এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • জাপানের পরমাণু বিপর্যয়ের কারণ ও ফলাফল

    তমাল ভৌমিক লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৬ জুন ২০১১ | ৫৪০ বার পঠিত
  • ৩ এপ্রিল বিকেলবেলা যাদবপুর চিত্তরঞ্জন কলোনিতে 'শামিল ছোটোদের পাঠশালা'য় মন্থন পত্রিকার পক্ষ থেকে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। এই সভায় জাপানের পরমাণু বিপর্যয় নিয়ে প্রাথমিকভাবে একটা ধারণা দেওয়ার জন্য সুজয় বসুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল এবং অনেকদিন থেকে আগ্রহী আরও বেশ কয়েকজন এই সভায় অংশ নিয়েছিলেন।

    সুজয় বসু বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান একেবারে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। হিরোশিমা-নাগাসাকির স্মৃতি এখনও মুছে যায়নি। জাপানিদের মধ্যে পরমাণু বিরোধী যে সংগঠন আছে তা বেশ জোরালো। পঞ্চাশের দশকের শুরু থেকে তারা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছিল। জাপানের শক্তি সরবরাহ ব্যবস্থা দীর্ঘকাল ধরে একটা সমস্যার মধ্যে থেকে যাবে দেখে তারা শক্তি সমস্যা সমাধানের একটা চেষ্টা করে। কারণ পুনর্গঠনের কাজের জন্য, সব কিছু সারানোর জন্য শক্তি বা এনার্জি দরকার। জাপানের নিজস্ব কোনো খনিজ সম্পদ না থাকায় পরমাণু শক্তির ওপর তাদের একটা আকর্ষণ ছিল।

    মিৎসুবিশি ছিল তখন জাপানের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ কোম্পানি। তারা বড়ো বড়ো জাহাজ তৈরি করত। জাপান সরকার মিৎসুবিশি কোম্পানির প্রধান একজনকে ভার দেয় একটা কমিটি তৈরি করে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করা যায় কিনা দেখতে। তখনও দুনিয়া জুড়ে পরমাণু শক্তির তেমন উন্নতি হয়নি। প্রথমে তারা ইংল্যান্ডের সাহায্‌যে একটা 'গ্যাস কুল্‌?ড' বা গ্যাস দিয়ে ঠাণ্ডা করার পরমাণু চুল্লি বানায়। এখনও ওদের ওখানে এরকম চুল্লি দেখা যায়। যাই হোক, সেই পরমাণু চুল্লি দেখা গেল খুব একটা সুবিধের নয়। মানে ওটার কারিগরি খুব একটা কাজের কিছু ছিল না।

    প'¡শের দশকে পুনর্গঠনের সময় থেকে জাপান কিন্তু ভীষণ দ্‌রুত এগোতে থাকে। উন্নত কারিগরি ইত্যাদির জোরে ষাটের দশকে এসে তাদের জাতীয় অর্থনীতি ইউরোপের বেশ কিছু দেশের সমান শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং সত্তরের দশকে জাপানের জিডিপি (মোট জাতীয় উৎপাদন) ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে টপকে যায়। বর্তমানে জাপান, আমেরিকার পরেই দ্বিতীয় ধনী দেশ। যদিও প্রথম ও দ্বিতীয়ের মধ্যে ফারাক অনেকটাই --- আমেরিকার জিডিপি প্রায় ১৩ ট্রিলিয়ন ডলার এবং জাপানের জিডিপি ৪.৫ বিলিয়ন ডলার। খুব সম্প্রতি অবশ্য চীন জাপানকে টপকিয়ে গেছে।

    আগে জাপানে ছোটো ছোটো ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি ছিল। পরে ছোটো ছোটো কোম্পানিগুলো জুড়ে টেপকো-র মতো (যার আগে নাম ছিল টোকিও পাওয়ার কোম্পানি) বিরাট বড়ো কোম্পানি তৈরি হয়েছে। এটা একটা প্রাইভেট কোম্পানি। এদের প্রধান প্রতিযোগী 'থামসাই'। টেপকো খুব শক্তিশালী কোম্পানি। এই কোম্পানির প্রধানকে 'এম্পারার' বলে ডাকা হত। এরাই আমেরিকার জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে 'বয়েলিং ওয়াটার রিঅ্যাক্টর' বসায়। ফুকুশিমা দাই-ইচিতে ওইরকম পরমাণু চুল্লি বসানো ছিল।

    এই ধরনের রিঅ্যাক্টরে চুল্লির ভিতরেই 'নিউক্লিয়ার ফিশন'-এ উৎপন্ন তাপে জলকে বাষ্প করে তা দিয়ে টারবাইন চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। আরেক রকম চুল্লি বানায় 'ওয়েস্টিংহাউজ কোম্পানি', সেগুলোকে বলে 'প্রেশারাইজড ওয়াটার রিঅ্যাক্টর'। এই ধরনের চুল্লিতে চাপের সাহায্‌যে জলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়িয়ে ১০০ থেকে ২৫০-৩০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে তোলা হয়। কিন্তু জলটাকে ফুটতে দেওয়া হয় না; এখানে চুল্লির ভিতর জলকে চাপে রেখে সেটা দিয়ে বাইরের জল বাষ্প করে টারবাইন চালানো হয়। যে কোনো টারবাইনের সাহায্‌যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করাটা তখনই বেশি রূপান্তর-দক্ষ হয়, যদি তাপমাত্রা বেশি হয়। এই রূপান্তরের সময় বহু তাপ নষ্ট হয়। বাষ্পকে জলে পরিণত করে আবার বাষ্প করতে হলে অনেক ঠাণ্ডা জল লাগে বাষ্পের তাপমাত্রা কমাতে। পরমাণু চুল্লিতে তাপ কমাতে প্রচুর ঠাণ্ডা জল লাগে। হিসেব করলে দেখা যায়, কয়লা চালিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে পরমাণু চুল্লির রূপান্তর-দক্ষতা কম।

    পরমাণু চুল্লির ভিতরে ফিশনের জন্য ইউরেনিয়াম জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। ইউরেনিয়ামের গুঁড়ো দিয়ে প্রায় আধ ইÏ' ব্যাসের ছোটো ছোটো পেলেট বানিয়ে সেগুলোকে লম্বা সরু জিরকোনিয়াম অ্যালয় বা জিরক্যালয় নামক মিশ্র ধাতুর টিউবের মধ্যে ঠেসে আটকে দেওয়া হয়। জিরক্যালয় টিউবগুলোর ব্যাস প্রায় আধ ইÏ' আর লম্বায় ১০/১২ ফুট। ফিউশনের ফলে তাপ তৈরি হয় পেলেটে, পেলেটগুলো জিরক্যালয় টিউবের গায়ে সেঁটে থাকে। একরকম শ'দেড়েক টিউবের একটা গুচ্ছের দুই দিকের মাথা দুটো প্লেটের মধ্যে লাগানো থাকে। জল ওই টিউব বা দণ্ডগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় তাপ গ্রহণ করে। 'প্রেশারাইজড রিঅ্যাক্টর' হলে এই জল বাইরের জলকে তাপ দিয়ে বাষ্পে পরিণত করে ফিরে আসে।

    পরমাণু চুল্লিতে জলের দুটো ভূমিকা আছে। প্রথমত, জল 'মডারেটর' বা মন্থরকের কাজ করে, অর্থাৎ ফিশন বিক্রিয়ায় তাপ কমিয়ে তার বিক্রিয়াকে মন্থর করে। আর দ্বিতীয়ত, জল তাপ সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে। যে জল তাপ বহন করে নিয়ে যায়, তার সঙ্গে ইউরেনিয়ামের সরাসরি যোগাযোগ হয় না। কারণ, আগেই বলেছি, ওই ইউরেনিয়াম থাকে জিরক্যালয় দণ্ডের ভিতরে। তবে জিরক্যালয় কিন্তু ফিশনে উৎপন্ন নিউট্রন ঠেকাতে পারে না। জিরকানিয়াম ভেদ করে কিছু নিউট্রন জলের মধ্যে আসে এবং সেই জলে অল্পমাত্রার তেজস্ক্রিয়তা থাকে, অতএব এই বেরিয়ে আসা জলকে সংরক্ষণও করতে হয়। সবচেয়ে মুশকিল হল, পরমাণু চুল্লিতে তাপ উৎপন্ন হতেই থাকে, তা থামানো যায় না। ওই তাপ আয়ত্ত্বে রাখার জন্য বোরন ইত্যাদির সাহায্‌যে নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। জ্বালানি দণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে বোরন দণ্ডও লাগানো থাকে চুল্লির ভিতরে। বোরন নিউট্রন শুষে নেয় বলে বোরন দণ্ড নিয়ন্ত্রক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ল্বালানি দণ্ডের ওপর বোরন দণ্ড এমনভাবে বসানো থাকে, যাতে বোরন দণ্ড নামিয়ে দিলে বিক্রিয়া কমে যায় আর বোরন দণ্ড ওপরে তুলে নিলে বিক্রিয়া বেড়ে যায়।

    পরমাণু চুল্লিতে এত প্রচুর তাপ তৈরি হওয়ার মূল কারণ ফিশন বিক্রিয়া। ফিশন বিক্রিয়ায় একটা নিউট্রন একটা ইউরেনিয়াম পরমাণুকে আঘাত করলে শুধু প্রচুর পরিমাণ শক্তি তৈরি হয় না, তার সঙ্গে আরও দু-তিনটে নিউট্রন তৈরি হয়। এগুলো আবার বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে আরও শক্তি এবং আরও কয়েক জোড়া নিউট্রন তৈরি করে এবং এইভাবে শৃঙ্খল বিক্রিয়া চলতে থাকে। এই শৃঙ্খল বিক্রিয়া যখন অনিয়ন্ত্রিত ভাবে চলে তখন তৈরি হয় পরমাণু বোমা। আর এই শৃঙ্খল বিক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় পরমাণু চুল্লিতে। এর থেকে সহজেই বোঝা যায় যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাদির কোনোরকম ব্যর্থতাই একটা পরমাণু চুল্লিকে একটা ভয়ানক পরমাণু বিস্ফোরকে পরিণত করতে পারে।

    পরমাণু চুল্লিতে তৈরি তাপ একবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে, বেশি তাপে জলের সঙ্গে জিরক্যালয়ের বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন তৈরি হয়। তাছাড়া, পরমাণু চুল্লি জল-নিরুদ্ধ বা 'ওয়াটার প্‌রুফ' করা গেলেও বাতাস-নিরুদ্ধ করা কঠিন, আর বাতাসে হাইড্রোজেন থাকেই। সকলেই জানে হাইড্রোজেন দাহ্য। অতএব, হাইড্রোজেন এবং তাপ এই দুইয়ের যোগফলে বিস্ফোরণ ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। ফুকুশিমা দাই-ইচিতে প্রধানত এই কারণেই চুল্লি বিস্ফোরিত হয়। রাশিয়ার চের্নোবিলে এই ঘটনাই ঘটেছিল। সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে, পরমাণু চুল্লির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে আরও দুএকটা কথা জানানো দরকার।

    একটা ১০০০ মেগাওয়াটের পরমাণু চুল্লি বানালে তার ১০০ মেগাওয়াটই লেগে যায় চুল্লিটিকে চালু রাখার জন্য। অর্থাৎ প্রতিটি পরমাণু শক্তিকেন্দ্র চালানোর জন্য সেখানে উৎপাদিত বিদ্যুতের দশ শতাংশ খরচ হয় পরমাণু চুল্লি চালানো ও তার নিয়ন্ত্রক ইত্যাদি ব্যবস্থার পিছনে। কোনো কারণে পাওয়ার স্টেশন ফেল করলে ব্যাকআপ জেনারেটর লাগে ওটা চালু করার জন্য। চুল্লি ঠাণ্ডা রাখার জন্য কুলিং পাম্প ইত্যাদি সবই বিদ্যুতের সাহায্‌যে চালাতে হয়। তাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটা এমনই গুরুতর যে ডিজেল চালিত ব্যাকআপ জেনারেটর ফেল করলে বা ডিজেল জেনারেটর চালু করতে দেরি হলে তখনই ব্যাটারি চালিত জেনারেটরের সাহায্‌যে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হয়।

    চের্নোবিলে কী হয়েছিল? চের্নোবিলে ওরা দেখেছিল যে চুল্লি বন্ধ করে দিলেও ওখানে প্রচুর পরিমাণে তাপ থাকে এবং বাষ্পও থাকে। তাহলে চুল্লি বন্ধ করার পরেও টারবাইন চালু থাকে। এখন যদি পাঁচ মিনিটও চুল্লি বন্ধ রাখার পর জমে থাকা বাষ্পে (ট্র্যাপ্‌?ড স্টিমে) টারবাইন চালু থাকে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন চলতে থাকে, তাহলে ওই অবসরে ব্যাকআপ জেনারেটর চালু করা যায় এবং ওই সময়ের ফাঁকে অন্যান্য কাজও সেরে নেওয়া যায়। চের্নোবিলে এটা ওরা পরীক্ষা করে দেখছিল। আগের বছরও ওরা ওই চুল্লি বন্ধ করে টারবাইন চালু রাখার পরীক্ষাটা করেছিল। ব্যাপারটা হচ্ছে ভোল্টেজ ক®¾ট্রাল করা এবং সেটা করতে গেলে ম্যাগনেটিক ফিল্ড ক®¾ট্রাল করতে হয়, অর্থাৎ একসাইটেশন কারেন্টকে ক®¾ট্রাল করে ম্যাগনেটিক ফিল্ড ক®¾ট্রাল করতে হয়। ওরা দেখে, ট্রাডিশনাল যে একসাইটেশন সিস্টেম অর্থাৎ যেটা চালু ছিল সেটা ওই কাজের পক্ষে যথেষ্ট নয়। তখন ওরা ওটা রিমডেলিং করার কথা ভাবে --- এটা নতুন পরীক্ষা।

    সে সময়টা ছিল মে দিবস। কয়েকদিন আগে থেকেই সব কাজ বন্ধ। ওদের দুর্গাপূজা আর কি! ২৬ এপ্রিল সকালে ওরা শাটডাউন নিয়েছে। ওখান থেকে ১০০ কিমি দূরে কিয়েভে ওদের রাজধানী, সেখানে উৎসব হবে। সেখানে বড়ো বড়ো লোকেরা আসবে। সেখান থেকে অনুরোধ করে পাঠিয়েছে যে খানিকক্ষণ বিদ্যুৎ চালু রাখতে। সেই খানিকক্ষণ চালু রাখা মানে সকাল থেকে বিকেল হয়ে গেছে। সিনিয়র ইঞ্জিনিয়াররা ডিউটি সেরে চলে গেছে তখন। নবীন ইঞ্জিনিয়াররা সবে এসেছে ডিউটিতে। তাদের অভি'তা কম। তারা শাট ডাউন অবস্থা থেকে বিদ্যুৎ চালু রাখার ব্যবস্থা নিতে গিয়ে নার্ভাস হয়ে পড়ে। তাড়াতাড়ি বোরন রড তুলে নেয় এবং প্রচণ্ড বিক্রিয়ায় একটা শক্তির বিস্ফোরণ ঘটে। ভয়ঙ্কর তাপে জিরকোনিয়াম ও জলের বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন তৈরি হয়, সেই হাইড্রোজেন আর ওই তাপ মিলে বিস্ফোরণে সমস্ত গুঁড়িয়ে দেয়। ওখানে মডারেটর ছিল গ্রাফাইট। সেই গ্রাফাইট ইউরেনিয়াম জ্বালানি সহ সব ভেঙেচুরে চারিদিকে ফেটে পড়ে। চুল্লির মাথায় একটা ২০০০ টন ওজনের ঢাকনা ছিল, সেটা বিস্ফোরণে উড়ে যায়।

    ফুকুশিমাতেও একইভাবে হাইড্রোজেন তৈরি হয়েছে এবং সেই হাইড্রোজেন চুল্লির তাপে জ্বলে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। বিবিসিতে ফুকুশিমা বিস্ফোরণের যে ছবি দেখিয়েছে, সে ভয়াবহ। ফুকুশিমাতে অবশ্য সুনামির জন্যই দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে ভূমিকম্প হলেও তাতে ওখানকার রিঅ্যাক্টর বা রিঅ্যাক্টর বিল্ডিংয়ের স্ট্রাকচারাল ড্যামেজ বা গঠনগত কোনো ক্ষতি তেমন হয়নি। কিন্তু সুনামিতে বিশাল ঢেউ ধেয়ে এসে ওখানকার ডিজেল জেনারেটর সহ ঠাণ্ডা করার সব যন্ত্রপাতি জলে ডুবিয়ে দিয়েছে। ফলে জেনারেটর পাম্প সব বন্ধ, জলে ডুবে থাকলে ওইসব বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্র চলবে না। ফলে তাপ নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যাকআপ সব ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই জল ও জিরকোনিয়ামের বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন জমে গিয়ে প্রচণ্ড তাপ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এমন বিস্ফোরণ যে তিন ফুট চওড়া কংক্রিট দিয়ে তৈরি চুল্লি-গৃহের দেওয়ালগুলো ভেঙে উড়িয়ে দিয়েছে। বয়েলিং ওয়াটার রিঅ্যাক্টর যেটা ওখানে আছে, খুবই আশ্চর্‌যের কথা যে সেটার বিল্ডিংয়ের ভিতরেই পোড়া জ্বালানিগুলো রাখা আছে, বিল্ডিংয়ের মাথায় জলের ট্যাঙ্কের ভিতরে। এটাকে বলা হয় সুইমিং পুল রিজার্ভার। কিন্তু ওই রিজার্ভার বা জলাধারের জল কোনো কারণে বেরিয়ে গেলে সর্বনাশ। কারণ ওই চুল্লিগুলো রাবণের চুল্লির মতো জ্বলতেই থাকে। এই পোড়া জ্বালানিগুলো শুধু তাপই নয়, তেজস্ক্রিয়তাও ছড়াতে থাকে।

    আমেরিকার ৯৫% পোড়া জ্বালানি এখনও জলের নিচে রাখা আছে। জাতীয় স্তরের এক পরীক্ষায় দেখা গেছে যে এরকম ক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২৮,০০০ জনের ক্যানসার, ৫.৮ বিলিয়ন ডলার সম্পত্তির ক্ষতি এবং ৫০০ বর্গকিমি জায়গা নষ্ট হবে অর্থাৎ কোনোদিন আর ব্যবহার করা যাবে না। আসলে যদি অমন দুর্ঘটনা হয়, তাহলে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ কতদূর ছড়াবে তার কোনো ঠিক নেই --- এই হিসেবটায় কমপক্ষে কতটা ক্ষতি হবে বলা হয়েছে। তেজস্ক্রিয় কণা বাতাসে ভেসে আরও অনেকদূর যে কোনো দিকেই যেতে পারে। এই যে ফুকুশিমায় যা ঘটেছে তাতে অন্তত ৫০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে কোনো জায়গায় কোনোদিন আর কোনোরকম প্রাণ বাঁচতে পারবে না। আর যেসব কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি, জলকামান ছোঁড়া ইত্যাদির মাধ্যমে আগুন নেভানো হচ্ছে --- সেটা হচ্ছে ৪নং চুল্লিতে। ৬টা চুল্লি আছে --- তার মধ্যে ৫ ও ৬নং বন্ধ ছিল। ৪নং চুল্লি রিচার্জ করা হচ্ছিল --- তার মানে জ্বালানি সব ফুরিয়ে যাওয়ায় আবার জ্বালানি ভরা হচ্ছিল --- এটা জাপানি পদ্ধতি। আমেরিকায় অন্য পদ্ধতি --- ওখানে তিন ভাগের এক ভাগ জ্বালানি বার করে নিয়ে সুইমিং পুল স্টোরেজের জলে সেগুলো ডুবিয়ে রাখা হয়। জাপানে সেই জ্বালানিগুলো সব বার করা হয়েছে এবং এখন ঠাণ্ডা করার জন্য জলের অভাব দেখা দেওয়ায় হেলিকপ্টারে করে জল ঢালা হচ্ছে। একটা হেলিকপ্টার কতটা জল নিয়ে ঢালতে পারে? প্রতিদিন ২০০ টন জল ঢালতে হচ্ছে, তবে যেটুকু জল ঢালছে সেটাও দাঁড়াচ্ছে না। কারণ স্টেনলেস স্টিলের যে ট্যাঙ্কে ওগুলো রাখা হয়েছিল, ভূমিকম্পে তার তলায় একটা ফাটল দেখা দিয়েছে।

    চের্নোবিলে সামরিক হেলিকপ্টার থেকে ৫০০০ টন বোরন, কাদা ও সীসা ইত্যাদি ফেলেছিল তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঠেকানোর জন্য। ওখানে সোভিয়েত ইউনিয়ন যে দ্‌রুততায় কাজ করেছিল তা অন্য দেশ পারত কিনা সন্দেহ। ওরা তিনদিনের মধ্যে এক লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে বিপজ্জনক এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক এক হিসেবে দেখা গেছে, চের্নোবিলের ঘটনায় আজ পর্যন্ত ন'লক্ষ পঁচাশি হাজার জন মারা গেছে। নিউ ইয়র্ক অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সের সহায়তায় বায়োসায়েন্টিস্টরা নানা জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই হিসেব দেখিয়েছে যে ওই ঘটনায় গত চব্বিশ বছরে ক্যানসার ইত্যাদি রোগে মোট মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দশ লক্ষ। ওরা রিসার্চ করে ওই হিসেব বার করেছে।

    ইতিমধ্যে ফুকুশিমার বিকিরণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য কৃত্রিম বৃষ্টি ও হাওয়ার মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ওগুলো করে খুব বেশি জায়গা বিপদমুক্ত রাখা যায় না। কারণ মানুষ এখনও অতখানি আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম নয়। ওদিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন যে ফুকুশিমার দুর্ঘটনা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বলা সম্ভব নয়। ওখানে ১, ২ ও ৩নং চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটে গেছে। বিস্ফোরণে উৎক্ষিপ্ত তেজস্ক্রিয় কণা বাতাসে অনেক উঁচুতে উঠে কোথায় কোথায় ছড়িয়ে যাবে তা বলা যায় না। এখন কী হবে? ফুকুশিমায় হয়তো চার-পাঁচ হাজার লোকের ক্ষতি হবে। ক্ষতিপূরণ কিছু দেওয়া হতে পারে, কিন্তু বাকি কত লোকের ক্ষতি হচ্ছে বা হবে তা বলা যায় না।

    সৌরীন ভট্টাচার্য : সুমন্ত ব্যানার্জির প্রস্তাব, আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে চুল্লি বন্ধ করার যে প্রস্তাবে সই সংগ্রহ করছি, সেই সইয়ের কাগজে 'অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাক্ট' বাতিল হোক, এই দাবি রাখা উচিত।

    সুজয় বসু : কোনো দরকার নেই। 'সমস্ত পরমাণু চুল্লি বন্ধ করা হোক' যথেষ্ট। জার্মানিতে এই ঘটনার পরে ৪৫০টি শহরে লক্ষাধিক লোক এই দাবিতে মিছিল করেছে। আমাদের দেশেও এমন আন্দোলন করা হবে না কেন?

    প্রশ্ন : ভারতে পরমাণু স্টোরেজ ট্যাঙ্ক কোথায়?

    সুজয় বসু : এ প্রশ্ন করা নিষেধ, জেল হবে, 'চরম গোপনীয়'।

    সৌরীন ভট্টাচার্য : যদি ভারতের সব পরমাণু কেন্দ্র বন্ধ করা হয়, তারপরও অনেকের অনেক প্রশ্ন আছে; যেমন, ১। নিউক্লিয়ার গবেষণা করব কিনা? রিঅ্যাক্টর ছাড়াও তা করা যায়। ২। যে অসুখের চিকিৎসার জন্য তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ লাগে তার কী হবে?

    লরেন্ট : ফ্রান্সে ৯-১১-এর পরে এরকম ভয় ছড়িয়েছিল। ... পরমাণু চুল্লি বন্ধ করে দিলেও যে বিপুল ব্যবহৃত জ্বালানির অবশেষ জমা হয়েছে তা নিষ্‌ক্রিয় করা কঠিন।

    সুজয় বসু : ব্রিটেনে ১৯৮০-র দশকে মার্গারেট থ্যাচারের আমলে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রাইভেটাইজেশন হয়। কিন্তু ৩০% বিক্রি হয়নি। ব্রিটেন ফরাসি 'আরেভা' কোম্পানিকে বিক্রি করেছে। ... জাপান তো ভূমিকম্প-প্রবণ অ'লেই আছে। জাপানিদের যে উন্নত প্রযুক্তি তাতেও তারা দুর্ঘটনা এড়াতে পারেনি। ফুকুশিমার পরমাণু চুল্লি বসেছে ১৯৭১-এ। তাদের ১০ বছরের এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছে। অথচ তারা সবটা ইন্সপেক্ট করতে পারেনি, ডিজেল জেনারেটরে ফাটল ধরেছিল, কুলিং সিস্টেমের আরও ২৩টা আইটেম তারা দেখতে পায়নি। কেন পায়নি? কোথায় বাধা তা স্পষ্ট নয়। সবাই জানে, সরকার এমন সব লোক দিয়ে এসব কমিটি তৈরি করে, যারা অনুমোদন দিয়েই দেয়। টেপকো-র নিজস্ব সিসমোলজিস্ট ওকামুরা গত বছর যথেষ্ট সতর্কতা নেওয়া হয়নি বলে একটি জার্নালে বিতর্ক তুলেছিলেন। তাঁর মতে, ৮৬৯ সালে ওখানে এক ভূমিকম্পে একটা দুর্গনগরী ধ্বংস হয়ে যায়। সেই কথা মাথায় রেখে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

    জাপানে সরকার থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ কোম্পানি, পরিবার সকলের 'সামুরাই' অর্থাৎ সামরিক ধরনের একটা সংস্কৃতি আছে। ওখানে পৃথিবীর ৩% মানুষ থাকে, তারা পৃথিবীর ৬% শক্তি ব্যবহার করে। শক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন অত বাড়িয়ে ফেলেছে বলেই ওরা পরমাণু শক্তির পথে গেছে।

    লরেন্ট : ফ্রান্সে বিদ্যুৎ ছাড়াও অন্য যা শক্তি লাগে, তার ১৫% নিউক্লিয়ার শক্তি থেকে আসে। পরমাণু বর্জ্যগুলো কীভাবে রাখা হবে, সেটাই সবচেয়ে বড়ো সমস্যা। মাটিতে পুঁতে রাখলে একশ বছর পরে হয়তো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এখন যদি পরমাণু চুল্লি চালিত প্ল্যান্ট সব বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে সেই সব প্রতিষ্ঠানে যুক্ত কর্মচারীরা কোথায় যাবে? দুটো প্ল্যান্ট চালু রাখতে হবে ডিকমিশনিংয়ের কাজ চালানোর জন্য।

    সুজয় বসু : সোভিয়েত রাশিয়ার সাইবেরিয়ায় ক্রিস্টিন নামক একটি জায়গায় পোড়া জ্বালানি জমিয়ে রাখা হত, সেখানে একটা বিস্ফোরণ হয়ে যাওয়ার পর রাশিয়া মানচিত্র থেকে ওই জায়গাটাকে বাদ দিয়ে দেয়। আমেরিকার ১০৪টি রিঅ্যাক্টরের জ্বালানি ডাম্প করার জন্য ২৭টা জায়গা বেছে নেয় --- কেউ সরকারকে রাখতে দেয়নি। নেভাদা খুব গরিব জায়গা, জুয়ার পয়সায় চলে, সেখানে দুজন সেনেটরকে পয়সা দিয়ে গ্রানাইটের এক পাহাড়ে টানেল খুঁড়েছে। এ পর্যন্ত ৯ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে এর জন্য। এ নিয়ে বিতর্ক হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে সেখানে জমা করার কথা ছিল, ক'বছর আগে ঠিক হয়েছে ২০১৭-তে হবে। ওবামা আসার পর ঘোষণা করেছেন, এ বাবদ কোনো অর্থ আর দেওয়া হবে না। নেভাদায় দুজন নতুন সেনেটর এসেছেন, তাঁরা মামলা করেছেন। ৪৯টা স্টেট মিলে ১টা স্টেটের ওপর জোর খাটাচ্ছে।

    তুষার চক্রবর্তী : আমেরিকা খুব গণতান্ত্রিক হলেও বি'¡নীরা সেখানে একেবারে কম বিবেকসম্পন্ন হয়। আমেরিকার পরিবেশ বি'¡নীরা এক সমীক্ষায় এতদিনে বলেছেন, নেভাদায় ভুল জায়গা বাছা হয়েছে। কারণ ওখানে মাটি 'অক্সিডাইজিং', তাই ইউরেনিয়াম থাকলে তা মাটির মধ্য দিয়ে জলে চলে যাবে, 'রিডিউসিং' হলে ওখানেই থাকত। ...

    বিশ্বায়িত বাজারে সব খোলামেলা মনে হলেও কিছু কিছু খবর আড়াল করে দেওয়া হয়। যেমন, জাপানে পঁচিশ হাজার মানুষ পরমাণু বিরোধী বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

    রাজীব দত্ত : আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের শক্তি কী হবে? পরমাণু শক্তির বিকল্প সৌরশক্তি হতেই পারে। এটা ভৌগোলিক কারণে আমাদের এখানে সম্ভব, কিন্তু স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় নয়।

    সুজয় বসু : স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় কিন্তু প্রচুর গাছ আছে এবং ৯৮% হাইড্রোলিক হতে পারে। অপচয় কম করাটা বড়ো প্রশ্ন। ...

    বিনীতা : কীভাবে আমরা অনেক মানুষের কাছে এই সমস্যা নিয়ে যাব?

    শেষের দিকে অগোছালোভাবে আরও কিছু কথা হয়। যেমন, পৃথিবীর ৪০০টা পরমাণু চুল্লির ১১% রয়েছে ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকায় এবং ৩% অতি ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকায়। সভার শেষে জাপানের ঘটনাবলীতে মৃত মানুষের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

    :মন্থন সাময়িকীতে পূর্বপ্রকাশিত:

    সংবাদ মন্থনে পূর্বপ্রকাশিত

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৬ জুন ২০১১ | ৫৪০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন