যারা আমার লেখা পড়ছেন তারা শুধু আমার লেখাই পড়ছেন এমন নিশ্চয়ই না। বাংলাদেশ সম্পর্কে আগ্রহ থাকলে আমাদের দেশের প্রথম সারির পত্রিকা, ফেসবুক পেজ, গ্রুপ, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ইত্যাদির দিকেও নিশ্চয়ই নজর রাখছেন। যদি রেখে থাকেন তাহলে এইটা এতদিনে জেনে গেছেন কী অবিশ্বাস্য গতিতে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী সমস্ত জায়গায় দখল নিয়ে নিচ্ছে। ঢাকার বা দেশেরই বলা চলে, প্রধান কলেজ গুলোর মধ্যে নটরডেম কলেজ হচ্ছে অন্যতম। তারা এখন পর্যন্ত তাদের লেখাপড়ার মান ধরে রেখেছে এমন করে যে বুয়েটে সুযোগ পাওয়াদের মধ্যে ৭০/৮০% ছাত্রই দেখা যায় নটরডেমের। সেই নটরডেমের ছাত্ররা খেলাফত চেয়ে মিছিল করেছে ঢাকার বুকে! এখন এক বাটি পানিতে নাক মুখ ডুবিয়ে মরে যাব না আনোয়ার হোসেনের মতো বুক ধরে বসে মরে যাব জানি না। তবে মরেই যাওয়া উচিত আমাদের। এইদিন দেখার আগে মরে যাওয়াও ভালো ছিল। খেলাফত কাকে বলে, খায় না মাথায় দেয় তাও যারা জানে না তারা মিছিল করছে আইএসের মতো কালো পতাকায় কলেমা লিখে! স্পষ্ট বুঝাই যাচ্ছে তাদেরকে দিয়ে এগুলা কেউ করিয়ে নিচ্ছে। কলেজের পুলাপান, হয়ত একবেলা নীলক্ষেতের তেহেরি খাওয়ায় দিছে, কিংবা সুলতানের বিরিয়ানি! জানি না। তবে এমন হলেও আমি আশ্চর্য হব না। খেলাফত কায়েম করার আগেই ঢাকায় যে পরিমাণ নারীরা হেনস্তার শিকার হচ্ছে তাতে খেলাফতের মধু যে কে খাবে আর কে মাখবে তা বুঝায় যায়।
আওয়ামীলীগ সরকারের পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন জরুরি! তাই পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় কমিটি করা হইছিল। ১৫১ আলেম এক বিবৃতি দিয়েছেন, তারা এই কমিটি বাতিল চান। কেন? বিবৃতিতে বলেছেন, "বিগত সরকার পাঠ্যপুস্তককে ঈমান হরণের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছিল। আমরা আশা করেছিলাম, পাঠ্যপুস্তকের পাতায় পাতায় অনু্প্রবেশ করা নগ্ন পশ্চিমা অপসংস্কৃতি এবার পুরোপুরি মুক্ত হবে। কিন্তু গভীর হতাশার সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করলাম, নতুন বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় কমিটিতেও পশ্চিমা সেই বস্তাপঁচা সংস্কৃতির ধারক ও বাহকেরা জেঁকে বসেছেন। সমন্বয় কমিটিতে বাম, সেক্যুলার, ইসলামবিদ্বেষী ও সমকামী সমর্থকরা থাকলেও ছিলেন না দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি।"
হুজুরদেরকে কমিটিতে রাখা হয় নাই দেখে কমিটিই বাতিল। হুজুররা কমিটিতে থাকলে কী করত? ওই শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কই যাব আমরা? কোন পাতে দিব সেই সার্টিফিকেট? বিজ্ঞানের নামে কী পড়বে? হুজুরেরা বিবৃতিতে বলছে ইসলাম বিরোধী কিছু পাঠক্রমে রাখা যাবে না। মানে তাহলে কেউ ভিন্ন ধর্মের ব্যাপারে কিছু জানবে না? কেউ বিজ্ঞান পড়বে না? সবচেয়ে ভালো হয় সব বাতিল করে কোরান শরীফ পড়ান ভালো করে। সব তো কোরানেই আছে! একের ভিতর অনেক। আর নিতে পারি না এই ফাইজলামি গুলো। কোরান নিজে বলছে যে কোরানেই সব আছে? বাকি সব বাদ? ভণ্ডের দল।
শীত আসতেছে, আল্লার বান্দারা সব দেশে এসে হাজির হচ্ছে ধীরে ধীরে। ওয়াজের সিজন শুরু হচ্ছে যে! দুই তিন মাস কোটি কোটি টাকা কামাই করবে, এরপরে আবার চলে যাবে মালয়শিয়া, দুবাই। আর আঙ্গুল চোষা বাঙালি বাচ্চা পয়দা করবে, আরেকজন কী পরল, হাঁটলে কেমন দেখা গেল তা নিয়ে বিচার বসাবে। আর পরের শীতের জন্য অপেক্ষা করবে। আবার আসবে হুজুর, নবী কত কষ্ট করে জীবন যাপন করেছে এই গল্প শুনিয়ে হেলিকপ্টারে আসবে যাবে, লক্ষ টাকা নিবে দুই ঘণ্টার জন্য। এবার আরও জমবে। আওয়ামীলীগ এদেরকে দৌড়ের উপরে রাখত। সত্য মিথ্যা মিলিয়ে বানিয়ে বানিয়ে নানান কিচ্ছা শোনাবে বিগত সরকারের নামে। ভণ্ড প্রো ম্যাক্স সব গুলা, অথচ কেউ এবার বলবেও না কিছু। আরে এরা ওয়াজ করে, ধর্মের বানী শোনানর জন্য এদেরকে ভাড়া করে আনে মানুষ। মাদ্রাসার এতিম বাচ্চাদেরকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে চাঁদা তুলে এই পেট মোটা বক্তাদের ভাড়া দেওয়া জন্য। মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য করে এই শিশু বাচ্চাদেরকে। ভিক্ষার মতো করে তুলে আনা এই টাকা দেওয়া হয় ওই সব হুজুরদের যারা অনবরত মিথ্যা কথা বলে যায়। খুব নাম ডাক, হেলিকপ্টারে করে এক ওয়াজ থেকে আরেক ওয়াজে যায়, এমন বক্তার কথাই বলছি। চোখের পাতা কাঁপে না এদের মিথ্যা বলতে। নীল আমস্ট্রং চাঁদে গিয়ে দেখল চাঁদ এ মাথা থেকে ও মাথায় একটা ফাটল, শুনল এমন সংগীত যা সে পৃথিবীতে শুনে নাই কোনদিন। পরে পৃথিবীতে ফিরে জানতে পারে ওই ফাটল নবীর আঙ্গুলের ইশারায় চাঁদ দুই ভাগ হয়েছিল সেই নিশানা! একদিন শুনল চাঁদে যে সংগীত শুনে আসছে সেই সংগীত, কই? মসজিদে! ওইটা আসলে আজান ছিল। এই যে মিথ্যাচার, কে ধরবে ওকে? যে কেউ ইচ্ছা করলেই এগুলা শুনতে পারবেন, এই লোককে সরকার দেশ ছাড়া করছিল। কারণ জঙ্গিবাদের সমর্থন দেওয়া। আমি এক জায়গায় শুনছি তিনি বলছেন ওই যে পাশেই রয়েছেন কোরানের পাখি, আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদি! উনার কথা সাইদি শুনতে পাচ্ছে এইটাই না কি তার বড় পাওয়া। তিনি কাসেমপুর জেলের কাছে কোথাও ওয়াজ করছিলেন, আর সাইদি তখন জেলে। ওই ওয়াজেই এগুলা বলছিলেন। এমন ভণ্ডকে টাকা দিয়ে নিয়ে আসে, মাহফিলে জায়গা দেওয়া যায় না!
দুইদিন আগে আমার শহরে হুজুরদের বিশাল সমাবেশ। ইদানীং এইটা বেশিই হচ্ছে। কোথায় কে জানি নবীর নামে কী বলছে তা নিয়েই এই প্রতিবাদ সভা। এক বক্তার কথা শুনতে শুনতে বাড়ি ফিরছিলাম। তিনি সোজা বলে দিলেন জিজিয়া কর দিয়ে থাকতে হবে এই দেশে! আমি হাসলাম! জিজিয়া কর দিয়ে স্বাধীন দেশে কাওকে যদি থাকতে হয় তাহলে হইল কাম! আর জিজিয়া কর যে নেয় তার তো দায়িত্বও নিতে হয়, নিবে দায়িত্ব? এগুলা ভাবতে ভাবতেই মনে হল ৫ আগস্টের পরে কিন্তু জিজিয়া কর দিয়েই বেঁচে ছিল এই দেশের অনেক হিন্দু পরিবার। চাঁদা দিয়েই টিকে গেছে অনেকেই। যদিও এই চাঁদা শুধু হিন্দুরাই দিছে এমন না, সাতে পাঁচে নাই এমন অনেককেই দিতে হয়েছে এই চাঁদা।
সব কিছু এত দ্রুত হচ্ছে যে মাথা কাজ করে না মাঝে মধ্যেই। হুট করেই গরম থেকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় যেতে হয় না, গোসল করতে হয় না, এতে শরীর অসুস্থ হতে পারে। আমরা যেন তাই করছি। হুট করেই ইসলামিক রিপাবলিক অফ বাংলাদেশ হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। এমনই অবস্থা যে মনে হচ্ছে আচ্ছা, আওয়ামীলীগ তো এখন আর আসা সম্ভব না, অন্তত বিএনপিই আসুক। তবু এমন, এই ধরণের ভণ্ডামির মাত্রা হয়ত কিছু কমবে। জানি ওইখানেও মুক্তি নাই। চোরাবালি থেকে উদ্ধারের কোন পথই আসলে নাই।
মাহফুজ আলমের একটা সাক্ষাৎকারের কথা বলাই হয় নাই। প্রথম আলোতে তিনি দীর্ঘ সাক্ষাতকার দিয়েছেন। কীভাবে কত বছর আগে থেকে সব শুরু, পরিকল্পনা সব কিছু সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন। এ ছাড়াও তিনি সুন্দর সুন্দর কথা বলেছেন অনেক গুলা। এবং আমার মূল চিন্তা যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ তাই আমি সব বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তার ধরনা দিয়েই তাকে মাপতে গেলাম। কথার প্যাচ ধরতে পারলে দেখা যায় তিনি সুন্দর করে মুক্তিযুদ্ধের এক নতুন তত্ত্ব এনে হাজির করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে পাকিস্তানের ইসলাম থেকে এই মুল্লুকের ইসলামকে আলাদা করার জন্য! উদ্ধৃতি দিচ্ছে প্রথম আলোর সাক্ষাতকার থেকে, - "১৯৭১ হয়েছিল বাঙালি মুসলমান সম্প্রদায়ের দুটি বোঝাপড়া থেকে। ১৯৪৭ সালের আগপর্যন্ত ইসলামের সঙ্গে তার যে বোঝাপড়া ছিল, সেটা বদলে গিয়েছিল। তারা বুঝতে শুরু করল, বাংলার ইসলাম পাকিস্তানের ইসলামের সঙ্গে যায় না, এমনকি উত্তর ভারতের ইসলামের সঙ্গেও নয়। ফলে তারা পাকিস্তানি ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড়াল।"
মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে আমার লিটমাস পেপার। তুমি কোন ক্ষেতের মুলা তা এই পরীক্ষাই সহজে ধরা যায়। ব্রাত্য রাইসুরে এমনে আমি খুব একটা পছন্দ করি না। কিন্তু এই সাক্ষাতকার প্রসঙ্গে তাঁর একটা ফেসবুক পোস্ট এখানে শেয়ার না করে পারছি না। ওইটা আমারও বক্তব্য বলেই শেয়ার করছি, তিনি লিখেছেন, - "মুক্তিযুদ্ধ মানে হচ্ছে পাকিস্তানি ইসলামের বিরোধিতার যুদ্ধ, এইরকম যারা বলতেছেন তারা ভয়ঙ্কর কথা বলতেছেন।
এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধরে ধর্মীয় সিলসিলা রক্ষার যুদ্ধ হিসাবে সীমিত করার ষড়যন্ত্র আছে। অবশ্য ইসলামি দলগুলি যদি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে চায় তবে মুক্তিযুদ্ধরে ধর্মের যুদ্ধ হিসাবে দেখানোটা অত্যন্ত কাজে লাগার মত বিষয় হবে। মুক্তিযুদ্ধ ধর্মের যুদ্ধ ছিল না। কোনো অর্থেই ছিল না।"
আচ্ছা, ব্রাত্য রাইসুর এই পোস্ট থেকে আমি আমার লেখার একটা প্রসঙ্গ টেনে নেই। ইসলামিক দল গুলো রাষ্ট্র ক্ষমতা যদি নিতে চায় তাহলে এই বয়ান তাদেরকে সাহায্য করবে। ইসলামিক দল কারা? মূলত জামাত সাথে আছে আরও কিছু ছোটখাটো দল।
এবার একটু পিছনে যাই। বেশি না, অল্প। ২০১১ সালে যখন আওয়ামীলীগ রাজাকারদের ধরা শুরু করল তখন জেল থেকে জামাত ইসলামির সিনিয়র সেক্রেটারি জেনারেল কামরুজ্জামানের একটা চিঠি প্রকাশ পায়। এই লোককে বলা হয় জামাতের থিং ট্যাংক। তিনি খুব গুছিয়ে সামনে কী হবে, সরকার তাদেরকে নিয়ে কী করতে পারে, জামাতের ইতিহাস ইত্যাদি তুলে ধরেন। আমি এখন দেখি তিনি যা অনুমান করেছিলেন তার সবই সত্য হয়েছে। তো তিনি কী হবের পাশাপাশি কী করা দরকার তাও বলেছিলেন। তিনি তিনটা রাস্তার কথা বলেন। এক হচ্ছে যেমন আছে তেমনই চলুক। দুই হচ্ছে এই দল এমনই থাকুক, এর পাশাপাশি নতুন একটা দল তৈরি করে তাকে আস্তে আস্তে জনপ্রিয় করা, সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ওই দলের যুদ্ধাপরাধীর তকমা থাকবে না, তারা ফ্রেস স্টার্ট করে এগিয়ে যাবে। তৃতীয় উপায় বলেছিলেন বর্তমান দল থেকে যাদের নামে মামলা হইছে, সরকার ধরেছে যাদেরকে তারা সবাই দল থেকে পদত্যাগ করবে, নিজেদের মামলা নিজেরা লড়বে। দল দায় মুক্ত থাকবে। তিনি নিজে দ্বিতীয় পন্থাকেই সঠিক বলে মনে করেছেন। তিনি সেই দীর্ঘ চিঠিতে নতুন দলকে কী কী করতে হবে, কেমন হবে তাদের কার্যক্রম সব বিস্তারিত লিখেছিলেন।
এর জবাবে মতিউর রহমান নিজামির স্ত্রী একটা চিঠি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন জামাত ইসলামি শুধু মাত্র একটা দল না। এইটা একটা ইসলামিক আন্দোলন। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কত নবী রাসুল কত অত্যাচার সহ্য করেছেন, তারা কি তাই বলে নিজেদেরকে এমন করে বাঁচিয়েছেন? তিনি কামরুজ্জামানের প্রথম যে উপায় তাই ঠিক বলতে চেয়েছেন। এখন আমরা জানি, তাই হয়েছে। অন্তত এতদিন তাই সত্য জানতাম আমি।
কিন্তু এখন আমার সন্দেহ হয়। জামাত কি সত্যই কামরুজ্জামানের ফর্মুলাকে ফেলে দিয়েছিল? না আমাদের চোখের সামনেই এমন কোন সংগঠন তৈরি হইছে যাদেরকে আমরা সন্দেহ করি না? আমরা যে বিশাল বড় পরিকল্পনার কথা বলি তা কি ২০১১ সাল থেকেই শুরু হয়েছিল? যার ফল দেখছি এখন? ওইটা একটা দলই হতে হবে এমনও তো না। কয়েকটা হতে পারে। দল না হয়ে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানও হতে পারে। পারে না? তিনি মানে কামরুজ্জামান তার চিঠিতে সব বলে গেছেন। ক্রিকেট ক্লাব বানাতে হবে, হকি ক্লাব, ফুটবল ক্লাব, ভাষা শিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক ভাষা শিক্ষা ইন্সটিটিউট তৈরি করতে হবে, সেখানে ইংলিশ, আরবি, ফ্রেন্স, জার্মান, ম্যান্ডারিন, জাপানি, কোরিয়ান, বাহাসামালয়া ইত্যাদি ভাষা শিক্ষা কোর্স চালু করা হবে। এমন কত প্রতিষ্ঠানই তো আছে, আমরা তাদের সম্পর্কে কতখানি জানি?
এই ধারায় চিন্তা করতাম না। আওয়ামীলীগকে হঠানোর সাথে সাথেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে যে ফুটবল খেলা শুরু হয়েছে তা আসলে অন্য কোন কিছু দিয়ে মিলাতে পারি না। আরেক মাস্টার মাইন্ড বলছে মুক্তিযুদ্ধ বলে দুই পাকিস্তানের ইসলামের বিরোধ! জামাত ছাড়া আর কার এত আগ্রহ দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের নাম নিশানা মিটিয়ে দিতে? ইউনুস সাহেবই হুট করে রিসেট বাটনের কথা বলেন কেন?
এদিকে আরেক কাণ্ড হয়েছে। আমাদের শেরপুরসহ উত্তরবঙ্গের অনেক জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে। কোন অজ্ঞাত কারণে মানুষের কোন চ্যাদভেত নাই। শেরপুরের দুইটা উপজেলা ভেসে গেছে একদম। পাহাড়ি ঢল এসেছে, সেই সাথে টানা প্রবল বৃষ্টি। প্রথম আলোর হিসাবে ১৬৩ টা গ্রাম ভেসে গেছে। যে মানুষ গুলো কয়েকদিন আগে টিএসসিতে লাইন দিয়ে ত্রাণ দিল ফেনি কুমিল্লার জন্য তাদের কারোরই কোন বিকার নাই শেরপুরের বন্যা নিয়ে। আমার কাছে দুইটা কারণ মনে হয়েছে। এক নাম্বার এই বন্যার সাথে ভারত বাধ খুলে দিছে, সব দোষ ভারতের এমন কোন প্রচারণা নাই বা সুযোগ নাই। দুই যারা টিএসসিতে নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছিলেন তারা অবাক হয়ে দেখছে সেই টাকা খরচ করা হয় নাই। অল্প কিছু খরচের পরে তা সমন্বয়কদের ব্যাংক একাউন্টে পরে ছিল! প্রচুর কথা বলার পরে তারা একটা হিসাব দিয়েছে। হিসাব ভালো মন্দ, শুদ্ধ অশুদ্ধ, ঠিক বেঠিক এগুলা পরের আলাপ। প্রথম কথা হচ্ছে ত্রাণের জন্য টাকা খরচ না করে ব্যাংকে কেন? উত্তর নাই। এগুলাও কারণ হয়ত আমরা বানের জলে ভাসার জন্য। সর্বশেষ হচ্ছে একটা উপজেলা থেকে কিছু পানি নামলেও অন্য উপজেলাতে পানি বাড়ছেই। আমার মেজো দুলাভাইয়ের খামার ভেসে গেছে। নানুবাড়ির কাছে পানি এসে গেছে। আগামীকাল কী হবে জানি না।
https://www.facebook.com/share/p/t2DWZvadYc6g6hkh/
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।