আমরা যা করেছি: নির্ভয়া কেসের পর ডিপি কালো করেছি। মোমবাতি মিছিল করেছি। তাত্ত্বিক প্রবন্ধ লিখেছি এবং বক্তৃতা দিয়েছি। অনিতা দেওয়ানের সময় মার্ক জুকারবার্গ শিশু, জ্যাক ডোরসি ও সেভাবে বিখ্যাত নন, ফলে সেইসব করে উঠতে পারিনি, কি আর করা যাবে।
যে বাসস্ট্যান্ড থেকে জ্যোতি সিং বাসে ওঠেন, সেই বাস স্ট্যান্ডে এখনো আলো লাগানো হয়নি, এখনো অন্ধকার এবং নিরাপত্তাহীন সেই জায়গা। সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ।
নির্ভয়ার পর কামদুনি।
আমরা যা করেছি: কামদুনির পর ডিপি কালো করেছি। মোমবাতি মিছিল করেছি। তাত্ত্বিক প্রবন্ধ লিখেছি এবং বক্তৃতা দিয়েছি। টুম্পা কয়াল না মৌসুমী কয়াল, কে বেশি সফিস্টিকেটেড লুকিং ফলে আন্দোলনের মুখ কাকে করা উচিৎ, সেই নিয়ে আলোচনা করেছি।
যে রাস্তা দিয়ে শিপ্রা ঘোষ হেঁটে আসছিলেন সেদিন, কামদুনির সেই রাস্তায় এখনো আলো বসেনি সব জায়গায়, সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ।
কামদুনির পর উন্নাও হয়েছে।
আমরা যা করেছি: উন্নাও এর পর ডিপি কালো করেছি। মোমবাতি মিছিল করেছি। তাত্ত্বিক প্রবন্ধ লিখেছি এবং বক্তৃতা দিয়েছি। ২০১৭ নাগাদ মাল্টিমিডিয়া বেশ উন্নত হয়েছে, মিম জিনিসটার সাথে অনেকের পরিচয় হয়েছে। ফলে কিছু মিম ও বানিয়ে ফেলেছি।
উন্নাওয়ের পর কাঠুয়া।
আমরা যা করেছি: কাঠুয়ার পর ডিপি কালো করেছি। মোমবাতি মিছিল করেছি। মিম বানিয়েছি, তাত্ত্বিক প্রবন্ধ লিখেছি এবং বক্তৃতা দিয়েছি। কবিতা লিখেছি।
রাসনা গ্রামে আসিফা বানোর পরিবার এখন কেমন আছেন, সে ব্যাপারে বিশেষ মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই, কারণ কাঠুয়ার পরে এরকম অজস্র ঘটনা ঘটেছে, এবং সেগুলোর সূত্রে আমরা নতুন নতুন আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছি। এই যেমন প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির সম্ভাব্য ধর্ষকদের এনকাউন্টারে মারার পর উল্লাস দেখিয়েছি সাবাস রাষ্ট্র বলে।
অবশ্য সবজায়গায় আন্দোলন করে উঠতে পারি নি। বরানগরে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের সামনের ফুটপাথ থেকে এক ভিক্ষাজীবী মহিলা কে তুলে নিয়ে গিয়ে সারারাত গাড়িতেই ধর্ষণ করে, যোনিদেশে স্ক্রুড্রাইভার ঢুকিয়ে দেহ ফেলে রেখে যাওয়া হয় বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে। সে নিয়ে বিশেষ কথা হয়নি। একজন ভিখারির জন্য আন্দোলন করার মতো অতটা সময় সম্ভবত আমরা বার করে উঠতে পারি নি।
আমরা যা করেছি : মনীষা বাল্মীকির ঘটনার পর, আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় গর্জে উঠেছি। কারণ আমরা জানি যে যোগী আদিত্যনাথ খুব ভালো বাংলা পড়তে জানেন, নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ার বাংলা পোস্টগুলি দেখেন, ফলে আমাদের এই কড়া নিন্দায় তিনি অনুতপ্ত হবেন এবং হাথরাসের মতো আর কোনো ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটতে দেবেন না।
আমরা যা করিনি: যতটা গুরুত্ত্বের সাথে আমরা নিজেদের সন্তানদের ফার্স্ট হতে শেখাই, শেখাই প্রতি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট বা চাকরিতে উন্নতি করার জন্য যে কোনো রাস্তা নিতে, সেই গুরুত্ত্বের দশভাগের একভাগ দিয়েও শেখাইনা, যে, সমস্ত রকমের বৈষম্য - ধন, শ্রেণী, ধর্ম, লিঙ্গ, জাত, গাত্রবর্ণ - অমানবিক। এবং সেরকম কোনো বৈষম্য দেখলে, দরকারে পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়ার প্রিপারেশন মুলতুবী রেখে সেই বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হয়।
শেখাইনি। শেখাইনা। শেখাবোনা।
আমরা যা করিনি : আমাদের সন্তানদের শেখাইনি যে এমপ্যাথি এক মহামূল্যবান সম্পদ। এবং সিলেকটিভ এমপ্যাথি বলে কিছু হয়না। লিঙ্গবৈষম্যে কেউ এমপ্যাথি দেখিয়ে শ্রেণিবৈষম্যে না দেখালে, বা ধর্ম বৈষম্যে দেখিয়ে গাত্রবর্ণ -বৈষম্যের ভিকটিমের প্রতি না দেখালে, হয় সেই এমপ্যাথি ফেক, অথবা এমপ্যাথি প্রদর্শনকারীর মানবিক শিক্ষা অসম্পূর্ণ।
আমরা যা করিনি: রাষ্ট্রযন্ত্র যে জ্যোতি সিং থেকে শুরু করে মনীষা - সবার পরিণতির মূল দায়ভার নিতে বাধ্য, রাষ্ট্রকে তা ভাবতে বাধ্য করিনি। আমার ট্যাক্সের টাকায় আমার কন্যা সন্তান কেন নিরাপত্তা পাবে না, কেন বিমানবন্দরে সেই টাকায় এক মহিলা চিত্রতারকাকে ওয়াই ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হবে আমাদেরই ট্যাক্সের টাকায় আমাদের অনুমতি না নিয়ে - রাষ্ট্রের চোখে চোখ রেখে এ প্রশ্ন করি নি। উত্তাল সমুদ্রের মতো জনকলরোলে রাস্তা ভাসিয়ে দিয়ে পথে নেমে রাষ্ট্র কে প্রশ্ন করিনি জ্যোতি থেকে মনীষা এবং স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের সামনের সেই ভিক্ষুনীর ও পরিণতির দায় রাষ্ট্র কেন নেবে না, কেন আমার কন্যার নিরাপত্তা জোগানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রের নয়, কেন সে নিরাপত্তাহীন - রক্তচক্ষে হুঙ্কার দিয়ে রাষ্ট্রের কলার পাকড়ে, প্রবল ঝাঁকিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্র কে এই প্রশ্ন করিনি।
এই প্রশ্ন করতে আমাদের আটকেছে। কারো পদোন্নতি, কারো বিদেশে যাওয়া, কারো সরকারি পুরস্কার পাওয়া, কারো গ্র্যান্ট পাওয়া, কারো কোনো কমিটির প্রধান হওয়া, একটি মালা, একটি উত্তরীয় - এসবে আটকেছে। গুহ্যদ্বারে রুল ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কাও আছে তাছাড়া।
আমরা যা করছি: মনীষা বাল্মীকির ধর্ষকরা মঙ্গলগ্রহ থেকে নেমে আসা রাক্ষস ভেবে নিজেদের প্রবোধ দিচ্ছি। সেই রাক্ষসরা যে প্রকৃত প্রস্তাবে আমাদের সামাজিক উদাসীনতার ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন, মনীষার মৃত্যুর পেছনে যে আমাদের দায় ও আছে, তা সযত্নে নিজেদের বিবেকের কাছে এড়িয়ে যাচ্ছি।
হাথরাস হবে। নির্ভয়া, কামদুনি, উন্নাও, কাঠুয়া - হবে। আবার হবে। হতেই থাকবে।
ও হ্যাঁ, রাষ্ট্র কিছক্ষন আগে জানিয়েছেন, মহামান্য আদালতের মাধ্যমে, বাবরি মসজিদ আপনাআপনি ভেঙে পড়েছে। কেউ পরিকল্পিত ভাবে ভাঙেনি। ঠিক যেমন মনীষা বাল্মীকিকে হয়তো কেউ ধর্ষণ করেনি।
বা ধর্ষণ করেছে। মনীষা এবং বিচারব্যবস্থাকে।
সৈকতবাবু "দায়ভারগ্রস্ত হয়ে থাকা" নিয়ে ঠিক কি বলতে চাইছেন সেটা বুঝতে পারিনি। দায়ভারগ্রস্ত কেই বা হচ্ছে? আর হাথরাসের ঘটনার দায় ইউপিরই বা কেন হতে যাবে বা হাথরাসেরই বা কেন হতে যাবে? ঘটনার দায়, যারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের। তার বেশী তো কিছু না। হ্যাঁ, সেখানকার পুলিশের দায়িত্ব (দায় না) হওয়া উচিত মিসম্যানেজ না করে দোষীদের ধরা। সেটা তারা করছে না, সে নিয়ে বাকিরা আন্দোলন টান্দোলন করতে পারে। দায়ভার ইত্যাদি আবার কোত্থেকে আসে? আমি তো দিব্যি সকালে উঠে কফি আর পাঁউরুটি সহযোগে ব্রেকফাস্ট করলাম, কোন দায়ভার বহন না করেই। এখন একটু গুরুতে পোস্ট করে দায়িত্ব সারছি, এর পর কাজে লেগে পড়বো :-)
আপনি বোধহয় খেয়াল করেননি, এটা একটা লেখার নিচে কথা হচ্ছে। সেই লেখাটি প্রসঙ্গে কথা হচ্ছে। আপনি একেবারেই দায়ভারগ্রস্ত নন। মানে পড়ে তেমন মনে হয়নি। তাই আপনাকে তেমন কিছু বলাও হয়নি।
তবে ইউপি সরকারের অবশ্যই দায় আছে। একটা রাজ্য যদি জঙ্গলের রাজত্ব হয়, জাতপাতের, অস্সৃশ্যতার আখড়া হয়, তার দায় তো সরকারকে নিতেই হবে।
তাইলে ডিসি কে কালকের দায়িত্ত্ব পালন করার সময় আরেকবার অমিত (কুমার দাস) বাবুর এর মূল প্রবন্ধ টা আরেকবার পড়ে নিতে হবে। কি ক্যাও টাইপের ছেলে মাইরি :-))))
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
বং অবং নিয়ে কোন দাবি নেই। গৌরবে বহুবচন হয় তেমনি অগৌরবেও বহুবচন হয়। আমরা সবাই মিলে খারাপ, কিন্তু তাহলে অমর্ত্য সেন নোবেল পেলে বোলপুরের লোক কলার তুললেও হাসা যাবে না।
দরিদ্র ভারতবাসী আমার ভাই সে ঠিক আছে, মূর্খ ভারতবাসীও নাহয় ভাইই হলো। কিন্তু চাড্ডি ভারতবাসী যে আমার ভাই নয়, বা জাতিবিদ্বেষী, ধর্ষক, গণহত্যাকারী ভারতবাসী যে আমার কেউ নয় বরং সেসব ভারতবাসীদের দেখলে আমি ভয়ে উল্টোবাগে দৌড়ে পালাই সেই দূরত্বটা স্পষ্ট করে দেওয়াও তো দরকারই।
যাহ, একটা রাজ্যে একের পর এক বর্বরতা হচ্ছে, উন্নাও, আখলাক, কাফিল খান, হাতরাস - কিন্তু রাজ্যের কোন দায় নেই? মজার ব্যাপার তো।
প্রবন্ধটা আগে একবার পড়েছিলাম বটে, তাও আরও একবার পড়লাম। দায় সংক্রান্ত এটা লেখা আছেঃ
"আমরা যা করছি: মনীষা বাল্মীকির ধর্ষকরা মঙ্গলগ্রহ থেকে নেমে আসা রাক্ষস ভেবে নিজেদের প্রবোধ দিচ্ছি। সেই রাক্ষসরা যে প্রকৃত প্রস্তাবে আমাদের সামাজিক উদাসীনতার ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন, মনীষার মৃত্যুর পেছনে যে আমাদের দায় ও আছে, তা সযত্নে নিজেদের বিবেকের কাছে এড়িয়ে যাচ্ছি"
এর সাথে আমি একমত। এখানে ইউপি, বিহার, পশ্চিম বঙ্গ ইত্যাদি আলাদা করে কিছু নেই, "কালেকটিভ" আমাদের সামগ্রিক দায়ের কথা বলা হয়েছে। এটা একেবারেই ঠিক মনে হলো। "আমাদের সামাজিক উদাসীনতা" তো আছেই। আমি কি খবরটা পড়েই সব কাজ ফেলে টিকিট কেটে হাথরাসে রওনা দিয়েছি? আমার তামিল পড়শী কি দিয়েছে? বম্বে থেকে কেউ কি গেছে? আমরা সকালে খবরের কাগজে খবরটা পড়েছি, তারপর নিজের নিজের কাজ করেছি, তারপর ডিনার টেবিলে অল্প একটু আলোচনা করেছি। আমাদের বেশীর ভাগই তাই করেছে, এতে তো কোন সন্দেহ নেই।
মনীষার মৃত্যুর পিছনে আমার কোনো দায় নেই। মাক্কালীর দিব্যি।
আপনি স্বচ্ছন্দে আপনার দায় স্বীকার করে এবং একই সঙ্গে দায়ভার অস্বীকার করে পাঁউরুটি আর কফি দিয়ে ব্রেকফাস্ট করুন। এই যুগপৎ স্বীকার ও অস্বীকারের বৌদ্ধিক ব্যায়ামের ফলে যোগির পাপস্খালন হবে আশা করি।
বোঝ, ওমনি যোগীর পাপের বোঝা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিল :d
মূল লেখাতে লেখক কাউকে নিজের ঘাড়ে দায় চাপাতে বলছেন , আদৌ অবশ্য আমার মনে হয়নি ।জাস্ট একটা জঘন্য ঘটনা , তার রিঅ্যাকশন বলেই মনে হয়েছে . অবশ্য যে যার মতো ভাবতেই পারেন। সব ভাবনার দায় ও সবার নয়।
তবে যারা এসব শুধু যোগিরাজ্যে বা বিজেপি শাসনে হয়, বাংলা বা বাঙালিরা এসব কস্মিনকালেও করেন না বা দ্যাখেন না করে বা বাঙালি দের কোনো দায় নেই বলে উদ্বাহু হচ্ছেন , একটা ছোট্ট ঘটনা দেওয়া থাকলো তাদের জন্যে . মধ্যমগ্রামে এক্কেবারে একভাবে একটি কিশোরী কে অত্যাচারের পর সুইসাইড করে। মমব্যানের পুলিশ ঠিক একইভাবে জোর করে বডি জ্বালিয়ে দেয় . সেই ঘটনা নিয়ে তথাকথিত সভ্য বাঙালি বুজিদের বিশেষ আওয়াজ শোনা যায়নি বা সব বাঙালিকে তার দায় নিতে বলা হয়নি. . তাই লেখক যখন লেখেন "কারো সরকারি পুরস্কার পাওয়া, কারো গ্র্যান্ট পাওয়া, কারো কোনো কমিটির প্রধান হওয়া, একটি মালা, একটি উত্তরীয় ",
সেটা খুব সত্যি বলেই মনে হয়. তার জন্যে সেই এক ক্লিশে বলিউড বা ক্রিকেট র গরুর রচনা র বিশেষ দরকার পড়েনা.
"কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বেটিকে ফার্সট করে দেওয়া অসম্ভব।"
মুখ্যমন্ত্রীকে ডিলিট দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা যাবে?
"ইউরোপীয় ঐক্যের কারণে অ্যালজিরিয়ার অত্যাচারের দায় জার্মানরা কাঁধে তুলে নিল, আর হলোকাস্টের দায় সমানভাবে বইল ফরাসিরা, এ জিনিস হয়না।"
যাহ। সৈকতদা, এইটা কি লিখলেন? হোয়াইট সুপ্রিমেসীর দায় তো সবাইকেই নিতে হচ্ছে। সেখানে নেটিভদের নিধন, স্লেভারি, কলোনিয়ালিজম, ডিসক্রিমিনেশান, থার্ড রাইখ, এমনকি ওয়েস্টার্ণ ইমপেরিয়ালিজমকে একসঙ্গে ধরা হয়েছে।
আর এতো বার যার যার দোষ তার তার দায় এসব বলে আদৌ কি বলতে চাওয়া হচ্ছে ? একটি কমেন্ট ছিল "বিজেপির জানোয়ারগুলিকে দায় নিতে দেওয়া হোক। আর তাদের যারা নির্বাচন করেছে, সেই নির্বাচনমন্ডলীকেও দায়ী করা হোক। "
তো বিজেপির 300+ সিটের ১৮ টার দায় তো পব র তথাকথিত সভ্য বাঙালির যারা নাকি এক্কেবারে "ওদের " মতো নয়। তো তারা ঠিক কিভাবে এর দায় নেবে আর নিয়ে কিকি করবে তাও বলা হোক .
বুঝলাম না। পশ্চিমবঙ্গে ২০১৯ সালে বিজেপি ১৮ টা আসন পেয়েছে। তার দায় পশ্চিমবঙ্গবাসীরই। এখনও বিজেপি জেতেনি যদিও।
গোটা গোবলয়ে এর ৩০ বছর আগে থেকে বিজেপির রমরমা। এবং সেই সূত্রেই সর্বভারতীয় প্রভাব বৃদ্ধি। পথপ্রদর্শনের দায় গোবলয়কে নিতে হবে। ওই রবিশ বা যোগেন্দ্র বা কানাই এঁরা দায়টা নিয়ে নিন। আত্মদর্শন ও আত্মসমালোচনা করুন।
আর হোয়াইট সুপ্রিমেসি একটা বিরাট বড় বালতি। তাতে সমস্ত গরুরই অবদান আছে। নিঃসন্দেহে। কিন্তু কোনো ফরাসীকে গিয়ে বলুননা, "আপনি হলোকাস্টের দায় নিয়ে ক্ষমা চান শিগগির"। সে কী উত্তর দেয়, একটু এসে জানাবেন।
কারোর ইচ্ছে বা সময় থাকলে সে কোনো ফরাসি কে হলোকাস্ট সম্মন্ধে জিগাতেই পারেন। আমার ওসবে বিন্দুমাত্তর ইন্টারেস্ট নেই বা কিছু এসেও যায়না. আমার এই কটি বক্তব্য এক্কেবারে সোজা গোদা ভাষায় লিখে দিলাম নিচে (বেশি গোল গোল না ঘুরে বা বলিউড আর ক্রিকেট এর গরুর রচনায় না ঢুকে):
1. যেটা ঘটেছে বা আরো ঘটছে সেটা বা সেগুলো জঘন্য ঘটনা। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে তার জন্যে যেকেউ দুঃখবোধ করতেই পারেন, তাদের আত্মীয় না হলেও। দুঃখবোধ করা মানে কিভাবে নিজের কাঁধে দায় নেওয়া হয় সেটা পরিষ্কার নয়। ২০১২ তে দিল্লিতে মিছিলে হাঁটার সুযোগ হয়েছিল ওই সময় থাকার সুবাদে , সেটা দুঃখবোধ থেকেই হাটা , তার জন্যে নিজেকে রেপিস্ট মনে করতে হয়নি। দরকার পরলে আবার হাটবো কোনো দায় কাঁধে না নিয়েই। তবে হাটতে যেন নাহয় কোনোদিন এই স্বপ্ন নিয়ে থাকি যতই ভুলভাল স্বপ্ন হোকনা.
তার জন্যে মেয়েটির বা নিজের জাতপাত দেখার ইন্টারেস্ট সক্কলের থাকার দরকার নেই। অবশ্য কারোর কারোর হয়তো নিজেদের ভাষা বা অন্য এজেন্ডা হাইলাইট করার দরকার পরে। তাদের ইন্টারেস্ট ও অন্য হতেই পারে.
২। অপরাধ যারা করে দায় তাদেরই। আইন মেনে শাস্তি তাদের হোক . তাদের প্রতিবেশী বা গ্রামের সক্কলে অপরাধী নয়. সেই কারণেই আমি হটাৎ করে আমার জার্মান প্রতিবেশী কে হলোকাস্ট নিয়ে জিগাই না। যদি তার নিজের বাপ্ বা ঠাকুরদা ও নাত্সি ও থাকে , তবু তার দায় ওনার নিজের নয়। তেমনই আমার উল্টোদিকের আফগান প্রতিবেশী কেও তালিবান কেন মূর্তি ভেঙেছিল জিগাইনা। কেও জিগাতে চাইলে সেসব জিগিয়ে বেড়ান না যেখানে ইচ্ছে। সেসব তার নিজের ইন্টারেস্ট, আমার তাতে কিস্যু আসে যায়না।
৩ । আমি মনে করি যাই ঘটে থাকুক , তার পেছনে গোবলয় হোক বা উত্তর ভারত এর প্রতিটা লোক দায়ী নন। মানসিকতা অবশ্যই একটা মেজর সমস্যা . সেটা রাজনৈতিক ভাবে লড়তে হবে। সমস্ত নর্থ বা বাকি ইন্ডিয়াকে এক ব্রাকেট এ ফেলে ব্লাঙ্কেট গালাগাল দিয়ে বা "বাঙালি ভারত ছাড়ো" - নেট এ এসব ফাঁকা আওয়াজ তুলে নয়।
অবশ্যই এটা আমার নিজের চয়েস, অন্যের চয়েস নিয়ে কুনো বক্তব্য নেই । আমি যতটা বাঙালি ততটাই ভারতীয় . তার জন্যে আমার নিজেকে গোবলয়ি ভাবার দরকার পড়েনা বা গোবলয় সংস্কৃতি আমাদের গিলে নিলো বলিউড দিয়ে বা ক্রিকেট সবকিছু মিশিয়ে সমসত্ত্ব বা আমসত্ত্ব বা কাঁঠালসত্ব বানিয়ে দিচ্ছে সেসব ও মনে করিনা।
৪। যেমন বানতলা বা পার্ক স্ট্রিট বা মধ্যমগ্রামের দায় আমার নয়। আমার পাশের বাড়ির লোক বা আমার নিজের ভাই ও যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তার দায়িত্ব আমার ঘাড়ে চাপেনা. অপরাধের বিচার আইন অনুসারে হোক এটাই সভ্য দেশের চাহিদা সিম্পল কোনো ঘটনার জন্যে একটা অঞ্চলের সবাইকে ব্ল্যাঙ্কেট দায়ী করা আর তার জন্যে তার জন্যে বেছে বেছে সম্পূর্ণ অকারণে রবিশ বা যোগেন্দ্র বা কানাই দের কে দায় নিতে বলা এক্সাক্টলি জাস্ট দা সেম খাপ মেন্টালিটি।
৫ । আর আশা করি যারা এতো বার বার করে রবিশ বা যোগেন্দ্র বা কানাই দেরকে এই ঘটনার দায় নিতে বলছেন জাস্ট তারা এক অঞ্চলের লোক হবার সুবাদে (যদিও এই দায় নিয়ে তারা ভেজে খাবেন না মাথায় দেবেন সেটা বোঝা যাচ্ছেনা এখনো ), তারা নিজেরা পার্ক স্ট্রিট মধ্যম গ্রাম , সারদা নারোদা - ইত্যাদি যাবতীয় কুকীর্তির দায় নিজেদের বিশাল কাঁধে স্বেচ্ছায় তুলে নিয়েছেন- ?? নিয়ে তেনারা ঠিক কি কি করেছেন জানলে বড়ো উপকার হয়।
কেরালা সিপিএম আমাদের পাশে।
কানহাইয়া কে কানাই বললে হবেনা।
https://www.bengalinfo.com/newsdetail.php?newsid=95113
"...পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার চার সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। কারণ তাঁরা দিল্লি থেকে হাথরাসের দিকে আসছিলেন। এই চারজন হলেন– আতিক–উর–রহমান, সিদ্দিকি, মাসুদ আহমেদ এবং আলম। তাঁদের কাছ থেকে কিছু বই ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। এঁদেরকেও পুলিশ সন্দেহ করছে যে, সরকারের বদনাম ও ষড়যন্ত্র করতেই তাঁরা এখানে এসেছিল। তাদের আদালতে তোলা হলে চোদ্দা দিনের হেফাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।..."
ধুরর। এত বড় পোস্ট করে দুম করে সব গেল। সেভ অপশন কবে আসবে!