এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • হল্যান্ডের গল্প - ২ - হাওয়া-কল আর টিউলিপের রাজ্যে 

    সুদীপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ১৯ মে ২০২৩ | ১৩৭০ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • হল্যান্ড ওরফে নেদারল্যান্ডস এমন একটা দেশ যেখানে আবহাওয়া কখন ভালো হবে বা কখন চনমনে রোদ উঠবে, সেকথা ভেবে বসে থাকলে কোথাও ঘোরাই যাবে না। মানে রোদ-ঝলমল সকাল দেখে বেরিয়েও দশ মিনিটের মধ্যে বৃষ্টি এসে আপনাকে ভিজিয়ে দিতে পারে। হাওয়া তো আছেই সে-কথা আর আলাদা করে বলার নয়, তাপমাত্রা সব সময়েই পাঁচ ডিগ্রী কমিয়ে ধরতে হবে। প্রথম শনিবারটা সকালে উঠে ভেবে রাখলাম শহরের বাইরে কোথাও হাওয়া কল বা ট্র্যাডিশনাল উইন্ডমিল দেখতে যাব। সেইমত, চটপট প্রাতঃরাশ সেরে বেরিয়ে পড়লাম। এয়ারপোর্ট থেকে স্প্রিন্টার ধরে যাব স্লটারডিক, তারপর সেখান থেকে আবার অন্য এক স্প্রিন্টারে যাব 'জানডাইক - জ্যানসে স্ক্যানস' - হ্যাঁ স্টেশনের নাম ঠিক সেটাই। পুরো যাত্রাটাই একটা রিটার্ন টিকিটে সারা হয়ে যায়। জ্যানসে স্ক্যানস আদতে একটি গ্রামের গন্ধ-মাখা মফঃস্বল (কান্ট্রি-সাইড বলা চলে)। স্লটারডিক থেকে যখন ট্রেনে উঠলাম বেশ কিছু ইউরোপীয় আর জাপানী পরিবার উঠল, কথাবার্তায় বোঝা গেল এঁরাও চলেছেন একই গন্তব্যে, সুতরাং পর্যটক। আগে থেকে মোটামুটি জায়গাটা দেখে রেখেছিলাম ম্যাপে আর গুগল করে। জানডাইক স্টেশন একেবারেই ফাঁকা , প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে সাবওয়ে থেকে উঠে এসে স্টেশনের বাইরে বের হতেই বাঁদিকে সবার আগে চোখে পড়ল একটা পেল্লাই সাইজের ম্যাপ। ম্যাপে পুরো চত্বরটাই সুন্দর দিক-নির্দেশ করে দেখানো আছে কোথায় কিভাবে যেতে হবে আরে কি কি দ্রষ্টব্য। ছবি তুলে রাখলাম ম্যাপটার আর পা বাড়ালাম।
     
    আকাশে মেঘ রয়েছে থমথমে, তবে বৃষ্টি এখনো নেই। প্রথমে বেশ খানিকটা সোজা রাস্তা, দুপাশে গাছের সারি আর সুন্দর সাজানো বাড়ি-ঘর।  রাস্তার বাঁ পাশে বেশ কিছু কল-কারখানাও চোখে পড়ল। গ্রাম বা কান্ট্রি-সাইডের তেমন নাম-গন্ধ নেই। দশ পা মত এগোতেই কোকোয়া আর চকোলেটের মিষ্টি গন্ধে ভরে উঠল চারদিক, পাশে দেখি একটা চকোলেটের ফ্যাক্টরি, উৎপাদন চলছে পুরোদমে, আর সেই স্বর্গীয় সুবাস বাতাসে মিশে ছড়িয়ে পড়ছে পুরো এলাকায়। খানিক দাঁড়িয়ে প্রাণ ভরে সেই সুবাস নিলাম, তারপর আবার চলা। একই পথে সেই বাকি পর্যটকের দল-ও চলেছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে, তবে কোনো হই-হল্লা নেই। কিছুটা গিয়ে বাঁদিকে মোড় ঘুরেই একটু দূরে চোখে পড়ল একটা ট্র্যাডিশনাল উইন্ডমিল। তবে কিছুদূর এগিয়ে বুঝলাম এটি কাজ করে না, বরং নীচে একটি খাবারের দোকান আর বাকিটুকু সাজিয়ে রাখার জন্যে।  
     
    জানডাইক স্টেশন থেকে বেরিয়েই জনবিরল রাস্তা, ঠিক বাঁপাশে দুটি বাড়ি পরেই সেই সুবাসিত চকোলেট ফ্যাক্টরি

     
    এই সেই উইন্ডমিল পথের বাঁকে 

     
    এর ঠিক পাশ দিয়ে দেখতে পেলাম একটি নদী আর তার উপর দিয়ে এপাশের অঞ্চলটিকে ওপাশের সাথে যুক্ত করেছে একটি টানাসেতু,যাকে বলে bascule ব্রিজ। বড় জাহাজ বা নৌকো যেতে হলে ব্রিজ মাঝখান থেকে তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা আছে। নীচে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে জান নদী। এ-নদী বেশ গম্ভীর, ছলাৎ-ছল কম, তবে স্রোত আছে ভালোই।  কিছুদূরে কয়েকটা ছোটো ছোটো ফিশিং বোট ঘুরে বেড়াচ্ছে। ব্রিজে ওঠার মুখে আবার বৃষ্টি শুরু হল ঝিরিঝির। মাঝামাঝি এসে দাঁড়াতে নদীর দুপাশ বেশ সুন্দর দেখা গেল। একপাশে পরপর সুন্দর বাড়ির সারি, একই মাপের একই রকম দেখতে এমনকি রঙ আর কারুকাজ পর্যন্ত একধরণের। নদীর বাঁপাশে বাড়িঘর বেশী, সঙ্গে কিছু কলকারখানাও চোখে পড়ে। আর নদীর আর একদিকে!  যা দেখতে এতদূর ছুটে আসা, উত্তর হল্যান্ডের যা বিশেষত্ব,সেই কাঠের তৈরী ট্র্যাডিশন্যাল উইন্ড-মিল!  সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে গুনে দেখলাম আটটা। এর মধ্যে তিনটে ঘুরে চলেছে, বাকি কিছু বন্ধ রাখা আছে কিছু চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে হয়ত! মেঘলা দিন, নদীর জলে কালো মেঘের ছায়া পড়েছে, একদিকে বাড়ির ছায়া, আর একদিকে হাওয়া-কলগুলোর ছায়া পড়েছে পরিষ্কার জলে, ওপাশে হাওয়া-কল পার হলে ধূ ধূ করছে সবুজ অন্তহীন মাঠ, এদিকে পাগলা হাওয়ার তো শেষ নেই, সব মিলিয়ে এই অপার্থিব দৃশ্য পা-দুটোকে যেন পাথর করে দিয়েছিল, সম্বিৎ ফিরল আর একদল পর্যটকের আগমনে, আশা করি এরা আমাকে পাগল ভাবে নি।  
     
    জান নদী, বাঁ পাশে বাড়ি-ঘর, ডানপাশে একটু দূর থেকে ট্র্যাডিশন্যাল  উইন্ডমিল-দের দেখা যাচ্ছে

     
    জান নদীর বাঁদিকের ঘর-বাড়ি, আহা প্যাটিওগুলো বড়-ই লোভনীয়! 

     
    ব্রিজ পার হতেই বাঁদিক দিয়ে সিঁড়ি নেমে গেছে নীচে, সামনে একটা সুন্দর ছোট্টো বাড়ি আর তার সামনে ততোধিক সুন্দর একটা ফুলের বাগান। সেটা পেরিয়ে একটা রাস্তায় পড়লাম, এটাই সোজা চলে গেছে ঐ হাওয়া-কলগুলোর দিকে। জেনে এসেছি, এখানে চীজ ফ্যাক্টরি আর উডেন শ্যু ফ্যাক্টরি - এ-দুটো বেশ ইউনিক ব্যাপার। তবে রাস্তায় এসে চারপাশটা দেখে থ হয়ে গেলাম, কি সুন্দর গ্রাম/মফঃস্বল রে বাপু!  ঘরগুলোয় মানুষ থাকে কি করে, ঘরগুলো-কেই তুলে নিয়ে যেন মিউজিয়ামে রাখা যায়! আর তার পাশে ছোটো ছোটো বাগান, সঙ্গে ছোট্টো ছোট্টো ব্রিজ বানিয়ে রাখা সরু নালা-গুলো টপকানোর জন্যে। সেগুলোর কারুকার্য-ও দেখার মত। নালা বলছি বটে, তবে এ-নালা টালি নালা বা কেষ্টপুর খাল নয়, রীতিমত টলটলে জল, ধার দিয়ে দিয়ে ফুলের সারি, কিছু নার্সিশাস, কিছু ড্যাফোডিলস, ঘাসের বন আর গুচ্ছ গুচ্ছ প্রজাপতি! মশার নামগন্ধ নেই বরং খানিক দাঁড়ালে প্রজাপতি গায়ে এসে বসতে পারে, আর দু-চারটে ভ্রমর গুনগুনিয়ে যেতে পারে। আমাদের মাধ্যমিকের ইংরেজির সিলেবাসে ড্যাফোডিলস বলে একটা কবিতা ছিল, ওয়ার্ডসওয়ার্থ সাহেবের। এই নালার ধারে সারি সারি তারা অপেক্ষা করবে, কে-ই বা জানত! আর তাদের রকম-সকম একেবারে যেন কবিতার পাতা থেকেই উঠে আসা - 'Tossing their heads in sprightly dance'! এখান থেকে এগিয়ে রাস্তাটা ধীরে ধীরে একটু উপরে উঠে গিয়েছে, ডানপাশের জমি একটু নীচুতে। জান নদীতে কি বান ডাকে? হতেও পারে, তবে এটা যে একটি বাঁধের কাজ করছে, সেটা বুঝতে বেগ পেতে হয় না। বাঁধের উপর দিয়েই রাস্তা। 
     

     

     

    নদীর ধারে বৃষ্টি-দিনে হঠাৎ দেখা! 

     
    রাস্তা দিয়ে কিছুটা হেঁটেই চোখে পড়ল বাঁদিকে সারি দিয়ে আটটা উইন্ডমিলস। তবে তিনটে কি চারটে চলছে, একটার মাথা থেকে কল খুলে নেওয়া হয়েছে। চারশো-সাড়ে চারশো বছর আগে তৈরী এই হাওয়া-কলগুলো। এগুলো এখনো যে চলছে, সেই এক বিস্ময়! এদের মধ্যে তিনটে স-মিল (কাঠ কাটা বা গুঁড়ো করার কল), তিনটে অয়েল মিল (তেল কল) আর একটা সর্ষে পেষাই কল আর একটা ডাই বা রঙের গুঁড়ো বানানোর কল। দে হুইসম্যান (দ্য হাউজম্যান), দে কাট (দ্য ক্যাট), দে জোকার (দ্য সীকার) এগুলো উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে আমি শুধু দে কাট হাওয়া-কলে ঢুকেছিলাম, কেমন করে কাজ করে দেখতে আর ঠান্ডা হাওয়া সামলাতে একটা হট চকোলেট, নীচের ক্যাফে-তে।  আর হুইসম্যান-এর পাশদিয়ে সুন্দর কাঠের প্ল্যাটফর্ম বানিয়ে রাখা একেবারে নদীর ভিতর অবধি, সেখান থেকে প্রায় পাঁচ-ছটা হাওয়া-কল সুন্দর দেখা যায় একসাথে! 
     

     

     

     
    "বুনোফুলে ঘুরে ঘুরে প্রজাপতি ক্লান্ত যখন
    শুঁয়োপোকা থামে যেই চেনা চেনা গাছের গুঁড়িতে,
    তখন বিকেল দেয় সন্ধের আল ধরে হানা, 
    গোধুলি আঙুল রাখে আলগোছে পথের ধুলিতে। 
    ব্যস্ত পর্যটক পিঁপড়ের সফর ফুরোয়
    বটগাছে গুটিপোকা গুটিসুটি মারে একা একা,
    রোদ্দুর ঘেঁটে ঘেঁটে শেষমেষ শরীর জুড়োয়; 
    গোধুলির আবছায়া ছুঁয়ে ছুঁয়ে সুবর্ণরেখা -
    দিনের আওয়াজ যেই ঝিঁঝির কোরাসে মিশে যায়।..."
     
    হ্যাঁ, প্রায়-জনশূন্য রাস্তায় দুদিকে সবুজ, একদিকে শান্ত নদী, মেঘলা দিন, নাম-না-জানা পাখিদের আর ঝিঁঝিঁ-র ডাক - পুরো পরিবেশটুকু এই বিভূতিভূষণ গানটাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল। শেষ অবধি হেঁটে গিয়ে মোলেন মিউজিয়ামের দেখা পেলাম, তবে ভেতরে আর যাই নি, হাওয়া-কলের বাকি ইতিহাস পড়ার জন্যে গুগল তো আছেই। ঘন্টা দুই পরে ফেরার পথে কিছুদূর আসার পর বাঁ দিকে বেশ কিছু ঘর-বাড়ি দেখা গেল আবার, গুগল ম্যাপে দেখে নিলাম সেদিকেই চীজ ফ্যাক্টরি আর উডেন শ্যু ফ্যাক্টরি। ততক্ষণে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে রাস্তায়, প্রথমেই পড়ল চীজ ফ্যাক্টরি, ভিতরে নানা রকমের, নানা স্বাদের আর রঙের চীজ, নিখরচায় স্বাদ দেখে বুঝে নিয়ে কিনতে চাইলে কেনা যায়, না-ও কেনা যায়। নানা রকমের চীজের স্বাদ নিয়ে মন খুশ করে দু ফালি 'গৌডসে কাস' ওরফে গৌডা চীজ (বস্তুটি গরুর দুধ থেকে তৈরী আর স্বাদ একেবারে গাওয়া ঘি জমিয়ে চীজ বানালে যা হয় তাই, গন্ধ আর স্বাদ প্রায় সেরকম-ই) নিয়ে বেরিয়ে এলাম।  পরবর্তী গন্তব্য উডেন শ্যু ফ্যাক্টরি। একেবারে পাক্কা কাঠের জুতো! এখানে ঢুকে প্রথমেই বেশ কিছু শো-কেসের ভিতরে নানা রকমের কারুকাজ আর গঠনের কাঠের জুতো, কিছু নাগরাই ধরণের জুতোর শুঁড় প্রায় শো-কেসের ছাদে গিয়ে ঠেকেছে! এক জায়গায় এমনকি একজোড়া আগাগোড়া হীরক-খচিত জুতো-ও সাজানো রয়েছে। তারপর দেখি সারা দোকান জুড়ে থাকে থাকে, এমনকি গোটা ছাদ জুড়ে নেমে এসেছে কাঠের জুতোর সারি, হরেক মাপের, হরেক রঙের! সার দেওয়া জুতো তো সব জুতোর দোকানেই থাকে, কিন্তু এমন কাঠের জুতো! আর তার এমন বাহার! সামনে এক জায়গায় দর্শকাসন করা রয়েছে, সেখানে একজন কারিগর যন্ত্রপাতি সহযোগে চোখের সামনেই বানিয়ে দেখাচ্ছেন কাঠের জুতো! আমাদের দেশে কাঠের জুতো বলতে খড়ম, পরেওছি বহুযুগ আগে দিন তিনেকের জন্যে একবার, সে অভিজ্ঞতা সুখের নয়, পা আর খড়ম বশে রাখা বিষম কষ্টসাধ্য ব্যাপার, আর এখানে কিনা লোকজন শখ করে কাঠের জুতো পরছে। তবে অভিনব ব্যাপার নি:সন্দেহে। 
     

     

     
    জুতোর ডগায় এক পিস কোহিনূর থাকলে মন্দ হত না! 

     

     

     
    বেরিয়ে এসে এবার সেই একই পথে ফিরে চলা জানডাইক স্টেশনের পথে। এবার ব্রিজে উঠে দেখি গেট ফেলে দিয়েছে, চলাচল বন্ধ। কি ব্যাপার, একটু পরেই পরিষ্কার হল, রীতিমতো ঘন্টা দিয়ে একদিকের সেতুর অংশ আলাদা হয়ে উপরে উঠে গেল, আর আমাদের ডানদিক থেকে পেল্লায় এক ট্রলার ভেঁপু বাজিয়ে পার হয়ে গেল। আবার পাঁচ মিনিট পর সেতু জোড়া লেগে গেল, গেট তুলে নিতে চলাচল শুরু! এ-ও দেখা হয়ে গেল এ যাত্রায়! বাকিটুকু হোটেলে ফেরা, পরের দিন সকালে যাবো কিউকেনহফ, হল্যান্ডের বিখ্যাত টিউলিপের বাগানে! 
     
    "থাক তব ভুবনের
    ধূলিমাখা চরণে 
    মাথা নত করে রব 
    বসন্ত এসে গেছে..."
     
    আর কারও না হোক, হল্যান্ডের কিউকেনহফ বাগানে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল এই রং-বেরঙের টিউলিপের চরণেই মাথা নত করি!  বসন্ত তো বটেই, তবে ফাগুন গিয়ে চৈত্র, কিন্তু হল্যান্ডে তাপমাত্রার ঘোরাফেরা এখনো ঐ ৫ থেকে ১২-১৩ র (সেন্টিগ্রেড) মধ্যে। আর টিউলিপের আনাগোনা শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। অ্যামস্টারড্যাম থেকে কিছুটা দক্ষিণ-পশ্চিমে টিউলিপের আড্ডা - কিউকেনহফ।  মোটামুটি ১৫ ই মার্চ থেকে ১৫ ই মে পর্যন্ত দু'মাস এই বাগান খুলে দেওয়া হয়। এবার,২০২৩ এ খুলেছে ২৩শে মার্চ। দেশ-বিদেশের পর্যটকের ভিড়ে ভরে যায় চত্বর। তবে এই বাগান সম্পর্কে প্রথম খবর পেলাম আমার হল্যান্ড-বাসী বন্ধু সৌরীশের কাছে। টিকিট-ও কেটে নিলাম, বাগানে প্রবেশের টিকিট  এর সঙ্গে  এয়ারপোর্ট থেকে এক্সপ্রেস বাসে যাতায়াত। আগের দিন জ্যানসে স্ক্যানস থেকে ফিরেছি, পরের দিন রবিবার, অন্ততঃ দুপুর পর্যন্ত কাজ-কর্ম নেই, সুতরাং সকাল ন'টার টিকিট নিয়ে নিলাম।  সকাল সকাল এয়ারপোর্ট চত্বর বেশ ফাঁকাই রয়েছে। একটা খোলা জায়গায় সেই বিখ্যাত 'I Amsterdam' চিহ্নটি রয়েছে, এটি আজকাল অবশ্য দীঘা-পুরী-মন্দারমণি-দার্জিলিং সর্বত্র-ই বিদ্যমান, তবে ইনিই হলেন তাদের সর্বাগ্রগণ্য পূর্বসূরী। এখান থেকে আরও কিছুটা গিয়ে টিকিট স্ক্যান করে বাসে বসে পড়লাম। বাসে বেশ কিছু জার্মান, জাপানী আর আমেরিকান পরিবারের সঙ্গে দুটি ভারতীয় পরিবার-ও চলেছেন। এয়ারপোর্ট থেকে হুফডর্প ছাড়িয়ে একটু এগোতেই বড় বাড়ি-ঘর আর তেমন চোখে পড়ে না, পরিচ্ছন্নতাটুকু বাদ দিলে আশপাশের দৃশ্য আমাদের গ্রাম-বাংলার মতই, মাইলের পর মাইল ক্ষেত, মাঝে মধ্যেই নালা চলে গেছে তার মাঝখান দিয়ে, বড় নালা থেকে সরু নালা কেটে সেচের ব্যাবস্থাও চোখে পড়ল। মিনিট কুড়ি পরেই সারি সারি হলুদ আর লালের সমারোহ যতদূর চোখ যায়, একটু কাছে আসতেই বুঝলাম এ তো টিউলিপ-এর চাষ করা হয়েছে রীতিমত! আর সেই ভাবনা-কে প্রশ্রয় দিয়েই আমাদের বাস ঢুকে পড়ল একটি গেট দিয়ে, সামনে বেশ বড় করে লেখা 'Welcome to Keukenhof'
     

     
    বাগানের প্রবেশদ্বার


    কিউকেনহফের প্রবেশপথের সামনে বেশ ছড়ানো চাতাল, ডানদিকে একটি বেশ চওড়া নালা আর তার ওপাশেই সেই টিউলিপের চাষ করা জমি, যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ অথবা লাল! এখানে আবার টিকিট স্ক্যান করিয়ে ঢুকে পড়লাম ভিতরে। প্রথমেই বাগানের একটি ম্যাপ ঝুড়ি থেকে তুলে নিয়ে, চোখ বুলিয়ে নিলাম। বাঁ-পাশে একটি রাস্তা চলে গেছে আর সামনে একটি। তবে সব রাস্তাই ঘুরে ফিরে এসে একে অন্যের সাথে মিলে যায়। বাঁ-দিক দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম, এখানে পুরো বাগানের কিছু কিছু অঞ্চল নাম দিয়ে চিহ্নিতকরণ করা আছে, যেমন আইরিন (এখানে শুধুই স্যুভেনির, খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদির দোকান), তারপর আসে জুলিয়ানা (এখানে টিউলিপ আর অন্য ফুলের চারাদের যত্ন করে বড় করা হয়, নানা রকম টিউলিপ বাল্ব-এর খোঁজ-খবর-ও মেলে) ইত্যাদি। প্রথমেই রাস্তার দুপাশে সারি দিয়ে চেরি ব্লসম একেবারে সাদা আর গোলাপী হয়ে ফুটে আছে। তারপর শুধুই টিউলিপ, তবে টিউলিপ ছাড়া অন্যান্য ফুলের প্রজাতি-ও রয়েছে , রাস্তার ধার ঘেঁষে নানারকম নকশায় তাদের সাজানো, প্রতিটি প্রজাতির নাম-ও দেওয়া রয়েছে ফলকে। তারপর একটা বাগান পার হতেই রাস্তার একপাশে একটা ওভারব্রিজের মত, ওপাশে কি এত লোকজন দেখছে এপাশ থেকে বোঝা গেল না। সুতরাং সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে বাঁদিকে তাকাতেই বুঝলাম, ফুল দিয়ে পুর জায়গাটা সুন্দর করে সাজানো আর তার মাঝে হলুদ টিউলিপ সাজিয়ে ইংরাজী হরফে বড় করে লেখা রয়েছে 'কিউকেনহফ'! ভিড় এখনো তেমন নেই, সুতরাং ভালো-ই ছবি নেওয়া গেল। নেমে এসে এরপর ডানদিক ঘুরে সোজা এগিয়ে 'অরেঞ্জ নাসাউ' প্যাভিলিয়ন। এত অসামান্য পুরো প্যাভিলিয়নের সাজসজ্জা,দেখে অবাক হতে হয়। প্যাভিলিয়নের মোটামুটি ৩০/৪০ বর্গফুট এলাকা এক একটি থীমের জন্য বরাদ্দ। আর প্রতিটি থীম নেদারল্যান্ডসের বৈশিষ্ট্য-গুলি তুলে ধরেছে নিপুণভাবে, তার রঙ, রূপ, সাজানোর কায়দা একটি অন্যের থেকে আলাদা। এ-জায়গা একেবারে যাকে বলে যেখানে 'প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে'। অনেক যুগল-ই এখানে ফটো তুলছে, এমনকি প্রফেশন্যাল ফটোশ্যুট-ও চলছে কয়েক জায়গায়। ফুলেদের মাঝে ফুলের দোলনা, রথ, গাড়ি, বাড়ি সব রকম কিছুর সঙ্গেই  ছবি তোলার ব্যবস্থা!  
     

     

     



     

     

     

     

     

     
    অরেঞ্জ নাসাউ থেকে বেরিয়ে একটু এগিয়ে বাঁদিকে ছোটো একটা নালা পার হয়ে একটা বিরাট গ্রীন হাউস। নাম উইলেম-আলেকজান্ডার। হল্যান্ডের রাজার নামে। এখানেই বিভিন্ন প্রজাতির টিউলিপের আড্ডা। এইটিই বলা যেতে পারে এই বাগানের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট জায়গা। ভিতরে ঢুকে রীতিমতো হতভম্ব হয়ে গেলাম। এর আগে কলকাতা বা তার আশেপাশে ফুলের প্রদর্শনী দেখেছি, কিন্তু এ-জিনিস একেবারে অন্য! আর এর বিশেষত্ব টিউলিপ। পৃথিবীর হেন কোনো টিউলিপ নেই যা এ-বাগানে নেই। হরেক প্রজাতির হরেক রঙের হরেক গঠনের টিউলিপ! সার বেঁধে যত্ন করে লাগানো গাছে টিউলিপের শোভা। একটা সারি দেখে শেষ অবধি গিয়ে আশ মিটল না, আবার সেই সারি ধরেই ফেরৎ এলাম। আর তাদের নামকরণ-ও বেশ, ফ্লাইং ড্রাগন, মেমফিস, কুইনস ডে, গো গো রেড, কিসেবল (মানে তেমন-ই জিনিস বটে), কনফুশিয়াস (তেমন-ই জ্ঞান-গম্ভীর টাইপ), ইনভল্ভ, ড্রিম-ক্লাউড স্প্রিং ব্রেক মায় টেকিলা সানরাইজ অবধি! কি যে নেই সেখানে! মন-প্রাণ জুড়িয়ে গেল যেন! এ মানে একেবারে ডি লা গ্র্যান্ডি ব্যাপার-স্যাপার! তবে হোয়াইট ভ্যালি বলে যেটি এখানে রাখা দেখলাম সেটি কিন্তু একেবারে আমাদের হিমালয়ের ব্রহ্ম-কমল। একটার নাম চাইনিজ ফ্ল্যাগ, তাই দেখে আরও দু-চারটি দেশের ফ্ল্যাগ আছে কিনা খুঁজে দেখলাম! আর-একটির নাম ফুলটাইম - হ্যাঁ অমন সুন্দর ফুলের সঙ্গে ফুলটাইম বসে থাকা যায় বৈকি! শেষের দিকে একটার নাম দেখলাম রিটার্ন! অতএব ফেরার পালা। এখানে এক পাশে ফুলের মাঝে  একটি বুদ্ধমূর্তিও রাখা দেখলাম। ভেতরে একটা বড় ক্যাফে-ও রয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে ডানদিকে সোজা গেলেই একখানা উইন্ড-মিল। তার সামনে এক জায়গায় একটা পেল্লায় মিউজিক প্লেয়ার, মূলতঃ অর্কেস্ট্রা বাজছে। এর বিশেষত্ব হল, এর ভিতরে এক জায়গায় সিম্ফনি-র বই এর পাতা খুলে রেখে দেওয়া হচ্ছে আর সেইমতো মিউজিক বেজে চলেছে!  উইন্ডমিলে বিশেষ কিছু নেই, এর সামনে দিয়ে বয়ে গেছে বেশ চওড়া একটা নালা এখানে একটি বোট-রাইড হয় যার নাম হুইস্পার বোট। নালার ওপারেই দিগন্ত জোড়া টিউলিপের ক্ষেত, এই হুইস্পার বোট ঐ ক্ষেতের পাশ দিয়ে দিয়ে যায়। একপাশে কিউকেনহফের বাগান, অপর পাশে টিউলিপের ক্ষেত। 
     

     

     

     

     

     

     

     

     

     

    এছাড়াও আর-ও দুই প্রান্তে দুটো টিউলিপের শো-হাউস সবই রাজা-রাণীর নামে, বিট্রিক্স, উইলহেলমিনা ইত্যাদি। সেসব দেখা শেষ করে ঘড়িতে দেখি বাজে দুটো! প্রায় পাঁচ ঘন্টা কোথা দিয়ে যে কেটে গেল বুঝেই উঠতে পারলাম না। ক্লান্ত পায়ে বাইরে এসে ফিরতি বাসে বসে মনে হচ্ছিল -
     
    'মধুর তোমার শেষ যে না পাই...'

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ১৯ মে ২০২৩ | ১৩৭০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুদীপ্ত | ২০ মে ২০২৩ ০১:০১519911
  • এই পর্বের প্রকাশের তারিখটা কিভাবে যেন পিছনে চলে গেছে, ৬ই মে। আজকেই তো প্রকাশ করলুম, কি কান্ড! 
  • Bratin Das | ২০ মে ২০২৩ ০১:২৮519912
  • আরে সুদীপ্ত, বহুদিন  পরে লিখলে।
     
    ওয়েল কাম ব্যাক heart
  • | ২০ মে ২০২৩ ০৮:২১519916
  • তুই কি ৬ তারিখে ড্রাফট করে রেখেছিলি? আজদিবনিকে পাবলিশ করলেও যদি আগে ড্রাফটে সেভ করা থাকে তাহলে সেই তারিখটা নিয়ে নেয় হাঁদার মত। 
     
    এবারে ছবিগুলো ঠিকঠাক এসেছে। লেখা দিব্বি। আমার পুরো মেমরি রিওয়াইন্ড হচ্ছে। 
     
  • গোবু | 202.8.***.*** | ২০ মে ২০২৩ ০৯:৪৪519919
  • "লেখা দিব্বি"! একদম!
  • সুদীপ্ত | ২০ মে ২০২৩ ১৩:৩৩519925
  • ব্রতীনদা, আমি ভাটে কম যাই, লেখাপত্র পড়ি, ভালো লাগলে কমেন্ট/লাইক দিই, বইপত্র তো কিনিই। লিখি যখন মনে হয়, ওয়েলকাম ব্যাক-এর ব্যাপার নেই। 
     
    থ্যাঙ্কিউ দমদি, হ্যাঁ ঠিক, ওই তারিখটাই নিয়েছে, মাঝে সময় পাই নি বলে সেভ করা ছিল। এরপর অ্যানা ফ্রাঙ্ক আসবে।
  • সুদীপ্ত | ২০ মে ২০২৩ ১৩:৩৪519926
  • ধন্যবাদ গোবু! 
  • শিবাংশু | ২০ মে ২০২৩ ১৩:৪৭519927
  • বাঃ, বেশ হচ্ছে ...
  • সুদীপ্ত | ২১ মে ২০২৩ ১০:০৪519950
  • থ্যাঙ্কিউ শিবাংশুদা
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ জুন ২০২৩ ০৯:২১520166
  • অসাধারণ লিখছেন।  কয়কেনহফ যে। আবার চোখের সামনে দেখতে পেলাম। একবার কিনডারডাইক নিয়ে লিখুন । 
  • সুদীপ্ত | ০১ জুন ২০২৩ ২০:০৪520168
  • অনেক ধন্যবাদ হীরেনদা! হ্যাঁ জার্মান এ 'eu' থাকলে ওটা 'অয়' হয় জানি, কিন্তু ওইদিন আশপাশের প্রায় সবাইকে ( এমনকি লোকাল লোকজনকেও) কিউকেনহফ বলতে শুনলাম, তাই ওটাই রেখেছি। তবে কয়কেনহফ হওয়া উচিৎ সেটা ঠিক।
    এযাত্রা কিনডারডাইক যাওয়া হয়ে ওঠে নি, পরে আবার কখনো 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন