এইবার বাবা তার কারিগরি দক্ষতার প্রকল্প চালু করল। লতানে গাছের জন্য মাচা বাঁধার খুঁটি বানাতে লাগবে বলে বেশ কিছু বাঁশের টুকরো রাখা ছিল। তারই একটাকে নিয়ে এসে দা, করাত, আর কি কি দিয়ে প্রয়োজনীয় কাটাকাটি করে একটা নল বানিয়ে ফেলা, তারপর সেটার যেদিক থেকে রঙ বের হবে সেদিকের দেয়ালে, তুরপুন দিয়ে ছ্যাঁদা করা ইত্যাদির পরে একটা লম্বা টুকরোর দুই প্রান্তে দুই কাপড়ের টুকরো জড়িয়ে একটা দিক হাতলের কাজে আর অন্য দিকটা বাঁশের খোলের মধ্যে ঢুকিয়ে রঙ টানা আর বের করার পিস্টন বানিয়ে ফেলতেই পিচকারি তৈরি হয়ে গেল। আর আমাদের পায় কে! কিন্তু তিনজনের জন্য দুটো পিচকারি করা হয়েছিল, এইটাতে সুবিধা হয়েছিল না অসুবিধা সেইটা এখন আর নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। যেটা নিশ্চিত করে বলা যায় সেটা এই যে সমস্ত বাহুবলি সিনেমায় যেমন দেখায়, অস্ত্রশস্ত্র যতই ব্যবহার হোক, চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হাতাহাতি সম্মুখ সমরে। প্রয়োজনীয় রসদের অভাবে শক্তিশালি দলও হেরে যায়, আমারাও আমাদের সেই প্রথম বছরের যুদ্ধে মনে হয় না খুব সুবিধা করতে পেরেছিলাম। পরের বছর থেকে রসদ সংগ্রহের দায়িত্ব নিজেরা নিয়ে নিয়েছিলাম। হাতের তালুতে রঙ মেখে নিয়ে এগিয়ে চলো, যুদ্ধে হেরে যাওয়া কোন কাজের কথা না। মুস্কিল হল, এই রঙের যুদ্ধশেষে সবাই একই রকম হেরে বসে। সবাই রঙে রঙে রাঙা আজব প্রাণী। ... ...
যাইহোক, নিচের পরিস্থিতি দেখে ছেনু ঠিক করল, আহত সৈন্যদের বোমা মারার কোনো মানে হয়না। তাদের আশেপাশের কিছু বাড়ির ছাদ থেকেও মাঝে সাঝে শেলিং হচ্ছে, তাই যেসব সৌভাগ্যবান সেসব এড়িয়ে তাদের বাড়ি পর্যন্ত বেরঙিন, বেদাগ জামায় আসতে পেরেছে, শুধুমাত্র তাদেরকেই সে নিশানা করবে। পুঁচকে হলেও তার হাতের টিপ মারাত্মক। সে রেলিংয়ের ফাঁক দিয়ে তাক করে টপাটপ রং-বেলুন ছুঁড়ছে আর গায়ে ঠিকমতো পড়লেই বারান্দা থেকে ছুট। এভাবে অন্তত গোটা ছাব্বিশ লোককে সে উজালার খরিদ্দার বানালেও দুঃখের বিষয় উজালা কোম্পানি এতবড় উপকারের প্রতিদান কোনো দিনই তাকে দিতে পারেনি, হয়ত বিষয়টা তাদের গোচরেই আসেনি, কে জানে। ... ...
বঙ্কিমচন্দ্রের বিখ্যাত উপন্যাস আনন্দ মঠ পুস্তকাকারে প্রথম প্রকাশের (১৮৮২ সাল) প্রায় ১৫০ বছর পরে আজ নতুন করে একথা বলার প্রয়োজন নেই যে যে সামান্য কয়েকটি পুস্তক সময়ের সীমাকে অতিক্রম করে আসমুদ্র হিমাচলকে প্রভাবিত করেছে – বিশেষ করে এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সংগীত বন্দেমারতম্ – শুধু ভারতে কেন, সমগ্র বিশ্বেই এর তুলনা মেলা ভার। James Campbell Ker-এর কথায় – “The greeting “Bande Mataram became the war-cry of the extremist party in Bengal; it was raised at political meetings to welcome the popular leaders and ... also occasionally as a shout of defiance of Eropeans in the street.” ... ...
যশপতি সিংহের বুকের মধ্যে অনেকগুলো কাশফুল ডিজে মিক্সের তালে নাচছিল। পুজোর বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। আজ আমদানি ভালই হল। দু'লাখ লাগিয়েছিলেন সকাল সাড়ে নটায়। বারোটার মধ্যেই বেড়ে হয়ে গেল দু'লাখ আশি। মানে ফর্টি পার্সেন্ট। শেয়ার বাজার কি জয়! প্রাণ ভরিয়ে ঝিঙ্গালালা ধ্বনি বাজছিল। অ্যাপ থেকে অর্ডার করে বিখ্যাত দোকানের কিং সাইজ বিরিয়ানি আনালেন। সাঁটিয়ে খেলেন। সঙ্গে ছিল মাটন চাঁপ, স্পেশাল রায়তা আর ফিরনি। তার পরে গ্লাসে কোল্ড ড্রিঙ্ক ঢাললেন। দু-প্যাকেট জলজিরা মেশালেন। গ্লাসের অন্তঃস্থল থেকে উঠে এল আনন্দ বুড়বুড়ি। ... ...
সবেমাত্র চল্লিশের চৌকাঠ পেরিয়েছেন কেপলার। 'প্রবাবিলিটি' শব্দটা তখনও কেবলই লুডোর ছক্কাতেই সীমাবদ্ধ। গণিতশাস্ত্রের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থায়ী জায়গা করে নেয় নি। 'স্ট্যাটিস্টিক্সও' গণিতগর্ভের অঙ্কুর। ... ...
ভৌত ধর্মের নিয়মে সে ক্ষয়ে যাচ্ছে টের পায় তিতাস। তিতাস বন্দোপাধ্যায়। তার ৫ফুট ১১ ইঞ্চির শরীর থেকে একটু একটু করে চুন বালি সুরকির আস্তরণ খসে পড়ছে সে বুঝতে পারে। গভীর রাতে সে জেগে ওঠে। আর তখন তার তীব্র জলতেষ্টা পায়। ক্ষয়প্রাপ্ত বাড়ির মতো তার শরীর খুব জল টানে। জোর হাওয়া দিলে ধুলো ওড়ে। জানলা দিয়ে সে দ্যাখে রাতের অন্ধকার ভেদ করে মিটমিটে আলো জ্বেলে প্লেন উড়ে যাচ্ছে দিল্লি কিংবা জয়পুরের দিকে। কতদিন সে প্লেনে চড়েনি! মনে পড়ে না তিতাসের। আর কতদিন? এভাবে চলবে? ... ...
বাংলা ভাষা একটি মিশ্র ভাষা। তার মধ্যে বৈদিক, সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষার অবদান যেমন আছে, তেমনি আছে খেরওয়াল বা সাঁওতালী সহ বেশ কিছু মুণ্ডা ভাষার অতি গুরূত্বপূর্ণ অবদান। বাংলা ভাষার ওপর বৈদিক, সংস্কৃত ও প্রাকৃতের মতো আর্য ভাষার প্রভাবের দিকটি নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। কিন্তু অস্ট্রো এশিয়াটিক, দ্রাবিড় ও সিনো টিবেটিয়ান ভাষারও যে কম বেশি প্রভাব আছে বাংলা ভাষার গঠনে – তাই নিয়ে আলোচনা তেমন দেখা যায় না। অথচ ভাষাপ্রকৃতির দিক থেকে বিচার করলে বাংলা ভাষার গঠনে মুণ্ডা সহ এসব ভাষার প্রভাবের দিকটি কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ... ...
Tame birds sing of freedom, wild birds fly.... হাওয়াবিহীন দিনগুলিতে আকাশকে চুপসানো বেলুনের খণ্ড মনে হয় - ফ্রেমে আটকানো; যেদিন বাতাস ওঠে, নীল বেলুনের টুকরো ঢাউস শামিয়ানা হয়ে উড়তে থাকে, মেঘ আর ডানারা মোটিফ তৈরি করে - সাদা কালো লাল নীল মেঘ ছেনে ছোটো ডিঙি, বড় বড় পালতোলা নৌকো, বিশাল সব দুর্গ, হাতি, উট আর বুড়ো মানুষ। তার ওপর ঘুড়িরা লাট খায়, জেট চলে যাওয়ার ঘন সাদা লাইন ফিকে হতে হতেই একগুঁয়ে উড়োজাহাজরা উড়ে যায় আচমকা। পাখিরা চক্কর কাটে আর চক্কর কাটে, শেপ ফর্ম করে - ভি, ওয়াই, এম, এ, ডব্লিউ; কখনও তারা মানুষের কাছাকাছি নেমে আসে এমন, যেন ডানার কথা ভুলেই গিয়েছে। ঘাসের ওপর শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখি- ডান হাত মাথার নিচে, বাঁ হাত শুরু হয়েই শেষ হয়ে গিয়েছে, কাঁধের খুব কাছেই চেটো- তাতে তিনটে আঙুল। যেন ডানা। আমি হৃদয়রাম, পঁয়ত্রিশ বছরের এক্ট্রোড্যাকটাইলি পেশেন্ট। উড়তে পারি না অথচ বাঁ কাঁধে কারো হাত ঠেকলে খাঁচায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় পাই। আসলে এ'সবই ডানার গল্প। ... ...
উপত্যকার দিকে তাকিয়ে বেবাক পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কবি। মাথার ওপর যখন চাঁদ ওঠে তখন হাব্বা খাতুন পাহাড়ের বুকের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা সেই মেয়ে, জুন বা জুনি যার নাম ছিল, হঠাৎ কেঁদে ওঠে সে। সেই কান্না অথৈ জল হয়ে কিসেনগঙ্গার রূপ নিয়ে বয়ে চলে যায়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কত রঙে সেজে ওঠে সেই পাহাড়। এখনও অপেক্ষায় আছে সে! ... ...
সাফল্যের সামান্য খতিয়ানে ধরা থাকে কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মেধা পুরস্কার। আর থাকে প্রতিরোধের আখ্যান। বিশ্বব্যাপী হিংসা, দেশব্যাপী বিদ্বেষের আবহাওয়ায় পরিবেষ্টিত বাঙালি, এখনো রূপ - যশ - জয় আকাঙ্খার সঙ্গে উচ্চারণ করে : দ্বিষো জহি। এত ক্লেদের মাঝেও, জাতি বর্ণের ক্লেদ, পড়শীর প্রতি ঈর্ষার ক্লেদ বাঙালিকে সম্পুর্ণ পাড়িয়া ফেলিতে পারে নাই। ... ...
মায়ের চিন্তার কি আর শেষ আছে? সংসারের হাজারো খুঁটিনাটি কাজ সামলে একটু সময়ের জন্যও নিজের কথা ভাববার জো নেই মেনকার। সারাক্ষণ নানান চিন্তা মাথাতে জাঁতার মতো বনবন করে ঘুরে চলেছে। এদিকে আকাশপটের রঙ বদলানো মানেই হলো মেয়ের বাপের বাড়ি আসার দিন ঘনিয়ে আসা। উঠোনের বাইরে রাখা বড়ো পাথুরে চাট্টানের ওপর খড়ি দিয়ে আঁক কেটে কেটে শুভ সময়ের হিসেব রাখার পর্ব ... ...
বাড়ি ফিরে আরেক প্রস্থ ঝামেলা। ফ্ল্যাটবাড়ির দরজায়ই বিজনবাবু। সব্য তখনও গাড়ি থেকে নামেনি, ভালো করে নাকি পার্ক করছে। সিঁড়ির ল্যান্ডিং এ দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে শমিতা, তখনই বিজনবাবু। সিঁড়ি দিয়ে নামছেন। বয়স্ক মানুষ, ওদিকের ফ্ল্যাটে থাকেন। খুব যে দেখাসাক্ষাৎ, কথাবার্তা হয়, তা নয়। কিন্তু আজ শমিতাকে দেখে কীরকম আশ্বস্ত হন মনে হয়। - আপনি বাড়ি ছিলেননা না? শমিতা বলে, না, এই তো ফিরছি। - ও। আসলে আমি একটু গিয়েছিলাম। - কোথায়? - আপনাদের ফ্ল্যাটে। আপনারা কেউই ছিলেননা না? শমিতা একটু অবাক হয়ে বলে, এই সময় তো কোনোদিনই আমরা থাকিনা। - সে তো জানি। বিজনবাবু চিন্তিত গলায় বলেন। - আসলে ওদিকে একটা আওয়াজ পেলাম। ভাবলাম চোর-ডাকাত নাকি। একবার নক করে দেখি। যা দিনকাল। ... ...
- আপনারা তো প্লাস্টিক সার্জারি করেন। - করি। আপনার না অন্য কারো? - আমার। - নাক সোজা করতে গেলে ২৫ লাখ। গাল তোবড়াতে গেলে ৩০। অবিকল পড়া মুখস্থের মতো বলে মেয়েটা, মেয়ে না কলের পুতুল কে জানে। - ঠোঁটও ঠিক করি। কিন্তু মেলদের ওটা লাগেনা। - আপনার বাজেট কত? মনির গলা কেঁপে যায়। - মানে, মুখে না, একটু নিচে। - ঘাড়, গলা, এগুলোয় হবেনা। ওগুলো ভগবান দিয়েছেন। যা দিয়েছেন তাই নিয়েই খুশি থাকুন। ওখানে আমরা হাত দিইনা। বুকে ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করি। সেটাও আপনার লাগবেনা। ভুঁড়ির ফ্যাট বার করে দেওয়া যায়। রেট কত চেক করে বলতে হবে। তবে সিক্স প্যাক হবেনা। ওটা আপনাকে নিজেকেই বানাতে হবে। - মানে, ভুঁড়িও না। তলপেটের সাইডটা। - বুঝিয়ে বলুন। চোখ-কান বুজে মনি বলে ফেলে - ওই জেনিটালস সাইডটা। আঃ। বলে ফেলে কী আরাম। ... ...
এক ছিল হনুমান। সে ছিল খুব রামভক্ত। মানে, প্রথম থেকে কি আর ছিল? এক সময় অবধি হনুমান দিব্যি জঙ্গুলে জীবন কাটাতো, হনুমতীদের সঙ্গে খুব ফস্টিনস্টি করতো, হনুমানোচিত নানারকম কাজ এমন দক্ষতার সঙ্গে করতো, যে গল্প ছড়িয়ে পড়েছিল হনুর কীর্তিকলাপের। বাপ পবনদেবের অর্থ আর প্রতিপত্তির সাহায্য নিয়ে অনেক গ্যাঁড়াকল থেকে বেঁচেও ছিল অবশ্য ছোকরা। প্রতিপত্তি না থাকলে কি আর সূর্য নিজে প্রাইভেট ট্যুশন পড়ায় কাউকে? বেয়াদপ হনু সেখানে আপেল-ফাপেল নিয়ে কী একটা কেত্তন করেছিল, পবনদেব নিজের উদ্যোগে সে খবর ধামাচাপা দেন। ... ...
শুন সবে ভক্তগণ, শুন দিয়া মন, দুঃখের কাহিনী এক করিব কথন-- অগ্রে দিব পরিচয় শুনে রাখো নাম, অতীব দুঃখী আমি বাঙালির রাম। ... ...
আমাদের মানুষদের নীচের চোয়ালের হাড়টিকে বলা হয় ‘হনু’। যদি বুদ্ধি থাকলে কেউ আমাদের বুদ্ধিমান বলেন, কেউ ভেসে থাকলে যদি তাকে ভাসমান বলেন, তাহলে ব্যাকরণের সেই যুক্তিতে আমরা সবাই ‘হনুমান’ হবো না কেন? ‘চিকেন টপ’ টিভি চ্যানেলের স্টুডিও। শুরু হবে প্রাইম টাইম অনুষ্ঠান। অতিথি শ্রী ঘনশ্যাম কর্কট মহাশয়। আর রয়েছেন অ্যাঙ্কার, ক্যামেরাম্যান এবং অন্যান্য crew। অ্যাঙ্কার - চিকেন টপ টিভি চ্যানেলের প্রাইম টাইম অনুষ্ঠানে আপনাদের সকলকে স্বাগত। শুরু হচ্ছে আজকের অনুষ্ঠান “ইতিহাসে পাতিহাঁস”। অতিথি হিসেবে আমরা আজকে পেয়েছি “ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর হিস্টিরিয়া রিসার্চ” এর একজন স্বনাম ধন্য বাঙালি ইতিহাসবিদ শ্রীমান ঘনশ্যাম কর্কট মহাশয়কে... [ঘনশ্যাম কর্কট হাত তুলে নমস্কার করলেন] ঘনশ্যামবাবু আমাদের অনুষ্ঠানে আসবার জন্য ধন্যবাদ... ঘনশ্যাম – [হেসে] জয় বজ্রং বলি... জয় হনুমান। আর ওটা হিস্টিরিয়া নয়, হিসটরিকাল। ... ...
সূত্রধর ১: (টেনে-টেনে) অনেক অনেক বছর আগের কথা। অনেক দূরে এক দেশ ছিল। সে দেশে বড় বড় ক্ষেত, লম্বা লম্বা নদী, উঁচু-উঁচু পাহাড়, আর গভীর-গভীর সমুদ্র। সেখানে গোলা-ভরা ধান, নদী-ভরা জল, গোয়াল-ভরা গরু, গাছ ভরা হনুমান। সূত্রধর ২: (থামিয়ে) ছোটো করে বল না। এত লম্বা করলে লোকে পালাবে। সূত্রধর ১: (বিরক্ত হয়ে) লোক জমবে বলেই তো লম্বা করছি। অ্যানাউন্সমেন্টের কী বুঝিস তুই। সব ধর-তক্তা-মার-পেরেক নাকি? যাই হোক। (আবার শুরু করে) সেখানে ছিলেন এক রাজা। রাজা যেমন বড়, তেমনি ধার্মিক। সূত্রধর ২: (থামিয়ে) রাজার দুই রানী। সীতা আর গীতা। রানীদের গা ভরা গয়না, প্রজাদের পকেট ভরা মায়না। কোথাও কোনো অভাব নেই, কেউ করেনা বায়না। সূত্রধর ১: (আরও বিরক্ত) তোদেরকে কে স্টেজে তুলে দেয় রে? প্রজাদের পকেটে কোনো পয়সা নেই। সূত্রধর ২: অ্যাঁ? তবে খায় কী? সূত্রধর ১: প্রজারা টাকার কলে লাইন দেয়। রোজ কিছু করে করে টাকা ছাড়া হয়। যারা পায়, তারা খায়। যারা পায়না, তারা পরেরদিন আবার লাইন দেয়। রাজা এসেই সব মোহর বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছিলেন। সূত্রধর ২: কেন? সূত্রধর ১: যাতে লোকেরা মোহর নিয়ে অপচয় না করতে পারে। সূত্রধর ২: সব টাকা এখন রাজার ভান্ডারে? হেবি বুদ্ধি তো। সূত্রধর ১: তোর মতো গাড়ল হলে কি আর রাজা হত? রাজত্ব হত? সূত্রধর ২: আর রানী? সূত্রধর ১: ওরে পাঁঠা, এ রাজার কোনো রানী নেই। সূত্রধর ২: এ বাবা, বিয়ে করেনি? দেখতে বাজে? সূত্রধর ১: দেখতে বাজে? ছাতির মাপ জানিস? ইয়াব্বড়ো ছাতি। এত বড়, যে, বৌকেও ভয় পায়না। একজন বৌ আছে, কিন্তু সে রানী নয়। আলাদা থাকে। ... ...