এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  খবর  খবর্নয়

  • খবর্নয়? ( ৭ই জুন) -- পরিবেশ

    খবরোলার প্রতিবেদন লেখকের গ্রাহক হোন
    খবর | খবর্নয় | ০৭ জুন ২০০৯ | ১৫৩০ বার পঠিত
  • সদ্য চলে যাওয়া বিশ্ব পরিবেশ দিবসের কথা মাথায় রেখে এবারের খবর্নয়? এর বিষয় : পরিবেশ


    বারোয়ারি ডাস্টবিন?

    জানতাম পুরনো মডেলের গাড়ি, কিম্বা বাতিল মিলিটারি সরঞ্জাম তৃতীয় বিশ্বের আস্তাকুঁড়ে চালানোর চেস্টা করা হয়। যেটা জানতাম না, যে বিশ্বায়নের বাজারে, আজ আক্ষরিক অর্থেই ভারতের বন্দরগুলি সভ্যতার আস্তাকুঁড়ে পরিণত হচ্ছে।

    বর্জ্য কাগজ আমদানীর ছুতোয় প্রতি বছর প্রথম বিশ্ব থেকে দেশে ঢুকছে লক্ষ লক্ষ টন আবর্জনা। আইন অনুসারে প্রতিটি বর্জ্য কাগজের বাক্সের মধ্যে থাকতে পারে ৮ শতাংশ অন্যান্য আবর্জনা। শুধুমাত্র আইনের এই ফাঁক গলেই ২০০৫-২০০৬ সালে ঢুকে পড়েছে প্রায় ১,৩৪,৪০০ টন আবর্জনা।

    এর বাইরে বেআইনিভাবে ঢোকা আবর্জনার তো হিসেবের বাইরে। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টুটিকরিন পোর্টে ধরা পড়ে আই টি সি কোম্পানির আমদানী করা ৮১টি বাক্স, যাতে আবর্জনার পরিমাণ গ্রহণযোগ্য ঊর্ধ্বসীমার চেয়ে অনেক বেশী ছিলো। মূলত: প্লাস্টিক এবং ধাতব আবর্জনাতে ভর্তি ছিলো বাক্সগুলি। আই টি সি এবং রফতানিকারী কোম্পানি রাজি হয় ফেরত পাঠাতে, কিন্তু এখনো, কোর্টের অর্ডার সত্ত্বেও, সেগুলি ফেলে রাখা হয়েছে টুটিকোরিন পোর্টে। একই সময়ে ধরা পড়ে অন্ধ্রপ্রদেশের জি এস এন এন্টারপ্রাইজের আমদানী করা আরো ৬টি বাক্স। প্রসংগত, ২০০৫ সালেই পরিবেশ মন্ত্রক থেকে কাস্টমসকে বলা হয় বর্জ্য স্মাগলিং এর এই আর্ন্তজাতিক চক্রগুলি সম্বন্ধে সজাগ থাকতে। কিন্তু ভারতবর্ষের বর্তমান কাস্টমস বাবস্থায় এই ধরণের চক্রগুলির বিরুদ্ধে বিশেষ কিছুই করা সম্ভব নয়। প্রথমত, ভারতে আসা মাত্র ২ শতাংশ বাক্সই কাস্টমস খুলে পরীক্ষা করে। দ্বিতীয়ত, কাস্টমসের প্রধান দায়িত্ব কর সংক্রান্ত, পরিবেশ সংক্রান্ত নয়। পরিকাঠামোর এইসব ফাঁকফোকরের সুযোগ নিয়ে অবাধে চলছে বর্জ্য স্মাগলিং এর ব্যাবসা।

    উন্মুক্ত বাজার তৈরী করতে তৎপর সরকারও এ বিষয়ে কোনো কড়া পদক্ষেপ নিতে চায়নি। বরং পৃথিবীর ১৭২ টি দেশ মিলে বাসেল কনভেনশন নামে যে আর্ন্তজাতিক চুক্তি সই করেছে তৃতীয় বিশ্বে বিপজ্জনক বর্জ্য চালান করার বিরুদ্ধে, ভারত তাতে সই করতে অস্বীকার করে। শুধু তাই নয়, পরিবেশ মন্ত্রক বিপজ্জনক বর্জ্যপদার্থ সংক্রান্ত যে নতুন বিলটি আনতে চলেছে, তাতে কোনো বর্জ্যপদার্থকে বিপজ্জনক প্রমাণ করবার দায় আর ব্যবসায়ীর থাকবে না, থাকবে সরকারের। এভাবেই, বাণিজ্যের সাথে সাথে প্রথম বিশ্বের জঞ্জালের জন্যও মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে আমাদের বাজার।

    আরো বিশদে জানতে হলে ক্লিক করুন এইখানে:
    http://www.tehelka.com/story_main37.asp?filename=cr090208Waste.asp

    জাতীয় মিনারাল পলিসি ও আদিবাসী উচ্ছেদ

    ৯০ এর দশকে শুরু থেকেই মুক্ত অর্থনীতির হাত ধরে, ভারতবর্ষের খনি শিল্পে প্রাইভেট সেক্টরের গুরুত্ব ক্রমবর্দ্ধমান । সেই পরিবর্তন কে মাথায় রেখে এপ্রিল দু হাজার আটে ইউ পি এ সরকার প্রকাশ করে তাদের নয়া ন্যাশনাল মিনারাল পলিসি। পলিসির রূপকারদের মাথাব্যথার তালিকায় উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগ -সবই পাবেন। শুধু বাদ গেল মানুষগুলোর জমিতে জাঁকিয়ে বসার প্লান , আর পরিবেশ।

    বিহার , ছত্তিশগড়, উড়িশ্যার বিভিন্ন অঞ্ছলে মাইনিং প্রোজেক্টের দরুণ পুর্বে জমিচ্যুত হয়েছেন এবং এখনও হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ , যাদের অর্দ্ধেক আদিবাসী। তাদের পুনর্বাসন নিয়ে নেই কোন স্পষ্ট কর্মসূচী। এখনও দেশের শীর্ষ উৎ্‌পাদনকারী জেলাগুলির ৬০ শতাংশ জুড়ে আছে উন্নতির মাপকাঠিতে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া ১৫০ টি জেলা। তার ওপর পরিবেশ সংক্রান্ত বিধিগুলিকে শীথিল করে প্রাইভেট কোম্পানীগুলিকে যথেচ্ছ প্রকৃতি লুঠের ছাড় দেয়া হল। ছত্তিশগড়ের কোরবা জেলায় মাইনিং জনিত কারণে জঙ্গল জমির মোট ৭৮ শতাংশ জমির ওপর কোপ পড়ে। তার মধ্যে ৫৫ শতাংশ স্রেফ অনুর্বর, নষ্ট হয়ে যায়। খনি শিল্পের আনুষঙ্গিক কিছু পরিবেশ সমস্যা আছে, যেমন গাছ কাটা, জলাভাব ইত্যাদি। এগুলো কোন গুরুত্বই পায়নি পলিসি রিপোর্টে।

    ভারতে খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যের হাতছানিতে হামলে পড়া বিদেশী কোম্পানীগুলির মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষা সম্পর্কিত রেকর্ডে প্রচুর প্রশ্নচিহ্ন থাকা সত্ত্বেও তাদের সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছে এই পলিসি। বিস্তারিত জানতে পড়ুন-

    http://infochangeindia.org/200901077561/Environment/Analysis/India’s-new-mineral-policy-will-usher-in-gloom-for-adivasis.html

    ভারতে অ্যাসবেস্টস ব্যান(নয়)?!?

    শহরের মল-সভ্যতার থেকে একটু চোখ ফেরালেই দেখা যাবে সারি সারি ঢেউখেলানো ছাত। ছোটোবেলায় ঐ আসবেস্টস ছাওয়া ঘরবাড়ী ইস্কুল দোকানপাট কারখানা দেখে বুঝতে পারিনি, ওখানেই মৃত্যু বাসা বাঁধে। পরে জেনেছি, দীর্ঘদিন অ্যাসবেস্টসের সংস্পর্শ ক্যান্সার ডেকে আনে। জেনেছি, আজকে শুধু আমেরিকাতেই দিনে ত্রিশজন মারা যান অ্যাসবেস্টসজনিত অসুখে। শুনেছি উন্নত দেশগুলিতে অ্যাসবেস্টসবিরোধী আন্দোলনের কথা। আজ সেইজন্যে আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া সহ পঞ্চাশটি দেশে অ্যাসবেস্টসের উৎ্‌পাদন, আমদানি ও ব্যবহার প্রায় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

    সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রকের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ "হিউম্যান হেল্‌থ রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট স্টাডিস ইন অ্যাসবেস্টস বেসড ইন্ডাস্ট্রিস ইন ইন্ডিয়া" নামক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে অ্যাসবেস্টস শিল্পে কর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার স্বার্থে বেশ কিছু ব্যবস্থার কথা।

    সে তো ভালো কথা। তাহ'লে খবর(নয়) কেন?

    তার কারণ, "ব্যান অ্যাসবেস্টস নেটওয়ার্ক অফ ইন্ডিয়া", সংক্ষেপে বানি'র গোপালকৃষ্ণ আমাদের জানাচ্ছেন যে রিপোর্টে আছে শুধুই নিয়ন্ত্রণের কথা - কোথাও অ্যাসবেস্টসের ব্যবহার বা উৎ্‌পাদন বন্ধ করার কথা বলা হয়নি। আরো আশ্চর্যের কথা, সরকার সম্প্রতি ক্রিসোটাইল অ্যাসবেস্টস (বিশ্বে ব্যবহৃত অ্যাসবেস্টসের ৯০ শতাংশের বেশিটাই ক্রিসোটাইল) উৎ্‌পাদনের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন। অর্থাৎ আমরা ঠিক উল্টোপথে হাঁটছি।

    আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সকলেই বলেন সমস্তরকম অ্যাসবেস্টসের উপরেই সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা। ভারতবর্ষে গত জানুয়ারি মাসে কেরলের মানবাধিকার কমিশন রায় দেন, অ্যাসবেস্টসের সংস্পর্শ থেকে সুরক্ষা ব্যক্তির মানবাধিকারের অন্তর্গত। আমেরিকাতে প্রায় গোটা অ্যাসবেস্টস শিল্পই দেউলিয়া। ওদিকে আমাদের দেশে বাড়ির চালে, পাইপে, বস্ত্রশিল্পে, গাড়ির যন্ত্রাংশে অ্যাসবেস্টসের ব্যবহার অব্যাহত। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারগুলির'ও অ্যাসবেস্টসবিষয়ক নির্দিষ্ট কোন নীতি বা কর্মসূচী নেই। এই ধরণের একটি রিপোর্টের কাজ সেই নীতির ভিত্তিস্থাপন করা। কিন্তু গোপালকৃষ্ণ বলছেন, ন্যাশানাল অকুপেশনাল হেল্‌থ ইন্সটিটিউটের সমীক্ষার পয়্‌সা আসে ক্রিসোটাইল অ্যাসবেস্টস কোম্পানিগুলির থেকেই। এই রিপোর্টেও ঋণস্বীকার করা হয়েছে এক রহস্যময় "উপদেষ্টা" কমিটির প্রতি। সর্ষের মধ্যেই কি তবে কর্পোরেট ভূত লুকিয়ে আছে?

    http://www.countercurrents.org/krishna050309.htm

    পরিবেশ্‌দূষণ ও জনসংখ্যা

    সেই কোন হাফ-পেন্টুল বয়েস থেকে শুনে আসছি, হাজার-কোটি মানুষের ভিড়ে পৃথিবীর না কি প্রায় নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম --- আজ তেল বাড়ন্ত, তো কাল মাটির নিচে কয়লা, কিংবা পরশু-ই ওজোন-স্তরের গোপন ছিদ্র দিয়ে ঢুকে পড়ছে অতিবেগুনী দুশমন। মোদ্দা, এই সামগ্রিক কিচাইন-গাথাটির মূলে রয়েছে বুড়বক মানুষের বেহিসেবি বাচ্চা পয়দা করার গূঢ় অভিলাষ, অর্থাৎ জনসংখ্যাবৃদ্ধি।

    কিন্তু, সম্প্রতি পরিবেশবিদদের মুখে শোনা যাচ্ছে এক নতুন কথা। পৃথিবীর এই বেহাল অবস্থার জন্য না কি জনসংখ্যা নয়, বরং দায়ী ক্রমবর্ধমান ভোগবাদ ও তজ্জনিত চাহিদাবৃদ্ধি --- অর্থাৎ over-consumption । এই অবধি পড়ে অনেকেই হয়তো নাক সিঁটকোবেন। ভাববেন, এ আর নতুন কথা কী! যত বেশি মানুষ, তত বেশি চাহিদা, আর তত বেশি ক্ষতি পরিবেশের। কিন্তু, সুধী পাঠক, তিষ্ঠ ক্ষণকাল। এ জমানায় সমস্ত হিসেব ঠিক ততখানি সহজ ও সরলরৈখিক নয়। বিশ শতকে পৃথিবীর জনসংখ্যা বেড়েছে চারগুণ, কিন্তু পার-ক্যাপিটা ইনকাম বেড়েছে তার অনেক-গুণ। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর ধনী দেশগুলোতেই কনসাম্পশন বেড়েছে সবচেয়ে বেশি, যে দেশগুলো কি না অনেকদিন ধরেই তাদের জনসংখ্যাকে রীতিমত দক্ষ হাতে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
    প্রিন্সটন এনভায়রণমেন্ট ইন্সটিটিউট-এর অধ্যক্ষ স্টিফেন পাকালা আমাদের আরো এক চমকপ্রদ তথ্যের হদিশ দিয়েছেন। তাঁর দেওয়া হিসেব থেকে দেখা যাচ্ছে যে পৃথিবীর ধনীতম একশো কোটি মানুষ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার ৭%, পৃথিবীর ৫০% কার্বন-ডাই-অক্সাইড এমিশনের জন্য দায়ী। আর অন্যদিকে, পৃথিবীর দরিদ্রতম ৫০% মানুষ দায়ী কেবল ৭% কার্বন-ডাই-অক্সাইড এমিশনের জন্য। এই হিসেব থেকে আরো দেখা যাচ্ছে যে, আগামি চল্লিশ বছরে যে দুশো কোটি জনসংখ্যা বাড়তে চলেছে, তার পুরোটাই প্রায় ঘটবে গরিব দেশগুলিতে; কিন্তু তা সত্বেও উপরের হিসেবটির বিশেষ হেরফের হবে না। আরেকটু অন্যভাবে খতিয়ে দেখলে ব্যাপারটা এরকম --- মাত্র পাঁচটি দেশে (ভারত, চীন, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও ইথিওপিয়া) জনসংখ্যাবৃদ্ধির হার হবে সর্বাধিক। কিন্তু বর্তমানে মাত্র একজন আমেরিকানের কার্বন এমিশনের পরিমাণ চারজন চীনা, কুড়িজন ভারতীয়, তিরিশজন পাকিস্তানি, চল্লিশজন নাইজেরিয় অথবা আড়াইশো জন ইথিওপিয়ানের মোট কার্বন এমিশনের সমতুল। অর্থাৎ, পৃথিবীর জনসংখ্যাবৃদ্ধির হার যদি আজ শূন্যতেও নামিয়ে আনা যায়, তাহলেও পরিবেশের ওপর তার বিশেষ উল্লেখখযোগ্য কোন প্রভাব পড়বে না।

    এর মানে অবশ্য এই নয় যে পরিবেশের ওপর জনসংখ্যাবৃদ্ধির আদৌ কোন ক্ষতিকারক প্রভাব নেই। স্থানীয়ভাবে এর ফলে ভূমিক্ষয়, জমির উর্বরতানাশ (অতিরিক্ত ও ধ্বংসাত্মক কৃষির কারণে) কিংবা অরণ্যধ্বংসের মত প্রতিকূল ঘটনাগুলির বাড়বাড়ন্ত ঘটে যা নি:সন্দেহে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। কিন্তু, আন্তর্জাতিক নিরিখে, পরিবেশগত অবক্ষয়ের কারণটা শুধুই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, এই সাবেক ধারণাটি বোধহয় এবার পরিত্যাগ করার সময় এসেছে। আর সেক্ষেত্রে, এই প্রশ্ন এবার বোধহয় তোলা যেতেই পারে যে, তৃতীয় বিশ্বের গরিব জনসংখ্যাবহুল দেশগুলির ওপর পরিবেশদূষণের সিংহভাগ দায়ভার চাপিয়ে দেওয়াটা কি আসলে উন্নত দেশগুলির নিজেদের পিঠের চামড়া বাঁচানোর একটি নির্লজ্জ কৌশলমাত্র? এইখান থেকে একটা নৈতিক প্রশ্নও আমাদের সামনে চলে আসে। ১৯৭৪ সালে পরিবেশবিদ গ্যারেট হার্ডিন একটি তত্ত্ব হাজির করেন যার নাম "লাইফবোট এথিক্স'। এখানে তিনি বলেন যে, বর্তমানে resource-constrained দুনিয়ায় প্রতিটা ধনী দেশ আদতে একেকটি লাইফবোট যেন, যেগুলি তুলনামূলকভাবে ধনী মানুষদের দ্বারা ইতিমধ্যেই হাউজফুল। আর বাইরের মহাসমুদ্রে হাজার-হাজার গরিবলোক সাঁতার কাটছে যারা এই লাইফবোটগুলিতে উঠে আসতে মরিয়া। কিন্তু, নৌকায় জায়গা বাড়ন্ত --- যদি একজনকেও উঠতে দেওয়া হয়, তাহলে এ ভরাডুবি রুধিবে কেডায়? অতএব, লাইফবোটের প্রতিটি মানুষের, নিজের প্রজাতিরক্ষার তাগিদে, চূড়ান্ত স্বার্থপর হওয়ার হক রয়েছে।
    হারডিনের উপমাটির পেছনে একটা নির্দয় যুক্তি থাকলেও, তিনি একটা জিনিস বলতে ভুলে গিয়েছিলেন। সেটা হল নৌকার প্রতিটি মানুষ দশটা সিট নিয়ে গ্যাঁট হয়ে বসে রয়েছে। অন্যদিকে, মাঝসমুদ্দুরে হাবুডুবু খাওয়া একেকজন মানুষ নৌকায় মাত্র একটি করে সিট পেলেও বর্তে যায়!

    এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত পড়তে বা জানতে ক্লিক করুন এইখানে
    http://e360.yale.edu/content/feature.msp?id=2140

    পরিবেশ সুরক্ষা পরীক্ষার নামে প্রহসন

    পরিবেশ রক্ষার তাগিদ আরেকবার হারতে চলেছে বিভিন্ন কোম্পানীর ব্যবসায়িক চাহিদার কাছে। সরকারীভাবে চেষ্টা চলছে পরিবেশ-সুরক্ষার বিভিন্ন পরীক্ষাগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার, যাতে ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ও পরিকাঠামোগত প্রজেক্টগুলি আরও দ্রুত ছাড়পত্র পেতে পারে। এই প্রক্রিয়াটিতে কোম্পানীগুলির চাহিদা মিটলেও পরিবেশের সুরক্ষার দিকটি অভূতপূর্বভাবে অবহেলিত হতে চলেছে।

    ২০০৭-এর ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং National Development Council - এর ৫৪ তম মিটিং-এ ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ও পরিকাঠামোগত প্রজেক্টগুলির বিধিবদ্ধ "ক্লিয়ারেন্স' প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০০৮-এর এপ্রিল-এ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিনিধি,শিল্পনীতি মন্ত্রক এবং প্ল্যানিং কমিশনের অফিসারদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ঊল্লেখযোগ্যভাবে পরিবেশ ও বন মন্ত্রকের প্রতিনিধি বা কোন পরিবেশবিদের জায়গা হয়নি কমিটিতে। নভেম্বর মাসে চারটি বৈঠকের পর কমিটি একটি গোপন রিপোর্ট জমা দেয় একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে,যার কনভেনর প্ল্যানিং কমিশন-এর সেক্রেটারী সুভাষ চন্দ্র পানি। এই দ্বিতীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হন একমাত্র পরিবেশবিদ, সুনীতা নারায়ণ।

    ৬৮ পাতার এই রিপোর্টে প্রায় ২০টি সুপারিশ করা হয়েছে ছাড়পত্র পাওয়ার প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করার জন্য, যার মধ্যে রয়েছে - প্রোগ্রাম ডেভেলপারের Self-certification ,পাবলিক হিয়ারিং-এর সময় কমানো,শুধু বিতর্কিত বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা, এমনকি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাড়পত্র না পাওয়া প্রজেক্টগুলিকেও cleared বলে ঘোষণা করা।

    বিশেষজ্ঞদের মত অনুয়ায়ী এই প্রস্তাবগুলি কার্যকরী হলে অদূর ভবিষ্যতে পরিবেশ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বর্তমানে প্রতিটি প্রজেক্টকে Environmental Impact Assesment (EIA) ছাড়াও নানাবিধ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য। পরিবেশ আইনজ্ঞ, বিদেহ ঊপাধ্যায়-এর মতে এই পরীক্ষাগুলি পরিবেশ সুরক্ষার বিভিন্ন দিককে সংগঠিত করে। একবার EIA -এর ছাড়পত্র পেয়ে গেলে একটি প্রজেক্টের পরিবেশ-সুরক্ষা সংক্রান্ত আর কোনও ছাড়পত্র লাগবে না - এই সুপারিশ পরিবেশকে আরও অসুরক্ষিত করে তুলবে। কমিটির একমাত্র পরিবেশবিদ সুনীতা নারায়ণ এই বিষয়ে তাঁর আপত্তি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন কনভেনরকে। তাঁর মতে বিভিন্ন পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য বুঝতে কমিটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ। কোম্পানীর চাহিদা মেনে নিয়ন্ত্রণ তৈরী করলে পরিবেশরক্ষার আসল লক্ষ্যটিই অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। Kalpavriksh Environmental Action Group of Delhi -র প্রতিনিধি, মঞ্জু মেনন-এর মতে যাবতীয় পরীক্ষাকে EIA - এর ছাতার তলায় নিয়ে এসে সমস্ত প্রজেক্টের জন্য একটি ' standardised' পরীক্ষা তৈরী করার প্রস্তাব বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয়। কারণ প্রতিটি প্রজেক্টের নির্ধারিত স্থানের নিজস্ব সমস্যা রয়েছে এবং সমস্যাগুলি মূলগত ভাবে আলাদা। একটি 'standardised' পরীক্ষার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলির সমাধান অসম্ভব।

    কিন্তু কেন এই 'standardised' পরীক্ষার প্রস্তাব? কেন হঠাৎ ছাড়পত্র পাওয়ার প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করার প্রয়োজন হল? কমিটির মতে অসঙ্গতভাবে আটকে আছে বিভিন্ন প্রজেক্ট। কিন্তু পরিবেশ ও বন মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুয়ায়ী প্রজেক্টসংখ্যা ২০০১ সালে ২৪০ থেকে ২০০৭-এর মধ্যে বেড়ে হয়েছে ৪৫৯০। অথচ গত ১৫ বছরে কর্মীসংখ্যা একজনও বাড়েনি। শুধু গত একবছরে ২০০৮-এর জানুয়ারী থেকে ২০০৯-এর ১৭ই ফেব্রুয়ারী-র মধ্যে প্রজেক্ট এসেছে ৩৪৬৩টি। এর প্রজেক্ট ৭৫% ইতিমধ্যেই ছাড়পত্র পেয়ে গেছে, ২৪%-এর ছাড়পত্র আটকে আছে। সুনীতা নারায়ণ-এর মতে প্রশ্নটি হওয়া উচিৎ - কেন এত কম সংখ্যক (০.৮%) প্রজেক্ট বাতিল করা হয়েছে? ঊল্লেখযোগ্যভাবে,ছাড়পত্র আটকে থাকার অন্যতম কারণ হল কোম্পানীর পক্ষ থেকে প্রজেক্টটির বাস্তবতা সম্পর্কে যুক্তি দেখাতে দেরী হওয়া। এমনকি যেসমস্ত প্রজেক্টের ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের আপত্তি থাকে সেখানে কোম্পানীই চায় ছাড়পত্র পেতে দেরী করতে, যাতে আপত্তির বিষয়টি থিতিয়ে যায়।

    শিল্পপ্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরী বিশেষজ্ঞ কমিটি পাঁচটি উদাহরণ দেখিয়েছেন যেখানে প্রজেক্টগুলির ছাড়পত্র আটকে আছে - অন্ধ্রপ্রদেশ ও অরুণাচল প্রদেশের দুটি তাপবিদুৎ প্রজেক্ট, উত্তরাখন্ডে একটি রোপওয়ে প্রজেক্ট, দিল্লী মিউনিসিপ্যালিটির বর্জ্যপদার্থ প্রসেসিং প্ল্যান্ট এবং পশ্চিমবঙ্গে ঢালাই কারখানার একটি পার্ক প্রজেক্ট। যেহেতু কোম্পানীর অনুরোধে এই পাঁচটি প্রজেক্টের নির্দিষ্ট স্থান রিপোর্টে গোপন রাখা হয়েছে, কমিটির এই উদাহরণগুলি খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। যদিও বিদেহ ঊপাধ্যায়-এর মতে, ছয়দিনের মধ্যে ছাড়পত্র পাওয়ার উদাহরণও রয়েছে। দ্রুত ছাড়পত্র পাওয়ার পরও গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে-র প্রজেক্টের ওপর কেস করা হয়েছে এলাহাবাদ হাই কোর্টে। ফলত, দ্রুত ছাড়পত্র পাওয়া গেলেও তা কোম্পানী বা পরিবেশ কারুর জন্যই ভাল হয়নি।

    বিদেহ ঊপাধ্যায়-এর মতে বিশেষজ্ঞ কমিটির এই রিপোর্টটির তিনটি বিচার্য্য মাপকাঠি হওয়া উচিৎ - ঊদ্দেশ্য,আচরণ পদ্ধতি এবং বিষয়। তিনটি দিক থেকেই এই রিপোর্টটি সন্দেহজনক এবং পরিবেশ সুরক্ষার নিয়মকানুনগুলি কমানোর আরেকটি প্রচেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ নিয়মকানুনগুলিকে আরও শক্তিশালী করা, যাতে প্রতিটি প্রজেক্টের পরিবেশ সুরক্ষার দিকটি, পরিকাঠামোর দিকটি আরও ভালভাবে বিচার করা যায়। ছাড়পত্র পাওয়ার পরে প্রতিটি প্রজেক্টের নিয়মিত পরীক্ষার দিকে নজর দেয়া উচিৎ।

    কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতে, সরকার এবং কোম্পানীগুলি যেভাবে উঠেপড়ে লেগেছে দ্রুত ছাড়পত্র পাওয়ার দিকটি সুরক্ষিত করতে তাতে এই ঊপদেশ কাজে আসবে বলে মনে হয় না। কোম্পানীর ব্যবসায়িক লাভ আর পরিবেশ সুরক্ষার টানাপোড়েনে পরিবেশ আরেকবার হারতে চলেছে।

    http://www.cseindia.org/programme/industry/eia_notification.htm

    মডেল এম পি?
    শশী থারুর। স্মার্ট, ভালো কথা বলেন। রাষ্টপুঞ্জের প্রধান হতে হতে হলেন না। এলেন ভারতের লোকসভায়। অনেকে বলছেন "মডেল এম পি'। আধুনিক ভারতের আধুনিক মুখ। কিন্তু নিন্দুকের তো অভাব নেই! যেমন ধরুন ভেলুর স্বামীনাথন আর আর অজয়ন। যথাক্রমে প্লাচিমাড়া আদিবাসি সংরক্ষণ সঙ্ঘম এর সম্পাদক, এবং প্লাচিমাড়া সলিডারিটি কমিটি-র আহ্বায়ক। (প্লাচিমাড়া-র নাম মনে পড়ছে তো? সেই যে কোকাকোলা প্ল্যান্ট প্রচুর জল তুলে নেয় বলে গ্রামের লোকেরা ক্যাডমিয়াম আর সীসাযুক্ত জল খেতে বাধ্য হয়, কেরালার সেই গ্রাম।) এঁদের কোকের বিরুদ্ধে বহুবিধ অভিযোগ। পানীয় জলকে দূষিত করা ছাড়াও কোকের কারখানার বর্জ্য থেকে জমি বিষাক্ত হয়ে যাওয়া এবং আরো অনেক কিছু। শুধু প্লাচিমাড়া নয়, আরো অনেক জায়গাতেই নরম পানীয় প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে তাই স্থানীয়রা লড়ছেন, যেমন মেহদি গঞ্জ, কালা ডেরা এইসব। এমনকি খোদ আমেরিকার নাপা কাউন্টির সিটি অফ আমেরিকান ক্যানিয়নেও কোকাকোলাকে ৭.৫৯ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে এই ভাবে পরিবেশ দূষণের জন্য। আর সেই কোকাকোলা যখন কোকাকোলা ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন বানায় জল-পরিবেশ-সুস্থ জীবনযাপন এবং সামাজিক অগ্রগতি-র জন্য, তখন কিনা সেই ফাউন্ডেশনের অ্যাডভাইসারি বোর্ডে যোগ দেন কেরালারই মানুষ শশী থারুর! স্বামীনাথন আর অজয়ন এই নিয়ে খোলা চিঠি দিলেন শশী থারুরকে ( http://openspace.org.in/node/833 )। শশী থারুর এর উত্তরে জানালেন যে ঐ ফাউন্ডেশনটি আসলে কোকাকোলা-র একটি "কর্পোরেট রেস্পন্সিবিলিটি', এবং এর সাথে কোকাকোলা কোম্পানীকে গুলিয়ে ফেলাটা ঠিক নয়। তিনি আরো বললেন যে কোকের বিরুদ্ধে তোলা ঐ অভিযোগগুলো কেরালা হাইকোর্ট আর কেরালা স্টেট পলিউশন ক®¾ট্রাল বোর্ড ভুল বলে জানিয়েছে। কাজেই এই সব অভিযোগ আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা, এবং এই সব কারণেই কেরালার যথেষ্ট উন্নতি হচ্ছে না, কোকের কারখানা বন্ধ থাকার জন্য বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। শুধু তাই নয়, কোকাকোলা ঐ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জল সরবরাহের কাজও করেছে। কাজেই এই ভাবে ওঁকে দোষারোপ না করে ঐ ফাউন্ডেশন থেকে সুপেয় জলের ব্যবÙথা, শক্তির উৎস ইত্যাদি নিয়ে যেটুকু কাজ করা হচ্ছে, তাকে উৎসাহিত করা হোক।( http://openspace.org.in/node/834 )

    এর উত্তরে স্বামীনাথন আর অজয়ন আবার একটি খোলা চিঠি দেন, যাতে তাঁরা বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে দেখিয়েছেন যে কোকের কারখানা মোটেই নির্দোষ বলে প্রমাণিত নয় ( http://openspace.org.in/node/835 )। এস ফৈজী, ইন্ডিয়া বায়োডাইভার্সিটি ফোরামের চেয়ারম্যান ও কেরালা গ্রাউন্ডওয়াটার অথরিটি-র সদস্য, একটি চিঠিতে জানান যে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই জানা যে ঐ গ্রামগুলিতে পানীয় জলের দুরবস্থার জন্য দায়ী কোকাকোলা, আর পানীয় জলের দূষণ ঘটানো একটি অপরাধ। ঐ লেখাটিতে ( http://openspace.org.in/node/836 ) তিনি শশী থারুরের আরো কিছু বক্তব্য নিয়েও মন্তব্য করেছেন, যা থেকে মোটেও মনে হয় না যে তিনি মনে করেন শশী থারুর একজন মডেল এম পি। মডেল এম পি হোন বা না হোন, সমাজের বিশিষ্ট এক মানুষ হিসেবেও তাঁর যা দায়িত্ত্ব, সেটুকুও কি পালন করতে পারলেন?

    জুন ৭, ২০০৯
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • খবর | ০৭ জুন ২০০৯ | ১৫৩০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন