গেট দিয়ে বের হয়ে আসার সময় তাদের ভেতরে এক ধরনের বিস্ময় কাজ করে। সত্যিই কি পৃথিবীর অদ্ভুত প্রান্তে এসে পৌঁছেছি? মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে জীববৈচিত্র্যে উচ্চাতর পড়ারশোনার শুরুতে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাদের পরবর্তী ভ্যাকেশন ট্যুর হবে আগুন ও বরফের দেশ খ্যাত পুরোপুরি সমুদ্র বেষ্টিত আইসল্যান্ড। সিদ্ধান্তে পুলকিত হয়ে তাদের চুমো খাওয়া আরো বেড়ে গিয়েছিল। এখানে আসতে পেরে সত্যি তারা সজীবতা অনুভব করছে।
মেঘলা ও অর্ণব দুজন একে অপরের হাত আঁকড়ে ধরল। বাইরে তাকিয়ে মেঘলা হেসে বলল,
অর্ণব, দেখ! যেন অন্য কোনো গ্রহের দৃশ্য। কালো পাথর, সাদা বরফ ও নীল সমুদ্র। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না।
অর্ণব মৃদু চুমু খেল মেঘলার গালে।
তোমার চোখের ভেতরেও তো এমন হাজারো গ্রহ আছে, মেঘ। আমি প্রতিদিন সেগুলো ঘুরে দেখি আর অবাক হই।
মেঘলা লাজুক ভঙ্গিতে তার হাতটা আরও শক্ত করে ধরল। তাদের ভেতরের উত্তেজনা, রোমাঞ্চ ও ভালোবাসার উষ্ণতা নতুন পরিবেশকে আরও উজ্জ্বল করে তুলল।
মেঘলা শীতের ঝাঁকুনি খেয়ে কেঁপে উঠল।
অর্ণব সঙ্গে সঙ্গে জড়িয়ে ধরল তাকে।
শীতকে ভয় পেয়ো না।
মেঘলা খিলখিল করে হেসে উঠল।
শীতকে ভয় পাইনি, তোমার বুকে লেগে থাকতে ইচ্ছে হলো।
একটু থেমে মেঘলা বিস্ময়ে চোখ বড় বড় করে বলল, অর্ণব, দেখছো তো? যেন স্বপ্নপুরী।
অর্ণব তার চুলে হাত বুলিয়ে বলল,আমার স্বপ্নপুরী তুমি। তোমার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত।
মেঘলা হেসে বলল, তুমি কথার জাদুকর!
না, ভালোবাসার জাদুকর। বলে আবার চুমু খেল মেঘলার ঠোঁটে।
বাইরে বের হতেই ঠান্ডা বাতাস শরীরে আঘাত করল। শোঁ শোঁ শব্দে বাতাস বইছে। মেঘলা ঠোঁট কামড়ে বলল, আহা, কী তীব্র ঠান্ডা! আমি জমে যাচ্ছি।
অর্ণব তার জ্যাকেট খুলে মেঘলার কাঁধে জড়িয়ে দিয়ে বলল, ভয় নেই। তুমি বরফ হলে আমি তোমাকে আদর করে আবার স্বাভাবিক করে দিব।
না হেসে পারল না মেঘলা। অর্ণবের ভালোবাসা এমনই সারাক্ষণ তাকে ভাসিয়ে দেয়। হেসে বলল,
তাহলে স্বাভাবিক করো।
অর্ণব তাকে জড়িয়ে ধরে ঠান্ডা হাওয়ায় উষ্ণ চুমু খেল। চারপাশের যাত্রী তাদের দিকে হাসিমুখে তাকাল। তারুণ্যের আবেগ নিজেদের মধ্যে অনুভব করল।
ট্যাক্সিতে চলতেই দেখা গেল কালো লাভার মাঠ দূরে সাদা বরফ। আকাশে ঝুলে থাকা হালকা মেঘ। মেঘলা বলল, এখানে সবকিছু এত নির্জন, ভিন্ন। মনে হয় সত্যিই পৃথিবীর শেষ প্রান্তে এসেছি।
অর্ণব তার হাত ধরে ঝাকিয়ে ফিসফিস করে বলল, হ্যাঁ, শেষ প্রান্তে এসেছি।
মেঘলা চোখ মিটিমিটি করে তাকাল,
তাহলে শুরুটা কেমন হবে?
অর্ণব তার কানে ফিসফিস করে বলল,
একটা লম্বা চুমু দিয়ে।
ওরা আবার চুমু খেল। তাদের চুমুর খেলায় ট্যাক্সির কাঁচের বাইরে জমে থাকা বরফ যেন উষ্ণ হয়ে গলতে শুরু করল।
শহরে ঢুকে রঙিন ঘরবাড়ি দেখল। ছোট ছোট কাঠে তৈরি ঘরের ছাদে তুষার জমে আছে।
মেঘলা বলল, এমন সুন্দর শহর আমি কোনো সিনেমাতেও দেখিনি।
অর্ণব তার কাঁধে মাথা রেখে বলল,
আমরা যদি এখানে থেকে যাই, তুমি রাজি?
মেঘলা অবাক হয়ে বলল, না। নিশ্চয়ই আমি একদিন দেশে ফিরব।
অর্ণব হাসে, দেশ থাকবে হৃদয়ে। পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেন, তুমি পাশে থাকলেই আমার দেশ, আমার ঘর পূর্ণ হবে।
মেঘলার চোখ ভিজে উঠে। সত্যি। তুমি ছাড়াও আমার ঘর অপূর্ণ।
ওরা হোটেলে পৌঁছে। । জানালার বাইরে সমুদ্র দেখা যায়। দূরে বরফাচ্ছন্ন পাহাড়। মেঘলা জানালার কাছে দাঁড়িয়ে বলল, অর্ণব। দেখ, সমুদ্র যেন গান গাইছে।
অর্ণব পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল তাকে।
হ্যা, শুনছি আমি। আমাদের ভালোবাসার গান।
মেঘলা বলল, তুমি যদি কবি হতে পৃথিবীর সবচেয়ে রোমান্টিক কবিতা লিখতে।
অর্ণব ফিসফিস করে বলল,
আমিতো কবিই। আমার কবিতা, তুমি।
হোটেল থেকে তাদের স্বাগত লাঞ্চ দেওয়া হয়। ভেড়ার মাংসের স্যুপ, সালমন ও হ্যাডক মাছ। আলু ও পেয়াজ দিয়ে তৈরি প্লক-ফিস্কুর। দইয়ের মত দুধ জাতীয় খাবার স্কির এবং আগ্নেয়গিরির তাপে তৈরি গাঢ় রংয়ের রুটি। সবশেষে ভাজা মিষ্টি ক্লাই-নর খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে।
সন্ধ্যায় দুজন হাত ধরে বের হল। ঠান্ডা বাতাস কেটে হেঁটে যাচ্ছে রঙিন রাস্তা দিয়ে।
মেঘলা বলল, আমার হাতটা জোড় করে ধরো।
অর্ণব হাসল, ওর আঙুল মুঠো করে ধরল।
আরো উষ্ণতা চাই।
অর্ণব সাথে সাথে তার ঠোঁট মেঘলার ঠোঁটে মেশাল। হালকা তুষারপাতে চুমুর উষ্ণতায় মনে হচ্ছিল তারা যেন গ্রীষ্মের রোদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
মেঘলা মিষ্টি গলায় বলল, তুমি আছো বলেই শীতও রোমান্টিক মনে হচ্ছে।
অর্ণব হেসে উত্তর দিল, তুমি পাশাপাশি আছো বলেই এই শীতেও আমি উষ্ণতা অনুভব করছি।
রাতের আকাশে হঠাৎ সবুজ আলোর নাচ শুরু হলো। আকাশজুড়ে সবুজ, বেগুনি, নীল আলো। স্বপ্নময় অভিজ্ঞতা। নর্দান লাইটস এর প্রাকৃতিক আলোয় ভরপুর আকাশ। মেঘলা বিস্ময়ে বলল, এ তো আকাশের প্রেমপত্র।
অর্ণব ফিসফিস করে বলল,
হ্যাঁ, আমাদের জন্যই আকাশে প্রেমের রঙ্গিন আলো খেলা করেছে।
আলোর খেলা দেখে নেচে উঠল তারা। নর্দান লাইটসয়ের নিচে একে অপরকে জড়িয়ে শব্দ করে চুমু খেল।
রাতের আকাশে আবার তারা নর্দান লাইটস দেখল। আকাশের ওপরে সবুজ আলো দুলছে। মেঘলা অবাক হয়ে বলল এ যেন স্বপ্ন! আকাশের পর্দা নাচছে।
অর্ণব তার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, আকাশ নাচছে তবে তোমার চোখ আরও চমৎকার করে নাচছে! যেন জাদু আছে।
মেঘলা মুগ্ধ হয়ে জিজ্ঞেস করল, তুমি সত্যিই আমাকে এত ভালোবাসো?
অর্ণব তার কাঁধ জড়িয়ে ফিসফিস করে বলল,
তুমি যদি বরফ হও, আমি তোমাকে গলাবো।
তুমি যদি আগুন হও, আমি তাতে পুড়ে যাবো। তুমি যদি আকাশ হও, আমি তোমার নিচে দাঁড়িয়ে যাবো।
মেঘ, তুমি ছাড়া আমি কিছুই নই।
মেঘলা কোনো কথা বলল না। শুধু ওর ঠোঁট অর্ণবের ঠোঁটে মিশিয়ে দিল। নর্দান লাইটসের সবুজ আলো যেন ওদের ভালোবাসার আশীর্বাদ হয়ে নেমে এলো।
হোটেলে ফেরার পথে মেঘলা বলল, আজকের প্রতিটি মুহূর্ত যেন উৎসব। আমরা কতটা সাহসী, তাই না? এতো দূরে এসেছি, নতুন দেশে, নতুন আকাশের নিচে।
অর্ণব হেসে উত্তর দিল, হ্যাঁ, নতুনকে আলিঙ্গন করা। ভয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করা আর ভালোবাসাকে জয় করা।
মেঘলা বলল, তাহলে আজকের দিনে একটা প্রতিজ্ঞা করি ?
অর্ণব, কী?
মেঘলা, আমরা ভালোবাসাকে প্রতিদিন নতুন করে উদযাপন করব।
অর্ণব তার ঠোঁটে হালকা চুমু দিয়ে বলল, রাজী।
রাতে তারা হোটেলের জানালা দিয়ে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বসে ছিল। বাইরে বরফ পড়ছিল। ভেতরে ভেতরে জ্বলছিল তাদের ভালোবাসা। মেঘলা বলল, মনে হচ্ছে আইসল্যান্ড আমাদের জন্য শুভবারতা নিয়ে আসছে। এখানে আসাতে আমাদের ভালোবাসা আরো গভীর ও মধুময় হয়েছে।
অর্ণব ফিসফিস করে উত্তর দিল। না, মেঘ। আইসল্যান্ড না আসলেও হতো। তুমি পাশে থাকলে পৃথিবীর যে কোন জায়গা আমার জন্য হয়ে অনিন্দ্য সুন্দর ভালোবাসাময়
হয়ে উঠে।
মেঘলা জড়িয়ে ধরে অর্ণবকে। তারুণ্যের দীপ্তি ও অভিরাম প্রেমের উষ্ণতা নিয়ে সেই রাতে তারা পরস্পরকে জয় করল।
পরের দিন গেল বিখ্যাত গিজার বা ফুটন্ত জলস্রোত দেখতে। হঠাৎ করে গরম পানির ফোয়ারা আকাশ ছুঁয়ে উঠল। মেঘলা হাততালি দিয়ে বলল, ওফ! দেখো তো, যেন পৃথিবীর হৃদস্পন্দন।
অর্ণব হাসল, তুমি হাসলে আমার হৃদয়ের ভেতরেও এমন ফোয়ারা ওঠে।
তারপর গেল গালফস জলপ্রপাতে। সাদা বরফ ভেঙে ঝরে পড়ছে বিশাল জলধারা। মেঘলা মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে বলল, প্রকৃতি যেন ভালোবাসার সিম্ফনি বাজাচ্ছে।
অর্ণব তার পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে গাড়ে চুমু দিয়ে বলল,
আমাদের ভালোবাসাও এমন প্রচণ্ড অথচ সুন্দর।
তারা গালফস জলপ্রপাতের সামনে দাঁড়াল।
গালফস তথা সোনালী জলপ্রপাত। দুই ধাপে প্রায় বত্রিশ মিটার উপর থেকে পানি নেমে আসে। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে পানির ধোঁয়ায় রংধনু দেখা যায়। বিশশতকে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে এই প্রপাত ধ্বংসের মুখে পড়লে স্থানীয় নারী সিগ্রিদুর টমাসডত্তিরের সাহসিকতার কারণে রক্ষা পায়। সিগ্রিদুর একশত বিশ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে রেইকিয়াভিক শহরে গিয়ে প্রতিবাদ করে বলেছিলেন যদি গালফস ধ্বংস করা হয় তাহলে প্রপাতে ঝাঁপ দিয়ে তিনি নিজকে ধ্বংস করবেন। তাঁর সংগ্রামের কারণে গালফস সংরক্ষিত হয়। আজও আইসল্যান্ডবাসী তাকে গালফসের রক্ষক হিসেবে স্মরণ করে। জলপ্রপাতের কাছে স্থাপন করা স্মৃতিফলকের সামনে নতসিরে দাড়িয়ে নিরবতা পালন করে মেঘলা ও অর্ণব।
গর্জে পড়া জলধারার শব্দে পৃথিবী যেন কেঁপে উঠছে। মেঘলা অর্ণবের কানে চিৎকার করে বলল, বলতো প্রপাতের জলধারা বিকট আওযাজ করে কি বলছে?
অর্ণব মেঘলাকে চেপে ধরে বলল, আমাদের ভালোবাসার কথা বলছে।
মেঘলা জোড়ে বলল, ভালোবাসি তোমাকে!
অর্ণবও তাই করল।
তাদের কথা প্রতিধ্বণি হয়ে ফিরে আসছে তাদের কাছে। খুশিতে লাফিয়ে উঠে দুজন। শব্দ শুনে মনে হচ্ছে আমাদের ভালোবাসা জলপ্রপাতের মতো চিরকাল বয়ে চলবে।
ব্লু লেগুন গিয়ে বিস্ময় কাটছে না। ভূগর্ভস্থ উষ্ণ পানি দিয়ে তৈরি কৃত্রিম লেগুন। লেগুনের উষ্ণ নীলাভ পানি থেকে উঠা ধোঁয়া রহস্যময় দৃশ্যের অবতারণা করছে। ঠান্ডা বাতাসে উষ্ণ নীল পানিতে নামতেই মেঘলা চিৎকার করে উঠল, আহা, এ যে স্বর্গ!
অর্ণব তার কাঁধে মাথা রেখে বলল, আমার কাছে তুমিও স্বর্গ। ওরা পানির ভেতরে আলিঙ্গনে ডুবে রইল। কুয়াশার আবছায়ায় চুমু খেতে খেতে মনে হচ্ছিল তারা পৃথিবীর বাইরে চলে গেছে।
থিঙ্গভেলি পার্কে এলো। বিশ্বের প্রথম সংসদ ঘরে উঠে এখানে। ইউরোশিয়ান ও নর্থ আমেরিকান টেকটোনিক প্লেটের মিলনস্থল হিসেবেও পরিচিত। থিঙ্গভেলিতে দুটি টেকটোনিক প্লেট আলাদা হওয়ায় মাটিতে ফাটল ও খাত তৈরি হয়েছে। মেঘলা অবাক হয়ে বলল, পৃথিবী এখানে সত্যিই দু’ভাগ হয়ে গেছে। অর্ণব হেসে বলল, যেমন আমি আর তুমি আলাদা হয়ে জন্মেছি। প্রেম আমাদের এক করেছে। সে মেঘলার ঠোঁটে আলতো চুমু খেল। প্রকৃতির ফাঁকে সেই চুমু যেন দুই মহাদেশকে আবার এক করে দিল।
সেলজাল্যান্ডসফস দক্ষিণ আইসল্যান্ডে। পর্যটক জলপ্রপাতের পিছনে গুহার মতো ফাঁকা জায়গায় হাঁটলে জলের নিচে হাঁটার অনুভুতি উপলব্ধি করে। সূর্যাস্তের সময় একে রূপকথার দেশের মতো লাগে। সেলজাল্যান্ডসফস জলপ্রপাতের নিচে দাড়িয়ে দুজন। মনে হয় পানির পর্দার আড়াল দিয়ে হাঁটছে তারা। মেঘলা জলের ফোঁটা ঝরে পড়া দেখতে দেখতে বলল, আমরা যেন জলের গোপন ঘরে আছি। অর্ণব তার চোখ ও মুখের জল চুমু দিয়ে মুছে বলল, জলের আড়াল করা গোপন ঘরে শুধু তোমাকেই চাই।
কালো বালুর সৈকতে ঢেউ গর্জে উঠছিল। সমুদ্র যেন ভয় দেখাচ্ছিল। মেঘলা বলল, এ জায়গা একটু ভয়ের মতো।
অর্ণব তার হাত শক্ত করে ধরে বলল, ভয় পেও অর্ণব উপস্থিত।
ওরা বালুর ওপর বসে একে অপরকে চুমু খেল। তাদের প্রেমের আভাসে ঢেউয়ের গর্জন প্রেমের সঙ্গীত হয়ে উঠল।
ভাসমান বরফখণ্ডে ভরা লেগুনে দাঁড়িয়ে ভাসছিল তারা। সূর্যের আলোয় বরফ ঝলমল করছে। মেঘলা উচ্ছ্বাসে বলল, যেন হাজার হাজার হীরা ভাসছে।
অর্ণব ফিসফিস করে বলল, হীরা আমার চাই না। আমার কাছে তুমি আছো।
মেঘলা হেসে বলল, তাহলে আমিই তোমার হীরা।
অর্ণব জড়িয়ে ধরে বলল, তুমি হীরার চেয়েও দামী।
ভ্রমনের প্রতিটি জায়গায় তারা নিজেদের নতুনভাবে আবিষ্কার করল। প্রকৃতি তাদের প্রেমের সাক্ষী হলো রইল৷ কোথাও জলপ্রপাতের গর্জন। কোথাও বরফের নীরবতা। কোথাও আগুন আর চুমুর উষ্ণতা।
" ইন্টারকম সিস্টেমে বিমানের ক্যাপ্টেনের কণ্ঠ শোনা গেলো, আমরা অল্প সময়ের মধ্যে রেইকিয়াভিক কেফ্লাভিক বিমানবন্দর থেকে মিনিয়াপলিস এর উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন শুরু করব। অনুগ্রহ করে সিটবেল্ট বেঁধে নিন।"
ঘোষণা শুনে পরস্পরকে চুমু খেল। কেবিনের সিটে একই সিটবেল্ট বেঁধে পরপস্পরকে জড়িয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিল। তাদের নিয়ে সেকেন্ডে পনর কিলোমিটার গতিতে মিনেসোটার দিকে এগিয়ে চলছে বিমান।