এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • কেন লিখছি 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৬ জুলাই ২০২৫ | ১৪৩৮ বার পঠিত | রেটিং ৪ (৩ জন)
  • অনেকেই বলেন, আমি এত লিখি কেন এখন। বিশেষ করে এই সমস্ত বিপজ্জনক জিনিস নিয়ে লোফালুফি কেন, তাও আবার স্রোতের পুরো উল্টোদিকে। দুপয়সা তো লাভ হয়না। উল্টে গালাগাল খাই বিস্তর। এর চেয়ে চারদিক বাঁচিয়ে খেললে হতনা? সামনে দেখা যেত স্বর্গে চড়ার সিঁড়ি? 

    তো, এর একটা উত্তর হল বেশ করি। কষ্টিপাথরহীন জীবন কোনো জীবনই নয়। কিন্তু তার চেয়েও একটা বড় কারণ আছে, সেটা হল দেশভাগ। দেশভাগের ইতিহাস যত পড়েছি, তত চমকে চমকে উঠেছি, ভদ্রসমাজের কাণ্ড দেখে। দেশভাগের ইতিহাস বলছে, যথেষ্ট গৌরবোজ্জ্বল অতীতের পরেও  বিশেষ বিশেষ সময় বঙ্গীয় ভদ্রলোকরা চোক করে গিয়ে নেহাৎই আকাটের মতো আচরণ করেন। শুধু আকাট হলে সমস্যা ছিলনা, ভয়ঙ্কর বিপজ্জনকও হয়ে উঠেন, ডিলিউশনের রোগি অনেকসময় যেমন নিজের জন্য নিজেই একটা বড় বিপদ, সেইরকমই। 

    তা, বাংলায় এরকম একটা সন্ধিক্ষণ আসছে, সে নেহাৎই আকাট না হলে সবারই টের পাবার কথা। টের পাবার কথা, যে, ভদ্রজন আবার চোক করছেন। দেশভাগের সময়ের সঙ্গে এই সময়টার অদ্ভুত মিল। তখন পরাধীন দেশের শাসক ছিলেন সোহরাবর্দী। বলা হত প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু আসলে সীমিত ক্ষমতার প্রাদেশিক শাসক। তিনি নিঃসন্দেহে ছিলেন শাসক হিসেবে অযোগ্য, এবং খানিক সাম্প্রদায়িক দোষে দুষ্ট। তাঁর উপরে ভদ্রলোকরা ভয়াবহ ক্ষিপ্ত ছিলেন। তাঁর যিনি পূর্বসুরী, সেই নাজিমুদ্দিন সম্পর্কে তো শিবরাম মজা করে লিখেছিলেন, নামটা আসলে নাৎসিমুদ্দিন। 

    এঁর আমলে কয়েকটা বড় দাঙ্গা হয় বাংলায়। দুখানার কথা এখন সবাই বলে, কলকাতা আর নোয়াখালি। দাঙ্গায় সোহরাবর্দীর একার দায় ছিল তা নয়, কিন্তু ঠেকানোতে তিনি যে অপদার্থতা দেখিয়েছিলেন, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। অপদার্থতাই, কারণ একতরফা কিছু হয়নি। প্যাটেল বলেছিলেন, কলকাতায় আমরা জিতেছি। আমরা, মানে হিন্দুরা। আর নোয়াখালিতে, বলেননি, কিন্তু নির্ঘাত ভেবেছিলেন, যে পরাস্ত হয়েছেন। 

    তা, এইসব নিয়ে ভদ্রলোকরা ক্ষেপে গিয়েছেন। যাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু ক্ষেপে যেটা করলেন, সেটা অস্বাভাবিক তো বটেই, ভয়াবহ। দুহাত তুলে তাঁরা নাচতে শুরু করলেন, দেশভাগ চাই বলে। পাকিস্তান দাবীটা মুসলিম লিগের হলেও, মুসলমানরা অতটা নাচেনি, নিচের তলার হিন্দুরা তো নয়ই। এবং পূর্ববাংলার ভদ্রলোকেরা অবধি বলতে লাগলেন, হোক-হোক-ভাগ-হোক। কী ভেবেছিলেন জানিনা, মুসলমানদের আলাদা দেশ হবে, আর সেখানে তাঁরা জমিদারি চালিয়ে যাবেন?  কেউ জানেনা। এই তাথৈ নৃত্যে সঙ্গে জুটল সংবাদমাধ্যম। তাদের নেতৃত্বে, কে আবার, আনন্দবাজার। একটা সমীক্ষা বেরিয়ে গেল ৯৭% শতাংশ হিন্দু দেশভাগ চায়। কীভাবে সমীক্ষা হল, কেউ জানেনা। শিল্পপতিদের অবশ্য স্বার্থ ছিল। স্বনামধন্য বিড়লা, যিনি সুভাষকে তাড়ানোর অন্যতম মুখ্য কারিগর, দেশভাগের উপকারিতা নিয়ে একখানা বইই লিখে ফেললেন, দেশভাগের ফলে কীরকম সুজলা-সুফলা-শস্যশ্যামলা হয়ে উঠবে ভারত, তার বর্ণনা দিয়ে। আসল ধান্দাটা ছিল ইস্পাহানির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়িয়ে ভারতে একচেটিয়া কায়েম করা। টাটা-বাজাজদের সঙ্গে মিলে সেটা পেয়েওছিলেন, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা থেকে। 

    আনন্দবাজার বা বিড়লার উৎসাহ বোঝা যায়, কিন্তু ভদ্রলোকেরা কেন জ্বলন্ত উনুনে ঝাঁপ দিতে চেয়েছিলেন, কেউ জানেনা। কদিন আগেই নৌবিদ্রোহ হয়েছে, আজাদ-হিন্দ ফৌজের বিচার হয়েছে, তখন তাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন, হঠাৎই এক সকালে তাঁরাঅ বোধবুদ্ধি হারিয়ে ফেললেন। সোহরাবর্দীর আমলে হাল্কা সাম্প্রদায়িকতা ছিল, সেটা তিনি দূর করবেনও বলেছিলেন, দুখানা দাঙ্গা হয়েছিল, কিন্তু মোটের উপর পূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গে শান্তি ছিল। আর দেশভাগের পর যা হল, তা হল কোটিখানেক উদ্বাস্তুর স্রোত। সে এক নরক। কেউ কোনো দায়িত্ব নিলনা। ভারত সরকার হাত ঝেড়ে ফেলল, শ্যামাপ্রসাদ কাশ্মীর বেড়াতে চলে গেলেন। ভদ্রলোকেরা হাত কামড়াতে শুরু করলেন। কিন্তু পাপ যা করার তা তো আগেই হয়ে গেছে। 

    পাপ তো শুধু এইটুকু না। এই নরককাণ্ডের  উল্টোদিকে শেষপর্যন্ত একজন অটল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, শরৎ বসু। তিনি বাংলা ভাগ হতে দিতে চাননি। কিরণশঙ্কর রায় বা সোহরাবর্দীও তাঁর পক্ষেই ছিলেন গোড়ায়, একে একে সরে দাঁড়ান। বঙ্গীয় ভদ্রলোকেরা শুধু দেশভাগ চাই বলে লাফিয়েছিলেন তা নয়, এই মানুষটি যাতে অপদস্থ লাঞ্ছিত হয়ে নিঃশব্দে পৃথিবী থেকেই সরে যান, তার সুবন্দোবস্তো করেছিলেন। প্রথমে গান্ধিজি বললেন, বাংলা ভাগ আটকানোয় টাকার খেলা চলছে। গোটা কংগ্রেস তাঁর পিছনে লাগল। সরে গেল ফরোয়ার্ড ব্লক। সবাই তখন আনন্দবাজার আর বিড়লার তৈরি গণ-উন্মাদনায় জুটেছে। স্রোতের উল্টোদিকে যাবার সাহস কারো নেই। উল্টোদিকে শরৎ বসু চেয়েছিলেন গণভোট। তিনি মোটের উপর নিশ্চিত ছিলেন, যে, ভদ্রলোকীয় এই উন্মাদনা নেহাৎই ফানুস। গণভোট হলেই ফুস করে উড়ে যাবে। কিন্তু সেটা হয়নি। হতে দেওয়া হয়নি। ভোট হয়েছিল কেবলমাত্র বড়লোক এবং ভদ্রলোক-নির্বাচিত বিধানসভায়।  এবং এই পুরো এপিসোডে শরৎ বসুর পাশে কেউ দাঁড়াননি। একজনও না। ভদ্রলোকীয় গণ-উন্মাদনার বিরুদ্ধে যাবার মতো বুকের পাটা কারো ছিলনা। বাঙালির জাতীয় নায়ক হবার কথা ছিল যাঁর, সেই শরৎ বসু নিঃশব্দে পৃথিবী থেকেই বিদায় নেন। শিরদাঁড়া কথাটা তখন চালু হয়নি, নইলে নির্ঘাত বলা হত, দেশভাগের পক্ষে বলাটাই শিরদাঁড়া।

    এবং এখানেই তো শেষ না। দুই পারেই দেশভাগের কী ফল হয়েছিল সবাই জানে। একটা উন্নত জাতিকে বস্তুত পঞ্চাশ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয় ওই এক ধাক্কায়। ভদ্রলোক এবং তাঁদের পার্টিরা এই অপকম্মোটি করেছিল। তারা নিশ্চিত করে দেয়, যে, এই পাপকর্মের কথাটা যেন চাপা থাকে। লক্ষ্য করে দেখবেন, ওই সময়টায় যাঁরা বেঁচেছেন, ধরুন সত্যজিৎ রায় , ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, হয় এই বীভৎসতা নিয়ে চুপ থেকেছেন, নয়তো স্রেফ নস্টালজিয়ার অশ্রুজল ঝরিয়েছেন, কার্যকারণে ঢোকেননি। এইটা দেশভাগের মতোই পাপ। কারণ ইতিহাস লেখা না হলে, তা থেকে শিক্ষা নেওয়াও যায়না। সেই কারণেই কিছুদিন পরে চালু হল অনুপ্রবেশ নামক একটা কথা। ইতিহাসবোধ থাকলে এই অশ্লীল কথাটা অন্তত বাঙালি তার মুখে উচ্চারণ করতে পারতনা। এবং তার পরে আস্তে আস্তে চলে এল কার্যত বাঙালি তাড়াও। ইতিহাসবোধ থাকলে, এটাও এতদূর গড়াতনা। 

    কিন্তু কথা হচ্ছিল লিখছি কেন। কারণ, ইতিহাসবোধহীন এই ভদ্রসমাজ আরেকটি প্রলয়কাণ্ড ঘটানোর ঠিক মুখে দাঁড়িয়েছিলেন। বর্তমান শাসক কি পাপকর্ম করছেনা? একশবার করছে। কিন্তু গোদি মিডিয়া যে ঢেউ তুলছে, সেটা প্রলয়ের। বাঙালিকে কোণঠাসা করে একদম মেরে ফেলার। তাদের হাতে পুতুল হয়ে নাচার কোনো কারণ নেই। নেহাৎই আকাট না হলে, এটা না বোঝার কোনো কারণ নেই, কিন্তু ভদ্রলোকেরা আবার যথাসময়ে চোক করেছেন। 

    কপালজোরে অবশ্য এখন সার্বজ্নীন ভোটাধিকার আছে। আর আছে সমাজমাধ্যম। ফলে আজ থেকে কয়েকবছর আগেই সিদ্ধান্ত নিই, পৃথিবীর সব লোক উল্টো দিকে চলে গেলে যাক, স্রেফ ভেড়ার পালে মিশে যাওয়া যাবেনা। বছর আশি আগে শরৎ বসু একা হয়ে গিয়েছিলেন, আমার রিডিং, বড় বেশি মিনমিন করেছিলেন বলে। গান্ধি, নেহরু কারো উপর ভরসা না করে জোরে কথা বললেই সঙ্গে কিছু লোক জুটত। ফলে, ইতিহাস থেকে যদি শিক্ষা নিতে হয়, এই যুগসন্ধিক্ষণে আওয়াজ তুলতেই হবে। এবং সেটা জোরে সোরে। কে সঙ্গে থাকব, কতজনকে পাশে পাব, কে আঘাত পাবে, এসব কেয়ার না করে। কতজন শুনবেন জানিনা, কিন্তু বলিনি বলে পাঁচ বছর পরে হাত অন্তত কামড়াতে হবেনা। এইজন্যই লিখি। লিখছি। লিখব। বহু কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্য লেখা, পড়া, সিনেমা দেখা। তবু লিখব, কারণ না লিখে উপায় নেই। না লিখলে মনে হবে, অপরাধ করছি।   
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৬ জুলাই ২০২৫ | ১৪৩৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • অরিন | 2404:4404:4405:700:1585:dcbf:f14b:***:*** | ১৮ জুলাই ২০২৫ ০১:১২732503
  • এই ধরণের চাপান উতোরের পাল্লায় সৈকতের মূল বিষযের আলোচনা থেকে সরে আসছি। সৈকতের বক্তব‍্য আমি যতদূর বুঝেছি ভদ্রলোক সম্প্রদায় দেশভাগের সময় মেনে নিয়ে যে ভুল করেছিলেন আজকে বাঙালীর ওপর নেমে আসা অবিচার এবং তার প্রতিবাদ না হলে আবার একটি ভুল হবে। সৈকতের যে বক্তব‍্য আমি বুঝিনি সেটা এই সময়ে আপামর বাঙালীর কাছ থেকে কী ধরণের সিগ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত? 
  • &/ | 151.14.***.*** | ১৮ জুলাই ২০২৫ ০২:২৭732513
  • বাংলাভাগের ব্যাপার একেবারেই চান নি, হোক হোক তো বলেনই নি এরকম লোকও অনেক ছিলেন, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত লোকজনই তাঁরা। দেশভাগ হোক মোটেই চান নি তাঁরা, এমনকি দেশ ভাগ হয়ে যাবার পরেও বহু বছর তাঁরা আশা করেছেন এই ভাগাভাগি কৃত্রিম, এটা সাময়িক ব্যাপার। আবার সব মিলে যাবে। ভাগের পর প্রায় দুই তিন দশক ভিটেমাটি আঁকড়ে থাকার পর সেইসব ছেড়ে ভারতে আসেন এরকম মধ্যবিত্ত পরিবার অনেক, অনেক অনেক। শোনা কথা নয়, একদম হাড়ে হাড়ে জানা।
  • &/ | 151.14.***.*** | ১৮ জুলাই ২০২৫ ০২:৩৬732514
  • লেখকের বক্তব্যের একটা অংশে খুব একমত হলাম যে কলকাতা-কেন্দ্রিক সারস্বত সমাজ একেবারেই দেশভাগের মূল ব্যাপারগুলো নিয়ে কিছু বলেন নি, হয় স্রেফ এড়িয়ে গেছেন, নয়তো গোলাভরা ধান পুকুরভরা মাছ গোয়ালভরা গরু আমকাঁঠালের বাগান ইত্যাদি নস্টালজিয়া করেছেন। চলচ্চিত্রনির্মাতারা না, সাহিত্যিকরা না, কেউ আসল কথায় যাননি। (হয়তো চাইছিলেন, কিন্তু সম্পাদক প্রকাশক ইত্যাদিরা সেন্সর করেছেন, এও হতে পারে)। অথচ লব্ধপ্রতিষ্ঠ সাহিত্যিকরা ( অন্য নানা ফিল্ডের লোকেরাও, যেমন চিত্রাভিনেতারা, গায়করা, নাটকের লোকেরা ) অনেকেই দেশভাগের প্রত্যক্ষ ক্ষতির অংশীদার, ভিটেমাটি ছেড়ে আসা লোকজন।
  • আ খোঁ | 2402:3a80:42ec:7c92:478:5634:1232:***:*** | ১৮ জুলাই ২০২৫ ০৯:৩৭732529
  • এক্ষেত্রে জয়া চ্যাটার্জীর বেঙ্গল ডিভাইডেড বইটির কথা সকলকে আরেকবার মনে করিয়ে দিতে চাই।
  • আ খোঁ | 2402:3a80:42ec:7c92:478:5634:1232:***:*** | ১৮ জুলাই ২০২৫ ০৯:৪৭732531
  • আর আমার মনে হয়েছে দীপ নামক নিকের দেশভাগজনিত উদ্বাসনকে কুকুরের লেজ গুটিয়ে পালানোর সঙ্গে একার্থে দেখা পোস্টটি এখানের  কুৎসিততম পোস্ট।
  • এগারোর পরে শূন্য | 2402:3a80:42f4:8f2e:b0b8:afff:fecc:***:*** | ২০ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩৬732582
  • ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৭:১৮ মন্তব্য প্রসঙ্গে:--
    "কিন্তু পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বাংলার শত্রুরা ক্ষমতায় এসেছে মুখোশ পড়ে।" --- বানান - "পরে" হবে।
     
    দেখুন, শিক্ষিত বাঙালির বাংলা ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে যেতে হওয়াটা অনেক বড় ক্ষতি, দোষ শুধু শিক্ষিত বাঙালি ভদ্রলোককে দিলে চলে না। সমালোচনা ঠিক, কিন্তু এ যা হচ্চে ---বলা ভালো তাকে demonize করা হচ্চে। এটা "বাংলার শত্রুরাই" চাইবে। তবে বাকিটা ভুল বলছি না।
     
    তবে, যেমন লেখক বললেন শরৎ বসু একলা হয়ে অপদস্থ লাঞ্ছিত হলেন, বাঙালির জন্যে লড়াই করতে গিয়ে পরিবর্তনের পরে বুদ্ধদেবের হাল ও একই হল। সুভাস বোস শরৎ বাবুরা স্বাধীনতার পরে শূন্য হলেন, বাঙালি রক্তশূন্য। আর বুদ্ধদেব হেরে গিয়ে পরিবর্তনের পরে সিপিএম শূন্য হল। এখন বাঙালিও শূন্য। নিয়তির কি পরিহাস! --- আমরা ষাটের দশকে এসব ভাবতে পারতাম না, দুঃখজনক।
  • &/ | 151.14.***.*** | ২২ জুলাই ২০২৫ ২৩:৪৮732614
  • লেখক যদি এসে কিছু উত্তর প্রত্যুত্তর দিতেন, বড় ভালো হত।
  • Anjan Pyne | ২৫ জুলাই ২০২৫ ১৫:৫৭732695
  • লেখক প্রত্যুত্তর দিলে সত্যি ভাল হত
     
  • সত্যেন্দু সান্যাল | 2401:4900:1c7a:7198:a17e:e3b5:6694:***:*** | ২৫ জুলাই ২০২৫ ২৩:৩২732713
  • নজরুল ইসলাম “আমার কৈফিয়ত” লিখেছিলেন ১৯২৫ সালে। সৈকত বাবু ও আমার কৈফিয়ত লিখছেন ২০২৫ সালে। পটভূমি কি এক? নিপীড়ন এবং শোষন? কি জানি।
    লেখাটি একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ও ইতিহাস বিশ্লেষন থেকে লেখা। পাঠকের অন্য মত থাকতেই পারে। তবে শরৎ বসু-কে একমাত্র ট্র্যাজিক নেতা হিসেবে চিহ্নিত করাটা কি যুক্তিসঙ্গতঃ?
    দুই বরিশালী ~ ফজলুল হক এবং যোগেন্দ্র নাথ মণ্ডল এর কথা স্মরন করুন।
    প্রথম জন লাহোর কংগ্রেসে পাকিস্তান প্রস্তাব পেশ করেন। দ্বিতীয়জন অন্ত্যজ এবং মুসলমান শ্রেনীর ভাতৃত্বে বিশ্বাসী ছিলেন।
    এঁরা কেউই ততকালীন বাঙালি হিন্দু উচ্চবর্নের মানসিকতার Choking-এ আক্রান্ত হননি।
    লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান পেয়ে কি এঁদের মনস্কামনা পূর্ন হয়েছিলো বিন্দুমাত্র।
    হয়তো, হয়তো, শরৎ বসুর অবিভক্ত, সার্বভৌম বাংলা গঠিত হ’লে ( I understand Lord Mountbatten had a second broadcast ready for his Partition Speech), শেষমেষ শরৎ বসুর স্বপ্নের বাংলা অধরাই থেকে যেতো।
    এই conjecture এর সত্যতা কি আজকের ইউনুসী বাংলাদেশ এর অবস্থা দেখে মনে হয়না?
    প্রসঙ্গতঃ ঘনশ্যামদাস বিড়লা যথেচ্ছ কল-কাঠি নেড়েছিলেন গান্ধির পৃষ্ঠপোষকতায়, কিন্তু ইস্পাহানী গোষ্ঠী প্রতিদ্বন্দী হ’লেও বিড়লা গোষ্ঠীর মতো diversified ছিলোনা।
    সৈকত বাবুর মনে হয়েছে উনি এক ক্রান্তির সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে আছেন, জর্মন পাদ্রী মার্টিন নিম্যোলার এর সতর্কবানী মনে রেখে ওঁর অবস্থান জানানো প্রয়োজন। অবশ্যই লিখুন।
    সত্যজিৎ রায় কিন্তু বিশ্বাস করতেন যে তাঁর চলচ্চিত্রগুলি সামাজিক সমস্যাগুলিকে অন্বেষণ করতে পারে এবং প্রতিফলন  করতে পারে, তারা সরাসরি সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে না। তিনি সিনেমার সীমাবদ্ধতা স্বীকার করেছেন। বলেছেন যে সিনেমা বৃহৎ আকারের সামাজিক রূপান্তর ঘটাতে পারেনা। হয়তো তখনকার এবং এখনকার শিল্পীরাও একই দ্বিধায় গ্রস্ত।
    অবশ্য আজকের এই সোশ্যাল মিডিয়ার কলরবে সত্যিটা যাচাই দুঃসাধ্য।

    সত্যেন্দু সান্যাল
     
  • JAYANTA GUHABISWAS | ২৭ জুলাই ২০২৫ ০৮:২৩732748
  • আরে বাবা গদি মিডিয়া আর দিদি মিডিয়ার মধ্যে সিম বায়োটিক রিলেশন। যেমন তাদের প্রতি মূহুর্তের ব্যাবহারিক রাজনীতি। যদি ভেবে থাকেন দিদি দিয়ে গদি কে রুখবেন - সেটা মনে হয় ঠিক ভাবনা হচ্ছে না।
  • JAYANTA GUHABISWAS | ২৭ জুলাই ২০২৫ ০৯:২৬732750
  • বামপন্থী তৃণমূলের লোকেরা ২০১১ তে বামফ্রন্ট এর বিরোধিতা করেছিলেন - আমি বলবো বেশ করেছিলেন - কিন্তু আজ বোধহয় সেটাকে রিভিউ করার সময় এসেছে। 
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন