারের "লগ্নি নিগম"-এরো চেয়ারম্যান, কিছুদিন আগেই তিনি গ্রামে পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ বা পিপিপি মডেলের উদ্যোগ নেবার প্রস্তাব দিয়েছেন।

    অতএব উন্নয়নের এই নয়া উদ্যোগ, যা কিনা ১৯৯১ থেকে কার্যকরী অর্থনৈতিক সংস্কারেরই এক সম্প্রসারিত রূপ, তাতে সমন্বয়ের ধারণাটি কতখানি গুরুত্বপূর্ণ । প্রশাসনিক কেন্দ্রিকতা নয়, বরং সমাজের বিভিন্ন স্তর ও ক্ষেত্রের মানুষ, আমজনতা থেকে বিবিধ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, সবাইকে সামিল করে এক সমন্নিত বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমেই শুধু এই উন্নয়ন বিপ্লব ঘটানো সম্ভব ।

    সেজ বিষয়ে রাজ্যস্তরের উদ্যোগকে আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে । তাহলে প্রথমে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল কেন? আর সে ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গর বিশেষ অগ্রাধিকার পাওয়ার মানে কি? পশ্চিমবঙ্গের বাম সরকারের বহু উচ্চারিত ব্যাপক ও গভীর গণভিত্তি-র খাতিরে? তবে কি রাজনৈতিক, বিশেষত বাম দল ও প্রশাসনের এক অগ্নিপরীক্ষা চলছে? এ পরীক্ষায় তাঁরা উতরোতে না পারলে, এটাই কি প্রমাণিত হয় যে নির্বাচনের বৈতরণী পেরোন যাঁদের কাছে বাধ্যতামূলক তাঁরা মনমোহিনী উন্নয়নে সঠিক ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হলেন আর তাঁদের পেছনে ফেলে ক্রমশ সামনের সারিতে উঠে এলেন মেধা পাটেকারের মত সুশীল বা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা?

    সমসাময়িক ইতিহাস কিন্তু তাই বলছে। বিগত কমবেশি এক বছরের মধ্যে তথ্যের অধিকার থেকে শিশু শ্রম আইন অবধি যে কটি আইন লোকসভায় ছাড়পত্র পেয়েছে এর প্রত্যেকটির পেছনেই প্রধানত সক্রিয় ছিলেন সমাজকর্মীরা ।

    মেধা পাটেকারের মত কর্মীরা ইতিমধ্যেই সরকারের কাছে একটি বিকল্প উন্নয়নের রূপরেখা পেশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পরামর্শদাতা কমিটিতে সেটি সাদরেই গৃহীত হয়েছে । প্রাথমিক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এটা কিছুটা উপেক্ষিত হলেও, ইদানীন্তন সরকারি মদতে জমি অধিগ্রহণপর্বের বিপর্যয়ের প্রক্ষিতে তাঁদের মতামত নিশ্চয়ই আরো কিছুটা বৃদ্ধি পেল।

    একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে মেধার বক্তব্য শুনে তাঁকে একটুও বিনিয়োগ বিরোধী মনে হল না তো। বরং তিনি বলছেন পুঁজির অনুপ্রবেশ করুক প্রধানত কৃষিক্ষেত্রে। শিল্প গড়ে উঠুক প্রধানত কৃষি উৎপাদনকে ঘিরে। লাতিন আমেরিকা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত সর্বত্র এখন ইথানল উৎপাদনকে ঘিরে কৃষিকাজের রেওয়াজ আবার জনপ্রিয় হচ্ছে। যদিও ইথানল-চাষে সারা পৃথিবী জুড়ে ব্যাপক খাদ্য সংকটের সম্ভবনা দেখা দিতে পারে, তবু আমাদের মত দেশ, যেখানে কৃষিজমি এত সহজ লভ্য তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করে সামগ্রিক অর্থনীতিতে উন্নয়ন সম্ভব। সেই উন্নয়নে শিল্প হবে শ্রম নিবিড়। সেই শিল্পে জমি হারানোর, উদ্বাস্তু হবার দু:স্বপ্ন নেই। গ্রাম সংস্কৃতি ভেঙে পড়ার, পরিবেশ কলুষিত হবার আশঙ্কা নেই।

    আর মেধা প্রস্তাবিত এই উন্নয়ন মডেলে মেধা ভিত্তিক অর্থনৈতিক প্রকল্পনাও কোনো ছন্দপতন ঘটায় না। বেশ খাপে খাপেই বসে যায়। প্রথাগত কৃষি উৎপাদন ছাড়াও, শুধু জমিতে গজানো ভেষজ উদ্ভিজ্জের অপরিসীম সম্পদকে চিহ্নিতকরণ, শ্রেণীভুক্তিকরণ ও পরিশেষে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে যে অগাধ জ্ঞান ও তত্ত্বের উৎপাদনের সুযোগ, তাকে কাজে লাগিয়ে ভারত বিশ্বায়িত অর্থনীতিতে এক অনন্য উন্নয়নের অধিকারী হতে পারে।

    তবে বাজার অর্থনীতির প্রতিযোগিতামূলক সংস্কৃতির পাশে সমবন্টনভিত্তিক এই উন্নয়ন প্রকল্প কীভাবে নিজের জায়গা করে নেয় তা জানতে আমাদের আরো বেশ কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে ।

    ** এই নিবন্ধটি লেখা হয়েছিল ৬ ফেব্রুয়ারি নন্দীগ্রামে গুলি-চালনায় ৬ জন গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১০ এপ্রিল ২০০৭ | ১১৮৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন