এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  ঈদের কড়চা

  • ঈদ সাহিত্য - উৎসব স্তিমিত হলেও থেকে যায় রেশ

    নাহার তৃণা লেখকের গ্রাহক হোন
    ইস্পেশাল | ঈদের কড়চা | ১২ জুন ২০১৯ | ১২৮৫ বার পঠিত
  •  ঈদ শব্দের অর্থ উৎসব। আর উৎসব মানেই আনন্দ। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ঈদ বিশেষ তাৎপর্যময়। ঈদ শুধুমাত্র বাঙালির জন্য নয়,বরং পৃথিবীময় ছড়িয়ে থাকা ভিন্ন ভাষাভাষী মুসলমানদের উৎসব। এই উৎসব ঘিরে অন্য জাতিগোষ্ঠীর আহ্লাদের কথা অতটা জানিনা, যতটা বাঙালি হিসেবে নিজেদেরটা জানি। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের আনন্দ উৎসব বছর জুড়েই চলমান। ঈদ উৎসবও বলতে গেলে সব বাঙালিরই উৎসব। কেননা এটি শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসবের তকমায় আটকে থাকেনা। ঈদের নামাজ বাদে বাকি উৎসবে ধর্ম বর্ণের দূরত্ব সরে গিয়ে সবাই মেতে ওঠেন ঈদ উৎসবে। অন্তত বাংলাদেশে নিজের পরিচিত গণ্ডীতে ঈদ উৎসবে ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামাতে দেখিনি কাউকে। আমেরিকাতেও সব ধর্মের বাঙালিদের ঈদ আনন্দে সামিল হতে দেখা যায়। প্রতি বছর মুসলিম সম্প্রদায় এরকম দুটি ঈদ উৎসব পালন করে থাকে। একটি ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ। অন্যটি ঈদুল আযহা বা কোরবানীর ঈদ। 

     উৎসবের সাথে নানান মুখরোচক খানাপিনার নিবিড় সম্পর্ক। ঈদের উৎসবেও নানাবিধ খাদ্য প্রস্তুতিতে জেগে ওঠে পাড়া। সাধ্যমত যে যতটা পারেন উপাদেয় খাবারে টেবিল সাজাতে কার্পণ্য করেন না। যদিও গালভরে বলা হয় এই দিনে সবার দরজা সবার জন্য খোলা, আদতে সেটি সোনার পাথরবাটি, বর্তমানে প্লাটিনামের হয়তবা। গরিবগুর্বাদের জন্য কোনোকালেই কারো দরজা খোলা থাকেনা। তবে ঈদ উপলক্ষে দরিদ্র শ্রেণির জন্য 'যাকাত' আর কোরবানীর মাংস বিলানোর যে রীতি আছে সময় বিশেষে তা কিছু ধনী শ্রেণির দেখনদারির অমানবিক কাণ্ডজ্ঞানহীনতার মর্মান্তিক দৃষ্টান্তের জন্ম দিয়ে থাকে। যাদের কিছু নেই তাদের প্রতি ধনবানদের দান খয়রাতের মাধ্যমে যাকাত দান প্রক্রিয়াটি পালিত হয়ে থাকে। রাষ্ট্রীয় সেক্যুলার ট্যাক্স হিসেবে যেমন আয়কর দেয়া লাগে, রিলিজিয়াস ট্যাক্স হিসেবে সেরকম যাকাত দেয়ার রেওয়াজ। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক ড: মুহাম্মদ ইব্রাহিমের সহজ করে বলা বক্তব্যটি স্মরণ করা যায়, "আয়কর দিলেও যাকাত দিতে হবে। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রক্ষার ব্যাপারটা প্রধান্য দিতে হলে তাকে যাকাত দিতেই হবে।"  হজ্জ্বের মতো যাকাতও শর্তসাপেক্ষ ভাবে সম্পদশালী বা সমর্থবানদের জন্য প্রযোজ্য।

     এই কর্তব্য পালনে কেউ কেউ এতটা দেখনদারিতে নামেন যা শুধু নির্লজ্জতার সীমা ছাড়ায় না। অনেক সময় সেটি চরম  নিষ্ঠুরতায় থাবা বসায় যাকাত পাওয়ার আশায় সামিল হওয়া অসহায় দরিদ্র মানুষের জীবনে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রণালয়ের অনুরোধ মেনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনির সাহায্যে সুষ্ঠুভাবে  যদি বিষয়টা ঘটানো যেত সবর্তোভাবে সেটি সুন্দর হয়ে ওঠার কথা। অনেকেই সেসবের তোয়াক্কা করেন না। ঢাকঢোলে পাঁচশ জনের জায়গাতে পাঁচহাজার লোক জুটিয়ে যেন মানুষ খুনের একটি সুপরিকল্পিত(খুন ছাড়া এটি কে আর কী বলা যায?) পরিকল্পনা চলে দেশের কোথাও না কোথাও। আর এটি হয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। ২০১৫ তে ময়মনসিংহে যাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে প্রায় ২৭জনের প্রাণ অকালেই ঝরে গেছে। ২০১৮তে চট্রগ্রামের সাতকানিয়ায় ঝরেছে ১০টি প্রাণ। ওই একই বছরে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে দু’জনের প্রাণ গেছে। এটি শুধু এক বা দুই বছরে ঘটে যাওয়া বিচ্ছিন্ন ঘটনা তাও নয়। পত্রিকার এক সমীক্ষায় জানা যায় ১৯৮২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত যাকাত নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে প্রায় ২৫৪জনের মৃত্যু হয়েছে। পদদলিত হয়ে দরিদ্র মানুষের জীবন ঝরে যাওয়ার ঘটনা প্রায় প্রতি বছরই ঘটে চলছে। দরিদ্র মানুষের প্রতি অমানবিক হয়ে দেখনদারির মাধ্যমে ইসলাম যাকাত দেবার কথা বলে না। ইসলাম ধর্মে দান খয়রাত সম্পর্কে বলা হয়েছে, মুমিন মুসলমানের ডান হাত দান করলে বাম হাত জানবে না। তেমন অনুশীলনীর নজির যাকাত বা কোরবানীর মাংস বিতরণের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে না। আড়ালে আবডালেই যদি বিলিবন্টন করলাম তবে সমাজে দানবীর হিসেবে আমার নাম ফুটবে কিভাবে! তাই ব্যাপকভাবে 'চাউর' হওয়া চাই। তারায় তারায় রটিয়ে দেয়া গেলে আরো শান্তি।

     রীতিমত মাইকিং বা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কিছু কিছু ধনাঢ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাকাত দানের মহত্ত্ব দেখিয়ে থাকেন। আর প্রতি বছর নিয়ম করে সেসব ঘটনা ছাপাও হয়। চোখ থাকিতে অন্ধ আমরা ওসব নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়াছেন বলে ঈদ আনন্দের তাক ডুম তাক ডুমে মগ্ন থাকি। সে মগ্নতা ঘন করতে থাকে আরো বহু উপকরণ। কেননা ঈদ উৎসবে বাঙালি শুধু খানাপিনায় ভুলে না। আনুষঙ্গিক নানান উপাচারে উৎসবকে পূর্ণতা দেবার জন্য রীতিমত প্রতিযোগিতার বাতাবরণ তৈরি হয়। নতুন কাপড় না হলে ঈদ কে ঈদ হিসেবে মনে না করার ছেলেমানুষি শিশু থেকে শুরু করে বড়-বুড়োদের মধ্যেও ব্যাপকভাবে সংক্রমিত। নতুন কাপড়ের চাহিদা পূরণে বাজারে দুই ঈদে চলে রমরমা ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা।

     এক কালে বাংলাদেশে ঈদ আনন্দের অন্যতম একটি বিষয় ছিল বিটিভির আনন্দমেলা। সারাদিনের ঘোরাঘুরি সেমাই ফিরনি কোর্মা পোলাও খাওয়া শেষে ভরপেটে বাঙালি টেলিভিশন খুলে অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে থাকতো আনন্দ মেলার জন্য। স্যাটেলাইট যুগ আসার আগে টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ছিল এই আনন্দমেলা। রাত দশটার পর যখন এই অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো, তখন রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যেতো। ঈদের অনুষ্ঠানে আমজাদ হোসেন, হুমায়ূন আহমেদের নাটকের জন্য দর্শক  আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকতেন। সেই দিন এখন আর নেই। এখনকার যুগে খাওয়া পরার রমরমা আয়োজনের পাশাপাশি টিভির শতেক চ্যানেলে হাজারে বিজারে আনন্দ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবার জন্য মুখিয়ে থাকে। দুই ঈদে কয়েকদিন ব্যাপী মনোরঞ্জনের বিবিধ তরঙ্গের ভেতর থেকে কর্মক্লান্ত বাঙালি দু'দণ্ড শান্তি- আনন্দ খুঁজে নেবার আশায় পর্দার সামনে বসেন। প্রচারিত বেশিভাগ অনুষ্ঠানের মান নিয়ে কিছু বলা থেকে বিরত থাকাই মঙ্গল।

     ঈদ উৎসবের বিবিধ উপকরণের মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন হলো ঈদ সংখ্যার সাহিত্য সম্ভার। ঈদ আর ঈদ উপলক্ষ্যে তৈরি সেমাই, পায়েশ, কোর্মা পোলাও আর অন্যান্য আনন্দ সকল ফুরিয়ে গেলেও ওমর খৈয়ামের উপমার আল ধরে অনন্ত যৌবনের তীব্র সম্ভাবনা নিয়ে সাহিত্য প্রিয় পাঠকের জন্য ঈদের আনন্দ যূথবদ্ধ করে নিয়ে আসে ঈদ সংখ্যা সাহিত্যসম্ভার। সারা বছর অপেক্ষায় থাকা লেখক পাঠকের কাছে ঈদের সাহিত্য সংখ্যা ভীষণ আরাধ্যের বস্তুবিশেষ। এক সময় ঘরে ঘরে এই উৎসব কেন্দ্রিক সাহিত্যের প্রথম পাঠক হবার লড়াই চলতো রীতিমত চর দখলের কায়দায়। তখনকার ঈদ সংখ্যার কারিগরিমান যেমনই থাকুক না কেন গুণগত মান আজকের চেয়ে অনেকগুণ বেশিই ছিল বলে মনে করেন প্রাচীন- বোদ্ধা পাঠক শ্রেণী। আজকের বহু খ্যাতনামা সাহিত্যিক তাঁদের সোনার কলমে সৃষ্টি করেছিলেন কত সব স্বর্ণালী সাহিত্য। তাঁদের মধ্যে শওকত আলী, শওকত ওসমান, সৈয়দ শামসুল হক, রাবেয়া খাতুন, রিজিয়া রহমান, হুমায়ূন আহমেদ, সেলিনা হোসেন, প্রমুখেরা উল্লেখযোগ্য। ঈদকে ঘিরে শিল্প সাহিত্য বর্তমানেও সংস্কৃতির একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত। দুই ঈদে, বিশেষ করে ঈদুল ফিতর(রোজার ঈদ) উদযাপনের কয়েকদিন আগেই পত্রিকাগুলোর মধ্যে ঈদ সাহিত্য সংখ্যা প্রকাশের ব্যাপক হিড়িক শুরু হয়ে যায়। হালে এই সংস্কৃতির বাপ্পার ফলন ঘটলেও এটি প্রচলনের ইতিহাস সুপ্রাচীন।

     বহুপ্রজ সাহিত্যিক আব্দুল মান্নান সৈয়দ রচিত তথ্য নির্ভর “বাংলা সাহিত্যে মুসলমান” প্রবন্ধ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, "১৯০৩ সালে প্রথম প্রকাশিত সৈয়দ এমদাদ আলী-সম্পাদিত ‘নবনূর’ পত্রিকাই খুব সম্ভবত প্রথমবার ঈদ-সংখ্যা প্রকাশ করে। ১৯০৩, ১৯০৪, ১৯০৫- পর পর এই তিন বছরই "নবনূর" ঈদ-সংখ্যা প্রকাশ করে। ১৯০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম বর্ষ নবনূরের ঈদ সংখ্যায় সৈয়দ এমদাদ আলী রচিত "ঈদ" নামে একটি কবিতা প্রকাশি হয়। ইহাই মুসলিম বাংলার প্রথম ঈদ কবিতা।" প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায় ১৯০৩ থেকে ১৯২৯ পর্যন্ত প্রকাশিত নবনূরের সেসব সংখ্যায় সৈয়দ এমদাদ আলী ছাড়াও কবি কায়কোবাদ, বেগম রোকেয়া প্রমুখেরা ঈদ সংক্রান্ত কবিতা ও গদ্য লিখেছিলেন। এ ছাড়াও খ্যাতনামা ঐতিহাসিক রামপ্রাণ গুপ্তের "ঈদজ্জোহা" নামের প্রবন্ধ,  জীবেন্দু কুমার দত্তের "ঈদ সম্মেলন" কবিতা, একই শিরোনামে বেগম রোকেয়ার "ঈদ সম্মেলন" প্রবন্ধ, কায়কোবাদের "ঈদ অবগাহন" ইত্যাদি রচনাগুলো ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে লিখিত এবং প্রকাশিত সাহিত্য।

     আজকের প্রযুক্তিবান্ধব, বাণিজ্যনির্ভর ঈদ সাহিত্য প্রকাশ এবং চর্চা সেকালে এত বড় দাগে যে না হতো না বলাই বাহুল্য। একথা উল্লেখ না করলেই নয়, কাজী নজরুল ইসলাম একাই দুই ঈদ নিয়ে যে বিপুল পরিমাণ সাহিত্য রচনা করেছেন তা বাংলা সাহিত্যভাণ্ডারকে শুধু ঋদ্ধই করেনি, তাঁর নানামুখী স্বতঃস্ফূর্ত রচনার বিপুলত্ব আজও পাঠকশ্রেণিকে যথেষ্ট বিস্মিত করে। যার বিস্তারিত বর্ণনা আব্দুল মান্নান সৈয়দের  “বাংলা সাহিত্যে মুসলমান’’ এ লিপিবদ্ধ আছে। মীর মোশাররফ হোসেন, কাজী নজরুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন, মোজাম্মেল হক, শেখ ফজলুল করিম, নজরুলের দুই পূর্বসূরী শাহাদাৎ হোসেন, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ কবি সাহিত্যেকরা তৎকালীন প্রকাশিত ঈদ সাহিত্যে স্ব স্ব অবদান রাখেন। নজরুলের বিখ্যাত কবিতা "ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ" তো এখন রমজানের সমাপ্তি আর ঈদের আনন্দ ঘোষণার এক ঐতিহাসিক দলিল। যা শুধু মুসলমান হৃদয়েই না ধর্মের গণ্ডী পেরিয়ে উৎসব পিয়াসি সব বাঙালির বুকে বেজে যায় সমান আনন্দে।

     অতি সাড়ম্বরে না হলেও সেই অতটা পেছনের সময় থেকেই  ঈদকে সামনে রেখে বাংলা সাহিত্য চর্চার একটা রেওয়াজ বা আবহাওয়া যে চলমান ছিল- এটা স্পষ্ট। ঘটা করে বিশাল কলেবরে ঈদ সাহিত্য প্রকাশের জন্য স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনকে আরো অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে প্রথম ঈদ সংখ্যা প্রকাশিত হয়(সম্ভবত) স্বাধীনতার ঠিক পরের বছর অর্থাৎ ১৯৭২ সালে। লুপ্ত হয়ে যাওয়া সাপ্তাহিক 'বিচিত্রা' প্রথম ঈদ সংখ্যা প্রকাশের পথপ্রদর্শক। এর মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা -সাংবাদিক শাহাদাত চৌধুরীর নাম স্মরণীয়। ১৯৭২ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত বিচিত্রা সুদীর্ঘ একটা সময় ধরে ঈদ সাহিত্য প্রকাশে বাংলা তথা বাংলাদেশের সাহিত্যে যে ভূমিকা রেখেছে তার স্মৃতি বিপুল সংখ্যক পাঠক মনে আজও অম্লান।

     ১৯৯৭ সালে সপ্তাহিক বিচিত্রা বন্ধ হয়ে গেলে তার পরের বছর প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক শাহাদাত চৌধুরী সাপ্তাহিক ২০০০ পত্রিকা চালু করেন। যেটি অচিরেই পাঠক প্রিয়তা লাভ করে। সাপ্তাহিক ২০০০’এর ঈদ সাহিত্য সংখ্যার সম্পাদনা, প্রকাশের চমৎকারীত্ব আর লেখক তালিকার আকর্ষণে তা পাঠকের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। ২০১৪ পর্যন্ত সাপ্তাহিক ২০০০ ঈদ সাহিত্যসম্ভার পাঠক সমাজকে উপহার দিতে সমর্থ হয়। পরে সাপ্তাহিকীটি বন্ধ হয়ে যায়।

     এছাড়াও আশির দশকে সাপ্তাহিক অর্থনীতি নামের একটি পত্রিকা ব্যতিক্রমী ঈদ সংখ্যা প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। ব্যক্তিক্রমী এজন্যে যে এতে গতানুগতিকভাবে গল্প, উপন্যাস, কবিতা ইত্যাদি ছাপা হতো না। তার বদলে থাকতো খ্যাতিমান সাংবাদিকের কলমে জনমানুষের নানান বিষয় ভিত্তিক বাস্তবধর্মী লেখা, ঈদের বাজেট ইত্যাদি। স্বভাবতই বিশেষ শ্রেণীর পাঠকের কাছে এর কদর ছিল শুধু।

     পূর্বসূরী বিচিত্রার পথ ধরে পরবর্তীতে ‘সাপ্তাহিক ২০০০’ যে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছিল, সে কথা আগেই বলেছি। তারই চিহ্ন ধরে 'সচিত্র সন্ধানী' সিনেম্যাগাজিন ‘তারকালোক’ ‘পূর্বানী’ 'পূণিমা' 'রোববার' ‘চিত্রালী’ ইত্যাদি পত্রিকাগুলো ঈদ সাহিত্য প্রকাশে ভূমিকা রাখে। পরে ঈদ সাহিত্য প্রকাশের কাতারে সামিল হয়  'যায় যায় দিন' 'তারকালোক' 'অনন্যা' 'নিপুণ'  ইত্যাদি দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক পত্রিকাগুলো।

     খ্যাতনামা সওগাত পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ‘বেগম’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। যার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল। পরে সে পদে আসেন নূরজাহান বেগম। শুধুমাত্র নারী লেখকদের নিয়ে প্রকাশিত ‘বেগম’ও আড়ম্বরের সাথে ঈদ সাহিত্য সংখ্যা প্রকাশ করতো। সেখানে লিখতেন আজকের খ্যাতনামা নারী লেখক সুফিয়া কামাল, সেলিনা হোসেন, দিলারা হাশেম, রাবেয়া খাতুন, রিজিয়া রহমান, জুবাইদা গুলশান আরা, ফাহমিদা আমিন, ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ, খালেদা এদিব চৌধুরী, মুশতারী শফি সহ আরো অনেকেই। এগুলোর পাশাপাশি দৈনিক পত্রিকাগুলোও ঈদ সাহিত্য প্রকাশে ভূমিকা রাখে। তবে আজকের মতো সেগুলো শুধুমাত্র বাণিজ্যনির্ভর ছিল না। লেখক সৃষ্টি, বা সাহিত্য ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতার আন্তরিকতা সামান্য হলেও তার সাথে জড়িয়ে ছিল। তবে কারিগরি দক্ষতার ক্ষেত্রে আজকের মেশিননির্ভর ঝাঁ চকচকে ছাপানো দৈনিকগুলো থেকে তৎকালীন প্রকাশিত ঈদ সাহিত্য সংখ্যাগুলো পিছিয়ে থাকবে সেটা বলাই বাহুল্য।

     প্রথম দিকে দৈনিক পত্রিকার ঈদ সাহিত্য পূর্ণ পৃষ্ঠা জুড়ে প্রকাশিত হতো। পরের দিকে আকৃতিতে পরিবর্তন হয়ে ম্যাগাজিনের চেহারা নেয়। সম্ভবত আশির দশকের পর থেকে দৈনিক পত্রিকাগুলোও ঈদ সংখ্যা ম্যাগাজিন আকারে বের করা শুরু করলো। বর্তমানে ম্যাগাজিনের আদলে প্রকাশের প্রক্রিয়াটিই চলমান। ঈদ সাহিত্য প্রকাশের ইতিহাস একটা দীর্ঘ সময় উজিয়ে আজকের ঝকঝকে প্রকাশনার মধ্যমাঠে এসে দাড়িয়েছে। পাঠক মনে কৌতূহল জাগা অসম্ভব নয়, শুরুটা কেমন ছিল ঈদ সাহিত্য প্রকাশের? প্রথমদিককার ঈদ সাহিত্যা সংখ্যা প্রকাশের অভিজ্ঞতা প্রবীণ চলচ্চিত্র সাংবাদিক চিন্ময় মুৎসুদ্দীর মুখেই শুনে নেয়া যাক- "...সেই সময়ের ঈদ সংখ্যা হাতে নিলে কারিগরি মান সম্পর্কে এখনকার প্রজন্মের পাঠক মোটেও তৃপ্ত হবেন না। বেশ ক’বছর কভার ছাপানো হয়েছে দুই রঙে। কালির মান উন্নত ছিল না বলে পত্রিকা পড়ার পর হাতে কালি লেগে যেত। অনেক ক্ষেত্রে ছবি খুব স্পষ্ট হতো না। গল্প উপন্যাসের অনেক ইলাস্ট্রেশন ঝাপসা হয়ে যেত।

     প্রথম বছর ঈদ সংখ্যার প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল অনেকটা ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দারের মতো অবস্থায়। তবে ১৯৭৪ সাল থেকে একটা পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রকাশ পেতে থাকে বিচিত্রার ঈদ সংখ্যা।.... এই সময় ঈদ সংখ্যা প্রকাশ করা ছিল একটা বড় রকমের চ্যালেঞ্জ। লেখা কম্পোজ হতো লাইনো পদ্ধতিতে। এটা ছিল হাতে কম্পোজের পরবর্তী ধাপ। আর আমরা সেই সময় থেকে নতুন একটা কিছু করার চেষ্টা করতাম। শাহাদত ভাই শুরু থেকেই চমক দেয়ার পক্ষে ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। বর্ষপত্র, ব্যক্তি ও বিষয়ের ওপর অ্যালবাম প্রকাশ এসবেরই নিদর্শন। ১৯৭৪ সালের ঈদ সংখ্যায় প্রচ্ছদে চমক দেয়ার জন্য ঠিক করা হলো শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের একটা স্কেচ বা পেইন্টিং ব্যবহার করা হবে। শিল্পাচার্যের বাসায় গিয়ে নতুন চমক পেলাম তাঁর কাছ থেকে। শাহাদত ভাই তাঁর প্রিয় ছাত্র। সঙ্গে আছেন কালাম মাহমুদ, রফিকুন্নবী। জয়নুল আবেদিন বললেন, ‘পুরনো কেন, আমি তোমাদের জন্য একটা নতুন স্কেচ করে দেব।’ আমরা তো মহা খুশি। এ প্রসঙ্গে ঈদ সংখ্যার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে: ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে ভাবেন তাঁর সত্তা দিয়ে। তাঁর সমগ্র শিল্পরাজির কেন্দ্রবিন্দু এদেশের মানুষ ও জীবন ঘিরেই রচিত। ঈদ বিচিত্রার জন্যে তাঁর কাছ থেকে একটি স্কেচ চাওয়া হলে তিনি একটি নতুন ছবি এঁকে দিয়েছেন বিচিত্রার পাঠকদের জন্যে।"

     বর্তমানে প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি আন্তর্জালিক পত্রিকা গুলোও ঈদ সাহিত্য প্রকাশে পিছিয়ে থাকছে না। ঈদের চাঁদ আকাশে উঁকি দেবার বহু আগেভাগেই প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে এসব পত্রিকার উৎসব সংখ্যা। প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রতিষ্ঠিত লেখক/সাহিত্যিকদের উপস্হিতির ভিড়ে নবীন লেখকদের খুব একটা পাত্তা মিলে না, সেরকম ব্যতিক্রমী লেখক না হলে। আন্তর্জালিক পত্রিকার ক্ষেত্রে তার উল্টো চিত্রের দেখা মিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে। শুধু ঈদ উৎসব নয়, যেকোনো উৎসব/ইস্যু ঘিরে প্রকাশিত সাহিত্য সংখ্যায় নবীনদের যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। নতুন লেখক তৈরিতে, তাদের ভালো লেখাগুলো তুলে আনার আন্তরিক যত্নটা বা দায়িত্বশীলতা, কিছু কিছু ওয়েবজিনের চোখে পড়বার মতো।

     শুধু ঈদ উৎসব নয়, যে কোনো উৎসবকে সামনে রেখে যেসব সাহিত্য সংখ্যা বের হয় তার বেশির ভাগই ফরমায়েশি লেখা। ফরমায়েশি এসব সাহিত্য সংখ্যায় যতটা বর্ষে মানের দিক থেকে ততটা গর্জে কিনা সেটি নিয়ে বির্তক হতে পারে। আন্তর্জালিক সংখ্যা(উৎসব বা যে কোনো) কিনতে পাঠকের গ্যাটের পয়সা খরচের কোনো বালাই থাকে না(সময়ের মূল্য বাঙালি কবে বিবেচনায় নিয়াছে হে!) তাই এসব সাহিত্য মানের বিচারে উৎরাতে না পারলে পাঠক সমাজ হতাশ হয়েই হয়ত ক্ষ্যান্ত থাকেন। সেভাবে ক্ষোভের উদগীরণ খুব একটা ঘটে না, যতটা হয় গ্যাটের পয়সার হুদাই ভাসানের ক্ষেত্রে। এবং এটা খুবই স্বাভাবিক। মধ্যবিত্ত শ্রেণি মূলতঃ ঈদ সাহিত্য সংখ্যার পাঠক। পকেটের মাপ মতোই তাদের পছন্দকে অগ্রাধিকার দিতে হয়। এমন অনেক পাঠপ্রিয় আছেন যারা নিজের কিছু প্রয়োজনকে পাশ কাটিয়ে সে অর্থে ক্রয়যোগ্য ঈদ সংখ্যাটি কিনে থাকেন। সেক্ষেত্রে যেন তেন প্রকারে একটা কিছু লিখে সাহিত্য করলেম বললে পাঠক সেটিকে সোনামুখ করে মানবেন কেন! বাস্তবক্ষেত্রে অনেক নামকরা লেখক উৎসবের নামে প্রকাশিত সাহিত্যে নিজের নাম বা কলমের প্রতি সুবিচার করেন না। তাঁদের হয়ত ধারণা নামের ভারেই পাঠক কুপোকাত হয়ে যাবেন। কিন্তু আজকালকার পাঠক বেশ মুখফোঁড়। মুক্তচিন্তা প্রকাশের অবাধ সুযোগ লুফে নিয়ে সপাটে জানিয়ে দিচ্ছেন ভালো লাগা, না লাগার সবটা। আন্তর্জালে লেখক-পাঠকের মিথস্ক্রিয়ার এই ব্যাপারটা দারুণ বলে মনে করি। বিশেষ করে নবীন লেখকের জন্য নিজেকে যাচাই-শুধরে নেবার এই দিকটা ইতিবাচক ভাবে নিলে আখেরে নিজের বা সাহিত্যেরই লাভ। কিছু কিছু বিখ্যাত লেখকের লেখা পড়ে মনে হয় ঈদ সংখ্যাকে তাঁরা ব্যবহার করেন তাঁদের আগামী উপন্যাসের বিজ্ঞাপন হিসেবে। ঈদ সাহিত্য হলো ট্রেলার, ফুল ভার্সন সুবিধা মতো পরে আসবে। এবারের প্রথম আলোর ঈদ সংখ্যায় আনিসুল হকের উপন্যাস - "এখানে থেমো না" কে সেরকমই মনে হয়েছে। কাহিনি ভালোই চলছিল, হুট করে যেন জবরদস্তির মাধ্যমে থামিয়ে দেয়া হয়েছে, এমনটাই মনে হলো। এটি কি পাঠকের সাথে প্রতারণা নয়? পাঠক হয়ত একটি পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস পড়বার আশাতেই ঈদ সংখ্যাটি সংগ্রহ করেন। এসব কারণে পাঠক অপেক্ষাকৃত নবীন ঔপন্যাসিক/গল্পকারের লেখা পড়তে পছন্দ করেন। কারণ তারা(অধিকাংশই) ঈদ সাহিত্য সংখ্যায় যত্ন নিয়ে নিজের সেরাটা দিতে চান।

     ঈদ উৎসব সংখ্যা প্রকাশ নিয়ে প্রিন্ট মিডিয়ার হুড়োহুড়িতে পাঠক অনেক সময়ই খেই হারিয়ে ফেলেন। চমকদার বিজ্ঞাপন আর নামজাদা লেখক তালিকা থেকে কোনটা বেছে নিলে পটেকের পয়সা পানিতে পড়ে না সে ভাবনায় পাঠক আক্রান্ত থাকেন। সেটা না থেকেও উপায় নেই যে! কারণ ভুক্তভোগী মাত্রই সাহিত্যকেন্দ্রিক প্রতারণার ফাঁদে বার বার পড়তে চাইবেন না নিশ্চয়ই। অতীতের সাহিত্য প্রেমী সম্পাদক কিংবা বয়োজ্যেষ্ঠ লেখকগণ যেভাবে অনুসন্ধান করে লেখক তৈরি বা নবীন লেখকদের ভালো সৃষ্টিকে তুলে আনার ধৈর্য্য দেখাতেন। বর্তমানে তার ছিঁটফোটা নেই বললেই চলে। এখন সাহিত্য বাণিজ্যনির্ভর, চেনামুখ কেন্দ্রিক। এই বৃত্ত না ভেঙে গড়পড়তা কিছু উপন্যাস, গল্প, কিছু ভারী প্রবন্ধ বা ভ্রমণকাহিনি আর পকেট উপুড় করে দেয়া খুচরো পয়সার মতো গাদাগুচ্ছের কবিতা ছাপিয়ে উৎসব পালনের আনন্দ হয়ত পাওয়া সম্ভব। কিন্তু তাতে বাংলা সাহিত্যের কোনো মঙ্গল হবে বলে মনে হয় না। অতিরিক্ত বাণিজ্যমনস্কতা ছেড়ে নতুন ছাঁচে ঈদ সংখ্যাকে ঢেলে সাজানো গেলে হতাশ পাঠকের মন শুধু না সাহিত্যেরও সুদিন আসার বিপুল সম্ভাবনা। সেই সম্ভাবনায়  সাহিত্য প্রেমী লেখক, সম্পাদক যাঁর যাঁর শতভাগ দেবার চেষ্টায় নামলে, লেখালেখিতে নতুন নতুন নিরীক্ষার আদর প্রাপ্তি ঘটানো গেলে সেটা খুব কঠিন সাধ্য বা বহুদূরের কিছু নয় হয়ত। ব্যাপারটা সংশ্লিষ্টজনেরা যত দ্রুত বোঝেন সবক্ষেত্রেই লাভ। পাঠক হিসেবে সেই লাভের গুড় খাবো বলে পিঁপড়ে হয়ে পিড়ি পেতে অপেক্ষায় থাকলেম।

    কৃতজ্ঞতা স্বীকার:

    • “বাংলা সাহিত্যে মুসলমান” লেখক আব্দুল মান্নান সৈয়দ
    • "ঈদ সংখ্যা ৪৩ বছর আগে" লেখক চিন্ময় মুৎসুদ্দী
    • উইকিপিডিয়া

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ১২ জুন ২০১৯ | ১২৮৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন