এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • সুরক্ষিতা - পর্ব ১৪

    Kishore Ghosal লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৯ বার পঠিত
  • ১৪

    ছবি রান্নাঘরে চলে যেতে শুভময়ীদেবী আরাম করে কফির মাগে চুমুক দিলেন। পাটা ছড়িয়ে দিলেন, বারান্দার রেলিংয়ের ধাপিতে। বারান্দার বাইরে একটানা বৃষ্টি ঝরছে – খুব জোরে নয় কিন্তু ঝিরঝির কিংবা রিমঝিম তালে। এমন বৃষ্টি দেখেই অনেকটা সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়, মনে হল শুভময়ীদেবীর। অনেকটা মানে কতটা? কতক্ষণ? দশমিনিট, পনের মিনিট...তারপর নির্ঘাৎ একঘেয়ে লাগবে। সেক্ষেত্রে এত বড়ো দিনটা – যাকে সাহেবি ভাষায় বলে রেনি ডে – এই বারান্দায় – এই চেয়ারে বসেই সারাটাদিন কাটানো সম্ভব? ব্যাপারটা ভাবতেই শুভময়ীদেবী হাঁফিয়ে উঠলেন, তাড়াতাড়ি কফির মাগ শেষ করে উঠে দাঁড়ালেন। কিছু একটা করতেই হবে। এভাবে চুপচাপ বসে সময় নষ্ট করার কোন অর্থ হয় না। সময় বহিয়া যায় – নদীর স্রোতের প্রায়। যা কিছু পেণ্ডিং কাজ আজ শেষ করে ফেলা যায় – শেষ করতে না পারলেও – অন্ততঃ সমাপ্তির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
     
    পেণ্ডিং কাজ তাঁর বেশ কিছু আছে অফিসে – কিন্তু সে জায়গাটি আজ অগম্য – যাওয়া যাবে না – অতএব সে কাজ নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। যেহেতু এই ঘরের বাইরে তিনি যেতে পারছেন না, অতএব ঘরে এমন কি কি কাজ আছে – যা তিনি এখন শেষ করতে পারেন? হঠাৎই তাঁর মনে হল, বই পড়া যায়।
     
    মাস খানেকের বেশিই হল, তাঁর হাতে একটি বই এসেছে, নাম “ধর্মাধর্ম” – বেশ গাব্দা চেহারার বই। বইটা দেখেই তাঁর মনে বিতৃষ্ণা এসেছিল। কিন্তু যে ভদ্রলোক বইটি দিয়ে গেলেন, তাঁর নাম নিমাইবাবু – বহুদিনের পরিচিত। তিনি বহু স্কুলের লাইব্রেরিতেই বই সাপ্লাই করেন – আবার লাইব্রেরির জন্যে অনেক স্যাম্পল্‌ বইও দিয়ে যান – যেগুলি পড়ে লাইব্রেরিয়ান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষিকারা লাইব্রেরির জন্যে বই সিলেক্ট করেন ও রেকমেণ্ড করেন।
     
    শুভময়ীদেবী বইটা হাতে নিয়েই বলেছিলেন, “এই বই নিয়ে আমি কী করব? ধর্ম-টর্ম নিয়ে লেখা – এসব আমার একদমই চলে না”।
     
    নিমাইবাবু হেসে বললেন, “এর আগে কোনদিন আপনাকে উটকো কোন বইয়ের স্যাম্পল্‌ দিয়েছি, ম্যাডাম? এই বইটা দিচ্ছি – তার কারণ এই বইটিতে আশ্চর্য এক অঙ্ক আছে…”।
     
    শুভময়ীদেবী অবাক হয়ে বলেছিলেন, “ধর্মের বইয়ে অঙ্ক? সে তো আরও মারাত্মক”।
     
    নিমাইবাবু আবার বললেন, “এই বইটা সে অর্থে ধর্মের বইও নয় – আবার অঙ্কের বইও নয়। কিন্তু আবার দুটোই। ঠিক বোঝাতে পারলাম না। ভদ্রলোক পেশায় ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, সেসব ছেড়েছুড়ে দিয়ে এখন লেখা-টেখা নিয়েই আছেন। এই বইটি ম্যাডাম – উনি পাঁচটি পর্বে ভাগ করেছেন, প্রত্যেকটি পর্বের একটা করে টাইম-ফ্রেম আছে। যেমন ধরুন – প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে ৭০,০০০ বিসিই থেকে ১২,০০০ বিসিই, দ্বিতীয় পর্বের সময়কাল ১২,০০০ থেকে ৬০০ বিসিই, এভাবেই চতুর্থ পর্ব শেষ করেছেন ১৩০০ সিইতে – মানে ভারতে মুসলিম শাসন শুরুর ঠিক আগে পর্যন্ত। এই সময়কালের মধ্যে মানুষ কী ভাবে সভ্য হয়েছে, চাষবাস শিখেছে, ব্যবসাবাণিজ্য শিখেছে এবং তার পাশাপাশি কিভাবে তাদের জীবনে এসেছে শিল্প-কলা-সংস্কৃতি-সাহিত্য -বিজ্ঞান। এবং এই সব কিছুর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মনে এসেছে ধর্ম চেতনা, বিশ্বাস, রীতিনীতি – রিচুয়াল্‌স্‌ - একদম অঙ্কের মতো। শেষ পর্বে তিনি সাম-আপ করেছেন - পুরো বিষয়টি – সেখানে থেকে তিনি ডিরাইভ করে দেখিয়েছেন – আজকের দিনে - ২০২৫ সালেও – বিজ্ঞানে ও সভ্যতায় আমরা ভীষণ উন্নতি করেছি ঠিকই – কিন্তু মানসিকতায় ১৩০০ সিইর পরে আর তেমন এগোতেই পারিনি। আমার কথা বিশ্বাস করুন, ম্যাডাম, বাংলা ভাষায় ধর্মের বই, ইতিহাসের বই – অজস্র আছে। আমাকে পড়তেই হয়, পড়েওছি অনেক – কিন্তু এমন বই এর আগে আর পাইনি। আমার অনুরোধ পড়ে দেখুন”।
     
    এর পরে আর নিমাইবাবুর কথা ফেলতে পারেননি শুভময়ীদেবী। বাড়ি এনে বইটা শুরু করেছিলেন – এবং সত্যি কথা বলতে প্রথম তিনটি পর্ব শেষ করেছিলেন প্রায় এক নিশ্বাসে – অত বড় বড় চ্যাপ্টার মাত্র দশদিনে। এবং তাঁর মনে হয়েছিল নিমাইবাবু বইটি সম্পর্কে এতটুকুও অত্যুক্তি করেননি। কিন্তু চতুর্থ পর্বের মাঝামাঝি থেকেই – বইটা ভীষণ একঘেয়ে হয়ে উঠেছে। অবশ্য লেখক সে কথা বলেওছেন – ৬৫০ থেকে ১৩০০ সিই ভারতের রাজনৈতিক অবক্ষয়ের কাল – সেই বিশৃঙ্খলার কথা পড়তে পড়তে অধৈর্য হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। শুভময়ীদেবী সেইখানে এসেই এখন আটকে আছেন – আজ চেষ্টা করে দেখা যাক কতটা এগোনো যায়।
     
    বসার ঘর থেকে বইটা এনে তিনি বারান্দাতেই আবার বসলেন। বইটি খুলে – বুকমার্ক ছিল – দক্ষিণাপথ বা দাক্ষিণাত্যের রাজবংশ থেকে পড়া শুরু করলেন। এর আগে ছিল উত্তরভারতের অজস্র রাজবংশ ও তাদের নিরন্তর যুদ্ধ কাহিনী। মিনিট কুড়ি পড়ার পর তিনি কিছুটা হাঁফিয়ে উঠলেন। নিমাইবাবুর কথা মনে পড়ল – লেখক ভারতের ইতিহাসটাকে দেখেছেন নিখুঁত অঙ্কের মতোই – কিন্তু এই চতুর্থ পর্বে এসে সে অঙ্ক হারিয়ে গিয়েছে। প্রায় তের হাজার বছর ধরে এগিয়ে চলা ভারতীয় সভ্যতার নিরন্তর প্রগতি – শুধু থমকে গিয়েছে তাই নয় – এলোমেলো লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এবং সেই সুযোগে ঘটে গিয়েছে মুসলিম আক্রমণ ও আগ্রাসন। লেখক নিরপেক্ষ মনে এই সবের বিশ্লেষণ করে পৌঁছচ্ছেন নতুন কিছু সিদ্ধান্তে। সেটা কি? খুব কৌতূহল হচ্ছে জানতে।
    মন্দ নয়, ভালই লাগছে বইটা – এই বিষয়ের বই তিনি এত মনোযোগে বহুদিন পড়েননি। কিন্তু এ বই বর্ষার দিনে সময় কাটানোর বই নয়। শুভময়ীদেবী বই থেকে মুখ তুলে বাইরে তাকালেন – এবং আশ্চর্য হলেন – বৃষ্টি একেবারেই ধরে গেছে – যদিও আকাশের মুখ ভার। যে কোন মুহূর্তে আবার নামতে পারে। হঠাৎই তাঁর মাথায় এল ছোট্ট একটা অ্যাডভেঞ্চার করার ইচ্ছে – যাকে দুষ্টুমিও বলতে পারা যায়।
     
    বৃষ্টি থেমে গেছে। ছবি রান্নাঘরের কাজে ব্যস্ত। তিনি যদি পার্সটা নিয়ে নিঃশব্দে নেমে যান – এবং পাড়ার দোকান থেকে গোটা ছয়েক ডিম কিনে আনেন। কী করবে ছবি? চমকে যাবে না? আশ্চর্য হবে না? হতাশ হয়ে বলবে না, মামীমা, তুমি যেন একটা কি! বলা নেই কওয়া নেই – এভাবে কেউ এই দুর্যোগের দিনে বাইরে বের হয়? যদি কিছু একটা হয়ে যেত – পেছল রাস্তায় পড়ে গিয়ে হাত-পা-কোমরে চোট পেতে? বাইরে কারোর কাছে আমি মুখ দেখাতে পারতাম? সবাই বলত, তুই থাকতে মামীমাকে ওভাবে ছেড়ে দিলি কোন আক্কেলে, ছবি? সমস্ত ব্যাপারটা ভেবে শুভময়ীদেবী মজা পেলেন খুব এবং একটুও দেরি না করে, ঘর থেকে পার্সটা নিয়ে নিঃশব্দে বেরিয়ে পড়লেন দরজা খুলে।
     
    তাঁদের কমপ্লেক্সের সিকিউরিটি তাঁকে দেখে অবাক হল, জিজ্ঞেস করল, “ম্যাডাম আপনি? কোথায় চললেন? রাস্তায় তো জল জমে আছে”।
     
    শুভময়ীদেবী মুচকি হেসে বললেন, “এই যাবো একটু – টুকটাক কিছু কেনার আছে …”।
     
    “ম্যাক্সিমাম দোকানই বন্ধ, দু-একটা খোলা আছে, দেখুন। ছবিদি নেই? বাড়ি গেছে নাকি?”
     
    শুভময়ীদেবীর ভয় ছবি তাঁর গলার শব্দ পেয়ে বারান্দায় না চলে আসে – তাহলেই তাঁর অ্যাডভেঞ্চার কাহিনীর দফারফা! তিনি আড় চোখে তিনতলার বারান্দার দিকে তাকালেন – না ছবি নেই। সিকিউরিটির কথার উত্তর না দিয়ে রাস্তায় নামলেন।
     
    সিকিউরিটি ঠিকই বলেছিল রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে আছে এবং অধিকাংশ দোকানই বন্ধ। রাস্তার লেভেলে যে দোকানগুলো – সেগুলোর ভেতরে জল ঢুকে গেছে। হাঁটুর নীচে অব্দি জমা জল ঠেলে হাঁটতে হাঁটতে তাঁর বালিকা বয়সের কথা মনে পড়ল। বহুদিন এমন হয়েছে, স্কুল চলাকালীন এমন বৃষ্টি হয়েছে – স্কুল ছুটির পর রাস্তায় নেমে দেখেছেন হাঁটু পর্যন্ত জল। সেই দৃশ্যে তাঁর এবং তাঁর সহপাঠী-বন্ধুরা চিৎকার করে উঠতেন আনন্দে। তারপর হাতে জুতো নিয়ে সবাই মিলে কথা বলতে বলতে, জল ভেঙে ভেঙে হাঁটতেন। চলার গতি অত্যন্ত ধীর – আজকে তাঁর মনে হল – তিনি ও তাঁর বন্ধুরা জলের তলায় দেখতে না পাওয়া পথে হোঁচট খাওয়ার ভয়ে নয় – আসলে তাঁরা ধীরে ধীরে হাঁটতেন এই জলবিহার যেন চট করে শেষ না হয়ে যায়…।
     
    বাঁদিকে গাড়ি বারান্দার নীচে একটা দোকান খোলা রয়েছে দেখে – সেদিকে এগিয়ে গেলেন শুভময়ীদেবী। দোকানদারের চেহারা দেখে মনে হল – বিহারী।
     
    বিহারী ভদ্রলোক অবাক চোখে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “বলুন মা-জী”
     
    “ডিম আছে? ছটা ডিম নেব”?
     
    প্লাস্টিকের একটা পাৎলা ব্যাগ ফুঁ দিয়ে খুলতে খুলতে বিহারী দোকানদার বলল, “ডিম লিতে আপনি চলে এলেন, মা-জী? ছবিদিদি নাই”?
     
    শুভময়ীদেবী বেশ অস্বস্তিতে পড়লেন, বিহারী ভদ্রলোক কি এ পাড়ার সবাইকেই চেনেন? কই তিনি তো ওঁনাকে চেনেন না? প্লাস্টিকের ব্যাগে ছটা ডিম ভরে – ব্যাগের মুখটা টাইট করে বেঁধে দিলেন বিহারী ভদ্রলোক। শুভময়ীদেবী জিজ্ঞেস করলেন, “কত দাম”।
     
    মাছি তাড়ানোর মতো হাত নেড়ে বিহারী ভদ্রলোক বললেন, “ও আমি ছবিদিদির থেকে লিয়ে লিব, মা-জী। আপনি সাবধানে লিয়ে যান”।
     
    “বাঃ মজা! ডিম লিব আমি – আর দাম দেবে ছবিদিদি? কেন?”
     
    “বাত তো একহি হল না…” বিহারী ভদ্রলোক হাসতে হাসতে বললেন, “ছত্রিশ টাকা”।

    টাকাকড়ির হিসেব মিটতে শুভময়ীদেবী ডিম নিয়ে রওনা হলেন তাঁদের কমপ্লেক্সের দিকে, একইভাবে জল ভেঙে। কমপ্লেক্সের গেট দিয়ে ঢুকেই তিনতলার বারান্দার দিকে তাকালেন – ছবি দাঁড়িয়ে আছে। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে।
     
    সিকিউরিটি ছেলেটি বলল, “ছবিদিদি জিজ্ঞেস করছিলেন, আপনি কোথায় গেলেন…”
     
    শুভময়ীদেবী কিছু বললেন না, সাবধানে এগোলেন, তাঁর ব্লকের সিঁড়ির দিকে। তাঁর পাজামা ভিজে সপ সপ করছে – জড়িয়ে ধরেছে তাঁর পায়ের গোছ। জলও ঝরছে টপটপ করে। স্যান্ডেলটা বোধহয় চামড়ার – নয়তো রেক্সিনের - এতক্ষণ জলে ভিজে কেমন যেন ল্যাতপেতে হয়ে গেছে – তাঁর পায়ের চেটোর সঙ্গে তার ঠিক বনিবনা হচ্ছে না। খুব সাবধানে পা ফেলেও – সিঁড়ির প্রথম ধাপেই স্লিপ করল তাঁর স্যাণ্ডেলটা। তিনি হুমড়ি খেয়ে পড়তে পড়তেও সামলে নিয়ে ধপ করে বসে পড়লেন সামনের মেঝেতে। নাহলে নাকে চোট তো পেতেনই – হয়তো চশমার কাচ-টাচ ভেঙে বড়ো বিপদ ঘটে যেত।
     
    শুভময়ীদেবীর পড়ে যাওয়ার আওয়াজে সিকিউরিটি দৌড়ে এল চেঁচাতে চেঁচাতে – “ছবিদি, ম্যাডাম পড়ে গেছে, শিগ্‌গির নীচেয় এসো”। পাশের বন্ধ-দরজা ফ্ল্যাটগুলি থেকেও বেশ কয়েকজন ভদ্রলোক ও মহিলা বেরিয়ে এল দরজা খুলে। “কী হয়েছে? আরে রে রে, ম্যাডাম পড়ে গেলেন কী করে…খুব বেশি চোট লাগেনি তো?”
     
    অপ্রস্তুত হেসে শুভময়ীদেবী বললেন, “না, না পাটা স্লিপ করে পড়ে গেছি…তেমন কিছু নয়…”।
     
    ছবি নিঃশব্দে তাঁর পিছনে এসে দাঁড়াল, অস্ফুট স্বরে বলল, “তুমি ডিম আনতে গিয়ে এই কাণ্ড বাধালে?! উঠে দাঁড়াতে পারবে, আমার কাঁধে ভর দিয়ে? নাকি ধরব?”
     
    “তাই পারেন নাকি? ওঁনাকে শক্ত করে ধর না দু হাতে…” এক প্রতিবেশী মহিলা ঝাঁজালো গলায় বললেন।
     
    মহিলার কথার ভঙ্গিতে শুভময়ীদেবী উঠে দাঁড়ালেন – একটাও কথা না বলে ছবির কাঁধে ভর দিয়ে ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে শুরু করলেন। তিনি বুঝতে পারছিলেন, তিনি যতক্ষণ নীচেয় বসে থাকবেন…ওই ভদ্রলোক ও মহিলারা অনবরত ছবিকে দোষারোপ করে, তাকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলবে।
     
    তাঁরা দুজনে নির্বিঘ্নে ফার্স্ট ল্যাণ্ডিংয়ে পোঁছে যেতে, নীচেয় দাঁড়ানো ভদ্রলোকদের একজন বললেন, “সব ঠিক আছে তো, ম্যাডাম? ডাক্তারকে কল দেব কি?”
     
    ল্যাণ্ডিংয়ে দাঁড়িয়ে শুভময়ীদেবী হাত তুলে বললেন, “একদম ঠিক আছি। খামোখা আপনাদের ব্যতিব্যস্ত করে তুললাম… অসুবিধে নেই, আমি চলে যাবো…”।
     
    ল্যাণ্ডিং ঘুরে দ্বিতীয় ফ্লাইটে পা দিতেই নীচের মানুষরা যে যার ঘরের দিকে চলে যাচ্ছিল। একজন মহিলা বললেন, “কী দিনকালই না পড়ল। এই দুর্যোগের দিনে, মহিলা দোকানে বেরিয়েছেন ডিম কিনতে আর কাজের লোক ঘরের সোফায় বসে বসে মোবাইল ঘাঁটছে…। কাজের লোক রেখে লাভ কী?”। যথেষ্ট চাপা স্বরে বললেও কথাগুলো শুভময়ীদেবী এবং ছবির কানে পৌঁছল। ছবির মুখের দিকে মুখ তুলে তাকাতেও পারলেন না শুভময়ীদেবী।            

    ...চলবে...
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন