আমার সবার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছেঃ আমরা কোন একটা লক্ষণ নিয়ে বেশি জোর দিচ্ছি।.১ঠিক যেমন জাতি বা জাতিসত্তা নিয়ে হয়।
১ একটা জাতির পরিচয় গড়ে উঠতে অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে।
অখন্ড ভূ খন্ড, ভাষা, সংস্কৃতি এবং ধর্ম।
কোন জাতিবিশেষের গঠনে সবগুলো ফ্যাক্টর সমান ক্রিয়াশীল হবে এমন তো নয়।
পাকিস্তান গঠনে ধর্ম ছিল প্রধান ভূমিকায়। আবার বাংলাদেশ গঠনে বাঙালী আইডেন্টিটি প্রশ্নে ধর্ম নয়, ভাষা মুখ্য ভূমিকায়।
তেমনই ইউরোপের জাতিয়তা বোধে ক্রিশ্চানিটি মুখ্য নয়, কোথাও ভাষা, কোথাও সংস্কৃতি।
২ একইভাবে ভাষার পরিচয়ে লিপি, শব্দমালা, ধর্ম ও সংস্কৃতি সবগুলো ফ্যাক্টর, কিন্তু সর্বত্র সমানভাবে নয়।
এখানে বিতর্কে আমরা কোন একটা লক্ষণকে বেশি জোর দিয়ে লড়ে যাচ্ছি (আমিও ব্যতিক্রম নই)।
যদি লিপিকে মুখ্য ধরি তাহলে উর্দু ও হিন্দি আলাদা ভাষা। না ধরলে একই মূল। অন্ততঃ হিন্দুস্তানি ও উর্দূ।
কিন্তু বাংলা ও আসামী একই লিপি হয়েও আলাদা ভাষা। কেন? শব্দ আলাদা? বোধগম্যতার প্রশ্ন?
কিন্তু ওড়িয়া ও বাংলায় কেবল লিপি আলাদা। শব্দ ও বোধগম্যতা কোন বাধক নয়। ওড়িয়ারাও সহজে বাংলা বোঝে, বাঙালিও সহজে ওড়িয়া বোঝে। তাহলে আলাদা কী? কেবল লিপি!
৩ অর্থাৎ এসবই বাহ্য পরিচয়। কোনটাকেই অন্তিম পরিচয়ের লক্ষণ বলে ধরা যাচ্ছে না। তাহলে কী সেই লাখটাকার ফ্যাক্টর যা একটা ভাষাকে অন্য ভাষাকে আলাদা করে?
আমি জানি না। অনুমান করি সেটা হোল যারা সেই ভাষা বলে সেই মানবসম্প্রদায়ের ভাবনা।
জাতিসত্তার ক্ষেত্রেও নেশন স্টেট গড়ার ক্ষেত্রেও এটাই নির্ণায়ক ফ্যাক্টর হয়েছে। তাই সব জার্মান ভাষাভাষী দেশ এক রাষ্ট্রে থাকতে চায় না। উক্রেইন রাশিয়ার থেকে স্বতন্ত্র দেশ হ্যে যায়। ভুখন্ড, ধর্ম , ভাষা গৌণ ফ্যাক্টর হয়ে যায়।
কমন কালচার, গুরুত্বপূর্ণ হলেও, একা নির্ণায়ক হয় না।
তেমনই ভাষার ক্ষেত্রেও শুধু লিপি বা শুধু শব্দ একমাত্র নির্ণায়ক হয় না। যদি দুটো ফ্যাক্টরই আলাদা হয় তাহলে তো সোনায় সোহাগা। কিন্তু এগুলোও ক্যাটালিস্ট মাত্র, জনগোষ্ঠীর ভাবনাকে শক্তি দেয় এইটুকুই।
আপনারা বলুন। আমি বুঝতে চাইছি।