সেজপিসে কিংবা মেজমাসী বিয়ের সম্বন্ধ না করলেও ব্যাপারটা সহজ নয়। নিজের নির্বাচনে বিয়ে করলে কালো মেয়ের বিরুদ্ধে সেটাই শাশুড়ীর সবচেয়ে বড়ো আপত্তি আর অস্ত্র। বদল চাই মানসিকতার। সেদিন ‘পাত্র পাত্রী’ বিজ্ঞাপনের ভাষা ও বক্তব্য দুইই বদলে যাবে। সেদিনের অপেক্ষায় আছি।
পাত্রী, পাঁচ ফুট ছয়।লম্বা পাত্র চাই।
পাত্রী সরকারী চাকুরে।ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার,সরকারী চাকুরে ছাড়া পত্রালাপ নিষ্প্রয়োজন। এগুলো ও থাকে।
একমাত্র পুরোপুরি বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ না করলে,চয়েস এসে যাবে।পুরোপুরি নিষিদ্ধ করলে আবার নেগোশিয়েশন ম্যারেজ বাঁধা পাবে। অনেক বাবা ,মা ছেলে মেয়ের বিয়ে দিতে অসুবিধের সম্মুখীন হবেন।
সব কিছুতে পলিটিকাল কার্রেক্টনেস আনতে গেলে সেই ঘুরেফিরে সিগারেট প্যাকেট এর লেখা হয়ে যায়
কেউ যদি শ্যামবর্ণ পছন্দ করে আর বিজ্ঞাপনে লেখে শ্যামবর্ণ ছাড়া পত্রালাপ নিষ্প্রয়োজন তো ফর্সা রা বাড়ি গিয়ে কেলিয়ে আসবে নাকি ?
একজন লোক নিজস্ব পছন্দ করে বিয়ে করতে গিয়ে লম্বা বা ফরসা চাওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে না কেন ? সংসার সে নিজে করবে , বিজ্ঞাপন নিজের গ্যাঁটের টাকায় দিয়েছে , তো তার বেছে নেবার অধিকার কেন থাকবেনা ? এটা বোঝার মতো বুদ্ধি সবার আছে যে বিজ্ঞাপনে না মেনশন করতে বাধ্য হলেও যে ফর্সা পছন্দ করে সে কালো বিয়ে করবেনা , যতক্ষণ না সমাজ এসে বন্দুক দেখিয়ে কালো মেয়ে বা ছেলের সঙ্গে ছাদনাতলায় নিয়ে যাচ্ছে
হ্যাঁ , কালো হলে সরকারি চাকরি পাবেনা বা জয়েন্ট এন্ট্রান্স এ বসতে দেওয়া হবেনা সে রকম হলে প্রতিবাদ দরকার
যারা এখানে বিজ্ঞাপনদাতার মুণ্ডপাত করছেন কজন ফোর্ড বা bmw কোম্পানি কে চিঠি লিখেছেন কালো গাড়ি আর সাদা টায়ার মডেল আনার জন্য ?
খপরদার,টিস্যু পেপারের রং পরিবর্তন করবেন না।ওটা সাদাই থাক।
আর, চুলের কলপ এর কালো রং ব্যান হোক।
টিস্যু র ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং
কোলন ক্যান্সার এর ইনিশিয়াল ডায়াগনসিস এ হেল্প করে
আর হ্যাঁ , সাদা কলপ আছে , চারুক খান লাগলেন যে বিরজারা তে?
কলপ সাদা,লাল,সবুজ যে রঙের হয় হোক।কালো রং যেন না হয়। টিভি খুললেই তিন মিনিট অন্তর অন্তর, হয় মাধুরী নয় কাজল নয় করিনা এসে চুলের কলপ এর এড দিচ্ছে। আপনি বলুন,এই সুন্দরী তারকা দের চুল কখনো সাদা হয়!?সব মিথ্যে প্রচার!
খুউব খারাপ লাগে!
ভাটে টইয়ে সর্বত্র এসএমের বালপনা আর নেওয়া যাচ্ছে না।
একটু কোষ্ঠ সাফ করে আবার বসুন।কনস্টিপেশন এর রোগীদের নিয়ে এই এক সমস্যা! জোলাপ খেতে ভুলে যাবেই--))
আহা এসব আবার কি?
কতা হচ্ছিলো ফসসা কালো নিয়ে তো জোলাপ কোত্থেকে এলো
হাতে গোলাপ নিয়ে একটুকু দোস্তি করেই ফেলুন না মশাইরা
ওহ,কচি কাচারা,একটু আধটু লেগ পুলিং করে।এমন কিছু ব্যাপার নয়।লেগ পুলিং করবি কর।ভালো ভাবে কর। শান্ত ভাবে,ধীরে সুস্থে কর।
এবার শুনুন কালোর গুণের কথা।কালো কফি,আমার প্রিয়।সাদা কফি হলে,স্থান পরিত্যাগ করি।
কালো ঘোড়া হলো গিয়ে জন্তুর মধ্যে প্রিয়। ছাতা র মধ্যে, কালোই শ্রেষ্ঠ।আমি কালী ভক্ত।
একবার ছোট বেলায় অঙ্কের মাস্টার আমাকে কেন কেজানে ব্ল্যাকশিপ বলে ডেকেছিল।
ওপরের লেখাটা দেখতে অসুবিধা হচ্ছে
কেউ কি কৃষ্ণপ্রেমে অন্ধ হয়ে উইন্ডো র কালার ব্ল্যাক করে নিয়ে তার ওপর ব্ল্যাক ফন্ট এ লিখেছেন নাকি ?
এই ফর্সা পাত্রীর বিজ্ঞাপনের বিরোধিতা কজন ফর্সা মহিলা করেন বিভিন্ন মিডিয়াতে তার একটা স্টাটিসটিক্স পাওয়া যাবে?
রুচিশীলা, স্লিম, কর্মরতা বা স্বনির্ভর আর সুন্দরী, মেধাবী, শিক্ষিতা, এই সবগুলিই কেন ডিস্ক্রিমেটরি বৈষম্যমূলক শব্দ হিসেবে কাউন্ট করা হবে না? নিজের / অপরের কোন গুণ / বৈশিষ্ট্যটিকে একজন মহিলা একজন পুরুষের কাছে (বা বিপ্রতীপে) কাঙ্খিত মনে হওয়ার ক্ষেত্রে অপমানজনক মনে করবেন না - এর কোনো সার্বজনীন গাইড তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে?
সেভাবে দেখতে গেলে বিজ্ঞাপন হওয়া উচিত
পাত্র আছে পাত্রী চাই , ফোন ১২৩৪৫৬...
জাত উচ্চতা গায়ের রং কাজ ধর্ম ভাষা অপ্রয়োজনীয়
সব্বাই খুশ , মোগাম্বো ও খুশ
কথাটা অন্য জায়গায়। এই যখন কেউ একজন পোবোন্ধো লিখে পোমাণ করতে চান যে উচ্চশিক্ষা বা চাকরি করা ব্যপারটা সৌন্দর্যের বা গাত্রবর্ণের বা গৃহকর্মনিপুণতার চেয়ে হোলিয়ার, কেউ বলতে চান নাস্তিকতা আস্তিকতার চেয়ে হোলিয়ার - সেটা তিনি যুগসঞ্চিত মেজরিটারিয়ান একটা নর্মএর এগেইন্সটে রিভোল্ট করার জায়গা থেকেই লিখলেন, নো ডাউট। কিন্তু একটা কাউন্টার ডিস্ক্রিমিনেশনের দিকেই যে চলে গেলেন সেটা খেয়াল করলেন কি?
সামাজিকভাবে গণমানসিকতার বদল আনার জায়গা তৈরি করা গেলে হয়তো "ফর্সা স্লিম" এর পাশাপাশি "কৃষ্ণবর্ণা স্বাস্থবতী"র বিজ্ঞাপণ ও ছাপা হুতে পারে। যেমন এখনই বেশকিছু "স্ববর্ণা"র পাশাপাশি "অসবর্ণা চলিবে" / "যে কোনো বর্ণের" ও থাকে। কিন্তু সেটাই কি কাঙ্খিত? কেউ যদি ট্যারা দেখলে অস্বস্তি বোধ করে বা কোঁকড়ানো চুল অপছন্দ করে তার কাউন্সেলিং দরকার হতেই পারে, কিন্তু পাবলিক ফোরামে/মিডিয়ায় তার অপছন্দের খতিয়ান অন্য একজনের সত্যবাচন বা চারিত্রিক দৃঢ়তা পছন্দ করার ডঙ্কার চেয়ে খুব আলাদা কোথায়?
চারিত্রিক বা অন্যান্য গুণাবলীর প্রেজেন্ট হায়ারার্কি কাউন্টার করে নতুন হায়ারার্কি এসট্যাবলিশ করার মধ্যে ব্যক্তিগত মরালিটি আর জাজমেন্টের বাইরে আর কী কাজ করছে আদৌ?
উল্টোরথের দিন মিষ্টির দোকানে গিয়ে বললাম- একটু রসভরা পেটমোটা দেখে জিলিপি দিন। ওমা, জিলিপিটা বলে উঠলো- 'এই শালা! বডি শেমিং করিস? তোর পেট মোটা, শান্তির ছেলে!' ভাবলাম এই রে! জিলিপিকে নিজের অজান্তেই হার্ট করে ফেলেছি! জিলিপি ক্যানসেল, বললাম- দুটো কালোজামই দিন। ওমা, কালোজাম ডেচকি থেকে চোখ বড় করে বললো- 'তুই কালো, তোর বাপ কালো, তোর চোদ্দগুষ্টি কালো! আগে আমেরিকা,আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গদের ইতিহাস পড় গিয়ে, তাপ্পর কালো বলতে আসবি!'
জিলিপি, কালোজাম পড়ে রইলো। অতঃপর বললাম দুটো সন্দেশ দিতে। সন্দেশ বললো- 'আমরা আর 'সন' নই, এখন আমরা 'ডটার-দেশ'। যুগ যুগ ধরে চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক ষ্টিরিওটাইপ থেকে আমরা বেরিয়ে আসছি!' এটা শুনে পাশ থেকে আরেকটা সন্দেশ সেই সন্দেশটাকে বললো- দ্যাখ তুই 'ডটার' দেশ হতে পারিস। আমি 'সন'-দেশও না 'ডটার' ও না। আমি 'আদার', ছেলে-মেয়ে, নারী-পুরুষ এসব আইডেন্টিটির বাইরেও জগৎ আছে, আমরাও এখন সমান অধিকারে বাঁচবো।
-'নিশ্চই বাঁচবি, তোরও সবার মতো পরিচয় আছে, অধিকার আছে', পাশ থেকে জিলিপি আর কালোজাম বলে উঠলো।
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি দেখে দোকানদার বলে উঠলো- কি দাদা, কি নেবেনটা কি, ফাইনাল বলুন!
বললাম- আপনার দোকানের সব মিষ্টিই বেশ শিক্ষিত, আপনি কি সবাইকে লিবারাল আর্টস পড়িয়েছেন?
দোকানদার হেসে বললো- যাক, কেউ অন্তত বুঝলো। না, সবাই আর্টস পড়েছে, তা না, কিন্তু এরা প্রায় সকলেই হায়ার স্টাডি করেছে। কেউ কেউ স্কলারশিপও পেয়েছে। জিলিপি আর কালোজাম এরা তো ইউনিভার্সিটি পাশ করে এখন পি.এইচ.ডি করছে। সন্দেশটা অনার্সের থার্ড ইয়ার দিতো, বাট পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেলো। সবাই খুব সেনসিটিভ।
বললাম- একদম। আর সকলেই ভারি মিষ্টি!
দোকানদার একটু আক্ষেপ করে বললো-শুধু এই বোঁদেটাকেই পড়াতে পারলাম না। শালা এর পড়ায় মনই নেই। স্কুল কাট মারে, এক্সাম দেয় না। সব সময় আড্ডা আর ছ্যাঁচড়ামি!
সত্যি বলতে আমি নিজেও বেশিদূর পড়াশোনা করিনি। তাই বোঁদের সাথেই একটু মনে মনে রিলেট করলাম।
দোকানদার আবারও বলে উঠলো- তা আপনি কোনটা নেবেন?
বললাম- ওই, বোঁদে..
ছ্যাঁচড়া বোঁদে এটা শুনে টোন কেটে বলে উঠলো- বাটি নিয়ে চলে যা ছাগলের....