কান্না
গভীর জলের মাছ তুমি—
জলের অনেক নিচে যেই মনোরম
তাকে আমি প্রত্যক্ষ করেছি
তোমার ভিতর
~~~~
অনুবাদ কবিতা
দেয়ালে পিঁপড়ের সারি স্যানিটাইজার দিয়ে মুছে ফেলা হল। বৃষ্টির আগে পিঁপড়েরা ওদের পুরনো কলোনি ছেড়ে নিরাপদ আবাসস্থলের দিকে চলে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই পথ হারাল ওরা। মুছে গেল গন্ধরেখা, মুছে গেল পথশ্রম, শ্রমিক, কুলি-কামিনের নতুন ঘরের দিকে চলে যাবার জেনেটিক ঘোর। এর পরেও যারা বেঁচে থাকবে, তাদের পুরনো ঘর ভেসে যাবে বৃষ্টি-বাদলে, কীটনাশকে। মুছে যা্বে পিঁপড়ে-কলোনি, একটা পিঁপড়ে-ডায়ালেক্ট।
অনেকটা ঠিক এই একইভাবে কেউ মুছে ফেলবে তোমার ভাষা। তোমার রক্ত শুকিয়ে উদ্বায়ী হয়ে আকাশে একটা লাল রঙ্গের মেঘ তৈরি করবে।
খুব দূরে একটা অতিবেগুনী আলোর ভিতর বসে কেউ টুকে নেবে এই দৃশ্য।
হয়ত একটা ছবি করে তাকে টাঙিয়ে রাখবে কোনো দেয়ালে।
~~~~
প্লেজ্যারিজম
ঘরের ভিতর যে ধুলো
তার সত্তর শতাংশ মানুষের ত্বকের ভগ্নাংশ—
ছিন্ন ত্বক, মৃত কোষকলা, ঘাপটি মেরে বসে থাকে
খাটের তলায়, বইয়ের তাকে, আলমারিতে।
জীবন্ত শরীর তাকে ভয় পায়—
মনে করে অন্য কেউ ঢুকে পড়ছে তার এলাকায়—
অনুপ্রবেশকারী!
হাঁচি পায়।
~~~~
লেবুফুল
আজ দুপুরের দিকে চব্বিশ বছরের পুরনো একটা হাওয়া আসে
প্রথমে মনে হয় সুলতা
তারপর বুঝি, সে ওর আইবুড়ো মেজদিদি—
আজো সেই একইরকম—
দাঁত সামান্য উঁচু, মাজা গায়ের রঙ
চোখ আঁকা নাভি— সবেদা গাছের নিচে কবেকার
ঈষৎ পিচ্ছিল সবুজ ঘাটের রাণা—
যেখানে আমরা, আমার বয়সী সকলেই
আছাড় খেয়েছি
আর লেবুফুলের গন্ধে ভরে গেছে আমাদের বয়ঃসন্ধি।
~~~~
যাওয়া
দূরে ঐশ্বরিক নিশ্চেষ্ট পাহাড়, সর্বময় মেঘ
ছাতিম গাছের ছায়া ভেদ করে,
কাঠবেড়ালির লেজের মতো উষ্ণ তুলতুলে
রোদ এসে পড়ে—
এর চেয়ে বেশী কিছু চাইবার আগে
যে বাতাসে আমার শরীর মিলিয়ে যাবে
তারই সপ্রতিভ হাতের টোকায়
একটা দুটো করে ঝরে পড়ে
ছাতিম গাছের পাতা—
ওদের যাবার মতো সহজ সরল
চলে যেতে চাই
আর তো তেমন কিছু চাইবার ছিল না, নেই।