আসল কথাটা আপনিই বলে ফেলুন।কি এমন কঠিন কাজ!দাঙ্গা চলছে।কেউ না কেউ তো উস্কাচ্ছে। সেইডা কেডা!
ওই মহা কালুয়া গুলোকে কোনো অধিকার দেয় কে?
আমাদেরএখানে কাল হেব্বি হুজ্জতি মারিয়েছে
আমেরিকায় যে কারনে আন্দোলন হচ্ছে তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন যে কোনো সচেতন মানুষের থাকা উচিত। বর্ণবৈষ্যম্যবাদ কখনই কাম্য নয়৷
কিন্তু আমেরিকার এই আন্দোলনের খবরে যারা লাফাচ্ছেন তার কতটা বর্ণবৈষম্যবাদের প্রতি ঘৃণার কারণে আর কতটা 'আমেরিকা হেব্বি টাইট খাচ্ছে' এই আনন্দের কারণে সেটা নিয়ে আমি যথেষ্ট সন্দিহান৷ আমেরিকার প্রতি আমাদের অনেকেরই রাগ আছে, ঈর্ষা আছে (যদিও আমেরিকাকে গালাগাল দেওয়া অনেক বিপ্লবীই আমেরিকায় একটা জম্পেশ চাকরির সুযোগ পেলে বিপ্লবকে অবাঞ্ছিত শিশুর মত ডাষ্টবিনে ত্যাগ করে উর্ধবাহু হয়ে দৌড়াবেন একথা ভালোই জানি)। এই রাগ বা ঈর্ষা ব্যক্তিগত রাগ বা ঈর্ষা নয়, এটি একটি সমষ্টিগত রাগ বা ঈর্ষার উদাহরণ। সমষ্টিগত ঈর্ষার বহু প্রকার হয়, যেমন জাতিগত, বর্ণগত, ধর্মগত, এলাকাগত, রাষ্ট্রগত ইত্যাদি। রাষ্ট্রগত রাগ বা ঈর্ষা এমন একটি ঈর্ষা যা একটি এগিয়ে থাকা রাষ্ট্রের প্রতি একটি পিছিয়ে থাকা রাষ্ট্রের অধিবাসীদের থাকে। সেই ঈর্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে এই ঘটনায়। একটি উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে। কোনো এলাকায় যদি সবাই নিম্নবিত্ত হয় ও মাত্র একটি উচ্চবিত্ত বাড়ি থাকে তাহলে উচ্চবিত্ত বাড়িটির প্রতি এলাকার সবার একটা ঈর্ষা ও তজ্জনিত ক্ষোভ থাকে৷ এখন কোনো একদিন যদি পুলিশ এই উচ্চবিত্ত বাড়ির কর্তাটিকে কোনো অপরাধের চার্জে, ধরা যাক তহবিল তছরূপের চার্জে গ্রেপ্তার করে তাহলে দেখা যাবে পাশের নিম্নবিত্ত বাড়ির প্রত্যেকে খুব আনন্দিত৷ এই আনন্দ এই কারণে নয় যে তারা খুব সৎ এবং এতদিন বাড়ির পাশেই একজন অসৎ লোকের অস্তিত্ব তারা মেনে নিতে পারছিলো না৷ এই আনন্দ আসলে এই কারণে যে এতদিন ঈর্ষা থাকা সত্ত্বেও উক্ত পরিবারের কোনো ক্ষতিই করা সম্ভব হচ্ছিলো না, উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি দেখে নিজে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়া ছাড়া। এখন পুলিশের এই গ্রেপ্তার তাদের ঈর্ষাকাতর মনে একটু আনন্দ এনে দিয়েছে। শত্রুকে বেকায়দায় দেখে তারা এখন উল্লসিত। নিজের অবদমিত ঈর্ষা রিলিভড হবার একটা সুযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাস এইটুকুই। এই আনন্দ কোনো আদর্শের কারণে নয়, এই আনন্দ স্রেফ ব্যক্তিগত হিসাব মেটাবার আনন্দ।
আমেরিকার প্রশাসনের নাস্তানাবুদ হওয়াটিকেও সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখাই ভালো৷ তাছাড়া সাময়িক ঢেউ তুলে দুদিন পর এই আন্দোলন মিটেও যাবে। আবার সব যেমন চলছিলো তেমনিই চলবে। আমাদের হাতে থাকবে যে কাঁচকলা সেই কাঁচকলাই। আর আমেরিকায় কমিউনিজম কোনোদিনই তেমন জনপ্রিয় নয়৷ সম্ভবত আগামী পঞ্চাশ বছরের নির্বাচনেও কোনো কমিউনিষ্ট পার্টি মাত্র দশটি সিট জোগাড় করতে পারবে না, বিপ্লব হওয়া তো অনেক পরের ব্যাপার। কাজেই পাশের গ্রামের কোনো দুর্নীতিবাজ নেতার বাড়িতে আগুন লেগেছে বলে আমার আনন্দে লাফালাফি না করাই ভালো৷ কিছুক্ষন বাদে দমকল ডেকে ওরা নিজেদের আগুন নিজেরাই নিভিয়ে ফেলবে। তারপর আগের মতই সব যেমন চলছিলো তেমন চলবে। আমাকে আগুন নেভাতেও ডাকবে না বা দুদিন পর সব ঠিক হয়ে গেলে তাদের ছেলের বিয়েতেও আমাকে নেমন্তন্ন করবে না। আমার স্থান তাদের বৃত্তের বাইরে। কাজেই ওদিক নিয়ে না মাথা ঘামিয়ে আমি বরং আমার নিজের বাড়ির খড়ের ছাদ ফুটো হয়ে যে জল ঢুকছে তা নিয়ে মাথা ঘামাই। এন.আর.সি, আমফান, লক ডাউনের কারণে দেশজোড়া বেকারীত্ব, রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানাগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া ইত্যাদি নিয়ে মাথা ঘামাই। আগে নিজের দেশ বাঁচাই৷ আমেরিকাকে নিয়ে ভাবার পরে অনেক সময় পাওয়া যাবে। তেমন বড়সড় কোনো ইস্যু হলে (যেমন গুলি চালিয়ে আন্দোলনরত কয়েকশো শ্রমিককে মেরে ফেলা ইত্যাদি) অবশ্যই আমেরিকার বিরুদ্ধে আন্দোলনে অবশ্যই সামিল হওয়া যাবে৷ কিন্তু আপাতত নিজের ঘর বাঁচাই।
কথাতেই বলে 'আপনি বাঁচলে বাপের নাম...'
পোষ্ট টা ভালোই।এই বাজারে,যা পাওয়া যায়।মোটামুটি হিংসা,রাগ, রেসিজম,আমেরিকা,ভারত,করোনা,পায়ে হাঁটা শ্রমিক,দাঙ্গা, মার পিঠ,আগুন,দমকল, ছাদ ফুটো,গরীব - বড়নোক,এন আর সি,রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা, বেসরকারী করন,আন্দোলনরত শ্রমিক,গুলি বন্দুক--- সব কিছুই কভার হয়ে গেছে।
কলিযুগ, যদা যদা হি ধর্মস্য, ছোলা মুড়ি,আলুকাবলি,বলিউড,তারকা, হিন্দি গান, শেয়ার মার্কেট,অঙ্কের মাস্টার ,নারী বিদ্বেষ, অর্ণব গোস্বামী, উম্পুণ,চিনা মাঞ্জা, বিশ্ব কবি,নিখিল বিশ্ব,ব্ল্যাকহোল,বিরিয়ানির রেসিপি -- এই সামান্য কিছু টপিক বাদ পড়ে গেছে। দ্বিতীয় পোস্টে জম্পেশ করে লিখুন দেখি।আমরা সঙ্গে আছি।চালিয়ে খেলুন।
(যদিও আমেরিকাকে গালাগাল দেওয়া অনেক বিপ্লবীই আমেরিকায় একটা জম্পেশ চাকরির সুযোগ পেলে বিপ্লবকে অবাঞ্ছিত শিশুর মত ডাষ্টবিনে ত্যাগ করে উর্ধবাহু হয়ে দৌড়াবেন একথা ভালোই জানি)।
এই জায়গাটা যে SM কে মর্মে আঘাত করবে ও কাউন্টার পোস্ট নামাতে বাধ্য করবে বুঝতে পারিনি
তাড়াহুড়োয় অবশ্য কোন পোস্ট স্পেসিফাই করার থেকে মনের জ্বালা মেটানো অনেক সময় প্রেফারেন্স পায় , অনেকেই কোন পোস্ট এর পরিপ্রেক্ষিতে লেখা সেটাই মেনশন করতে ভুলে যায়
আরে না না, চিত্র দীপ বাবু।আম্রিকা নিয়ে আলাদা কোন মোহ নেই।আপনার পোস্ট খুব এনজ়য় করেছি।করেছি বলেই, একটা ছোট রসিকতা করে পোস্ট করেছি।
আপনার লেখাটি খুবই ভালো হয়েছে।সব দিক কভার করেছে। জার্গণ নেই।যাকে বলে সিধা 'মরমে আঘাত করিলো'। অন্য কিছুর জন্য মর্মে আঘাত পাই নি। আরো লিখুন। আপনি লিখলে, সত্যিই আনন্দ পাবো।
তবে একটা ফুট কাটছি।পাড়ার একমাত্র বড় লোকের ওপর আলাদা হিংসা বা ঈর্ষা নেই। তাকে পুলিশ ধরলেও নেই।
কিন্তু বিজয় মালিয়ার মতো লোক কে ধরলে,আলাদা তৃপ্তি পাবো।
ফুট কাটা ভালো যতক্ষণ না নিজের ফুটিফাটা হচ্ছে , ইয়ে মানে কপালের কথা হচ্ছে
তৃপ্তি পাওয়া র আরো সোজা রাস্তা আছে তো
জগুবাবুর বাজারে চলে যান , সস্তাও পর্বে
হে হে
আরে লিখুন না মশায়।আমরা অপেক্ষায় আছি।
হবে হবে মহায়
সবুর করুন না একটু
মেওয়া ঠিক ফলবে
মার্টিন লুথার কিং 'কে মনে পড়ছে। "আই হ্যাভ আ ড্রিম"...