এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • #চলো এগিয়ে চলি

    Sumon Ganguly Bhattacharyya লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১২ নভেম্বর ২০১৮ | ২৭৮১ বার পঠিত
  • #চলো এগিয়ে চলি
    #সুমন গাঙ্গুলী ভট্টাচার্য
    "মা " এই শব্দ টার সাথে, আমরা যারা লিভিং উইথ অটিজম একজনের মা ,তখন আমাদের নামের আগে একটা লড়াকু শব্দ দেয়াই যায়। আমরা একটা নিরস্ত্র যুদ্ধ করি।সকাল থেকে রাত।কাউকে ছোট করছিনা,মা মাত্রই তাই করেন বিশেষ করে যদি কর্মরতা হন।কিন্তু একজন অটিস্টিক বাচ্চার মা এর যুদ্ধ টা একটু অন্যরকম। আমরা একধারে বাচ্চার স্পেশাল এডুকেটর,থেরাপিস্ট,কেয়ার গিভার সব।
    বড় অশান্ত সময় এখন ।কিছুদিন ধরে খবরের কাগজে কয়েকটি খবর আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম।এক, একটি স্পেশাল স্কুলের ভিতর থেকে স্কুলে অনুষ্ঠান চলাকালিন একটি বাচ্চা সবার অগোচরে বাইরে বেরিয়ে পুকুরে ডুবে মারা যায়।
    দুই,একজন স্পেশাল এডুকেটর একটি
    বিশেষ শিশুর মাথা ফাটিয়ে দেয়।
    তিন,কয়েকদিন আগেই একটি সংবাদ পড়ি একটি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেয়ের একজন মন্দিরের পুরোহিত কর্তৃক নির্যাতিত হওয়া,ইত্যাদি আরো অসংখ্য দেশ জোড়া খবর।
    আমরাও ট্যাক্স দি।আমাদের এবং আমাদের বাচ্চাদের সমান অধিকার। বড় বড় মেট্রো শহরে ac ব্যাংকয়েটে বিসলারি জলের বোতলের সামনে অনেকেই আমাদের কথাও বলেন ।কিন্তু বাস্তব অন্য কথা বলে।
    আমাদের বাচ্চাদের জন্য সরকার খাতায় কলমে "সব বাচ্চার শিক্ষা র অধিকার"
    বলেছেন।কিন্তু আমরা যখন বাচ্চা কে ভর্তি করাতে যাই অন্য চিত্র। সোজা বাইরের দরজা
    দেখিয়ে দেয়া হয় মাঝে মধ্যেই।কারণ আমাদের বাচ্চারা স্পেশাল। আমি বিনায়করুকুর মা।বিনায়করুকুর অটিজম আছে সে একটি সাধারণ স্কুলে পড়াশোনা করে ।আমার প্রথম প্রথম প্রত্যেক টি বাচ্চার বাবা মা কে বোঝাতে হয়েছিল অটিজম ছোঁয়াচে রোগ নয়।
    আমাদের বাচ্চারা যতই সাধারণ স্কুলে পড়াশোনা করুক তাদের একটা সাহায্য লাগেই।হাতের লেখা ,বানান অনেক সময় বয়সের সাথে সাথে খুব ঠিক হয় না।অভ্যাসে পড়তে পারলেও অনেক বাচ্চাই একটা সময়ের পর জটিল পড়াশোনা নিতে পারে না।
    তারা স্বাভাবিক ভাবেই পিছিয়ে পরে।সেই সময় তাদের শিক্ষক রা ঠিক মত দেখলে একটু মনের জোর দিলে বোধকরি ভালো হয়।
    কারণ এরাও অবসাদে ভোগে বোঝাতে পারে না।বাচ্চা দের যদি আমরা একটু নজরে রাখতে পারি বোধকরি ভালো।কারণ স্কুলে শুধু মাত্র শিক্ষক শিক্ষিকা নয় কিছু অন্য মানুষ ও থাকেন যেমন দারোয়ান,care giver, বাস ড্রাইভার এরা কতটা নিরাপদ যদি আমরা দেখতে পারি।আজকের যুগে ছেলে বা মেয়ে কোন বাচ্চারাই নিরাপদ নয়।
    স্পেশাল স্কুলগুলিও কি খুব নিরাপদ।
    আমরা অভিভাবকরা একটু ভেবে চিন্তে
    অন্ততঃ সঠিক পরিকাঠামো আছে এমন দেখে স্কুল নির্বাচন করি তাহলে হয় তো ভালো হয়।
    অনেক সময় ই অটিস্টিক বাচ্চাদের বিপদ এবং বিপদজনক জিনিস সম্পর্কে ধারণা তৈরি
    হয় না।আমরা যদি নিজেরা একটু সতর্ক হই।
    আসলে সাবধানতা কথাটা খুব ভঙ্গুর। চাঁদ সওদাগরের বানানো লোহার বাসর ঘরেও ছিদ্র থেকে যায়।আমরা স্কুল গুলিতে সি সি টিভি, দারোয়ান,প্রভৃতি সুরক্ষা ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করার জন্য সরকারি আইন প্রয়োগ আনার দাবী তুলতে পারি।স্কুলের অনুষ্ঠান এর দিন শিক্ষকগণ ব্যস্ত থাকলে বাবা -মা কে স্কুলে থাকতে দেয়া হোক।যাতে বাচ্চা গুলি অসুরক্ষিত না থাকে।
    সব শিক্ষা র উপরে আমাদের বাচ্চাদের জীবন। সাঁতার শেখা সবার প্রয়োজন বিশেষ করে আমাদের বাচ্চাদের। সাঁতার জানলেও যে তারা জলে খুব নিরাপদ তাও নয় তবু বিপদের আশঙ্কা কম।
    আমাদের অনেক বাচ্চাদের জীবনে OT শিক্ষক,স্পেশাল এডুকেটর এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।এনাদের সাহায্য ছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের বাচ্চারা সঠিক ভাবে ট্রেনিং পাবে না ।তবুও বলি বাচ্চাদের সব অবস্থাতেই নজর রাখা প্রয়োজন।
    বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বাচ্চাদের ছোট থেকেই ভালো এবং খারাপ স্পর্শ সম্পর্কে তাদের মত করে জানিয়ে রাখা হয় তো ভালো।
    আমার একান্ত ব্যক্তিগত ধারণা এরাও মানুষ এদের ও যৌন চাহিদা থাকতেই পারে সেটা দোষের নয় দোষ হয় যখন কিছু সুবিধেবাদি অমানুষ এদের ব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে।
    তাই নজর আমাদের রাখতেই হবে লিঙ্গ নির্বিশেষে।
    ব্যক্তিগতভাবে বাচ্চার সামনে 'তোর বিয়ে দিয়ে দেব' জাতীয় কথা আমরা বলি না। আমার ছেলের 16 বছর বয়েস তার কিছু বিশেষ ইচ্ছে হতেই পারে, এই বিষয় টি সে তার পাপার সাথে share করে।ব্যক্তিগত ব্যাপার বোঝাতে আমরা তাকে একটি গোপন খাতা করতে বলেছি।যেখানে সে তার সমস্ত ইচ্ছে লিখে রাখে কারণ তার কোন এই বয়সের বন্ধু নেই।তার পাপা,আমি তার পল্লব দোস্ত(মাতামহ)যতই প্রিয় হোক সব কথা যে তাদের সাথে share করা যায় না এই টা সে বোঝে।
    ব্যক্তিগত আচরণ,বিয়ে, এবং অন্যান্য ব্যাপার সে কিছুটা টিভি দেখে বুঝেছে।কিছুটা পড়ে।আমি তাকে বলেছি সবাই বিয়ে করে "লাইসেন্স"পেলে একটা বয়েস হলে। ছেলে অথবা মেয়ে কারোর গায়ে বিনা অনুমতিতে হাত দেবেও না তোমার গায়েও হাত দিতে দেবেনা শিখিয়েছি।এই টুকুই চেষ্টা করেছি।
    আর অবশ্যই একা শোয়ানো।মানে নিজের খাটে,নিজের ঘরে একা শোয়া।
    আমাদের বাচ্চারা তাহলে সত্যি কি নিরাপদ?
    আমরা তাদের মুলস্রোতে সমাজের সবার সাথে চলার কথা ভাবছি ,তারা আগে বেঁচে থাকুক এই কামনা করি এই দুঃসময়ে।দেশ কাল সারা পৃথিবীর শিশুরা নিরাপদ থাকুক এক নীল সমুদ্র ভালোবাসা।
    সুমন।

    https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10215131333788471&id=1585735784
    https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10214785317178272&id=1585735784
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১২ নভেম্বর ২০১৮ | ২৭৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন