এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • 'পত্থলগড়ি'

    Jhuma Samadder লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৩ জুলাই ২০১৮ | ৩৪০৩ বার পঠিত
  • 'পত্থলগড়ি'
    ঝুমা সমাদ্দার।

    রাঁচী থেকে তার পড়শী জেলা খুঁটির দূরত্ব ৩১ কিলোমিটার। পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা গ্রামে মুণ্ডা সম্প্রদায়ের মানুষের বাস।

    এ সব পাহাড়-জঙ্গুলে জায়গায় গ্রামের সাধারণ আদিবাসী মানুষ যেমন হয়ে থাকেন, এঁরাও তার ব্যতিক্রম নন, সহজ, সরল, নির্বিরোধী।

    'পত্থলগড়ি' এখানকার বহু প্রাচীন প্রথা । কারও মৃত্যু কিম্বা গ্রামের সীমানা নির্দেশ অথবা বিশেষ কোনো ঘটনাকে মনে রাখার জন্য একটি বড় পাথরে বক্তব্য খোদাই করে বিশেষ বিশেষ স্থানে খাড়া করে রেখে দেওয়া হয়।

    মাস কয়েক ধরে এই 'পত্থলগড়ি' ক্রমশঃ খবরের শিরোনামে উঠে আসছে। সেখানকার মানুষজন নিজেদের এলাকা নির্দেশক সীমানায় পাথর পুঁতে, এলাকা ঘিরে রেখে একরকম স্বায়ত্তশাসন জারী করে রেখেছেন।

    এঁদের নিজস্ব অনুশাসন জারী করা এই অঞ্চলে বাইরের কারওর প্রবেশাধিকার নেই। এঁদের নিজস্ব টহলদার বাহিনী,নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে।

    এঁদের বক্তব্য, এঁরা ভোট দেবেন না। কোনো সরকারী প্রকল্পে নাম লেখাবেন না। ছেলেমেয়েদের সরকারী স্কুলে পাঠাবেন না। সেখানকার শিশুদের পাঠশালায় পড়ানো হচ্ছে,
    'অ'-য়ে 'অধিগ্রহণ'।
    'আ'-য়ে 'আদিবাসী'।
    'খ'-য়ে 'খনিজ'।
    'ব'-য়ে 'বিদেশী'।

    পুলিশ কিম্বা সরকারী আইন তাঁরা মানেন না। নিজেদের ব্যবস্থা এঁরা নিজেরাই করবেন। এমনকি, প্রয়োজন হলে, এঁরা নিজেদের কারেন্সিও এঁরা নিজেরাই বের করবেন।

    সেখানকার উপজাতি মানুষদের মতে, তাঁরা অবিচারের শিকার। তাঁদের নিয়ে কেবল ভোটের রাজনীতিই হয়। আসল 'বিকাশ' সেখানে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত।

    সেখানে পানীয় জলের কোনো ব্যবস্থা নেই, রাস্তাঘাট নেই, বিদ্যুতের খুঁটি থাকলেও বিদ্যুৎ নেই। গ্রামের বাহান্ন জন ছেলেমেয়ে গ্র্যাজুয়েট, অথচ রিজার্ভেশন থাকা স্বত্ত্বেও চাকরি হয়েছে কেবলমাত্র দুই জনের।

    এমনকি তাঁদের 'জল-জঙ্গল-জমিন' এবং খনিজের উপরেও তাঁদের কাগজেকলমে (সংবিধানের পঞ্চম এবং ষষ্ঠ অনুসূচী এবং PESA এ্যাক্ট) অধিকার থাকলেও বাস্তবে নেই।

    'তুষের আগুন প্রথমে ধিকি ধিকি' জ্বললেও পরে দাউদাউ করে জ্বলে উঠেছে মাসকয়েক আগে।

    সমস্যাটা শুরু হয়েছিল, গতবছরের ফেব্রুয়ারী মাসে। একটি কোরিয়ান কোম্পানি সেখানকার একটি গ্রামে ২১০ একর জমি অধিগ্রহন করে একটি অটোমাবাইল কোম্পানি তৈরী করতে চেয়েছিলেন। তাঁদের জমি পছন্দ হয় এবং জমি সাফসুতরো করার কাজটিও সরকার থেকে সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হয়। কিন্তু আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন 'পত্থলগড়ি' স্থাপন করে সে জমির সীমানা নির্দেশ করে দেন এবং সে জমির অধিগ্রহন বন্ধ করে দেন ।

    এরপরের ঘটনা ২৫শে আগস্টের। তিনশো পুলিশবাহিনী সে গ্রামে আফিংয়ের চাষ বন্ধ করতে হাজির হয়েছিলেন। গ্রামের মানুষ ওই তিনশো পুলিশকেই বন্দী করেন। আদিবাসীদের তিরধনুকের সামনে, তিনশো সিআরপিএফ জওয়ান অসহায় হয়ে পড়েন। প্রায় ২৪ ঘন্টা তাঁদের বন্দী থাকতে হয়।

    এই ঘটনায় দোষীদের মধ্যে একজন গ্রামপ্রধানকেও পুলিশের সন্দেহ হয়। এবছরের ফেব্রুয়ারী মাসে পুলিশের একটি দল সেই গ্রামপ্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এগিয়ে যেতেই দেখেন পিছনে ২৫জন জওয়ানের পাত্তা নেই। তাঁদের বন্দী করেছেন গ্রামবাসীরা।

    এর পরের ঘটনা ২২শে জুনের। পাঁচজন মহিলা এ্যক্টিভিস্টকে সেখানে গ্যাং-রেপ করা হয় বলে অভিযোগ।
    তারপর, সচরাচর যা হয়ে থাকে...রাজনীতি, পাল্টা রাজনীতি। ভুঁই ফুঁড়ে উঠে আসছেন একের পর এক নেতা।

    আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আন্দোলনও নকশাল আন্দোলনের মতোই সাধারণ মানুষের চোখে ধূলো দেওয়ার মাধ্যমই হতে চলেছে। শুরুটা সাধারন আদিবাসী মানুষদের দাবিদাওয়া দিয়ে হলেও, হয়তো হাওয়া ঘুরে যাবে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার হিসেব নিকেশে।

    সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ সব আন্দোলন আসলে রাজনৈতিক নেতা এবং তাঁদের পেছনে থাকা কর্পোরেটদের 'ধনবল' বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের যন্ত্র হয়ে দাঁড়ায়।
    পাঁচজন মানুষকে কোনো একটি উদ্দেশ্যে একত্রিত হতে দেখলেই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি যেভাবে 'জনবলে'র ফায়দা তুলতে লেগে পড়ে, এখনও পর্যন্ত এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়।
    সরল, সাদাসিধে মানুষগুলোকে ক্ষেপিয়ে তুলে নিজেদের মতলব হাসিল করার মাধ্যম নেতাদের এসব 'আন্দোলন' 'আন্দোলন' খেলা।

    তবু....এইসব সাধারন গ্রামবাসীদের এই যে একত্রিত হওয়া, চকচকে চোখমুখ, মুঠো হাত আাকাশে তোলা, অন্য হাতে শক্ত করে ধরা তীরধনুক...কোথায় যেন একটু আশা জাগায়। আমরা, সুবিধেবাদী মধ্যবিত্তরাও হয়তো কোনো দিন....
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৩ জুলাই ২০১৮ | ৩৪০৩ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    'The market...' - Jhuma Samadder
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Jhuma Samadder | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৫:২৪65052
  • ধন্যবাদ দ। নকশালরা ধনবল বৃদ্ধির হাতিয়ার নন। তাঁরা ধনবল বৃদ্ধির চাবিকাঠি।
    এইসব আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই জমি কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার কাজটি মসৃন হয়। আন্দোলনের প্রথম দিক কার নেতারা ক্রমশঃ কোনঠাসা হয়ে পড়েন।।।নতুন নেতার আবির্ভাব হয়, যাঁরা জমি অধিগ্রহনে একরকম সরকারের সাহায্যই করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে ধর্ষণের ঘটনায় বেশ পরিকল্পিতভাবে 'হিন্দু-খ্রীষ্টান' রং দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ফলে নতুন নেতা উঠে আসতে চলেছেন।
    না, এখনও গুলি চালানোর অর্ডার দেওয়া হয় নি।
  • Jhuma Samadder | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৫:৩৬65053
  • ধন্যবাদ বিপ্লব রহমান । এই আন্দোলন অবশ্যই জীবন ও জীবিকা রক্ষার লড়াই। তবে সঠিক নেতৃত্বের অভাব। রিজার্ভেশনের দোহাই দিয়ে আদিবাসী নেতাদের টোপ দেওয়ার খেলা তো চলতেই থাকবে।
    আমার নিজের চোখে দেখেছি, মাওবাদী এলাকায় সাধারণ মানুষ প্রথমদিকে যে কারণে একত্রিত হয়েছিলেন, পরে একদিকে নাগা রেজিমেন্ট অন্যদিকে মাওবাদী নেতা - এই উভয়সঙ্কটে পড়ে তাঁদের দিশেহারা অবস্থাটা ঠিক কেমন।
  • d | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৬:২৯65050
  • "আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আন্দোলনও নকশাল আন্দোলনের মতোই সাধারণ মানুষের চোখে ধূলো দেওয়ার মাধ্যমই হতে চলেছে। শুরুটা সাধারন আদিবাসী মানুষদের দাবিদাওয়া দিয়ে হলেও, হয়তো হাওয়া ঘুরে যাবে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার হিসেব নিকেশে।

    সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ সব আন্দোলন আসলে রাজনৈতিক নেতা এবং তাঁদের পেছনে থাকা কর্পোরেটদের 'ধনবল' বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের যন্ত্র হয়ে দাঁড়ায়।"

    এই জায়গাটা বুঝলাম না। নকশালরা কন না কনও কর্পোরেটের ধনবল বৃদ্ধির হাতিয়ার? তাহলে আর সরকারের সাথে বিরোধ কোথায়? মানে সরকারও তো কোনও না কোনও কর্পোরেটের হাতে দেবার জন্যই খনিজসম্পদ ভরা অঞ্চলে সিআর্পিএফ লেলিয়ে দেয়।

    সিআরপিএফ গুলী না চালিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে বন্দী হচ্ছে দেখে বেশ খুশী হলাম।
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৭:৩১65051
  • এপারেও একই চিত্র। আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে আদিবাসীদের মতামত ছাড়াই উন্নয়ন চেষ্টা! কারণ কোনো সরকারই তাদের মানুষ মনে করেনি, বরং জংগলের উৎপাত মনে করেছে!

    বিগত বিএনপি সরকারের আমলে টাংগাইলের মধুপুরে গারো (মান্দি) আদিবাসী এলাকায় সরকার ট্যুরিস্ট স্পট ইকো-পার্ক বানাতে চেয়েছিল, এতে অরণ্যচারী (ভিলেজার) শত শত আদিবাসী উচ্ছেদের আশংকা দেখা দেয়!

    একই প্রকল্প সিলেটের মৌলভীবাজারে করার উদ্যোগ নিলে উচ্ছেদের আশংকা দেখা দেয় খাসি পাহাড়ের শত শত খাসিয়া আদিবাসী!

    সে সময় মাদল-সিংগা- তীর- ধনুকে মধুপুর ও খাসি পাহাড় সশস্ত্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল, এক পর্যায়ে মধুপুরে আদিবাসীদের সম্মুখ লড়াইয়ে বন রক্ষীদের গুলিতে মারা পড়েন পিরেন স্নাল, তার রক্তে রুখে দেওয়া হয় ইকো-পার্ক!

    সে সময় মাসের পর মাস ধরে খুব কাছ থেকে দেখেছি আদিবাসী সংগ্রাম, অনেক সরেজমিনে প্রতিবেদনও করেছি!
    পরে কিছু ব্লগ নোটও লিখেছিলাম ।

    জেনে ভাল লাগছে, খুঁটীর মুণ্ডা আদিবাসীরা একইভাবে সংগঠিত হয়ে জমি-জলা-জংগল রক্ষার আন্দোলন করছেন!

    আরো আপডেট আশা করছি।

    আর "সরল, সাদাসিধে মানুষগুলোকে ক্ষেপিয়ে তুলে নিজেদের মতলব হাসিল করার মাধ্যম নেতাদের এসব 'আন্দোলন' 'আন্দোলন' খেলা।" এই কথার অর্থ বুঝিনি।

    তাহলে এই আন্দোলন কী জীবন ও জীবিকা রক্ষার নয়?
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ০৪ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৮65054
  • ঝুমা সমাদ্দার,

    "আমার নিজের চোখে দেখেছি, মাওবাদী এলাকায় সাধারণ মানুষ প্রথমদিকে যে কারণে একত্রিত হয়েছিলেন, পরে একদিকে নাগা রেজিমেন্ট অন্যদিকে মাওবাদী নেতা - এই উভয়সঙ্কটে পড়ে তাঁদের দিশেহারা অবস্থাটা ঠিক কেমন।"
    "

    কেন?? আরো বিস্তারিত বলুন, প্রয়োজনে দু-একটি সংবাদ/মতামতের লিংক দিন। বিনীত অনুরোধ রইল।

    এপার থেকে দু-এক প্যারায় রাজনৈতিক দিক-দর্শন বোঝা সম্ভব নয়। তবু #পত্থলগড়ির আদ্যোপান্ত বুঝতে চাই! নিজে আড়াই দশক ধরে আদিবাসী অধিকার নিয়ে লেখলেখির চেষ্টা করে জীবনপাত করছি, তাই!
  • ঝুমা সমাদ্দার। | ***:*** | ০৪ জুলাই ২০১৮ ০৬:০৬65055
  • বিপ্লব রহমান দাদা, আমাকে দু'চার দিন একটু বাইরে থাকতে হচ্ছে। একটু ব্যস্ত। ফিরে এসে নিশ্চয়ই উত্তর দেব, কেমন ?
  • | ***:*** | ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৯:৪৩65056
  • ধন্যবাদ ঝুমা।
    পড়লাম আপনার ব্যাখ্যা, কিন্তু আমি একমত নই।

    পরে কখনও আলাপ চালানো যাবে।
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ০৫ জুলাই ২০১৮ ১২:৪৭65057
  • ঝুমা সমাদ্দার,

    অপেক্ষায় রইলাম ভাই। ভাল থাকুন।
  • Jhuma Samadder | ***:*** | ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:০৮65058
  • একমত না হওয়াই তো বাঞ্ছনীয়, দ ,তবেই তো আলোচনা এগোবে। একমত হয়ে গেলেই তো আলোচনা শেষ।
    শুধু এইটুকু বলি, যে কোরিয়ান কোম্পানি জমি কিনেছিল, তা-ও কিন্তু গ্রামসভার মাধ্যমেই । গ্রাম সভার সদস্যদের হাত করে জমি অধিগ্রহণ খুব অসম্ভব নয়, সে তো দেখাই যাচ্ছে ।
  • Jhuma Samadder | ***:*** | ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:২২65059
  • বিপ্লব রহমান দাদা...আমি দেখেছি, মাওবাদী এলাকায় নাগা রেজিমেন্ট আর সাধারণ মানুষ একটা সুষ্পষ্ট দূরত্ব রেখে চলেন । যদিও , নাগা রেজিমেন্ট সেখানে রয়েইছে মাওবাদীদের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করার জন্য। অথচ, কোনোরকম যোগাযোগ নেই বললেই চলে। (কেবলমাত্র মুরগী সংগ্রহে গ্রামবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ)।
    সাধারণ মানুষ নাগা রেজিমেন্টের সৈন্যদের যখন তখন জঙ্গলের পাখী মেরে খাওয়া দেখে যারপরনাই বিরক্ত । অথচ, আদিবাসীদের 'শিকার উৎসব' কিম্বা বিশ্বকর্মা পুজোয় যে পাঁচরকম গাছের ডাল ঘরের দুয়ারে পোঁতার যে প্রথা ওঁদের রয়েছে, তাতে গাছের ডাল কাটার উপর বাধানিষেধ আরোপ - তাঁরা মোটেই ভালো চোখে দেখেন না।
    এবার আসি মাওবাদীদের কথায়। ওঁরা জঙ্গলে শহরের মানুষ ঢোকা একেবারেই পছন্দ করেন না। শহরের মানুষকে থাকতে দিলে তাঁরা সে গেস্টহাউসে আগুন লাগিয়ে দিতেও কসুর করেন না।তার যথেষ্ট কারনও রয়েছে। শহরের মানুষের সেখানকার মানুষকে 'তুইতোকারি' করা , বনমুরগী কিম্বা অন্য বন্যপ্রাণী পুড়িয়ে খাওয়া (এক রিপোর্টারকে ভারী আফশোস করতে দেখেছিলাম ,রাতে গাড়ি চালানোর সময় একটা খরগোশ তার গাড়ির সামনে দিয়ে পেরিয়ে চলে গেল, অথচ মারা গেল না বলে),গ্রামের মেয়েদের লাল পাড় শাড়ী পরিয়ে তাঁদের সামনে নাচানো, তাঁদের নিয়ে ঘরে যাওয়া- এসব করতে বারণ করেন। গ্রামের মানুষকে মারধর করেন। গ্রামের মানুষ পয়সার লোভে এসব করতে বাধ্য হন। কিছু দালাল শ্রেণীর মানুষ সেখানে আছেন, যাঁরা গ্রামের মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তাঁদের হাতে পয়সা গুঁজে দিয়ে এসব করান।
    মাওবাদীদের পরিচয় বলার জন্য মাওবাদীদের মার , আর না বলার জন্য সেনাদের মারের কাছে সারাক্ষণ গুটিয়ে থাকেন সাধারণ গ্রামবাসীরা। তাঁদের আখেরে কোনো লাভই হয় না। অথচ, প্রথমদিকে এঁদের ঘরের ছেলে-বুড়ো- মেয়েমানুষ সকলেই মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন, সে গল্প করেন।
    পত্থলগড়ি আন্দোলনের বিষয়ে আপনি ইউটিউবে অনেক খবর পাবেন। সেখানকার প্রচুর ভিডিও রয়েছে। আমি কয়েকটা লিংক দিলাম। দেখুন, জানতে পারবেন।
    https://www.youtube.com/watch
  • Jhuma Samadder | ***:*** | ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৭65060
  • আর একটা লিঙ্ক -হ্ত্ত্প্সঃ//্ব।য়ৌতুবে।োম/ত্চ?ভ=৪৮য়্ক্ষ৫জqআ&ত=৮স
  • Jhuma Samadder | ***:*** | ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৯65061
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৫:১৮65062
  • "মাওবাদীদের পরিচয় বলার জন্য মাওবাদীদের মার , //আর না বলার জন্য সেনাদের মারের কাছে সারাক্ষণ গুটিয়ে থাকেন সাধারণ গ্রামবাসীরা। "

    ঝুমা সমাদ্দার,

    এই জায়গায় এসে বিভ্রান্ত হলাম। ইন্সার্জেন্সি এরিয়াতে আদিবাসী অধিকার নিয়ে লেখালেখির পর্যবেক্ষণ থেকে বলতে পারি,

    ১) কোনো জনযুদ্ধ "জন" বাদ দিয়ে টিকে থাকতে পারে না।
    কিন্তু খুঁটীতে তা টিকে আছে শুধু নয়, আপনার তথ্যমতে সেখানে "পত্থলগড়ি" বা মুক্তাঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে, আদিবাসী স্কুলে রাজনৈতিক ধারণা দেওয়া হচ্ছে, এটি ব্যপক রাজনৈতিক ভিত্তি ছাড়া হতে পারে?

    ২) পর্যবেক্ষণ এ- ও বলছে, ইন্সার্জেন্সি এরিয়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান হলে ব্যপক মানবাধিকার লংঘন, এমন কি গণহত্যা, গণধর্ষন, গ্রামে লুঠপাট, জ্বালাও-পোড়াও ইত্যাদি হয়ে থাকে। খুঁটীতে কী তেমন কিছুই হয়নি? আপনার লেখায় এর আভাষ আছে, বিস্তারিত উল্লেখ নেই।

    ৩) আপনার লেখায় এই বক্তব্য পরিস্কার হয়, খুটীতে মাওবাদী ও নিরাপত্তা বাহিনী সমান নিপীড়ক, জিম্মি মুন্ডা আদিবাসী, আসলে কী তাই?

    ধৈর্য্য ধরে প্রতিমন্তব্য করায় আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু আপনার ভিডিও লিংক একটিই মাত্র দেখতে পেলাম, যদিও হিন্দী তেমন বুঝি না।

    আর গুগল করে পুরনো কিছু নিউজ লিংক পেলাম, তার একটি এখানে, https://www.dailypioneer.com/STATE-EDITIONS/ranchi/3-maoists-arrested-from-gumla-khunti.html
  • Jhuma Samadder | ***:*** | ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৬:০১65063
  • ১) রাজনৈতিক ভিত্তি আছেই। বড় কোনো সংগঠন থাকাও বিচিত্র নয়।
    ২)সত্যি কথা বলতে, খুঁটিতে এখনও জনসমর্থন এতটাই প্রবল যে, গ্রামবাসীরা মুখ খুলতেই চাইছেন না।লুঠপাট, জ্বালাও-পোড়াও কতটা হয়েছে বলা যাচ্ছে না। তবে মাওবাদী এলাকায় যে হয়েছে , সে তো আমার নিজের চোখেই দেখা।
    ৩)না, খুঁটিতে যাঁরা আছেন , তাঁরা মাওবাদী নন,এমনটাই তাঁরা বলে থাকেন।
    আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই। গতকালই ঝাড়খন্ড থেকে ফিরেছি।
    আমি যে ভি়ডিও লিঙ্ক দুটো দিলাম । তবে হিন্দী না বুঝলে তো মুশকিল, কারন, সব ভি়ডিওই যে হিন্দীতে।
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৯:২৪65064
  • এইব
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৯:৩৫65065
  • *এইবার কিছুটা বুঝলাম । ইউটিউবে আরো নিউজ দেখছি। হিন্দী অস্পষ্ট বুঝলেও আপনার এই লেখা ও মন্তবের ব্যাখ্যার কারণে প্রসংগ কিছুটা বুঝতে পারছি।

    আদালা ব্লগ নোটে আপডেট চাই।

    আবারও ধন্যবাদ ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন