এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ইসকুল-টিসকুল...

    রানা আলম লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৯২৮ বার পঠিত
  • ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস নিয়ে চারপাশের লোকজনেদের অনেক ভালো ভালো পোস্ট সোসাল সাইটে চোখে পড়লো। সেসব দেখে আমি নিজেও খানিক ভালো ভালো অভিজ্ঞতাগুলো মনে করার চেষ্টা করলাম। ভেবে দেখলুম, ছড়ি, বেত, নীল ডাউন হওয়া আর কান ধরে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো ভালো অভিজ্ঞতা আমার মাথায় আসছেনা।

    শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের নিয়ে আদিখ্যেতায় ভেসে যাওয়ার দিনে এসব বাজে বকলে এ সমাজ কি আমায় মেনে নেবে?

    মজার বিষয়টা হচ্ছে ইসকুল জীবনে যাদের কাছে মার খেয়েছি তাদেরকেই এই আধবুড়ো বয়সে দেখা হলেই প্রণাম ঠুকি। পেট চালাবার মতন কিছু একটা করতে পেরেছি জেনে তারাও বড্ড খুশি হোন। আশীর্বাদ করেন। চোখটা তখন অজান্তেই খানিক ভিজে যায়।

    জীবন বড় অদ্ভুত। তাই না কালী দা?

    কেমন আছেন এই বাংলার শিক্ষকেরা সেইটে জানার চেষ্টা খুব একটা হয়নি আজ অব্দি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ কেউ করে থাকতে পারেন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হয়ত সেভাবে হয়নি।

    সোসাল সাইটে এরাজ্যের শিক্ষকদের গ্রুপগুলোতে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় হল ডিএ। বকেয়া ডিএ কবে পাবো, কেন পাচ্ছিনা ইত্যাদি ইত্যাদি।শিক্ষক আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এক শিক্ষকনেতা আমায় একবার খুব আক্ষেপের সাথে বলেছিলেন যে তিনি দুজন শিক্ষককে বকেয়া ডিএ নিয়ে থিসিসসুলভ আলোচনা করতে দেখেন কিন্তু কখনই কোনো ক্লাস লেসন নিয়ে আলোচনা করতে দেখেন না।

    কথাটা উভয়তই সত্য। তবে এট্টু জিরেন দ্যান কর্তা। হেব্বি সিরিয়াস টপিক কিনা।

    এইমুহুর্তে বাজারদরের প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের বেতন পর্যাপ্ত নয়। পোস্ট গ্রাজুয়েট স্কেলের শিক্ষকরা পান শুরুতে ওই ৩২ হাজার মতন। গ্রাজুয়েট স্কেলের শিক্ষকরা হাজার ছাব্বিশ মতন। প্রাইমারির শিক্ষকরা আরও কম। শুরুতে ওই ১৪-১৫ মতন। এগুলো একটু রকমফের হতে পারে। তবে মোটের উপর এটাই।

    এসএসসি’র সুবাদে খুব কম শিক্ষকই বাড়ির কাছে পোস্টিং পান।বেশিরভাগকেই যাতায়াত করতে হয় বা বাড়ি থেকে দূরে থাকতে হয়। ট্রেন যোগাযোগ না থাকলে বাসে যাতায়াত করতে বেশ ভালো খরচ হয়।

    আজকের দিনে হাজার তিরিশ বেতন পাওয়া কারুর পক্ষে কি কোনো জেলাসদর শহরে বাড়িভাড়া নিয়ে পরিবার সমেত সবকিছু কিনে খেয়ে খুব স্বচ্ছন্দে থাকা সম্ভব? উত্তর হচ্ছে না।

    প্রপার শহর হলে দুকামরার বাড়িভাড়া গড়ে ছ-সাত হাজার টাকা। ইলেকট্রিক বিল আলাদা। অনেক জায়গায় জলের টাকাও নেয়। তার সাথে বাজার খরচ। পড়াশুনোর খরচ। ওষুধপত্র।

    যদি পোস্ট গ্রাজুয়েট স্কেলের শিক্ষকদের অবস্থা এরম হয় তাহলে প্রাইমারি শিক্ষকদের অবস্থা কেমন?

    আমি এক প্রাইমারি শিক্ষক কে চিনতাম। ভদ্রলোক বহরমপুর থেকে ধূলিয়ান যাতায়াত করতেন। রোজের ভাড়া আপ-ডাউন আশি টাকা। এরপরে সাইকেল গ্যারেজের ভাড়া আছে। ধূলিয়ান বাস স্টপে নেমে সেখান থেকে টোটোভাড়া আছে।কিছু বাস দু-পাঁচ টাকা কম ভাড়া নিত।

    আমি দেখেছিলাম এক কাঠাফাটা রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে সেই বয়স্ক শিক্ষকটি শনিবার দুপুরে হাফ ছুটির পর একের পর এক বাস ছেড়ে যাচ্ছেন সেই কম ভাড়ার বাসটির অপেক্ষায়।

    হাজার কুড়ি বেতনের মধ্যে হাজার দুয়েক যায় যাতায়াতে। এরপরে ছেলেমেয়ের স্কুলের খরচ আছে। বাজার খরচ আছে। ওষুধপত্রের খরচ আছে।

    লাটসাহেবের কুকুরের প্রতি ঠ্যাং এর খরচ কত মনে আছে তো?

    অনেকের মনে হতেই পারে যে এই টাকাটা যথেষ্ট। এর থেকেও কম টাকাতে এদেশে লোকে জীবনযাপন করে থাকেন। কোনোটাই ভুল কথা নয়। তবে কিনা বিপিএল তালিকাভুক্ত লোকটিও তো স্বাচ্ছন্দ্যে থাকার স্বপ্ন দেখেন । সেক্ষেত্রে শিক্ষকদেরও খানিক স্বাচ্ছন্দ্য আশা করাটা অন্যায় নয় বোধহয়।

    মুশকিল হচ্ছে শিক্ষকেরা বেতন বাড়াতে চাইলেই কিছু লোকের সমস্যা শুরু হয়। যে ভূমি রাজস্ব দপ্তরের করণিক উৎকোচ অর্থে মার্বেল শোভিত বাড়ি বাগান তিনি অব্দি শিক্ষকদের ডিএ’র দাবিতে অসন্তুষ্ট হোন।

    শিক্ষক মানেই বুনো রামনাথ। সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে।

    এবারের কয়েনের উল্টোপিঠে আসি। ধরা যাক, শিক্ষকেরা প্রাপ্যের ৭০% বেতন পাচ্ছেন। তাহলে তো তার অন্তত ৭০% কাজ করা উচিত। সেটাও কি হয়?

    রাজ্যের সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলোর গড়পড়তা হাল কিন্তু সেটা বলেনা। ASER নামের একটি বেসরকারি সংস্থা প্রতিবছর রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সার্ভে করে। আমিও কিছুকাল তাদের সাথে যুক্ত ছিলাম। বা প্রতীচির রিপোর্টও দেখা যেতে পারে। কোনোটাই কিন্তু আশাব্যঞ্জক নয়।

    এই সোসাল সাইটেই আমি একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম যে সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলে শিক্ষকতা করেন অথচ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিজের ছেলে মেয়েকে বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে না পড়িয়ে সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলে পড়াচ্ছেন এরকম ক’জন আছেন। অ্যাকাডেমিকস নিয়ে একটু আধটু চর্চা করে থাকি। সেহেতু শিক্ষকতার সাথে যুক্ত পরিচিত লোকজন নেহাত কম নয়। দেখলাম ওই হাতেগোনা কয়েকজনকে পাওয়া গেলো যাঁরা নিজেদের ছেলে মেয়েকে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি স্কুলে দেন নি।

    তাহলে সরকারি স্কুলে পড়াশুনা হয় না, এই আপ্তবাক্যটা সেখানে যাঁরা পড়ান তারাও বেশ ভালোভাবেই বিশ্বাস করেন। তাই নয় কি?

    এই পড়াশুনা না হওয়াটার দায় কি তাঁরাও এড়াতে পারেন?

    এই প্রশ্নের উত্তরে মোটামুটিভাবে যে উত্তরটা শুনেছি সেটা হল একটা ষাট সত্তর জনের ভিড়ে পূর্ণ ক্লাসে যেখানে অর্ধেক ছাত্রছাত্রী এর অক্ষরজ্ঞানটাই ঠিকঠাক থাকেনা সেখানে ঠিকঠাক শেখানোর আশা করাটা বাতুলতা মাত্র।

    এখন মাস্টার মশাইদের অভিযোগটা অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। গ্রামের দিকে ক্লাস নাইনের লার্নার পাওয়া যাবে অনেক যে নিজের নামটাও ঠিকঠাক লিখতে পারেনা। থিওরি মাফিক একটা ক্লাসে তিন ধরণের লার্নার থাকে। অ্যাডভান্সড, মিডল আর স্লো। মাস্টার মশাই ক্লাসে গিয়ে দেখেন তিন নয় আদতে তিরিশ রকম লার্নার রয়েছে। বেচারা মাস্টারমশাই বিএড পড়তে গিয়ে শিখে এসেছেন যে ক্লাসে ওই মিডল লার্নারদের দিকে তাকিয়ে পড়াতে হয়। এবার ক্লাসে এসে ভ্যাবাচাকা খান এটা খুঁজতে যে কোনগুলো নর্মাল, কোনগুলো সেমি নর্মাল আর কোনগুলোই বা প্যারা নর্মাল। উপস্থিতির হিসেব নেওয়া, সার অমুকে মেরেছে তার বিচার করা আর পড়া ধরতে না ধরতেই ক্লাসের চল্লিশ মিনিট ফুস করে কেটে যায়।

    কিন্তু এখানেই কি শেষ? প্রত্যেকটা ক্লাসে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী পিছিয়ে পড়া। তাদের আলাদা সময় দেওয়া সম্ভব নয়। বোঝা গেলো। কিন্তু খুব খারাপ ক্লাসেও পাঁচটা ভালো ছাত্রছাত্রী থাকে। তাদের তো ক্লাসের বাইরে অল্প সময় দিলেই চলে। সেটাও কি মাস্টার মশাইরা দিয়ে থাকেন?

    এইখানে খুব জরুরি ভূমিকা ছিল বিএড কোর্সটার। বিএড এ মূলত শেখানো হয় যে কীভাবে পড়াতে হয়। এত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাটা এই রাজ্যে বরাবরই অবহেলিত হয়ে এসেছে। আদ্যিকাল থেকে বিএড হচ্ছে কোনোরকমে শেষ করার মত একটা ডিগ্রি। সব্বাই ধরে নিলেন যে এমএ বা এমএসসি পাশ করা মানেই শিক্ষক হবার যোগ্যতা অর্জন করা। এমএ বা এমএসসি মানে সেই বিষয়ে মাস্টার হওয়া। সেই বিষয়টা কীভাবে পড়াতে হবে সেটা শেখার জায়গা কিন্তু বিএড।

    ক্লাসরুমে পরিবেশ কীভাবে বজায় রাখবেন। পিছিয়ে পড়া ছেলে মেয়েদের কীভাবে চিহ্নিত করবেন। ডিস্লেক্সিয়া বা ডিসগ্রাফিয়ায় কেউ ভুগছে কিনা সেটা কীভাবে ধরবেন। কেউ ম্যালঅ্যাডজাস্টমেন্টের শিকার কিনা সেটা কীভাবে দেখবেন। কোন টিচিং স্ট্র্যাটেজিতে কোন টিচিং এইডসের মাধ্যমে পড়ালে সবচেয়ে ভালো ফিডব্যাক পাবেন। এ সবকিছু শেখার জায়গা কিন্তু ওই বিএড।

    কিন্তু সেটা তো এই রাজ্যে নাম কে ওয়াস্তে পড়ানো হয়। পাশ করলেই হল। অগত্যা হবু শিক্ষক কীভাবে পড়াতে হবে সেসব কিস্যু শিখলেন না। ক্লাসে এসে নিজের অভিজ্ঞতামাফিক পড়ালেন। সেটা হয়ত খুব খারাপ হলনা। কিন্তু বিএড ঠিকঠাকভাবে করালে রেজাল্টটা আরও ভালো হতে পারতো।

    এবার আসবে পরিকাঠামো। সর্বশিক্ষার কল্যাণে প্রচুর ক্লাসরুম হয়েছে। কিন্তু আদর্শ ছাত্র শিক্ষক অনুপাত মেনে চলা হচ্ছেনা। অজস্র শিক্ষকপদ ফাঁকা।স্কুলে কম্পিটার প্রোজেক্টর এম্নিই পড়ে থাকে।কেউ কেউ হয়ত ব্যক্তিগত উদ্যোগে ব্যবহার করেন।অসংখ্য আপার প্রাইমারি জুনিয়র হাইস্কুল হয়েছে যেগুলোতে সব বিষয়ের শিক্ষক অব্দি নেই। মেইন আকাডেমিক আর কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজ এর পরিকাঠামোগত বিষয়ে ভালো বেসরকারি স্কুলগুলো যখন তখন পাঁচগোল দিয়ে যাচ্ছে সরকারি স্কুলগুলোকে।

    তার উপরে যুক্ত হয়েছে গুচ্ছের নন অ্যাকাডেমিক কাজ। মিড ডে মিলের হিসেব রাখা।ডাইস,কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, মাইনরিটি’র ফর্ম জমা দেওয়া, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলানো, ড্রেস, ব্যাগ, জুতো, সাইকেল বিলি করা। প্রতিদিন নানাবিধ রিপোর্ট পাঠানো। এগুলো কোনোটাই অপ্রয়োজনীয় বলছিনা। কিন্তু এটাও সত্যি যে এই কাজগুলোর জন্য কিছু শিক্ষককে সময় দিতে হয় সব স্কুলেই। এমনিতেই শিক্ষক কম। আর কিছু শিক্ষক যদি অন্য কাজে ব্যস্ত থাকেন তাহলে অ্যাকাডেমিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে বাধ্য।

    এখানে একটা মজার বিষয় আছে। এই যে জামা, জুতো, সাইকেল সবই কিন্তু সোসাল ইনসেনটিভ, অর্থাৎ স্কুলে আসার জন্য এক ধরণের উৎসাহভাতা বলা যেতে পারে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিকাঠামো এবং শিক্ষকবিহীন স্কুলে এসে কি ঘোড়ার ডিম লাভ হয় সেইটে নিয়ে কারুর কোনো ভাবনা নেই।

    ভাবখানা এই যে স্কুলে তো এসেছে। এই ঢের। আর সব্বাই লেখাপড়া শিখলে দেশটা চলবে কী করে সার?

    সবচেয়ে গোলমালের জায়গাটা হচ্ছে প্রাইমারি এডুকেশন। সব থেকে অবহেলিত। গ্রামের দিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা ক্লাস ফোর পাশ করে আসে তারা ইংরেজি দূরে থাক, বাংলাটাও ঠিক করে লিখতে পারেনা।ক্লাস ফাইভে এসে এদের নতুন করে কিছু শেখানোটা বড্ড কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। প্রাইমারি এডুকেশনের আগাগোড়া সংস্কার না করলে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি হওয়া অসম্ভব।

    তাহলে কি অনন্ত অভিযোগমালাতেই দায় খালাসের পালা সাঙ্গ হবে? নিম্নোক্ত কারণসমূহের জন্য সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলগুলোতে পড়াশুনো হয়না এবং এ বিষয়ে শিক্ষকদের কোনো দায় নেই ধর্মাবতার।

    এই ওকালাতানামাটুকু দেগে দিলেই কি দুই দুই এ চার হয়ে যাবে?

    আজ্ঞে না। হবে না। শিক্ষকতা কিন্তু আর পাঁচটা পেশার মতন নয়। এবং এমএ বা এমএসসি পাশ করলেই কিন্তু কেউ শিক্ষক হয়ে যায় না। শিক্ষকতা করা মানে মানুষ তৈরি করা।ছাত্র-ছাত্রীকে নিজের ছেলে মেয়ের মতন ভালোবাসতে হয়। যিনি শিক্ষক হবেন তার একটা ছাত্র-দরদী মন থাকতে হবে।

    ভবের বাজারে এই ছাত্র-দরদী মনটারই আজ বড্ড অভাব।

    শিক্ষকতা বর্তমানে দশটা-পাঁচটার চাকরির মতন হয়ে যাচ্ছে। ক্লাসে অংক পারতুম না বলে যে মাস্টার মশাই আমাকে থাপ্পড় কষাতেন, তিনিই মাধ্যমিক টেস্টের আগে বাড়িতে ডেকে অংক করাতেন যাতে পাশটা করতে পারি। যখন লেটার পেলাম। মাস্টার মশাই আনন্দে কেঁদে ফেললেন।

    সেই মাস্টার মশাইরা কোথায় গেলেন?যাদের স্কুল ছাড়ার সতেরো বছর পরেও রাস্তায় দেখলে ছুটে গিয়ে প্রণাম করতে ইচ্ছে করে।আমাদের প্রতিষ্ঠার গর্বে যারা গর্বিত হোন। তাঁরা কি সত্যিই হারিয়ে গেলেন? ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে প্রাণ ব্যাপারটা কি আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা?

    হারিয়ে বোধহয় যান নি। তবে সংখ্যাটা তো কমেছে ভালোই। শিক্ষকতা নিছক চাকরিতে পর্যবসিত হচ্ছে। তবে এরমধ্যেই কোথাও না কোথাও রূপোলি তো দেখাই যায়। SCERT এর প্রোজেক্টে গিয়ে দেখেছিলাম প্রত্যন্ত জেলা স্কুলগুলোতে কিছু মাস্টার মশাই সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে স্কুলের ছেলে মেয়েদের জন্য কত কী করে যাচ্ছেন।অপর্যাপ্ত পরিকাঠামোতেই ছাত্র-দরদী শিক্ষকেরা মানুষ তৈরির আলোকবর্তিকাকে জ্বালিয়ে রাখছেন ভব্যিষতের জন্য। তারা দেখাচ্ছেন কীভাবে ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতে অনেক পরিকাঠামোজনিত অভাব সহজেই ঢেকে দেওয়া যায় কী সহজে।

    এই হাজার অন্ধকারের যুগে এইসমস্ত মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের প্রণাম রইলো।

    বেশ একটা পজিটিভ এন্ডিং পাওয়া যাচ্ছিল। এইখানেই লেখাটা শেষ করে দিলে ভালো হত। তবে কিছু অপ্রিয় কথাবার্তা না বললেই নয়।

    স্বীকার করি বা না করি শিক্ষা এই মুহূর্তে একটি প্রথম সারির পণ্য। গ্রামের দিকের স্কুলগুলোতে ড্রপ আউটের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখেছিলাম গরিব অভিভাবক প্রশ্ন করছেন, ‘সার, পড়িয়ে কী হবে?’। অর্থাৎ, আমাদের সরকারি শিক্ষা কর্মসংস্থানমুখী নয়। এইখানে কেউ বারো ক্লাস পাশ করলেও কোনো কাজের নিশ্চয়তা পায় না।এবং ফ্রি এডুকেশন বলে যাই বমি করা হোক না কেন, শিক্ষাটা কিন্তু এখনও সেই অর্থে ফ্রি নয়। দু-আড়াইশো টাকা বছরে স্কুলের বেতন লাগে। খাতা কলম কিনতে হয়। অতিরিক্ত বই কিনতে হয়। স্কুলে পড়াশুনোটা হবেনা ধরেই আগাম প্রাইভেট দিতে হয়।সব মিলিয়ে খরচটা কিন্তু খুব কম হয়না।

    এবং এই ‘প্রাইভেট পড়ানোটা’ মাঝে মধ্যে খুব লজ্জার ঠেকে। মুর্শিদাবাদ বীরভূম সীমান্তের একটি গ্রামের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। স্কুলের ছেলে মেয়েরা কেন পড়ছেনা তার উত্তর অভিভাবকের কাছে চাওয়া হয়েছিল। গরিব অভিভাবকেরা জানিয়েছিলেন যে তাঁরা তো প্রাইভেট এ ভর্তি করে দিয়েছেন নিজেদের ছেলে মেয়েকে। তাও তারা কেন শিখছেনা সেটা বুঝতে পারছেন না।

    বাংলার শিক্ষক কুলের সামান্য প্রতিনিধি হিসেবে মাথাটা নিচু হয়ে গিয়েছিল। কারণ এই প্রায় অশিক্ষিত মানুষজনও কিন্তু নিজের ছেলে মেয়েকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য স্কুলের শিক্ষকদের উপর ভরসা করছেন না।

    আগেও বলেছি যে ঘাটতি কিন্তু শুধু পরিকাঠামোতে নেই। শিক্ষকদের মানসিকতাতেও আছে। অনেক শিক্ষক প্রাইভেট ট্যুইশনের টোল খুলে বসে থাকেন। কয়েকশো ছাত্র পড়ান। যে মাস্টার মশাই সকালে বিকেলে চারটে করে ব্যাচ পড়াচ্ছেন তিনি স্কুলে গিয়ে কী করে পড়াবেন? তিনি তো আর অতিমানব নন। এবং স্কুলে তো আর কৈফিয়ত নেওয়ার কেউ নেই। চল্লিশটা মিনিট কাটিয়ে আসতে পারলেই হল। জেলার খুব বড় স্কুলে গিয়ে দেখেছি মাস্টার মশাই চেয়ারের উপর বসে পায়ের উপর পা তুলে ‘অ্যা্য, তোরা রিডিং পড়’ বলে ঝিমোচ্ছেন।

    শিক্ষকেরা এ সমাজে কিন্তু শ্রদ্ধা হারাচ্ছেন। ধারাবাহিক সামাজিক অবক্ষয়ের সার্বিক কুপ্রভাব তো আছেই। তবে এর সাথে একটা বড় অংশের শিক্ষকদের ফাঁকিবাজির ভূমিকাও যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।যার ভুক্তভোগী হচ্ছেন সৎ শিক্ষকেরা।

    সংবিধান অনুসারে শিক্ষা পাওয়াটা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু বর্তমানে বকলমে প্রতিষ্ঠিত সত্য হল যে সরকারি স্কুলে কোয়ালিটি এডুকেশন পাওয়া যায় না। তার জন্য বেসরকারি স্কুলে যেতে হয়।চারিদিকে বেসরকারি স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি কিন্তু বেড়েই চলেছে।

    সম্ভাব্য বিপদ টা দেখতে পাচ্ছি কি?এক শিক্ষাবিদ বন্ধুর কাছ থেকে শুনছিলাম যে ক’দিন আগেই নীতি আয়োগ একটা হুমকি দিয়েছে যে এত টাকা ঢেলেও যখন সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছেনা তখন তা বেসরকারি করে দেওয়াটাই ভালো।

    সরকার পর্যাপ্ত বেতন দেয় না, পরিকাঠামো অপ্রতুল- সব সত্যি। তবে এর সাথে আমাদের মানসিকতাকেও প্রশ্ন থাকুক। পেটে লাথ পড়ার আগে ঘুরে দাঁড়ানোটা কিন্তু জরুরি।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ৯২৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kihobejene | ***:*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:০৫82030
  • boddo serious lekha hoye gelo je rana-da. tobe khub bhalo laaglo. bhalo analysis. konodin kichu korar icche aache kintu aamar theke onek boro hosti kadai aatke gechen ...
  • Du | ***:*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:৫৯82031
  • মানুষ এক আশ্চর্য প্রোডাক্ট যার কলটা চকচকে করলেই ফলটাও তেমনি নিটোল হয় না। তাই ধাঁধা রয়েই যায় মানুষ গড়ার কারিগরিতে।

    শিক্ষকদের প্রতি দিবস টাইপের ছুটিতে স্কুলে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক করেছে অসম সরকার। তাদের দিয়ে ছাত্রদের পরিবারের সকল স্বাস্থ্য সন্ক্রান্ত রের্ড নথিভুক্তও করাচ্ছে। তার ওপর বিভিন্ন পেশার লোকেদের দিয়ে তাদের ইভ্যালুয়েশন করাঅচ্ছে। শিক্ষকদের প্রতি সরকারের এইধরনের মনোভাব সরকারী শিক্ষার কি দিন ডেকে আনবে তা আমার বুদ্ধির বাইরে।
  • এবড়োখেবড়ো | ***:*** | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২২82034
  • "এইখানে খুব জরুরি ভূমিকা ছিল বিএড কোর্সটার। বিএড এ মূলত শেখানো হয় যে কীভাবে পড়াতে হয়। এত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাটা এই রাজ্যে বরাবরই অবহেলিত হয়ে এসেছে। আদ্যিকাল থেকে বিএড হচ্ছে কোনোরকমে শেষ করার মত একটা ডিগ্রি। সব্বাই ধরে নিলেন যে এমএ বা এমএসসি পাশ করা মানেই শিক্ষক হবার যোগ্যতা অর্জন করা। এমএ বা এমএসসি মানে সেই বিষয়ে মাস্টার হওয়া। সেই বিষয়টা কীভাবে পড়াতে হবে সেটা শেখার জায়গা কিন্তু বিএড।"

    ক. দুঃখজনক হলেও বিএড এত কিছু করার দায়িত্ব নেয় না। আমি নিজে আজ থেকে ২১ বছর আগে এ ডিগ্রিটা পেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় হয়ে, কিন্তু কিচ্ছু শিখতে পারিনি। কতগুলো থিওরি যার মাথামুণ্ডু কিছুই নেই তা শেখা, প্র্যাকটিস টিচিং-এ প্রচুর পুলটিসবাজি এবং ফাইনাল টিচিং-এর দিন বিশুদ্ধ পড়ানোর নাটক করে সত্তর শতাংশের ওপর নম্বর পেয়েছিলাম। ডেপুটেড শিক্ষকরা ওটাকে ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার যন্ত্র ভাবেন, ফ্রেশাররা ফার্স্ট ক্লাস পেতে যা যা করণীয় তা নির্দ্বিধায় করেন। তাছাড়া ভারতের আর কোনও চাকরিতে চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা না থাকলেও সে সম্পর্কিত ট্রেনিং-এর দরকার পড়ে না। যে ছেলেটা বা মেয়েটা দু'বছর 'নষ্ট' করে ওই ডিগ্রিটা অর্জন করবেন তাঁর সারা জীবনে সেটা কাজে নাও লাগতে পারে এটা ভাবলে তিনি সিরিয়াস হবেন কেন? অধ্যাপনা করতে যদি অতিরিক্ত যোগ্যতা না লাগে তবে কেবল শিক্ষকতা করতে তা জরুরি কেন হবে সেটাও ভাবার। তাও আবার দু'বছরের ধাক্কা!
    খ. আগের শিক্ষকরা সবাই হিরের টুকরো ছিলেন এমনটা ভাবার কোনও মানে হয় না। ফাঁকিবাজি আগেও ছিল, এখনও আছে। ভালো জিনিস কোনওকালেই বেশি বেশি হয় না। আসলে শিক্ষকদের ফাঁকিবাজি নিয়ে কথা বলার বা প্রশ্ন করার কেউ নেই। প্রধানরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্তাবক খোঁজেন এবং চুপ থাকেন আর বিদ্যালয় পরিদর্শনের প্রশ্নই নেই। প্রচুর শিক্ষক স্কুলে প্রশ্ন করেন, স্টাফরুমেই খাতা দেখেন চোদ্দরকমের ক্যালরব্যালরের মধ্যে। জিগ্যেস করলে হেসে বলেন স্কুলের কাজ তো স্কুলেই শেষ করতে হবে! আবার প্রচুর শিক্ষক যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথেই পড়ান, সে তিনি নতুনই হন বা পুরনো।
    গ. কলকাতা বা সন্নিহিত অঞ্চলের শিক্ষকদের কথা আলাদা কিন্তু মফস্‌সলের বা জেলা শহরের শিক্ষকরা কিন্তু তাঁদের ছেলেমেয়েদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করেন না। সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলেই তাদের পড়াশুনোর পাঠ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এ বিষয়ের সমর্থনে আপনি চেষ্টা করলেই প্রচুর তথ্য পেতে পারেন।
  • পৃথা | ***:*** | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১১:০৯82032
  • অত্যন্ত জরুরী লেখা।
  • Prativa Sarker | ***:*** | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১২:২৯82033
  • যমুনা নদীটিকে শেষ করে আর্ট অব লিভিং এর রবিশংকর কটকে বিশাল ইউনিভার্সিটি খুলে বসেছেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে পিঁপড়ের সারি যাচ্ছে সেখানে। রাম রহিমের গাদা কলেজ। শুধু প্রাইভেট টিউশন দিলে হবে ! স্বীকার করি বা না করি, ঘুরে দাঁড়াবার সময় চলে গেছে। শিক্ষা এখন পণ্য। ছাত্রদের মনোভাবও তাই আমূল পালটে গেছে। অভিভাবকদেরও।
    সারা জীবন তেঁতুলের ঝোল খেয়েছি এমন নয়, কিন্তু খুব কাছ থেকে দেখে একগন ভয়ানক অম্লশূল। তবু এমন লেখায় ভরসা বাড়ে। কেউ তো সিরিয়াসলি ভাবছে।
  • শান্তনু | ***:*** | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫৭82035
  • আমি শিক্ষকতার সাথে যুক্ত ছিলাম না কখনও । তবুও সরকারি কাজে কখনও স্কুলগুলিতে যেতে হয় । উদ্দেশ্য হল ছাত্র ছাত্রী দের মধ্যে উপভোক্তা সচেতনতা তৈরি । সেদিন গেলাম দুই চব্বিশ পরগনার বর্ডারের একটি স্কুলে । প্রত্যন্ত এলাকা । দেখলাম কী আগ্রহ নিয়ে ইউনিফর্ম পরা ছেলেমেয়ে গুলি আমার আনাড়ী বক্তব্য শুনে গেল । এমনকি পরে প্রশ্নও করল কেউ কেউ । পড়াশুনোর মান কেমন জানিনা । কিন্তু ওই অঞ্চলের এতগুলি ছেলেমেয়ে জীবনের দশ বারো বছর স্কুলে কাটাচ্ছে । এর থেকে ভাল কিছু হতে পারেনা । ক্লাস হচ্ছে । পড়াশুনোর পরিবেশ পাচ্ছে । কোন বেসরকারি স্কুল আমতলিতে গিয়ে স্কুল করবে ? কেনই বা করবে? সেখানের ছেলেমেয়েরা আকাশচুম্বি ফীজ দিতে পারবেনা । মানে বাণিজ্যের পরিভাষায় বলা যায় শিক্ষার মারকেট নেই । সত্যিই শিক্ষার বেসরকারিকরণ হলে কী দশা হবে তা ভাবতে ভয় হয় ।
    আর একটি প্রসঙ্গ উত্থাপন করি । শহরতলির - মফস্বলের তথাকথিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের পড়ানোর মান খুব ভাল , এমন ভাবার পেছনে কী কারণ আছে জানিনা । খুব কম বেতনে পড়াবেন সচরাচর এমন শিক্ষক শিক্ষিকাই রাখা হয় বেশীরভাগ এই ধরনের স্কুলগুলিতে। প্রোজেক্টর দিয়ে ক্লাস হয় হয়তো কিন্তু শিক্ষার মান ওতেই কয়েক যোজন এগিয়ে গেল এমন ধারণা বোধহয় ঠিক নয় । তাছাড়া এই স্কুলগুলিতে শিক্ষকতা পাওয়ার জন্য পরীক্ষা হয় বলেও শুনিনি । হাতে গোনা বড় শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুল ছাড়া বাকিদের অবস্থা বোধহয় অনেকটা এ রকমই ।
  • শান্তনু | ***:*** | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫৭82036
  • আমি শিক্ষকতার সাথে যুক্ত ছিলাম না কখনও । তবুও সরকারি কাজে কখনও স্কুলগুলিতে যেতে হয় । উদ্দেশ্য হল ছাত্র ছাত্রী দের মধ্যে উপভোক্তা সচেতনতা তৈরি । সেদিন গেলাম দুই চব্বিশ পরগনার বর্ডারের একটি স্কুলে । প্রত্যন্ত এলাকা । দেখলাম কী আগ্রহ নিয়ে ইউনিফর্ম পরা ছেলেমেয়ে গুলি আমার আনাড়ী বক্তব্য শুনে গেল । এমনকি পরে প্রশ্নও করল কেউ কেউ । পড়াশুনোর মান কেমন জানিনা । কিন্তু ওই অঞ্চলের এতগুলি ছেলেমেয়ে জীবনের দশ বারো বছর স্কুলে কাটাচ্ছে । এর থেকে ভাল কিছু হতে পারেনা । ক্লাস হচ্ছে । পড়াশুনোর পরিবেশ পাচ্ছে । কোন বেসরকারি স্কুল আমতলিতে গিয়ে স্কুল করবে ? কেনই বা করবে? সেখানের ছেলেমেয়েরা আকাশচুম্বি ফীজ দিতে পারবেনা । মানে বাণিজ্যের পরিভাষায় বলা যায় শিক্ষার মারকেট নেই । সত্যিই শিক্ষার বেসরকারিকরণ হলে কী দশা হবে তা ভাবতে ভয় হয় ।
    আর একটি প্রসঙ্গ উত্থাপন করি । শহরতলির - মফস্বলের তথাকথিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের পড়ানোর মান খুব ভাল , এমন ভাবার পেছনে কী কারণ আছে জানিনা । খুব কম বেতনে পড়াবেন সচরাচর এমন শিক্ষক শিক্ষিকাই রাখা হয় বেশীরভাগ এই ধরনের স্কুলগুলিতে। প্রোজেক্টর দিয়ে ক্লাস হয় হয়তো কিন্তু শিক্ষার মান ওতেই কয়েক যোজন এগিয়ে গেল এমন ধারণা বোধহয় ঠিক নয় । তাছাড়া এই স্কুলগুলিতে শিক্ষকতা পাওয়ার জন্য পরীক্ষা হয় বলেও শুনিনি । হাতে গোনা বড় শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুল ছাড়া বাকিদের অবস্থা বোধহয় অনেকটা এ রকমই ।
  • শান্তনু | ***:*** | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫৭82037
  • আমি শিক্ষকতার সাথে যুক্ত ছিলাম না কখনও । তবুও সরকারি কাজে কখনও স্কুলগুলিতে যেতে হয় । উদ্দেশ্য হল ছাত্র ছাত্রী দের মধ্যে উপভোক্তা সচেতনতা তৈরি । সেদিন গেলাম দুই চব্বিশ পরগনার বর্ডারের একটি স্কুলে । প্রত্যন্ত এলাকা । দেখলাম কী আগ্রহ নিয়ে ইউনিফর্ম পরা ছেলেমেয়ে গুলি আমার আনাড়ী বক্তব্য শুনে গেল । এমনকি পরে প্রশ্নও করল কেউ কেউ । পড়াশুনোর মান কেমন জানিনা । কিন্তু ওই অঞ্চলের এতগুলি ছেলেমেয়ে জীবনের দশ বারো বছর স্কুলে কাটাচ্ছে । এর থেকে ভাল কিছু হতে পারেনা । ক্লাস হচ্ছে । পড়াশুনোর পরিবেশ পাচ্ছে । কোন বেসরকারি স্কুল আমতলিতে গিয়ে স্কুল করবে ? কেনই বা করবে? সেখানের ছেলেমেয়েরা আকাশচুম্বি ফীজ দিতে পারবেনা । মানে বাণিজ্যের পরিভাষায় বলা যায় শিক্ষার মারকেট নেই । সত্যিই শিক্ষার বেসরকারিকরণ হলে কী দশা হবে তা ভাবতে ভয় হয় ।
    আর একটি প্রসঙ্গ উত্থাপন করি । শহরতলির - মফস্বলের তথাকথিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের পড়ানোর মান খুব ভাল , এমন ভাবার পেছনে কী কারণ আছে জানিনা । খুব কম বেতনে পড়াবেন সচরাচর এমন শিক্ষক শিক্ষিকাই রাখা হয় বেশীরভাগ এই ধরনের স্কুলগুলিতে। প্রোজেক্টর দিয়ে ক্লাস হয় হয়তো কিন্তু শিক্ষার মান ওতেই কয়েক যোজন এগিয়ে গেল এমন ধারণা বোধহয় ঠিক নয় । তাছাড়া এই স্কুলগুলিতে শিক্ষকতা পাওয়ার জন্য পরীক্ষা হয় বলেও শুনিনি । হাতে গোনা বড় শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুল ছাড়া বাকিদের অবস্থা বোধহয় অনেকটা এ রকমই ।
  • Shranbani Mukhopadhyay | ***:*** | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৮82038
  • পণ্যায়িত বিশ্বে, উদারনীতির উদারতার যুগে Connectivity বাড়ছে relation র মূল্যে রে, রানা৷শিক্ষা বা শিক্ষকতা তার ব্যতিক্রম হয় কি করে ?কেউ নিজেকে প্রশ্ন করে না, 'কেন করছি'?সবাই শুধু অনুকরণ করে,ভাবা অভ্যেস করে না রে৷spare the rod, spoil the child: চলেছিল, কারণ সমাজ আস্থা রেখেছিল৷ আজ আস্থা, "পেরাইভেটে"!
  • Arindam | ***:*** | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:৩৮82039
  • "শিক্ষকেরা এ সমাজে কিন্তু শ্রদ্ধা হারাচ্ছেন। " - খুব সত্যি কথা। তবে এটা আজকের বিষয় নয় - শিক্ষকতার মান আমাদের ছাত্রাবস্থা থেকেই ক্রমাগতঃ পড়ছে। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন জীবনযাপনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর তুমুল কর্পোরেট পেশাদারিত্ব মোটামুটি ভাবে ৯০ দশকের শেষের দিক থেকেই private tution - নামধেয় সমান্তরাল "শিক্ষা"(?)ব্যবস্থাটার মধ্যে ভয়ংকর ভাবে চলে এসেছিল, তবে তা মূলতঃ কলকাতার কিছু নামী গৃহশিক্ষকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল । ক্যান্সারের মত এই রোগ আরও ছড়িয়েছে সন্দেহ নেই।শ্রদ্ধা হারানোটাও তাই সমানুপাতে বেড়েছে।
  • পৃথা | ***:*** | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১০:১৮82040
  • লেখাটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। আমি ছাত্রজীবনে আর দশ বছরের শিক্ষক জীবনে এই supervision বনাম work culture er মধ্যে কোন সামঞ্জস্য খুজে পাইনি।সরকারি স্কুল কলেজে পড়ে এমন শিক্ষক দেখেছি যারা পরীক্ষা র আগে বাড়িতে ডেকে নিয়ে পড়াতেন। আবার রিডিং পড়তে দিয়ে ঝিমোচ্ছেন এমনও হত। private school e চাকরি করে দেখলাম এখানে student দের সুবিধা ই শেষ কথা। teacher দের রোবট বলেই ভাবা হয়।pay commission আর d.a বৃদ্ধি র সাথে সাথেই শিক্ষক দের কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা , তা সে কাজ লোকদেখানো হোক বা যাই হোক, কতৃপক্ষের টনটনে নজর। এমতাবস্থায় অনিচ্ছুক শিক্ষক ও খানিকটা quality teaching e বাধ্য হন। ফাঁকি মারার উপায় নেই। কিন্তু মনোযোগী দায়িত্ব শীল শিক্ষক মানুষ থেকে রোবট হয়ে যান। তাই ভাবি কোনটা সঠিক উপায়। আমার একজন সরকারি শিক্ষক বন্ধু স্কুলের বাচ্চাদের কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাওয়া টাকে বাড়ির বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও যাওয়ার সাথে তুলনা করে। আমি নিজের মধ্যে কোথাও এই দরদ খুজে পাই না। যথাসাধ্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ই সমস্ত শক্তি খরচ হয়ে যায়। কোন সমতামূলক ব‍্যবস্থা শিক্ষা ব‍্যবস্থা য় সম্ভব কিনা জানিনা।
  • রাণা আলম | ***:*** | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৫৯82041
  • সাধ্যমত উত্তর দেবার চেষ্টা করছি। বিএড ডিগ্রি টা অকেজো হয়ে গেছে তার দায় বিএড ডিগ্রি টার নয়। দোষ টা হচ্ছে আমাদের শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকাঠামোর যেখানে না বিএড ডিগ্রি টা ঠিক করে করানো হয় না সেটা কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগ করার জায়গা থাকে। আমি বছর পাঁচেক একটি প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলে পড়িয়েছি এবং বর্তমানে শহরের কলেজে পড়াই। আমার সামান্য অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে যে বাচ্চাদের পড়ানোটা খুব সহজ কাজ নয়। এবং এই সহজ ভাবাটাই হয়ত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার কাল হয়েছে। কলেজে যারা পড়তে আসে তারা অলরেডি ১২ বছর স্কুলিং এ ছিল এবং এক্সপেক্টেড যে তারা অনেকখানি কন্ডিশনড হয়েই আসে। সেক্ষেত্রে তাদের কন্ডিশনড করার দায় অনেকটাই থাকেনা। কিন্তু ক্লাস ফাইভের একটা ক্লাস যেখানে অর্ধেক ছেলে মেয়েই ফার্স্ট জেনারেশন লার্নার তাদের সামলিয়ে পড়ানোটা সবসময় সহজাত ক্ষমতায় নাও হতে পারে।

    ফর এক্সাম্পল, আমি স্কুলে ইংরেজি পড়াতাম। আমার মাস্টার্স ছিল ইংরাজী সাহিত্যের উপর। গ্রাজুয়েশন, মাস্টার্স মিলিয়ে পাঁচ বছরে আমি কোথাও পড়িনি যে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরাজি কিভাবে পড়াতে হয়। বিএড ডিগ্রি যেহেতু একটা প্রহসনে দাঁড়িয়েছে তাই ওটার কার্যকারিতা ধরছিনা। সটান স্কুলে গিয়ে যখন ইংরাজি পড়াতে হয়েছে তখন ব্যক্তি অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করতে হয়েছে যেটা খুব কাজের কথা নয়।

    পেটের দায়ে কলকাতাতে থাকতে হলেও আদতে আমি জেলা শহরের লোক। সেখানকার একটা অবজার্ভেশন বলি। আমার শহর বহরমপুর। সেখানে ভালো সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল যেমন আছে তেমনই ঝাঁ চকচকে প্রাইভেট স্কুলও আছে। আমি দুরকম প্রবণতাই পেয়েছি।তবে বর্তমানে ইংরাজী মাধ্যম স্কুলগুলোর প্রতি আগ্রহ বেশি। এবং RTI চালু হবার পর যেহেতু ভালো সরকারী স্কুলগুলো অ্যাডমিশন টেস্ট নিয়ে আর ভর্তি করতে পারছেনা এবং কাছে বাড়ি হবার সুবাদে গঙ্গার ধারের হরিজন কলোনির বাচ্চারা ভর্তি হয়ে যাচ্ছে অনায়াসে সেহেতু অভিভাবকরা উৎসাহ হারাচ্ছেন।
  • রাণা আলম | ***:*** | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৫:১৫82042
  • চাইল্ড লেবার দের নিয়ে একটা প্রোজেক্টের বেস স্টাডি করতে গিয়ে গ্রামীণ পশ্চিমবঙ্গে প্রাইমারি স্কুলগুলোর কি খারাপ দশা সেটা দেখেছিলাম। সর্বশিক্ষার কারণে পরিকাঠামো অনেক ভালো হয়েছে। তবে এখনও অনেকটা যেতে হবে। স্কুল এডুকেশন রিপোর্ট ১৩-১৪ অব্দি দেখেছি। সেখানেও উন্নতির অনেক অবকাশ ছিল। পাশ ফেল না থাকার দরুণ প্রায় কিছু না শিখেই বহু বাচ্চারা ক্লাস ফাইভে উঠে আসে। প্রাইভেট টিউশন আর সচেতন গার্জেনদের উপরই যখন ছেলে মেয়েদের আকাডেমিক সাফল্য নির্ভর করতে শুরু করে তখন বুঝতে হবে যে শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা বড়সড় গলদ থেকে যাচ্ছে।

    আর আগেও মাস্টার মশাই রা ফাঁকিবাজ ছিলেন না এমনটা নয়। তবে এখন বোধহয় পরিমাণ টা বেড়েছে। আর আগের মতন ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক সেভাবে দেখা যায় না। তার জন্য ভারচুয়াল জগতের বাড়বাড়ন্ত দায়ী কিনা জানিনা।

    আমার আশংকা হচ্ছে যে সরকারী স্কুল এডুকেশন সিস্টেম প্রোডাকটিভ নয় এই অজুহাতে এর বেসরকারীকরণ শুরু হবে। এরমধ্যেই কেন্দ্র বেসুরো গাইছে। যেসব শিক্ষকরা চাকরিটা কে মৌরসী পাট্টা ভেবে বিন্দুমাত্র নিজেদের আকাডেমিক ডেভেলপমেন্ট এ নজর দেন নি তারা ঘাড়েধাক্কা খাবেন। আর গরিবদের পড়ার সূযোগ আরও কমে যাবে।

    ভোকেশনাল এডুকেশন নিয়ে কোনো একটা সরকারী কমিটির রিপোর্টে পড়েছিলাম যে যেসব গরিব বাচ্চারা প্রথাগত পড়াশুনোতে এগোতে পারবেনা তাদের জন্যই ভোকেশনাল এডুকেশন। ভাবা যায়? মানে ধরেই নেওয়া হচ্ছে যে আমরা একটি যোগ্য গরিব বাচ্চাকে প্রথাগত পড়াশুনোতে এগোনোর সূযোগ সবসময় নাও দিতে পারি এবং বড়লোক বাচ্চাটি যোগ্যতা না থাকলেও প্রথাগত পড়াশুনোটা করে যেতে পারে।
  • এবড়োখেবড়ো | ***:*** | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৫:৩১82043
  • দীর্ঘদিন পর আপনার লেখা পাওয়ায় ভালো লাগল। আপনি নিজেই বলেছেন 'বিএড ডিগ্রি টা অকেজো হয়ে গেছে তার দায় বিএড ডিগ্রি টার নয়। দোষ টা হচ্ছে আমাদের শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকাঠামোর যেখানে না বিএড ডিগ্রি টা ঠিক করে করানো হয় না সেটা কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগ করার জায়গা থাকে।' এই শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকাঠামোর অভাব শুধু বি এড নয় সর্বত্র দৃশ্যমান। গ্র্যাজুয়েশন-মাস্টার্স মিলিয়ে যে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য আপনি পড়েছেন তার পাঁচ শতাংশও বোধ হয় স্কুলে পড়ানোর ক্ষেত্রে কাজে লাগেনি। রবার্ট ফ্রস্টের একটি কবিতা ছাড়া বাদবাকি ইংরেজির সিলেবাসে যা থাকে বা ছিল তাও সম্ভবত আপনি পড়ে আসেননি এবং সেসব পড়াতে এইচ এস-এর পর কেন পাঁচ বছর ইংরেজি পড়তেই হবে সেটাও বোধগম্য হয়নি।

    বি এড-এ অকারণ দু'বছর নষ্ট না করে সরকার বরং টেক্সট ধরে ধরে কীভাবে আদর্শ উপায়ে পড়ানো যেতে পারে তার সম্ভাব্য রূপরেখা ভিডিও ফর্ম্যাটে প্রস্তুত করে জেলায় জেলায় দিলে তা অনেক বেশি কাজের হয় বলে বিশ্বাস। এতে সরকারের খরচ কমে, সময় নষ্টও অনেক কম হয়। কিন্তু কতগুলো বি এড কলেজ ও তাদের অধ্যাপকদের বাঁচাতে সরকারের প্রচেষ্টা আদতে কোনও কাজেই লাগে না।

    মফস্‌সল শহরগুলোতে ইংরেজি মাধ্যমে অনেকে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করছেন ঠিকই কিন্তু সেখানে যাঁরা পড়ান তাঁদের সবার যোগ্যতা সন্দেহের উর্ধ্বে নয়। বিশেষত নবম-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের গৃহশিক্ষক খুঁজে বের করা যে কী ঝকমারি সেটা তাঁদের অভিভাবকরা হাড়ে হাড়ে টের পান।
  • Du | ***:*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:৪৪82044
  • ভিডিও ফর্ম্যাটে বানানোর ক্ষেত্রেও তো করাপশন আসবে আর অকর্মন্যতা মাল্টিফোল্ডে প্রচারিত হবে যেখানে কলেজগুলোতে ভালো শেখানোর আশা তাও আছে ল অফ অ্যাভারেজে।
  • এবড়োখেবড়ো | ***:*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০৩82045
  • "ভিডিও ফর্ম্যাটে বানানোর ক্ষেত্রেও তো করাপশন আসবে আর অকর্মন্যতা মাল্টিফোল্ডে প্রচারিত হবে যেখানে কলেজগুলোতে ভালো শেখানোর আশা তাও আছে ল অফ অ্যাভারেজে।" একটু ডিটেলে লিখবেন এই 'করাপশন আর অকর্মন্যতা' বিষয়ে?
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১০:০১82046
  • "ভবের বাজারে এই ছাত্র-দরদী মনটারই আজ বড্ড অভাব।

    শিক্ষকতা বর্তমানে দশটা-পাঁচটার চাকরির মতন হয়ে যাচ্ছে। ক্লাসে অংক পারতুম না বলে যে মাস্টার মশাই আমাকে থাপ্পড় কষাতেন, তিনিই মাধ্যমিক টেস্টের আগে বাড়িতে ডেকে অংক করাতেন যাতে পাশটা করতে পারি। যখন লেটার পেলাম। মাস্টার মশাই আনন্দে কেঁদে ফেললেন।

    সেই মাস্টার মশাইরা কোথায় গেলেন?"

    এটিই স্কুল শিক্ষার বেহাল দশার মোদ্দা কথা। অবহেলিত শিক্ষক সমাজও আছেন! লেখাটি খুব ভাবাচ্ছে, চলুক।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন