সিএস, ব্যাপারটা তা নয়। নিরাপত্তার অভাব মেয়েদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী, বাড়ির বাইরে রাস্তায় কাজের জায়গায় প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলার সময় এই নিরাপত্তার বিষয়টি তাদের সচেতন চিন্তায় থাকে। দেশের নানান জায়গায় দিল্লি থেকে কলকাতা যখনই এই আরজিকর ধরনের ঘটনা ঘটে তখন তারা শিউরে ওঠে, নিজের সুরক্ষার ব্যাপারে আস্থার জায়গাটা আরও বেশি টলে যায়। কোনো কোনো ঘটনায় তাদের এবং সমাজের ক্ষোভ ফেটে বের হয়। সেটা কখন হবে কতটা হবে সেটা একমাত্র মেশিন লার্নিং টুল বলতে পারবে। যে পরিমাণে ডেটা কালেক্ট করা হচ্ছে মানুষকে চিহ্নিত করে করে দেখবেন অদূর ভবিষ্যতে দুনিয়ার সব স্বৈরাচার প্রেডিক্ট করতে পারবে কখন বিক্ষোভ হবে। সেটা যতদিন না আসে ততদিন আমরা পেয়াঁজী করে নিই যতটা পারি।
তবে রাজ্যের রাজধানীতে একটি সরকারি হাসপাতালে একটি মেয়ে জঘন্য অত্যাচারে খুন ও যৌন নির্যাতনের শিকার হলে যে সুরক্ষার অভাববোধের জমা ভয়টা ক্ষোভ হয়ে বেরিয়ে আসবে সেটা মেশিন লার্নিং ছাড়াও প্রেডিক্ট করা যায়। সেটা বিক্ষোভে পরিণত হয় যখন মানুষ অবাক বিষ্ময়ে দেখে এই জঘন্য ঘটনায় দোষীকে খুঁজে বের করার তৎপরতার বদলে প্রশাসন যেন আসল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
সবাই গুজব নিয়ে চিন্তিত, কিন্তু যা গুজব নয় —
- একটা মেয়ে সরকারি হাসপাতালে খুন হয়েছে
- বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে আত্মহত্যা
- বডি সেভাবে দেখতে না দেয় নি
- বডি পোস্ট মর্টেম করেই তৎক্ষণাৎ দাহ হয়েছে
- হাসপাতালের পদাধিকারী বলছে মেয়ে রাতে ..
- ক্ষোভের চোটে ইস্তফা.. তক্ষুনি অন্যত্র বহাল
- একজনকে ধরেই বলা দোষ স্বীকার করেছে
- এনকাউন্টার করে দাও
- ঘটনার স্পষ্ট বিবরণ কার্যকারণ অনুপস্থিত
- ক্রাইম এরিয়ার পাশেই ভাঙা ভাঙি
দেড়শ গ্রাম না হলেও কি এগুলো মানুষকে রাস্তায় নামানোর জন্যে যথেষ্ট নয়? ধর্ষক জুরাসিক মানুষ না হলে বা সংখ্যায় পনেরো কুড়ি না হলে দেড়শ তো হয়না এটা লোকে নিশ্চয়ই বোঝে। গুজব স্পেকুলেশন তো আছে, কিন্তু গুজব না হলে মানুষ রাস্তায় বের হতো না নয়। মানুষ মমতা ও তৃণমূলের ওপর ক্ষুব্ধ, এটা বাস্তব, সেটা কৃত্রিম উপায়ে চালাকির দ্বারা মিথ্যের দ্বারা নির্মিত নয়, সেটা তৃণমূলের অপশাসনের সত্যের দ্বারা নির্মিত। এই বিক্ষোভ বিরোধীদের কৃতিত্ব নয়, সাধারণ মানুষেরও নয়, এক ও একমাত্র তৃণমূলের নিজের অর্জন। পোস্টের শিরোনামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বলি, ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলে দেখবেন এ সবই তৃণমূলের প্রাপ্য এবং পতনও প্রায় অবধারিত।