বর্ষায় প্রেমমুহাম্মদ ফজলুল হকজীবনে অনিবার্য কিছু নেই। সময়ের আবর্তে বহুকিছু অনিবার্য হয়ে উঠে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে অনিবার্যতা বাড়তে থাকে। কখন কি অনিবার্য হয়ে উঠবে তা ব্যক্তি নয় সময়ই নির্ধারণ করে। আমীর আলীর একদা ইসমাইলকে ভালো লাগত। মাঠে, ঘাটে, গোসলে, বৃষ্টিতে কিংবা অলস দুপুরে পাখীর বাসা ভাঙ্গতে সর্বদা সঙ্গী ইসমাইল। এমন কোন কর্ম নেই এই মানিক জোড় করেনি।কৈশোর ডিঙ্গিয়ে যৌবনে পদাপর্নে আমীর আলীর মোহ পরিবর্তন হয়। তার জীবনে অনিবার্য হয়ে উঠে সুলতানা। টান টান ত্বক, ডাগর চোখ, ঢেউ খেলানো চুলের মেয়েটি তাকে স্তব্দ করে রেখেছে। নাওয়া-খাওয়া, ঘুম বন্ধ হয়ে আছে। সুলতানা তার আরাধ্য। সুলতানার চলন, বলন, তাকানোর ধরণ, ... ...
বারবনিতা মুহাম্মদ ফজলুল হক দীর্ঘ সময় নিয়ে গোসল করে রশ্মি। না করে উপায় কি দিন রাতের অধিকাংশ সময় পুরুষদের ভালোবাসে সে। তার ভালোবাসায় অদ্ভুদ মায়া। যে মায়ায় আবিষ্ট থাকে সব পুরুষ। রশ্মিকে চাই। রশ্মিকে চাই। যেন রশ্মি তাদেরই। রশ্মিও পারে বটে। মোহনীয় রূপ, মায়াবী চাহনী, ব্যতিক্রম কেশ বিন্যাস, কোমল ব্যবহারের মাধ্যমে সব আবদার রক্ষার অসামান্য কৌশল অন্যদের নিকট থেকে তাকে আলাদা করেছে। রশ্মির মাঝে আছে অনন্য সমন্বয় স্নেহে মাতা, সেবায় দাসী, শয্যায় বেশ্যা।গোসল করতে সময় নিলেও গোসল না করে কারো শয্যায় যায় না রশ্মি। ভিআইপি খদ্দের অপেক্ষা করলেও ভ্রুক্ষেপ নেই। মন যখন চায় তখনই সময় দেয়। সেই সময়ে থাকে অফুরান ... ...
জানাজামুহাম্মদ ফজলুল হকজীবনের প্রথম জানাজা পড়ল মুবিন।জানাজার দোয়া-দরুদ, নিয়ম-কানুন না জানলেও তাকেই পড়াতে হলো জানাজা।লকডাউনের আগের দিন বাড়িতে পৌঁছেই শুনল, পাশের গ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নয় ঘণ্টা ধরে উঠানে লাশ পড়ে আছে। আত্মীয়স্বজন গ্রামবাসী কেউ দাফনে এগিয়ে আসছে না।মুবিন তার সমমনা তিন বন্ধুকে নিয়ে এগিয়ে গেল। প্রাথমিক কাজকর্ম শেষে প্রতক্ষদর্শীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজেরাই দাঁড়িয়ে গেল জানাজা পড়তে।তারা ঝুঁকি নিচ্ছে, তাদের জীবনও বিপদাপন্ন করে তুলছে জেনেও তারা এই বলে জানাজা করল...'হে মহিমান্বিত করুণাময় ও দয়াবান! তুমি তোমার এই বান্দাকে গ্রহণ করো। আমাদের আরও বেশি শক্তি, সাহস ও সামর্থ্য দাও, যেন আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।আমিন।' ... ...
মামুহাম্মদ ফজলুল হক জম্মের ছয়মাস পর ছেলে আইভানকে তার প্রবাসী মামামামীর নিকট দিয়ে দেয় মা। নতুন পিতামাতার পরিচয়ে আইভান এখন ইউরোপের স্বার্থক নাগরিক। বড় হয়ে দেশে এসে মাকে চিনে না ছেলে। সবাই বলে তুমি আমার মা! এটা কোন কথা। আমি জানি আমার মা এখন ইউরোপে। তোমাকে মা ডাকব কিভাবে?কান্না চেপে হাসিমুখে মা বলেন, "ত্রিশবছর আগেই তোর সুখের কথা ভেবে মা ডাক শোনা কোরবানি দিয়েছি। তুই ভালো আছিস তাতেই আমি সুখি। ... ...
চন্দ্রযোগমুহাম্মদ ফজলুল হককমলাপুর রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে শুয়ে আছে মুকবল হোসেন। তার ঘুম আসছে না। আশেপাশের মানুষ ঘুমে। বিকট শব্দে ট্রেন আপ-ডাউন করলেও কারো ঘুমের ব্যঘাত নেই। ঘুমানোর প্রশান্তি অন্যরকম। অশান্তির চাপ থাকলেও মুকবল হোসেনের ঘুম আসে। শান্তির ঘুম। মাঝ রাতে টহল পুলিশ এসে বিরক্ত করলে পকেট হাতরে কিছু টাকা দিলে চলে যায়। ঘুম আরো গাঢ় হয়। ঘুমের মধ্যে সে দেখে চাঁদ তার নিকটে চলে এসেছে। এত নিকটে ইচ্ছে করলে সে চাঁদ স্পর্শ করতে পারে।পুলিশের হাঁকডাক ও বাঁশির শব্দে ঘুম ভাঙ্গে। চিরকালীন ট্যাপে হাতমুখ ধুয়ে পানি পান করে স্টেশন থেকে বের হয়। এখন এখানে থাকা যাবে না। রাতে আবার আসবে। মুকবল হোসেন ... ...