এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  স্মৃতিচারণ  আত্মজৈবনিক

  • আমার অ্যাপার্টমেন্ট জীবন  

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    স্মৃতিচারণ | আত্মজৈবনিক | ২৯ মে ২০২৩ | ১৩১৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • (১)

    ছোট করে চুল কাটলে আমাকে একদমই বাঙালী বলে চেনা যায় না সেটা আবার আজ টের পেলাম

    আর এমনিতে আমাকে দেখে ঠিক কি মনে হয় সেটারও রিমাইন্ডার এসে গেল

    আজ আমাদের হাউসিং কমপ্লেক্সে ওনম উপলক্ষ্যে মেলা টাইপের বসেছে - নানা ধরণের নারকেল তেল বিক্রী হচ্ছে খুব। কি খাওয়া সেফ হবে সেই ভাবতে ভাবতে দেখতে পেলাম এক দোকানে লস্যি পাওয়া যাচ্ছে। একবোতল ম্যাঙ্গো আর একবোতল স্ট্রবেরী কিনে বগলদাবা করে ফিরছিলাম, সেই দোকানী ভালোবেসে কাগজের ঠোঙায় প্যাক করে দিল

    সেই প্যাকিং নিয়ে আমি লিফটে ঢুকে দেখি এক দম্পতি। লোকটি আমাকে আপাদমস্তক দেখে হিন্দীতে বলল -

    - অ্যাই সুইগি ভাই, তুমি এই লিফটে কেন? ভেন্ডরদের জন্য যে লিফট আছে সেটায় যাও নি কেন?

    - আমি তো সুইগি নয়!

    - তাহলে জ্যমেটো হবে! তোমাদের তো কোম্পানী লেখা টিশার্ট থাকে। সেটা পর নি কেন?

    পাশ থেকে ভদ্রমহিলা বাংলায় স্বামীকে আস্তে আস্তে বলল,

    "বুঝছো না কেন, সুইগি টিশার্ট পরলে তো আর চট করে প্যাসেঞ্জার লিফটে সিঁধতে পারবে না! বিশাল চালু ছেলে!"

    আমি সেটা না বোঝার ভান করে স্বামীর প্রশ্নের জবাব হিন্দীতেই দিলাম এই মর্মে যে আমি এখানে থাকি, ভেন্ডর নই আমি

    দুজনার চোখেই বেশ বিষ্ময় দেখলাম। বউ আবার ফিসফাস করে বলল

    - এ্যাই, তুমি না এই ছেলেটির আধার দেখতে চাও

    - ভ্যাট সেটা আবার চাওয়া যায় নাকি? আর তাছাড়া আধার কার্ডে যে এখানের ঠিকানা লেখা থাকবে সেটা নাও তো হতে পারে

    - তাহলে তুমি বাড়ির কাগজ দেখতে চাও

    - মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি তোমার? রেন্টাল এগ্রিমেন্ট নিয়ে কেউ ঘুরে বেড়ায়?

    এই করতে করতে আমার ফ্লোর চলে এলে 'আসি তবে' বাঙলায় বলে নেমে গেলাম

    ভদ্রলোক বেশ অপ্রস্তুত দেখে মনে হল - ওদিকে বৌদি সেসব খেয়াল করে নি। লিফটের দরজা বন্ধ হতে হতে শুনলাম -

    - শোনো, তুমি কালকেই ম্যানেজিং কমিটিকে মেল করো। কেমন সব লোকে এখানে ভাড়া আসছে! কোন কোয়ালিটি কনট্রোল থাকবে না!


    (২)

    কাল অফিস থেকে ফিরছিলাম। মাথার মধ্যে অনেক ভাবনা কিলবিল করছিল - এই এত মিষ্টি খেয়ে ফিরলাম নিমো থেকে, এখন আবার জমেটো/সুইগি তে অর্ডার করে মিষ্টি খাওয়া উচিত হবে কিনা।

    তো হাঁটতে হাঁটতে অ্যাপার্টমেন্টের তলায় চলে এসেছি, জাষ্ট ঢুকতে যাব ভিতরে দেখি একতলায় এক ভদ্রলোক উনার বাইরের বারান্দার প্রায় কিনারায় এসে মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছেন। একদম ঢোলা বারমুডা পরা, দেখে মনে হল বামসচামস এর বারমুডা। চুড়িদারের ঘেরের মত সেই বারমুডা তেনার পায়ের চারিদিকে ঘিরে রয়েছে – এদিকে বইছে ঈষৎ হাওয়া। ফলতঃ বুঝতেই পারছেন, নীচে থেকে তেনার বারমুডার নীচের জিনিসপত্র প্রায় সবই দেখা যাচ্ছে। 

    আমার সামাজিক হবার প্রচেষ্টার ব্যাপারটা তো আপনারা জানেনই। এমনিতে কি দেখা যাচ্ছে বা যাচ্ছে না, এই সব নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। কিন্তু এক্ষেত্রে আমার সামাজিক কমিটমেন্টের জন্য এড়াতে পারলাম না। ভাব্নার মধ্যে থেকে ভুলে গেছি যে এখন আমি বাংলায় নেই – তাই বাংলাতেই বলে উঠলাম,

    “দাদা, একটু সামলে। বারমুডার নীচে দিয়ে সব দেখা যাচ্ছে তো”।

    উনি ফোন ঘাঁটতে ব্যাস্ত ছিলেন, প্রশ্ন করলেন, “হোয়াট”?

    আমি ভাবলাম বারমুডা নিয়ে খোঁটা দেওয়ায় মনে হয় ভদ্রলোক রেগে গেছেন। কারণ অনেকেই পোষাক নিয়ে সমালোচনা পছন্দ করেন না। আমি বুদ্ধি করে অন্য অ্যাঙ্গেল থেকে, কিন্তু কেন জানি না বাংলাতেই উত্তর দিলাম,

    “মানে বলছিলাম, আপনার পা গুলো খুব সরু মনে হচ্ছে। নীচে থেকে তাই দেখছি আর কি!” 

    আমাকে অবাক করে উপরের উনি পরিষ্কার বাংলায় বলে উঠলেন,

    “তা নীচে থেকে কি কেবল আমার সরু পা দুটোই দেখতে পেলেন শুধু?”


    (৩)

    আজ দুপুরে বিরিয়ানি খাবার শখ হল।  এমনিতে  দক্ষিণ ভারতে বসে বাঙালীর বিরিয়ানি খাবার ইচ্ছেকে একপ্রকার অবৈধ ইচ্ছে বলে দাগিয়ে দেওয়াই যায়।  তো সেই হিসেবে জেনে শুনেই সেই অবৈধ ফাঁদে পা দিলাম জ্যমাটো খুলে রেটিং দেখে বিরিয়ানি অর্ডার করে।  দেখলাম ‘সরিফ ভাই’ নামে এক রেষ্টুরান্টের মাটন বিরিয়ানির মারকাটারি রেটিং।  আর বাকি যে কোন অ্যাপের মত জ্যমাটোর রেটিং-এ প্রবল ভরসা না থাকলেও ‘সরিফ ভাই’ নিশ্চয়ই হতাশ করবে না – এই বিশ্বাস থেকে অর্ডার করেই দিলাম এক প্লেট মাটন বিরিয়ানি।

    ভাবলাম ভালো করে প্যাক-ট্যাক করে বিরিয়ানি আসবে, দাম যেহেতু ভালোই নিল।  কিন্তু আমার হাতে ডেলিভারী ভাই তুলে দিল এক অশ্লীল ধরণের দেখতে চিকচিকির প্যাকেট।  বারুইপুরের গাছের পেয়ারা গুলো যেমন চিকচিকি-র ভিতরে ঢুকিয়ে দৃশ্য দূষণ করা হয় এই বিরিয়ানির প্যাকেট তার থেকেও কুৎসিত দেখতে। 

    বাইরের চিকিচিকি নিয়ে আর মাথা ঘামিয়ে কি হবে! বারুইপুরের পেয়ারের মতই ভিতরের জিনিস খেতে ভালো হলেই হল এই ভেবে সাদা প্লেটে এই প্যাকেট উপুর করে দিলাম।  সে দৃশ্য আরো ভয়ঙ্কর – যে চালের বিরিয়ানি করা হয়েছে তাকে আমাদের দিকে খুদ বলে।  খুদ সিদ্ধ করে তাতে হালকা হলুদ ইত্যাদি রঙ, গন্ধ ছড়িয়ে তিনটুকরো মাটন ছড়িয়ে দিয়েছে।  আর মাটনের পিস? ‘দাদা, পাছার দিকটা দেবেন’, ‘চর্বি কম যেন থাকে’, ‘হাড় শুদ্ধু মাংস ছেলেটার খাবার জন্য একটুও কি দিবি না কদম? হ্যাঁরে’ – এই সব বলে কয়ে রবিবার সকালে মাংস কেনার পর বেলা এগারোটার দিকে যে ছাঁট মাংস পরে থাকে এই বিরিয়ানির মাংস তার থেকেও অধম। 

    খিদের মুখে খেয়ে নিলাম বেশ খানিকটা – বাকিটা ফেলে দিলাম।  মুখ ধুয়েও দেখলাম সে স্বাদ যাচ্ছে না জিব থেকে। মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করলাম চারবার – তাতেও কিছু হল না।  হাতের কাছে সরু পাইপের মত কিছু থাকলে নিজের পাকস্থলি নিজেই ওয়াশ করতাম হাসপাতালে বিষ খাবার পরে যেমন ওয়াশ করে।  যদিও এখন একটা অ্যাপ হয়েছে যারা ৩০ মিনিটের মধ্যেই দড়ি থেকে দারুচিনি ডেলিভারী দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু পাকস্থলী ওয়াশ করা খুব কষ্টের – এই জন্য যে বিষ খেয়ে একবার বেঁচে যায় সে আর বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করত না আমাদের দিকে। রেলে মাথা দিত দ্বিতীয় বার – ট্রেন লেট না করলে একদম গ্যারান্টিড রেজাল্ট। 

    তাহলে আমার হাতে বাকি রইল একটাই উপায় – গলায় আঙুল দিয়ে আন-সফিস্টিকিটেড ভাবে ওয়াক ওয়াক করে আশে পাশের সব ফ্ল্যাটের লোকেদের জানানো, বা দুই বোতল কোক-পেপসি খেয়ে ঢেঁকুর তুলে তুলে পেট স্টেবিলাইজ করা।  আমি দ্বিতীয় পথটাই বেছে নিলাম।

    অ্যাপার্টমেন্টের গ্রাউন্ডফ্লোরের ভেন্ডিং মেশিন থেকে কোকাকোলা কিনব বলে নীচে নামলাম।  কোক কিনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাচ্ছি দেখলাম খানিক দূরের সিকিউরিটি গার্ড-টা প্রবল বোর হয়ে পায়চারী করছে।  কবে কে ভিজিটর গাড়ি নিয়ে আসবে আর তাকে সে বেসমেন্ট আর গ্রাউন্ডফ্লোরের পার্কিং দেখাবে – সারাদিনে তার এই কাজ।  আমারও হাতে তেমন কিছু কাজ ছিল না – ভাবলাম এর সাথে একটু ভাঁটানো যাক।

    প্রথমেই জমে গেল – বিহারের ছেলে।  বিহারের কোথায় জিজ্ঞেস করলে বলল – আড়া।  এরপর তার কোথায় কে থাকে, সে নিজে এখানে কোথায় থাকে, কাজ কেমন বোরিং – সব নিয়ে আলোচনা হল।  আমাকে জিজ্ঞেস করলে জানালাম আমি পশ্চিম বংগাল থেকে।  সে ছেলে তখন আমাকে বলে বংগাল এর সাথে তাদের বহুত রিস্তা, কারণ তার দাদার সাথে পুরুলিয়ার মেয়ের বিয়ে হয়েছে।  আমি সেই খবর শুনে নড়েচড়ে দাঁড়ালাম – এর মধ্যে নিশ্চয়ই গল্প আছে। এক বোতল কোক শেষ হয়ে গিয়েছিল, আমি অন্য বোতলটা খুলে তাকে প্রশ্ন করলাম সিম্পল, “তোমার দাদার সাথে পুরুলিয়ার মেয়ের রিস্তা হল কি করে”।

    তার পর দাদা কি বলব – পুরো পনেরো মিনিট আমি যেন কোরিয়ান ড্রামা দেখলাম সাবটাইটেল ছাড়া।  সে গল্পের খেই ধরার থেকে কোয়ান্টাম থিওরি নিয়ে আলোচনা সোজা।  আঠেরো মিনিট পর তাকে বললাম, “বাপরে, এত কনফিউজ আমি সেই ম্যাট্রিক্স সিনেমা দেখার পর শেষ বার হয়েছিলাম”।  সে ছেলে বলল, “দাদা, কনফিউশনকি কৈ বাত নেহি, ম্যাচিস সিনেমাকা স্টোরি সিম্পলই থা”।  আর ঘাঁটালাম না তাকে – কাজ আছে বলে এগিয়ে গেলাম। 

    খানিক এগিয়েছি কি সিকিউরিটি মেন রুম থেকে শোনা গেল – “ও দাদা, দাদা – একটু শুনে যান, জরুরী কথা আছে”।  ঘাড় ফিরিয়ে দেখলাম ডাক দিচ্ছে আমাদের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের সিকিউরিটি গার্ড-দের হেড দস্তিদার।  দস্তিদার বাঙালী – যে টুকটাক কাজ চলাবার ইংরাজী বলে এবং প্রধান কাজ হচ্ছে তার আন্ডারের ছেলেদের কারণে-অকারণে টেনশন দেওয়া এবং বাকি সময়ে মোবাইল ঘাঁটা।  অবশ্য আর একটা কাজ করে, ফাঁকে ফাঁকে হাতের ওয়াকিটকি তুলে, ‘গেট ওয়ান চেকিং – চেকিং’ এই সব।  দস্তিদার দেখলাম রুম থেকে বেরিয়ে আমার পাশে এল –

    - দাদা, একটা জরুরী কথা ছিল

    - জরুরী আবার কি দরকার? আমি তো কোন গার্ড-কে মা-বাপ তুলে কিছু বলি নি! এই তো বরং আড়ার ছেলেটার সাথে অনেকক্ষণ গল্প করে এলাম

    - না, না- আপনাকে নিয়ে সেই সমস্যা নেই।

    - তাহলে আমাকে নিয়ে আবার কি সমস্যা হল?

    - আসলে কি ভাবে বলব বুঝতে পারছি না, কিন্তু সিকিউরিটি হেড হিসেবে আমার তো একটা কর্তব্য থেকেই যায়

    - আরে বলুন না আপনি, কি ব্যাপার

    - আপনি কি জানেন যে আমাদের এখানে সব লিফটে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে? আর আমরা রুমে বসে সেগুলো মনিটর করি

    - হ্যাঁ, জানবো না কেন!

    - তাহলে কি বলে আপনি কাল তিন নম্বর লিফটে দুপুরের দিকে অন্তত পাঁচবার গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে টপ ফ্লোরে উঠলেন এবং নামলেন!

    - ও কালকের ব্যাপারটা! এই প্রথম এমন হল

    - সে তো আমিও জানি।  এ পর্যন্ত কেবল বাচ্ছারা খেলতে খেলতে লিফটের বাটন টিপে উপর নীচে করে।  কিন্তু আপনি যদি করেন তাহলে তো বেশ সমস্যা।  অনেক কথা উঠবে

    - কথা উঠবে কেন?

    - কারণ ছাড়া আপনি কেন উপর নীচে করবেন? বাড়ির মেয়েরা লিফট ব্যবহার করছে

    - ভাই, এমন কোন কেস নয়। আসল ব্যাপার শুনলে তুমি বুঝতে পারবে

    - তাহলে বলে ফেলুন

    আমার ভাগ্য ভালো যে এই হেড গার্ড বাঙালী – তাই একটা চান্স আছে একে বুঝিয়ে বলার।  ঘটনাটি খুলে বলতেই হল।  কালকে লিফটে উঠেছি, সাথে অন্য এক ভদ্রলোক – উনার হাতে খাবারের একটা ব্যাগ।  আট তলায় নেমে গেলেন – যতক্ষণ ছিলেন ততক্ষণ বুঝতে পারি নি। কিন্তু উনি নেমে যাবার পর আমাকে নিয়ে লিফট উঠতে শুরু করলে টের পেলাম এক প্রবল প্রিয় গন্ধে লিফট ম ম করছে।  দস্তিদার এবার প্রশ্ন ছুঁড়ল –

    - কিসের গন্ধে ম ম করে উঠলো দাদা?

    - বিরিয়ানির গন্ধে – একেবারে মনে হল দাদা-বৌদির বিরিয়ানি যেন!

    - দাদা-বৌদির বিরিয়ানি মানে? আমাদের ব্যারাকপুরের নাকি?

    - (অবাক হয়ে) আপনি কি করে চিনলেন?

    - আমিও তো ব্যারাকপুরের ছেলে।  কি জিনিস মনে করিয়ে দিলেন! এ শালা-দের বিরিয়ানি কেউ খেতে পারে!

    - তাহলে বুঝতেই পারছেন আমার কেসটা – গন্ধে একদম প্রাণটা জুড়িয়ে গেল।  একদম উপরতলায় পৌঁছে ভাবলাম আর খানিকটা গন্ধ নেওয়া যাক। তাই আর নামলাম না – বেশ কয়েকবার উপর নীচ করলাম।  আরো বেশীক্ষণ থাকত।  পনেরো তলার পাকা-টা টেনিস খেলে এসে বডি গরম করে লিফটে উঠে ফ্যানটা চালিয়ে দিল! নাহলে আরো কয়েকবার হত!

    - তাতেও পাঁচবার উপর নীচ করেছেন দাদা।  আমি সিসিটিভি-তে দেখেছি।  তবে আপনাকে আর বলতে হবে না, পুরো ক্লীয়ার হয়ে গেল আমার কাছে।

    - যাক – ভুল বোঝাবুঝি মিটে গেল

    - দাদা, কিছু মনে না করলে একটা কথা বলব।  পরের বার এমন হলে আমাকে একটা কল দেবেন, আমিও যাব লিফটে। কতদিন দাদা-বৌদির বিরিয়ানি খাই নি!

    - কি করে কল দেব? লিফটে মোবাইলের সিগন্যাল কাজ করে না

    - আপনি লিফটের ফোন থেকে একদম সিকিউরিটি রুমে এমারজেন্সী কল দেবেন।  তাছাড়া আমি আপনার সাথে থেকে উপর নীচে করলে আপনাকে কেউ আর সন্দেহ করবে না। ভাববে লিফটের কাজেও আমরা দুজন ওঠা-নামা করছি।

    দেখলাম কথায় যুক্তি আছে।  দস্তিদার-কে কথা দিলাম বিরিয়ানির সুগন্ধ পেলেই তাকে কল করব।  বেচারা দাদা-বৌদির বিরিয়ানি শোকে আছে – তাকে আর আজকের ‘সরিফ ভাই’ বিরিয়ানির কেলেঙ্কারির কথা বলে মনে দুঃখ দিতে চাইলাম না।


    (৪)

    কাল রাতে একটা অটো করে বাড়ি ফিরছিলাম।  বাড়ির সামনে নেমে ফোন-পে করব বলে অটো চালকের কিউ আর কোড স্ক্যান করতে চাইলাম।  তার ফোন হ্যান্ডেলের সামনে লাগানো – সেখানে ঝুঁকে পড়ে স্ক্যান করতে হবে।  তা সেই কাজ করতে গেলে অটোর চালক ছেলেটি আমার ফোনটি দেখল নজর লাগিয়ে।  দিয়ে নিজে থেকেই আমার দিকে তাকিয়ে বলল –

    - আজকাল আই-ফোন কা প্যাহেলে য্যায়সা ইজ্জত নাহি র‍্যাহা।  ঠিক বোল র‍্যাহা হু না ম্যায়?

    - কেন, ইজ্জত থাকবে না কেন?

    - না মানে, আপনার মত পাবলিক-ও যদি আই-ফোন নিয়ে ঘোরে, তাহলে কি আর রইল বাকি!

    মানে কি? এ ছেলে কি বলে! ঠিক আছে, আমি না হয় বারমুডা পরে ফিরছিলাম অটো-তে, কিন্তু বারমুডা-র সাথে আই-ফোনের সম্পর্ক আছে সেটাই তো জানতাম না! কিন্তু ছোকরা কি থামবে? আবার প্রশ্ন ছুঁড়লো –

    - কত নিল ফোনটা?

    আমি দাম বললাম।  সে ছেলে আবার আমাকে পুরোটা বলতে না দিয়েই থামিয়ে দিল –

    - আরে দাদা, অরিজিন্যাল জিনিসের দাম জানতে চাইছি না।  ডুপ্লিকেট-টা কোন মার্কেট থেকে কত দিয়ে কিনলেন সেটা জানার ইচ্ছে হল একটু।

    রাত হয়ে গেছে বেশ – তাই আর কথা না বাড়িয়ে গম্ভীর মুখে উত্তর দিলাম,

    - এটা অরিজিন্যাল জিনিস। ডুপ্লিকেট নয়।

    ছেলেটি অটো ঘোরাতে ঘোরাতে আমার দিকে আর না তাকিয়ে বলতে বলতে গেল –

    - সব লোগ অ্যায়সি হি বোলতা হ্যায়!  
     
    রাগও হল অটো চালকের কথা শুনে।  রাগ রাগ মনে ঢুকছি বাড়িতে, সামনেই আমাদের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের সিকিউরিটি গার্ড-দের হেড দস্তিদার এর সাথে দেখা হয়ে গেল।  সেদিন নাইট ডিউটি ছিল।  বাংলা বলার বেশী সুযোগ পায় না সে আজকাল। তাই আমাকে দেখতে পেলেই বেশ খানিক হ্যাজায় – আমার সময় থাকলে যোগদান করি।  সেদিন মুড খারাপ কিন্তু দস্তিদার আর সেটা জানবে কি করে! দেখত পেয়েই শুরু করে দিল –

    - দাদা, ডিউটি থেকে ফিরেই আজকাল জগিং চালু করে দিয়েছি!

    - কেন, খামোকা আবার জগিং চালু করতে গেলেন কেন?

    - ওই যে আপনাকে দেখে! বাঙালী যদি একে অপরকে দেখে অনুপ্রাণিত না হয় তো আর কে হবে! আপনি যে ব্যায়াম-ট্যায়াম, ছোটাছুটি করেন – সেই দেখে আমিও ভাবলাম, দাদা-র মত বডি মেনটেন করতে হবে।  যদি আপনার মত বডি-টা করা যায়! 

    অন্য দিন হলে সেই প্রশংসা বেশ মন দিয়েই শুনতাম – এমনকি মৃদু প্রতিবাদও করতাম, ‘আরে না না, কি যে বলেন’, যাতে করে দস্তিদার আবার বেশী করে প্রশংসা করে! কিন্তু সেদিন অটো চালক আই-ফোন নিয়ে খোঁটা দিয়ে মুড খারাপ করে দিয়েছে – তাই দস্তিদার-কে অবাক করে দিয়ে বলে উঠলাম –

    - শুধু বডি দেখলেই হবে?

    - তাহলে আর কি দেখব?

    - কেন কোলেষ্টরল? লিপিড প্রোফাইল? পটাশিয়াম লেভেল? লিভার ফাংশান? সুগার লেভেল? হিমোগ্লোবিন?

    - এগুলো তে কি হয়েছে?

    - কেবল আলাদা করে বডি তো ওই ভাবে নেওয়া যায় না! সাথে হাই প্রেশার, হাই-য়ের ও অনেক বেশী কোলেষ্টরল, ধরা ছোঁয়ার বাইরে প্টাশিয়াম লেভেল – স্কেল ছাড়িয়ে যাওয়া সুগার, অসময়ের খরমুজের ভিতরের মত হিমোগ্লোবিনের রঙ।  এগুলোও সাথে করে নিতে হবে। 

    - বলেন কি? আপনাকে দেখে তো বোঝা যায় না!

    - আমাকে দেখে কি বোঝা যায় আমি লেটেষ্ট আই-ফোন নিয়ে ঘুরে বেড়াই?

    এবার দস্তিদার গেছে ঘাবড়ে! ঠিক সত্যিটাও বলতে বাধছে – আমতা আমতা করছে দেখে আমি তাগাদা দিলাম,

    - যা মনে আসছে বলুন না। অসুবিধা নেই। অটোর ছেলে যা বলার বলে দিয়েছে আগেই।

    - না মানে, সত্যি বলতে কি আপনাকে প্রথম দিন দেখে বিগ-বাস্কেটের ডেলিভারী করতে আসা ছেলেটা ভেবেছিলাম।  তারপর জানলাম আপনি এখানে রেসিডেন্ট – অবাক হলাম।  তার পরে অবাক হতে ভুলে গেলাম যেদিন সোসাইটি মিটিং –এ শুনলাম আপনি এখানে বাড়ির মালিক-ও বটে!  সেদিন বাড়ি ফেরার আগে মদ খেতে ঢুকে বারের ছেলেটিকে বলেছিলাম, ‘মন দিয়ে কাজ কর, এই দুনিয়ায় সবই সম্ভব’।

    দস্তিদার অনেকখানি বাংলা বলে থামল – সেদিনের মত ওর বাংলার কোটা শেষ।  আমি তাই আর দস্তিদার-কে বললাম না যে, ও তো তবু বিগ-বাস্কেটের ছেলে ভাবলেও তাড়া করে নি।  এর আগের সিকিউরিটি কোম্পানীর একটা ছেলে আমাকে আমাজনের ডেলিভারী বয় পারমিশন না নিয়ে কমপ্লেক্সে ঢুকে গেছি বলে তাড়া করেছিল!

    তবে সেদিন লিফটে ওঠার সময় বেশ ভেবে অটো চালক ছেলেটিকে মাপ করে দিলাম।  বাঙালী দস্তিদার-ই যদি আমার সম্পর্কে এমন ধারণা পোষণ করে তাহলে আর সাউথের এক ছেলের উপর আর রাগ করে কি হবে!


    (৫)

    মানুষের মধ্যে থেকে ভালোবাসা একদম উবে গেছে এটা ঠিক কথা নয়। এই বিদেশ ভুঁইয়ে কালকেই যা ভালোবাসা পেলাম তাতে প্রায় চোখে জল চলে এসেছিল।

    কাল অফিস থেকে বিকেলে ফিরছি, আমাদের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের সিকিউরিটি গার্ড-দের হেড দস্তিদার এর সাথে দেখা। বসে বসে মোবাইল ঘাঁটছিল। আমাকে দেখেই -

    - আরে দাদা যে কি খবর? অফিস কেমন হল?

    - অফিস আর আলাদা করে কি হবে! যা রোজ হয় তাই হল

    - সেই তো! আমারও যেমন সবদিনই এক!

    - বাড়ি ফেরেন কখন?

    - এত তো ডিউটি শেষ করে রাত আটটা নাগাদ

    - একদম বাড়ি?

    - ওই যে দাদা, লাইফ তো বোরিং, এর মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নিতে হবে

    - তা কি আনন্দ খোঁজেন আপনি?

    - আপনি এক কাজ করুন, আজ আপনি চলুন আমার সাথে। আধ ঘন্টা মজা নিয়েই চলে আসবেন

    সজোরে ঘাড় নেড়ে বললাম, না না - আধঘন্টার মজা আমার চাই না।

    দস্তিদার ছাড়বে না। সে প্রায় ঝুলোঝুলি শুরু করল -

    - চলুন না, আধ ঘন্টা থাকবেন, ব্যাস ওতেই কাজ হয়ে যাবে

    - আপনি যান বরং একাই

    - আরে একা তো রোজই যাই

    দস্তিদারকে খুবই সাংসারিক মানুষ মনে করতাম। তা সেও রোজ আধ ঘন্টার মজা নিতে যাচ্ছে! কত স্যালারি দিচ্ছে সিকিউরিটি কোম্পানী গুলো আজকাল?

    দস্তিদার ছাড়ার পাত্র নয় - বলতেই থাকল

    - চলুন না প্লীজ! একদিন গিয়েই দেখুন না! আমি তো পাশেই বসে থাকব, আপনার কিচ্ছু চিন্তা নেই!

    দস্তিদার ক্রমশ আরো ধোঁয়াটে হয়ে বলেই চলল,

    - গান চলবে পাশে, সামনে থাকবে মাল, আর কি চাই?

    আধঘন্টার মজা মানে সামনে বা নিদেনপক্ষে পাশে মাল থাকবে সেটা বুঝতেই পেরেছিলাম। কিন্তু কি গান শোনে দস্তিদার খুব জানতে ইচ্ছে হল

    - আচ্ছা, আপনি কি গান শোনেন?

    - একদম সফট গান দাদা। তবে গানের মিনিং ও সব আছে গভীর। কালকে শুনছিলাম, 'আমাকে আমার মত থাকতে দাও - নিজেকে নিজের  মত গুছিয়ে নিয়েছি'

    - অ, তা আপনার রোজ আধঘন্টাতেই কাজ হয়ে যায়?

    - একদম, পাক্কা আধঘন্টা লাগে

    ভাবলাম, হবেই হয়ত। এত নিয়ম মেনে কাজ না করলে কি আর এমনি এমনি সিকিউরিটি হেড হয়েছে! তবুও জিজ্ঞেস করলাম -

    - কোন দিন একটু বেশী সময় নেবার কথা মনে হয় নি আপনার? এসব কাজ একদম ঘড়ি ধরে করে কি আর মজা হয়!

    - সে আপনি ভালো বলেছেন। কিন্তু নব্বই মিলিলিটার মাল খেতে আর কত সময় লাগবে?

    এবার আমি কনফিউজড! দস্তিদার কি মালের কথা বলছে! ওদিকে সে বলেই চলে -

    - দাদা, চলুন না! দুই ভাই বসে তিন পেগ মাল খাব। গান শুনব মৃদু

    সে কি ঝোলাঝুলি! আমি আবেগপ্রবণ হয়ে গেলাম। মাল খাবার জন্য এত সাধাসিধি কেবল আমার মামার বাড়ির কাজের লোক সাধনই করে কেবল। লুঙ্গির ফাঁক থেকে কাঁচের গ্লাস বের করে, "ভাগনা, চট করে মেরে দাও। চাঁদা (আমার মামা) দেখতে পেলে আবার আমায় বকাবকি করবে"।

    রাতে মিটিং আছে বলে কাল দস্তিদারকে কাটালাম। চলে আসছি, পিছন থেকে দস্তিদার হাঁক দিল,

    - দাদা মনে রাখবেন, "সব পেলে নষ্ট জীবন"।
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • স্মৃতিচারণ | ২৯ মে ২০২৩ | ১৩১৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • গোপা মুখোপাধ্যায় | 117.214.***.*** | ২৯ মে ২০২৩ ১৭:৩১520100
  • ভাল, গুলবাজের গল্প     ভাল 
  • সুকি | 165.225.***.*** | ২৯ মে ২০২৩ ১৯:৫৫520103
  • এই লেখাগুলি এক অদ্ভূত সমস্যার সৃষ্টি করেছে - আমার জীবনের এক ভাগের জনতার কাছে এগুলো অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং আরেক ভাগের অনেকেই বলছেন এগুলো গুল। তা এই দুয়ের মাঝে আমি আপাতত দুলছি।  
  • যোষিতা | ২৯ মে ২০২৩ ২৩:০৯520107
  • আমি সুকিকে ১০০% বিশ্বেস করি।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:153:e1a5:7d1:***:*** | ৩০ মে ২০২৩ ০৪:১৮520134
  • অবশ্যই সুকিকে বিশ্বাস করি। রেগণ সাহেবের মত - ট্রাস্ট বাট ভেরিফাই।
  • Ranjan Roy | ৩০ মে ২০২৩ ২১:৫৬520139
  • বিশ্বাস করি।
    আমাকেও  কয়েক বার খোমা দেখে ব্যাংকের চারপাশে ভেবেছে।
    নিজের আন্ডারকন্সট্রাকশন বাড়িতে চৌকিদার ঢুকতে দেয় নি।
    কলেজের ছাত্র বলে বিশ্বাস করেনি, ইত্যাদি।
  • Ranjan Roy | ৩০ মে ২০২৩ ২১:৫৬520140
  • *চাপরাশি 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:696a:dfbb:82aa:***:*** | ০২ জুন ২০২৩ ২১:৫২520190
  • দারুণ। খুবই মজাদার 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন