এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  কূটকচালি

  • কম্পুকুচালি

    লস্ট মাইন্ড লেখকের গ্রাহক হোন
    কূটকচালি | ০৭ আগস্ট ২০১০ | ৯১৭ বার পঠিত
  • ভেতরের যন্ত্রপাতির খবর রাখাও একটু দরকার। কারন আপনারা ভালই জানেন যে কোন কিছু কারো একচেটিয়া হয়ে যাওয়া প্রতিযোগিতার প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। যেমন, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা বামফ্রন্টের একচেটিয়া হয়ে যাওয়া, কিম্বা মা-মাটি-মানুষের কথা, রামধনু জোটের একচেটিয়া হয়ে যাওয়া। আমরা যারা মধ্যপন্থী পরিবর্তনশীল তাদের কাছে সুস্থ 'বিকল্প' থাকা উচিত প্রত্যেকটি জিনিসের।

    ভেতরের যন্ত্রপাতির খবর যাঁরা রাখেন তাঁরা জানেন যে নেটবুকের বাজারে ইন্টেল কর্পোরশন তাদের 'এয়াটম'

    (Atom)
    প্রসেসর দিয়ে বাজার প্রায় একচেটিয়া করে ফেলেছিল। মানে, আপনার হাতে যে নেটবুকই থাকুক না কেন সেটার মধ্যে ইন্টেলের এয়াটম প্রসেসর ও ইন্টেলেরই তৈরি একটা বিশ্রী গ্রাফিক্স চিপ থাকার সম্ভাবনা প্রায় ৯৯ শতাংশ।

    Atom
    এর মার্কেট শেয়ারের প্রকৃত অবস্থা জানতে চাইলে আমার একটু আগে দেওয়া উইকিপিডিয়ায় নেটবুকের কম্প্যরিজন এর লিঙ্কটা আবার দেখতে পারেন

    http://en.wikipedia.org/wiki/Comparison_of_netbooks
    ওর

    CPU
    কলামটা দেখুন তাহলেই বুঝবেন কটা নেটবুক

    Atom
    ছাড়া অন্য কোন প্রসেসর দিয়ে তৈরি। তার মানে দাঁড়াল, আপনার হাতের নেটবুক আর আমার হাতের নেটবুকটার চেহারা আর ব্র্যান্ডে যতই তফাত থাকুক না কেন আসলে তারা সুকুমার রায়ের সেই সজারু আর বেড়ালের মত কেন্দ্রগতং নির্বিশেষম। কেবল দেখবার রকমারী।

    পশ্চিমবঙ্গবাসী সুকুমারবাদীদের কাছে এমন কথা নতুন না হলেও, পৃথিবীর বাকি অধিবাসীদের কাছে এমন পরিস্থিতি মোটেই কাম্য নয়। তাই সুস্থ 'বিকল্প' খোঁজার কাজ চলল হন্যে হয়ে। অল্প কিছু কোম্পানী অন্য নানারকম চিপ দিয়ে নেটবুক বানাবার চেষ্টা করল। কেউ সামান্য সাফল্য পেল, কেউ পুরো ব্যর্থ। এই ডামাডোলের মধ্য থেকেই উঠে এল একটা নতুন বিকল্পের সম্ভাবনা।

    'বিকল্প' বলতে ঠিক কি বোঝেন ? নানা বিকল্পের কথা তো শোনেন, বিকল্প অর্থনীতি, বিকল্প রাজনী, আরও বিকল্প নানাকিছু। মনে পড়ে ছোটবেলা দেখা সাদাকালো বিজ্ঞাপন 'ভাত ও রুটির উৎ্‌কৃষ্ট বিকল্প'?

    কিছুদিন আগে লেখিকা অরুন্ধতী রায়, যিনি কিনা বিকল্প রাজনীতি ও সমাজব্যবস্থার ঘোষিত সমর্থক, তিনিও ফস করে বলে বসলেন যে 'বর্তমানে খনিজ সম্পদ আহরণের সরকারী নীতির সঙ্গে বিকল্প নীতির বিশেষ পার্থক্য নেই'। অথচ ভেবে দেখুন ঐ খনিজ সম্পদ আহরণ নীতিই কি বহু সমস্যার মূল কথা নয় ? এ নিয়ে কি সুশীল সমাজে, এমনকি রুচন্ডালী তেও দিস্তা দিস্তা লেখা হয় নি? এত গভীর সমস্যা থাকতেও 'প্রচলিত' ও 'বিকল্পে' কোন পার্থক্য থাকবে না কেন? আর তাই যদি হয়, তবে যেখানে সমস্য তত গভীর নয় সেখানে 'বিকল্প' যে আরও 'প্রচলিতের' কাছাকাছি চলে আসবে সেটাই তো স্বাভাবিক।

    'বিকল্পে'র কথায় আবার পরে আসছি, আপাতত ঐ সুকুমারবাবুর কেন্দ্রগতং নির্বিশেষম তত্বকে একটু তলিয়ে দেখি। আসুন এটা বোঝার চেষ্টা করি, যে এতকাল ধরে আপনারা যেসব কম্পিউটার ব্যবহার করে এসেছেন সেলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই বা কতটা বদলেছে?, আর একই সময়ে, কোম্পানী/ব্‌র্‌যান্ড ভেদেই বা সেলো কতটা আলাদা ?

    কম্পিউটারের 'হৃদয়' হল তার কেন্দ্রীয় প্রসেসর বা

    CPU (Central Processing Unit)
    একথা চূড়ান্ত নন টেকনিক্যাল রুচন্ডালী পড়া লোকও ভালই জানেন। আর প্রসেসসরের কেন্দ্র বা হৃদয় হল তার ডিজাইন বা 'আর্কিটেকচার'। অর্থাত প্রসেসরের সঙ্গে প্রসেসরের মূল পার্থক্য হওয়া উচিত তার কেন্দ্রীয় আর্কিটেকচারাল ডিজাইন। শুধুমা? তার বাস

    (FSB)
    বা ক্লকস্পীড নয়। এই কেন্দ্রগত পার্থক্য প্রসেসরের সঙ্গে প্রসেসরে কতটা ?

    দুদিক দিয়ে ভাবুন। প্রথম ভাবুন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই কেন্দ্রগত পার্থক্য কতটা বদলেছে, আর দ্বিতীয়ত: ভাবুন আজকের দিনে এক কোম্পানীর সঙ্গে আর এক কোম্পানীর প্রসেসরের কেন্দ্রগত পার্থক্যই বা কতটা রয়েছে।

    দুটো প্রশ্নেরই উত্তর শুনলে আপনারা বিস্মিত হবেন।

    প্রথম প্রশ্নে আসি।

    আপনারা যাঁরা পার্টিলাইনে কট্টর বিশ্বাসী এবং আটের দশকের মাঝের দিকে দমদম বিমানবন্দরের টারম্যাকে শুয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম কম্পিউটারের অনুপ্রবেশ রুখে দিয়েছিলেন, তাঁরা কি জানেন যে সেদিনকার থেকে, কালকে আপনি নিজের আইটি পড়া মেয়েকে, দোকানে দাঁড়িয়ে থেকে সদ্য যে ডেস্কটপটা কিনে দিলেন সেটার কেন্দ্রগত পার্থক্য কি?

    জানলে জানতেন যে, জ্যোতিবাবুর আমলে টারম্যাকে শুয়ে যে কম্পিউটার আপনি আটকেছিলেন সেটা ছিল আর্কিটেকচারের দিক থেকে একটা

    Intel 80286
    প্রসেসরওয়ালা মেশিন। আর গতকাল যে ঝাঁ চকচকে পাতলা স্ক্রীনওলা কোর সেভেন মেশিনটা মেয়েকে কিনে দিলেন সেটা টেকনিক্যাল দিক থেকে

    Intel 80786
    মেশিন। অর্থাত দুটৈ হল প্রসেসর আর্কিটেকচারের দিক থেকে ইন্টেলের

    x86
    মেশিন। উইকিপিডিয়ার

    x86
    পাতার শুরুতে বলছে -

    'The term x86 derived from the fact that early successors to the 8086 also had names ending in '86'.'
    । ঠিক জ্যোতিবাবুর আমলটা খুঁজে পেতে হলে উইকিপিডিয়ায়

    x86
    পাতার

    Chronology
    র টেবিলটার দ্বিতীয় সারিটা দেখুন।

    http://en.wikipedia.org/wiki/X86

    পুরো ব্যাপারটা কি নিতান্ত আপনার মাথার ওপর দিয়ে গেল? ঐসব ডিজাইন আর্কিটেকচার ফেকচার একবর্ণও বুঝলেন না? এক বাক্যে বুঝিয়ে দেব পুরো ব্যপারটা? এককথায় বলতে --- 'বামফ্রন্টের বিকল্প হল উন্নততর বামফ্রন্ট', ব্যাস দেখুন জলের মত পরিস্কার সব, আর বিন্দুমা? ধোঁয়াশা নেই। অর্থাত এককথায়,

    80286
    আর

    80786
    এর মধ্যে তফাত ততটুকুই যতটা তফাত পঞ্চম আর ষষ্ঠ বামফ্রন্ট সরকারের মধ্যে।

    শুধু তাই নয়,পার্সোনাল কম্পিউটারের প্রসেসর আর্কিটেকচারের বাজারেও পশ্চিমবঙ্গের মত গত ৩৪ বছর একচেটিয়া রাজত্ব করে চলেছে

    x86
    , কোন উল্লেখযোগ্য 'পরিবর্তন' ছাড়াই।

    দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে দেখুন আজকের দিনে এত যে প্রসেসর বানানোর কোম্পানী -

    Intel, AMD, VIA, Transmeta
    এবং আরও কত, এত ভিন্নরকম তাদের শেয়ারের দর, কিন্তু তাদের একজনের সঙ্গে অন্যের বানানো প্রসেসরে তফাত কোথায়? এ শুনলে আপনি আবাক হতে বাধ্য যে হাইপার থ্রেডিং, মাল্টি কোর ইত্যাদি গালভরা বুলির আড়ালে আসলে সবাই বানিয়ে চলেছে সেই জ্যোতিবাবুর আমলে রুখে দেওয়া আদি ও অকৃÏ?ম

    x86
    প্রসেসরই।

    এবার আপনার পশ্চিমবঙ্গীয় মন অবশ্যই বলতে শুরু করবে যে -তার মানে নিশ্চয়ই ঐ

    x86
    আর্কিটেকচারের বাইরে প্রসেসর বানানোই সম্ভব না। মানে বামফ্রন্ট ছাড়া সরকার গড়াই সম্ভব না, বামফ্রন্টের বিকল্প একমা? উন্নততর আর একটা বামফ্রন্ট। কিন্তু সত্যিই কি

    x86
    এর বিকল্প কেবল উন্নততর আর একটা

    x86??

    'বিকল্প' সম্পর্কে অরুন্ধতীদেবীর কথা সত্য হলে 'পুঁজিবাদী, মার্কসবাদী ও মাওবাদীদের শিল্পনীতি বা খনিজ সম্পদ বন্টন নীতি প্রায় একইরকম' - এটা সত্যিই আমাদের মত উদারপন্থী বিকল্পপ্রিয় মানুষের দুর্ভাগ্য। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমাদের হাতে আর অন্য কোন বিকল্পই নেই। হতাশ হবেন না কমরেড, কম্পিউটারের ক্ষে®? অন্তত সুস্থ বিকল্প হাতের কাছেই ছিল চিরকাল কেউ সেদিকে নজর দেয় নি এতদিন। কি সেই বিকল্প? সেটা জানতে গেলে পড়তে থাকুন....

    যে জ্যোতিবাবু আটের দশকে ঐতিহাসিক সাফল্যের সঙ্গে বাংলার বুকে কম্পিউটারের অনুপ্রবেশ রুখে দেন, তিনিই ১৯৯৫ সালের ৩১ শে জুলাই ভারতের প্রথম মোবাইল ফোন সার্ভিস

    (Modi-Teslstra)
    উদ্বোধন করেন কলকাতা থেকে তৎ্‌কালীন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী সুখ রামকে প্রথম কলটি করে।

    http://dxm.org/techonomist/news/cellcal.html

    এই মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত প্রসেসরলো কিন্তু কোনওকালে জবরজং

    x86
    ছিল না। মোবাইলে চিরকালই ব্যবহৃত হত, এবং আজও হয়ে চলেছে

    ARM
    আর্কিটেকচার এর প্রসেসর বা আরও টেকনিক্যালি বললে

    RISC (Reduced Instruction Set Computer )
    প্রসেসর। আজকের দিনে যখন সস্তা, কর্মদক্ষ অথচ শক্তিশালী প্রসেসরের খোঁজ পড়ল নতুন প্রজাতির

    OLPC
    বা আমজনতার কম্পিউটার গো®?র, নেটবুককের চাইতেও সস্তা নতুন মেশিন বানানোর জন্য, তখন ডামাডোলের মধ্যে থেকে এই

    ARM (Advanced RISC Machine)
    এর কথাই সবার আগে উঠে এল ইন্টেল

    x86
    এর উত্‌কৃষ্টতর 'বিকল্প' হিসেবে।

    ARM
    সম্পর্কে সামান্য ধারনা পাবেন এই লেখাটায়-

    ARMed for the living room, By Tom Krazit - http://news.cnet.com/ARMed-for-the-living-room/2100-1006_3-6056729.html

    একটা দামী

    x86
    ডেস্কটপ কম্পিউটার বা ল্যাপটপ যদি আপনার থাকে, আর যদি একটা মা? হাজার দুয়েক টাকা দামের

    ARM
    ওয়ালা আধুনিক মোবাইল ফোনও আপনার থাকে তবে আপনি দুটোর তুলনা করলে কি দেখতে পাবেন ?

    ১) আপনি দেখবেন আপনার মোবাইল ফোনটি ২৪ ঘন্টা চালু থাকা সত্বেও এবং ব্যাটারীর সাইজ অনেক ছোট হওয়া সঙ্কেÄও ল্যাপটপের চেয়ে অনেকন বেশী সময় ধরে চলে। অর্থাত

    x86
    ল্যাপটপের চেয়ে

    ARM
    মোবাইল ফোন অনেক বেশী এনার্জি এফিশিয়েন্ট।

    ২) আপনি এটা অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন আপনার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের চাইতে মোবাইল অনেক বেশি দ্রুত চলে। দ্রুত বলতে বোঝাচ্ছে বোতাম টেপা থেকে কাজটা হাসিল করার মধ্যবর্তী সময়টা। অর্থাৎ মোবাইল ফোন কম্পিউটারের চাইতে অনেক বেশী রিয়্যালটাইম রেসপন্ড করে।

    ৩) দাম.. আপনার

    x86
    কম্পিউটারের চাইতে

    ARM
    মোবাইল ফোনের দাম বহুণ কম।

    ৪) আপনার মোবাইলটা যদি যথেষ্ট আধুনিক হয় তবে আপনি এও লক্ষ্য করবেন যে

    x86
    কম্পিউটার দিয়ে আপনি যে যে কাজ করতে পারেন .. তার একটা বড় অংশই

    ARM
    মোবাইল ফোন দিয়ে দিব্যি করা যায়। উদাহরন চান?

    ক) কন্ট্যা? লিস্ট থেকে কারো নাম খোঁজা,

    খ) খানিকটা

    text
    টাইপ করা, বা টাইপ করা

    text
    পড়া।

    গ)

    MP3
    বা অন্য ফরম্যাটে গান শোনা।

    ঘ) নানা ফরম্যাটে ভিডিও দেখা।

    ঙ) ওয়েব ব্রাউজ করা, বা নেট সং?²¡ন্ত অন্য কাজ .. যেমন ইমেল বা

    IM
    ব্যবহার করা বা অনলাইন টিভি দেখা।

    চ) সর্বোপরি ভয়েস চ্যাট তো করাই যায় .. কারন মোবাইল ফোন তৈরির আসল উ®?শ্যই তো স্রেফ কথা বলা।

    এর বাইরে আপনি কম্পিউটার দিয়ে আর কি কি করেন?? ...আপনি বড় সরকারী অপিসার হলে বড়জোর দিনভর তাস খেলেন, মনিটরটা আড়াল করে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে!

    আপনারা এটা শুনে হাঁ হাঁ করে উঠবেন জানি, যে আমরা হ্যানো করি ত্যানো করি, অমুকটা তো কোনদিন করাই যাবে না মোবাইলে। আমি সবই মেনে নিলাম। কিন্তু আমি যদি পরিকল্পনা করি যে, আমি আমার ডেস্কটপ মেশিনটা দিয়ে বঙ্গোপসাগরের অ্যাডভান্সড লিমনোলজিক্যাল মডেলিং করব, তবে সে কাজ করার পক্ষে কি আমার ডেস্কটপটা উপযুক্ত? মোটেই না। সেটা করার জন্য রীতিমত ক্লাস্টার বা সুপার কম্পিউটার লাগবে। ওরকম বিশেষ কিছু কাজ ছাড়া, দেখবেন আপনার ডেস্কটপটার প্রায় ৮০ বা ৯০ শতাংশ কাজই আপনার মোবাইলটা করতে সক্ষম। ডেস্কটপ আর মোবাইল ফোনটার আকার আকৃতি এবং ইন্টারফেস এতটা আলাদা, যে অনেক সময় খেয়ালই থাকে না সে কথা। ধরুন রুচন্ডালী পড়া বা তাতে লেখা, এই কাজ করার মত যথেষ্ট শক্তি কিন্তু আজকের দিনের মোবাইলের আছে। আরও ভালভাবে ওকাজ করার জন্য দরকার শুধু মোবাইল ফোনটার একটা বড় কী বোর্ড, আর একটু বড় স্ক্রীন, এবং সফটওয়্যারে সামান্য পরিবর্তন।

    শুধু ঐ কম্পিউটার আর মোবাইল ফোনের 'তুলনা' র চতুর্থ পয়েন্টটা দোহন করেই কি অপূর্ব রস পাওয়া গেল দেখেছেন ? আগের তিনটে পয়েন্ট এর সঙ্গে যোগ করে দেখলে দেখবেন,

    ARM
    চালিত মোবাইল যেন

    x86
    কম্পিউটারের থেকে সামান্য কিছুটা এগিয়েই রয়েছে।

    ভারতবর্ষে কম্পিউটারের জনপ্রিয়তা যাই হোক না কেন মোবাইল ফোনের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে কোন প্রশ্নই উঠতে পারে না। ১৪ এপ্রিল ২০১০ এর

    UN Daily News
    বলছে

    Mobile telephones more common than toilets in India. http://www.un.org/news/dh/pdf/english/2010/14042010.pdf

    অর্থাৎ

    ARM
    চালিত মোবাইল ফোন যেন ভারতবর্ষে কিছুটা আমজনতার কম্পিউটার হয়েই বসে রয়েছে। আর নেটবুকে পরিবর্তন দরকার শুধু ঐ ব্যাটারীখেকো জবরজং

    x86
    এর পরিবর্তে নতুন কোন অসম্ভব সস্তা, শক্তিসাশ্রয়ী, শক্তিশালী বিকল্প প্রসেসর, এবং ঐ নতুন প্লাটফর্মের ওপর কিছু নতুন সফটওয়্যার, যাতে আপনি আপনার বর্তমান ডেস্কটপের কাজলো প্রায় সমান স্বাচ্ছ্যন্দের সঙ্গে করতে পারেন ঐ নতুন প্ল্যাটফর্মে।

    যখন

    OLPC
    র হাত ধরে

    x86
    নেটবুক ঢুকেছিল, তখন চারিদিকে সাড়া পড়ে গেছিল, যে, 'আম আদমির' কম্পিউটার বুঝি এসেই গেল। এমনকি আমিও আমার এই নেটবুকটা মা? ১৪০০০ টাকায় কিনে ভেবেছিলাম খুব দাঁও মেরেছি। নেটবুকের কথা শুরু করতে গিয়ে আমি তো আগেই বলেছি, যে একেবারে আম আদমির না হোক, এলো আমার আপনার মত মধ্যবিত্তের নাগালে তো বটেই। এবার তবে জলের দরে পাওয়া

    ARM
    চিপ দিয়ে বানানো ট্যাবলেট পিসির দাম তবে কি দাঁড়াতে পারে আন্দাজ করুন।

    রুচন্ডালীতে কিছুদিন আগে বিতর্ক চলছিল যে 'শুক্কুরবার বিপ্লব সফল হলে সোমবার বা মঙ্গলবার থেকে আমরা দেশের কি পরিবর্তন দেখতে পাব?' সব কৃষিজমির আল উঠে গিয়ে কি যৌথ খামার হয়ে যাবে?, বা ফুটপাথের পাট্টা ছেড়ে কি সব হকার-ভাই রা উঠে যাবেন?

    x86
    এর বিরূদ্ধে তো

    ARM
    এর বিপ্লব সফল। অন্তত ট্যাবলেট পিসির ক্ষে®?। অ্যাপলের আইপ্যাড থেকে শুরু করে ভারতের প্রথম যে ট্যাবলেটটি পা রাখতে চলেছে সেই

    Olive
    এর

    Olive Pad
    পর্য্যন্ত সবাই

    ARM
    প্রসেসর চালিত। তবে কি এবার আমরা সরকার ছাড়াও, কর্পোরেটলোর কাছ থেকেও জলের দরে কম্পিউটার আশা করতে পারি?

    এখন পর্যন্ত দেখে শুনে কিন্তু মনে হচ্ছে সে ড়ে বালি …...

    দামের কথা যদি বলেন, তবে এখন অব্দি যা দেখা যাচ্ছে, খোলা বাজারে ঐ জাতীয় মেশিনের দাম অহেতুকভাবে আকাশছোঁয়া। ঐ জাতের মেশিনের সর্বাধিক প্রচারিত প্রতিনিধির কথা আমি আগেই বলেছি, অ্যাপলের আইপ্যাড। তার দাম

    $500
    মানে প্রায় ২৩,২৪২ টাকা। ভারতে ঠিক ঐরকম জিনিস, বা আইপ্যাডের প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চলেছে যে

    Olive
    এর

    Olive Pad
    তার দাম হবে ২৪,৯৯০ টাকা। লিঙ্ক দ্রষ্টব্য-

    http://www.olivetelecom.in/laptop/olivepad/

    শুধু দাম দেখেই বলে দেওয়া যায় যে ২৪০০০ টাকার কোন জিনিস কিছুতেই আম জনতার হাতে হাতে ঘুরবে না, যদি না ডিজিটাল ডিভাইড এর আগে ইকনমিক ডিভাইড দূর করে নেওয়া হয়। ঠিক এখানেই জায়গা করে নিতে পারে সরকারী উদ্যোগে তৈরী $৩৫ এর মা মাটির মেশিন, যদি সেলোকে নিতান্ত 'ঘোষণা'র মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়িত করা যায়।

    ২২শে জুলাই ২০১০ তারিখে, বৃহস্পতিবার কপিলবাবুরা ঘোষনা করলেন নতুন মা মাটির মেশিনের আর রবিবার সকালে আমার মা আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন, 'হ্যাঁরে.. ১৫০০ টাকার কম্পিউটার বের হচ্ছে। বেরোলে আমাকে একটা কিনে দিবি?' হয়ত উনি খবরটা দেখেছেন টিভিতে বা খবরের কাগজে। একজন ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা মহিলা কি করবেন ওটা দিয়ে? আমি জানি, আমার মা ওটার ঢের বেশী সদ্ব্যাবহার করতে পারবেন ওনার অর্ধেক বয়সী একজন সরকারী কর্মচারীর চাইতে। মা মাঝে মাঝেই আমার নেটবুকটা নিয়ে খবরের কাগজ পড়েন বা ই-মেল করেন বিদেশে ওনার আত্মীয় বা বান্ধবীকে। ওনাকে কিছুটা সাহায্য হয়ত ঐ কাজে আমার করতে হয়, তবে সেটা কিছুই নয়। নিজের কম্পিউটার থাকলে মা সেটুকু অসুবিধা কাটিয়ে উঠবেন কদিনেই।

    ওপরের লেখা থেকে এটা পরিষ্কার, যে উপযুক্ত ক্ষে? কিন্তু প্রস্তুত, দরকার শুধু সদিচ্ছার, দরকার কেবল 'প্রতিশ্রুতি'র নয় প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করার। মোবাইল ফোনের দামে

    rugged, low-cost, low-power, connected laptop with content and software
    দিতে পারলে আম জনতা অবশ্যই হাতে তুলে নেবেন সেই হাতিয়ার, যা দিয়ে তাঁরা রণে বনে জলে জঙ্গলে বসে পড়তে পারবেন রুচন্ডা৯তে তাঁদের নিজেদের কথা, লিখে জানাতে পারবেন তাঁদের নিজস্ব মতামত।



    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • কূটকচালি | ০৭ আগস্ট ২০১০ | ৯১৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন