‘রেডিও খোলা থাকলে মাঝেমাঝেই চমকে ওঠেন বাবা। কেবলই দেখি তাঁর শিক্ষক-সত্তায় মোচড় লাগে। ‘এই দেখো কাণ্ড, এই একটা শব্দ বলল, ভুল। ওই একটা উচ্চারণ হল, ভুল। এ কি একটা বাক্য হল? ছিঃ! ভাষার জন্য দরদ নেই কারও?’ এইসব আক্ষেপে-বিক্ষেপে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। কথা শোনাতে গেলে এতসব ঝঞ্ঝাট? ঘরে দেখি বাবার এই বিষাদ, কাগজে পড়ি পরিমল গোস্বামীদের মত কারও কারও ধিক্কার। বাবাও অবশ্য প্রকাশ্যেই লিখবেন পরে: ‘বেতারে কতবার যে “আমাদের মহান নেত্রী” শুনেছি, তার সীমা-সংখ্যা নেই। “নেত্রী” যখন “মহান” হয়েছেন তখনই আশঙ্কা করেছি “মহতী বিনষ্টিঃ” সম্মুখে। আমরা রাজনীতির কথা বলছি না, ভাষার কথাই বলছি।’
পাঠক বুঝতেই পারছেন, কোটেশন মার্কের মধ্যে এই উদ্ধৃতিটি বিশিষ্ট কোনও মানুষের। উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের। তাঁর ‘রেডিওর সঙ্গে সম্পর্ক’ নিবন্ধে এক মরমী স্মৃতিচারণ রয়েছে। ‘কলকাতা বেতার’ সংকলন গ্রন্থটিতে প্রথম যখন এই রচনাটি পড়ি, প্রথম আকর্ষণ করেছিল এই বিশেষ অংশটি। এই শব্দ প্রয়োগ, এই সঠিক উচ্চারণ। এই ভাষার প্রতি দরদ। আমাদের ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা।
এই উদ্ধৃতিটি বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে বলতে পারি, রেডিওর সঙ্গে শ্রোতা হিসেবে আমার ব্যক্তিগত গাঁটছড়া সেই সাতের দশকের শেষে, যখন অবোধ ছিলাম। সে বাঁধন অটুট ছিল আটের দশক অবধি। একনিষ্ঠ শ্রোতার ভূমিকা থেকে কোনোদিন ওই ‘বাক্সের’ মধ্যে ঢুকে পড়ে কথা বলার সৌভাগ্য হবে, এ দুরাশা কিশোরীকালেও ছিল না। সুযোগ এল হঠাৎ-ই। যখন আকাশবাণীতে শুরু হল এফএম প্রচার তরঙ্গ। ফ্রিকোয়েন্সি খুব বেশি, কাজেই বেশি দূরে শোনা যায় না। কিন্তু ‘লাইভ’ বা সরাসরি সম্প্রচারের অত্যাধুনিক ফর্ম্যাট হাজির করল আকাশবাণীর কলকাতা কেন্দ্র। সময়টা ১৯৯৫।
আশ্চর্য এক সময়। তার চেয়েও উল্লেখযোগ্য, আবার নতুন আঙ্গিকে বাংলা ভাষায় বাংলা সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার। সেই ১৯২৭ সাল থেকে যে বেতার বহুজনের হিতে, বহুজনের সুখে সম্প্রচার-সেবায় নিয়োজিত – কলকাতায় তার অন্যতম প্রধান জোরের জায়গা বাংলার মাটি, বাংলার জল। বেতারের আদিপর্বে গুণীজন-সমাহার কিছু কম ঘটেনি। এর বিস্তারিত তথ্য একটু খুঁজলেই পাওয়া সম্ভব। সংবাদ-বিভাগ থেকে মহিলামহল, রম্য-গীতি থেকে বেতার-নাটক, শিশুমহল থেকে মজদুর-মণ্ডলী, অনুরোধের আসর থেকে পল্লী-মঙ্গল, বাংলা ভাষায় বাঙালির মনোরঞ্জন এবং একই সঙ্গে সুস্থ সাংস্কৃতিক প্রয়োজন মিটিয়েছে বেতার কেন্দ্র। এখনকার ভাষায় ‘ইনফোটেইনমেন্ট’। ভরপুর তথ্য আছে, তাকে পরিবেশনের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলার পরিকল্পনাও মজুত। একের পর এক দিকপাল মানুষ এসেছেন বেতার কেন্দ্রে, তাঁদের সবার নাম উল্লেখ করতে গেলে এই নিবন্ধের শব্দসংখ্যা গড়িয়ে চলে যাবে – সম্পাদকের রাগী চোখ কে আর দেখতে চায় – কাজেই রাশ টানলাম নামের দীর্ঘ তালিকায়। কিন্তু যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম – সেই শব্দ আর উচ্চারণ – তার মান কিন্তু বজায় রাখা হয়েছে এই সেদিন অবধিও।
এফএম প্রচার তরঙ্গে অনুষ্ঠান উপস্থাপনার জন্য সেই সময়, নয়ের দশকের মাঝামাঝি, ডেকে নেওয়া হল কলকাতা বেতারে ড্রামা অডিশন পাশ করা শিল্পীদের। প্রাথমিকভাবে কর্তৃপক্ষ ধরে নিলেন, যাঁরা আকাশবাণীতে শ্রুতিনাটক বিভাগে পরীক্ষা দিয়ে সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের সঠিক বাংলা উচ্চারণ আর কণ্ঠস্বর নিয়ে কোনও দ্বিধা বা সংশয়ের কারণ নেই। এই প্রসঙ্গে জানাই, রেডিওর নাটক বিভাগে যাঁরা পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁরা সকলেই জানেন – বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস থেকে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কাব্য হয়ে রবীন্দ্রনাথের নাটক অবলীলায় ছুঁয়ে যেতে হয় এই পরীক্ষায়। বিভিন্ন বাংলা শব্দের সঠিক উচ্চারণ শোনার জন্য চোখা কান পেতে থাকেন পরীক্ষকরা। আজও এই পরীক্ষা দুরূহ। এই পরীক্ষা-পারাবার পার হয়েও অবশ্য তারপরে অনেকে আর সেভাবে সুযোগ পান না অভিনয়ের খামতির জন্য, তবে সে প্রসঙ্গ এখানে গৌণ। এখানে মূল উপজীব্য, কণ্ঠস্বর, পরিবেশনা, উপস্থাপনা। অর্থাৎ ভয়েস থ্রো আর মড্যুলেশনসহ প্রোগ্রাম প্রেজেন্টেশন। আর অবশ্যই সঠিক বাংলা শব্দ প্রয়োগ করে সঠিক উচ্চারণে অনর্গল বাংলায় কথা বলা। শ্রোতাকে আকৃষ্ট করার মত বিষয় ভাবতে হবে, কথার মধ্যে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার গর্হিত অপরাধ, ইংরেজির ঝোঁকে বাংলা বলা অমার্জনীয়। অনুষ্ঠানের নাম ‘টক শো’। অবশ্যই ‘লাইভ’। তাকে নানান চেহারায় ‘কণ্ঠদান’ করতে এগিয়ে এলেন বাংলা ভাষার দক্ষ ‘কথাশিল্পী’রা। ইংরেজিতে তাঁরা ‘টক শো প্রেজেন্টার’, বাংলায় ‘অনুষ্ঠান উপস্থাপক’। হে পাঠক, লক্ষ্য করুন, ‘আর জে’ বা ‘রেডিও জকি’রা তখনও ঝাঁপিয়ে পড়েনি বাংলা সংস্কৃতিতে।
স্বরাজ বসু, উমা বসু, ঋতা দত্ত চক্রবর্তী, শ্যামল ঘোষ, মুরারি চক্রবর্তী, কেতকী দত্ত, রমাপ্রসাদ বণিক, প্রবীর ব্রহ্মচারী, সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত, সৌমিত্র বসু, সুমিতা বসু, অনুপ ঘোষ, ঊর্মিমালা বসু, অলক রায় ঘটক, সৌম্যদেব বসু, অঙ্গনা বসু, দেবাশিস রায়চৌধুরী, অরুণিতা রায়চৌধুরীর মত অসংখ্য প্রথিতযশা বিদগ্ধ শিল্পী তখন আকাশবাণীর এফএম প্রচার তরঙ্গে। নিয়মিত আসা-যাওয়া। প্রতিদিন সকালে, দুপুরে, বিকেলে এবং রাত্রে। প্রত্যেক বার দু’জন উপস্থাপক পাবেন দু’ঘণ্টা সময়। স্টুডিওর পাশে আকাশবাণীর ডিস্ক লাইব্রেরি। অসংখ্য গানের রেকর্ড সাজানো থরে থরে। যাও আর বেছে নাও। স্টুডিওতে রয়েছে একটি টেলিফোন। আর দু’টি মাইক্রোফোন। কর্তৃপক্ষ সাফ বলে দিলেন, মাইক্রোফোনে কথা বলা, নিজের পছন্দমত বেছে নেওয়া গান রেকর্ড প্লেয়ারে শোনানো আর দূরভাষে অচেনা শ্রোতার সঙ্গে কথার আদানপ্রদান-- ব্যস। ‘সরাসরি’ দু’ঘণ্টা। উপহার দিতে হবে সুস্থ সংস্কৃতি, অবশ্যই বাংলা গান এবং অনর্গল বাংলা শব্দ। টক শো। তোমরা বল, আমরা শুনছি।
এইভাবে চলতে চলতেই ১৯৯৭ সালে শুরু হল এফএম প্রেজেন্টার নিয়োগের পরীক্ষা। প্রথমে লিখিত পরীক্ষা, পাশ করলে তারপর অডিশন। ইংরেজি থেকে বঙ্গানুবাদ, বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতিটি শাখা থেকে অসংখ্য প্রশ্ন, বিশিষ্ট মানুষের কাল্পনিক সাক্ষাৎকারের বয়ান, অনুষ্ঠানের রূপরেখা তৈরি করে দেওয়া... এইসব পর্ব মিটে সফল হয়ে উতরোলে তবে অডিশন। সেখানেও এক পাতা বাংলা শব্দ উচ্চারণের তালিকা, অচেনা এক কঠিন অংশের পাঠ, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা গোছের প্রশ্ন, এবং আবারও লক্ষণীয় সঠিক উচ্চারণ। উপযুক্ত বাংলা শব্দ প্রয়োগ করে ভাবপ্রকাশের দক্ষতাই সেই সময়ে ছিল একমাত্র বিবেচ্য। স্মার্টনেস বা সপ্রতিভতা তো বিচার হবে প্রোগ্রাম পাওয়ার পর। উপস্থাপকের এক-একটি অনুষ্ঠান তার এক-একটি পরীক্ষার মতই। ‘লাইভ’ স্টুডিওতে মাইক্রোফোন ‘অন’ করে ‘অন এয়ার’ কী বলা হচ্ছে, সে তার কাছে যতটা কঠিন, শ্রোতার কাছেও এক নতুন অভিজ্ঞতা বইকি!
সে এক চ্যালেঞ্জ। ‘যা খুশি’ করা যায় না। ‘যা খুশি’ তাই বলা যায় না। ভোরবেলার অনুষ্ঠানে ‘বাঁশ বাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠেছে ওই’ বাজিয়ে শোনানো যায় না। তা’ বলে ভোর ছ’টায় ‘এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার’ বাজানোর উপযুক্ত যুক্তিগ্রাহ্য কারণ দর্শাতে হয়। মাঝরাতে ‘কী মিষ্টি এ সকাল’ বাজালে ডিউটি রুমে শ্রোতাদের হামলা এবং অফিসারদের বাক্যবাণ ফ্রি। বিকেলের অনুষ্ঠানে রাতের রাগ ব্যবহার করা যায় না। কখন কোন রাগ প্রযোজ্য, এটুকুও জানো না হে! রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজিয়ে মাঝপথে বন্ধ করা যায় না, ঘোষণায় বলা যায় না – শুনলেন ‘রবীন্দ্রনাথের গান’। গান শোনানো মানে শিল্পীর নাম সসম্মানে উল্লেখ করা। অতুলপ্রসাদ চালিয়ে ‘অতুল’ না ‘ওতুল’ বলার সময় খেয়াল রাখতেই হয়। ‘আবহাওয়া’ না ‘আবওহাওয়া, ‘আঠাশ’ না ‘আটাশ’, ‘মেনকা’ না ‘ম্যানোকা’ এসব উচ্চারণ না জানা পাপ। ভুল করলে, স্লিপ অফ টাং হলে, তার জন্য প্রতি ধাপে বকুনি বরাদ্দ। প্রথমে শুনছেন ডিউটি অফিসার। তিনি ইন্টারকমে ফোন করে অথবা নিজেই দৌড়ে এসে বকুনি দেবেন। কারণ শ্রোতারা স্টুডিওতে টেলিফোন করে কথা বলার সুযোগ না পেলে সরাসরি ডিউটি অফিসে ফোন করে। প্রশংসা যেমন বরাদ্দ, তেমন সামান্য ভুলত্রুটি তাদেরই কানে কুট করে কামড়ে দেয় কিনা! তারপর সে ফাঁড়া কাটলে প্রোগ্রাম একজিকিউটিভ। তিনি কানে যুগপৎ ছাঁকনি আর দূরবীন লাগিয়ে বসে থাকেন। কী বলছ, কেন বলছ, কীভাবে বলছ – সব তিনি মূল্যায়ন করেন। তারপর যদি অন্যান্য সেকশনের অফিসার এবং সর্বোপরি স্টেশন ডিরেক্টর শোনেন, তাহলে পরের দিন সকালের প্রোগ্রাম মিটিং-এ সেই অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা গড়ায় ঘণ্টা খানেক।
এবার প্রশ্ন হল, এসব কী এখন আর হয় না? সেই কথা বলব বলেই তো শিবের গীত গাইতে বসলাম।
দু’হাজার সালের পর থেকে অবাধ প্রাইভেটাজেশনের বদান্যতায় ঝাঁপিয়ে পড়ল একের পর এক বাণিজ্যিক সংস্থা। তারা ব্যবসা করতে এসেছে। বাংলা উচ্চারণ আর সংস্কৃতি নিয়ে ভাবতে তাদের বয়েই গেছে। তাও টিকে রইল কিছু প্রাইভেট চ্যানেলের বাঙালিয়ানা। অধিকাংশই বেছে নিল ‘জেন এক্স, জেন ওয়াই’কে। তাদের জন্য হিন্দি-ইংরেজি-বাংলা মিলিয়ে এক খিচুড়ি ভাষা। বাংলা গানের বদলে লারেলাপ্পা হিন্দি। আকাশবাণী এফএম-এর তখন দু’টি চ্যানেল। ধীরে ধীরে তাদের চরিত্র বদল ঘটল। এফএম রেইনবো আর এফএম গোল্ড হিসেবে তারাও তখন অবিশ্বাস্য ঝোড়ো হাওয়ায় নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
দো-আঁশলা সংস্কৃতির সঙ্গে পালটা লড়াই করেছি বহুদিন। করি আজও। কিন্তু অসম লড়াই। দিনের পর দিন বাসি সিঙাড়া বা রাস্তার ধূলোমাখা তেলেভাজা ফুচকা প্রাণে আনন্দ দিলেও পেটের পক্ষে বা বলা ভালো স্বাস্থ্যের পক্ষে স্বস্তিদায়ক কি? এই প্রশ্নের উত্তর পাঠক বলুন। অবনমন আসলে দ্রুততর হয়। যে কোনও নেমে যাওয়া। হুড়মুড় করে নামতে শুরু করে রুচিবোধ। সংস্থাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, যে সংস্থা সুস্থ রুচি সাংস্কৃতিক বিনোদনের মাত্রা বেঁধে দিয়েছিল, এখন সেখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পাশ করে ‘ব্রডকাস্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট’ আসেন। কন্ট্র্যাকচুয়াল কাজ। প্রোগ্রাম একজিকিউটিভ চাকরি করতে আসেন। তিনি প্রোগ্রামের টিআরপি বাড়াতে বদ্ধপরিকর। অতএব, চালাও পানসি। সে পানসি পচা খালে ঠোক্কর খেল, নাকি ফুটো হয়ে ডুবে গেল, তাতে কার কী! সুবোধ ঘোষ আর সুবোধ সরকারের পার্থক্য না জেনেও ‘বাংলা চ্যানেল’ দিব্যি চালানো যায়। শুরুর দিনগুলো মনে পড়ে। সমবয়সী একঝাঁক উপস্থাপক আমরা। দরবার করেছিলাম স্টেশন ডিরেক্টরের কাছে। ‘অন্য সময় যেভাবে আমরা পরস্পরকে তুইতোকারি করে কথা বলি, অনুষ্ঠানেও তেমন বলতে দেবেন?’ উত্তর এল, ‘কখনওই না। তুই বললেই ‘চল্ ভাই, বিড়ি খাই’ সংস্কৃতি ঢুকে পড়বে। আমরা ‘কালচার’ চাই না, সংস্কৃতি রক্ষা করতে চাই। রেডিওতে যা খুশি তাই বলা যায় না’। এখন অবশ্য শুনে কেঁপে উঠি, রবীন্দ্রসঙ্গীতের পরিবর্তে নতুনতম শিল্পীদের গাওয়া এক্সপেরিমেন্টাল রবি-রক এখন সাদরে গৃহীত। অথচ এই অধম লেখক একবার স্যমন্তকের ইন্টারভিউ চলাকালীন তাকে গান গাইতে বলায় স্যমন্তক শিস দিয়ে শুরু করে রবীন্দ্রনাথের একটি গানের স্থায়ী। প্রসঙ্গত, তখন ‘গানের ওপারে’ নামক একটি টিভি সিরিয়ালে গান গেয়ে স্যমন্তক খ্যাতিমান শিল্পী। পরিণামে আমাকে কর্তৃপক্ষের যা বকুনি খেতে হয়েছিল, তাতে ফিকে হয়ে গিয়েছিল বাকি অনুষ্ঠানটির ঔজ্জ্বল্য।
অনুষ্ঠানের মান বদলেছে। তাকে ঊর্ধগামী বা অধোগামী কোনোকিছুই আমি বলতে রাজি নই। কারণ গতিবেগ বা দিক সবসময় আপেক্ষিক। চারপাশের ভয়াবহ ভাষা-ধর্ষণের মধ্যে মনে পড়ে আকাশবাণী ছিল ভাষা-রক্ষক। বহু গুণিজনের স্মৃতিকথায় পেয়েছি তার স্পষ্ট অনুরণন। নিজেদের কাজের মধ্যে যত্নটুকু রাখতে চেষ্টা করেছিলাম।
সবই মায়া।
না, এখন আর কোনও কিছু রক্ষায় তার দায় নেই। এখন আপনারা শুনছেন মন কি বাত। তাই শুনুন বরং। আমরা রিমিক্স চালিয়ে মস্তি করি। বিন্দাস থাকি।