এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • বহুগামী

    রিনি গঙ্গোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ২০ অক্টোবর ২০২০ | ১৭৬৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • চোখ খুলে চিত্তর ঘামে ভেজা জবজবে মুখটা দেখেই অনন্তরূপা আবার চোখ বন্ধ করে নিল।চিত্ত তখন তার সমস্ত সত্তা দিয়ে অনন্তরূপার গভীরতা ছুঁতে চাইছে। কিন্তু কিছুতেই যেন সে পারছেনা! বারবার চেষ্টা করেও সেই কাঙ্ক্ষিত তৃপ্তি সে পায় না; আদর দিয়ে শরীর জাগিয়ে তোলা তো দূরের কথা, অনন্তরূপাকে একটি মাংসল জড় পদার্থ ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না চিত্তর।
    বিয়ের পর এক-দু সপ্তাহ ব্যাপারটা এমন ছিল না। কি দুরন্ত আবেগে অনন্তরূপা ধরা দিয়েছিল চিত্তর কাছে। সেই সব মুহূর্তে চিত্তর মনে হতো এই বৌয়ের জন্য সে দুনিয়া জয় করে ফেলতে পারে। তেমন চেষ্টাই শুরু করেছিল চিত্ত। অনন্তরূপার যেন কোথাও কোনো তকলিফ না থাকে সেই মতো কাজ করছিল। আরো বেশি প্যায়সা কিভাবে ইনকাম করা যায় সেই চেষ্টা করতে শুরু করেছিল। অনন্তরূপাকে পার্লার থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার পর চিত্তর কাছে বিয়ের প্রস্তাব অনন্তরূপাই দিয়েছিল।এর জন্য সারাজীবন ওকে শুকরিয়া জানাবে চিত্ত।
    কিন্তু তারপর যে কি হচ্ছে চিত্ত ভালো করে বুঝতে পারে না। অনন্তরূপা সারাদিন কেমন আনমনা হয়ে থাকে। মাজি তো তাই বলে। চিত্ত কাজ সেরে বাড়ি ফিরলে ওর সঙ্গেও ভালো করে কথা বলে না। হরবক্ত উও কুছ সোচতি রহেতি হ্যা। কিন্তু হাজার বার জিজ্ঞেস করেও উত্তর পাওয়া যায় না।বিস্তর মে ভি একদম ঠান্ডা।বরফ কে মাফিক। চিত্ত হাজার কসরৎ করেও ওর মন ফেরাতে পারে না।
    কি হয়েছে তোমার?আমাকে বলো?
    কই কিছু না তো!
    তুম জানতে হো কি কুছ হুয়া হ্যা।
    না, জানি না।
    তোমার আমাকে ভালো লাগে না? প্যায়ার নহি করতি হো মুঝসে!
    ভালোবাসি তো।
    তব! এয়সে কিউ রহতি হো! তোমার কোনো ফিলিং আসে না!
    অনন্তরূপা চুপ করে থাকে।
    ম্যা দিলসে তুমকো চাহতি হু। মেরে মন মে তুমহারে সিবা অউর কুছ নহি হ্যা।
    অনন্তরূপার মনে হয়, মন! মন! তোমার শরীর নেই চিত্ত!
    সবে বছরখানেক হল ওদের বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যেই অনন্তরূপা কেমন হাঁপিয়ে উঠেছে। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে তার একটাই কথা মনে হয়, সেই তো এক জীবন! রান্না করো, ঘরের কাজ করো, আর রাতে... থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়... কোথাও কোনো বৈচিত্র নেই! সবটাই বড় একঘেয়ে! অথচ এমন তো ছিল না তার জীবন! আনন্দ ছিল, নতুনত্ব ছিল; প্রত্যেকবার প্রায় অ্যাডভেঞ্চার করার মতো শিহরিত হতো সে!
    অনন্তরূপার মনে পড়ে যায়, পার্লারে প্রায় দিনই ক্লায়েন্টের চাপ তার একটু বেশিই থাকত। আগে থেকেই এপয়েন্টমেন্ট করে রাখতেন অনেকে। কিন্তু তাই বলে অনন্তরূপা কখনোই তাড়াহুড়ো করত না। প্রত্যেকজন ক্লায়েন্টকে সমান গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যেত। আসলে এ কাজ তাড়াহুড়ো করে করাও তো যায়না। যথাযথ অ্যাম্বিয়েন্স তৈরি করে হাতের এক একটা স্ট্রোকে আরাম জাগিয়ে তুলতে হত ক্লায়েন্টের শরীরে। ক্লায়েন্ট যত উত্তেজিত হবেন ততই ভালো। তারপর যখন সেই উত্তেজনা কে একটি বিন্দুতে সমাপিত করে মুক্তি দেওয়া হত তখনই শরীর আস্তে আস্তে থিতিয়ে যেত। তার আগে অবশ্য চূড়ান্ত অস্থিরতায় ক্লায়েন্টের হাত ঘুরে বেড়াত অনন্তরূপার শরীরের গোপনীয়তায়। তার স্বল্পবাসের মোড়কও কখনো কখনো উন্মুক্ত হয়ে যেত। পার্লারেরে সেই ঝাঁ চকচকে অপরিসর কুঠুরিতে তখন যেন হোম যজ্ঞ সহকারে কাম আর রতির পূজোর উপাচার নিবেদিত হত। পরম তৃপ্ত ক্লায়েন্ট তখন কাঙ্ক্ষিতের চেয়েও আরো কিছুটা বেশি বদান্যতা দেখাত। আর সেখানেই অনন্তরূপার জয়ের উপলব্ধি হতো। সাধে কি তনুরুচি ম্যাডাম তাকে বেশি বেতন দিয়ে রেখেছিল! তার হাতে জাদু ছিল বলেই না!
    একদিন ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলে অনন্তরূপা বুঝেছিল সে অন্যদের থেকে কোথায় বিশেষ!
    এখানে তোর ক্লায়েন্ট বেশি কেন জানিস?
    কেন?
    কারণ তুই কাজটা আনন্দ করে করিস।দেখ, ক্লায়েন্টরা এখানে আসে এনজয়মেন্টের জন্য। সেখানে যদি কেউ মুখ গোমড়া করে মেকানিক্যালি কাজটা করে তাহলে ক্লায়েন্ট কি খুশি হবে!
    ওরা বোধহয় কাজটা পছন্দ করে না ম্যাডাম!
    না,করে না।অসীমা, ধ্রুপদী ওরা মনে করে এই কাজটা মন্দ কাজ। ওদের পেটচালানোর জন্য এই নোংরা কাজটা করতে হচ্ছে।
    কি জানি!
    অনন্তরূপা কখনো তলিয়ে ভেবে দেখেনি কাজটা ভালো না মন্দ।সে শুধু জানত এ কাজের একটা অমোঘ নেশা আছে। একটা অপার্থিব আনন্দ আছে। এক একটা ক্লায়েন্টের কাজ শেষ করে তারও একটা অদ্ভুত আরাম হত। মনে হত আরো আরোও খানিকটা সময় যদি পাওয়া যেত আরো খানিকটা জলে ভেসে থাকা যেত! তাই ক্লায়েন্টের পর ক্লায়েন্ট এলেও তার কখনো ক্লান্ত লাগত না। বরং তাদের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য সে নানাভাবে নিজেকে সাজিয়ে রাখত। ওয়াক্সিং, ফেসিয়াল, ভুঁরুপ্লাক এসব সে নিয়ম করে করিয়ে রাখত।
    চিত্তপ্রসাদ পার্লারে আসত প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিতে। ম্যাডাম হিসেব করত আর চিত্ত আড়চোখে এদিক ওদিক তাকে খুঁজতো।অনন্তরূপার হাসি পেত চিত্তর কান্ড দেখে। ম্যাডামের সামনে তার দিকে তাকানোর সাহসটুকুও নেই। এদিকে ফোন করে সারাক্ষণ একই কথা বলত... আমাকে শাদি কর। আমি তোকে রাজরাণী বানিয়ে রাখবো! এই কাজ তুই ছেড়ে দে!
    অনন্তরূপা খিলখিল করে হাসত ওর কথা শুনে।
    হাসিস না।আমি সচ্চি বলছি। একদিন তোকে এখান থেকে লিয়ে যাবোই।
    সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। যথারীতি অনন্তরূপা ক্লায়েন্ট সামলাচ্ছিল। অসীমা, তাপস,ধ্রুপদী ওরা পার্লারের অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। তনুরুচি ফোনে ব্যস্ত। হঠাৎই চিত্তপ্রসাদ এসে উপস্থিত হয়েছিল। সোজা ঢুকে এসে অনন্তরূপার চেম্বারের দরজা ধাক্কাতে শুরু করেছিল.... খানকি শালী, ইহাপে মজে মার রহে হো! অউর উধর ম্যায়ে কবসে ইন্তেজার মে হু। নজর নহি আতি তেরেকো! রেন্ডি কহিকি!
    তনুরুচির চোখের ইশারায় তাপস চিত্তপ্রসাদকে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিল। ওর কাছে যেতেই তাপস বুঝেছিল চিত্তপ্রসাদ মদ খেয়ে চূড় হয়ে আছে। মুখ দিয়ে তার বাংলা মদের গন্ধ ভকভক করে বেরোচ্ছে। ফলে তাপসের এক ধাক্কাতেই চিত্তপ্রসাদ পড়ে গেছিল।এদিকে ধাক্কাধাক্কির চোটে অনন্তরূপার ক্লায়েন্টও বেরিয়ে এসেছিল...হোয়াট হ্যাপেন হিয়ার? এনি প্রবলেম? হোয়াই দ্য ম্যান ইজ শাউটিং?
    তনুরুচি তাড়াতাড়ি সামলানোর চেষ্টা করছিল...নো নো,নাথিং। উই আর ভেরি মাচ সরি টু ডিস্টার্ব ইউ। প্লিজ গো এহেড। এনজয় ইওর সেল্ফ। ওদিকে চিত্তপ্রসাদ মাটিতে বসেই চিৎকার করছিল...আবে এ বহেনচোৎ...উও মেরি অউরত হ্যা।মেরি হ্যা।ছোড় উসকো..
    তাপস চিত্তপ্রসাদের কলার ধরে টেনে ওকে বাইরে বের করার চেষ্টা করছিল। ক্লায়েন্টও নানারকম কথা চালাচ্ছিল তনুরুচির সঙ্গে।অনন্তরূপা একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল চিত্তপ্রসাদের দিকে। তাপস বাইরে নিয়ে গিয়ে চিত্তপ্রসাদকে প্রচন্ড মারতে শুরু করেছিল।ঘুষির চোটে চিত্তপ্রসাদের নাক ফেটে রক্ত বেরোচ্ছিল। চিত্তপ্রসাদ তবুও থামেনি। অনন্তরূপার দিকে তাকিয়ে কি সব বলেই যাচ্ছিল। কাঁদছিল, চিৎকার করছিল! তাপস ওকে মেরে মেরে নর্দমার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। চিত্তপ্রসাদ আর উঠতে পারছিল না।বারবার ওঠার চেষ্টা করছিল... আর ওর পেটে বুকে লাথি ছুঁড়ছিল তাপস। আশেপাশের চায়ের দোকানের কিছু লোক এসে চিত্তপ্রসাদকে উঠিয়ে সরিয়ে নিয়ে যায়।
    তনুরুচি অনন্তরূপাকে আবার কাজে যেতে বলেছিল। ক্লায়েন্ট কিন্তু সমানে গজগজ করছিল... তার মুডটাই নষ্ট হয়ে গেছিল। সে হাফ পেমেন্ট করে চলে গিয়েছিল। যাওয়ার সময় আরো খানিকটা কথা শুনিয়েছিল তনুরুচিকে...হোয়াই আর ইউ এলাও দিস কাইন্ড অফ পিপল? দে আর নট প্রফেশনাল এনাফ! এরকম হলে তোমার এখানে তো কেউ আসতেই চাইবে না! শহরে আরোও পার্লার, ম্যাসাজ সেন্টার আছে!!
    তনুরুচি খানিকক্ষণ গুম হয়ে থেকে অনন্তরূপাকে ডেকেছিল...তোর সাথে চিত্তর আলাদা করে দেখা হয়? তোদের সম্পর্ক আছে?
    না ম্যাডাম।ও মাঝে মাঝে ফোন করে আমাকে বিয়ের কথা বলে।
    তুই বলেছিস তুই ওকে বিয়ে করবি?
    না ম্যাডাম।আমি কিছুই বলিনি।
    দেখ, তুই বিয়ে করতে চাইলে করতেই পারিস।সেটা নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। কিন্তু এখানে কাজ করতে হলে এসব হাঙ্গামা করা যাবে না।আমার এ অঞ্চলে একটা রেপুটেশন আছে।সেটা আমি এসবের জন্য নষ্ট হতে দিতে পারি না।
    অনন্তরূপা কিছুই বলতে পারেনি সেদিন। চিত্তপ্রসাদ যে এতো বাড়াবাড়ি করবে সেটা তো ও বুঝতেই পারেনি। ও তো ভেবেছিল মজা করে।
    সেদিনটা পার্লারে আর খুব বেশি কেউ আসেনি। ঝামেলা হয়ে তনুরুচির একটা দিনে ভালোই লস হয়েছিল।
    পরদিন থেকে আবারও পুরোদমে চলছিল পার্লার। কিন্তু চিত্তপ্রসাদকে ঠেকানো যায়নি। এক সপ্তাহ বাদে একটু সুস্থ হয়ে সে আবার এসে হানা দিয়েছিল। রীতিমতো লোকলস্কর নিয়ে পার্লারে ভাঙচুর চালিয়েছিল। তনুরুচি তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ সূত্রে পুলিশের বড় কর্তার সঙ্গে কথা বলে এফ.আই.আর করেছিল চিত্তপ্রসাদের নামে। এবং আর ঝামেলা না বাড়িয়ে অনন্তরূপাকে কাজ থেকে ছাঁটাই করে দিয়েছিল। বলেছিল, তোর মতো মেয়ে হাজার একটা পাওয়া যাবে। তোর জন্য এতো ক্ষতি স্বীকার করার কোনো মানেই হয় না।
    অনন্তরূপারও আর কিছুই বলার ছিল না। একদিনের নোটিসে তার কাজ চলে গিয়ে সে বেকার হয়ে পড়েছিল।
    কিন্তু চিত্ত ওর পিছন ছাড়েনি। দশদিন বাদে হাসপাতাল থেকে ফিরেই অনন্তরূপার কাছে উপস্থিত হয়েছিল; তাকে নিজের ভালোবাসার কথা বোঝাবার চেষ্টা করেছিল। অনন্তরূপা বিরক্ত হয়ে সরে যেতে চাইলে ওকে ভয়ও দেখিয়েছিল... কোথায় যাবি তুই? কোথায় যাবি? যেখানেই ওই কামে লাগবি সেখানেই আমি ভি যাবে! তোকে ওই কাম করতে দেবে না! কভিভি নহি!
    দিনের পর দিন ওর হুমকি শুনতে শুনতে ক্লান্ত অনন্তরূপা শেষ পর্যন্ত হার মেনে নিয়েছিল। ওর মাও ওকে বুঝিয়ে ছিল, নিজে থেকে তোকে বিয়ে করতে চাইছে! ওই কাজটা করতে বারণ করছে; তোকে ভালোবাসে; আর কি চাই! ছেড়ে দে ওই নোংরা কাজ তুই!
    অনন্তরূপা আর বিরোধিতা করার সাহস পায়নি। চিত্তকে নিজে থেকেই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল।
    কিন্তু একবছর যেতে না যেতেই তার কাছে সব বিস্বাদ লাগছে!
    পার্লারে যে সমস্ত ক্লায়েন্টরা তার কাছে আসত তাদের শরীর দেখেই অনন্তরূপার ইচ্ছে জেগে উঠত। কারো শরীর সিক্স প্যাকে সুঠাম, কারো আবার রোগা রোগা, কারো মখমলের মতো, কারো সামান্য ভুঁড়ি দেখা দিয়েছে। তাদের ম্যাসাজ করে দিতে দিতেই অনন্তরূপা কেমন গলে যেত। প্রতিদিন প্রতিবার নতুন নতুন শরীরের স্পর্শে তার শরীর আমোদিত হয়ে উঠত।প্রতিবার যেন কৌমার্যের লজ্জা আর তা লঙ্ঘিত হওয়ার সুখ তার শরীর জড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ত।
    চিত্তর সঙ্গে বিয়ের পরও প্রথম প্রথম এমনটাই হতো।শরীর যেন উন্মুক্ত হয়েই শান্তি পেত। কিন্তু তারপর থেকেই কি যে হলো!চোখ খুলে প্রতিবার চিত্তর মুখটা দেখে সে কেমন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরিচিত আদর, পরিচিত শিৎকার আর যেন কিছুতেই টানে না অনন্তরূপা কে। প্রতিবার নতুন শরীর, নতুন বিভঙ্গ, নতুন শিৎকার এসবের জন্য সে উন্মুখ হয়ে থাকে।প্রথম প্রথম চিত্ত বুঝতে পারত না। এখন তো ও প্রশ্ন করতে শুরু করেছে। অনন্তরূপাও অতৃপ্তির জাঁতাকলে কেমন আটকে পড়েছে। বারবার তার ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে হয় পার্লারে। ওই কাজটার মধ্যে যে আনন্দ আছে তা আর কিছুতেই বুঝি নেই।
    সেদিন চিত্ত কাজে বেরিয়ে গেলে অনন্তরূপাও সাজগোজ করে বেরিয়ে পড়ে। তনুরুচির পার্লারে তার জায়গায় এখন অন্য একটা মেয়ে কাজ করে...তুই এখানে?কি মনে করে?
    ম্যাডাম ভালো আছেন?
    সে খবরে তোর কি দরকার! তুই কি ভালো থাকার মতো কাজ করেছিলি?
    আমি কি করেছি ম্যাডাম? চিত্ত ই তো...
    ছেড়ে দে, আর লুকিয়ে কাজ নেই। তুই বলতেই পারতিস তোর সাথে চিত্তর ভালোবাসা হয়েছে। চিত্ত তোর এখানে কাজ করাটা পছন্দ করে না। আমরা নিশ্চই তোকে জোর করে কাজ করাতাম না!
    ম্যাডাম আমি আবার এই কাজটা করতে চাই...
    মানে? চিত্ত জানে?
    অনন্তরূপা মাথা নিচু করে নেয়।
    না রে, আমি আবার তোকে কাজে নেওয়ার রিস্ক নিতে পারব না।
    ও কিছু জানতে পারবে না। আমি লুকিয়ে করব।
    সে আবার হয় না কি! একই বাড়িতে থেকে জানবে না তা হয় কখনো!
    জানতে পারবেনা ম্যাডাম। আমি বলছি।
    পরদিন চিত্ত কাজে বেরিয়ে গেলে অনন্তরূপাও বেরিয়ে পড়ে। পার্লারে গিয়ে আগে সে নিজেকে সাজিয়ে তোলে। প্রায় এক বছর পর সে আবার ফেসিয়াল করে, ওয়াক্সিং করে... বিয়ের পর থেকে তো আর এসব করার প্রয়োজন হয়নি। আজ আয়নায় নিজেকে দেখে তার অনেকদিন পর খুব পছন্দ হয়।
    প্রথম ক্লায়েন্ট আসে এক বয়স্ক ভদ্রলোক। ঈষৎ ভুঁড়ি আছে। কিন্তু সুঠাম। অনন্তরূপা তার এযাবৎ সমস্ত শিক্ষা প্রয়োগ করতে থাকে তার ওপর। নানা স্ট্রোক, আঙুলের নানা কৌশলে জাগিয়ে তোলে তার দীর্ঘ নিদ্রিত দেহ। অস্থির হয়ে সে আঁকড়ে ধরে অনন্তরূপাকে। তার স্বল্পবাসও সে খুলে ফেলে। ক্লায়েন্টের হাতে নিজেকে ছেড়ে দিয়ে বহুদিন পর অনন্তরূপাও যেন আসঙ্গ সুখ পায়। আনন্দে, তৃপ্তিতে ভরে ওঠে তার মন। আরো একজন ক্লায়েন্ট কে তাকে এটেন্ড করতে হয় আজই! তার নিজেকে ভীষণ হাল্কা মনে হয়। ফুরফুরে মেজাজে সে আবারো কাজ করতে থাকে।
    বেশ কয়েকদিন মাজিকে মিথ্যে বলে বেরোনো চলতে থাকলে মাজির কেমন সন্দেহ হয়। মাজি চিত্ত কে ব্যাপার জানায়। চিত্ত কিছুদিন ধরে আবার বেশ এনার্জি নিয়ে কাজ করছিল। রূপা আবার আগের মতো হয়ে উঠেছে। তেমনই পাগলামো করছে বিস্তর মে। চিত্তও তাই ভারি খুশ। মাজির কথা শুনে সে প্রথমে একটু থমকায়। রোজ বাহার জানেবালি বাত তো রূপা তাকে বলেনি। চিত্ত ঠিক করে সে রূপাকে ফলো করবে।
    পরদিন অনন্তরূপার পিছু পিছু চিত্তও পৌঁছোয় পার্লারে। তাকে অবাক হওয়ার সুযোগটুকুও না দিয়ে অনন্তরূপা যখন তার পুরোনো কস্টিউমে হেসে হেসে ক্লায়েন্ট কে নিয়ে চেম্বারে ঢুকছে তখন চিত্ত আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।
    ক্যায়া কর রহি হে তু? ক্যা করনা কয়া চাহতি হে তু? বোল?
    তুমি চলে যাও এখান থেকে।
    কিউ?মুঝসে ক্যায়া গলতি হুয়া বোল? তুঝে প্যায়সা চাহিয়ে! তো তু বোল না মেরেকো! ম্যায় দেতি হু তুঝে...
    না, টাকা চাই না। প্লিজ চিত্ত তুমি এখান থেকে যাও। আমাকে কাজ করতে দাও। রাতে কথা হবে।
    কাজ করতে দাও মানে? তু ইয়ে গন্দা কাম ফিরসে করবি।আরে তুঝে তো ম্যায় ইস নরক সে নিকলকে লে গয়া থা!
    কাকে তুমি নরক বলছ চিত্ত। এটা আমার কাজের জায়গা।আর এই কাজটা আমি ভালোবেসে করি।
    রেন্ডি কি মাফিক বাত মৎ বোল! চিত্ত চিৎকার করে ওঠে, কাঁদতে থাকে।
    হ্যা আমি রেন্ডি।রেন্ডি আমি। এবার অনন্তরূপাও চিৎকার করে... সারাজীবন একজনকে নিয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। প্রতিদিন আমার নতুন নতুন শরীর চাই। নতুন খেলা, নতুন মজা! বুঝেছ?
    চিত্ত ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দেয় অনন্তরূপার গালে। কিন্তু তাতেও অনন্তরূপা কে থামাতে পারেনা... তুমি কি দেবে আমাকে? ওই তো এক মন, সেই একই ভালোবাসার কথা! কিন্তু একই শরীরে কতদিন সন্তুষ্ট রাখতে পারবে আমাকে!
    ক্যায়া বোল রহি হ্যা তু! পতা ভি হ্যা তুঝে! হামলোগ একসাথ রহেঙ্গে,বচ্চে হোঙ্গে....অউর তু...
    চাই না আমার বাচ্চা! আমি এই কাজেই ভালো থাকব। সংসার, বাচ্চা এসব আমার চাই না।
    চিত্তপ্রসাদ বিস্ময়াহত হয়ে তাকিয়ে থাকে অনন্তরূপার দিকে।কোনো মেয়ের পক্ষে যে এমন কথা বলা সম্ভব সেটাই যেন তার বিশ্বাস হয় না। সে ধীরে ধীরে পার্লার থেকে বেরিয়ে আসে। অনন্তরূপা ক্লায়েন্ট কে নিয়ে চেম্বারে ঢোকে।

    বহুগামী

    চোখ খুলে চিত্তর ঘামে ভেজা জবজবে মুখটা দেখেই অনন্তরূপা আবার চোখ বন্ধ করে নিল।চিত্ত তখন তার সমস্ত সত্তা দিয়ে অনন্তরূপার গভীরতা ছুঁতে চাইছে। কিন্তু কিছুতেই যেন সে পারছেনা! বারবার চেষ্টা করেও সেই কাঙ্ক্ষিত তৃপ্তি সে পায় না; আদর দিয়ে শরীর জাগিয়ে তোলা তো দূরের কথা, অনন্তরূপাকে একটি মাংসল জড় পদার্থ ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না চিত্তর।
    বিয়ের পর এক-দু সপ্তাহ ব্যাপারটা এমন ছিল না। কি দুরন্ত আবেগে অনন্তরূপা ধরা দিয়েছিল চিত্তর কাছে। সেই সব মুহূর্তে চিত্তর মনে হতো এই বৌয়ের জন্য সে দুনিয়া জয় করে ফেলতে পারে। তেমন চেষ্টাই শুরু করেছিল চিত্ত। অনন্তরূপার যেন কোথাও কোনো তকলিফ না থাকে সেই মতো কাজ করছিল। আরো বেশি প্যায়সা কিভাবে ইনকাম করা যায় সেই চেষ্টা করতে শুরু করেছিল। অনন্তরূপাকে পার্লার থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার পর চিত্তর কাছে বিয়ের প্রস্তাব অনন্তরূপাই দিয়েছিল।এর জন্য সারাজীবন ওকে শুকরিয়া জানাবে চিত্ত।
    কিন্তু তারপর যে কি হচ্ছে চিত্ত ভালো করে বুঝতে পারে না। অনন্তরূপা সারাদিন কেমন আনমনা হয়ে থাকে। মাজি তো তাই বলে। চিত্ত কাজ সেরে বাড়ি ফিরলে ওর সঙ্গেও ভালো করে কথা বলে না। হরবক্ত উও কুছ সোচতি রহেতি হ্যা। কিন্তু হাজার বার জিজ্ঞেস করেও উত্তর পাওয়া যায় না।বিস্তর মে ভি একদম ঠান্ডা।বরফ কে মাফিক। চিত্ত হাজার কসরৎ করেও ওর মন ফেরাতে পারে না।
    কি হয়েছে তোমার?আমাকে বলো?
    কই কিছু না তো!
    তুম জানতে হো কি কুছ হুয়া হ্যা।
    না, জানি না।
    তোমার আমাকে ভালো লাগে না? প্যায়ার নহি করতি হো মুঝসে!
    ভালোবাসি তো।
    তব! এয়সে কিউ রহতি হো! তোমার কোনো ফিলিং আসে না!
    অনন্তরূপা চুপ করে থাকে।
    ম্যা দিলসে তুমকো চাহতি হু। মেরে মন মে তুমহারে সিবা অউর কুছ নহি হ্যা।
    অনন্তরূপার মনে হয়, মন! মন! তোমার শরীর নেই চিত্ত!
    সবে বছরখানেক হল ওদের বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যেই অনন্তরূপা কেমন হাঁপিয়ে উঠেছে। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে তার একটাই কথা মনে হয়, সেই তো এক জীবন! রান্না করো, ঘরের কাজ করো, আর রাতে... থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়... কোথাও কোনো বৈচিত্র নেই! সবটাই বড় একঘেয়ে! অথচ এমন তো ছিল না তার জীবন! আনন্দ ছিল, নতুনত্ব ছিল; প্রত্যেকবার প্রায় অ্যাডভেঞ্চার করার মতো শিহরিত হতো সে!
    অনন্তরূপার মনে পড়ে যায়, পার্লারে প্রায় দিনই ক্লায়েন্টের চাপ তার একটু বেশিই থাকত। আগে থেকেই এপয়েন্টমেন্ট করে রাখতেন অনেকে। কিন্তু তাই বলে অনন্তরূপা কখনোই তাড়াহুড়ো করত না। প্রত্যেকজন ক্লায়েন্টকে সমান গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যেত। আসলে এ কাজ তাড়াহুড়ো করে করাও তো যায়না। যথাযথ অ্যাম্বিয়েন্স তৈরি করে হাতের এক একটা স্ট্রোকে আরাম জাগিয়ে তুলতে হত ক্লায়েন্টের শরীরে। ক্লায়েন্ট যত উত্তেজিত হবেন ততই ভালো। তারপর যখন সেই উত্তেজনা কে একটি বিন্দুতে সমাপিত করে মুক্তি দেওয়া হত তখনই শরীর আস্তে আস্তে থিতিয়ে যেত। তার আগে অবশ্য চূড়ান্ত অস্থিরতায় ক্লায়েন্টের হাত ঘুরে বেড়াত অনন্তরূপার শরীরের গোপনীয়তায়। তার স্বল্পবাসের মোড়কও কখনো কখনো উন্মুক্ত হয়ে যেত। পার্লারেরে সেই ঝাঁ চকচকে অপরিসর কুঠুরিতে তখন যেন হোম যজ্ঞ সহকারে কাম আর রতির পূজোর উপাচার নিবেদিত হত। পরম তৃপ্ত ক্লায়েন্ট তখন কাঙ্ক্ষিতের চেয়েও আরো কিছুটা বেশি বদান্যতা দেখাত। আর সেখানেই অনন্তরূপার জয়ের উপলব্ধি হতো। সাধে কি তনুরুচি ম্যাডাম তাকে বেশি বেতন দিয়ে রেখেছিল! তার হাতে জাদু ছিল বলেই না!
    একদিন ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলে অনন্তরূপা বুঝেছিল সে অন্যদের থেকে কোথায় বিশেষ!
    এখানে তোর ক্লায়েন্ট বেশি কেন জানিস?
    কেন?
    কারণ তুই কাজটা আনন্দ করে করিস।দেখ, ক্লায়েন্টরা এখানে আসে এনজয়মেন্টের জন্য। সেখানে যদি কেউ মুখ গোমড়া করে মেকানিক্যালি কাজটা করে তাহলে ক্লায়েন্ট কি খুশি হবে!
    ওরা বোধহয় কাজটা পছন্দ করে না ম্যাডাম!
    না,করে না।অসীমা, ধ্রুপদী ওরা মনে করে এই কাজটা মন্দ কাজ। ওদের পেটচালানোর জন্য এই নোংরা কাজটা করতে হচ্ছে।
    কি জানি!
    অনন্তরূপা কখনো তলিয়ে ভেবে দেখেনি কাজটা ভালো না মন্দ।সে শুধু জানত এ কাজের একটা অমোঘ নেশা আছে। একটা অপার্থিব আনন্দ আছে। এক একটা ক্লায়েন্টের কাজ শেষ করে তারও একটা অদ্ভুত আরাম হত। মনে হত আরো আরোও খানিকটা সময় যদি পাওয়া যেত আরো খানিকটা জলে ভেসে থাকা যেত! তাই ক্লায়েন্টের পর ক্লায়েন্ট এলেও তার কখনো ক্লান্ত লাগত না। বরং তাদের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য সে নানাভাবে নিজেকে সাজিয়ে রাখত। ওয়াক্সিং, ফেসিয়াল, ভুঁরুপ্লাক এসব সে নিয়ম করে করিয়ে রাখত।
    চিত্তপ্রসাদ পার্লারে আসত প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিতে। ম্যাডাম হিসেব করত আর চিত্ত আড়চোখে এদিক ওদিক তাকে খুঁজতো।অনন্তরূপার হাসি পেত চিত্তর কান্ড দেখে। ম্যাডামের সামনে তার দিকে তাকানোর সাহসটুকুও নেই। এদিকে ফোন করে সারাক্ষণ একই কথা বলত... আমাকে শাদি কর। আমি তোকে রাজরাণী বানিয়ে রাখবো! এই কাজ তুই ছেড়ে দে!
    অনন্তরূপা খিলখিল করে হাসত ওর কথা শুনে।
    হাসিস না।আমি সচ্চি বলছি। একদিন তোকে এখান থেকে লিয়ে যাবোই।
    সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। যথারীতি অনন্তরূপা ক্লায়েন্ট সামলাচ্ছিল। অসীমা, তাপস,ধ্রুপদী ওরা পার্লারের অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। তনুরুচি ফোনে ব্যস্ত। হঠাৎই চিত্তপ্রসাদ এসে উপস্থিত হয়েছিল। সোজা ঢুকে এসে অনন্তরূপার চেম্বারের দরজা ধাক্কাতে শুরু করেছিল.... খানকি শালী, ইহাপে মজে মার রহে হো! অউর উধর ম্যায়ে কবসে ইন্তেজার মে হু। নজর নহি আতি তেরেকো! রেন্ডি কহিকি!
    তনুরুচির চোখের ইশারায় তাপস চিত্তপ্রসাদকে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিল। ওর কাছে যেতেই তাপস বুঝেছিল চিত্তপ্রসাদ মদ খেয়ে চূড় হয়ে আছে। মুখ দিয়ে তার বাংলা মদের গন্ধ ভকভক করে বেরোচ্ছে। ফলে তাপসের এক ধাক্কাতেই চিত্তপ্রসাদ পড়ে গেছিল।এদিকে ধাক্কাধাক্কির চোটে অনন্তরূপার ক্লায়েন্টও বেরিয়ে এসেছিল...হোয়াট হ্যাপেন হিয়ার? এনি প্রবলেম? হোয়াই দ্য ম্যান ইজ শাউটিং?
    তনুরুচি তাড়াতাড়ি সামলানোর চেষ্টা করছিল...নো নো,নাথিং। উই আর ভেরি মাচ সরি টু ডিস্টার্ব ইউ। প্লিজ গো এহেড। এনজয় ইওর সেল্ফ। ওদিকে চিত্তপ্রসাদ মাটিতে বসেই চিৎকার করছিল...আবে এ বহেনচোৎ...উও মেরি অউরত হ্যা।মেরি হ্যা।ছোড় উসকো..
    তাপস চিত্তপ্রসাদের কলার ধরে টেনে ওকে বাইরে বের করার চেষ্টা করছিল। ক্লায়েন্টও নানারকম কথা চালাচ্ছিল তনুরুচির সঙ্গে।অনন্তরূপা একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল চিত্তপ্রসাদের দিকে। তাপস বাইরে নিয়ে গিয়ে চিত্তপ্রসাদকে প্রচন্ড মারতে শুরু করেছিল।ঘুষির চোটে চিত্তপ্রসাদের নাক ফেটে রক্ত বেরোচ্ছিল। চিত্তপ্রসাদ তবুও থামেনি। অনন্তরূপার দিকে তাকিয়ে কি সব বলেই যাচ্ছিল। কাঁদছিল, চিৎকার করছিল! তাপস ওকে মেরে মেরে নর্দমার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। চিত্তপ্রসাদ আর উঠতে পারছিল না।বারবার ওঠার চেষ্টা করছিল... আর ওর পেটে বুকে লাথি ছুঁড়ছিল তাপস। আশেপাশের চায়ের দোকানের কিছু লোক এসে চিত্তপ্রসাদকে উঠিয়ে সরিয়ে নিয়ে যায়।
    তনুরুচি অনন্তরূপাকে আবার কাজে যেতে বলেছিল। ক্লায়েন্ট কিন্তু সমানে গজগজ করছিল... তার মুডটাই নষ্ট হয়ে গেছিল। সে হাফ পেমেন্ট করে চলে গিয়েছিল। যাওয়ার সময় আরো খানিকটা কথা শুনিয়েছিল তনুরুচিকে...হোয়াই আর ইউ এলাও দিস কাইন্ড অফ পিপল? দে আর নট প্রফেশনাল এনাফ! এরকম হলে তোমার এখানে তো কেউ আসতেই চাইবে না! শহরে আরোও পার্লার, ম্যাসাজ সেন্টার আছে!!
    তনুরুচি খানিকক্ষণ গুম হয়ে থেকে অনন্তরূপাকে ডেকেছিল...তোর সাথে চিত্তর আলাদা করে দেখা হয়? তোদের সম্পর্ক আছে?
    না ম্যাডাম।ও মাঝে মাঝে ফোন করে আমাকে বিয়ের কথা বলে।
    তুই বলেছিস তুই ওকে বিয়ে করবি?
    না ম্যাডাম।আমি কিছুই বলিনি।
    দেখ, তুই বিয়ে করতে চাইলে করতেই পারিস।সেটা নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। কিন্তু এখানে কাজ করতে হলে এসব হাঙ্গামা করা যাবে না।আমার এ অঞ্চলে একটা রেপুটেশন আছে।সেটা আমি এসবের জন্য নষ্ট হতে দিতে পারি না।
    অনন্তরূপা কিছুই বলতে পারেনি সেদিন। চিত্তপ্রসাদ যে এতো বাড়াবাড়ি করবে সেটা তো ও বুঝতেই পারেনি। ও তো ভেবেছিল মজা করে।
    সেদিনটা পার্লারে আর খুব বেশি কেউ আসেনি। ঝামেলা হয়ে তনুরুচির একটা দিনে ভালোই লস হয়েছিল।
    পরদিন থেকে আবারও পুরোদমে চলছিল পার্লার। কিন্তু চিত্তপ্রসাদকে ঠেকানো যায়নি। এক সপ্তাহ বাদে একটু সুস্থ হয়ে সে আবার এসে হানা দিয়েছিল। রীতিমতো লোকলস্কর নিয়ে পার্লারে ভাঙচুর চালিয়েছিল। তনুরুচি তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ সূত্রে পুলিশের বড় কর্তার সঙ্গে কথা বলে এফ.আই.আর করেছিল চিত্তপ্রসাদের নামে। এবং আর ঝামেলা না বাড়িয়ে অনন্তরূপাকে কাজ থেকে ছাঁটাই করে দিয়েছিল। বলেছিল, তোর মতো মেয়ে হাজার একটা পাওয়া যাবে। তোর জন্য এতো ক্ষতি স্বীকার করার কোনো মানেই হয় না।
    অনন্তরূপারও আর কিছুই বলার ছিল না। একদিনের নোটিসে তার কাজ চলে গিয়ে সে বেকার হয়ে পড়েছিল।
    কিন্তু চিত্ত ওর পিছন ছাড়েনি। দশদিন বাদে হাসপাতাল থেকে ফিরেই অনন্তরূপার কাছে উপস্থিত হয়েছিল; তাকে নিজের ভালোবাসার কথা বোঝাবার চেষ্টা করেছিল। অনন্তরূপা বিরক্ত হয়ে সরে যেতে চাইলে ওকে ভয়ও দেখিয়েছিল... কোথায় যাবি তুই? কোথায় যাবি? যেখানেই ওই কামে লাগবি সেখানেই আমি ভি যাবে! তোকে ওই কাম করতে দেবে না! কভিভি নহি!
    দিনের পর দিন ওর হুমকি শুনতে শুনতে ক্লান্ত অনন্তরূপা শেষ পর্যন্ত হার মেনে নিয়েছিল। ওর মাও ওকে বুঝিয়ে ছিল, নিজে থেকে তোকে বিয়ে করতে চাইছে! ওই কাজটা করতে বারণ করছে; তোকে ভালোবাসে; আর কি চাই! ছেড়ে দে ওই নোংরা কাজ তুই!
    অনন্তরূপা আর বিরোধিতা করার সাহস পায়নি। চিত্তকে নিজে থেকেই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল।
    কিন্তু একবছর যেতে না যেতেই তার কাছে সব বিস্বাদ লাগছে!
    পার্লারে যে সমস্ত ক্লায়েন্টরা তার কাছে আসত তাদের শরীর দেখেই অনন্তরূপার ইচ্ছে জেগে উঠত। কারো শরীর সিক্স প্যাকে সুঠাম, কারো আবার রোগা রোগা, কারো মখমলের মতো, কারো সামান্য ভুঁড়ি দেখা দিয়েছে। তাদের ম্যাসাজ করে দিতে দিতেই অনন্তরূপা কেমন গলে যেত। প্রতিদিন প্রতিবার নতুন নতুন শরীরের স্পর্শে তার শরীর আমোদিত হয়ে উঠত।প্রতিবার যেন কৌমার্যের লজ্জা আর তা লঙ্ঘিত হওয়ার সুখ তার শরীর জড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ত।
    চিত্তর সঙ্গে বিয়ের পরও প্রথম প্রথম এমনটাই হতো।শরীর যেন উন্মুক্ত হয়েই শান্তি পেত। কিন্তু তারপর থেকেই কি যে হলো!চোখ খুলে প্রতিবার চিত্তর মুখটা দেখে সে কেমন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরিচিত আদর, পরিচিত শিৎকার আর যেন কিছুতেই টানে না অনন্তরূপা কে। প্রতিবার নতুন শরীর, নতুন বিভঙ্গ, নতুন শিৎকার এসবের জন্য সে উন্মুখ হয়ে থাকে।প্রথম প্রথম চিত্ত বুঝতে পারত না। এখন তো ও প্রশ্ন করতে শুরু করেছে। অনন্তরূপাও অতৃপ্তির জাঁতাকলে কেমন আটকে পড়েছে। বারবার তার ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে হয় পার্লারে। ওই কাজটার মধ্যে যে আনন্দ আছে তা আর কিছুতেই বুঝি নেই।
    সেদিন চিত্ত কাজে বেরিয়ে গেলে অনন্তরূপাও সাজগোজ করে বেরিয়ে পড়ে। তনুরুচির পার্লারে তার জায়গায় এখন অন্য একটা মেয়ে কাজ করে...তুই এখানে?কি মনে করে?
    ম্যাডাম ভালো আছেন?
    সে খবরে তোর কি দরকার! তুই কি ভালো থাকার মতো কাজ করেছিলি?
    আমি কি করেছি ম্যাডাম? চিত্ত ই তো...
    ছেড়ে দে, আর লুকিয়ে কাজ নেই। তুই বলতেই পারতিস তোর সাথে চিত্তর ভালোবাসা হয়েছে। চিত্ত তোর এখানে কাজ করাটা পছন্দ করে না। আমরা নিশ্চই তোকে জোর করে কাজ করাতাম না!
    ম্যাডাম আমি আবার এই কাজটা করতে চাই...
    মানে? চিত্ত জানে?
    অনন্তরূপা মাথা নিচু করে নেয়।
    না রে, আমি আবার তোকে কাজে নেওয়ার রিস্ক নিতে পারব না।
    ও কিছু জানতে পারবে না। আমি লুকিয়ে করব।
    সে আবার হয় না কি! একই বাড়িতে থেকে জানবে না তা হয় কখনো!
    জানতে পারবেনা ম্যাডাম। আমি বলছি।
    পরদিন চিত্ত কাজে বেরিয়ে গেলে অনন্তরূপাও বেরিয়ে পড়ে। পার্লারে গিয়ে আগে সে নিজেকে সাজিয়ে তোলে। প্রায় এক বছর পর সে আবার ফেসিয়াল করে, ওয়াক্সিং করে... বিয়ের পর থেকে তো আর এসব করার প্রয়োজন হয়নি। আজ আয়নায় নিজেকে দেখে তার অনেকদিন পর খুব পছন্দ হয়।
    প্রথম ক্লায়েন্ট আসে এক বয়স্ক ভদ্রলোক। ঈষৎ ভুঁড়ি আছে। কিন্তু সুঠাম। অনন্তরূপা তার এযাবৎ সমস্ত শিক্ষা প্রয়োগ করতে থাকে তার ওপর। নানা স্ট্রোক, আঙুলের নানা কৌশলে জাগিয়ে তোলে তার দীর্ঘ নিদ্রিত দেহ। অস্থির হয়ে সে আঁকড়ে ধরে অনন্তরূপাকে। তার স্বল্পবাসও সে খুলে ফেলে। ক্লায়েন্টের হাতে নিজেকে ছেড়ে দিয়ে বহুদিন পর অনন্তরূপাও যেন আসঙ্গ সুখ পায়। আনন্দে, তৃপ্তিতে ভরে ওঠে তার মন। আরো একজন ক্লায়েন্ট কে তাকে এটেন্ড করতে হয় আজই! তার নিজেকে ভীষণ হাল্কা মনে হয়। ফুরফুরে মেজাজে সে আবারো কাজ করতে থাকে।
    বেশ কয়েকদিন মাজিকে মিথ্যে বলে বেরোনো চলতে থাকলে মাজির কেমন সন্দেহ হয়। মাজি চিত্ত কে ব্যাপার জানায়। চিত্ত কিছুদিন ধরে আবার বেশ এনার্জি নিয়ে কাজ করছিল। রূপা আবার আগের মতো হয়ে উঠেছে। তেমনই পাগলামো করছে বিস্তর মে। চিত্তও তাই ভারি খুশ। মাজির কথা শুনে সে প্রথমে একটু থমকায়। রোজ বাহার জানেবালি বাত তো রূপা তাকে বলেনি। চিত্ত ঠিক করে সে রূপাকে ফলো করবে।
    পরদিন অনন্তরূপার পিছু পিছু চিত্তও পৌঁছোয় পার্লারে। তাকে অবাক হওয়ার সুযোগটুকুও না দিয়ে অনন্তরূপা যখন তার পুরোনো কস্টিউমে হেসে হেসে ক্লায়েন্ট কে নিয়ে চেম্বারে ঢুকছে তখন চিত্ত আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।
    ক্যায়া কর রহি হে তু? ক্যা করনা কয়া চাহতি হে তু? বোল?
    তুমি চলে যাও এখান থেকে।
    কিউ?মুঝসে ক্যায়া গলতি হুয়া বোল? তুঝে প্যায়সা চাহিয়ে! তো তু বোল না মেরেকো! ম্যায় দেতি হু তুঝে...
    না, টাকা চাই না। প্লিজ চিত্ত তুমি এখান থেকে যাও। আমাকে কাজ করতে দাও। রাতে কথা হবে।
    কাজ করতে দাও মানে? তু ইয়ে গন্দা কাম ফিরসে করবি।আরে তুঝে তো ম্যায় ইস নরক সে নিকলকে লে গয়া থা!
    কাকে তুমি নরক বলছ চিত্ত। এটা আমার কাজের জায়গা।আর এই কাজটা আমি ভালোবেসে করি।
    রেন্ডি কি মাফিক বাত মৎ বোল! চিত্ত চিৎকার করে ওঠে, কাঁদতে থাকে।
    হ্যা আমি রেন্ডি।রেন্ডি আমি। এবার অনন্তরূপাও চিৎকার করে... সারাজীবন একজনকে নিয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। প্রতিদিন আমার নতুন নতুন শরীর চাই। নতুন খেলা, নতুন মজা! বুঝেছ?
    চিত্ত ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দেয় অনন্তরূপার গালে। কিন্তু তাতেও অনন্তরূপা কে থামাতে পারেনা... তুমি কি দেবে আমাকে? ওই তো এক মন, সেই একই ভালোবাসার কথা! কিন্তু একই শরীরে কতদিন সন্তুষ্ট রাখতে পারবে আমাকে!
    ক্যায়া বোল রহি হ্যা তু! পতা ভি হ্যা তুঝে! হামলোগ একসাথ রহেঙ্গে,বচ্চে হোঙ্গে....অউর তু...
    চাই না আমার বাচ্চা! আমি এই কাজেই ভালো থাকব। সংসার, বাচ্চা এসব আমার চাই না।
    চিত্তপ্রসাদ বিস্ময়াহত হয়ে তাকিয়ে থাকে অনন্তরূপার দিকে।কোনো মেয়ের পক্ষে যে এমন কথা বলা সম্ভব সেটাই যেন তার বিশ্বাস হয় না। সে ধীরে ধীরে পার্লার থেকে বেরিয়ে আসে। অনন্তরূপা ক্লায়েন্ট কে নিয়ে চেম্বারে ঢোকে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ২০ অক্টোবর ২০২০ | ১৭৬৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Jeet | 2401:4900:1049:4f01:51f5:cec1:c535:***:*** | ২১ অক্টোবর ২০২০ ১১:৩৪98718
  • গল্পটা একটু প্রেডিক্টেবল লাগলো ।আপনার লেখনী সুন্দর , আরো লিখুন .

  • Rajkumar Raychaudhuri | ২১ অক্টোবর ২০২০ ১৭:৫০98731
  • আরো গল্প চাই

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন