এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ঈদের আমি, আমার ঈদ

    ফারহা কাজী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০১ জুলাই ২০১৭ | ৩০৩৪ বার পঠিত
  • বাস থেকে নামলাম যখন বেলা তখন একটা, রাঢ় বাংলার ধু ধু রোদ। এই আষাঢ় মাসে বৃষ্টির দেখাই নেই। ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসছি আমি আর ভাই। এবারে ঈদ বেশ ভালো দিনে পড়েছে...শনি রবি ছুটির পরে সোমবার ঈদ। একটু ছুটি না থাকলে ভারী সমস্যা। ঈদ তো একদিনেই শেষ, কিন্তু ঐ ঈদের তৈয়ারী চলে একমাস ধরে। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ঈদের। 

    ছোটোবেলায় ঈদ নিয়ে আলাদা নস্টালজিয়া ছিলো... ঈদের কেনাকাটা, নতুন জামা, জুতো, বন্ধুদের সাথে হুল্লোর, সাজুগুজু সব মিলিয়ে ভারী জমজমাট ব্যাপার। এখন সেসব থেকে অনেকটা দূরে, বুকের ভিতর হা হা করা কৈশোর বেলা হারানোর শূন্যতা। আজ সব আছে কিন্তু কিছুই নেই। 

    ছোটোবেলায় ঈদের একটা জামার জন্য কতো হা পিত্যেশ করে বসে থাকতাম। কবে আব্বু টাকা পাবে , আমাদের জামা কিনে দেবে। সারা বর্ধমান ঘুরে ঘুরে সস্তায় সবথেকে সুন্দর ফ্রক দুটো কেনা হতো। ফ্রিল দেওয়া ফ্রক। দুবোনের একই জামা, জুতো, হেয়ার ব্যান্ড... যমজ বোনের মতো হাত ধরে ঘুরে বেড়াতাম। 

    এখন দুজন দেশের দুপ্রান্তে... উহুঁ পৃথিবীর দুই প্রান্তে..নিউ মানে আমার বোন অফিসের কাজে সানফ্রান্সিসকো গেছে। এবারের ঈদ ওর বিদেশেই হবে। কাল ফোন করে বলছিলো ওর বুকের ভিতরটা হু হু করছে বাড়ির জন্য। যতই হোক, ঈদের সময় বাড়ি না এলে যত নিয়ামতই মিলুক না কেন, মন খারাপ তো করবেই। পৃথিবীর সবথেকে নিয়ামতের জিনিষ বোধহয় বাড়ির বিছানাটুকু। আহা কি আরাম। 

    একবছরে আমরা বড়ো হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বর্ধমান শহরের প্রচন্ড পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের ছোট্টো মিষ্টি শহরটা আরো একটু আধুনিক হয়েছে। শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স, পিৎজা, কোল্ড কফি, স্কুটির কৃত্রিম শহর হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। তবু চোখ বুজলেই আমার ছোটোবেলার শহরটা জীবন্ত হয়ে ওঠে। সাইকেল করে আমরা কজন...

    এসব ভাবতে ভাবতে টোটোটা কখন যেন উদয়ন মিষ্টির দোকানের সামনে চলে এসেছে। সামনে প্রচন্ড জ্যাম লেগেছে। এই আর এক জ্বালা... সবার জীবনে কিসের যে এতো তাড়া কে জানে, সবাই চেষ্টা করছে আগে যেতে... ফলশ্রুতি জ্যাম ছাড়ার লক্ষণ নেই। টোটো থেকে নেমে পড়লাম এটুকু হেঁটে নেবো। সব্জিবাজারের ভিতর দিয়ে পাশ কাটিয়ে হাঁটছি। প্রতিবারের মতো চারপাশে সার সার সিমাই, লাচ্ছার দোকান। মুনাফকাকু, বাঁকিকাকুর দোকানে প্রচন্ড ভীড়। সবাই ব্যস্ত শেষবেলার কেনাকাটি করতে। লাল হলুদ সবুজ রঙে রাঙানো লাচ্ছা, মিহি কাঁচা সিমাই, ধবধবে গাওয়া ঘিতে ভাজা লাচ্ছাতে বাতাস ম ম করছে। এই জ্যামের মধ্যে খানেই লাইট ফিটিংস চলছে। পুরো এলাকা আজ আলোর সাজে সাজবে।

    একটু পরেই চত্ত্বরটা পুরো বদলে যাবে তেলেভাজা, খাবার দোকানের সমারোহে। এই রোজা মাসটা এই তেঁতুলতলাবাজার চত্ত্বরে হেন খাবার নেই যে পাওয়া যায়না। মাংসের পুরওলা সমোসা, নাদরুটি, কলাইবুনা, কাবাব কে নেই! 

    বাড়ির সামনের রাস্তায় দুদুটো প্যান্ডেল। একটা ছানাপোনাদের জন্য আর একটা বড়োদের জন্য। 

    পুরো পাড়া জমজমাট... সবাই খুশি... আমারো কেমন যেন মনখারাপ করা খুশি হচ্ছে... ঈদ আসছে তবে , সত্যিই ঈদ আসছে।

    ঈদ আসবো আসবোটাই ভালো। চলে আসলেই শেষ, আবার একবছর অপেক্ষা করো। 

    আগে ঈদ মানেই ছিলো নতুন জামার মোহ। পাড়ার কার জামাটা সবথেকে সুন্দর তার কম্পিটিশন। রোজা শুরু হওয়ার পর থেকেই সন্ধ্যে বেলায় নিউয়ের আবদার শুরু হতো... আম্মু আমরা কবে ঈদের বাজার করবো? সবার জামা হয়ে গেলো আমাদের এখনো হয়নি। আম্মু বলতো আগে আগে জামা কিনে নিলে সবাই দেখে ফেলবে তাই একটু দেরী করেই কিনতে হয় মা। কিন্তু এখন বুঝি, আম্মু আসলে ছোটো শিশুদের বুঝতে দেয়নি এখন টাকাপয়সার টানাটানি, আব্বুর হাতে টাকা না আসলে কি করে জামা কিনে দেবে? এখন ভাবি আমরা কি স্বার্থপর ছিলাম তখন। কখনও ভাবিনি আব্বু আম্মু ঈদে নতুন কি জামা কিনলো? নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আমার আম্মু তখন পুরোনো শাড়ীতেই ঈদ কাটাচ্ছে কিংবা খুব বেশি হলে একটা সূতির ছাপা শাড়ী। আব্বু বেচারার তো কিনে দেওয়ার কেউ ছিলো না। নিজের জন্য বোধহয় ঈদে কিছু কিনতোও না। এখন আমার আব্বু আম্মু দুজনকেই আমরা দুইবোন নতুন জামাকাপড় কিনে দিই... কিন্তু সব জিনিষের একটা বয়স থাকে । আমার আম্মু আজকে আর হয়তো নতুন চুড়ি বা শাড়ী দেখে উচ্ছ্বসিত হবেনা যতটা আজ থেকে কুড়ি বছর আগে হতে পারতো! 

    এটাই হলো জীবন... কিছু না পাওয়া থাকবেই। 

    ক্লাবের সামনে একটা বড়ো ঝাড়বাতি লাগিয়েছে আর ক্লাবের সব গাছগুলো সবুজ আলোতে ঝকঝক করছে। 

    ছোটোবেলায় আরো একটা মজা ছিলো... তখন ঈদ হঠাৎ করে হতো। কখনো কখনো গুজব উঠতো যে এবার ঈদ ঊনত্রিশ রোজায় হবে, কেউ বলতো না না ত্রিশ! কখনো কখনো মিলতো, কখনো মিলতো না। রাত বারোটায় হঠাৎ করে খবর কাল ঈদ হবে। রিকশায় বাঁধা মাইকে করে পাড়ায় পাড়ায় ঈদের নামাজের সময়সূচী জানিয়ে দেওয়া হতো। সবার বাড়ি থেকে হুল্লোড় উঠতো কাল ঈদ কি মজা!

    সেই রাত বারোটাতেই মোমস, জুঁই সবার বাড়িতে সবার আনাগোনা শুরু হয়ে যেতো। আরে মেহেন্দিই পড়া হয়নি এখনো, কাল যে ঈদ! কি হবে এবার? 

    মেহেন্দি পরতেই হবে ঈদে, নইলে ঈদ বড্ডো বেমানান। ফুল পাতার নকশা, কলকের ডিজাইনে হাত ভরে উঠতো মেহেন্দিতে। একবার পাড়ায় ইটিভির রিপোর্টার এসেছিলো। আমি তখন নিউকে মেহেন্দি পরাচ্ছি... দুহাত ভরা মেহেন্দির ছবি নিয়ে গেলো। সন্ধ্যেই টিভিতে নিউকে দেখে আমাদের কি উল্লাস। পাড়ার সবাই বলছে আজকে নিউকে দেখলাম টিভিতে....সে বিশাল হৈ রৈ ব্যাপার।

    পুরো পাড়াটা আলো , শামিয়ানা, ঝিলমিলি দিয়ে সেজেছে। আমার পুরোনো পাড়াটাকে পুরো রাজকন্যা লাগছে... বিকেলে আম্মু আব্বু কচির সাথে ইফতারি খুললাম। এই রেজার মরশুমে কচির  এটা প্রথম ইফতারি... চারিদিকে হৈ হুল্লোড় হচ্ছে বেশ...রাস্তায় কারোর সাথে দেখা হলেই প্রথম প্রশ্ন ঈদের শপিং কমপ্লিট? কি কিনেছো? 

    আমি যবে থেকে চাকরি করছি সেই ২০১১ সাল থেকে নিজেই নিজের ঈদ শপিং করি... সবাইকে কিনে দিই। নিউ অবশ্য প্রতিবারের মতো এবারেও নতুন জামা কাপড় পাঠিয়েছে। ভাই বোন থাকার এই এক সুবিধা। মনে হয় পৃথিবীতে আমি একা নই, আমার বোন আছে ভাই আছে। ঝগড়া হোক, মারপিট তবুও দিনের শেষে স্নেহ, ভালোবাসায় মোড়া রক্তের টান। 

    মনটা খারাপ লাগছে খুব। নিউ এবার কানাডাতে ঈদ  করবে। বাড়িটা কেনন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। কি আর করা যাবে, আমরা সবাই নিজের নিজের জীবনে আস্তে আস্তে ভারী ব্যস্ত হয়ে পড়ছি। আমাদের ঈদ এখন আগের মতো  নেই... সময়ের সাথে সাথে তা বদলাচ্ছে। 

    বাড়ির সামনে কতগুলো বাচ্চা হুল্লোড় করছে... হাতে মেহেন্দি... নিজের ফেলে আসা শৈশবটটা চোখের সামনে দেখছি। এইভাবেই বোধহয় সময়ের সাথে সাথে ভবিষ্যতের কান্ডারীদের জায়গা ছেড়ে দিতে হয় না চাইতেও... 

    আর একদিন মোটে বাকি... তারপরেই খুশির ঈদ... 

    আল্লাহ যেন সবাইকে খুশি দেন... আমি জানি না আল্লাহ আছেন কি নেই...তর্কেও যেতে চাইনা। যদি থাকেন তাতেও অসুবিধা নেই। উনি যদি কারোর সম্বল হন, কারোর খুশির কারণ হন আমার তাতে বিরোধ করার কোনো অধিকার নেই। যে লোকগুলো একমাস রোজা রেখে অধীর আগ্রহে খুশির ঈদের জন্য অপেক্ষা করছে তাদের খুশিতেই আমার খুশি... 

    ঘরদোরগুলো একটু ঝাড়পোঁছ করতে হবে ঈদের আগে... ঝাড়ু আর মোছার কাপড় নিয়ে ঘর পরিস্কার করছি। 

    এই এক অতি বিরক্তিকর কাজ, অবশ্য পৃথিবীতে কোন কাজটা বিরক্তিকর নয়? সবই আসলে কারোর না কারোর কাছে বিরক্তিকর, তবু আমাদের কাজ করতে হয়... 

    রবিবার সকাল থেকেই হৈহুল্লোা বাড়ছে...শেষ মূহুর্তের প্রিপারেশন। বাড়িতে রাশি রাশি সিমাই, লাচ্ছা, কাজু, কিশমিশ, পেস্তা, দুধ , ঘি, মাংস চলে এসেছে। আম্মু দুধটাকে জ্বাল দিয়ে ঘন করছে..  পায়েস হবে। 

    আমি ঘরদোরগুলো গুছিয়ে ফেলেছি অলমোস্ট। সবার বাড়িতে সবাই ব্যস্ত। ঈদের আগে কাচাকুচি, ঘরদোর পরিস্কার করে সবকিছু চকচকে করে তুলতেই হবে। এটাই নিয়ম, চলে আসছে বহুযুগ ধরে। 

    এখন তো রেডিমেড সিমাই পাওয়া যায়... আগে ঈদের সময় আম্মুরা সিমাই বানাতো বাড়িতেই... সিমাই বানানোর মেশিনে করে... এখন সেসব আর ব্যবহার হয়না, আলমারির এক কোণে তা অব্যবহৃত পরে আছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা আরো উন্নত হচ্ছি , পিছনে তাকালে পড়ে থাকে অকৃত্রিম একটা যুগ... যেখানে সবাই মিলে যৌথ পরিবারে হৈ হৈ করে একমাস ধরে ঈদের প্রস্ততি হতো।

    বিকেলে জুঁইয়ের সাথে বেরোলাম বাজারে... শেষ মূহুর্তের ঈদ কেনাকাটা। আমি আর জুঁই শাড়ী পরবো ঈদে... ম্যাচিং গহনা চাই... তারপর মেহেন্দি পরবো। শহর ছাড়িয়ে নার্স কোয়ার্টারের দিকে যাচ্ছি। ঝিমঝিমে বৃষ্টি পরছে। যা বৃষ্টি হওয়ার আজকেই হয়ে যাক বাবা, কালকের দিনটা আর বৃষ্টি না হোক।  ম্যাচিং করে কটা হার, দুল কিনলাম, মেহেন্দিও। আমি নিজেই মেহেন্দি পরতে পারি, যদিও আজকাল আর উৎসাহ নেই। যদিও বাড়ির সবার বিয়েতে অলিখিত ভাবে মেহেন্দি পরানোর ভার আমার হাতেই থাকে। জুঁইকে বলেছি একটু কমের মধ্যে মেহেন্দি লাগিয়ে দিস হাতে। ঈদের আর আছেটা কি? ঐ মেহেন্দির লাল রঙে রাঙানো হাত, কাঁচের রংবেরং চুড়ি আর খাওয়াদাওয়া।

    তাতেই কি মজা...

    রাস্তা দিয়ে হাঁটছি একা একা ... প্রিয় শহরটাকে দেখছি নিজের চোখে প্রাণ ভরে। আলোয় ঝলঝল করছে শহরের আনাচ কানাচ... চারিদিকে খুশি, শেষ মূহুর্তের ঈদের বাজার। 

    একটা গরীব কাপল ফুচকা খাচ্ছে , তাদের দুজনের বাজেট দশটাকা। দশটাকায় ছটা ফুচটা.. তিনটে ছেলেটা খাবে, তিনটে মেয়েটা। মেয়েটার হাতে লাল চুড়ি, খিলখিল করে দুজনে হাসছে। বহুদিন পরে দুজনে বোধহয় ফুচকা খাচ্ছে। ঈদের সময় একটু বেশি খরচা হলোই না হয়... 

    একটা বাচ্চা অনেকক্ষণ ধরে জগটা মুখে করে জল খাওয়ার চেষ্টা করছে। বাচ্চার মা ফুচকা খেতে ব্যস্ত। বাচ্চাটার মাকে আমি চিনি। আমাদের পাড়ায় মধ্যবিত্তদের মাঝে সযত্নে লুকানো একটা বস্তিপাড়া আছে , মেয়েটা ঐখানের মেয়ে। 

    বহুআগে মেয়েটার মা আমাদের বাড়িতে কাজ করতো... মেয়েটা কি আমাকে চিনতে পারছে? কে জানে... 

    বাচ্চাটার মুখে জগটা ধরে জল খেতে সাহায্য করলাম। বাচ্চাটা ঝালে লাফাচ্ছে, বাচ্চার মায়ের হ্যাঁতকোৎ নেই। সে দাঁড়িয়ে একজনের সঙ্গে নতুন চুড়ি নিয়ে গল্প করছে। 

    চুড়ির রিনরিন শব্দ আমার খুব ভালো লাগে। আমি খেয়াল করে দেখেছি মুসলমান এয়োতিরা হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি পরে...বিশেষত গ্রামের দিকে কিংবা গরীব ঘরে। এটাই এয়োতির চিহ্ন! 

    আমার কেমন জানি মন খারাপ করছে... অদ্ভূত রকম মন খারাপ। উৎসবের দিনগুলোতেই আমার প্রিয় হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর কথা বড়ো বেশি মনে পড়ে। তারা ভালো থাকুক ভীষণ ভীষণ রকম। 

     

    ধর্ম জিনিষটা বড়ো অদ্ভুত। কখনো তা ভাইয়ের রক্ত বইতে সাহায্য করে , কখনো বা মিলন ঘটাতে সাহায্য করে। 

    ঈদ পুজো এই ধর্মীয় উৎসবগুলোতে গরীব বড়োলোক সবাই নিজের সাধ্যমতো আনন্দ করে, কদিনের জন্য দুঃখ গুলো সরিয়ে রেখে !

    এই ঈদেই হয়তো কত বাবা মায়ের নতুন জামাটাও হয়নি .. সব টাকা বাচ্চাটার পছন্দের জামা কিনতে শেষ। কারোর বা এবছর কোনোই জামা হয়নি। 

    তাদের জন্য ঈদটা খুশির ঈদ হবে? 

    বর্ধমান হোমের বাচ্চাদের মুখগুলো মনে পড়ছে... কাল ঈদে ওদের নতুন জামাও হয়নি, ওরা কিছু ভালোমন্দ খেতেও পাবেনা  হয়তো। 

    এরকম কত শত বাচ্চা আছে, যাদের এবারে ঈদেও জামা হয়নি। তৃষিত নয়নে তারা চেয়ে থাকবে ঝাঁ চকচকে কাঁচের দরজা দেওয়া দোকানগুলোতে। 

    কাল ঈদ হোক সবার জন্য, সবাই ভালো থাকুক... সব্বাই। 

    আমি নামাজ পড়েছি গতবছর অবধি। জায়নামাজে দুহাত তুলে দোয়া করেছি ... সবাইকে ভালো রেখো প্লীজ। 

    এবছর নামাজ পড়বো না... আল্লাহর উপর রাগ অনেক...অভিমানের রাগ। যেদিন মিটে যাবে আবার না হয় জায়নামাজে দুহাত তুলে সিজদায় বসবো। 

    আমার ঈদ শুরু হবে হোমের বাচ্চাদের সঙ্গে। জুঁইকে ফোন করে বললাম কাল হোমে একটু সিমাই, লাচ্চা নিয়ে যাবো। জুঁই লাচ্চা নিয়ে যাবে বলছে, আমি সিমাই। মিষ্টিও কিনতে হবে দু তিনরকম। খুশির ঈদে যটা বাচ্চার মুখে হাসি ফোটাতে পারা যায়... এর বেশি ঈদে আমার চাহিদা কিচ্ছু নেই। 

    সবাই ভালো থাকুক। ঘৃণা, দ্বেষ মিলিয়ে যাক পবিত্র ঈদের চাঁদের আলোয়... 

    সরু একফালি চাঁদ উঠেছে আকাশে... ঈদের চাঁদ। জ্যোৎস্না ছড়িয়ে পরুক কোণায় কোণায়, মুছে যাক সব অন্ধকার। 

    ঈদ আসছে, খুশির ঈদ।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০১ জুলাই ২০১৭ | ৩০৩৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sourav Bhattacharya | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ০২:০৮82945
  • Osadharon laglo pore
  • প্রতিভা | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ০২:৩৪82946
  • টুকরো টুকরো ছবিগুলোকে যেন দেখা যাচ্ছে, ছোঁয়া যাচ্ছে। কাঁচের চুড়ি পরা হাতের ঠুং ঠাং শুনলাম যেন !
  • Azhar | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৫:৪৪82947
  • খুব সুন্দর একটা লেখা পড়লাম ।
    আপনার লেখা পড়ে সেই পুরনো দিনে ফিরে এলাম ।
    কেমন একটা মন খারাপের মধ্যেও ভালো লাগছে ।
  • Rabaahuta | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৬:০৫82948
  • 'আমার কেমন জানি মন খারাপ করছে।।। অদ্ভূত রকম মন খারাপ। ' এই জায়গাটা পড়ে পুজোর সময় ছোটো শহরে প্যান্ডেল থেকে দূরে গাছের গায়ে জড়ানো টুনিবাল্বের আলোয় ভেজা পাতা, অল্প শোনা যাওয়া মাইকের হিন্দী গান এইসবের বিষন্নতা মনে পড়লো।
  • আসিক.... | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৭:৩৩82949
  • ফারহা লেখাটা খুব হয়েছে। মন ছুয়ে যায়।
  • Mou | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৮:১৮82950
  • লেখিকার পুরোনো ভক্ত । যখন ই উনার লেখা পড়ি অন্য জগতে চলে যাই । মন ছুঁয়ে যাই ।
  • d | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৯:০৮82942
  • এই লেখাটা একদম অন্যরকম ভাল। মন খারাপ করে দেওয়া, আবার টুকরো টুকরো খুশী জড়ানো ভারী অন্যরকম।

    নাদরুটি কী?
  • অনিমিত্র চক্রবর্তী | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৯:৩০82951
  • অনবদ্য লেখনী। একই সঙ্গে লেখিকার মনের গহীন অন্তরে জমে থাকা চিন্তারাশি প্রকাশের প্রচেষ্টা। সাধু, সাধু। সর্ব সর্বত্র্য নন্দতু।
  • রোবু | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ১২:০৮82943
  • ভালো লেখা। নাদরুটি সার্চ করে তন্দুরি রুটির ছবি দেখতে পেলাম। আমি ভেবেছিলাম বাখরখানি, তা নয়।
  • সেখ সাহেবুল হক | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৭ ১২:২৯82944
  • লেখাটা একরাশ ছোটবেলা ফিরিয়ে দিলো। 'নাদরুটি' খুব সম্ভবত তন্দুরি রুটি। আমি তো এটাই শুনেছি।
  • নাভিদ আঞ্জুম | ***:*** | ০৪ জুলাই ২০১৭ ০২:২১82953
  • আমারো কটা কথা মনে পড়লো
    1)ঈদের চাঁদ নিজের চোখে দেখার কত চেষ্টাই না করতাম। আর এখন তো ফেসবুকেই..........
    2)কোনো কোনো বার ঈদে নতুন জামা না পেলে যখন মন খারাপ হোতো, মা বলতো "আর কদিন পরেই তো বক্রীদ,তখন তোদের ভালো জামা কিনে দেবো"।
    3)হাজার নিষেধ করলেও মা প্রতিবার বাড়িতে ঈদের কদিন আগে সিমাই বানাবেই।মা পাঁচ মিনিট সিমাইয়ের কল ঘোরানোর পর বাড়ির সবথেকে 'হাট্টাকাট্টা' সদস্য হিসেবে আমাকেই দায়িত্ব নিতে হয় বাকিটার।এবারেও।কাজটা সহজ নয়।কিন্তু এবার আমার ছেলে আর ভাইপো আমাকে সাহায্য করেছে খুউউব।তবে আগের মত একবাড়িতে একসাথে সিমাই তোলার রেওয়াজটা প্রায় উঠেই গেছে।
    4)ঈদের নামাজের শেষে দোয়ার সময় ছোটোতে শুধুই দুষ্টুমি আর হাসাহাসির দিনগুলোকে খুব মিস্ করি।তবে পাড়ার ছোটোরা
  • তাজ | ***:*** | ০৪ জুলাই ২০১৭ ০৭:০৮82954
  • ঈদ উৎসবে এ রকম অনেক লেখা ফব অগে গুলো ভরে উড়ুক।
  • Sk Ajmat Ali | ***:*** | ০৪ জুলাই ২০১৭ ১২:৩২82952
  • Eid er nostaljiya ghire dhorlo...ekhn r chotobelar okritrim eid er anondo r paina...tobu anondo neoar chesta kori...amio bardhamaner basinda tai bardhaman amar praner sohor...bardhaman home ta kothai ache jodi thikana ta den to valo hoi...icche ache okhane jouar...
  • সৌরভ দত্ত | ***:*** | ০৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫১82955
  • অত্যন্ত সুন্দর লিখেছেন ফারহা,মন ছুঁয়ে গেল।নিজের ছোটবেলা মনে পড়ছে।
  • krisna banerjee | ***:*** | ০৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪৭82956
  • ভাষা হাড়িয়ে ফেলেছি লেখা টা পড়ে। অসাধারণ।
  • সুকি | ***:*** | ০৮ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৫82957
  • ভালো লাগল লেখা।
  • আয়নুল সেখ | 2409:4061:21f:46f9:fc1e:6d65:3b3a:***:*** | ২৬ মে ২০২০ ০৯:৪৫93703
  • দারুন সুন্দর। আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। খুব মিস করি।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট প্রতিক্রিয়া দিন