এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • রাজনীতির ছবি, ছবির রাজনীতি (প্রথম পর্ব)

    যোশী যোসেফ লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৩ আগস্ট ২০১১ | ৬২৩ বার পঠিত
  • একদা উত্তরপূর্ব ভারত থেকে আমরা বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের অনেক চলচ্চিত্র পেতাম। কিন্তু এই সব ছবিই উত্তরপূর্বকে দেখাত বিদেশের মত করে,সারাক্ষণ ওখানকার অর্কিড, অথবা ওখানকার নাচের ভঙ্গী, এইসবই দেখাত। তাই ভারতের বাকি অংশের উত্তরপূর্ব ভারত সম্পর্কে একটা অন্য ধারণা ছিল। এখনকার কথা নয়, ধরুন প্রায় ১০-১২ বছর আগে, যে খুব সুন্দর একটা জায়গা, অনেক অর্কিড, অনেক রকম নাচ, কিন্তু এই সব গোপন বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের জন্য তারা আনন্দ করতে পারছে না, নিজেরা নিজেদের পরিমণ্ডলকে কলুষিত করছে, এরকমই কিছু ধারণা। কারণ আমরা প্রকৃত ছবিটা দেখতে পাই না, তা সে ছাপার অক্ষরেই হোক অথবা দৃশ্যমাধ্যমেই হোক। তাই, লোকেন্দ্র অ্যারামবামের সোলজার্স ইন স্যারং, আমার নিজের দেখা প্রথম রাজনৈতিক তথ্যচিত্র, প্রথমে শুরুর তিন বছরের উদ্বৃত্তের কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলে চলে, আর বলে রাষ্টেÌর দ্বারা আইনসঙ্গত জুলুমের রাজনীতির কথা। কিন্তু উনি কখনও ছবিটা সেন্সর করতে চাননি। ছবিটা ফ্রন্ট সার্কেলে দেখিয়েছিলেন কিন্তু উনি জানতেন যে এটাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে না। তারপর পরের দিকে পবন কুমারের ছবিটা এলো, এই ছবিটা একজন একক চলচ্চিত্রকারের নয়, পবন এসআরএফটিআই (সত্যজিত রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিট্যুট)তে পড়াকালীন অ্যাফস্পার বিরুদ্ধে ঘটনাপ্রবাহ নজর রাখছিল, সেই মনোরমার বলাৎকার ও হত্যার পর যে সব অ্যাফস্পা-বিরোধী আন্দোলন ঘটেছিল, তাই এই ছবিটা মণিপুরের সমস্ত সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরাম্যানদের ফুটেজ সংগ্রহ করে বানানো, পবন যাকে একটা ফিল্মের রূপ দিয়েছিল। ছবিটার নাম অ্যাফস্পা ১৯৫৮। এই ছবিটা এদিককার ভারতীয়দের কাছে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির দ্বারা সংঘটিত রাজনৈতিক সন্ত্রাসের একটা প্রধান চাক্ষুষ প্রদর্শন। এই ছবিটাও প্রথমে সেন্সরিংএর জন্য পাঠানো হয় নি, পরে ও সেন্সরিংএর জন্য পাঠায়, ছবিটা বোম্বে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর জন্য সেন্সর হয় নি, দরকারও ছিল না, তো এটা মিফে (মুম্বাই ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল) সর্বোচ্চ পুরস্কার পায়, আর পরে যখন চলচ্চিত্র বিভাগ এই পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবিটা কলকাতায় দেখাতে চাইল, ছবিটা ছিল, কিন্তু ছবিটা দেখানো গেল না যেহেতু নন্দন কর্তৃপক্ষ বলল যে সেন্সর সার্টিফিকেট বা সেন্সরের ছাড়পত্র থাকলে তবেই আমরা ছবিটা দেখাতে পারব। পরে ছবিটা কিছু কাটছাঁট করে সেন্সর করা হয়। আমি তবু বলব সেটা ভারত তথা উত্তরপূর্ব ভারতের তথ্যচিত্রের মাত্রায় আমার দেখা সবচেয়ে বদান্য পদক্ষেপ। সেন্সরবোর্ডের অভিমত এ ব্যাপারে যথেষ্ট উদার ছিল। কিছু কাটছাঁট সত্বেও ছবিটার অভিঘাত নষ্ট হয় নি, ছবিটার রাজনৈতিক দিকটা হারিয়ে যায় নি। এখন এই ছবিটা পরের বছর জাতীয় পুরস্কারের জন্য পাঠানো হয়, কেননা, যদিও ছবিটা বানানো হয়েছিলো ১০ বছর, না, ৭ বছর আগে। ছবিটা সেন্সর হয়েছিল ২ বছর আগে। আর ছবিটা ভারতের সর্বোচ্চ পুরস্কার, ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জাতীয় পুরস্কার জয় করল। মজার ব্যপার হল সে বছরই সশস্ত্র সেনানীর বীরচক্র পুরস্কারের তালিকায় মণিপুরের নাম ছিল সবার উপরে। ভারতীয় সেনার সশস্ত্র ব্যক্তিরাই আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান নির্বাচিত হতেন, তারপর আসাম রাইফেল্‌স, এর মাথাতেও সেনাবাহিনীর লোক। এখন ভারতীয় সেনার ক্ষেত্রে, যখন আপনার প্রশিক্ষণ চলছে, আপনি শিখছেন কী করে গুলি চালাতে হয়, কিন্তু মানুষের উপর গুলি চালানোর পরীক্ষাগার আপনি পাচ্ছেন না, যদ্দিন না আপনি জম্মু-কাশ্মীর অথবা উত্তরপূর্বে মোতায়েন হচ্ছেন। যেখানে নিছক অবিশ্বাস বা সন্দেহের বশে গুলি চালানো বা হত্যা করা রাষ্ট্র কর্তৃক অনুমোদিত। এই আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট কী করে, এটা বিচারব্যবস্থাকে হঠিয়ে দেয়, উর্দি পরিহিত কোন ব্যক্তি, অফিসার হবারও দরকার নেই, সাধারণ একজন সুবেদার, সাধারণ একজন সামরিক ব্যক্তি, যে কাউকেও গুলি করে মারতে পারে, যদি সে মনে করে যে অন্য ব্যক্তিটি যাকে সে গুলি করছে, সে একজন উগ্রপন্থী। তাই আপনার সন্দেহের বশে খুনও করার অনুমতি আছে। অন্যভাবে বলতে গেলে, সেনাবাহিনী তথাকথিত উগ্রপন্থী বলে যাকে মারছে, তার কার্যকলাপ দেখে মারছে না। সাধারণ অবস্থায় যেখানে বিচারব্যবস্থা আছে, সেখানে আপনাকে প্রমাণ করতে হবে তার কার্যকলাপ কী ছিল ইত্যাদি, কিন্তু এই আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্টের ক্ষেত্রে অতীত কার্যকলাপ যায় আসে না, এখানে শুধু সেই সামরিক ব্যক্তি আপনি ভবিষ্যতে কী করবেন বলে ভাবছেন তার ভিত্তিতে আপনাকে গুলি করে মারতে পারেন। আপনি ভবিষ্যতের উগ্রপন্থী হতে পারেন, আপনি ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারেন, আপনাকে গুলি করে মারা হতে পারে। আর মণিপুরে বেশীরভাগ এনকাউন্টার কিলিং হচ্ছে, আমি জানি, জানি মানে আমার কাছে মণিপুরের অনেক প্রাথমিক খবর আসে, কেননা আমি মণিপুরে কাজ করি, মণিপুরের অধিবাসীদের সঙ্গে মেলামেশা করি। আমি তিনটে খবরের কাগজ পড়ি, মানে চারটে কাগজ, দুটো কলকাতার, আর প্রতিদিন নেটে ইম্ফল ফ্রি প্রেস আর কেরালার একটা মালায়লাম পেপার। তাই মণিপুরে না থাকলেও আমি প্রতিদিন ইম্ফল ফ্রি প্রেস পড়ি। প্রতিদিন কত লোক এই তথাকথিত এনকাউন্টার কিলিং-এ প্রাণ হারাচ্ছে, আমি জানি। ব্যপারটা এই রকম, কাউকে গুলি করে মারা হল, আর তার লাশের পাশে আপনি একটা ৯মিমি পিস্তল পেলেন, এই এক গল্প আজকে কত বছর ধরে চলছে। এই তথাকথিত উগ্রবাদীরা যেন ৯মিমি পিস্তল নিয়ে প্রতিদিন মিলিটারির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। সুতরাং বীরচক্র পুরস্কার দেওয়া উচিৎ এই কানুনটাকে, সেই সব লোককে নয় যারা একগাদা উন্নত বন্দুক, মেশিন গান, একে ৪৭, ৫৬ নিয়ে শক্তিমান ট্রাকে এসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আপনি রাষ্ট্রক্ষমতাবলে গুলি ও হত্যা করতে পারেন। আর আপনার মতে রাষ্ট্রবিরোধীরা শুধু ৯মিমি পিস্তল নিয়ে আসছে আর গুলি খাচ্ছে। তাই পবনের ছবি যে বছর সর্বোচ্চ পুরস্কার পেল, সে বছরই কেরালা থেকে একজন সেনাবাহিনীর অফিসার, যিনি অসম রাইফেল্‌স-এ যোগ দিয়েছিলেন আর তার এনকাউন্টার কিলিং-এর লক্ষ্য পুরণ করতে সমর্থ হয়েছিলেন, তাকে সর্বোচ্চ বীরচক্র পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। আর মণিপুর থেকেই সবচেয়ে বেশী সংখ্যক পুরস্কার দেওয়া হয়। তাই আমার বক্তব্য, ভারতের রাষ্ট্রপতি সেই চলচ্চিত্রকারকে দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কারে পুরস্কৃত করছেন যিনি এই এতসব রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, আইনসঙ্গত অত্যাচার এবং রাষ্ট্রবিরোধীদের হত্যা, এগুলোকে তুলে ধরেছেন আবার সেই একই রাষ্ট্রপতি যে হত্যা করেছে তাকেও পুরস্কৃত করছেন। আর এর মধ্যে আসল মণিপুরিরা আটকা পড়ে আছে। আমি মণিপুর নিয়ে বলছি কেননা আমি মণিপুরের ব্যপার জানি, আমার কাছে, মণিপুরের অবস্থা রূপকার্থে সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতের অবস্থাকে চিহ্নিত করে। তাই অ্যাফস্পা তথ্যচিত্র পুরস্কার পায়, কিন্তু অ্যাফস্পা রদ হয় না, অ্যাফস্পা চলতে থাকে। ছবিটা এখন নানা প্রদর্শনীতে দেখানো হয়। তাই আসলে যা সেন্সরিং হয়েছে সেটা নয়, এই ছবিটাকে যা স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, আপনি ছবিটা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন আর যা দেখাচ্ছে সব দেখতে পারেন, আর এখন তো নন্দনেরও ছবিটা দেখাতে আপত্তি থাকা উচিত নয় যেহেতু এখন সেন্সর সার্টিফিকেট আছে। নন্দন চত্বরে, সিরিফোর্টে, সবজায়গায় আপনি অ্যাফস্পা ছবিটা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, যতক্ষণ না আপনি বুঝবেন আসলে অ্যাফস্পা ওখানে বসবাসকারী মণিপুরিদের কাছে প্রতিদিন কী উদ্ভট অযৌক্তিকতা বয়ে আনে। যেমন ধরুন, মনোরমাকে বলাৎকার করা হয় এবং হত্যা করা হয়, আমি এখানে চেনা লোকের কথা বলছি, যেহেতু এই অত্যন্ত বিতর্কিত ঘটনাটা ভারতের বাকি অংশে জ্ঞাত। প্রথমে সামরিক বাহিনী অস্বীকার করল, বলল না, না, কোনো বলাৎকার হয় নি, এটা এনকাউন্টার কিলিং, পরে কলকাতার ফর্নেসিক রিপোর্ট প্রমাণ করল যে তাকে বলাৎকার করা হয়েছে আর খুন করা হয়েছে। এখন উর্দিপরা এই লোকটা যে মনোরমাকে রেপ করেছে, সে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইনের বলে শাস্তি থেকে অব্যাহত। এই জওয়ানের শরীরটা, এই বলাৎকারীর শরীরটা নিয়ে কিছু যায় আসে না, যেন এই কাজটা কেউ শারীরিক ভাবে করেনি, শুধু উর্দি করেছে। বলাৎকার একটা নাগরিক অপরাধ। অ্যাফস্পার কথা ছেড়ে দিন, যদি ঘটে,যে কোনো জায়গায় ঘটলে, আমরা জানি এর ভুক্তভোগীকে কি রকম ভাবে সামাজিক সমস্যা, নানা নিষেধাজ্ঞা এবং মানসিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয়। এখন এখানে এরকম একটা নাগরিক অপরাধ সত্বেও, আপনি নাগরিক আদালতে যেতে পারবেন না, আপনাকে যেতে হবে সামরিক আদালতে। তাই আমি আগে যা বলেছি, আপনি অ্যাফস্পার সন্ত্রাসকে মান্যতা দিচ্ছেন, আপনি সামরিক ব্যক্তিকে শাস্তি থেকে অব্যহতি দিয়ে তার কৃত অন্যের শরীরের ওপর অত্যাচারকে মান্যতা দিচ্ছেন, আপনি বলাৎকার ও হত্যায় দোষী সব্যাস্ত হলেও আপনার নাগরিক আদালতে বিচার হবে না, এটাই আমার কাছে অ্যাফস্পার সবচেয়ে বেশী উজ্জ্বল অবাস্তবতা। বলাৎকারের মতো একটা নাগরিক অপরাধের জন্য, যে ব্যক্তি এই অপরাধ ঘটিয়েছে, তাকে নাগরিক আদালতে বিচার করা যাবে না। আপনি গোড়ায় আদালতকেই হঠিয়ে দিচ্ছেন, আপনি সন্দেহের বশে গুলি চালিয়ে হত্যা করতে পারেন, শুধু অবিশ্বাসের বশে। এই কিছুদিন আগে আমাকে একজন আর্মি মেজর একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। যেখানে সে তার অনেক সহকর্মী উত্তরপূর্বে নিহত হয়েছে, সামরিক বাহিনীতে তার ব্যক্তিগত বন্ধুদের প্রাণহানি হবার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আবেগে, অ্যাফস্পাকে ন্যায্যতা দিচ্ছিলেন কারণ অ্যাফস্পার মতো কিছু না থাকলে, আপনি কিছুতেই গুপ্তযোদ্ধাদের মোকাবিলা করতে পারবেন না, কিন্তু তার চিঠির বক্তব্য লেখার মধ্যে তিনি লিখলেন যে সব নাগরিকই অপরাধী। তখন আমি তার উত্তরে চিঠি লিখলাম যে আমি একজন সাধারণ নাগরিক, তো যে মুহুর্তে আপনি বলছেন যে সব নাগরিকই অপরাধী, আপনি আমাকে পুরো সামরিক বহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন, সব আইনরক্ষকদের বিরুদ্ধে, তারপর আমি আরও কিছু প্রশ্ন জিগ্যেস করেছিলাম আর পরে সংশোধন করে তিনি বল্লেন যে তিনি দু:খিত। তিনি সব নাগরিকদের কথা বলেন নি, শুধু সরকারী চাকরিতে যে সব নাগরিকরা আছেন, সরকারে আছেন, তাদের কথা বলতে চেয়েছেন। এখন আমার কাছে এই মেজর, তার থেকে এটা একটা ফ্রয়েডিয় স্খলন,যখন আপনি বলেন যে সব নাগরিকই অপরাধী, আপনি যদি ঈশ্বরবিশ্বাসী, সদ্ভাবনাযুক্ত সামরিক আফিসারও হন, যখন আপনাকে উত্তরপূর্বে মোতায়েন করা হবে, সেখানকার লোকেদের চেহারা দেখেই আপনার মনে হবে, আপনার সংস্কার আপনাকে ভাবাবে, যে এই সব লোকজন আসলে গুপ্তযোদ্ধা, এই সব লোকজন আসলে ভারতবিরোধী, এই সব লোকজন দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করতে উদ্যত। তাই যখনি মণিপুরে আপনি তাদের মুখের দিকে তাকাচ্ছেন, আপনি তাদের শত্রু হিসাবে দেখছেন, যাদের সামান্যতম প্ররোচনায় গুলি করে হত্যা করা যায়। তাই একজন শিল্পী হিসাবে, যাকে উত্তরপূর্বে যেতে হয়, আমাকে এই জিনিসটাই আসলে পীড়া দিচ্ছে। সরকারী আমলার পরিচয় নিয়ে, আমার পরিচয়পত্র আমাকে এমন অনেক জায়গায় যাওয়ার অনুমতি দেয়, যেখানে সহজে যাওয়া যায় না, আমি ঘুরে বেড়াই, আর এতবছর ধরে থাকার ফলে আমি এই নির্মম আইনটার ব্যপারে নিশ্চিত, এটা আর শুধু আইন নেই, এটা সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি অ্যাফস্পা যদি রদও করেন, অ্যাফস্পা যা সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে, উদাহরণস্বরূপ, শুধু আধাসামরিকবাহিনী অ্যাফস্পার আওতায় আসে, কিন্তু ২ বছর আগে যখন সেই ছেলেটি যাকে মণিপুরি কমান্ডোরা টেনে হিঁচড়ে একটা ওষুধের দোকানে ঢুকিয়ে গুলি করে মারে, তারা কিন্তু অ্যাফস্পার রক্ষাকবচের নীচে ছিল না। মানে অ্যাফস্পা আইনের আওতায় মণিপুরি কমান্ডোরা আসে না, কিন্তু অ্যাফস্পা এখন সংস্কৃতি। তারা ওষুধের দোকানের ভিতর তাকে গুলি করল, যেটা একজন মণিপুরি ফোটোগ্রাফার, যে সেই সময় ওখানে ছিল, রেকর্ডিং করেছিল। ছেলেটির কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই তাকে টেনেহিঁচড়ে ওষুধের দোকানে ঢোকানো হচ্ছে, কিছু পরে তারা ছেলেটির লাশ বাইরে নিয়ে আসছে, তারা তার লাশের পাশে ৯মিমি পিস্তলের মত কিছু পুঁতছে, এনকাউন্টার হত্যার সেই এক পুরোনো গল্প, যা ঠিক পরদিন সব কাগজে প্রকাশিত হল। কিন্তু এই মণিপুরি চিত্রগ্রাহক, যে গোপনে সব ছবিগুলো দিল্লিতে এনে তাহেলকায় দেখাল, তাহেলকা পত্রিকা ছবিগুলো প্রকাশ করে চমকে দিল, সবকটা ছবি যেমন ঘটনা ঘটেছে সেই অনুসারে। ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কমান্ডো পরিবেষ্টিত হয়ে, ওষুধের দোকানের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ছেলেটির থেকে কোনো প্রতিরোধ নেই, তার নাম সঞ্জীব, লাশটা বাইরে আনা হচ্ছে, কমান্ডোরাও উপভোগ করছে আইনত সুরক্ষা নয়, এই সাংস্কৃতিক সুরক্ষা, যা সেই সময়ে সব উর্দিপরিহিত মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে গেছে, তা সে পুলিশ হোক, অথবা কমান্ডো। আমার মতে আর্মি অত্যাচারের একটা বেঞ্চমার্ক মণিপুরে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, আর সব পুলিশ, কমান্ডো সেই অনুযায়ী কাজ করছে। এটা আইনের বলে সুরক্ষিত নয়। এটা সুরক্ষিত সেই ছড়িয়ে যাওয়া অ্যাফস্পা সংস্কৃতির দ্বারা। তাই আপনি অ্যাফস্পা রদ করলেও এই অত্যাচারের চক্র এত সহজে শেষ হবার নয়। কারণ এটা মণিপুরের সমস্ত পুলিশের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে। তাই দুটো কমিটির অ্যাফস্পা রদ করার প্রস্তাব দেবার পরেও, জীবন রেড্ডি কমিটি রিপোর্ট, বীরাপ্পা মৈলি কমিটি রিপোর্ট, ভারত সরকার অ্যাফস্পা রদ করে নি। সেই রিপোর্ট সরকারের দপ্তরের ধুলো খাচ্ছে। মাঝে হাওয়ায় একটা কথা ভাসছিলো যে অ্যাফস্পা যদি রদ নাও হয়, সরকার কিছু নতুন আইন প্রণয়ন করবেন যার একটা মানবিক মুখ আছে। কিন্তু মনমোহন সিংহ যিনি মনোরমা কাণ্ডের পরে নিজে মণিপুরে গিয়েছিলেন, ঘোষণা করেছিলেন যে নতুন আইন হবে যার মানবিক মুখ আছে, ইত্যাদি, কিন্তু কোনো আইন হয় নি, কোনো রদ হয় নি, কোনো সংশোধন হয় নি, কিস্যু হয় নি, অ্যাফস্পা যেমন ছিল তেমন আছে। জীবন রেড্ডি কমিটি রিপোর্ট, বীরাপ্পা মৈলি কমিটি রিপোর্ট,সরকারের কাছে স্পষ্টভাবে লিখেছিল যে এটাকে রদ করা হোক। সরকার সে নিয়ে কিছু করেনি, আবার একই সঙ্গে তারা মণিপুর নিয়ে সবচেয়ে তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক তথ্যচিত্রকে পুরস্কৃত করছে। অ্যাফস্পা ১৯৫৮ পুরস্কার পেল, যা আমরা আলোচনা করছিলাম,তাই এটা আমাকে পীড়া দিচ্ছে। আমি জানি আমি যে সব সংস্থার জন্য কাজ করি সেখানে আমি এই সব জিনিস একজন আধিকারিক হিসাবে দেখাতে পারব না, কিন্তু একজন শিল্পী, একজন নাগরিক, একজন ভারতীয় হিসাবে আমি বাঁচতে পারব না যতক্ষণ আমি এই সত্যটাকে কোথাও, কোনো আকারে লিপিবদ্ধ করছি। তাই আমি নিজেই একজন দ্বৈত সত্ত্বায় পরিণত হচ্ছি, একজন আধিকারিক সত্ত্বা, যে তার পরিচয় বহন করে, চেষ্টা করে এমন কিছু করার যা খুব অবাস্তব নয়, একদম ডাহা মিথ্যে কথা নয়। আমার কর্মরত সংস্থার জন্য মণিপুরের ওপর একটা ছবি করার সময় কোনোভাবে মণিপুরের সত্যটাকে প্রকাশ করতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার ভেতরকার যন্ত্রণাদীর্ণ সত্ত্বা ভালোভাবে ঘুমোতে পারে না, আমি যে সব নিজের চোখে ঘটতে দেখেছি। আমি সবার সঙ্গে মদ্যপান করি, যেহেতু মণিপুরে মদ নিষিদ্ধ তাই আপনি খোলাবাজারে মদ পাবেন না, তাই আমাদের মদ্যপান করতে আর্মি পিআরওর কাছে, অসম রাইফেলস পিআরওর কাছে যেতে হয়, সব মিডিয়ার লোকজনেরও আর্মি পিআরওর কাছে কোটা বাঁধা আছে। সেখানে অনেক মালায়ালি অফিসার আছেন, উকিল অফিসার আছেন, তো আপনি তাদের সঙ্গে বসে মদ খান, আর ৪-৫ পেগের পরে, একটা অন্য মণিপুর, যেখানে হিন্দি গান মানা, হিন্দি গান গাওয়া হয় না, আর রাতে মনিপুরিদের কাছ থেকে সবচেয়ে ভালো জিনিস যা পাওয়া যায় তা হল হিন্দি গান। তাই রাতের একটা মনিপুর আছে, রাত ৯টা ১০টার পর, মণিপুর যা অ্যাফস্পাতাড়িত নয়।

    আর একটা ঘটনা হলো, যখন এই মেলম কান্ড ঘটল, মেলম -যেটা বাজারের কাছে, ইম্ফল থেকে বেশী দুরে নয়,তখন ১৯৯৯র নভেম্বর, আমি সে সময় মণিপুরে ছিলাম ফিল্ম ডিভিশনের জন্য একটা ছবি শুট করছিলাম, রিক্সাওয়ালাদের ওপর, যারা নিজেদের মুখ কাপড়ে, গ্লাভস দিয়ে ঢেকে রাখে, তারা অন্য লোককে তাদের মুখ দেখতে দেয় না, তারা চায় না কেউ তাদের চিনুক। সমাজ এই রিক্সা টানার কাজটা নিচুনজরে দেখে। তারা নিজেরাই এটা মেনে নিয়েছে, তাই তারা নিজেদের মাথা লুকিয়ে রাখে। তো আমি এদের ওপর একটা ছবি করছিলাম। ঠিক সেই সময় এই মেলম কান্ড ঘটেছিল, যেখানে একটা মিলিটারি ট্রাক যখন যচ্ছিল তখন গুপ্তবাহিনীর পোঁতা কিছু বোমা বিস্ফোরণ হয়। ট্রাকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর কিছু লোকের আঘাত লাগে। এখন পুরো মিলিটারি ফৌজ গুলিবৃষ্টি করতে শুরু করে, সে সব লোকের ওপর, যারা বাসের জন্য অপেক্ষা করছে, যারা বাজারে রয়েছে, প্রায় ১৯ জন, হ্যঁ¡ ১৯ জন লোক মারা গেছিল, মায়ের পেটের ভাইরা মারা গেছিল। আপনাদের শর্মিলা সেদিন থেকে এখানে অনশন শুরু করেন। কেননা এই দেশে আপনার বেঁচে থাকার অধিকার নেই, তখন বাঁচার কোনো মানেই নেই। আপনার বাঁচার অধিকার নেই, যে কোনো সময় কোনো সামরিক ব্যক্তি আপনাকে সন্দেহের বশে অথবা প্রতিঘাতের বশে গুলি করে মারতে পারে, আর তারপর কোনো কেস নেওয়া হয় না। উনি অনশন শুরু করলেন, যা এখন ১১তম বছরে পা দিয়েছে। আমি যখন মণিপুরে ছিলাম, এবং আমার ৩৫ মিমি ক্যামেরাটা নিয়ে ফিল্ম ডিভিশনের জন্য একটা ছবি শুট করছিলাম, একই সময় আমি জানতাম আমি এসব জিনিস প্রত্যক্ষভাবে সামনে আনতে পারব না। তো আমি আমার এই যন্ত্রনা থেকে, যার কথা বলছিলাম, আমি এই মণিপুরি রিক্সায়ালাদের নিয়ে, যারা নিজেদের মাথা লুকিয়ে রিক্সা চালাচ্ছে তাদের নিয়ে, একদম ঘটনাবিহীন ছবি করতে পারতাম না। তো আমি আমার ইউনিটের লোকেদের কলকাতা থেকে কিছু বাজি আনতে বললাম। আমি আগে ওখানে গেলাম, তারপর ওরা ৪-৫ টা আতসবাজি বোম নিয়ে এলো। আমার আইডিয়া ছিল যে এই বোমগুলো আমি পুঁতে রাখব, আর মাদের আর বাচ্চাদের একটা ফোটোশুটের মত ভঙ্গিতে দাঁড়াতে বলব। ওদের মুভিক্যামেরা আর স্টীলক্যামেরার পার্থক্য জানা নেই। আর ঠিক সেটাই আমরা করলাম। এখন আমার ইউনিটের লোকেরা যারা ঐ বাজিবোমগুলোকে কলকাতা থেকে ইম্ফলে নিয়ে আসতে পারত, তারা নিরাপদে পৌঁছল, যেহেতু তাদের কাছে ভারত সরকারের পরিচয়পত্র ছিল। তারা সড়কপথে আসা সত্ত্বেও কোনে কোনে মিলিটারির দ্বারা শারীরিক পরীক্ষার হাত থেকে বেঁচে গেছিল। তারা সত্যিসত্যি ঐ বাজিবোমগুলো ইম্ফলে নিয়ে আসতে পেরেছিল। তো আমি যেমন পরিকল্পনা করেছিলাম, আমার পরিকল্পনা ছিল যে আমরা ওদের ফটো তোলার জন্য পোজ নিতে বলব, আমারা বোম, এই আতস বাজির বোমগুলো পুঁতে রাখব, এটা বিস্ফোরণ হবে, যে মুহূর্তে বিস্ফোরণ হবে, ওরা প্রাণ বাঁচাতে ছুটবে, আর আমি একটা শট পাব যে কিভাবে হিংসা ঘটে, কিভাবে ওরা হিংসার ঘটনায় রিঅ্যাক্ট করে। আমার প্রাথমিক আইডিয়া ছিল এটা। আমরা বোমগুলো, বাজি বোমগুলো পুঁতলাম, আমি ক্যামেরা চালু করলাম, ওটা বিস্ফোরণ হল, এক মুহূর্তের জন্য সব বিভ্রান্ত।

    (চলবে)


    শ্রুতিলিখন: শুভজিৎ চক্রবর্তী
    সহায়তা: সুমেরু মুখোপাধ্যায়

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৩ আগস্ট ২০১১ | ৬২৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন