এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  প্রবন্ধ

  • পাল্টে যাচ্ছে কি আফ্রিকার গৃহযুদ্ধের চালচলন?

    নূপুর রায়চৌধুরী
    প্রবন্ধ | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৮০৩ বার পঠিত


  • আচ্ছা এটা কি লক্ষ করেছেন যে, পৃথিবীর কোথায় কোথায় যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছে, আপনি যখনই তার তত্ত্বতালাশ করতে বসেন, তখনই সেই তালিকায় আফ্রিকার কোনো না কোনো একটা দেশের নাম ঠিকই উঠে আসে? না, না একটুও বাড়িয়ে বলছি না, এ এক ভয়ঙ্কর নিখাদ সত্য । ধরুন না, এই এক্ষুনি, যখন এই লেখাটা লিখতে বসেছি, সেন্টার ফর প্রিভেন্টিভ অ্যাকশন অ্যাট ফরেন রিলেশনস কাউন্সিল-এর ইন্টারেক্টিভ গ্লোবাল কনফ্লিক্ট ট্র্যাকার ম্যাপ তখন আফ্রিকার আট-টা হটস্পটের উপর জ্বলজ্বল করছে । শুনবেন সেই সংঘাতময় রাজনৈতিক অঙ্গনগুলোর নাম? লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ, সাহেলে সহিংস চরমপন্থা, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে সংঘাত, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে (ডিআরসি) ২৩ মার্চ মুভমেন্ট (এম টোয়েন্টি থ্রি ) বিদ্রোহীদের হিংসাকাণ্ড, সুদানে গৃহযুদ্ধ, দক্ষিণ সুদানে অস্থিতিশীলতা, ইথিওপিয়ায় সংঘাত, সোমালিয়ায় আল-শাবাবের সাথে সংঘাত। এগুলোর কোনোটাই কিন্তু ভুঁইফোড় গজিয়ে ওঠা দ্বন্দ্ব নয়, সবই একেকটা জটিল, চলমান সমস্যা যার মূল প্রোথিত রয়েছে ইতিহাসের অনেক গভীর কন্দরে ।

    উদাহরণস্বরূপ চলুন দেখে নিই ডিআরসিতে কঙ্গোলিজ সৈন্যদের সাথে এম টোয়েন্টি থ্রি’র বর্তমান অশান্তির ভিতরের কথা । ইতিহাস বলে যে, ১৯৯৪তে, রুয়ান্ডায় রক্তঝরা গৃহযুদ্ধের সময়, হুতু রাজনৈতিক ও সামরিক চরমপন্থীরা ডিআরসি’র পূর্ব সীমানার নিকটবর্তী পশ্চিম রুয়ান্ডায় টুটসি উপজাতির বিরুদ্ধে নারকীয় গণহত্যা চালিয়েছিল । এ ঘটনা বহু পুরানো, কিন্তু তার জের কি মিটে গেছে? নাহ, তাই যদি হবে, তো গত ৩০ বছরে ওই একই অঞ্চলে হিংসাত্মক সংঘাতের দাবানল স্তিমিত হয়নি কেন? আজকে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলিতে এম টোয়েন্টি থ্রি উত্তেজনার কেন্দ্রে যারা রয়েছে দক্ষিণ কিভুর বাসিন্দা সেই বানিয়ামুলেঞ্জ আর উত্তর কিভু'র বানিয়ারওয়ান্ডারা তো আদতে রুয়ান্ডার সমর্থন প্রাপ্ত জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহী কঙ্গোলিজ টুটসি সম্প্রদায় । বেশ কিছু শান্তি চুক্তি (সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে ১৯৯৯র লুসাকা চুক্তি, ২০০২ প্রিটোরিয়া চুক্তি, ২০০২ লুয়ান্ডা চুক্তি, এবং ২০০৩ সান সিটি চুক্তি) হাওয়া সত্ত্বেও এই অঞ্চলে সক্রিয় সংঘাত চলছে এবং বিগত তিন দশক ধরে, কোনো স্থায়ী শান্তি স্থাপিত হয়নি ।

    প্রশ্ন জাগে মনে, আফ্রিকা জুড়ে কেন এই যুদ্ধের ঢল? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে প্রথমেই আমাদের নজর গিয়ে ঠেকে এই মহাদেশটার বিশালতা দিকে । আফ্রিকার মোট আয়তন ৩০.৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার, এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৫৪টি রাষ্ট্র । জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, পৃথিবীর অন্য মহাদেশগুলোর তুলনায় এই রাষ্ট্র-সংখ্যা সর্বোচ্চ । দেশটার জাতিগত গঠনও কম বিচিত্র নয়। সমগ্র আফ্রিকাতে ৩,০০০ টিরও বেশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী রয়েছে এবং তারা ২,১০০ টিরও বেশি বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে; খ্রিস্টান, ইসলাম, ইহুদি, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছাড়াও, বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠী তাদের নির্দিষ্ট ঐতিহ্যবাহী ধর্ম পালন করে। ভাবছেন তবে কি এই ভিন্নধর্মী জাতিগত পরিচয়ই সে দেশের মানুষে মানুষে ঘৃণা এবং তার ফলস্বরূপ সহিংস সংঘাতের জন্ম দেয়? উত্তরটা শুনলে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন। ১৯৬০-১৯৯৯ সালের মধ্যে ১৬১টি দেশে গৃহযুদ্ধের সামগ্রিক ব্যাপকতার সাম্প্রতিক মডেল ব্যবহার করে আমরা আফ্রিকার সম্বন্ধে একটা বিশেষ তথ্যে উপনীত হই, যা দেখায় যে আফ্রিকায় যুদ্ধের তুলনামূলকভাবে উচ্চতর প্রাদুর্ভাব যতটা না তার দেশগুলির জাতি, ভাষা, ধর্ম-গত বিভাজনের কারণে, তার চেয়ে অনেক বেশি নিদারুণ দারিদ্র্য, ঔপনিবেশিক শক্তি দ্বারা সৃষ্ট স্বেচ্ছাচারী সীমানা নির্ধারণ, ব্যর্থ রাজনৈতিক নেতৃত্ব, দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন,বহিরাগত ঋণের বোঝা, ছোট অস্ত্রের বিস্তার এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অর্থনৈতিক নির্ভরতার কারণে।

    দেখুন, যুদ্ধ-বিগ্রহের ব্যাপার আফ্রিকায় কোনো নতুন কথা নয় । ১৯৪৫ সাল থেকে শুরু হলেও মোটামুটি ১৯৬০ সালের মধ্যে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শাসকদের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন বা সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল আফ্রিকা মহাদেশ। স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই আফ্রিকার দেশগুলো যেন গৃহযুদ্ধ এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘর্ষের জন্য পাল্লা দিয়ে বাজি ধরেছিল । হাড়-হিম করা ভয়াবহ সব সংঘর্ষ: চাদ (১৯৬৫-৮৫), অ্যাঙ্গোলা (১৯৭৪ সাল থেকে), লাইবেরিয়া (১৯৮০-২০০৩), নাইজেরিয়ান সিভিল ওয়ার (১৯৬৭), উগান্ডার দা লর্ড’স রেসিসটেন্স আর্মি ইন্সার্জেন্স (এলআরএ) (১৯৮৭), লাইবেরিয়া সিভিল ওয়ার (১৯৮৯), সোমালি সিভিল ওয়ার (১৯৯১), সিয়েরা লিওন সিভিল ওয়ার (১৯৯১), রুয়ান্ডান জেনোসাইড (১৯৯৪), রিপাবলিক অফ দা কঙ্গো সিভিল ওয়ার (১৯৯৭–১৯৯৯), এরিট্রিয়ান-ইথিওপিয়ান ওয়ার (১৯৯৮), – আর কত নাম নেব?

    এই সব যুদ্ধের ইতিহাস খুঁটিয়ে দেখলে একটা ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে, গত কয়েক দশকে আফ্রিকার যুদ্ধের প্রকৃতি ও পদ্ধতি উল্লেখযোগ্যভাবে পাল্টে গেছে। "পুরানো বা ঐতিহ্যগত যুদ্ধ’’ এবং "নতুন যুদ্ধ" এ দুইয়ের মধ্যে স্বতন্ত্র পার্থক্য ধরা পড়ে । তবে সব সময় এই বিভাজনের সীমারেখা টানা অত সোজা নয়, কোনো কোনো যুদ্ধে এই দুয়েরই প্রভাব দেখা যায়, সেই যুদ্ধকে তখন ‘’মিশ্র প্রকৃতির (Hybrid)’’ বলে সাব্যস্ত করা হয় । ব্যাপারটা তাহলে একটু খতিয়ে দেখা যাক ।

    আফ্রিকার পুরোনো বিপ্লবগুলোর শিকড় গাঁথা থাকত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সব ঘটনার মধ্যে । ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার এবং সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করেই মূলত আন্তঃরাজ্য দ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিয়ে উঠত । প্রথাগত এই যুদ্ধগুলো প্রায়শই মতাদর্শের লড়াই থেকে জন্মাত, সংঘর্ষগুলো ছিল তুলনামূলকভাবে স্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং সর্বসম্মত; সেগুলোর পিছনে থাকত ন্যায়সঙ্গত এবং মহৎ কারণ যেমন সামাজিক পরিবর্তন, উপনিবেশবাদ, বা বর্ণবাদের বিলুপ্তি ইত্যাদি । প্রচলিত এই লড়াইগুলো সাধারণত পূর্ব পরিকল্পিত হতো; যুযুধমান প্রতিটি পক্ষের সৈন্যবাহিনী ভালভাবে সংজ্ঞায়িত থাকত; রাজ্যের স্থায়ী ও নিয়মিত সশস্ত্র যোদ্ধা দ্বারা সংঘটিত সেনাবাহিনীকেই যুদ্ধে নিয়োগ করা হতো; সর্বজন স্বীকৃত, নির্দিষ্ট নিয়ম দ্বারা যুদ্ধ পরিচালিত হতো । যুদ্ধ হতো একটা বিরোধী সামরিক বাহিনী এবং তার সরকারের সঙ্গে, বেসামরিক জনসংখ্যা শুধুমাত্র সামরিক বিজয়ের প্রধান লক্ষ্যের গৌণ ফলাফল হিসাবেই প্রভাবিত হতো; প্রাথমিকভাবে যুদ্ধের সময় প্রতিপক্ষের সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করেই অস্ত্র ব্যবহার করা হতো, অসামরিক মানুষজনের উপর নয়। যুদ্ধকালে, শত্রুর উপর প্রায়ই প্রচলিত অস্ত্রশস্ত্র যেমন ভারী, মোটর চালিত অস্ত্র ব্যবস্থা, ইলেকট্রনিক টার্গেটিং সিস্টেম এবং গাইডেড মিসাইল ইত্যাদি প্রয়োগ করা হতো, রাসায়নিক, জৈবিক, রেডিওলজিক্যাল বা পারমাণবিক অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকত না। যুদ্ধের প্রাথমিক উদ্দেশ্য প্রায়ই হতো সশস্ত্র শত্রু বাহিনীকে পরাজিত করা এবং নির্দিষ্ট অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ দখল । কয়েকটা পুরোনো যুদ্ধের উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে: ১৯১৯ সালের মিশরীয় বিপ্লব, আলজেরিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধ (১৯৫৪-১৯৬২), অ্যাঙ্গোলা’র স্বাধীনতা যুদ্ধ (১৯৬১-৭৪), ইথিওপিয়ান-ইরিত্রিয়ান যুদ্ধ (১৯৯৮-২০০০), প্রভৃতি ।

    অপরদিকে বেশিরভাগ ‘নতুন যুদ্ধের’ বিশিষ্টতা হচ্ছে যে অন্য রাজ্যের সাথে যুদ্ধের পরিবর্তে একই রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে গৃহযুদ্ধ বা আন্তঃরাষ্ট্রীয় দ্বন্দ্বই সেখানে মুখ্য হয়ে ওঠে আর এই বিদ্রোহগুলো হয় বিচ্ছিন্ন, অসমমিত এবং স্বায়ত্তশাসিত। অপরাধমূলক এবং সাধারণ ব্যক্তিগত লাভ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় বলে' লোভ এবং লুটের কারণকার্য এই ছোট যুদ্ধগুলোতে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় । বিশেষজ্ঞরা নতুন যুদ্ধ সম্পর্কে বেশ কয়েকটা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করেছেন:

    আইডেন্টিটি পলিটিক্স: এই দ্বন্দ্বগুলো প্রায়ই স্পষ্ট আদর্শগত লক্ষ্যের পরিবর্তে জাতিগত, ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক পরিচয় দ্বারা চালিত হয়। নন-স্টেট অ্যাক্টরস: বিদ্রোহী গোষ্ঠী, মিলিশিয়া এবং যুদ্ধবাজদের মতো নন-স্টেট অ্যাক্টরদের জড়িত হওয়া। অপ্রতিসম যুদ্ধ: এই সংঘাতগুলোতে গেরিলা যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ এবং শিশু সৈন্যদের ব্যবহার সহ অনিয়মিত কৌশলের প্রয়োগ জড়িত। অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য: নতুন যুদ্ধগুলোর প্রায়ই উল্লেখযোগ্য একটা আর্থিক দিক থাকে, যেমন, সংঘাতের অর্থায়নের জন্য মূল্যবান সম্পদের (হীরা, তেল, কাঠ) উপর নিয়ন্ত্রণ বা অর্থনৈতিক শোষণ । উদাহরণস্বরূপ, সিয়েরা লিওনের সংঘাতের সময় সরকার এবং বিদ্রোহীরা উভয়ই তাদের যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে বিভিন্ন উপায়ে অর্থায়নের জন্য হীরা ব্যবহার করেছিল । একইভাবে, প্রাকৃতিক সম্পদে ধনী ডিআরসি’র খনিজ সম্পদের (হীরা, সোনা, তামা, কোবাল্ট, ক্যাসিটেরাইট (টিনের আকরিক) এবং কোল্টান) উপর নিয়ন্ত্রণ কয়েক দশক ধরে সংঘাত ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু: ব্যাপক নৃশংসতা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি এবং গণহত্যা সহ বেসামরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বড় বড় ঘটনা রয়েছে । বেসামরিক নাগরিকদের উপর প্রভাব: নতুন যুদ্ধ বেসামরিক জনগণের উপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ, দ্বিতীয় কঙ্গো যুদ্ধের (১৯৯৮-২০০৩) ফলে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, যার বেশিরভাগই রোগ এবং অনাহারের কারণে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে মারাত্মক সংঘাতগুলোর অন্যতম হয়ে উঠেছে এটা। বৈশ্বিক প্রভাব: নতুন যুদ্ধগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ, অস্ত্র পাচার এবং শান্তিরক্ষী বাহিনীর আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ সহ বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের সাথে আরও বেশি সংযুক্ত। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শান্তিরক্ষা মিশন, আন্তর্জাতিক অপরাধমূলক বিচার, এবং মানবিক হস্তক্ষেপ সহ বিভিন্ন কৌশল সহ নতুন যুদ্ধে সাড়া দিয়েছে। জাতিসংঘ এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির ভূমিকা এই দ্বন্দ্বগুলো পরিচালনা ও সমাধান করার প্রচেষ্টায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

    উপরে একটু আগেই আমরা দ্বিতীয় কঙ্গো যুদ্ধ ও সিয়েরা লিওনের সংঘাতের কথা জেনেছি। আসুন, জেনে নিই আরও ক’টা ''নতুন যুদ্ধের" উদাহরণ: ১৯৮৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া, প্রথম লাইবেরিয়ান গৃহযুদ্ধকেই কোল্ড ওয়ার পরবর্তী আফ্রিকার প্রথম ফুল-স্কেল "নতুন যুদ্ধের" ক্লাসিক উদাহরণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সরকারী ক্ষমতা এবং সম্পদ দখলের জন্য চার্লস টেলরের নেতৃত্বে ন্যাশনাল প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট অফ লাইবেরিয়া (NPFL), লাইবেরিয়ার তদানীন্তন রাষ্ট্রপ্রধান প্রেসিডেন্ট স্যামুয়েল ডো’কে উৎখাত করার জন্য আইভরি কোস্ট থেকে লাইবেরিয়া আক্রমণ করে। ১৯৯৭ পর্যন্ত এই যুদ্ধ স্থায়ী হয়, যুদ্ধের ফলে ১৫০,০০০ থেকে ২০০,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এবং জনসংখ্যার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। এ ছাড়াও রয়েছে রুয়ান্ডার গণহত্যা (১৯৯৪), উগান্ডায় জোসেফ কোনি’র লর্ডস রেজিস্ট্যান্স আর্মি’র (এলআরএ) লড়াই (.২০০২- ২০০৫), সুদানে দারফুর দ্বন্দ্ব (২০০৩-বর্তমান), সিয়েরা লিওন গৃহযুদ্ধ (১৯৯১- ২০০২), সুন্নি ইসলামপন্থী সামরিক ও রাজনৈতিক সংগঠন আল-শাবাবের সাথে জড়িত সোমালিয়ায় চলমান সংঘাত । নাইজেরিয়ার কথাটাও এখানে উল্লেখ করা দরকার, একাধিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আজ দেশটা, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বে নাছোড়বান্দা ইসলামি জিহাদি দল বোকো হারাম বিদ্রোহ এবং নাইজার ডেল্টায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান অসন্তোষ এবং জঙ্গিবাদ। বোকো হারাম ভেঙে বেরিয়ে যাওয়া দুই গোষ্ঠী JAS (Jama’tu Ahlis Sunna Lidda’awati wal-Jihad)এবং ISWAP (Islamic State West Africa Province) এই মুহূর্তে নিজেদের মধ্যে মরণঘাতী সংঘর্ষে লিপ্ত হলেও নাইজেরিয়া এবং চাদ অববাহিকায় অন্যান্য রাজ্যের নাগরিকদের জন্য তারা এক বিশাল হুমকি ছাড়া আর কিছুই নয়।

    পুরোনো আর নতুন যুদ্ধর মাঝামাঝি রয়েছে হাইব্রিড বা মিশ্র প্রকৃতির যুদ্ধ যেখানে দুইয়েরই প্রভাব লক্ষিত হয়। একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। উগান্ডায় মিল্টন ওবোতে এবং টিটো ওকেল্লো'র কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটানোর জন্য ১৯৮১তে উগান্ডার শীর্ষ গেরিলা যোদ্ধা ইয়োভেরি মুসেভেনির সশস্ত্র বিদ্রোহী অভিযান 'ন্যাশনাল রেসিস্টেন্স মুভমেন্টকে' (NRM) একটা মিশ্র যুদ্ধ হিসাবে দেখা যেতে পারে, যেখানে আফ্রিকান যুদ্ধের পুরানো এবং নতুন উভয় শৈলীর উপাদানই বিদ্যমান। মতাদর্শগত অনুপ্রেরণা এবং গেরিলা কৌশল ব্যবহার করার কারণে এই যুদ্ধ পুরানো যুদ্ধের সাথে তুলনীয়, অন্যদিকে যখন এই যুদ্ধের আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্রকৃতি, যুদ্ধে অ-রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ এবং যুদ্ধের উদ্দেশ্যের (শাসন সংস্কার) উপর ফোকাস করা হয়, তখন এই সংঘর্ষ নতুন যুদ্ধ কাঠামোর সাথে শ্রেণীবদ্ধ হতে পারে।

    যুদ্ধের শ্রেণীবিভাগ আর তার গতিপ্রকৃতি নিয়ে তো এতক্ষণ অনেক কচকচানি হলো, কিন্তু আসল প্রশ্নটা হলো একবিংশ শতকের এই যুদ্ধবাজ দলপতিরা কী চায়? রাজধানীর অধিকার আদায় করা? বড় বড় শহরগুলো দখল করা? নাহ, সেরকম কোনো ইচ্ছে তাদের আছে বলে তো মনে হয় না, বরঞ্চ বন জঙ্গল, ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থেকে চোরাগোপ্তা খুনখারাবি, জখমলুণ্ঠন ক'রে নির্বাধায় উধাও হয়ে যাওয়াই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য বলে এ যাবৎ মালুম হয়েছে।

    আমাদের জানতে ইচ্ছে করতেই পারে, পুরোনো থেকে নতুন যুদ্ধে কেন এই স্থানান্তর।

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর বিশ্বমঞ্চে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র নেতৃস্থানীয় শক্তি ছিল না; সোভিয়েত ইউনিয়নও এই শক্তির জন্য নতুন এক প্রতিযোগী ছিল। ১৯৪৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এই দুই শক্তির মধ্যে যে চাপা উত্তেজনা স্থায়ী ছিল তা ''কোল্ড ওয়ার'' নামে পরিচিত । এই দুই শক্তিই আফ্রিকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রতিযোগিতা করেছিল, আফ্রিকান দেশগুলিকে পক্ষ বেছে নিতে বাধ্য করেছিল। এই সময়কালটিকে "প্রক্সি কোল্ড ওয়ার" বা "আফ্রিকার জন্য দ্বিতীয় স্ক্র্যাম্বল" বলা হয়।

    এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, এই দুই প্রধান শক্তির মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক শত্রুতা এবং প্রতিযোগিতা অনেকাংশেই সাব-সাহারান আফ্রিকায় যুদ্ধ-বিগ্রহের গতিপ্রকৃতির উপর ছায়া ফেলেছে । আফ্রিকার পুরোনো থেকে নতুন যুদ্ধে স্থানান্তর এই শক্তিগুলির মধ্যে কোল্ড ওয়ার-পরবর্তী সংঘাত-প্রকৃতির বৈশ্বিক পরিবর্তনকেই প্রতিফলিত করে।

    দেখুন, পুরোনোই হোক অথবা নতুন, যুদ্ধ মানেই ধ্বংসের তান্ডব, কারুরই কাম্য নয় তা, সবাই তার সমাপ্তি প্রার্থনা করে; তবু এই দুইয়ের মধ্যে যদি তুলনা করলে একটা সত্য বেরিয়েই আসে যে, নতুন ঢঙের যুদ্ধগুলোর মধ্যে বেশ কিছু সবথেকে নৃশংস, সবচেয়ে রক্তাক্ত সংঘর্ষ মনে হচ্ছে কখনই শেষ হবে না । ভাবছেন কেন এরকম বলছি? কারণ সেগুলো আসলে কোনো যুদ্ধই নয়; অন্তত প্রথাগত অর্থে নয় । কি মানছেন না তো? তাহলে শুনুন: অতীতে আমরা আফ্রিকার মুক্তি আন্দোলনের যে রূপ দেখেছি, তা হলো শাসকশ্রেণীর যথেচ্ছ অত্যাচার, বর্ণবাদ, বা ঔপনিবেশিকতার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মানুষ মরিয়া হয়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে, অজস্র রক্ত ঝরেছে, কিন্তু তার পিছনে ছিল যৌক্তিকতা, সেগুলো ছিল আদর্শের লড়াই, স্বাধীনতার লড়াই, মানুষের যোগ্য মর্যাদা আদায়ের সংগ্রাম, কিন্তু আজ সেখানে যা হচ্ছে তার নৃশংসতা, অমানবিকতা আর হিংস্রতা দেখেশুনে আমাদের হাড়হিম হয়ে যাচ্ছে । পুরানো ক্লাসিক আফ্রিকান লিবারেশন আন্দোলনের পতন হয়েছে এবং তার বদলে সাংঘাতিক কিছু বর্বরতা, কিছু উন্মত্ততার চাষাবাদ চলেছে । একটা উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাপারটা আরও খোলসা করে বলা যাক । আচ্ছা আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, উগান্ডার দুজন নেতার মধ্যে কাকে আপনি বেছে নেবেন? ইয়োভেরি মুসেভেনি, নাকি জোসেফ কোনি? কী হলো, কপালে অতগুলো ভাঁজ পড়ল কেন? ঠিক ধরেছি, নামগুলো চেনা চেনা ঠেকছে, কিন্তু তাদের ঘিরে, বিশদ ঘটনাগুলো মনে আসছে না? চিন্তিত হবেন না, সূত্রগুলো এক্ষুনি ধরিয়ে দিচ্ছি ।
    ১৯৮০ সাল থেকে উগান্ডা সরকারের সশস্ত্র শাখা বাহিনী--উগান্ডা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (ইউএনএলএ) বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয় । এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো উগান্ডার শীর্ষ গেরিলা যোদ্ধা মুসেভেনির 'ন্যাশনাল রেসিস্টেন্স মুভমেন্ট' (NRM) । শুরু হয় উগান্ডা গৃহযুদ্ধ । মুসেভেনি তাঁর অধীনে বিরোধীদের ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স আর্মিতে (এনআরএ) একত্রিত করে’যুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং ১৯৮৬ সালে তিনি ক্ষমতায় আসেন । সেই থেকে আজ অবধি তিনি উগান্ডার প্রেসিডেন্ট পদেi অধিষ্ঠিত রয়েছেন । বহু বছরের সংঘাতের পর উগান্ডায় অনেকটা স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন তিনি । অবশ্য, এ কথা অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই যে, মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অভিযোগে তাঁর শাসনকাল মসীলিপ্ত।

    এবার আসি, উত্তর উগান্ডার কুখ্যাত লর্ডস রেজিস্ট্যান্স আর্মি’র (এলআরএ) বিদ্রোহী গোষ্ঠীনেতা জোসেফ কোনি’র প্রসঙ্গে । টেন কমান্ডমেন্টসের নাম দিয়ে ধর্মতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি লড়াই শুরু করেন । কোনি এবং এলআরএ’র লড়াইয়ের নৃশংস কৌশলের মধ্যে ছিল ৩০,০০০ টিরও বেশি শিশুর অপহরণ । অপহৃত ছেলেগুলোর হাতে কালাশনিকভ বা কুড়ুল ধরিয়ে দিয়ে, তাদের সৈনিক আখ্যা দিয়ে নিরপরাধ মানুষদেরকে নির্বিচারে হত্যা করতে, আর মেয়েগুলোকে যৌনদাসীতে পরিণত হতে বাধ্য করানো হতো । এলআর-এর অপরাধের তালিকায় এছাড়াও ছিল বেসামরিক নাগরিকদের গণহত্যা, এবং অঙ্গচ্ছেদ । জুলাই ২০০২ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০০৫ এর মধ্যে সংঘটিত ৩৬টি মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নারকীয় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে এলআর’র বিরুদ্ধে। কোনির অত্যাচারে প্রতিবেশী দেশগুলিতে কয়েক দশক ধরে ব্যাপক দুর্ভোগ, কুড়ি লক্ষ মানুষের বাস্তুচ্যুতি ও আতঙ্কের পরিমণ্ডল সৃষ্টি হয়েছিল।

    জানি এবার আপনি নির্ঘাত চেঁচিয়ে বলে উঠবেন, ‘কিসের মধ্যে কি পান্তা ভাতে ঘি’; এদের দুজনের মধ্যে মধ্যে কি কোনো তুলনা হতে পারে? হ্যাঁ, এবার এক্কেবারে ঠিক কথা বলেছেন । এই দুজনের লড়াইয়ের নীতিপদ্ধতিতে বিস্তর ফারাক আর সে সম্বন্ধে আমরা একটু আগেই জেনেছি । সবচেয়ে বড়ো কথা মুসেভেনি একজন দেশপ্রধান আর কোনি কেবলমাত্র একজন যুদ্ধবাজ জঙ্গি । আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০০৫ সালে কোনির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উগান্ডা দুই দেশই ২০১২ সাল থেকে ফেরারি কোনিকে ধরবার তালে ছিল । এপ্রিল ২০১৭, নাগাদ কোনি তখনও টিকে ছিল, কিন্তু এলআরএ’র সৈন্যসংখ্যা ৩,০০০ থেকে কমতে কমতে আনুমানিক মাত্র একশতে এসে ঠেকেছে বলে জানা গিয়েছিল । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উগান্ডা উভয়ই তখন কোনি এবং এলআরএ’র খোঁজে ক্ষান্তি দেয়, কারণ তারা বুঝেছিল যে, উগান্ডার নিরাপত্তার জন্য এলআরএ আর উল্লেখযোগ্য কোনো ঝুঁকি ছিল না।

    আফ্রিকার যুদ্ধের সময়রেখা অনুসরণ করতে করতে আমরা তার সাম্প্রতিক রূপান্তরের বিস্তারিত পরিচয়ও পাচ্ছি । সাব-সাহারান আফ্রিকা জুড়ে রাষ্ট্র-ভিত্তিক সশস্ত্র সংঘাতের গতিশীলতায় ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় সহিংসতার আস্ফালন এক উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে । অনেকেই হয়তো এই মুহূর্তে ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করবেন, যে, তবে কি আফ্রিকার লম্বা যুদ্ধ ইতিহাসে ধর্মীয় উপাদান ছিল না? উত্তরটা হলো, হ্যাঁ, সেই প্রাক-ঔপনিবেশিক সময় থেকেই আফ্রিকার অনেক সংঘাতে তার উপস্থিতি দেখেছি আমরা । উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, ১৯ শতকের শেষের দিকে এবং ২০ শতকের প্রথম দিকে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতা যে প্রতিরোধ আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিল তা আংশিকভাবে ধর্ম দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল - সে প্রথাগত ধর্মই হয়ে থাকুক বা ইসলাম । স্বাধীনতার পর থেকে, বিভিন্ন সশস্ত্র সংঘর্ষেও ধর্মগুলো ভূমিকা পালন করেছে, যেমন পশ্চিম আফ্রিকায়। কিন্তু এখানে একটা কথা আছে: প্রারম্ভিক আফ্রিকান যুদ্ধগুলিতে, ধর্ম প্রায়শই সহিংসতাকে বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে এবং আধ্যাত্মিক আচার-অনুষ্ঠান এবং বিশ্বাসগুলি সরাসরি যুদ্ধের কৌশলগুলিকে প্রভাবিত করে যুদ্ধের বুননে গভীরভাবে একীভূত হয়েছে, অথচ বর্তমান আফ্রিকান দ্বন্দ্বগুলোতে, ধর্ম প্রায়ই রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা সমর্থন জোগাড় করা এবং সহিংসতাকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য একটা হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । সংঘর্ষের আসল উদ্দেশ্য থাকে সাধারণত জাতিগত, সম্পদ নিয়ন্ত্রণ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার লড়াইয়ের মতো জটিল সমস্যা, ধর্মীয় উত্তেজনাকে সেখানে একটি গৌণ কারণ হিসাবে উপলব্ধ করা হয় । ২০১০ সাল থেকে, বিভিন্ন সক্রিয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী যেমন আল শাবাব (সোমালিয়া এবং পূর্ব আফ্রিকার অন্যত্র), বোকো হারাম (আফ্রিকার লেক চাদ অঞ্চল যেমন নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন, চাদ এবং নাইজার), এবং আল-কায়েদা ইন দ্য ইসলামিক মাগরেব (AQIM) (মালি সহ আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল) তাদের জঙ্গিবাদকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য ইসলামী ধর্মতত্ত্বের একটি বিকৃত সংস্করণকে সমর্থন করে আফ্রিকার সংঘাতের পটভূমিকায় আরও বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে। এই যুদ্ধবাজেরা মহাদেশটার সহিংস চরমপন্থার ক্রমবর্ধমান মাত্রাকে তীব্র করেছে, বিশেষ করে উত্তর আফ্রিকা, সাহেল এবং হর্ন অফ আফ্রিকা জুড়ে।

    এখানেই শেষ নয়, গত এক দশকে, আফ্রিকা জুড়ে হামলাকারীদের মধ্যে রিমোট ভায়োলেন্সের ব্যবহার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে, ২০০৫ সালে রেকর্ড করা সশস্ত্র সংঘাতগুলোর মাত্র ০.৯৫ শতাংশের জন্য তা দায়ী ছিল, কিন্তু ২০১৪ সালে, এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ৮.৯৩ শতাংশ। আরও চিন্তার কথা হলো, নন-স্টেট বিদ্রোহীরা আজকাল হামলার সময় বিভিন্ন ধরনের আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) এবং আত্মঘাতী বোমা (সুইসাইড বম্ব) কৌশল ব্যবহারের প্রবণতাও একইভাবে ক্রমশ বেড়ে চলেছে । শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় ১৬টি আফ্রিকান দেশের সুইসাইড বম্বিং-এর ঘটনা তালিকাভুক্ত করে' একটা ডাটাবেস সংকলিত করেছে । সেখান থেকে দেখা যাচ্ছে যে, প্রথম ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল সেই ১৯৯৫ সালে। তারপর থেকে, ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত আফ্রিকাতে রেকর্ড করা ৪৮৩টি আত্মঘাতী হামলার মধ্যে ৪৬৫টিই শুরু হয়েছে ২০০৭ সাল থেকে । 4,৮২২ জন তাতে নিহত হয়েছে এবং ৯,০০০-এর বেশি আহত । যে ছটি আফ্রিকান দেশ এই ধরনের অসমমিতিক কৌশলের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—সেগুলো হলো আলজেরিয়া, মিশর, লিবিয়া, মালি, নাইজেরিয়া এবং সোমালিয়া ।

    গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতোই আফ্রিকা অতি দ্রুত একটা হাইব্রিড ওয়ারফেয়ারের রঙ্গমঞ্চ হয়ে উঠছে যেখানে রাজনৈতিক যুদ্ধ, অনিয়মিত যুদ্ধ এবং অন্যান্য পদ্ধতি যেমন ভুয়া খবর, কূটনীতি এবং বিদেশী নির্বাচনী হস্তক্ষেপের মিশ্রণ জড়িত থাকে । এ এমন এক ভয়াল সামরিক কৌশল যা সমাজকে অস্থিতিশীল করার জন্য, যা যুদ্ধ এবং শান্তির মধ্যে পার্থক্যকে অস্পষ্ট করার জন্য সন্ত্রাস সহ প্রচলিত এবং অপ্রচলিত কৌশলগুলোকে একাট্টা করে। সাইবার আক্রমণ, তথ্য অপারেশন, মনস্তাত্ত্বিক অপারেশন, অর্থনৈতিক আক্রমণ এবং প্রক্সির ব্যবহার, এ সবই এর অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। মালিতে বিভেদ বিচ্ছিন্নতা আরও একটু উস্কে দেবার জন্য পরিকল্পিত রাষ্ট্র-সমর্থিত তথ্য প্রচারের অভিযোগ এবং রেড ক্রসের ইন্টারন্যাশনাল কমিটি (ICRC) এর মতো মানবিক ত্রাণ সংস্থার উপর জানুয়ারি ২০২২ সাইবার হামলা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। হর্ন অফ আফ্রিকা, সাহেল এবং মোজাম্বিকে সহিংস সশস্ত্র গোষ্ঠী, স্টেট্ এক্টর্স বা তাদের প্রক্সিদের দ্বারা অস্ত্র হিসাবে ড্রোনের ব্যবহারও এই উদীয়মান প্রবণতাকে নির্দেশ করে ৷ আফ্রিকার ক্ষেত্রে, দুর্বল শাসনব্যবস্থা এবং ব্যাপক দুর্নীতির কারণে, হাইব্রিড যুদ্ধের নাটুয়ারা আন্তঃজাতিক সংগঠিত অপরাধী গোষ্ঠীগুলির সাথে আরও গভীরভাবে জড়িত থাকে, এবং তাতে দুই পক্ষেরই দায়মুক্তভাবে দুষ্কার্য করার ক্ষমতা বেড়ে যায় এবং হাইব্রিড অভিযান থেকে লাভের বখরা হাসিল হয় ।

    প্রশ্ন হলো তবে এর সমাধানটা কোথায়?

    আফ্রিকার প্রথাগত, রাষ্ট্র-ভিত্তিক দ্বন্দ্ব থেকে আরও জটিল, অনিয়মিত যুদ্ধে সরে আসার এই প্রবণতা গভীর সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং মানবিক পরিবর্তনের প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়। যতক্ষণ না নীতিনির্ধারকেরা আফ্রিকা জুড়ে সশস্ত্র সংঘাতের বিবর্তনশীল চরিত্র ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারছেন এবং তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তাঁদের শান্তি স্থাপন এবং শান্তিরক্ষার জন্য কার্যকর কৌশল প্রকল্প চালু করতে পারছেন, ততক্ষন অবধি এই অঞ্চলে "সাইলেন্স দা গানস”-এর আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা অকার্যকরই থেকে যাবে।

    মেটা, ইউটিউব টিকটক এবং অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোর উচিত আফ্রিকা এবং আফ্রিকান ভাষায় বিভ্রান্তি পর্যবেক্ষণ এবং মোকাবেলার জন্য তাদের সমস্ত সংস্থানগুলোকে বরাদ্দ করা, ঠিক যেমনটি তারা করেছিল ইউরোপের বেলায়-- খবরের সত্যাসত্য বিচার করা এবং গণতন্ত্র রক্ষায় জড়িত নাগরিক সমাজ সংস্থাগুলির সাথে মিলেমিশে কাজ করা ।

    এই প্রতিবেদনটি লেখার সময়, ‘দ্য ব্লাড ডায়মন্ড’ সিনেমার কথা মনে আসছিল। সিয়েরা লিওন গৃহযুদ্ধের সময় ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে ২০০৬ সালের এই সিনেমাটি তৈরি হয় । সিয়েরা লিওনের প্রাক্তন সেনাবাহিনীর কর্পোরাল ফোদায় সাঙ্কোহের নেতৃত্বে আরইউএফ (RUF) বিদ্রোহীরা জোসেফ মোমোহ সরকারকে উৎখাত করার প্রয়াসে সিয়েরা লিওনে আক্রমণ চালায় । প্রায় এগারো বছর স্থায়ী হয় এই দ্বন্দ্ব এবং এতে মোট হতাহতের সংখ্যা ছিল ৫০,০০০, ৭০,০০০ পর্যন্ত; সংঘাতের সময় আনুমানিক ২.৫ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল । শিশুদের অপহরণ করে’ তাদের সৈনিক হতে বাধ্য করা এবং সিয়েরা লিওনিয়ানদের দাসত্ব সহ যুদ্ধের নৃশংসতাকে চিত্রিত করার জন্য ছবিতে অনেকগুলো কাল্পনিক চরিত্র ব্যবহার করা হয়েছে । সিনেমাটিতে আরও দেখানো হয়েছে যে আরইউএফ কীভাবে হীরা খননের মাধ্যমে তাদের যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় বিপুল অর্থ জোগাড়ের কাজটি রাষ্ট্র-বহির্ভূত উৎস থেকেই করেছিল । সিনেমায় অভিনেতা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও এক জায়গায় বলছেন,“মাঝে মাঝে আমি ভাবি, আমরা একে অপরের সাথে যা করেছি তার জন্য ঈশ্বর কি আমাদের ক্ষমা করবেন? তারপর আমি চারপাশে তাকাই এবং বুঝতে পারি, ঈশ্বর অনেক দিন আগেই এই জায়গা ছেড়ে চলে গেছেন" । আফ্রিকার বর্তমান পরিস্থিতির সাথে এই কথাগুলো যেন খাপে খাপ মিলে যায় ।




    তথ্যসূত্র:

    1. Hybrid warfare – Africa beware. Karen Allen. ISS Today. 06 April, 2022,
    2. Africa After the Cold War: Frozen out or Frozen in Time? Keith Somerville. Oxford Academic. October 2000. Pages 134–169.
    3. What is distinctively new about so-called ‘New wars’? Özgür TÜFEKÇİ. UİİİD-IJEAS (International Journal of Economic and Administrative Studies), 2018 (21):227-236 ISSN 1307-9832.
    4. The Religious War In The Central African Republic Continues. Dr. Ewelina U. Ochab. Forbes. May 09, 2018,
    5. Continuity and Change in War and Conflict in Africa. Paul D. Williams. Prism, Volume 6, No 4. May 16, 2017
    6. Uganda ends hunt for LRA leader Joseph Kony. BBC News. 19 April 2017
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • প্রবন্ধ | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৮০৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Guru | 2409:4060:3:2a58:d7d2:af15:a2cb:***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:০১538780
  • লেখক ভালোই লিখেছেন l শুধু একটা কথা বলেননি l আফ্রিকা আম্রিকি মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সের নতুন নতুন অস্ত্র শস্ত্রের একটা টেস্টিং ল্যাব l তাই এতো গৃহযুদ্ধ l এটাই আসল কারণ l ইস্রায়েল প্যালেস্টাইনে ঠিক এই কাজটাই করছে l এই জন্যই এতো যুদ্ধের আয়োজন l 
  • . | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৫৪538785
  • খুব সুন্দর লেখা। যুক্তি ও তথ‍্যপূর্ণ।
    সীমারেখা নিয়ে কেন সংঘাত শুরু হয় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে, সেইটের পেছনে একটি অদ্ভুত জ‍্যামিতিক কারণ আছে। ঔপনিবেশিক শাসকেরা যেভাবে জমি দখল করত, সেটা সরলরৈখিক ভাবে আয়তক্ষেত্রাকারে। ইয়োরোপের চেনা ধাঁচে। কিন্তু জনগোষ্ঠীরা থাকত বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার সীমানা তৈরি করে। ফলত জমিদখলের পরে আয়তক্ষেত্রের সঙ্গে বৃত্তের পরিসীমায় একাধিক জায়গায় ছেদ পড়ত। সেই অঞ্চলগুলির মধ্যে ভিন্ন জনগোষ্ঠীর বাস। সেই থেকে নিজেদের মধ্যে সমস‍্যা।
  • Anirban M | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৪৬538789
  • লেখক যে উদাহরণগুলি দিয়েছেন তার প্রায় সবই ১৯৯৫-২০১০ এর মধ্যেকার, বেশিটাই ১৯৯৫-২০০৫ এর মধ্যেকার। ২০১০ থেকে ২০২৪ এর মধ্যে এই পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা তা নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা থাকলে ভালো হত। 
  • হীরেন সিংহরায় | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:২৯538792
  • ৫৪টি দেশ নিয়ে আফ্রিকা  মহাদেশ । এই নিবন্ধ কি সারা আফ্রিকার গৃহযুদ্ধের চালচলন নিয়ে অথবা সাহারা নিম্নবর্তী (sub Saharan Africa) নিয়ে? আপনার ক্যনভাস বিশাল,  তাই অনেক কিছুকেই ছুঁয়ে গেছেন মাত্র।   সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন অবধি যে লাল নীলের ঠাণ্ডা লড়াই চলে সেখানে কিউবান সৈন্যদের দেখা গেছে বামপন্থী অ্যাঙ্গোলার অয়েল প্লাটফর্ম  রক্ষা করতে।  কঙ্গোর মবুতু এই খেলাটা খেলেছেন চ্যাম্পিয়নশিপ লেভেলে- তিনি লাল বনাম নীল শুধু নয়, বেলজিয়াম ও ফ্রান্সকে ময়দানে নিয়ে আসেন। তাই আপনি যখন বলেন “একইভাবে, প্রাকৃতিক সম্পদে ধনী ডিআরসি’র খনিজ সম্পদের (হীরা, সোনা, তামা, কোবাল্ট, ক্যাসিটেরাইট (টিনের আকরিক) এবং কোল্টান) উপর নিয়ন্ত্রণ কয়েক দশক ধরে সংঘাত ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে “ এটা পরিষ্কার হয় না কে বা কারা সেটি লঙ্ঘন করছেন ।

    আজকের নিন্ম সাহারার সকল দেশের আন্তর্জাতিক সীমানাগুলি টেনে দিয়েছিল ঔপনিবেশিক শক্তি। বিভিন্ন ট্রাইব যাদের আচার আচরণ ভাষা অবধি মেলে না তারা বাধ্য হল একই ঝাণ্ডার নিচে দাঁড়াতে।  হুটু বনাম টুটসির সংগ্রাম বিশেষ বিদিত কিন্তু সেটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কেনিয়াতে আমার বন্ধু বর্গ আছেন, কেউ  কিকুয়ু (সংখ্যায় প্রধান )  কেউ লুও বা কালেনজিন তাঁদের   ব্যবধানটা স্পষ্ট। তেমনি দেখেছি সেনেগাল এবং গাম্বিয়াতে । এই  দুটো দেশকে ইংরেজ ফরাসি আলাদা করে দিয়ে গেছে , গাম্বিয়ার রাজভাষা ইংরেজি , সেনেগালের ফরাসি।  কিন্তু দুটো দেশেই মানুষ ওয়ালপ বলে । সাহেল ঠিক কোনখানে ? সাহেল ( উর্দু সাহিল) মানে তো তীরভূমি ?

    “মেটা, ইউটিউব টিকটক এবং অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোর উচিত আফ্রিকা এবং আফ্রিকান ভাষায় বিভ্রান্তি পর্যবেক্ষণ এবং মোকাবেলার জন্য তাদের সমস্ত সংস্থানগুলোকে বরাদ্দ করা”- কোন আফ্রিকান ভাষায় ?  কটি দেশের নিজস্ব অ্যালফাবেট আছে?

    আশা করি আরও বিস্তারিত লিখবেন ।
  • হীরেন সিংহরায় | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:০৪538793
  • একটা লাইন ভুল হয়ে গেছে 
    লিখেছি 
     
    সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন অবধি যে লাল নীলের ঠাণ্ডা লড়াই চলে সেখানে কিউবান সৈন্যদের দেখা গেছে বামপন্থী অ্যাঙ্গোলার অয়েল প্লাটফর্ম  রক্ষা করতে।
     
    সেটা হবে 
     
    সেখানে কিউবান সৈন্যদের দেখা গেছে বামপন্থী অ্যাঙ্গোলায় আমেরিকান  অয়েল প্লাটফর্ম  রক্ষা করতে।
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৪০538825
  • @Anirban M,আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ,হ্যাঁ, এখনকার কথা বলা উচিত ছিল, আবার লিখব তা নিয়ে   
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৪৭538827
  • @. সীমারেখার ব্যাপারটা দারুণ লাগল, অনেক ধন্যবাদ
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২১:১২538828
  • @Guruআপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ |  
    আপনার জন্য একটা প্রশ্ন রইল: আচ্ছা "মার্কিন অস্ত্র লবি" কি পুতিনকে ইউক্রেন আক্রমণ করতে ইন্ধন জুগিয়েছিল? নাকি হামাসকে ১,৪০০ ইসরায়েলি হত্যার পরামর্শ আগেই  দিয়েছিল আমেরিকা ? আমেরিকা তার মিত্রদের আপৎকালীন সাহায্য করতে অঙ্গীকারবদ্ধ | 
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৩০538830
  • @হীরেন সিংহরায়:আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ | সাহারা মরুভূমির নীচে এবং উত্তর-মধ্য আফ্রিকার সাভানার উপরে রয়েছে সাহেল | সেনেগাল, গাম্বিয়া, মৌরিতানিয়া, গিনি, মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার, চাদ, ক্যামেরুন এবং নাইজেরিয়া-এগুলি সাহেলের অন্তর্ভুক্ত |  
  • Pad Gaon | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৪৮538832
  • আমার প্রশ্ন ছিল সাহেল কথাটা নিয়ে। কেন সাহেল বা তটভূমি? সেটা জানলে বিবাদের সূত্র হয়তো পাওয়া যেতে পারে।
     
    আপনার নিবন্ধের বিষয় কি সাব সাহারান আফ্রিকা না গোটা আফ্রিকা? সেটা যদি ব্যক্ত করেন।
     
    কঙ্গোর খনিজ পদার্থের ওপর কাদের নিয়নতরন কয়েক দশক ধরে মানবিক অধিকার লঙ্ঘনের কারণ হয়ে দাঁডিয়েছে সেটা যদি বলেন।
     
    কোন আফ্রিকান ভাষায় বিভ্রান্তি পর্যবেক্ষণের কথা বলা হচ্ছে? কোন কোন দেশের নিজস্ব বর্ন মালা আছে ? 
     
    পল কাগামে কি হুটু বনাম টুটসির গৃহ যুদ্ধের সমাধানের নাম? 
     
    বিস্তারিত লিখবেন আশা করছি 
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৫৪538833
  • @Anirban Mসুদানে দারফুর দ্বন্দ্ব (২০০৩-বর্তমান), আল-শাবাবকে বিতাড়নের জন্য ২০১০-২০১১ সালে যে সোমালি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তাও ক্ষান্তি পায়নি | এ দুটি চলমান সংঘর্ষের উল্লেখ রয়েছে লেখাতে | 
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২২:২৭538834
  • @Anirban Mসুদানে দারফুর দ্বন্দ্ব (২০০৩-বর্তমান), আল-শাবাবকে বিতাড়নের জন্য ২০১০-২০১১ সালে যে সোমালি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তাও ক্ষান্তি পায়নি; ঠিক তেমনই ২০১০ সাল থেকে বোকো হারামের বিরুদ্ধে নাইজেরিয়া সরকারের যুদ্ধ চলেই চলেছে  | এ দুটি চলমান সংঘর্ষের উল্লেখ রয়েছে লেখাতে | মালি, বুর্কিনা ফাসো এবং নাইজারের মধ্য সাহেলিয়ান রাজ্যের  জিহাদি বিদ্রোহ এই অঞ্চলের সংঘাতের পিছনে একটা চালিকা শক্তি হিসাবে রয়েছে । ইসলামিক স্টেট ইন দ্য গ্রেটার সাহারা (আইএসজিএস) এবং জামাত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) দুটি গ্রুপ এই অঞ্চলে সহিংসতাকে তীব্র করেছে। এই স্বল্প পরিসরে সব কিছু বিস্তারিত লেখা হয়নি, কিন্তু এগুলোর উল্লেখ করেছি    এই লেখাতে |
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:৩২538837
  • @Pad Gaonআপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ  |
    দেখুন ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় যে গণহত্যা সংঘটিত হয় তাতে টুটসিদের সাথে সাথে অনেক হুতুও নিহত হয়েছিল, কিন্তু গত দশ বছর ধরে রুয়ান্ডাতে টুটসিদেরকেই একমাত্র  দেশের গণহত্যার শিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যার মানে দাঁড়ায় হুতুরা ছিল হয় দোষী সাক্ষী নতুবা অপরাধী | বিস্ময় জাগে এর আসল কারণটা ঠিক কি: কাগামে নিজেই একজন ভুক্তভোগী টুটসি শরণার্থী ছিলেন, তাই? এ কথা অনস্বীকার্য যে কাগামের শাসনকালে রুয়ান্ডার আর্থিক অবস্থার ক্রমোন্নতি হয়েছে, রুয়ান্ডা একটা পরিচ্ছন্ন, আধুনিক দেশে পরিণত হয়েছে । কিন্তু সুযোগসুবিধা সকলের কাছে পৌঁছায়নি | দেখেশুনে মনে হয় যে টুটসি জনগোষ্ঠীর জন্যই তিনি মূলত রুয়ান্ডার মাটি তৈরী করছেন, আর কারুর জন্য তাঁর তেমন মাথাব্যথা নেই |
  • হীরেন সিংহরায় | ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:৩৮538838
  • তাহলে আপনার কি মনে হয়  পনেরো শতাংশ মানুষের ( টুটসি ) প্রতিনিধি কাগামে পরবর্তী গৃহযুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন ? হুটুরা  সংখ্যায় বহু গুণ বেশি! 
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৫৩538849
  • @হীরেন সিংহরায়রুয়ান্ডাতে না হলেও , পূর্ব ডিআরসিতে তো বটেই, আজকে সেখানে যে M23 উত্তেজনা চলেছে  তাঁর কেন্দ্রে তো রয়েছে রুয়ান্ডার সমর্থন প্রাপ্ত জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহী কঙ্গোলিজ টুটসি সম্প্রদায় । M23 বিদ্রোহীদের প্রতি রুয়ান্ডার সামরিক সমর্থন এতটাই নির্লজ্জ হয়ে উঠেছে যে কাগামে অবধি সেটাকে আর বিশেষ রাখঢাক করার চেষ্টা করছেন না । 
  • Pad Gaon | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:২৫538851
  • আমার প্রশ্নটা রুয়ানডা দেশটাকে নিয়ে। কিগালিতে ব্যবসা বানিজ্য বাড়ছে - সকাল বেলা দরখাস্ত করলে দেখেছি বিকেল নাগাদ সরকারি অনুমোদন মেলে। কিন্তু সবটাই টুটসি রাজ। জনসংখ্যার ৮৫% হুটু কি মেনে চলবে তাদের? সেখানে কি পুনরায় গৃহ যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখেন ?
     
    আমার অন্য প্রশ্ন গুলোর উত্তর কি পরের পর্বে দেবেন? 
     

    আপনার নিবন্ধের বিষয় কি সাব সাহারান আফ্রিকা না গোটা আফ্রিকা? সেটা যদি ব্যক্ত করেন।
     
    কঙ্গোর খনিজ পদার্থের ওপর কাদের নিয়নতরন কয়েক দশক ধরে মানবিক অধিকার লঙ্ঘনের কারণ হয়ে দাঁডিয়েছে সেটা যদি বলেন।
     
    কোন আফ্রিকান ভাষায় বিভ্রান্তি পর্যবেক্ষণের কথা বলা হচ্ছে? কোন কোন দেশের নিজস্ব বর্ন মালা আছে ? 
  • Nupur Raychaudhuri | 204.25.***.*** | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৪০538852
  • @Pad Gaoউত্তর আফ্রিকা বাদে আফ্রিকা মহাদেশের বাকিটা সাব-সাহারান আফ্রিকা হিসাবে বিবেচিত হয় । সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের অঞ্চল হলো সাব-সাহারান | আফ্রিকার বাকি অংশের তুলনায় সাব-সাহারান আফ্রিকাতে বেশি যুদ্ধের প্রকোপ দেখা গিয়েছে | কারণ অস্বচ্ছ ঔপনিবেশিক সীমানা, দুর্লভ প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে প্রতিযোগিতা, ব্যাপক দারিদ্র্য, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ইত্যাদি | 
  • Pad Gaon | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:২৫538858
  • তাহলে তো নিবন্ধের নাম হয় সাব সাহারান আফ্রিকা বা সাহারা নিম্ন বরতী আফ্রিকার গৃহ যুদ্ধের চাল চলন? গোটা আফ্রিকাকে বিশেষ করে মাঘরেবকেও  একই তুলিতে আঁকা কি ঠিক? সেখানে অবশ্যই স্পেন / মরক্কো উত্তেজনা লেগে আছে । আপনার কথামত অস্বচ্ছ ঔপনিবেশিক সীমানা দুর্লভ প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে বিবাদ  সেখানেও দেখা যায়। আলজেরিয়া লিবিয়াতেও কি বিবাদ নেই?  মরক্কোর ভেতরে সেখানে স্পেনের পতাকা ওডে কেন? এগুলি কি আপনারা হিসেবে গৃহ যুদ্ধের তালিকায় পডে না ? 
  • Nupur Raychaudhuri | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২১538862
  • @Pad Gaon আমি গোটা আফ্রিকাকেই ছুঁতে চেয়েছি শুধু সাব -সাহারানকে নয়।হ্যাঁ, অনেক আরো বিষয় আছে।
    আমি জানিনা রুয়ান্ডাতে গৃহযুদ্ধ হবে কি না, আমাকে আরও অনেক পড়াশুনা করতে হবে, তবে বৈষম্য থেকেই তো প্রতিবাদ জাগে, সুতরাং সেটা একটা কারণ তো রয়েইছে। আপনার কথা শুনে মনে হয় আপনি এ বিষয়ে আমাদের আরও কিছু তথ্য দিয়ে সমৃদ্ধ করতে পারেন| জানাবেন প্লিজ।

    কঙ্গোর খনিজ পদার্থের ওপর নিয়ন্ত্রণে পাশ্চাত্য দেশগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে। সেখানকার তাবড় তাবড় ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানিগুলো প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, কিন্ত আমরা যারা সেইসব ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য উপভোগ করছি, তারাও কি দায়ভার সম্পূর্ণ এড়াতে পারি?

    আমি নির্দিষ্ট কোনো আফ্রিকান ভাষার কথা বলতে চাইনি, বলতে চেয়েছি যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর ফ্যাক্ট-চেকিং রিসোর্সগুলো নর্থ আমেরিকা আর ইয়োরোপের খবরের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়, আফ্রিকান আঞ্চলিক ভাষায় ভুল তথ্য প্রকাশিত হলেও সেগুলোর দিকে তেমন নজর দেয় না। অথচ ভুয়া খবর যে আফ্রিকায় জাতিগত উত্তেজনা বাড়িয়ে দিচ্ছে সে কথা ফ্যাক্ট-চেকাররা স্বীকার করেন।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:8de3:6525:1562:***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৪৯538863
  • আচ্ছা নূপুর রায়চৌধুরী ব্যাক্তিটি কে? এই নামে কি সত্যি কেউ আছেন, আর প্রোফাইলে যে ছবিটা আছে সেটা কি তাঁরই ছবি? তাঁর অনুমতিতে নেওয়া? 
     
    তার কারন এই টই যে নূপুর চৌধুরি খুলেছেন তাঁর প্রোফাইলে দেখতে পাচ্ছি তিনি তিনটে লেখা দিয়েছেন। আর ওপরে যে কমেন্টগুলো লেখা হচ্ছে (উদাহরন Nupur Raychaudhuri | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২১), সেই নূপুর চৌধুরির প্রোফাইলে দেখতে পাচ্ছি তিনি কোন লেখা দেননি। 
     
    নূপুর চৌধুরির অন্য লেখাগুলোতেও একই ব্যাপার হয়েছে। টই যিনি খুলেছেন তাঁর লেখার স্টাইল একরকম, আর কমেন্টগুলোর লেখার স্টাইল দেবাঞ্জনের, যিনি গুরু নিকে লেখেন। 
     
    এটা কি ধরনের সক পাপেটিং? নাকি আইডেন্টিটি থেফট হচ্ছে? গুরুর টেক টিম একটু দেখলে ভালো হয়। 
  • Guruchandali | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ২১:১৭538868
  • এই লেখাটি টই, খেরো বা হরিদাস পাল নয়, গুরুচণ্ডা৯ -র সম্পাদিত বিভাগ বুলবুলভাজার অন্তর্গত। এনার অন্যান্য আরো কিছু লেখাও আগে বুলবুলভাজা বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে। ধন্যবাদ। আলোচনা চলুক।
  • r2h | 192.139.***.*** | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ২১:২০538869
  • ডিসি, নিক, নিজে লগিন করে, লগিন না করে, আর সম্পাদিত বিভাগের লেখক আলাদা দেখায়; এমনকি অনেক লেখক গুগল আর ফেবু দিয়ে আলাদা লগিন করেন - তাঁদের আইডিও; চোখে পড়লে বা অনুরোধ করলে সেগুলি মার্জ করে দেওয়া হয়, কিন্তু ঐটা হয়।
    এখানে যেমন, হীরেনবাবুরও দুটো আইডি দেখাচ্ছে।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:8de3:6525:1562:***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ২১:২৯538870
  • আচ্ছা। দুজনকেই ধন্যবাদ। কিন্তু টই এর মূল লেখা আর কমেন্ট এর লেখার স্টাইল এতো আলাদা যে বেশ অবাক হলাম। 
  • Hihi | 2001:67c:2628:647:6::***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ২২:০৭538872
  • আবার সেই গোয়েন্দা সাজার ঝোঁক! আরে ভাই, তোদের দ্বারা হবে না। একটা এয়াই মডেল লাগা লেখার প্যাটার্ন থেকে ইউজার নেম প্রেডিক্ট করবে। নইলে এই গাম্বাট ডিসির মত গুরুর স্টাইলে লেখা দেখেই 'গুরু' সন্দেহ করবে।
  • dc | 223.185.***.*** | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ২২:২২538874
  • হুঁ তাই দেখছি laugh
  • Pad Gaon | ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:২৫538875
  • আমার দ্বৈত পরিচিতি একান্ত অবাঞ্ছিত । সাফারিতে পিতৃ দত্ত নামে ঢুকতে অসুবিধে হবার ফলে অন্য ইমেল আই ডি দিয়ে গুগল করোম দিয়ে দেখা দিতে হচ্ছে!
  • হীরেন সিংহরায় | ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৫৮538885
  • @nupur
    কর্ম সূত্রে ও  ব্যক্তিগত কারণে ( জাম্বিয়াতে ) আমার আফ্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয়  তিন দশকের  মতন। । চার বছর আগে প্রকাশিত  ‘আমার আফ্রিকা’ বইতে সাতাশটি দেশের কাহিনী লিখেছি। ‘বদলে যাচ্ছে কি আফ্রিকার গৃহ উদ্ধের চাল চলন ?’ পড়ে আপনার অবস্থানটি বোঝার চেষ্টা করছি তাই এতো প্রশ্ন তুলি ! আপনার ক্যানভাস বিশাল সেখানে অতীত আলোচনার কিছু স্থান থাকা দরকার যেমন লাইবেরিয়ার গৃহ যুদ্ধের পেছনে মূলত ছিল আমেরিকান মুক্তি প্রাপ্ত দাস বনাম আফ্রিকানদের লড়াই , অ্যাঙ্গোলার স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং তৎ  পরবর্তী গৃহ যুদ্ধে তিন নায়ক , সেখানে কোন ধর্মের সংঘাত ছিল না  আমি বারবার সাহেল কথাটির ওপরে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছি সাহেল আরবি শব্দ, উর্দুতে আমরা সাহিল চিনি -সাহিল মানে জলের কিনারা সাহারায় জল নেই, সেখানে সাহেল হল মরুভূমির কিনারা যেখানে আরব ব্যবসায়ী উটের পিঠে চড়ে বাণিজ্যে আসেন নিজের নদী যেখানে সেই প্রকাণ্ড বাঁক নিচ্ছে , সেই মালিতে আছে আফ্রিকার প্রাচীনতম বিশ্ব বিদ্যালয় । সাহেল রাজ্য গুলির রাজনৈতিক অবস্থান বুঝতে গেলে সাহেলের ইতিহাস বর্ণনার প্রয়োজন আছে ।

    বার্লিন দেওয়ালের মতন  সোভিয়েত বাম ও আমেরিকান  দক্ষিণ মুখোমুখি হয়েছে কঙ্গো নদীর দু পারে। মোজাম্বিকে দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম  সোভিয়েত ইউনিয়নের খেলা চলেছে । ডি আর সি বিষয়ে আপনি বলেছেন ‘কঙ্গোর খনিজ পদার্থের ওপর নিয়ন্ত্রণে পাশ্চাত্য দেশগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে। সেখানকার তাবড় তাবড় ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানিগুলো প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, কিন্ত আমরা যারা সেইসব ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য উপভোগ করছি, তারাও কি দায়ভার সম্পূর্ণ এড়াতে পারি?’ আমার প্রশ্ন সম্পূর্ণ আলাদা- সেখানে যে মানবিক অধিকার লঙ্ঘনের কথা বলছেন সেটা তো সারা আফ্রিকায় হয়েছে ।  বেলজিয়ানরা সেই অধিকার লঙ্ঘন করেছে বহু বছর যাবত। এখন সেটা কি কঙ্গোর কি গৃহ যুদ্ধে রসদ যোগাচ্ছে ?

    আফ্রিকায় অজস্র ভাষা কিন্তু আমহারিক ( ইথিওপিয়া , যেটা খানিক আর্মেনিয়ানের মতো !) তিফানিগ এবং খানিক নাইজেরিয়া বাদে আফ্রিকার কোন আলফাবেট নেই। কেনিয়া উগান্ডা তানজানিয়া মোটামুটি একই ভাষায় (সোয়াহিলি ) কথা বলে কিন্তু সেটা ইংরেজি বর্ণমালায় লেখা। হাটুরে মানুষ পড়তে পারেন না  কিন্তু সেখানকার বা নাইজেরিয়ান হোয়াটসঅ্যাপ প্রভুত প্রচলিত। । প্যান  আফ্রিকান ভাষা মাত্র তিনটে -ইংরেজি ফরাসি পর্তুগিজ।  তাই ‘আফ্রিকান’  ভাষার প্রশ্ন তুলেছিলাম।

    ইদি আমিনের সূত্র না ধরলে মুসেভেনির প্রসঙ্গ বোঝা  হয়ত শক্ত ।

    আরও লিখুন। অতীতের রেফারেন্স দেওয়া কিন্তু আবশ্যক ।

    আর নয়। অলমিতি বিস্তরেন ।
     
  • Pad Gaon | ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:০৭538890
  • @nupur সন তারিখের হিসেবে আরেকটা বিষয় যদি স্পষ্ট করে দেন- আপনি লিখছেন ১৯৪৫ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে আফ্রিকান দেশগুলি  ঔপনিবেশিক শক্তির কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে । যতদূর জানি ১৯৫৭ সালে ঘানার স্বাধীনতা আফ্রিকার মুক্তির প্রথম মাইল ফলক। ১৯৬০ সালে অনেক ফরাসি এবং সবচেয়ে বডো কলঙ্ক কঙ্গোর স্বাধীনতা । কিন্তু কেনিয়া  ১৯৬৩. উগানডা ১৯৬২, তানজানিয়া ১৯৬১, জামবিয়া ১৯৬৪, পর্তুগিজ এ্যাংগোলা, কাপ ভারদ , সাঁও তোমে ১৯৭৫ মোজামবিক ১৯৬৮, মালাউই ১৯৬৪ বটসোয়ানা ১৯৬৬ ইত্যাদি। এগুলো যদি একটু দেখে নেন
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন