১
বেলা চলে গেছে, ঘোচেনি এখনো খেলা রিক্সা চলেছে অংক স্যারের বাড়ি রাধিকার ব্যাগে কেসিনাগ, বই খাতা স্কুল থেকে সোজা, বাসন্তী রং শাড়ি রিক্সা চলেছে অলিতে গলিতে ঘুরে রিক্সা চলেছে নির্জনে ভীড় ঠেলে রাধিকা শিখেছে ত্রিকোণমিতির প্যঁ¡চ লাল ফিতে দিয়ে বিনুনি বেঁধেছে চুলে রাধিকা চলেছে গোপনে স্যারের বাড়ি রাধিকার বোন একদম পিঠোপিঠি রাধিকার ব্যাগে কেসিনাগ বই খাতা রাধিকার ব্যাগে মলাটের ভাঁজে চিঠি ---------------------------------- রাধিকা চলেছে, বিষন্ন দিনকাল সাইকেলে তার পাথরকুচির দিন কেসিনাগে মন, ভবঘুরে খোলা চিঠি আকাশ মেঘলা, ভোর তবু অমলিন রিক্সা চলেছে, রেডিওতে বেজে ওঠা কাষ্ঠ কথায় জীবনমুখীর সুর অলিগলি ঘুরে মিথ্যে আশায় মন সেই গলিটায় এখন মাঝদুপুর রাধিকা চলেছে গোপনে স্যারের বাড়ি কেসিনাগে মন, বিষন্নতার দিন সাইকেলে বোন, রাধিকার চিঠি ওড়ে লালফিতে বাঁধা ত্রিকোণমিতির ঋণ। | |
২
দেখেছে রাধিকা তার খেলাঘরে গানের দখল দেখেছে চড়াই পাখি বাসা বাঁধে ঘুলঘুলি খুঁজে দেখেছে রাধিকা তার ছায়া ঘেরা শান্ত জানালা কিরকম মেঘে ঢাকে অহরহ তার সপ্তকে রাধিকার কপিবুক ভরে ওঠে শেষ পাতা থেকে আধেক আঁখির কোনে মহীনের ঘোড়ারা দাপায় রাধিকা মিলিয়ে দেখে বৈশাখ এপ্রিলে কত রাধিকার ঘুম চোখ সিলি হাওয়া ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় ----------------------------------------------- রাধিকার ঘুমচোখে হাওয়া বড়ো দাপাদাপি করে কাকভোরে স্বপ্নেরা আড়াআড়ি দাপিয়ে বেড়ায় বাসা শুধু কাঠকুটো, দালানের অচেনা আভাস জানালার পাশে এক সমুদ্র ওঠে নামে, একা ঘুলঘুলি, সুবাতাস, ঠোঁটে কোন অমৃত শুষে রাধিকার ঘুমচোখ, আধোঘুম, স্বপ্নের ঘুম নিঝুম সাঁঝের মত, আলোহীন ঘোর লাগা দেখা রাধিকার দিন কাটে সিলি কাজে, স্বপ্নের দিন। | |
৩ বালিকার মনে নাই সুখ, আদরের বিহনে কাতর দিনলিপি, ধুলোমুঠি, জলখেলা, লাল সাইকেল নাকছবি হলুদের বনে বালিকা হারিয়ে এল আজ ঘুম নেই অচেনা খেয়ালে, ঐপারে তুমুল বিষাদ দোলখেলা পাড়ায় পাড়ায়, পরিজন অচেনা অবুঝ পুরাতন স্বরলিপি ঘিরে কাঁচপোকা, মাঝ খাম্বাজ ------------------------------------------- বালিকার মনে ভারি জ্বালা, অভিমানে সতত মুখর দিনলিপি, দাবদাহ, বিদ্রোহ, আলগোছে থাকা বাসন্তী দিন গেল, নাকছাবি হলুদের বনে ঘুম নেই, উচাটনে দুপুর তাহার কথা বলে বেখেয়ালে রং মাখা, দোল খেলা তাহার পাড়ায় অবুঝ কিশোর পায় বুড়িঘর, বালিকার মন। | |
৪ অযথা বিকেলে খেলা ফেলে চলে যায় দুরে, খামারের সীমানা আকুল কোলাহল এখনো প্রবল বিকেলে খোলামকুচি হাওয়া রাধিকা চলেছে দুরে রাধিকার পথভরা ভুল বিকেলের খেলা ফেলে, স্নান শেষে, পাড়ায় পাড়ায় রাধিকা চলেছে দুরে, দোলখেলা সেরে রাধাচূড়া পিচ ঢালা পথে অযথা রেখেছে এতো ফুল ------------------------ রাধিকা চলেছে দূরে রাধিকার পথভরা ভুল দরমার বেড়া ঠেলে, ফুলে ছেয়ে থাকা রাজপথ আংশিক দোনামোনা ঝেড়ে ফেলে কবজির তাগা রাধিকা চলেছে দূরে, দোলখেলা আজ সারাদিন রাধিকার পথভরা ফুল, একলা বিকেল। | |
৫ নিঝুম খাদের ধারে রাধা আজ বেভুল বেবাক খর রোদে নিস্পৃহ অচেনা বিরল পথঘাট নিঝুম খাদের ধারে রাধিকাকে দুপুরের ডাক বসন্ত শেষ হলে বিগতস্পৃহাতে ধুধু মাঠ কড়া নেড়ে চলে গেছে ঘুঘু পাখি বিরনের চাল আর কোনো কাজ নেই সুখী গৃহে অচেনা সকাল আর কোনো কাজ নেই আর কোনো শ্রাবন, জোয়ার খাদের কিনারে রাধা চুপ করে দাঁড়িয়েছে কাজ কিছু নেই তার আর ----------------------- নিঝুম রাতের শেষে রাধিকার মন, খেলা ফেলে শূন্যতা ধুয়ে আনা রাধা আজ নিজেতে বিভোর পাহাড়ের রেখা তাকে ডেকে নেয়, বন্যার জল দিন কাটে রাধিকার, সয়ে যায় বিষাদের ঘোর খাদের কিনারে তাই, আজ কোন কাজ নেই, তার খাদের কিনারে ভারি ঝলমলে দিনের প্রলেপ আর কোন কাজ নেই আর কোন প্রাচীর প্রাকার রাধিকাও বয়ে যায় জ্যোৎস্নায় ধুয়ে যাওয়া রাতে। | |
৬ শ্রীকান্হা উদাস পড়ুয়া আঁখিপাখি খুব খরসান ওষ্ঠে কমললীলা খুব রাধিকাও খুব আনচান রাধিকা ত্যাজিছে সুখ গেহ রাধিকা পিতার মুখে মুখে রাধিকার মায়ের অসুখ রাধিকার এস্রাজে ধুলো রাধিকা কিসের বিলাসে রাধিকা অবুঝ বালিকা কেউ তোকে বলেনি রাধিকা? বসন্ত অবসানে সোনা রূপা নহে বাপা এ প্রেম পিতল |