এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  স্বাস্থ্য

  • করোনার ভ্যাক্সিন – কবে ঘটাবে মৃত্যুভয়ের অবসান?

    ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য
    আলোচনা | স্বাস্থ্য | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৪৭৩৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • সুবিখ্যাত ফরেন পলিসি পত্রিকায় (১৭.০৯.২০২০) একটি লেখার শিরোনাম “India Sets Coronavirus Record”। এ লেখায় প্রশ্ন করা হল – “Low death rate?” এরপরে বলা হচ্ছে – “অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের মৃত্যুহার কম। প্রতি ১০ লক্ষ ভারতবাসীড় ক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা ৬১, যেখানে বিশ্বে এই গড় প্রতি ১০ লক্ষে ১২১.৭ – রাশিয়ায় ১৩১, আমেরিকায় ৬০৯ এবং ব্রাজিলে ৬৩১। যদিও ভারত সরকার কম মৃত্যুহারকে সাফল্যের খতিয়ান বলে ধরছে, বাস্তবতা বলছে এরকম তথ্য ঘোলাটে (murky)। কম মৃত্যুহার নিয়ে উল্লসিত হবার বিপদ হচ্ছে এটা ভারতীয় জনতার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করবে এবং অতিমারিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করবেনা।” কলকাতা থেকে প্রকাশিত টেলিগ্রাফ পত্রিকা-র একটি প্রতিবেদনের (২০.০৯.২০২০) শিরোনাম “How Covid numbers were hushed up”। এখানে বলা হয়েছে যে “সরকারের নির্দেশে গবেষকেরা একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র থেকে ১০টি শহরের কনটেইনমেন্ট জোন এবং হটস্পট থেকে করোনা ভাইরাসের নতুন সংক্রমণের prevalence rates-এর তথ্য মুছে দিতে বাধ্য হয়েছে। এই তথ্য গোটা দেশ জুড়ে সার্ভে করে সংগৃহীত হয়েছিল। দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এ খবর জানা গেছে। ভারতের স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থার প্রধান বলরাম ভার্গবের নির্দেশে গবেষণাপত্র থেকে তথ্য মুছে দেবার কাজ হয়েছে।” 





    বেশ কিছুদিন আগে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা-র (১৭.০৭.২০২০) একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল – “As India skyrockets past 1 million coronavirus cases, a mystery surrounds death toll”। এই প্রতিবেদনে ভারতে সংক্রমিতের হার এবং মৃত্যুর সরকারি হিসেব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে – “বিশেষজ্ঞরা বলছেন মৃত্যু সংক্রান্ত সরকারি তথ্য নিশিচিতভাবে অসম্পূর্ণ, বিশেষ করে যে দেশে এক বিশাল সংখ্যক মানুষ মারা যায় গ্রামাঞ্চলে এবং তারা কোন ডাক্তারি মনযোগ পায়না। এর ফলে এদের মধ্যে টেস্টের ও ডায়াগ্নোসিসের হার নিতান্তই কম। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অসংখ্য ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে করোনা ভাইরাস-ঘটিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে হয় ভুল রিপোর্ট করা হয়েছে কিংবা চোখ এড়িয়ে গেছে।” এর সাথে যোগ করা হচ্ছে যে রাশিয়াতে কনফার্মড কেসের প্রেক্ষিতে মৃত্যু ১.৬%, আমেরিকাতে ৩.৯% আর ভারতে সে হার ২.৬%। রাশিয়া এবং ভারত উভয় দেশের ক্ষেত্রেই মৃত্যু হার নিয়ে সংশয় দেখা যাচ্ছে বহুল প্রচারিত আমেরিকান দৈনিকে। 


    এনডিটিভি-র সাম্প্রতিক একটি অন্তুর্তদন্তমূলক প্রতিবেদনের (১৪.০৯.২০২০) শিরোনাম “India Coronavirus Cases: Daily Covid-19 Cases Could Be 2-2.5 Lakh, Instead Of 1 Lakh, Data Shows”। প্রতিবেদনে তথ্য সহ দেখানো হয়েছে – “যেসব সরাক্রি তথ্য দেখা হয়নি এবং সর্বসমক্ষে আনা হয়নি তার ভিত্তিতে এটা এখন স্পষ্ট যে ভারত বিপুলভাবে দেশে কোভিড-আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে। আমরা যখন বলছি প্রতিদিন ৯৫,০০০ থেকে ১,০০,০০০ কোভিড কেসের বৃদ্ধি ঘটছে – যা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ – অপ্রকাশিত তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে এ সংখ্যা কার্যত অনেক বেশি হতে পারে, প্রতিদিন ২০০,০০০ থেকে ২৫০,০০ নতুন করে সংক্রমিত।” এখানে পরপর কতকগুলো টেবল দেওয়া হয়ে হয়েছে। সেগুলো তুলে ধরছি।







    (আমি এ অংশটুকুতে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমার স্নেহের ঈপ্সিতা পালের কাছে ঋণী)


    নেচার পত্রিকার প্রতিবেদন (১৫.০৭.২০২০) “Plug COVID-19 research gaps in detection, prevention and care”-এ বলা হচ্ছে – “এ মাসের একটি বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে কোভিড-১৯ চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলো চলছে সেগুলোর অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয় কিংবা কন্ট্রোল্ড নয় – ৬টিতে একটি ট্রায়ালে দেখা গেছে হাসপাতালের রোগীদের ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়ায় ব্যবহৃত ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।” ইংল্যান্ডের RECOVERY ট্রায়ালে ৫.০৬.২০২০ তারিখে সংশয়াতীতভাবে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন পরিত্যক্ত হবার পরেও এর ব্যবহার এখনও চলছে, এমনকি ivermectin বলে একটি ওষুধেরও – যার কোন বড়ো রান্ডোমাইজড কন্ট্রোল্ড ট্রায়াল নেই, বরঞ্চ যে ডোজে প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে সে ডোজে মানুষের ক্ষতি করতে পারে বলে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় মন্তব্য করা হয়েছে। 


    হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে সর্বশেষ রিপোর্ট বেরিয়েছে NEJM-এ “Hydroxychloroquine with or without Azithromycin in Mild-to-Moderate Covid-19” শিরোনামে (২৩.০৭.২০২০)। এ গবেষণাপত্রের সিদ্ধান্ত হল – “মৃদু কিংবা মাঝারি ধরনের উপসর্গ নিয়ে নিয়ে যেসমস্ত কোভিড-১৯ রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি আছে তাদের ক্ষেত্রে অ্যাজিথ্রোমাঈশীণ কিংবা হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ১৫ দিন ব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড কেয়ারের তুলনায় কোন ক্লিনিক্যাল উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি।”


    এতসবের পরে যে সারসত্যটি আমাদের কাছে পড়ে থাকে তা হল গত ডিসেম্বর থেকে যে মারণ ভাইরাস-বাহিত রোগের সূচনা হয়েছিল তা আজ আক্ষরিক অর্থে অতিমারির চেহারা নিয়েছে। ২১৫টি দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। worldometer-এর তথ্য অনুযায়ী (২০.০৯.২০২০) পৃথিবীতে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩১,০৪১,৯৯০। মৃত ৯৬২,৪১৩ জন মানুষ। সেরে উঠেছে ২২,৬৪৭,৯০১ জন। কবে এ রোগ বিদায় নেবে পৃথিবী থেকে তা বিজ্ঞানীদের অজানা এবং একইসাথে সাধারণ মানুষ অনিশ্চয়তার গুরুভার শিকার। আরএনএ গোত্রভুক্ত এই বিটা করোনা ভাইরাস সম্বন্ধে এখনও বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মেধার বিজ্ঞানীকুল স্বল্প পরিমাণে জেনে উঠতে পেরেছেন। কত সংখ্যক ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে সংক্রমণ হবে – অজানা। শরীরের ভেতরে প্রবেশের পরে কিভাবে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হয়, নিত্য নতুন উপসর্গ কি পদ্ধতিতে হচ্ছে, যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় প্যাথোফিজিওলজিকাল পরিবর্তন, তাও অজানা। এমনকি আমাদের ইমিউন সিস্টেমের কোথায় কোথায় এবং ঠিক কি নির্দিষ্ট পথে আক্রমণ করে ও পরিবর্তন ঘটায় – এ কথাও আমরা এখনও সম্যক বুঝে উঠতে পারিনি। সবমিলিয়ে এক অনিশ্চয়তার গুরুভার আমরা বহন করছি। দুটো শব্দ দিয়ে একে হয়তো প্রকাশ করা যায় – (১) অবদমিত আতঙ্ক, এবং (২) ভেবে-নেওয়া মৃত্যুভয় (anticipatory dread)। 


    এর সাথে আরেকটি বিষয় আমাদের গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলছে – আমাদের সামাজিক সংস্থিতির রূপান্তর, সাময়িক হোক বা দীর্ঘকালীন। এটা কোন বন্যা, আগুন লাগা, নদী ভাঙ্গন বা খরা-মনন্ত্বরের মতো ব্যাপার নয় যেখানে যৌথভাবে ঝাঁপিয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক মানবিক এবং সামাজিক সংস্থিতির লক্ষণ। এখানে পরিস্থিতি ঠিক বিপরীত। যে যত দূরত্ব রক্ষা করতে পারবে তার নিরাপদ থাকার সম্ভাবনা ততো বেশি। ভার্চ্যুয়াল দুনিয়ার সর্বগ্রাসী দাপটে যেখানে এমনিই আমরা পৃথিবীর মাটিতে পরস্পর-বিচ্ছিন্ন ভার্চ্যুয়াল দ্বীপে বাস করি সেখানে সমাজের এই structural বা গঠনগত রূপান্তর আরেক নতুন পরিস্থিতি ও সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে।


    এরকম পরিস্থিতিতেও যারা সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে আর্ত মানুষকে সাহায্য করছেন, তাদের চিকিৎসা করছেন – চিকিৎসক-নার্স-চিকিৎসাকর্মী, পুলিস, যারা নিরন্তর ময়লা ও বর্জ্য পরিষ্কার করছেন – তাঁরা সমাজের নমস্য। ল্যান্সেট জার্নালে প্রকাশিত (১৯.০৭.২০২০) সম্পাদকীয় (“Race for a COVID-19 vaccine”-এ বলা হয়েছে – “এই মুহূর্তে আমরা সম্মানিত করি সমস্ত বিজ্ঞানী, ডাক্তার, এবং অন্যান্যরা যাঁরা ঘড়ির কাঁটা ধরে অপরিমেয় পরিশ্রম করে যাচ্ছেন যাতে এই অতিমারির একটি সমাধান বেরোয়।” এ তো আমাদের সবার মনের কথা!


    কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস ঘটিত যে ভয়ঙ্কর সংক্রমণের সময় আমরা অতিবাহিত করছি সেটা একেবারেই অচেনা, আগন্তুক। মানুষের শরীরের সাথে এর কোন পূর্ব পরিচয় ছিলনা। আগে যে আরএনএ ভাইরাস ঘটিত মহামারি হয়েছে – যেমন, ২০০২-৩-এ সার্স-কোভ-১ বা ২০১২-তে মূলত মধ্যপ্রাচ্যে সীমাবদ্ধ মার্স (MERS) – সেগুলোর থেকে এর চরিত্র ভিন্ন। এর গায়ে থাকা স্পাইক প্রোটিনের ফলে সংক্রমণক্ষমতা অনেক বেশি। সাধারণ ফ্লু-র চেয়ে ১০ গুণ বেশি সংক্রমণ ক্ষমতা। যদি আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি তৈরি করতে পারে তাহলে স্থায়ী সমাধান হবে, যেমনটা হাম, পোলিও বা স্মল পক্সের ক্ষেত্রে হয়েছে – বছরের পরে বছর ধরে আন্তর্জাতিক স্তরে লাগাতার প্রচার এবং প্রতিটি দেশে সার্বজনীন টীকাকরণের ফলে। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া এ রোগগুলো এখন পৃথিবী থেকে নির্মূল হয়ে গেছে। 


    দুভাবে আমরা করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে স্থায়ীপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি গড়ে তোলার কথা ভাবতে পারি। এবং এ দুটোই একমাত্র পরীক্ষিত কার্যকরী পথ – (১) হার্ড ইমিউনিটি বা গোষ্ঠী ইমিউনিটি এবং (২) ভ্যাক্সিন।


    কিন্তু এখানে একটা কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে – যদি ৭০% থেকে ৯০% জনসংখ্যার সংক্রমণ ঘটে (১০.০৪.২০২০-তে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাব্লিক হেলথের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী) তাহলে আমরা হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করেছি এমনটা ভাবতে পারি। যদি এ পরিমাপ ৪০-৫০%-ও হয় তাহলেও এরকম একটা পরিসংখ্যানে পৌঁছুনো কার্যত অসম্ভব। নিউ ইয়র্কের মতো করোনা-বিধ্বস্ত শহরে যেখানে মৃত্যু হয়েছে.৩৩,১০৯ জনের সেখানে শহরের সমগ্র জনসংখ্যার মাত্র ১২.৩ থেকে ১২.৭% আক্রান্ত হয়েছে। ফলে ওখানেও হার্ড ইমিউনিটির কোন ভরসা বৈজ্ঞানিকেরা দেখতে পাচ্ছেন না। সেক্ষেত্রে ভারতবর্ষ উজার হয়ে গেলেও শেষ অবধি হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে কিনা সন্দেহ আছে। নিউ সায়ান্টিস্ট পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী (১.০৯২০২০) লন্ডন শহরে ২৬ এপ্রিল থেকে ৯ আগস্টের মধ্যে অ্যান্টিবডি দেখা গেছে ১০% জনসংখ্যার আশেপাশে। ফ্রন্টলাইন পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী (২৮.০৮.২০২০) – “COVID-19: Indian population still far from herd immunity”। এবার প্রশ্ন আসবে রক্তে কতদিন থাকে এই অ্যান্টিবডি? নেচার-এ প্রকাশিত (৩.০৯.২০২০) প্রতিবেদন অনুযায়ী – “অ্যান্টিবডির পরিমাণ উপসর্গ দেখা দেবার প্রথম কয়েক দিনে মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় পৌঁছয়, এবং ৩ মাসের মধ্যে, কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, অ্যান্টিবডিকে আর শনাক্ত করা যায়না।” ল্যান্সেট-এ একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ খোলাখুলি জানিয়েছে – “ইংল্যান্ড এবং আমেরিকাতে কোভিড-১৯ ইতিমধ্যেই দরিদ্র এবং সংখ্যালঘু অংশের ক্ষেত্রে বিষমানুপাতিক হারে মৃত্যু ঘটিয়েছে – সামাজিকভাবে যে দারিদ্র্য ও অসাম্য বিরাজ করে এটা তারই প্রতিফলন। নিউ ইয়র্কে লাটিনোডেড় জন্য একটি জরুরী পরিষেবা কেন্দ্রে ৬৮.৪%-এর ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি টেস্ট পজিটিভ হয়েছে। কিন্তু এটা এখনও অস্পষ্ট যে এরকম অ্যান্টিবডি ব্যক্তিকে সুরক্ষা দেবে কিনা কিংবা হার্ড ইমিউনিটি অর্জিত হবে কিনা।” 


    প্রসঙ্গত, আমাদের ইমিউনিটির দীর্ঘস্থায়িত্বের ক্ষেত্রে রক্তের T-cell সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে যেমন T-cell-এর একটি অংশ CD4 অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে, তেমনি আরেকটি অংশ CD8 শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক আগন্তুককে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। এজন্য এর আরেক নাম “কিলার টি-সেল”।


    সাম্প্রতিক সময়ে JAMA-তে একটি মূল্যবান গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে (১১.০৯.২০২০) “COVID-19 and the Path to Immunity” শিরোনামে। এখানে বলা হয়েছে – “সার্স-কোভ-৩ সংক্রমণের প্রথ ১ সপ্তাহে টি সেলসমুহকে উদ্দীপিত করে, উদ্দীপিত করে ভাইরাস-নির্দিষ্ট memory CD4+ cells and CD8+ T cells-দের এবং এদের সর্বোচ্চ মাত্রা দেখা যায় প্রথ ২ সপ্তাহের মধ্যে। কিন্তু পরবর্তী ১০০ দিনে এদের মাত্রা পড়ে যায় এবং সামান্য পরিমাণে দেখা যায়।” আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হল – “Although severe COVID-19 is characterized by high-viral titers, dysregulated innate inflammatory cytokine and chemokine responses and prolonged lymphopenia, antibody-dependent enhancement or dominant CD4+ TH2-type cytokines (eg, IL-4, IL-5, IL-13) do not appear to contribute to acute COVID-19 severity.”


    নীচের ডায়াগ্রামটি বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করবে।



    [Adaptive Immunity to Coronavirus Disease 2019Generalized model of T-cell and B-cell (plasmablast, antibody) responses to severe acute respiratory syndrome coronavirus 2 (SARS-CoV-2) infection projected over 1 year following infection. Neutralizing antibodies, memory B cells, and CD4+ and CD8+ memory T cells to SARS-CoV-2, which are generated by infection, vaccination, or after reexposure, are key to the path to immunity. The dotted lines represent peak B-cell, T-cell, and antibody responses following infection.]

    হার্ড ইমিউনিটির চরিত্র নীচের ডায়াগ্রামটি থেকে আমরা সহজেই বুঝে নিতে পারবো।



    তাহলে পড়ে রইলো টীকা বা ভ্যাক্সিন। একে নিয়েই আমার আলোচনা। করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধী ভ্যাক্সিন তৈরির দৌড়ে ২১০টিরও বেশি কোম্পানি, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে আমেরিকার মডার্না, চিনের সাইনোবায়োটেক এবং অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের সাফল্য অন্যদের থেকে এগিয়ে।


    প্রসঙ্গত উল্লেখ করি, সায়ান্স-এর একটি খবর হচ্ছে “Unveiling ‘Warp Speed,’ the White House’s America-first push for a coronavirus vaccine” (১২.০৫.২০২০)। অর্থাৎ, ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজ যে বিকারগ্রস্ত গতি (Warp Speed) দেখাচ্ছে তা আমেরিকা-প্রথম (America-First) এই মন্ত্র নিয়ে করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন তৈরি হবে। এ লেখাতে পরে আরও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে – “আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পরিত্যাগ করে – এবং চিনের যে কোন ধরনের ভ্যাক্সিন পরিহার করে – আমেরিকা আশা করছে জানুয়ারি ২০২১-এর মধ্যে ৩ কোটি প্রমাণিত ভ্যাক্সিন তৈরি করে ফেলতে পারবে যেগুলো সবই আমেরিকানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।” সহজ কথা, ভ্যাক্সিনের সুফল ভোগ করবে কেবলমাত্র আমেরিকা। আরও বলা হয়েছে – “Warp Speed এর মধ্যেই ১৪টি ভ্যাক্সিন ক্যান্ডিডেটের মধ্যে সীমায়িত করেছে এবং পরিকল্পনা রয়েছে ৮টি ভ্যাক্সিনকে নিয়ে জোর কদমে এগোবে।” রয়টার্স সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী (১৪.০৭.২০২০) – “Warp Speed initiative aims for COVID-19 vaccine production within 6 weeks”। এই Operation Warp Speed (OWS)-এর সুবাদেই অক্সফোর্ড ভ্যাক্সিনের  ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া-র সাথে ১০ কোটি ভ্যাক্সিনের ডোজের ব্যবস্থা হয়েছে। NEJM-এ “Developng Safe and Effective Covid Vaccines – Operation Warp Speed’s Strategy and Approach” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন (২৬.০৮.২০২০) প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রতিবেদনের সর্বশেষ মন্তব্য – “কোন বৈজ্ঞানিক উদ্যোগই ২০২১-এর জানুয়ারির মধ্যে সাফল্যের গ্যারান্টি দিতে পারেনা, কিন্তু যে স্ট্র্যাটেজিক সিদ্ধান্ত এবং পছন্দ আমরা বেছে নিয়েছি, সরকার আমাদের যে সমর্থন জুগিয়েছে, এবং আমরা আজ অবধি যতদূর সাফল্য অর্জন করেছি তাতে আমরা আশাবাদী হতে পারি আমরা এই অভূতপূর্ব উদ্যোগে সফল হবো।” 


    কিছুদিন আগে (২.০৭.২০২০) আমেরিকার বিখ্যাত ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ (NIH) আমেরিকান কংগ্রেসের সামনে সাক্ষ্য দিয়েছিল – “Testimony on Operation Warp Speed: Researching, Manufacturing, & Distributing a Safe & Effective Coronavirus Vaccine”। সে সাক্ষ্যে “Witnesses appearing before the Senate Appropriations Committee Subcommittee on Labor, Health and Human Services, Education, and Related Agencies”। কারা ছিলেন সাক্ষী হিসেবে? Francis Collins, M.D., P.h.D., Director, National Institutes of Health; Robert R. Redfield, M.D., Director, Centers for Disease Control and Prevention এবং Gary Disbrow, Ph.D., Acting Director, Biomedical Advanced Research and Development Authority। Operation Warp Speed (OWS)-এর মূল বিষয়টি কি? এদের বয়ানে – “যেভাবে ট্র্যাডিশন অনুযায়ী বিভিন্ন ধাপে ভ্যাক্সিন তৈরির পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, সে পদ্ধতিগুলোকে বাতিল করার বদলে বিভিন্ন ধাপ সমান্তরালভাবে চলবে – যেমন, বাণিজ্যিকভাবে ভ্যাক্সিনের উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে এর কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা নির্দিষ্টভাবে প্রমাণের বেশ আগেই। এতে আর্থিক ঝুঁকি বাড়ে, উৎপাদনের ঝুঁকি বাড়েনা।” অর্থাৎ, যে যে ধাপে সাধারণভাবে ভ্যাক্সিন তৈরি হয় এখানে সেগুলো বাতিল করা হচ্ছেনা। একইসাথে একাধিক ধাপের কাজ সমান্তরালভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু তৈরি ভ্যাক্সিনের নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্নের নিরসন হলনা।


    মেডিসিনের জগতে, আমাদের সবার জানা, মান্য জার্নাল NEJM-এ ভ্যাক্সিনে তৈরির নতুন পথ-পদ্ধতির ব্যাখ্যা দিয়ে সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে – “The Covid-19 Vaccine-Development Multiverse” শিরোনামে (১৪.০৭.২০২০)। এই সম্পাদকীয়তে বলা হল – “কোভিড-১৯-কে প্রতিরোধ করার জন্য একটি ভ্যাক্সিনের জরুরী প্রয়োজন এবং এর পরিণতিতে এই রোগের ছড়িয়ে পড়ার ফলে যত মৃত্যু ঘটছে এবং শারীরিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে তাকে আটকানো যাবে।” বলা হল – “অনেক সংখ্যক ফেজ ৩ ট্রায়াল ব্যর্থ হয় কারণ নিরাপত্তা (safety) এবং কার্যকারিতা (efficacy)-র সবচেয়ে ভালোভাবে সুসামঞ্জস্য রক্ষা করতে যে ডোজের প্রয়োজন সেটা করতে ভুল হয়। mRNA vaccine নিয়ে সঠিক ডোজ নির্ধারণ করার কাজ এখনো চলছে।” তাহলে এখনো খুব নিশ্চিত অবস্থানে আমরা নেই। বৈপ্লবিক গতিতে করোনা ভ্যাক্সিনের প্রস্তুতি চলছে – ৬ বছরের সময় সীমাকে ৬ মাসে নামিয়ে আনার পরেও স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আমরা নেই। সম্পাদকীয়তে আরও বলা হল – “পৃথিবী এখন দেখেছে ৬ বছরের কাজকে সঙ্কুচিত করে ৬ মাস করা হয়েছে। ভ্যাক্সিনের বহুস্তরীয় পদ্ধতি (vaccine multiverse) এটা আবার করতে পারবে, যাতে বাস্তবক্ষেত্রে নিরাপদ, কার্যকরী কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন আগামী ৬ মাসে এর লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারে?” পাঠকেরা নিজেদের মতো করে বুঝে নিন। 


    এই সম্পাদকীয়তেই জানানো হল “সার্স-কোভ-২-এর প্রথম জেনোমিক সিকোয়েন্স প্রকাশ করা থেকে ফেজ ১ পর্যন্ত আসতে ৬ মাস লেগেছে, যেখানে স্বাভাবিক নিয়মে লাগে ৩ থেকে ৯ বছর।” সহজ কথা হল, জানুয়ারি, ২০২০-তে সার্স-কোভ-২-এর জেনোমিক সিকোয়েন্স বিজ্ঞানীদের হাতে আসার পরে ফেজ ১ ট্রায়াল শুরু হয়েছে ৬ মাসের মধ্যে যেখানে প্রচলিত পথে এ সময় লাগার কথা ৩ থেকে ৯ বছর। নীচের ছবিতে এটা খানিকটা পরিষ্কার হবে।



    অতিমারির জীবন-মরণ সমস্যার ক্ষণে সময়ের পরিমাপকে সংকুচিত ও জমাট বাঁধিয়ে দেওয়া হচ্ছে (condensed, coalesced and overlapped)। এতে সময় সংক্ষেপ হচ্ছে। এর ফলে রোগীর নিরাপত্তা, ভ্যাক্সিন নিরাপদ কিনা এগুলো যেমন বিবেচ্য তেমনই বিবেচ্য ভ্যাক্সিনটি নির্ভরযোগ্য নৈতিকতার এবং বৈজ্ঞানিক কঠোর শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে গেলো কিনা, এ পরীক্ষাগুলোয় পাস করলো কিনা এগুলোও বিশেষ বিবেচ্য বিষয়।



    অবশ্য বৈজ্ঞানিকদের পুর্ব-লব্ধ জ্ঞান এক্ষেত্রে বিশেষ কাজে লেগেছে। সেগুলো হল – (১) করোনা ভাইরাসের দেহের স্পাইক প্রোটিনের ভূমিকা সম্বন্ধে আগাম ধারণা থাকা, (২) ইমিউনিটির ক্ষেত্রে স্পাইক প্রোটিন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে “নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি”-র ভূমিকা, (৩) নিউক্লিক অ্যাসিড (যেমন আরএনএ বা ডিএনএ) ভ্যাক্সিন প্ল্যাটফর্মের উন্নত চেহারায় বিবর্তন এবং (৪) ভ্যাক্সিন তৈরির প্রক্রিয়াকে ধাপে ধাপে (sequentially) করার পরিবর্তে সমান্তরাল ভাবে (parallel) করা, কিন্তু যারা ভ্যাক্সিন স্টাডিতে অংশগ্রহণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি না নিয়ে। পূর্বোল্লেখিত সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে – “কার্যকারিতা কেবলমাত্র তখনই নির্ধারণ করা যাবে যখন যাদেরকে ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে এবং অতিমারির হটস্পটের মধ্যে তুল্যমূল্য বিচার (match) করা যায় ... এজন্য প্রাথমিক এন্ড পয়েন্টগুলোকে সতর্কতার সাথে নির্বাচন করতে হবে (এ বিষয়ে এর আগে বিস্তারিত আলোচনা করেছি), নির্বাচন করতে হবে স্টাডি-ডিজাইন এবং স্যাম্পেল সাইজের (অর্থাৎ কতজনের ওপরে ট্রায়াল দেওয়া হবে) সম্ভাব্যতার পুনর্মূল্যায়ন বিবেচনায় রাখতে হবে।”


    NEJM-এ প্রকাশিত (১.০৭.২০২০) আরেকটি গবেষণাপত্র “Accelerating Development of SARS-Cov-2 Vaccines – The Role for Controlled Human Infection Model”-এ বলা হল – “বর্তমানে চালু প্রচেষ্টাগুলো বিভিন্ন ধাপকে চেপে সংকুচিত করে এবং একটির ওপরে আরেকটিকে সমাপতিত করে (overlap), একটি ধাপ থেকে আরেকটি ধাপে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করে, কার্যকারিতা প্রমাণিত করার স্টাডিকে সে ক্ষমতা দেওয়া যাতে খুব স্বল্প সময় সীমার মধ্যে এর ফলাফল পাওয়া যায়, এবং নিয়ামক সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদন আসার আগেই বিপুল হারে উৎপাদন শুরু করে দেওয়া হবে।” একটি চিত্রের সাহায্যে বিষয়টি বোঝানোও হল।





    কত ধরনের ভ্যাক্সিন?


    নেচার-এ প্রকাশিত (৩.০৯.২০২০) বিশেষ নিবন্ধ “Evolution of the COVID-19 vaccine development landscape”-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২.০৯.২০২০ অবধি হিসেব বলছে ৩২১টি বিভিন্ন ধরনের ভ্যাক্সিন ক্যান্ডিডেট (আমাদের বিচারে ভ্যাক্সিন) গবেষণার বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২১টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মধ্যে আছে – ৩৪টি দেশে ৪৭০টি স্থানে ২৮০,০০০ জন মানুষকে রিক্রুট করা হবে ভ্যাক্সিনের ট্রায়ালের জন্য। নীচের ডায়াগ্রাম থেকে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাক্সিন এবং কোনটি কোন স্তরে রয়েছে সে বিষয়টি স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে।



    [Pipeline of COVID-19 vaccine candidates by phase of development and technology platform. a | Exploratory and preclinical pipeline. b | Clinical pipeline. Traditional approaches include live attenuated and inactivated; novel approaches include viral vector, RNA, DNA, recombinant protein, peptide-based, virus-like particle.]

    এ প্রতিবেদনের হিসেব অনুযায়ী ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল যে ভ্যাক্সিনগুলো নিয়ে হচ্ছে তার মধ্যে ১১টি চিনা সংগঠনের, ৭টি আমেরিকার Operation Warp Speed (OWS) প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত – যার লক্ষ্য জানুয়ারি ২০২১-এর মধ্যে ৩ কোটি ভ্যাক্সিন তৈরি করা (ম্যানহাট্টান প্রোজেক্টের সাথে তুলনীয়)। ৮টি ভ্যাক্সিন Coalition for Epidemic Preparedness Innovations (CEPI)-র কাছ থেকে ফান্ড পাচ্ছে। এছাড়াও একটি নতুন ভ্যাক্সিন নিয়েও পরীক্ষা চলছে যা নাক দিয়ে দেওয়া হবে – প্রচলিত পথে নয়। কোন দেশে কোন সংস্থা বা বহুজাতিক কোম্পানি কিভাবে এগোচ্ছে সেটা পরিষ্কার হবে নীচের ডায়াগ্রাম থেকে।



    [Profile of COVID-19 vaccine developers by type and geographical location. The ‘other industry’ category includes companies other than those in the ‘multinational pharmaceutical company’ category, which are defined as having revenues of more than US$10 billion per year. For partnerships, the location is that of the lead developer. See Supplementary Box 1 for details of the data set and analysis.]

    কি কি পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক এ বিষয়ে পূর্বোক্ত প্রতিবেদনে ধাপগুোলো বলা হয়েছে। (১) ট্রায়াল ডিজাইন – এন্ড পয়েন্ট এবং শক্তিশালী স্যাম্পেল সাইজ নির্ধারণ করা, (২) ক্লিনিক্যাল এন্ড পয়েন্ট – জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তার লক্ষ্যে নির্ধারণ করা, (৩) Correlates of protection – কতটা ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে সেটা সম্যকভাবে বোঝা, (৪) Target population – কত বয়স সীমার মধ্যে কাদেরকে দেওয়া হবে নির্দিষ্টভাবে বোঝা, (৫) Safety considerations – ভ্যাক্সিন দেওয়া শুরু হবার পরে নিরাপত্তার বিষয়টিকে কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সে অনুযায়ী ডাটা বেস (তথ্যভাণ্ডার) তৈরি করা।


    নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা (২১.০৭.২০২০) “Coronavirus Vaccine Tracker” শিরোনামের প্রবন্ধে ভ্যাক্সিনের বিভিন্ন স্তর ও আনুষঙ্গিকতা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছিল। 



    প্রসঙ্গত, অতিমারির বিশেষ পরিস্থিতিতে ট্র্যাডিশনাল যে পথে ভ্যাক্সিন তৈরি হয় – যেখানে বছরের পর বছর লেগে যায় একটি ভ্যাক্সিনকে গবেষণাগার থেকে বাজারে মানুষেড় ব্যবহারের উপযোগী করে আনতে – সে পথে এখন আর ভ্যাক্সিন তৈরি হচ্ছেনা। এ বিষয়ে আগেই খানিকটা আলোচনা করেছি, আরেকটু বিস্তৃতভাবে বলা যাক।


    এখনকার ধাপগুলো হল – (১) প্রি-ক্লিনিক্যাল টেস্টিং (বিজ্ঞানীরা ভ্যাক্সিনটি প্রাণীদের দেহে পরীক্ষা করেন), (২) ফেজ ১ সেফটি ট্রায়াল (বিজ্ঞানীরা ভ্যাক্সিনটি স্বল্পসংখ্যক মানুষের দেহে প্রয়োগ করে নিরাপদ কিনা এবং কি ডোজে দেওয়া যেতে পারে তা দেখে নেন), (৩) ফেজ ২ এক্সপান্ডেড ট্রায়াল (এখানে ট্রায়াল চালানো হয় কয়েক’শ মানুষের ওপরে – ট্রায়ালটি আরও প্রসারিত হল। জুন, ২০২০-তে আমেরিকার মান্য সংস্থা এফডিএ নির্দেশ দিয়েছে যাদেরকে ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে তাদের অন্তত ৫০%-এর ক্ষেত্রে সুরক্ষা থাকতে হবে), (৪) ফেজ ৩ এফিকেসি ট্রায়াল (এখানে বিজ্ঞানীরা ভ্যাক্সিনটি কয়েক হাজার মানুষের ওপরে প্রয়োগ করেন এবং এবং একইসাথে প্ল্যাসেবোর সাথে তুলনা করে দেখে নিতে চান ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা কেমন), (৫) এর পরের ধাপ অ্যাপ্রুভাল বা অনুমোদন, (৬) WARP SPEED – The U.S. government’s Operation Warp Speed program is expected to name five or more vaccine projects to receive billions of dollars in federal funding before there’s proof that the vaccines work. এটা এবারের অতিমারির বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ সংযোজন, (৭) CMOBINED PHASES – এটাও বর্তমান পরিস্থিতির বিশেষ অবদান। একইসাথে একাধিক ফেজকে চালানো হবে সমান্তরালভাবে, পরপর ধাপে ধাপে নয়।



    এ মুহূর্তে যেসব ভ্যাক্সিন (আপাতত মোট ৬টি) সবচেয়ে এগিয়ে আছে সেগুলো হল আমেরিকার মডার্না কোম্পানির নিউক্লিক অ্যাসিড ভ্যাক্সিন mRNA-1273। এই ভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে একটি নতুন পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে – mRNA-এর একটি টুকরো যেটাকে একটি ন্যানো পার্টিকল দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে, এবং যার পূর্ণ ক্ষমতা আছে দেহে প্রবেশ করার পরে স্পাইক প্রোটিন হিসেবে কাজ করে ইমিউন প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে (a novel lipid nanoparticle-encapsulated mRNA-based vaccine that encodes for a full-length, prefusion stabilised spike (S) protein of SARS-CoV-2)। যে সমস্ত বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত, দিনরাত এক করে নিরলস পরিশ্রম মাত্র ৬৩ দিনের মধ্যে জেনোমিক সিকোয়েন্স নির্বাচন করে মানুষের ওপরে ট্রায়ালকে (from genomic sequence to trial) সম্ভব করে তুললেন তাঁরা মানবজাতির নমস্য। ল্যান্সেট পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয় “Race for a COVID-19 vaccine”-এ মন্তব্য করা হয়েছে – “The speed of these developments_63 days from sequence selection for mRNA-1273 to the beginning of a human trial for a vaccine candidate – is impressive, owing to both the relentless work of the scientists and the unprecedented demand of the circumstances.” যেহেতু  mRNA-1273 ভ্যাক্সিনে জীবিত ও খর্বিত ক্ষমতার ভাইরাসকে (live attenuated virus) ব্যবহার করা হয়নি এজন্য তুলনায় নিরাপদ। 


    আরেকটা উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল যে এই ভ্যাক্সিনকে সংরক্ষণের জন্য কোল্ড চেইনের আলাদা করে প্রয়োজন নেই। এমনকি গামা রশ্মি দিয়ে একে পরিশুদ্ধ করলেও এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়না। উল্লেখ করা দরকার, যেকোন ওষুধ, প্রযুক্তি বা ভ্যাক্সিনকে ৩টি ফেজের ট্রায়ালের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এখানে ফেজ-১, ২ এবং ৩ কিভাবে হয় জেনে নেওয়া ভালো। ফেজ-১-এ কয়েক ডজন স্বাস্থ্যবান ভলান্টিয়ারকে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ফেজ-২-এ নেওয়া হয় কয়েক’শ মানুষকে। ফেজ-৩-এ সে পরীক্ষা করা হয় কয়েক হাজার মানুষের ওপরে – ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এখনও অবধি জেনেটিক মেটেরিয়াল – আরএনএ কিংবা ডিএনএ – থেকে তৈরি ভ্যাক্সিন FDA-র অনুমোদন লাভ করেনি। কিন্তু বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। একধরনের ইমার্জেন্সি অবস্থা তৈরি হয়েছে। এজন্য সমস্ত সম্ভাবনা খোলা রাখা হয়েছে।


    NEJM-এ “An mRNA Vaccine against SARS-CoV-2 – Preliminary Report” শিরোনামে মডার্না ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে (১৪.০৭.২০২০)। ট্রায়াল রিপোর্টে বলা হয়েছে – “We conducted a phase 1, dose-escalation, open-label trial including 45 healthy adults, 18 to 55 years of age, who received two vaccinations, 28 days apart, with mRNA-1273 in a dose of 25 μg, 100 μg, or 250 μg. There were 15 participants in each dose group.” অর্থাৎ, মোট ৪৫ জন ভলান্টিয়ারের ওপরে তিনটি ডোজের – ২৫, ১০০ এবং ২৫০ মাইক্রোগ্রাম – ভ্যাক্সিন দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। কম গুরুত্বপূর্ণ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন সমস্যা ভ্যাক্সিন গ্রহীতাদের হয়নি। এদের সিদ্ধান্ত হল – “The mRNA-1273 vaccine induced anti–SARS-CoV-2 immune responses in all participants, and no trial-limiting safety concerns were identified. These findings support further development of this vaccine.”


    এর সাথে এই ট্রায়াল রিপোর্টের লক্ষ্যণীয় অংশ হল – “Of the three doses evaluated, the 100-μg dose elicits high neutralization responses and Th1-skewed CD4 T cell responses, coupled with a reactogenicity profile that is more favorable than that of the higher dose.” অর্থাৎ, তাৎক্ষণিভাবে অ্যান্টিবডি তৈরি করা ছাড়াও পূর্বালোচিত সিডি৪ টি সেল প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে যা দেহের দীর্ঘকালীন প্রতিরক্ষার জন্য নিতান্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়া, ৬০০ জন ভলান্টিয়ারকে নিয়ে ২৫ এবং ১০০ মাইক্রোগ্রাম ডোজে ফেজ ২ ট্রায়াল শুরু হয়েছে। “A large phase 3 efficacy trial, expected to evaluate a 100-μg dose, is anticipated to begin during the summer of 2020.”


    ভ্যাক্সিন নিয়ে পরীক্ষা শুরুর একেবারে গোড়ার দিকে নেচার পত্রিকায় (১৮.০৩.২০২০) “Coronavirus vaccines: five key questions as trials begin” প্রবন্ধে মৌলিক কতগুলো প্রশ্ন রাখা হয়েছিল ভ্যাক্সিন ট্রায়াল নিয়ে – (১) মানুষের কি ইমিউনিটি তৈরি হয়? (এখানে বলার যে WHO পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে কোন “ইমিউনিটি পাসপোর্ট” নেই। একবার আক্রান্ত হলে একজন ব্যক্তি যে আবার আক্রান্ত হবেনা এরকম কোন নিশ্চয়তা নেই।) (২) যদি ইমিউনিটি তৈরি হয় তাহলে সেটা কতদিন অব্দি থাকবে? (উপরের প্রশ্নে এর উত্তর আছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় সেরে ওঠার পরে আবার সংক্রমিত হবার ঘটনা দেখা যাচ্ছে।) (৩) যারা ভ্যাক্সিন তৈরি করছে তারা কি ধরনের ইমিউন প্রতিক্রিয়া আশা করে? (৪) আমরা কি করে জানবো যে একটি ভ্যাক্সিন ঠিকভাবে কাজ করবে? (৫) ভ্যাক্সিনটি কি নিরাপদ হবে? এ প্রশ্নগুলো এখনও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং এগুলো মাথায় রেখে ভ্যাক্সিন তৈরির কাজ চলছে।


    ল্যান্সেট-এ প্রকাশিত “Race for a COVID-19 vaccine” সম্পাদকীয়তে (১৯.০৭.২০২০) বলা হয়েছে – “Moderna and CureVac (Tubingen, Germany) are developing an mRNA-based vaccine, Novavax (MD, USA) is using recombinant protein nanoparticle technology to deliver antigens derived from the viral S protein.” এছাড়া অন্য পদ্ধতিও ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমনটা আমরা নেচার পত্রিকার “Evolution of the COVID-19 vaccine development landscape” এবং অন্য একটি প্রবন্ধে ব্যবহৃত একাধিক ডায়াগ্রাম থেকে বুঝেছি। ল্যান্সেট-এর উল্লেখিত সম্পাদকীয়তে বলা হল – “Other recombinant vaccine approaches have also been considered. Researchers at the University of Hong Kong (Pok Fu Lam, Hong Kong) are using a weakened version of influenza virus that has been altered to express the surface protein of the SARS-CoV-2 virus, and the consortium led by Institut Pasteur (Paris, France) is adopting a measles vaccine as a vector. The University of Queensland (QLD, Australia) is leveraging on its S-spike vaccine. The candidate has been developed via molecular clamp technology, which uses a lab-created polypeptide to pin the spike protein in its tortile position so that the body’s immune system can target it before the virus has a chance to activate.” এছাড়াও ভারত, রাশিয়া, ব্রাজিল, আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ভ্যাক্সিন তৈরির আপ্রাণ চেষ্টা চলছে।



    অক্সফোর্ড ভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে শিম্পাঞ্জির শরীরে বাস করা অ্যাডেনো ভাইরাসকে (যা সাধারণত স্বল্পমেয়াদী ফ্লু বা হাঁচি-কাশি-সর্দি ঘটায়) live attenuated virus করে ইঞ্জেকশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ট্রায়াল রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে (২০.০৭.২০২০) ল্যান্সেট-এ “Safety and immunogenicity of the ChAdOx1 nCoV-19 vaccine against SARS-CoV-2: a preliminary report of a phase 1/2, single-blind, randomised controlled trial” শিরোনামে। এই ট্রায়ালে 5 × 1010 viral particles ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। মোট ১০৭৭ জন ভলান্টিয়ারের ওপরে ওপরে পরীক্ষা করা হয়েছে – “Between April 23 and May 21, 2020, 1077 participants were enrolled and assigned to receive either ChAdOx1 nCoV-19 (n=543) or MenACWY (n=534), ten of whom were enrolled in the non-randomised ChAdOx1 nCoV-19 prime-boost group”। ফলাফল হিসেবে দেখা গেছে – “ChAdOx1 nCoV-19 showed an acceptable safety profile, and homologous boosting increased antibody responses. These results, together with the induction of both humoral and cellular immune responses, support largescale evaluation of this candidate vaccine in an ongoing phase 3 programme.” ব্রিটেন, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রায় ৩০,০০০ ভলান্টিয়ারের ওপরে ChAdOx1 nCoV-19 ভ্যাক্সিন পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে। অক্সফোর্ড গবেষদের মতে এই ভ্যাক্সিন রক্তে T-cell তৈরি বাড়িয়ে দেয় এবং এই বিশেষ টি-সেলের দল রক্তপ্রবাহে বহু বছর ধরে থাকতে পারে। ফলে শরীরে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে স্থায়ী প্রতিরোধ গড়ে উঠতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হবে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাক্সিন ট্রায়ালে একজন ভলান্টিয়ারের ক্ষেত্রে ট্র্যান্সভার্স মাইলাইটিসের মতো বিপজ্জনক রোগ ঘটার পরে সাময়িকভাবে ট্রায়াল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ট্রায়াল আবার শুরু হয়েছে।


    একই দিনে (২০.০৭.২০২০) চিনের আরেকটি স্টাডির ফলাফলও ল্যান্সেট-এ প্রকাশিত হয় “Immunogenicity and safety of a recombinant adenovirus type-5-vectored COVID-19 vaccine in healthy adults aged 18 years or older: a randomised, double-blind, placebo-controlled, phase 2 trial” শিরোনামে। এখানে শিম্পাঞ্জির পরিবর্তে মানব শরীরের live attenuated virus-কে ব্যবহার করা হয় ভাইরাল-ভেক্টর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। এই স্টাডির ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে – “The Ad5-vectored COVID-19 vaccine at 5 × 1010 viral particles is safe, and induced significant immune responses in the majority of recipients after a single immunisation.” এখানে যাদের ওপরে ট্রায়াল দেওয়া হয়েছিল তারা “were randomly assigned to receive the vaccine at a dose of 1 × 1011 viral particles per mL or 5 × 1010 viral particles per mL, or placebo. Investigators allocated participants at a ratio of 2:1:1 to receive a single injection intramuscularly in the arm.”


    NEJM-এ প্রকাশিত হয়েছে (২.০৯.২০২০) আরেকধরনের ভ্যাক্সিন ট্রায়ালের রিপোর্ট – “Phase 1–2 Trial of a SARS-CoV-2 Recombinant Spike Protein Nanoparticle Vaccine”। এই ট্রায়াল রিপোর্টের সিদ্ধান্ত হিসেবে জানানো হয়েছে – “৩৫ দিনে্র ট্রায়ালে এনভিএক্স-কোভ২৩৭৩ ভ্যাক্সিন নিরাপদ হিসেবে দেখা গেছে, এবং যে ইমিউন প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে তা কোভিড-১৯ রোগমুক্ত রোগীর সিরামে পাওয়া অ্যান্টিবডির চেয়ে বেশি। এই ভ্যাক্সিনে যে অ্যাডজুভ্যান্ট Matrix-M1 ব্যবহার করা হয়েছে তাতে CD4+ T-cell-এর ভালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।”



    এর পরে ল্যান্সেট-এ প্রকাশিত হয়েছে রাশিয়ার “open, non-randomizd, phase 1/2 stdies”-এর রিপোর্ট – “Safety and immunogenicity of an rAd26 and rAd5 vector-based heterologous prime-boost COVID-19 vaccine in two formulations: two open, non-randomised phase ½ studies from Russia”। এই ট্রায়ালে ৭৬ জন ভলান্টিয়ারের দেহে দু’ধরনের অ্যাডেনো ভাইরাস থেকে তৈরি “rAd26 and rAd5 vector-based heterologous prime-boost COVID-19 vaccin” প্রয়োগ করে অ্যান্টিবডি, সিডি৪ এবং সিডি৮ দু’ধরনের অ্যান্টিবডিরই ভালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কিন্তু যেহেতু এটা open, non-randomizd স্টাডি সেজন্য বিজ্ঞানের চোখে এর গ্রহণযোগ্যতা অন্য ভ্যাক্সিনগুলোর মতো নয়। রাশিয়ার ভ্যাক্সিন নিয়ে কিছু সংশয় প্রকাশ করে ল্যান্সেট-এ প্রকাশিত (৪.০৯.২০২০) “COVID-19 vaccines: early success and remaining challenges” প্রবন্ধে বলা হল – “সমস্ত ভ্যাক্সিন ক্যান্ডিডেটকেই বৃহৎ র‍্যান্ডোমাইজড ট্রায়ালের মধ্য দিয়ে দেখাতে হবে এদের নিরাপত্তা এবং প্রমাণ করতে হবে যে দীর্ঘস্থায়ী ক্লিনিক্যাল কার্যকারিতা রয়েছে (যারা অধিকতর ঝুঁকি সম্পন্ন গ্রুপে পড়ে তাদের ধরে) – যার পরে এদের বিপুলভাবে ব্যবহার করার অনুমোদন পাওয়া সম্ভব। সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে এভাবে ভ্যাক্সিনের সরবরাহ করতে গেলে একাধিক উৎপাদক এবং বিতরণকারীকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একসাথে কাজ করতে হবে। এদের প্রত্যেকের সাফল্য একত্রে আমাদের সম্মিলিত, দীর্ঘদিনের আকাঙ্খিত, নতুন দিনের পথে নিয়ে যাবে।”


    কিন্তু রাশিয়ার ভ্যাক্সিন নিয়ে নেচার-এ (১৫.০৯.২০২০) প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে – “Researchers highlight ‘questionable’ data in Russian coronavirus vaccine trial results”। Enrico Bucci-র নেতৃত্বে ৩৬ জন গবেষকের স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠানো হয়েছে ল্যান্সেট-এ এই ভ্যাক্সিন ট্রায়ালে ব্যবহৃত তথ্য এবং সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। নেচার-এর প্রন্ধটি মন্তব্য করছে যে ভ্যাক্সিন ট্রায়ালের রিপোর্ট যাঁরা তৈরি করেছেন তাঁদের কাছে এর উপযুক্ত ব্যাখ্যা এবং জবাব চাওয়া হয়েছে।



    COVAX নামে একটি যৌথ উদ্যোগ জন্ম নিয়েছে। এতে রয়েছে বিল এবং মেলিন্দা গেটস-এর সংগঠন GAVI (Global Alliance for Vaccines and Immunization), Coalition for Epidemic Preparedness Innovations (CEPI) এবং WHO। এদের লক্ষ্য হল ৯২টি low-income and middle-income দেশে সমান স্বচ্ছভাবে এবং ন্যায্যতা রক্ষা করে যাতে ভ্যাক্সিন পৌঁছে দেওয়া যায়। কিভাবে ভ্যাক্সিন বিতরণ করা হবে এ নিয়ে একটি গাইডলাইনও হয়েছে নেচার-এ (১৮.০৯.২০২০)।



    The US National Academies of Sciences, Engineering and Medicine has proposed a five-phase plan to fairly allocate a coronavirus vaccine to US residents.

    Phase 1Health-care workers and first responders (5%)
    Phase 2People with underlying conditions that put them at high risk of severe COVID-19 disease or death, and older adults in densely populated settings (10%)
    Phase 3Essential service workers at high risk of exposure, teachers and school staff, people in homeless shelters and prisons, older adults who have not already been treated and people with underlying conditions that put them at moderate risk (30–35%)
    Phase 4Young adults, children and essential service workers at increased risk of exposure (40–45%)
    Phase 5All remaining residents (5–15%)


    Note: Phases 1 and 2 might occur in tandem. Per cent is the percentage of the US population to receive a vaccine. Source: NASEM

    সবমিলিয়ে কয়েক’শ কোটি ভ্যাক্সিন তৈরির লক্ষ্যে বিজ্ঞানীরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করে যাচ্ছেন। এখানে মনে রাখতে হবে “The race for a vaccine moves fast, as the need for a solution is evident, but we cannot forget that safety is of the highest importance.” তার সাথে এটাও মনে রাখতে হবে শুধু neutralizing antibody নয়, আমাদের শরীরের T-cell-কে কতোটা সক্রিয় করে তুলতে পারছে সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধের ক্ষেত্রে T-cell-এর ভূমিকা  (CD4 and CD8) অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। নেচার-এর একটি প্রতিবেদনে (“Coronavirus vaccines leap through safety trials — but which will work is anybody’s guess” – ২১.০৭.২০২০) বলা হয়েছে – “যদি একটি ভ্যাক্সিন একইসাথে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে এবং দু’ধরনের টি সেলকে উদ্দীপিত করতে পারে তাহলে রোগের বিরুদ্ধে এর লড়াই অনেক শক্তিশালী হবে ... যখন efficacy trials এদের প্রথম ফলাফল জানাবে তখন বোঝা যাবে ভ্যাক্সিনে তৈরি ইমিউন প্রতিক্রিয়ার প্রকৃত চরিত্র – কোভিড-১৯এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে কি পারছে না।” বিজ্ঞানীদের এখনো অজানা ঠিক কত পরিমাণ (what levels) অ্যান্টিবডি প্রয়োজন দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলার জন্য। এখানে বিবিসি থেকে প্রকাশিত একটি খবর (২০.০৭.২০২০) “The people with hidden immunity against Covid-19” শ্রান্ত বিশ্বমানসে কিছুটা আশার আলো হয়তো ফেলছে। এখানে বলা হয়েছে, যদিও সর্বশেষ গবেষণা দেখাচ্ছে যে ৩ মাসের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি শেষ হয়ে যেতে পারে কিন্তু “a new hope has appeared in the horizon: the enigmatic T cell.” এজন্য এ প্রবন্ধের শুরুতেই টি-সেল নিয়ে আলোচনা করেছি।



    সবশেষে একটি চিঠির উল্লেখ করি। NEJM-এ প্রকাশিত হয়েছে (২১.০৭.২০২০) “Rapid Decay of Anti–SARS-CoV-2 Antibodies in Persons with Mild Covid-19” শিরোনামে। এ চিঠিতে মন্তব্য করা হয়েছে আক্রান্তের শরীর থেকে যেভাবে দ্রুত অ্যান্টিবডি হ্রাস পাচ্ছে সেটা নিতান্ত উদ্বেগের বিষয় – “the results call for caution regarding antibody-based “immunity passports,” herd immunity, and perhaps vaccine durability, especially in light of short-lived immunity against common human coronaviruses.” আরও উদ্বেগের বিষয় হল হংকং এবং আমেরিকার নেভাদা মিলিয়ে মোট ৩টি পুনঃসংকরমণের খবর প্রমাণিত হয়েছে। এ নিয়ে নেচার-এ প্রকাশিত (১০.০৯.২০২০) প্রবন্ধে (“COVID-19 Reinfection: Three Questions Scientists are Asking”) বলা হয়েছে – “দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিন দ্বিতীয় সংক্রমণ প্রতিহত করার বদলে বরঞ্চ শুধুমাত্র উপস্ররগ কমাবে। এর ফলে টীকা নেওয়া মানুষেরা উপসর্গহীন বাহক হিসেবেও থাকতে পারে যার ফলে অরক্ষিত মানুষেরা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।”



    রেমডেসিভিরের বিরূপ সমালোচনার পরে (ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের সমালোচনা স্মরণ করুন) মডার্না কোম্পানি এর ফেজ ১ ট্রায়ালের বিস্তৃত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ২৬.০৮.২০২০-তে। সেখানে প্রাইমারি এন্ড পয়েন্ট হিসেবে ধরা হয়েছে – “Safety and reactogenicity of a 2-dose vaccination schedule of mRNA-1273, given 28 days apart”। এবং সেকন্ডারি এন্ড পয়েন্ট হিসেবে নেওয়া হয়েছে – “Evaluate the immunogenicity to the SARS-CoV-2 S protein following a 2-dose vaccination schedule of mRNA-1273 at Day 57”। আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল – (১) “mRNA-1273 elicited Th1-biased CD4 T cell responses in the 56-70 and 71+ age cohorts”, এবং (২) “Neutralizing antibody titers and T cell responses in the 56-70 and 71+ age cohorts were consistent with those reported in younger adults”। 


    NEJM-এ প্রকাশিত হয়েছে (৮.০৯.২০২০) একটি প্রবন্ধে (‘When Will We Have a Vaccine” – Understanding Questions and Answers about Covid-19 Vaccination)। প্রবন্ধের শিরোনামে ব্যবহৃত “we” বলতে সাধারণ জনসমষ্টিকে বোঝাচ্ছে। এরা জানতে চায় – “কখন একটি নিরাপদ ও কার্যকরী কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন কয়েকজন, বেশিরভাগ মানুষ বা সবার জন্য সহজলভ্য হবে। এই প্রশ্নে একদিকে যেমন টেকনিক্যাল দিক রয়েছে অন্যদিকে তেমনি নৈতিক দিক আছে। এ দুয়ের সমাধান মানুষের কাছে ভ্যাক্সিনকে কে গ্রহণীয় করবে কিংবা দূরে ঠেলে দেবে।”


    এর সাথে স্মরণে রাখতে হবে STATNEWS-এ প্রকাশিত (১৭.০৯২০২০) সংবাদের দিকে – “Trump’s attacks highlight CDC’s stumbles on public health messaging”। আরেকবার স্মরণ করবো মেডিক্যাল-ইন্ডাস্ট্রিয়াল-পলিটিক্স-স্টেট কমপ্লেক্স-এর সর্বগ্রাসী উপস্থিতির কথা।


    আমাদের একমাত্র আশা ভ্যাক্সিনের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকার পাশাপাশি এ সতর্কবাণীগুলোও মাথায় রাখতে হবে আমাদের।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৪৭৩৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পার্থ দে | 2409:4060:2e03:d89e::a28b:***:*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:৫৭97472
  • আপনারা সত্যি খুব ভালো কাজ করে চলেছেন       

  • পরেশ পাল | 2409:4061:2006:cb71:86f:6b9:b3b0:***:*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:১৪97474
  • এতো তথ্যবহুল লেখা পড়ে সমৃদ্ধ হলাম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও প্রণাম।

  • Dr Pravin Nahar | 2001:8003:23f6:9800:51b8:85f8:695d:***:*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:৪৩97484
  • ভেরি informative আর্টিকেল। I enjoyed the 2nd half that enlightened me how the different trials of vaccines are being undertaken and the explanation therof.

  • SK Mandal, Islampur, UD | 2409:4061:68e:81ab:8cef:3257:ba43:***:*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৫৬97488
  • Dr.J Bhattachrya  ভ্যাকসিন তৈরির সঠিক বৈজ্ঞানিক ধাপ এবং দ্রুতগতির সমান্তরাল ধাপ বাণিজ্যিকভাবে সফল হলেও বস্তুর উৎকর্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এ বিষয়ে সুন্দর বিস্তারিত আলোচনা করেছেন ।


    সতর্কতা এবং অভয়দানের জন্য ডাক্তার বাবুকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। 


                             Sk Mandal, Islampur, U/D

  • বিশু | 2409:4061:2e8c:979d:b254:318b:b79d:***:*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:০৪97489
  • সমৃদ্ধ হলাম.......তথ্যবহুল লেখা

  • ভক্তিভূষণ মন্ডল | 59.93.***.*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:৫১97494
  • লেখাটি তথ্য বহুল লেখা। সাধারণ মানুষের কাছে লেখাটি সময় নিয়ে পড়া কষ্টকর হলেও, একটু ধৈর্য ধরে পড়তে পারলে অনেক কিছু বিষয়ে সাধারণ মানুষ অবগত হতে পারবে।

  • অরিন | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:২৩97500
  • ভালো হয়েছে ।

    এর থেকে ভালো করে  আজ অবধি আমি বাংলায় প্রকাশিত  ভ্যাকসিন নিয়ে লেখা দেখিনি !
  • Pinaki | 136.228.***.*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:৩৭97524
  • ডুবে গিয়েছিল, তুললাম। 

  • ভাস্কর ভট্টাচার্য | 112.79.***.*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:৪২97537
  • অত্যন্ত তথ্যসমৃদ্ধ, বিশ্লেষণাত্মক, মান্য লেখা। বেশী বেশী মানুষের কাছে পৌঁছালে একটা ধারণা অন্তত তৈরী হবে। তবে আলো আঁধারি দুইই আছে। একটা bleak ভবিষ্যতের ছবি থাকলেও, নিজেদের অবস্হান, করণীয় বুঝতে সাহায্য করে। চিকিৎসক, গবেষকদের পৌঁছাক এ লেখাা।

  • রঞ্জন দাস | 2409:4061:2c01:7f1:50e0:5bbc:62d8:***:*** | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:০১97551
  • অসাধারণ বিশ্লেষণাত্মক লেখা। আপনার লেখাটির দ্বারা ভ্যাক্সিন বিষয়ে কিছু স্বচ্ছ ধারন তৈরির চেষ্টা করলাম। আপনার প্রতিটি লেখা আমার কাছে সম্পদ বলে মনে হয়।

  • মৃন্ময় কর | 112.79.***.*** | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:৫৯97555
  • অনেক বিষয় জানলাম, যা সচরাচর একসাথে সব তথ্যাদি পাওয়া যায় না, 


    তবে T সেল strong করার উপায় বিস্তারিত জানলে ভালো হয়। 

  • Soumya | 42.***.*** | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:০০97558
  • খুব সুন্দর sir

  • GKDuttta | 112.79.***.*** | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:৩১97569
  • Full of statistics. Great informations. 

  • Sukanti Bhattacharyya | 157.119.***.*** | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:৩৭97571
  • ওয়েল  কাভারেজ  ইন  ডেপ্থ  ডিসকাশন 


    পসিবল  এফেক্টস অফ  প্রোপোসড  ভ্যাকসিন  মে  হ্যাভ  বিন  এলাবোরেটেড 

  • GKDUTTTA | 112.79.***.*** | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:১৩97587
  • খুব সুন্দর 

  • বিপ্লব কুন্ডু রায়গঞ্জ | 2409:4061:2e0e:1a2a:54a8:b8:ead4:***:*** | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৩৯97593
  • দারুন খুব ভালো লাগলো দুর্দান্ত

  • Dr.Dilip De Sarker | 103.217.***.*** | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:৩১97612
  • Very Illuminating article. The author tried to incorporate almost all issues regarding Cov_19 . Regarding India's death and infected rate the author has opened our eyes. Article regarding updated status of Cov_19 vacccine is requested in a summary form, will be ওয়েলকাম। 

  • Goutam Guha | 42.***.*** | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:৪৪97623
  • অনেক পড়াশুনা করে লেখা . পরে সমৃদ্ধ হলাম 

  • BIPLAB MOHAMMED | 2409:4061:2d19:a03f::110a:***:*** | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:৫৭97647
  • খুবই  সুন্দর 

  • Jagnarayan Sharma | 2401:4900:3a1a:7957:5cc2:90bf:f8cb:***:*** | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:১৭97648
  • Very Nice

  • গোরা | 42.***.*** | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:৫১97652
  • খুব ভালো লেখা। এইভাবে চালিয়ে যাও, আমাদের মত প্রচুর লোক এতে সমৃদ্ধ হয়, জয়ন্তদা

  • Kanchan Mukherjee | 103.87.***.*** | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:০৫97656
  • সংগ্রহে রাখার মত লেখা।  লেখকবন্ধু কে কুর্ণিশ। 

  • বিপ্লব মোহাম্মেদ | 2409:4061:2d19:a03f::110a:***:*** | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:০২97683
  • পড়ে খুবই ভালো লাগলো স্যার আপনাকে ধন্যবাদ

  • মিন্টু সরকার | 2409:4061:2c98:e602:bc8b:d9df:13fc:***:*** | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:৩৯97691
  • সমৃদ্ধ হলাম । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

  • Nirmalyada | 117.213.***.*** | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:১৮97745
  • ভাই  জয়ন্ত  -- এক্সসেলেন্ট  শার্প  এনালিটিক্যাল  কম্পোজিশন ।  ডাটা  গুলো  ভালো  করে  যুক্তি সহকারে  উপস্থাপন  করেছো । এ দেশে  এই 


    সময়ে  এটা  আরণ্যে  রোদনহলেওঁ  এর যথেস্ট  প্র্রয়োজনীতা  অছে   . 

  • Soumya | 202.142.***.*** | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:৫৮97775
  • Beautifully presented sir

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন