এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • করোনা- রোগের উপসর্গ মাত্র

    সোমনাথ রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১০ এপ্রিল ২০২০ | ৯৪০৭ বার পঠিত | রেটিং ৩.৫ (২ জন)

  • গত নভেম্বর থেকে কোভিড-১৯ অসুখ মানবদেহে প্রকট হতে শুরু করে, বিগত পাঁচমাসে বস্তুত কোনও সর্বশরীর গ্রাহ্য চিকিৎসাপদ্ধতি তৈরি হয় নি এই রোগের জন্য। প্রতিষেধকও যে সহজলভ্য হবে না তা বিলকুল বোঝা যাচ্ছে। ফলে, এই মুহূর্তে বিজ্ঞানের হাতে এই রোগের সুরাহা আছে, এরকম নয়। আর তাই, একমাত্র রাস্তা হিসেবে মানবগোষ্ঠীগুলির হাতে থাকছে রোগকে এড়িয়ে সুস্থ থাকার চেষ্টা করা। চিকিৎসা-চেতনার চলতি ধারণার নিরিখে এ এক ব্যতিক্রম বৈ-কী! আমাদের মধ্যে স্বচ্ছল শ্রেণির রোগভোগের মূল কারণ তার জীবনশৈলীজনিত; আমরা এই ধারণা নিয়েই বাঁচি যে শরীরের উপর অত্যাচার অনাচার যাই করি না কেন, চিকিৎসাবিজ্ঞান আমাদের বাঁচিয়ে নিয়ে যাবে। পরিমিত আহার, নিয়ন্ত্রিত যাপন বা কায়িক শ্রমের মধ্যে এক ভোগবিবর্জিত কৃচ্ছ আছে, তার চেয়ে ডাক্তার-পথ্যের আশ্রয় নেওয়া সহজতর আমাদের কাছে। তার উপর, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি বলতে ইদানীং আমরা পেয়ে এসেছি ম্যাজিকপ্রতিম এক বিস্ময়। আমরা নিজেরা সামান্যতম আয়াস স্বীকার করিনি, কিন্তু আমাদের মুঠো ভরিয়ে দিয়েছে নতুনতর প্রযুক্তি, সেলফোন, গাড়ি, এম্বেডেড সিস্টেমে। জীবন ও দুনিয়ার সকল সমস্যায় আমরা বিশ্বাস করতে শিখেছি বিজ্ঞান স্বর্গলোকের সমাধান নিয়ে আসবে। সেখানে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় বিজ্ঞান আর পাঁচটা সামাজিক ক্রিয়ার মতন একটা পদ্ধতি হয়েই দেখা দিচ্ছে, যার মধ্যে বিজ্ঞানী-কৌমের সমষ্টিগত অর্জন আছে, সেখান থেকে ভাইরাসটিকে বোঝার চেষ্টা আছে আর সেই বোঝার উপর দাঁড়িয়ে তার চিকিৎসা বা ভ্যাক্সিন প্রস্তাব করা এবং ডাক্তারি-গবেষণার পর্যায়গুলি মেনে সেই প্রতিষেধকের গ্রাহ্য হয়ে ওঠার পর্যায়টি আছে, যা ম্যাজিক নয়, সময় ও শ্রমসাধ্য পদ্ধতি। এর পাশাপাশি দেখছি এই রোগের সংক্রমণ হার এত বেশি যে উন্নততম দেশগুলোর পরিকাঠামো অবধি পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছে।

    ফলে, এই মহামারীটি আমাদের চলতি পৃথিবীকে তার চিন্তনের জগতেও এক বিপর্যয়ের সামনে এনে ফেলেছে, যেখানে বিজ্ঞানের স্বাভাবিক চলনে রোগটিকে কাবু করা যাচ্ছে না। বরং একমাত্র উপায় হয়ে উঠছে রোগের হাত থেকে নিজেদের বাঁচানো আর সেইটা করতে গিয়ে অর্থনীতির পা হড়কাচ্ছে। অথচ, আমরা একাধিক মহামারীর মধ্যে বাস করেছি। কেবলমাত্র যক্ষ্মারোগে ভারতে দিনপ্রতি গড়ে ৬৫০ জন মারা যান। কিন্তু, এই রোগগুলির মোটের উপর চিকিৎসা আছে, আর প্রান্তিক লোকজন এর শিকার হন, যাঁরা আমাদের চোখেই পড়েন না, তার তুলনায় কোভিড-১৯-এর ধ্বংসলীলা অনেকগুণ স্পেক্ট্যাকুলার। বিত্তনির্বিশেষে মানুষ এর সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। কোভিড-১৯ সামলানোর পদ্ধতিটিও অনুরূপ দর্শনীয় হয়ে উঠছে। আমরা লকডাউনের এক বিপুল আয়োজন দেখছি, যার মধ্যে দিয়ে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির প্রায় ধুধধুরি বেজে যাচ্ছে। অর্থনীতি-রাজনীতির আঙ্গিনায় প্রায় নিষিদ্ধতম উচ্চারণ এখন সরকারগুলির মুখে শোনা যাচ্ছে, মানুষকে নাকি ঘরে বসিয়ে খাইয়ে যেতে হবে, এই রোগের হাত থেকে রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হলে। এইবছরের অর্থনীতির নোবেল যিনি পেয়েছেন, তিনি বলছেন সরকারকে টাপা ছাপিয়ে লোকের হাতে তুলে দিতে হবে, সেই প্রভূত ইনফ্লেশনই নাকি টিকে থাকার একমাত্র উপায় হবে। অগুণতি মানুষ কাজ হারাচ্ছেন, আরও অগুণতি মানুষ হারাবেন- দরিদ্র মানুষের দুর্গতি অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে।

    ভারতের আধুনিক ইতিহাসে মারী বা মড়ক খুব কম আসে নি। মধ্যযুগের ভারতে বহু উপদেবতার আবির্ভাব হয়েছে, যাঁরা মারী হতে মানুষকে বাঁচানোর জন্য পুজো পেয়েছেন। যদিও প্রাক-বৃটিশ যুগে মড়কের মহামারী হয়ে ওঠা ইতিহাস খুব স্পষ্ট নয়, তবু আচার বিচারের গণ-অভ্যাসে সংক্রামক ব্যাধির সঙ্গে সংঘাতের স্মৃতি উঁকি মারে। ব্রিটিশ যুগের একদম গোড়ার থেকে এদেশে মহামারীর ঘনঘটা দেখা যায়। প্রাক-বৃটিশ ভারতে সমাজ খুবই শক্তিশালী ছিল, গণস্বাস্থ্য, গণশিক্ষার দায়িত্ব সমাজের হাতেই থাকত। ব্রিটিশ লুন্ঠনের মুখে সামাজিক সংগঠনগুলি ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এদেশে সংক্রামক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব প্রভূত বাড়তে শুরু করে। কখনো দেখি গুটিবসন্তের মহামারী ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নেমে আসছে, কখনও দেখি কলকাতা শহর গঠনের শুরুর পর্যায়ে এই অঞ্চল থেকে কলেরা ছড়িয়ে পড়ছে সমগ্র সাম্রাজ্যে। বাইরে থেকে এদেশে আসা মহামারীর ক্ষেত্রে দুটি আলাদা করে উল্লেখযোগ্য, ১৮৯৬-৯৯ এর প্লেগ এবং ১৯১৮-এর স্প্যানিশ ফ্লু। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে ঐ প্লেগের গুরুত্ব আলাদা করে উল্লেখ করার মতোন। প্লেগ দমনের নামে ব্রিটিশ সরকারের দমনমূলক আইন প্রণয়ন এবং শাসননীতি মহারাষ্ট্রের গুপ্তসমিতিগুলিকে সক্রিয় করে তোলে (প্লেগ কমিশনার র‍্যান্ড হত্যা), তেমনি প্লেগের ত্রাণকার্যে ঝাঁপিয়ে পড়া বাঙলার যুবকদের মধ্যে থেকে গড়ে ওঠে স্বাধীনতা আন্দোলনের পরবর্তী যুগের নেতৃত্ব, এবং স্বাধীনতা সংগ্রামকে সামাজিক আন্দোলনে বিস্তৃত করার প্রাথমিক বনিয়াদও সমভবতঃ প্লেগের ত্রাণ থেকে গড়ে ওঠে। উল্লেখ্য গান্ধিজিও সম্ভবতঃ ভারতে তাঁর প্রথম অ্যাক্টিভিজম শুরু করেন প্লেগের সময়েই। হংকং থেকে জাহাজে প্লেগের ইঁদুররা ভারতের বিভিন্ন বন্দরে এসেছিল। ক্রমে তারা সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। প্লেগ কীভাবে ছড়ালো, তার সূত্র গান্ধিজি হিন্দস্বরাজে দিয়েছেন- "যদি রেল না থাকত, হিন্দুস্তানে আজ প্লেগের যে বিস্তার তা থাকত না। রেলে প্লেগের বিস্তার হয়। রেল না থাকলে লোকের এদিক সেদিক যাতায়াত কমে যেত, আর ছোঁয়াচে রোগ দেশময় বিস্তৃত হতে পারত না। আগে আমরা স্বাভাবিক ভাবেই ব্যাধির সংক্রমণ থেকে পৃথক হয়ে থাকতাম। রেলে দুর্ভিক্ষও বেড়েছে"। হিন্দস্বরাজের এই অধ্যায়ে তিনি দেশের দুরবস্থার এক অন্যতম কারণ হিসেবে রেলকে চিহ্নিত করেছেন। এর পূর্বপ্রেক্ষিত দেখতে গেলে আমাদের রমেশ চন্দ্র দত্ত-র ইকনমিক হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া বইটিতে একটু তাকাতে হবে। রমেশচন্দ্র ১৮২৮-৩২ সালের ব্রিটিশ দস্তাবেজ ঘেঁটে দেখছেন কীভাবে ভারতের মানুষের দেয়া ট্যাক্সের টাকার ব্যায় সেচ এবং অন্যান্য জনমুখী খাতে বন্ধ হয়ে যায়, আর সেই টাকায় শুধুমাত্র ব্যবসায়িক ও প্রশাসনিক স্বার্থে ভারতের রেলব্যবস্থা গড়ে ওঠে। তিনি দেখাচ্ছেন ১৯০০ সাল অবধি রেলে যত বিনিয়োগ হয়েছে, তত বিনিয়োগ কমেছে সেচব্যবস্থায়। এবং ব্রিটিশ আমলাদের কেউ কেউও এই বিষয় লক্ষ্য করে নোট দিয়েছেন, রেল-এর পশুশক্তির বদলে জলপথ পরিবহনে জোর দিতে বলেছেন।

    একথা নিশ্চিত যে, দ্রুতগামী যান, যেমন রেল, প্লেনই মারীর মহামারী বা অতিমারী হয়ে ওঠার মূল বাহন। এবং এই পরিকাঠামো জনগণের টাকায় গড়ে ওঠে, তাদের সরাসরি কল্যাণকর কাজগুলির বরাদ্দ বঞ্চিত করেই। আমরা দেশজুড়ে যে বিশাল এয়ারপোর্ট আধুনিকীকরণের উদ্যোগ দেখছি গত দশক থেকে, তার কতটুকু আসলে গরিষ্ঠ জনতার কল্যাণ করছে সে প্রশ্ন উহ্য থেকেই যায়। বাণিজ্যের এই সংগঠন, বৃহিৎ বাণিজ্যের সুবিধার্থে বিশাল পরিকাঠামো গড়ে তোলা এই ধনতান্ত্রিক যুগের লক্ষণ এবং এই সংগঠনের পিছনে জনগণের শ্রমের মূল ভাগ নিয়োজিত হয়। এর ফলে নিশ্চিতভাবে বরাদ্দ কমে আসে গণমুখী কল্যাণপ্রকল্পগুলির। প্রাক ব্রিটিশ বাংলা যখন পৃথিবীর এক বিশাল অংশে বস্ত্র সরবরাহ করত, সে বিকেন্দ্রিভূত, অসংগঠিত উৎপাদন এবং বাণিজ্যের এক মডেল চালাত। কোনও বৃহৎ শিল্পবাণিজ্য লাঠামো গড়ে তোলার উদ্যোগ সেখানে ছিল না। ঐতিহাসিক দলিলগুলিতে দেখি, সেইসময়ে বাংলায় মানুষ মোটের উপর স্বচ্ছল। উত্তর-পলাশি যুগে বাংলার বয়নশিল্প ধ্বংস হল, বিশ্বের বস্ত্রবাজাররের উৎপাদন শুরু হল ইংল্যান্ডের মিউল গুলিতে। সেখানে স্থানীয় লোক বড় সংগঠিত মিলগুলিতে কাজ করতে শুরু করল, আর আশ্চর্যের বিষয় তাদের জীবনধারণ আগের থেকেও খারাপ হয়ে পড়ল (ইংল্যান্ডে শ্রমিক শ্রেণির অবস্থা, এংগেলস, ১৮৪৫)। অর্থাৎ, একই উৎপাদনে যখন বিকেন্দ্রিভূত সামাজিক শিল্পব্যবস্থা মানুষকে স্বচ্ছলতা দিত, বৃহৎ শিল্প সংগঠনে সে সংখ্যাগরিষ্ঠের দুরবস্থার কারণ হল। হয়ত কিছুটা একই ভাবে সংগঠিত শিল্পভিত্তিক ধনতন্ত্রের প্রাণকেন্দ্র শহরগুলি গড়ে ওঠার সময়ে সেখানে মানুষের ভালো থাকার মূল অক্ষগুলি অবহেলিত হল, কারণ এই শহরের বিকাশ হল কেবলমাত্র ঐ কেন্দ্রিভূত উদ্যোগ ও বাণিজ্যকে পুষ্ট করার স্বার্থে। তাই কি আমরা দেখতে পারি উনবিংশ শতাব্দীর কলকাতা হয়ে ওঠে এশিয়াটিক কলেরার বিশ্ব-আঁতুরঘর?

    এবার, স্প্যানিশ ফ্লু-র প্রসঙ্গে আসি। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন স্প্যানিশ ফ্লু অতিমারী ছড়িয়ে পড়ে। যুদ্ধফেরত সৈন্যরা বোম্বাই বন্দরে এই রোগ নিয়ে আসে, সেইখান থেকে ভারতের বাকি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এই ছড়িয়ে পড়ার প্যাটার্ন যদি দেখি, বোম্বাই থেকে যত দূরে গেছে এর প্রকোপ তত কমেছে, বাংলায় স্প্যানিশ ফ্লু সেরকম সাড়া ফেলে নি, পরিসংখ্যান সেরকমই। এও খেয়াল করা যায় ওই সময়ের বাংলা সাহিত্যে কলেরা ম্যালেরিয়া যক্ষ্মা বসন্ত ছড়িয়ে রয়েছে, স্প্যানিশ ফ্লু বলতে গেলে নেই-ই। স্প্যানিশ ফ্লু ভারতে এক কোটির বেশি প্রাণহানি ঘটায়। কিন্তু, যুদ্ধফেরত সৈনিকদের মূল (সম্ভবতঃ একমাত্র) পোর্ট অফ এন্ট্রি বোম্বে হওয়ায়, এই রোগের ধাঁচ হয় বোম্বে থেকে বিকীর্ণ হয়ে তার প্রকোপ যত দূরে গেছে তত কমে এসেছে এরকম। আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিই না, শিক্ষা নিয়ে ভারতে যদি একটি বা দুটি মাত্র পোর্ট অফ এন্ট্রি চালু রাখতাম, যদি বাইরে থেকে আসা যাত্রী ও বিমান সংখ্যা কমাতাম, কোভিড-১৯কেও নিয়ন্ত্রণ করা হয়ত সম্ভব হত। কতিপয় মানুষের আন্তর্দেশীয় চলাচল বন্ধ রাখলে বাকি বিশাল সংখ্যক মানুষকে সংক্রমণের আশঙ্কা বা বেরোজগারির দুরবস্থার মধ্যে একটা বেছে নিতে হচ্ছে এই আতান্তরে পড়তে হত না। আশ্চর্যের বিষয়, এইসব হিং টিং ছট প্রশ্ন আর আমাদের মাথার মধ্যে কামড়ায়ও না। কারণ আমরা ধনতন্ত্রের উচ্চতম পর্যায়ে আছি, যার নাম বিশ্বায়ন। আমাদের অঙ্কবইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টার গ্রোথ আর ফরেন ইনভেস্টমেন্ট!

    আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিই না, কারণ ঐতিহাসিকভাবেই আমরা একটা ভুল অর্থনৈতিক মডেলে গত আড়াইশ বছর হাঁটছি। শিক্ষা নিতে গেলে সেই মডেলটাকেই নাকচ করা হয়ে যায়, যা আমাদের আত্ম-অস্বীকৃতির সমতুল্য হবে! লকডাউনের দেশে আমাকে নিজের ঘরের কাজের একাংশ নিজেকে করতে হচ্ছে। দেখছি তাতে যা সময় যাচ্ছে তাতে আমি আমার মূল যে কাজটা ওয়ার্ক ফ্রম হোম হিসেবে দেওয়া আছে সেটাই করে উঠতে পারছি না। অথচ এই কাজটার জন্য আমি যে মাইনে পাই, তার ১/১০০ ভাগ পান সেই মহিলা যিনি আমার গৃহসহায়িকা। তার মানে আমার পেশাগত জীবন বস্তুত এক পরজীবিতার উপর দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে ১/১০০ ভাগ মাইনে নিয়ে আমাকে নিজের জীবনধারণের কাজগুলো করার থেকে অব্যাহতি না দিলে আমি বাকি ৯৯ ভাগ উপার্জনের কাজ করেই উঠতে পারব না! তবে এই হিসেব ভারতবর্ষের নিরিখে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে মানুষ অধিক পরিশ্রমী, নিজের গৃহস্থালীর কাজ নিজেই করে নেন। তাস্বত্ত্বেও পরজীবিতার সেখানে মডেল অচল তা নয়, সামগ্রিক ভাবে অগ্রণীসমাজগুলি দাঁড়িয়েই আছে পিছিয়ে পড়া সমাজসমূজকে ১/১০০ বা আরও কম প্রদেয় দিয়ে। আমরা এও দেখছি অর্থনীতি যত উন্নত হচ্ছে প্রকৃতি তত বিপর্যস্ত। গত কুড়ি বছরের কার্বন এমিশনের গ্রাফ দেখলে একমাত্র বিশ্ব-মন্দায়নের ২০০৯ ছাড়া সব বছরেই এমিশন আগের বছরের থেকে বর্ধিত হারে বেড়েছে। অর্থাৎ, এই অর্থনীতির মডেলে মন্দা না এলে প্রকৃতি বিপন্ন হবে। আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারি, এই মডেল হাজার বছর চলার নয়, একশ বছর তো নয়ই। কিন্তু, আমাদের ভরসা ওই বিজ্ঞানের ওপর, সে নাকি ম্যাজিকের মতন এর সুরাহা এনে দেবে। এমন শক্তি এনে দেবে যা কার্বন এমিট করে না, এমন প্লাস্টিক বানিয়ে দেবে যা দূষণ ছড়ায় না, ইত্যাদি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যদি তাপগতিবিদ্যার সূত্রগুলিকে ভেঙে ফেলতে পারত সেটা হত বটে। দুঃখের বিষয় বিজ্ঞান সেখানে নেহাৎ-ই নিয়মের নিগড়ে বাঁধা এক প্রক্রিয়া, ঐশী চমৎকার নয়।

    কোভিড-১৯ সেই দেশগুলিতে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে, যারা এই অর্থনৈতিক মডেলে অগ্রণীতম। আমদানি-রফতানিতে এগিয়ে থাকা প্রথম কুড়িটি দেশে থাকাই যেন এই মহামারীর তালিকায় এগিয়ে থাকার পাসপোর্ট (ইরান বাদে)। তাদের মধ্যেও সেই দেশগুলি বেশি আক্রান্ত হচ্ছে যাদের আমদানি-রফতানি জিডিপির ৩০%-এর কিছু বেশি। অর্থাৎ, যেসব দেশের টিকে থাকা বাইরের দেশের উপর নির্ভরশীল, তারা এই মহামারীর কাছে তত ভালনারেবল। যেখানে বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগের আবশ্যকতা কম, সেখানে অবস্থা তুলনায় সহনীয়। ভারতেও যদি দেখি, মেট্রো শহরগুলির মধ্যে বিদেশ-যোগাযোগ সবচেয়ে দুর্বল কলকাতায়, আর নিশ্চিতভাবে সেইজন্যই, কোভিড-১৯-এর ছড়িয়ে পড়া কলকাতায় কম। ভেবে দেখলে লক ডাউনের যুগেও সেইসব এলাকার মানুষ সহজে বাঁচতে পারবে, যেখানে বৈশ্বিক যোগাযোগের প্রয়োজন কম, নিজের চাল-ডাল-সবজি-মাছ-দুধের কিছু নিজে বানিয়ে নেয়। সেইসব মানুষও কাজ চালাতে পারবেন, যাঁরা মূলতঃ স্থানীয় মানুষের জন্য কাজ চালান। ধরা যাক, যদি এরকম একটা মডেল থাকত যে ন্যূনতম খাওয়া পরার নিরিখে প্রতিটি অঞ্চল স্বয়ংসম্পূর্ণ, ব্যাপক হারে লক ডাউন করার কোথাও কোনও প্রয়োজন হত না। সে শুধুমাত্র বাইরের থেকে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করে চালিয়ে নিতে পারত। ভারতের কয়েকটি গ্রাম লকডাউনের নিজস্ব অর্থ বানিয়ে নিয়েছে গ্রামের বাইরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে। সমস্যাটা হল আমাদের ব্যবস্থায়, কোনও গ্রাম বা জেলা কে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার দিকে লক্ষ্য দেওয়া হয় না, বরং লক্ষ্য রাখা হয় সে যাতে পরজীবিতার অর্থনীতিকে পুষ্ট করে যেতে পারে, শহরকে রসদ জুগিয়ে যেতে পারে।

    আসল অসুখ তাই, এই অর্থনীতির মডেলটির। সেই মডেলের বিকাশের পর্যায়ে ধনতন্ত্রের সবচেয়ে দুর্বিষহ রূপটি আমরা দেখছি বিশ্বায়ন নামে। চিনেরা কয়েক হাজার বছর ধরে হয়ত প্যাঙ্গোলিন খেয়ে এসেছে, তা থেকে রোগ-বিসুখও হয়েছে নিশ্চয়ই। এই কোটি কোটি এয়ারলাইন্স আর হাইস্পিড রেল না থাকলে এই অসুখ চিনের কিছু প্রদেশে থাকত, ক্রমে লোকে সুস্থ হয়ে উঠত। কিন্তু, বিশ্বায়নের ম্যাজিকে সেই রোগ আমার আপনারর ঘরের চাল ডাল দুধের বোতলে লেগে থাকছে। রোগ থেকে বাঁচতে কোটি কোটি মানুষকে নিশ্চিত অর্ধাহার-অনাহারের পথে হাঁটতে হচ্ছে, সেখানে হয়ত কয়েক হাজার লোককে যাতায়াত কম করতে দিলেই এই রোগ আসত না। বস্তুত এই রোগ বড়লোকেরা এনে গরিবদের দিচ্ছেন! বিশ্ববাণিজ্যের এক সামান্য উপসর্গ কোভিড-১৯ অতিমারী। উপসর্গকে এড়াতে গিয়ে যেই না বিশ্ববাণিজ্যকে একটু থমকে যেতে হচ্ছে আর কলকাতার আকাশে তারা দেখা যাচ্ছে আর ব্রহ্মপুত্রের জলের স্বচ্ছতা বাড়ছে। একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় এবছর দক্ষিণবঙ্গে বজ্রপাতে কম লোক মারা যাবেন। অর্থনীতি থমকে গেলে প্রকৃতি সুস্থ হচ্ছে। তবে, এই অর্থনীতির থমকে থাকার ফল ভুগতে হচ্ছে কোটি জনতাকে, কারণ তাদের উৎপাদনশীলতার বিকাশ হয়েছে সিস্টেমের দাসত্ব করবার জন্য, নিজের খাওয়া পরাটুকু নিজেরা জোটানোর সামর্থ্য তাদের আসেনি, আমাদের চাষ অবধি পেট্রোপণ্য নির্ভর!

    এবার বসন্ত গত হলে, আবার আমরা ওই বিশ্বায়িত পুঁজির মডেলেই ফিরে যাব। এ কথাও নিশ্চিত ভাবে বলা যায় সভ্যতার এই মূল অসুখের বিবিধ উপসর্গ, সে প্রকৃতির বিপর্যয় হোক, সংস্কৃতির বিপর্যয় হোক বা কৃষকের আত্মহত্যার মহামারী হোক, বারে বারে ফিরে আসবে। আর, যতক্ষণ না আমরা ব্যবসাটাকে কামড়ে ধরতে পারব, ঐ উপসর্গের চিকিৎসাই হাতড়ে যেতে হবে!


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১০ এপ্রিল ২০২০ | ৯৪০৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Somnath Roy | ১২ এপ্রিল ২০২০ ০৯:৫০92210
  • কিছুটা সত্যি তো বটেই, সাহেবদের আলাদা করে ইঙজিনিয়ারিং ব্র্যাঞ্চের নাম বানাতে হয়েছিল- সিভিল!
    তবে বিভিন্ন প্রযুক্তি ধরে তার গড়ে ওঠার ইতিহাস পড়লে যোগাযোগ গুলো আকর্ষণীয় লাগবে।
  • dc | 108.162.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১০:১৬92211
  • সোমনাথবাবু, ক্যাপিটাল ইনভেস্ট না করলে বেশীর ভাগ প্রযুক্তিই যে আবিষ্কার হতো না বা আরও দেরীতে হতো সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। শুধু প্রযুক্তি কেন, ইনভেস্টর না থাকলে বহু বড়ো বড়ো আর্ট প্রোজেক্টও হতো না। আবারও বলি, আপনার লেখায় কার্যকারন সম্পর্কটা যেভাবে দেখিয়েছেন সেটা আমার ঠিক মনে হয়নি। ইনোভেশানের বা ইনভেনশানের জন্য টাকা অবশ্যই লেগেছে, কিন্তু ক্যাপিটালিস্টরা প্রফিট করার জন্য ইনোভেশান করিয়ে নিয়েছে, এরকম না। বরং বলা যায় ইনোভেশান হয়েছে আর সেগুলো ক্যাপিটালিস্টরা কাজে লাগিয়ে প্রফিট করেছে। টেকনোলজি বা ইনোভেশান অনেকটাই ক্যাপিটাল এর ওপর নির্ভরশীল হলেও তার একটা স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বা স্বতন্ত্র গতিপথ আছে। উল্টোটা না, কারন ক্যাপিটাল নিজে নিজে প্রফিট করে যেতে পারেনা (যার জন্য টেকনোলজিকে ফ্যাক্টরস অফ প্রোডাকশানের ফেসিলিটেটর হিসেবে ধরা হয়)।

    o আর S এর সাথে অনেকটা একমত। তবে o লিখেছেন "যদি গ্লোবালাইজেশনকে আভিধানিক অর্থে ধরি, তাহলে সেটা ক্যাপিটালিজমের অনেক আগে থেকে এক্সিস্ট করছে। সিল্ক রুটও গ্লোবালাইজেশনের উদাহরণ", এখানে আমার মনে হয় মোটামুটি আশি-নব্বুইএর গ্লোবালাইজেশান আর তার আগের গ্লোবালাইজীশান এর মধ্যে একটা স্কেলের পার্থক্য আছে। আশি-নব্বুই এর সময় থেকে অনেকগুলো টেকনোলজি একে অপরের সহায়ক হিসেবে আসে (কমিউনিকেশান-্ট্রাভেল-্সাপ্লাই চেন) যার ফলে গ্লোবালাইজেশান অনেক বেশী রিয়েল টাইম হয়ে ওঠে। মানে প্রায় একই সময়ে পৃথিবীর বহু অঞ্চল একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়, যা আগে সেভাবে হয়নি।

    যুদ্ধের জন্য বহু প্রযুক্তি এসেছে, সে তো বটেই। প্রথম যে পাথরটার একদিক সরু করে তোলা হয়েছিল সেটাও যুদ্ধের জন্য। টাকা আর যুদ্ধ, মানুষের ইতিহাসে দুটো কনস্ট্যান্ট ফ্যাক্টর।
  • dc | 172.69.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১০:৩২92213
  • "It was not that we did not know how to invent machinery, but our forefathers knew that, if we set our hearts after such things, we would become slaves and lose our moral fibre"

    এটাতেও আমার ভয়ানক আপত্তি আছে (মানে গান্ধীদাদুর বেশীরভাগ ব্যাপারেই আমার আপত্তি আছে, তবে সে অন্য কথা) ঃ-) এই সব মরালিটি ফরালিটির কথা উঠলেই আমার কেমন বদহজম হয়। মেশিনারির দিকে অতিরিক্ত মনোযোগ দিলে আমরা স্লেভ হয়ে যাব আর আমাদের মরাল ফাইবার আস্ত থাকবে না, এটার মানে কি? স্রেফ উদ্ভট কথা একটা।

    They, therefore, after due deliberation decided that we should only do what we could with our hands and feet. They saw that our real happiness and health consisted in a proper use of our hands and feet. - পাগলের প্রলাপ। আমাদের পূর্বপুরুষরা এসব টেকনোলজি আবিষ্কার করতে পারেনি, তাই সেগুলো ব্যবহার করেনি। তারা বসে সভা করে ঠিক করেছিল নাকি যে ভাই, স্টিম ইঞ্জিন ব্যবহার করবো না, তাতে আমাদের হাত পার ব্যবহার কমে যাবে?
  • dc | 172.69.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১০:৩২92212
  • "It was not that we did not know how to invent machinery, but our forefathers knew that, if we set our hearts after such things, we would become slaves and lose our moral fibre"

    এটাতেও আমার ভয়ানক আপত্তি আছে (মানে গান্ধীদাদুর বেশীরভাগ ব্যাপারেই আমার আপত্তি আছে, তবে সে অন্য কথা) ঃ-) এই সব মরালিটি ফরালিটির কথা উঠলেই আমার কেমন বদহজম হয়। মেশিনারির দিকে অতিরিক্ত মনোযোগ দিলে আমরা স্লেভ হয়ে যাব আর আমাদের মরাল ফাইবার আস্ত থাকবে না, এটার মানে কি? স্রেফ উদ্ভট কথা একটা।

    They, therefore, after due deliberation decided that we should only do what we could with our hands and feet. They saw that our real happiness and health consisted in a proper use of our hands and feet. - পাগলের প্রলাপ। আমাদের পূর্বপুরুষরা এসব টেকনোলজি আবিষ্কার করতে পারেনি, তাই সেগুলো ব্যবহার করেনি। তারা বসে সভা করে ঠিক করেছিল নাকি যে ভাই, স্টিম ইঞ্জিন ব্যবহার করবো না, তাতে আমাদের হাত পার ব্যবহার কমে যাবে?
  • o | 108.162.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১০:৩২92214
  • এটা মেনে নিতে কোন আপত্তিই নেই যে মিলিটারির টাকায় টেকনোলজি এগিয়েছে। ম্যানহাটান প্রজেক্ট হল সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এই সেদিন পর্যন্ত এমাইটিতে রিসার্চ চলত পেন্টাগনের ফান্ডে। ইন্টারনেট তৈরী হয়েছিল বিভিন্ন দেশের পাবলিকের কন্ট্রিবিউশনে। সেও চলে গেল মিলিটারির হাতে। জিপিএসের ইতিহাসও একইরকম, মিলিটারি পারপাসে ইউজ হত। এ ব্যাপারে আল্টিমেট গল্পটা হচ্ছে হার্ডি অ্যাপ্লায়েড ম্যাথকে ঘৃণা করতেন কারণ যুদ্ধের কাজে লাগত। নাম্বার থিয়োরি নিয়ে গর্ব করতেন যে কেউ ইউজ করতে পারবে না। এখন এনক্রিপশনের কাজে হুহা ইউজ হয়। এবার এগুলোর নেগেটিভ এফেক্টের জন্য যদি কেউ বিজ্ঞানের দায় অস্বীকার করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় উগ্রপন্থার পিছনে ধর্মের কোন দায় নেই সেটাও মানতে হবে। বা ভাইস ভার্সা। তো ব্যক্তিগতভাবে ধর্ম/বিজ্ঞানের দায়ের এই ডিবেটটা আমার কাছে রাজনৈতিকভাবে অসচেতন ডিবেট। ক্রিটিক করতে হলে স্টেট পলিসির ক্রিটিক করাটাই কাজের। ক্ষমতার স্ট্রাকচার বাদ দিয়ে 'এটা ভাল, এটা খারাপ' এরকম কোন মরালিটির স্ট্রাকচার দাঁড়ায় না। ইতিহাসের এমন কোন সময়ের কথা আমি জানি না যখন সব শান্তিকল্যাণ ছিল। আর গান্ধীর আর্গুমেন্টটা বেশ কাঁচা, ক্লাস স্ট্রাগলের ইতিহাস সম্পর্কে উদাসীন। হেভি মেশিনারি না থাকলেও মোটেই প্রাক ব্রিটিশ যুগে ফিউডাল সিস্টেমে সবাই সুখে ছিল না। মুঘল আমলে কৃষক বিদ্রোহগুলো ভয়াবহ শোষণের প্রমাণ দেয়। সভ্যতার ফ্রন্টিয়ারে দাঁড়িয়ে যে কনফ্লিক্ট ফেস করছি, সেটা থেকে পালিয়ে কি লাভ?
  • dc | 172.69.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১০:৫২92215
  • "তো ব্যক্তিগতভাবে ধর্ম/বিজ্ঞানের দায়ের এই ডিবেটটা আমার কাছে রাজনৈতিকভাবে অসচেতন ডিবেট। ক্রিটিক করতে হলে স্টেট পলিসির ক্রিটিক করাটাই কাজের। ক্ষমতার স্ট্রাকচার বাদ দিয়ে 'এটা ভাল, এটা খারাপ' এরকম কোন মরালিটির স্ট্রাকচার দাঁড়ায় না। ইতিহাসের এমন কোন সময়ের কথা আমি জানি না যখন সব শান্তিকল্যাণ ছিল।"

    একমত।

    "ইন্টারনেট তৈরী হয়েছিল বিভিন্ন দেশের পাবলিকের কন্ট্রিবিউশনে। সেও চলে গেল মিলিটারির হাতে"

    এটা কিন্তু ঠিক না। ইন্টারনেটের কাজ শুরুই হয়েছিল Darpaর টাকায়, মূল উদ্দেশ্য ছিল হার্ডেনেড কমিউনিকেশান সিস্টেম বানানো। পরে সেটা পাবলিকের কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়। ইন্টারনেট কিভাবে বড়ো হলো, সেই ইতিহাস দারুন ইন্টারেস্টিং। এটা পড়ে দেখতে পারেনঃ https://sciencenode.org/feature/a-brief-history-of-the-internet-.php

    এ ব্যাপারে আল্টিমেট গল্পটা হচ্ছে হার্ডি অ্যাপ্লায়েড ম্যাথকে ঘৃণা করতেন কারণ যুদ্ধের কাজে লাগত। নাম্বার থিয়োরি নিয়ে গর্ব করতেন যে কেউ ইউজ করতে পারবে না। এখন এনক্রিপশনের কাজে হুহা ইউজ হয়

    এমন কোন প্রসেস বা টেকনোলজি নেই যা যুদ্ধের কাজে ব্যাবহৃত হয়নি। কারন যুদ্ধ হলো মানুষের বেসিক ইনস্টিংক্ট।
  • o | 162.158.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১১:২৭92216
  • এটা নিয়ে অনেক ডিবেট আছে। পেন্টাগন-ফান্ডেড আরপানেটের বাইরে অনেক রিসার্চারের ইন্ডিভিজ্যুয়াল কন্ট্রিবিউশন ছিল। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব প্রজেক্টটা ছিল সার্নের। আরপানেটের মূল কন্ট্রিবিউশন বোধায় সার্কিট সুইচিংয়ের বদলে প্যাকেট সুইচিং ডিজাইন করা।
  • b | 108.162.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১১:৪১92218
  • আবিষ্কার যদি বলেন তো চীন। চিলিচিকেন, চাউমিন, চশমা থেকে হালের কোভিড অবধি। কমপ্লিট প্যাকেজ।
  • o | 108.162.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১১:৫১92219
  • আর্মস্ট্রঙের কথা জানার পর থেকে ইন্ডিভিজ্যুয়াল রিসার্চার সম্পর্কে দুর্বলতা আছে। ঃ-)) আর্মস্ট্রঙ যখন এফএমের থিয়োরি ডেভেলপ করে দেখান এফএম মাচ বেটার দ্যান এএম, বড় বড় কোম্পানিগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ে কারণ কমার্শিয়াল এএম থেকে এফএমে শিফট করলে তাদের অনেক টাকা জলে যাবে। এটি অ্যান্ড টির কার্সন ম্যাথেমেটিক্যালি প্রুফ করেন ন্যারোব্যান্ড এফএম আর এএমের কোন পার্থক্য নেই, এক্সেপ্ট দ্য লোয়ার সাইড ব্যান্ড ইজ ইনভার্টেড। আর্মস্ট্রঙ ভদ্রলোক বিভিন্ন কোম্পানির মামলা-মোকদ্দমা, হ্যারাসমেন্টের বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে দেউলিয়া হয়ে যান। দাম্পত্যসম্পর্কও যাচ্ছেতাই বিটার হয়ে যায়। একদিন বউকে একটা চিঠি লিখে অ্যাপার্টমেন্টের জানলা খুলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঃ-))) বিয়ের সময় বোধায় বউকে উপহার দিয়েছিলেন একটা সুপার হেটেরোডাইন রেডিও। সব মিলিয়ে দারুণ রোম্যান্টিক ট্র্যাজেডি। ঃ-))
  • সুকি | 172.69.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:০৩92220
  • আমি শিওর যে এখানে যারা কমেন্ট করছেন তাঁরা সবাই বইটা পড়েছেন, তবুও উল্লেখ করে যাই, "গানস্‌, জার্মস অ্যান্ড স্টিল" (Guns , Germs and Steel ) । এখানে যে প্রসঙ্গগুলি আলোচনা হচ্ছে তার অনেককিছুর এই বইটাতে বেশ একটা ব্যালেন্সড ব্যাখ্যা আছে (আমার মতে)। আমি শিওর আরো অসংখ্যক বই আছে, নিজেও পড়েছি গুটিকতক, কিন্তু এই বইয়ের লেখকের ব্যাখ্যা আমার বেশ মনে ধরেছিল বলে আলাদা করে উল্লেখ করলাম।

    যেমন এই বইয়ের তেরো নম্বর চ্যাপ্টার হচ্ছে, 'ইভলিউশন অব টেকন্যোলজি" নিয়ে। কোট করতে হলে পুরো চ্যাপ্টারটাই কোট করতে হয়, আর টাইপ করতে ইচ্ছে করছে না অনুবাদ করে।

    These familiar examples (Steam Engine , Atomic Bomb , Cotton gin etc) deceive us into assuming that other major inventions were also responses to perceived needs. In fact, many or most inventions were developed by people driven by curiosity or by a love of tinkering, in the absence of any initial demand for the product they had in mind. Once a device had been invented, the inventor then had to find an application for it. Only after it had been in use for a considerable time did consumers come to feel that they "needed" it. Still other devices, invented to serve one purpose, eventually found most of their use for other, unanticipated purposes.
    It may come as a surprise to learn that these inventions in search of a use include most of the major technological breakthroughs of modern times, ranging from the airplane and automobile, through the internal combustion engine and electric light bulb, to the phonograph and transistor. Thus, invention is often the mother of necessity, rather than vice versa.
  • hkg | 162.158.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:১৩92222
  • b | 108.162.215.63 | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১১:৪১92218
    আবিষ্কার যদি বলেন তো চীন। চিলিচিকেন, চাউমিন, চশমা থেকে হালের কোভিড অবধি। কমপ্লিট প্যাকেজ।
    :-)))))

    মাঝে আমাদের চেয়ারম্যান কে ভুলবেন না ;-)
  • dc | 108.162.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:২০92225
  • এই বইটা বোধায় পড়েছি, ঠিক মনে পড়ছে না। নাম তো শুনেইছি। টেকনোলজির বিবর্তন বা আবিষ্কারের ইতিহাস নিয়ে আরও দুয়েকটা বইও পড়েছি। টেকনোলজি, পলিটিক্স, ক্যাপিটাল, পাওয়ার ইত্যাদির মধ্যে বহুমুখী জটিল সম্পর্ক আছে, যেটা r2h বললেন। তবে মোটামুটিভাবে নতুন টেকনোলজি আবিষ্কার করার প্রবৃত্তিটা কার্যকারন সম্পর্কে আগে থাকবে মনে হয়, কারন আবিষ্কার করার প্রবৃত্তি মানুষের বেসিক নেচার (যুদ্ধ করার প্রবৃত্তিও বেসিক নেচার)। আর সুকি যে প্যারাটা কোট করলেন সেটাও কিছুটা ঠিক মনে হয়, সেটাই বলতে চাইছি - প্রচুর প্রচুর ছোটছোট ইনক্রিমেন্টাল উদ্ভাবন হয়েই চলেছে, কখনো কখনো এগুলোই একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে আর সভ্যতা সেই পথেই এগিয়েছে। সেজন্যই মনে হয়, সোমনাথবাবু যেটা বলতে চাইছেন, ক্যাপিটালিস্টরা ঠিক করেছে কি কি টেকনোলজি আবিষ্কার আর ব্যবহার হবে, সেটা ঠিক না।
  • dc | 108.162.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:২১92227
  • চায়নাম্যান ভুললে হবে?
  • dc | 108.162.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:২১92226
  • চায়নাম্যান ভুললে হবে?
  • hkg | 162.158.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:৫৩92230
  • দেখুন , আমার মানে হয়েছিল , সোমনাথ বাবুর আর্গুমেন্ট এর ইমপ্লিকেশান তা বেশ বড়ো। মানে শুধুই শিল্প বিপ্লবের শুরুর দিকের বার্মিংহ্যাম সংলগ্ন মিডল্যান্ডস এর মেশিন-ব্রেকার লাডাইট এর প্রতিক্রিয়া বা শুধুই প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের নিবিড় নৈকট্যের অবক্ষয় সম্পর্কে রোমান্টিক বুদ্ধিজীবী দের প্রতিক্রিয়ার (ধরুন কনস্টেবল এর ছবি) বিষয় না। বা শুধুই জার্মানির ক্ষেত্রে যেরকম, পাস্তোরাল অতীত সম্পর্কে গদগদ হওয়া র ইতিহাসের মতো ও না। বা শুধুই প্রযুক্তির ইতিহাসের বিষহয় না।

    ক্যাপিটালিজম কে , ইউরোপে, নর্থ ইউরোপের রিফর্মেশান এর ইতিহাস এর সঙ্গে মিলিয়ে না দেখা প্রায় অসম্ভব ( ঘটনার সমসাময়িকতার কারণে, জন অসবর্ন এর মার্টিন লুথার সম্পর্কে নাটকটি বা এঙ্গেলস র জার্মানির কৃশিজীবীদের বিদ্রোহ সম্পর্কে প্রবন্ধ গুলি না মনে পড়াও প্রায় অসম্ভব ) , এবং চার্চ তথা রাজন্য দের হাত থেকে মানুষহের মুক্তির একটা পথ হিসেবে ও না দেখা কঠিন। তাই ক্যাপিটালিজম এর বস্তুবাদী ক্রিটিক গুলি , ক্যাপিটালিজম এর কাছ থেকে মূলত: শ্রমের সম্মান আদায় করার কোথায় বলে এসেছে, অতীতচারী হয় নি। অন্যদিকে গান্ধীর ক্ষেত্রে, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতার রাজনৈতিক সংগ্রাম খুব স্বাভাবিক ভাবেই ইউরোপীয় ক্যাপিটালিজম এর , তার প্রযুক্তির বিচিত্র বিরোধিতার দিকে নিয়ে গেছে। কিন্তু সোমনাথ বাবুর আর্গুমেন্ট এখানে থেমে থাকে নি, বরঞ্চ আমার অন্তত মনে হয়েছে দুটো ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন ওপেন আপ করেছে।

    এক- আমাদের দেশের প্রি কলোনিয়াল আরবানিটি , তার বিভিন্ন ও`ৎপাদন ব্যবস্থা ও সম্পর্ক নিয়ে, ইসলাম এবং ভক্তিবাদের পাশাপাশি একটি তৃতীয় সোশাল মোবিলিটির শক্তি হিসেবে ছিল কিনা, থাকলে কতটা তার ব্যাপকতা ছিল। আর তার নির্ধারণ শুধুই পোস্টকলোনিয়াল তত্ত্বের ফ্রেমে সম্ভব কিনা।
    দুই - আমেরিকার ক্ষেত্রে, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা বা প্রযুক্তি র উদ্ভাবন কোনোটাই বাজার দখল এবং সাঙস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতিতে মরাল ক্যাম্পাস হিসেবে কাজ করে নি, বরঞ্চ ইন্ধন জুগিয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতা র সঙ্গে সেখানকার ক্যাপিটালের এর সম্পর্কে র ওঠা পড়ার ইতিহাস ও এর মধ্যেই প্রোথিত। রাশট্রে সামাজিক অন্তর্ভুক্তির ইতিহাস নেহাত ই গ্রেট ডিপ্রেসন এর ঠ্যাকায় পরে তৈরী হওয়া। যদিও তার এচিভমেন্ট ও ব্যাপকতা এবং রাষ্ট্রকে সহনীয় করে তোলার প্রয়োজনীয়তার কাজে লেগেছে। গ্লোবালাইজেশন , আজকের ব্যবহারিক অর্থে শব্দ টি, এর ই কন্টিন্যুয়েশন মাত্র।

    এবার এই ভাবে দেখলে প্যান্ডেমিক পরিস্থিতি গ্লোবাল অর্ডার কাছে অবশ্যই একটা চ্যালেঞ্জ। এবং ক্যাপিটালিজম এর প্রতিটি সংকট থেকেই সফল উত্থানের ন্যারেটিভ কে একটা গুঁতো মারে। অবশ্যই। এবং ক্যাপিটালিজম যে মূলত একটা সংকট থেকে আরেকটা সংকট এ ক্ষমতা কেন্দ্রের পার্পেচুয়েশানের শিল্প বিপ্লব এর থেকে নিরবিচ্ছিন্ন গল্প ই থাকবে না শুধু মৃত্যুর সংখ্যা টি ই সেই আরামকেদারা থেকে তাকে ছুড়ছে ফেলবে, সেটা অবশ্যই একটা প্রশ্ন, সেটা কে সোমনাথ বাবু আড্রেস করার পরিকল্পনা করেছেন ক্লিয়ারলি, আমার সেই এফর্ট টা তাত্ত্বিক দিকে থেকে সঠিক এবং প্রয়োজনীয় বলেই মনে হয়েছে।
    বিষয় হিসেবে বলা যেতে পারে ক্যাপিটালিজম এর তাত্ত্বিক রা, এবং ক্রিটিক রা , ক্যাপিটালিজম কে কখনোই একটি ওয়ার্ল্ড সিস্টেম হিসেবেই দেখেছেন। এমনকি যারা একটি দেশে বিপ্লব করার কথা, বা একটি দেশের জন্য ভালো উন্নয়নন পন্থা, বা শিল্পনীতির বা শ্রমনীতির দাবী করেছেন তারাও। কিন্তু ইতিহাসের ক্ষেত্রে বা সমাজতত্ত্বের ক্ষেত্রে, দুর্দান্ত আলোচনা ও মূলত রাষ্ট্রীয় গন্ডীর মধ্যে থেকে গেছে। এটার মূল কারণ এরকম নয় , অর্থনীতির মতো তার সঙ্গে স্টেট্ ক্রাফটের সম্পর্ক গভীর, এর মূল কারণ স্পেসিফিসিটি র একটা অমোঘ প্রয়োজন। এভিডেন্স সংগ্রহের ক্ষেত্রে। কিন্তু তবু আমার সোমনাথ বাবুর লেখা পরে , আন্দ্রে গুন্ডার ফ্র্যাংক বা ওয়ালারস্টাইনের লেখা টুকরো টাকরা যা পরিচয় ঘটেছিলো তার কথা মনে পড়েছে, এবং প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে।
  • hkg | 162.158.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:৫৪92232
  • ***আদায় করার কথাই বলে এসেছে।
  • hkg | 162.158.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:৫৬92233
  • **মরাল কম্পাস হিসেবে কাজ করে নি।
  • hkg | 162.158.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:৫৮92234
  • --*বিষয় হিসেবে অর্থনীতির সীমানায় - ক্যাপিটালিজম এর তাত্ত্বিকেরা ক্যাপিটালিজম কে বরাবর ই ওয়ার্ল্ড সিস্টেম হিসেবেই দেখেছেন।
  • S | 162.158.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১৩:২৫92235
  • "এমন কোন প্রসেস বা টেকনোলজি নেই যা যুদ্ধের কাজে ব্যাবহৃত হয়নি। কারন যুদ্ধ হলো মানুষের বেসিক ইনস্টিংক্ট।"

    আসলে যুদ্ধ হল সবথেকে বড় ইনভেস্টমেন্ট।
  • dc | 108.162.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৩৪92237
  • " সোমনাথ বাবুর আর্গুমেন্ট এর ইমপ্লিকেশান তা বেশ বড়ো" - এটা আমারও মনে হয়েছে। আমার মতে এই ইমপ্লিকেশানটা ভুল, কারনগুলো ওপরের পোস্টেগুলোতে লিখেছি।
  • হখগ | 162.158.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৪০92238
  • ****"কিন্তু তবু আমার সোমনাথ বাবুর লেখা পরে , আন্দ্রে গুন্ডার ফ্র্যাংক বা ওয়ালারস্টাইনের লেখা টুকরো টাকরা যা পরিচয় ঘটেছিলো তার কথা মনে পড়েছে, এবং প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে।"

    শুভ বি রেড আ্যজ ----

    "সে কারণেই আমার সোমনাথ বাবুর লেখা পড়ে , আন্দ্রে গুন্ডার ফ্র্যাংক বা ওয়ালারস্টাইনের লেখা টুকরো টাকরা যা পরিচয় ঘটেছিলো তার কথা মনে পড়েছে, এবং খুব ই প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে।"
  • আচ্ছা | 172.69.***.*** | ১৩ এপ্রিল ২০২০ ১৬:২৬92269
  • 'রেলে দুর্ভিক্ষও বেড়েছে'

    এটি কীভাবে?
  • hkg | 162.158.***.*** | ১৩ এপ্রিল ২০২০ ১৭:২৭92276
  • বাবা চারিদিকে আচ্ছা :-) এরকম ব্রড এগ্রিমেন্ট এর পরেও এতো পোশ্নো কোল্লে হবে?
  • আচ্ছা | 162.158.***.*** | ১৩ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৪১92277
  • উত্তরটা আপনিই দিন ; -)-
  • হখগ | 162.158.***.*** | ১৩ এপ্রিল ২০২০ ২৩:৪৬92288
  • দেখুন সোমনাথ বাবু আগ্রহ পান কিনা:-))))))
  • Somnath Roy | ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৩১92297
  • To quote just one example, G. D. Panse, collector of Bijapur, testified before the Indian Famine Commission of 1898: In olden times when there were no facilities of communication and export, cultivators, it is said, used to sow jowari in large quantities and very little land was given to growing the other food-grains, such as wheat, gram, etc. The area under cotton was also small. But with the opening of the railway and the greater facilities afforded for communication and export the ryots, with a desire to make money, devote a larger area than before to such crops the yield of which is exported. The consequence is that they have very small stocks of jowari in reserve to fall back upon in times of scarcity like the present when the year's harvest happens to fail.

    The shipments of wheat and rice in excess of those bound for the ports moved within India in response to price differentials among regions. Railroads, however, were not adequate by themselves to prevent crop failures or to prevent people from dying during such failures. Railroads could perform the crucial task of moving grain from one part of India to another, but they could not assure that hungry people would have the money to buy that grain. 
    https://www.cambridge.org/core/journals/journal-of-economic-history/article/dearth-famine-and-risk-the-changing-impact-of-crop-failures-in-western-india-18701920/4D1E70EE47BCA2FC0E8A67C97E733883

    এরকম আরও অনেক কাজ আছে, যেখানে দেখানো হয়েছে রেলের মাধ্যমে খাদ্যশস্য এক জায়গা থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ায় দুর্ভিক্ষ হচ্ছে। এবং কৃষিপণ্যের বাজার তৈরি হওয়ায় খাদ্যশস্যের বদলে ক্যাশক্রপ চাষ হচ্ছে ও খাদ্যনিরপত্তা কমে যাচ্ছে,। বিশেষতঃ ১৮৭০-১৯০০ দুর্ভিক্ষগুলির জন্যে রেলের প্রভাব নিয়ে অনেকে আলোচনা করেছেন। গুগল স্কলারে ঢুকে দেখতে পারবেন।

  • dc | 172.69.***.*** | ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৪৩92298
  • তাহলে রেল লাইন পাতার জন্য দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। রেল লাইন পাতা খুব অন্যায় কাজ হয়েছে দেখছি। এর বিরুদ্ধে একটা রেট্রো আন্দোলন করলে হয়।
  • S | 108.162.***.*** | ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৪৬92299
  • আরে ধুর, এর জন্য তো সেইসময়ের বৃটিশ সরকারের পলিসি দায়ী। এখনও বহু শস্য পুড়িয়ে ফেলা হয়, তার জন্য কে দায়ী? আগুন?
  • Somnath Roy | ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৫৯92300
  • রেল পাতাও ব্রিটিশ পলিসি। দুটোকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না, এই বক্তব্য।

  • dc | 172.69.***.*** | ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৯:১১92301
  • রেল, এরোপ্লেন, আর জাহাজই যতো নষ্টের গোড়া। ক্যাপিটালিস্টরা কেন এগুলোর আবিষ্কার করালো? খুব খারাপ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন