সংক্ষিপ্ত লেখা, কিন্তু সারগর্ভ। গান্ধিজি সম্বন্ধে একুশ শতকে ব্যক্তি আমার পুনর্বিচারের খুব কাছাকাছি এই বিশ্লেষণ।আমাদের পূর্বপুরুষদের অপরিসীম অবজ্ঞা আর অজ্ঞানের আঘাত হতভাগ্য মানুষটিকে আগেই হত্যা করেছিলো। জীর্ণ শরীরটার জন্য ছিলো পিস্তল থেকে তিনটি গুলি । যতো দিন যাচ্ছে, নতুন দস্তাবেজও প্রকাশ পাচ্ছে। নোয়াখালির সমাধান যদি তাঁকে করতে দেওয়া হতো, তবে আজ নিজের মানুষদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের এই বোলবালা এমন মাত্রায় পৌঁছোতো না।
একটু অবাক লাগলো লেখাটির আলোচনায় পাঠকদের আপাত অনীহা দেখে।
সোমনাথের গান্ধীপ্রীতি আমার অজানা নয়। তবে দেশভাগের মিটিং সম্পর্কে রামমনোহর লোহিয়ার যে বইটার উল্লেখ তিনি করেছেন, তার প্রকৃত নাম Guilty Men of India’s Partition। এর আগে জল অনেক দূর গড়িয়ে গিয়েছিল। তাঁর মৃতদেহের ওপর দিয়ে দেশভাগ হবে জাতীয় আবেগমথিত বক্তব্যের পরে পরেই গান্ধীর দিল্লি আগমন, মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং প্যাটেলের সঙ্গে দীর্ঘ দু-ঘন্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরে দেশভাগ সম্পর্কে একদম নতুন বিষয়টিকে মেনে নেওয়া। এই বিষয়টি মৌলানা আজাদ তাঁর গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে বলেছেন। একই ভাবে গান্ধীর নোয়াখালি পরিভ্রমণের যে রোম্যান্টিক ছবি তিনি এই ছোট্ট প্রবন্ধটিতে অঙ্কিত করেছেন, তা সম্পূর্ণ চোট খেতে পারে জোসেফ লেলিভেল্ড লিখিত Great Soul: Mahatma Gandhi and His Struggle with India বইটি পড়লে। অবশ্য 'হিন্দ স্বরাজ' নিয়ে সোমনাথের অবস্থান কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধীর 'সত্যাগ্রহ' নিয়ে নতুন করে কোনও তর্কে আগ্রহী নই। লাভ নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্দোলনে গান্ধীর ভূমিকা নিয়ে আগে এলেবেলের লেখায় পড়েছি। তারপর থেকে গানহি বুড়ো কে খুব সন্দেহের চোখেই দেখি।
লেলিভেল্ড-এর বই পড়ব পড়ব করে অনেকদিন ফেলে রেখেছিলাম, আপনার পোস্টে মেনশন দেখে কিনে ফেললাম, ধন্যবাদ। তবে নির্মল বসু, প্যারেলাল, মনু গান্ধীর ডায়েরি থেকে নোয়াখালির ঘটনাগুলোর একটা বর্ণনা পাওয়া যায়।
(এই লেখাটা পড়ি নি। গান্ধী আর এলেবেলে দেখে জিগ্যেস করতে এলাম)
এমনিতে গান্ধী সম্পর্কে আমার আগ্রহ বেশ কম। তা পার্টিশান নিয়ে ঘাঁটাঘাটির সুবাদে আনিস কিদওয়াইএর মেমোয়ার্স পড়ি। সেখানে দেখছি শফি কিদওয়াই দেরাদুনে খুন হবার পরে আনিস বোরখা খুলে ফেলে গান্ধীর অনুগামী হয়ে যাচ্ছেন। মৃদুলা সারাভাইয়ের সাথে কংগ্রেসের মতানৈক্য হচ্ছে অ"আবডাক্টেড উইমেনস অ্যাক্ট নিয়ে। মৃদুলা আনিস চাইছেন 'উদ্ধার' করা মেয়েদের তাদের ইচ্ছেমত বাঁচতে দিতে সরকার তথা কংগ্রেস সেটা চাইছে না। তারা মেয়েদের বাসনপত্র উদ্ধারের মত উদ্ধার করে জায়গামত ফেরত দিতে উৎসুক। এইসব ক্ষেত্রে গান্ধী অনেকসময়ই মৃদুলা আনিসের পক্ষ নিচ্ছেন।
তো এই ব্যপারটা বেশ অবাক লেগেছে। আনিস ঠিক কী কারণে গান্ধী অনুগামী হয়ে গেলেন সেটা আমার কাছে অবাক লেগেছে। আবার গান্ধীর এঁদের পক্ষ নেয়া বা মেয়েদের ইচ্ছেমত তাদের থাকতে বাঁচতে দিতে চাওয়াও আমার গান্ধী সম্পর্কে ধারণার সাথে মেলে না।
তো একটা মানুষের মধ্যে অনেক মানুষ বাস করে তার অনেকটাই আবার সাদাকালো নয় ধুসর সেসব মেনে নিয়েই স্বাধীনতা দেশভাগ পরবর্তী গান্ধী নিয়ে লেখাপত্র চাইলে কী কী রেফার করা যেতে পারে বলবেন প্লীজ।
@এলেবেলে? অন্য কেউ?
সোমনাথ কি লেলিভেল্ড কিনে ফেললেন? যদি না কিনে ফেলেন তবে অর্ডার ক্যানসেল করে দিন। বইটির হার্ড ও সফট কপি আমার কাছে আছে। আমি বইচর্চা গ্রুপে আপলোড করে দিতে পারি আপনি চাইলে।
দ-দি, আমার গান্ধী বিষয়ক লেখাটির শেষে আমি কিছু বইয়ের উল্লেখ করেছিলাম। তার মধ্যে অবশ্যপাঠ্য ---
শৈলেশকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় – জিন্না : পাকিস্তান / নতুন ভাবনা
Maulana Abul Kalam Azad – India Wins Freedom
Rajmohan Gandhi – Understanding the Muslim Mind
V.P. Menon – The Transfer of Power in India
Stanley Wolpert – Jinnah of Pakistan
এ ছাড়া আরও দুটি বই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
Suniti Kumar Ghosh - India and the Raj 1919-1947 (Vol. I & II)
Alex von Tunzelmann - Indian Summer The Secret History of the End of an Empire
আসলে আমি নিজে ১৯৪৬-৪৭-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে একটি দীর্ঘ লেখা লিখব বলে ভেবে রেখেছি। বইপত্তর সংগ্রহ চলছে। তখন এই নোয়াখালি নিয়ে আমি বিস্তারিতভাবে লিখব। অন্যান্য দাঙ্গাগুলো তো থাকবেই। এই নরেন মোদীর বিরোধিতা করতে গিয়ে গান্ধীপুজোটা আমার কাছে অসহ্য লাগে। থাক সেসব।
থ্যাঙ্কু ম্যাঙ্কু :-)
হ্যাঁ আপনার গান্ধী প্রসঙ্গে যথেষ্ট রেফ ছিল। আমার আগ্রহ ওই কয়েকমাসের গান্ধী নিয়ে। বমাস বা এক বছর বলা যায়। ৪৭ এরজানু থেকে ৪৮এর জানু।
এলেবেলে, সফট কপি আপলোড করে দিন প্লিজ।
আর্কাইভ .org এও আছে । ওখান থেকেও নামাতে পারবেন
https://www.thehindu.com/opinion/op-ed/Lifting-of-ban-on-RSS-was-unconditional/article11806185.ece
সোমনাথ রায় এর লেখা আমার ভালো লাগে। ওনাকে অভিনন্দন। আমি ওনার আর এলের প্রবন্ধের ফ্যান। ইতিহাসে স্পেকুলেশন এড়ানো কঠিন। কিন্তু সিরিয়াস ইতিহাস চর্চায় ন করাই ভালো।
গান্ধী পুরো এঁড়ে বসলে পার্টিশন হত কিনা আমার সন্দেহ আছে (ঠিক যেরকম সন্দেহ আছে সুনীতিবাবু এঁড়ে বসলে, উর্দু হিন্দুস্থানী র বারোটা বাজতো কিনা ওঁর মত অথরিটি তো আর কারো ছিল না, হ্যা বাংলাকেও বেশ কিছু সহোদোরা স্বীকার করতে হত) , তবে তাতে আরো রক্ত ঝরত কিনা স্পেকুলেট করা মুশকিল।
এই প্রবন্ধে আমার মনে হয় আপনার একটা যৌক্তিক দুর্বলতা আছে, এবং সেটা হল, রাষ্ট্রের ধরণের চেয়েও সমাজ জীবন ইত্যাদি নিয়ে গাঁধীর মতামতের কথা আপনি বললেও তাঁর সংগে চিত্তরঞ্জন, শরৎ, সুভাষ, নেহরু , অন্যান্য আধুনিকতা পন্থীদের পার্থয়ের প্রধান জায়গাটা হল, গান্ধীর সময়ে প্রি কলোনিয়াল এবং প্রি মডার্ন এর ডিসটিঙ্গুইশিং টা ভালো করে ডেভেলপ করে নি , সেটা সম্পর্কে এক দু লাইন লেখা থাগলে ভালো হত । গান্ধী সম্পর্কে যেটা ক্লিয়ারলি বোঝা দরকার, সেটা হল, ভদ্রলোক নিজে যে সময় টা কলোনি বিরোধিতা করছেন, তখন ভারতীয় মধ্যযুগকে অন্ধকার বলে কলোনিয়াল পিরিয়ড স্ট্রাকচারে ফেলা হয়ে গেছে, এবং ভদ্রলোক নিয়ে গ্রামীন ভারত এবং ভক্তি আন্দোলনের ভারতকে কে কলোনির কালচারাল বাইনারি হিসেবে তুলে আনছেন। এটার দুর্বলতা কে নেই, হ্যাঁ আছে, মুসলিম আমলের আর্বানিটি তার কমপ্লেক্সিটি কে এটা স্বীকার করছে না।
কিন্তু এটা (মানে গান্ধী'র ভক্তি মুভমেন্ট এর কনস্টান্ট রেফারেন্সিং) কন্ট্রিবিউশন হিসেবে কম না, হ্যাঁ সাম্প্রদায়িকতার আলোচনা প্রসংগেই কম না, কারণ এটা করা হচ্ছে এমন একটা সময়ে, যেখানে সাধারণ ভাবে ন্যাশনালিস্ট গ্লোরিফিকেশন টা হচ্ছে প্রাচীন ভারতকে নিয়ে। সেটাই ওরিয়েন্টালিস্ট হিস্টোরিয়োগ্রাফি। এই পরিস্থিতিতে ভদ্রলোকের এমন ক্যাম্পেনের জোর, এই জিনিশ টা আগে কেউ দেখে নি, রাজনীতি করতে গিয়ে জামা কাপড় বদলে ফেলছেন, ব্যক্তি পরিচিতিটাকে ব্যাবহার করছেন ক্যাম্পেনের কাজে। এবং শুধু এই জন্যেই তাঁকে প্রোগ্রেসিভ বলা যায়, ইংরেজ আগমনের জাস্টিফিকেশন কে অসার প্রমাণ করতে তাঁকে সময়ের আন্দাজে বেশি ফিরতে হচ্ছে না, অল্প ফিরলেই হচ্ছে, এত অল্প যে গ্রামীন ভারত তাতে রেজোনেট করছে। হ্যাঁ এটা পোলিটিকাল ক্যাপেনের প্রথম ও প্রধান ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণ। সতীনাথের গান্হীবাবা এমনি তৈরী হচ্ছে না। প্রচুর প্রচুর সমস্যা সত্তএও।
এবার এই ৪৬-৪৮, 'ফাইনেস্ট আওয়ার'। যেটা আপনি অলরেডি বলছেন।
কিন্তু আপনি যেটা এড়িয়ে যাচ্ছেন , বা আপনার মতাদর্শগত কারণে এড়িয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন, যে স্বাধীন জাতি রাষ্ট্রে মাইনরিটি রাইট সমাজ না, রাষ্ট্রকেই নিস্চিত করার দায়িত্ত্ব নিতে হবে। এবং বিশেষতঃ সেখানে নিতে হবে, যেখানে সমাজ ব্যার্থ। এবং এটা কখ্নৈ কলোনিয়াল আধুনিকতা দিতে পারবেনা। চাইবেও না। এই ঐতিহাসিক সত্যটা আপনি অ্যাভয়েড করছেন, বলে আপনার ন্যারেটিভ পড়ে এলে উঁহু উঁহু করে যাকে বলে পকপকাইচে:-)))))
কংগ্রেস পেপার্স পাবলিশ হয়ে যাওয়ার পরে ভাবা হয়েছিল, ভারতীয় ইতিহাসে বিংশ শতকের প্রথম ভাগ টা নিয়ে আর কন্ত্রোভার্সি কি থাকবে, সব ই তো অরিজিনাল পেপার এসে গেল। ক্লাসিফায়েড থেকে বেশি কিসু কেউ আশা করে নি ।প্রতিভাবান হিস্টোরিয়ান দের একটা অংশ হয় সামাজিক ইতিহাসের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নতুন এজেন্সি r খোঁজে নান কিছু করেছেন। নয় আনালিস্ট দের প্রভাবে নতুন নতুন সোর্স, মূলতঃ ইংরেজি ব্যতীত দেশি বিদএশী সোর্স দেখেছেন। কিন্তু সমস্যা হল, তাতে করে আবার অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ হিস্টরি, স্বাধীনতা আন্দোলনের ওঠা নামা, নেতা দের নানা ব্যক্তিগত পথ পরিবর্তন, এবং নানা নেগোশিয়েশন, এগুলো নতুন করে গুঁফো হিন্দু ন্যাশনালিস্ট দের কব্জায় এসে যাচ্ছে। আর স্বাধীনতা পরবর্তী রাজ্নৈতিক ইতিহাস তো রিটায়ার্ড মিলিটারি লিডার আর বুরোক্রাট দের হাতে চলে গেছে, যাতে অয়আকচুয়ালি সমাজ , সামাজিক চাহিদা, মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, একট অখন্ড পিন্ড মাত্র, যাকে নিয়ে ফুটবল খেলা যায়। তো এই যায়গাটাতে ইনটারভেন করছেন, আকাডেমিয়ার বাইরের ঐতিহাসিকেরা, বা একেবারে তরুন প্রজন্মের গবেষক রা, রাজনৈতিক সচেতনতা থেকেই করছেন, কিন্তু এই কাজটা তে গান্ধী প্রসংগে বিশেষতঃ আমাদের মধ্যযুগের রেফারেন্স আনা জরুরী।
কিন্তু আর এস এস ও বিজেপি স্টেট পাওয়ারের অংশ হবার পর থেকে, রাজ্যস্তর থেকেই, কর্মসূচী তৈরী করেছে বিংশ শতকের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নিজের ভূমিকা ঢাকার চেষ্টা করে। কোনো সিরিয়াস এনকোয়ারি র ক্রেডিবিলিটি তাদের নেই। তো তাতে হয়েছে কি ইন্টারেস্টিংঅলি গান্ধীর সময়ের কন্ট্রাস্ট হিসেবে বলা যেতে পারে, সাম্প্রদায়িতকtaa/জাতীয়তাবাদ ডিবেট টা এক লাফে বিংশ শতকে এসেছে, এবং পূনরায় মধ্যযুদ কে ব্ল্যাক বক্স হিসেবে দেখা শুরু হয়েছে আকাডেমিয়ার বাইরে বিশেষতঃ ।
জেনেরাল হিস্টোরিয়ান যাঁরা তাঁদের, আমার মনে হয়, বিশেষত গান্ধী প্রসংগে এটা খেয়াল রাখা দরকার, যে ভারতীয় মধ্যযুগের রেফারেন্স গান্ধী প্রসংগে শুধু না, আরো বেশি করে আশা দরকার, ফারসী দস্তাবেজ কে শুধু i মুঘল শাসন এর ব্যাখ্যার জন্য ব্যবহার ন করে , বা পর্তুগীজডাচ আরব মেরিটাইম ইতিহাসের খুঁটিনাটি তুলে আনাও জররী সামাজিক ইতিহাস হিসেবে। সংস্কৃত ও অন্য ভাষার সোর্স ও প্রচুর রয়েছে।
মোদী বিরোধীতা ছাড়া গান্ধীর মূল্যায়নের দরকার নেই, এই যুক্তি একেবারে ওঁছা। কত মোদী এলো গেলো। গাঁধী কে বাদ দিয়ে বিংশ শতকের সদর্থ ইতিহাস অসম্ভব। হ্যাঁ সবচেয়ে বড় ভিলেনের পোস্ট একবিংশ শতকে এখনো ফাঁকা আছে, উনিজি এগিয়ে আছেন একটু এই যা :-))))
এলের কমেন্ট প্রসংগে , মাইরি আপনাকে নিয়ে আর পারা যায় না। এটা বুঝি না, একটা পিরিয়ড নিয়ে একটা বই লেখা হলেই সেটা একটা ভালো রেফারেন্স হয় কি করে। সুনীতি ঘোষ , রাজমোহন গান্ধী, মৌলানা সব হরে দরে এক করে দিচ্ছেন মাইরি। এটাকে কে একটা জেনেরাল সমালোচনা হিসেবে দেখবেন আশা করি। এটা স্ট্রেট বলছি আপনার লেখার একটা জেনেরাল দুর্বলতা (হয় তো বই তে ডিটেলের দ্বারা ব্যাপারটা ঠিক করে দিয়েছেন) , হয় অ্যানোটেট করে রেফারেন্স দেবেন, কোয়ালিফাই করে দেবেন, নইলে অন্তত বলে দেবেন, আপনার কাছে স্কলাস্টিক হিস্টোরিয়ান হিসেবে কার কিরকম এবং কেন গুরুত্ত্ব। কারণ নইলে ওটা নিয়েই লোকে পড়বে।
আপনি বই যেটা লিখছেন বলছেন, সেটা তে এগুলো ক্লিয়ার করে দেবেন।
ইন ফ্যাক্ট এলেকে চ্যালেঞ্জ করছি আমি, আপনি বিংশ শতকের সমস্ত (যতজন পারেন) হিস্টোরিয়ান দের সম্পর্কে তাঁদের বিশ্লেষণএর শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে আপনি একটা প্রবন্ধ লিখুন। কারণ নইলে আপনি সরাসরি অভিযোগ করছি, নন স্পেশালিস্ট রিডার কে এটা বোঝানোর চেষ্টা করছেন স্ট্যানলি ওলপার্ট , ভি পি মেনন এক ই গোত্রের ঐতিহাসিক। এটা সিরিয়াসলি মিসলিডিং । এ মানে চলবে না।
অভিযোগ টা এই কমেন্টের সাপেক্ষে বেসলেস হলেও, এটা আপনাকে একটু মাথায় রেখে কমেন করতে হবে। নইলে আবাজ খাবেন:-)))))
সোমনাথ (রায়) দেখুন আপনি পুরো বেঠিক নন। নেশন স্টেট মানুষের, বা রবীন্দ্রনাথ কে ধার করলে, 'মানব' এর বড় খুব বড় সমস্যা সমাধান করেছে কিনা দাবী করা সত্যি i যাচ্ছে না, কিন্তু সেটি ক্যাপিটালিজম নামক বস্তুটির ভূমিকা r কারণে নাকি হরলিক্স এর মত এমনি এমনি, এটা অ্যাড্রেস না করে রাষ্ট্র জিনিসটা কে ডিনাউন্স করা কঠিন। হ্যাঁ তার গঠন ও তার ভ্যারিয়েশন , বিপদ ও আপদ যাকে বলে মিয়ার ডিটেল্স :-)))
খ, সবার আগে বলুন আপনার পিতৃদেব এখন কেমন আছেন? আপনি মশাই বিশাল আঁতু, তাই ফোন করলে ধরেন না, হোঅ্যাও দেখেন না! অগত্যা।
এই যে দ-দি বলেছেন গান্ধী আর এলেবেলেকে দেখে উনি এই টইতে আসলেন কিংবা আপনি আমার বিশাল পাখা - সত্যি বলছি এগুলো আমাকে অত্যন্ত সংকোচে ফেলে দেয়। আমি এমন কিছু হরিদাস নই তো রে বাপু।
না, মুড়ি-মুড়কির এক দর এই রেফারেন্সগুলোতে করিনি। দ-দি জানতে চেয়েছিলেন, তার প্রেক্ষিতে জানিয়েছি। কারণ জানি তিনি আদৌ আজাদ আর রাজমোহন গান্ধীকে এক পঙ্ক্তিতে ফেলবেন না, ফেলতে পারেন না।
যেহেতু 'আবাজ' দিয়েছেন (যত খুশি দেবেন, সেই রাইট আপনার ও দ-দি সহ গুরুর নির্বাচিত কিছু জনের জন্য চিরদিন বজায় থাকবে), তাই রেফারেন্সগুলোর ব্যাখ্যা দেওয়া জরুরি।
জিন্না - উলপার্ট এবং শৈলেশবাবু আনপ্যারালাল। কিন্তু রাজমোহন গান্ধীকে রেফার করেছি কেন? গান্ধীর নাতি বলে। ওই ভিউপয়েন্টটা জরুরি বলে।
আজাদ - কেন? কংগ্রেসের ঘরেলু মামলার বিশ্বস্ততম বয়ান বলে।
মেনন - কেন? দেশভাগ প্রস্তাবের রচয়িতা বলে। মাউন্টব্যাটেনের প্রস্তাব আস্তাকুঁড়ে গিয়েছিল বলে।
সুনীতি ঘোষ - ধ্যাত! যাঁরা তাঁর কাজকর্মের সঙ্গে পরিচিত সেই পাঠকরা কখনও তাঁকে আজাদ-মেনন-রাজমোহনের সঙ্গে একাসনে বসাবেন না। সিরিয়াস চর্চাকারীরা ছাড়া এই বইটার নামই কেউ জানে না।
টুঞ্জেলম্যান - সাম্প্রতিকতম বই বলে।
এই ব্যাখ্যায় চলেগা? আর কী তখন থেকে বই-বই করছেন? গান্ধী বই হচ্ছেনাকো। কেউ ছাপার নেই। প্রকাশক পেলে বলবেন, লেখাটাকে ঢেলে সাজাব। অনেক নতুন রেফারেন্স দেব। প্রকাশক মিলেগা!!!
ছাড়েন তো মশাই, এখানে গান্ধী প্রকাশিত হওয়ার সময় পাবলিকে পান্নালাল দাশগুপ্তর কথা বলেছিল! আর আপনি আমাকে 'আবাজ' দিচ্ছেন!
আর সোমনাথের খাপের লেখাটা ভালো লেগেছে। আমার কাছে ওঁর প্রবন্ধ ভালো লাগা বা খারাপ লাগা বিষয়ভিত্তিক হয়, ব্যক্তিভিত্তিক নয়। তাই আমি মোট্টে পকপকাইনি!!!
গান্ধীকে নিয়ে দুপয়সা আমিও দিতে পারি।
প্রথম পয়সা, গান্ধীর জন্ম। তাতে নাকি রবীন্দ্রনাথ, সুভাষ বোস, আর কাদের কাদের অবদান ছিল। তবে সেটা ছোটদের গল্প, তাই এখানে বড়োদের মধ্যে বলা যাবেনা।
দ্বিতীয় পয়সা, উনি ছাগলের দুধ খেতেন, গরুর দুধ নাকি খেতেন না (রেফারেন্স নেই), মানে একেবারে ছিটেল পাবলিক। এই নাকি দেশের পিতা।
গান্ধীর ব্যপারে আর কিছু জানিনা।
এলে, ব্যক্তিগত ভাবে বাজে সময়ে আছি। বাকি কথা পরে।
ব্যাখ্যা ইজ ওকে। আমি ক্লিয়ার করি হোয়ার আই ডিফার।
রাজমোহন গান্ধী ইন্টারেস্টিং যদিও জার্নালিস্টিক। ইন্টারেস্টিং কারণ ১৯১৪ থেকে ১৯৩৭ এর রাজনীতিতে চারজন মুসলিম ইনটেলেকচুয়াল, চার রকম ভাবে ভারতের রাজনীতিতে এনগেজ করছেন। এটাকে ইন্টারেস্টিং মনে করতে গেলে ঘটে কিসু লাগে, সেটা শুধু গান্ধীর নাতি হবার সংগে সম্পর্ক নাই। সুইপিং স্টেটমেন্ট কিছু আছে। সে থাকবে।
সুনীতি ঘোষের ব্যাপারে আমি বুঝলাম না আপনি পছন্দ করেন কেন নাকি অপছন্দ করেন কেন? বাক্য গঠন টা বুঝি নি।
উলপার্ট কেন আন প্যারালাল মনে করছেন বলুন। ভালো তো বটে , কেন ভালো মনে করছেন বলুন। আমি একটা ভাবনা শেয়ার করছি। আমি বলছি উনি অসাধারণ লেখক হতে পারেন, খুব বিশাল হিস্টোরিয়ান নন, কারণ আর কিছুই না, বিশাল সুযোগ থাকা সত্তএও ওনার কাজ ন্যাশনাল হিস্টোরিওগ্রাফি যেটা স্বাধীনতার পরে তৈরী হয়েছে, তার গন্ডী ছাড়াতে পারে নি। যেটা আয়েশা জালাল রা পেরেছেন। এইবার আপনি বলতে পারেন এটা সাউথ এশিয়া সাবজেক্ট হিসেবে গড়ে ওঠার পরের ব্যাপার। আমি বলছি না, এটা স্রেফ অবস্থানের ব্যাপার। এবং ইতিহাস জিনিসটা মানব জীবনের সংগে জড়িত থাকার ব্যাপার, যেখানে ওভারসাইজ্ড হিরো ও নাই, ওভারসাইজ্ড ভিলেন ও নাই। কিন্তু একটু রিলেন্টলেস , প্রায়শ নিয়ন্ত্রনহীন গতি আছে।
বইয়ের বিষয়ে কমেনটে বাকি মোটামুটি একমত।
এবার বলুন, সোমনাথ রায়ের লেখা সম্পর্কে আপনার মূল আপত্তি টা কোথায়। বা মূল ভালো লাগাটাই ব কোথায়। আমার কেন ভালো লেগেছে বা কেন এক দু লাইন বাড়তি লেখা যেত সেটা বলেছি, গান্ধী মধ্যযুগের ইতিহাসের যে অংশটাকে আধুনিকতার বাইনারি হিসেবে বেছেন নিয়েছেন, আমি বলছি সেই নির্বাচন পদ্ধতিটার জন্যই গান্ধী অনন্য। এবার আপনি এই প্রবন্ধটা সম্পর্কে আপনার অবস্থান টা বলেন, (বই সব সময়েই লেখার কথা ভাববেন, লেখা হল কিনা টা বড় ব্যাপার না)।
শৈলেশ বন্দ্যোপাধ্যায় কে কেন আদৌ গুরুত্ব দিচ্ছেন সেটাও জানা দরকার , আমি বুঝিনি। নতুন কি পেলেন।
আর আমি আয়েশা র সঙ্গে উর্বশী বুটালিয়াকে মিন করেও নামটা লিখতে ভুলে গেছি।
আয়েশা তাকিয়া?
খ, এ মাইরি খুবই বাজে ব্যাপার হচ্ছে। টইটা ক্রমে আপনার-আমার কথোপকথনের রূপ নিচ্ছে। এটা সমর্থনযোগ্য নয়। বিশেষত সোমনাথ কিছুই বলছেন না যেখানে।
যাই হোক, ফের ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি।
রাজমোহন গান্ধী - আর যাই হন, অরুণ নেহরু নন। তাঁর জিন্না মূল্যায়ন সংক্ষিপ্ত ঠিকই কিন্তু সেটা খারাপ নয়। মানে গোটাটাই সুইপিং স্টেটমেন্ট নয়। এখন যিনি এই সময়টার চর্চা করবেন, তিনি যদি ছাঁকনির কাজটা না-ই করতে পারলেন, তবে বাপু ও রাস্তা পরিহার করাই ভালো।
সুনীতি ঘোষ - চরম পছন্দের ইতিহাসবিদ। মার্ক্সবাদী আঙ্গিক থেকে অত তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ আমার চোখে পড়েনি (রজনী পাম দত্তকে মনে রেখে বলছি)।
উলপার্ট - কেন? না ভিতটা গড়েছেন বলে। ওই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে পরবর্তীরা চর্চা করার সুবিধেটুকু পেয়েছেন।
শৈলেশ বন্দ্যো - একজন পাঁড় গান্ধীবাদী যিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে জিন্নাকে নিয়ে গবেষণা করে বই লিখলেন। প্রচুর তথ্য এবং সেগুলো যথেষ্ট মূল্যবান। এবং কোথাও বায়াসনেস নেই। এটা আমার কাছে খুবই বিশেষত্বের দাবি রাখে।
আয়েষা-উর্বশী - রেফারেন্সগুলো দিচ্ছি কাকে? না, দ-দিকে। তিনি এই দুজনকে পড়েননি ধরে নেওয়া ধৃষ্টতা। কাজেই উল্লেখ করিনি। কিন্তু আমার মনে হয়েছে তিনি উলপার্ট-শৈলেশ না-ও পড়ে থাকতে পারেন। তাই রেফার করেছি। আমার কাছে উলপার্ট-শৈলেশ হচ্ছেন বিদ্যাসাগরের শম্ভুচন্দ্র-বিনয় ঘোষ। আয়েষা-উর্বশী হচ্ছেন অশোক সেন-শেখর বন্দ্যো।
সোমনাথের লেখার ক্ষেত্রে মূল দুর্বলতা উনি তিনটে জিনিসকে স্বতঃসিদ্ধ ধরে এগিয়েছেন - হিন্দ স্বরাজের অভ্রান্ততা, দক্ষিণ আফ্রিকায় সত্যাগ্রহের চলতি বয়ান এবং গান্ধীর মৃতদেহর ওপর দিয়ে দেশভাগ। বলা বাহুল্য, এই ধরে নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি তর্কবিদ্যার পূর্বপক্ষ-উত্তরপক্ষের ধার ধারেননি। দ্বিতীয়ত, নোয়াখালি সম্পর্কে উনি ভরসা করেছেন মূলত প্যারেলাল, মনু গান্ধী এবং নির্মল বোসকে। এটা বিশুদ্ধ বায়াসড নির্বাচন বলে আমি মনে করি। শুধু নোয়াখালি নিয়েই যেখানে বিস্তর কাজকর্ম হয়েছে সেসব না পড়ে পোবোন্দো লিখতে গিয়ে পরিশেষে এটি একটি রাজনৈতিক প্যামফ্লেটের আকার নিয়েছে।
ডিসি, এমন বিন্দাস থাকুন চিরকাল।
সোমনাথ রায় মশাইকে জানানোর ছিল যে গান্ধীর বিষয়ে মানে পার্সোনালিটি কাল্ট হিসেবেই যদি দেখতে চান ডেভিড আর্নল্ড এর প্রোফাইল ইন পাওয়ার সিরিজ এর বই টি দেখতে পারেন।ইনি সাব অল্টারন গ্রুপের লোক।
হ্যাঁ আর করবনা, অন্যায় হয়ে গেছে। সোমনাথ রায় খুব ই শান্ত সমাহিত বোধহয়। সরি এভরিওয়ান।
আমি একটা কাজে বাইরে এসেছি। তাই উত্তর দিতে পারিনি।
এলেবেলের দেওয়া বইগুলো পড়ছি।লেলিভেল্ড পড়ে নোয়াখালির ব্যাপারে ধারণা বদলালো না। উনি বলছেন দৃশ্যত রাজনৈতিক বা সামাজিক লাভ হয় নি। সেটা নিয়ে তো আমার বক্তব্যের কোনো সমস্যা হয়না। পদ্ধতিটা মূল আণ্ডারলাইন, ফলাফল অপ্রয়োজনীয় না হলেও গৌণতর।
আমি দক্ষিণ আফ্রিকার সত্যাগ্রহ নিয়ে একলাইনও রেফারেন্স টানিনি। আমার দ্বিতীয় আন্ডারলাইন ছিল, আইন অমান্য নিয়ে গান্ধিজীর দ্বিধা, যার সারবত্তা আমি দেখতে পাই।
হিন্দ স্বরাজ আমার পলিটিকাল লাইন, তাতে ভ্রান্তি থাকতেই পারে। আমি যেটা করে খাই, তাতেও তো ভ্রান্তি থাকে। ভ্রান্তিটা জানা এবং ভ্রান্তিটাকে সামলে কাজ চালানো দরকারি।
বোধিদা, মধ্যযুগ খুব দরকারি লাইন। আমি এটা নিয়ে বিশদ আলোচনায় আগ্রহী।
আমি শৈলেশ বন্দ্যোপাধ্যায় পড়া শুরু করলাম। বেশ ভালো এগোচ্ছে।