কনভেনশন থেকে ফিরে ( রবিবার রাত )
শুভদীপ গঙ্গোপাধ্যায়
প্রতিটি জটলা, প্রতিটি জমায়েত, প্রতিটি জনসমষ্টির নিজস্ব মুড থাকে। আর সেই মুড অনুযায়ী কোন কোন জমায়েত কখনোসখনো মিছিল হয়ে ওঠে।
আজকের জমায়েতের মুড ছিল জমে থাকা ক্রোধ। সাড়ে তিনটে নাগাদ যখন মেডিকেল কলেজ পৌঁছই তখন থেকেই সে রাগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। প্রশাসনিক ভবনের পাশে ইতস্তত ছোট ছোট জটলা, এদিক ওদিক থেকে উড়ে আসা টুকরো টাকরা মন্তব্য, অনশন মঞ্চের পাশ দিয়ে হলে ওঠার সারিতে দাঁড়ানো চেনা অচেনা মুখগুলো দেখে কোথাও একটা অনুভব করা যায় একটা কিছু হচ্ছে, একটা কিছু হবে । অনামা জনতার ভিড়ের ক্লান্ত হতাশ মুখের সারি যেন হঠাৎ বদলে গেছে। দেখে মনে হয়, এই গণ কনভেনশনে কেউ বোধহয় অনিকেত, আপন, দেবাশিসদের পাশে দাঁড়াতে যান নি, গিয়েছিলেন নিজের বহুদিনের হারিয়ে যাওয়া কণ্ঠস্বরকে পুনরুদ্ধার করার জন্য । আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলার দিকে এগিয়ে যাওয়া এক বিপুল জনসমষ্টি, গিয়েছিল নিজেদের দৃঢ়তা ফিরে পেতে। গিয়েছিল এমন কিছু চেলেমেয়ের কাছে, যাদের সদ্য বেরিয়েছে গোঁফ, অল্প কিছুদিন এসেছে ভোটাধিকার, সদ্য উঠেছে ডানা, আর অন্শনে বেরিয়ে আসা শক্ত চোয়ালে পৃথিবী জয়ের অঙ্গীকার।
বিখ্যাত মানুষজন এসেছিলেন অনেকে, যাদের মিডিয়া বিদ্বজ্জন বলে টলে। বললেনও তাদের মধ্যে অনেকে, ভালই বললেন, তাদের অনেকেই সুবক্তা। বললেন কমলেশ্বর ভট্টাচার্য, অনীক দত্ত, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, কোশিক সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, পল্লব কীর্তনীয়ারা। ছাত্র রাজনীতিকে "অরাজনৈতিক" করে দেওয়ার কথা উঠে এল বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্যে, কৌশিক সেন অবশ্য বললেন ছাত্রদের তোলাবাজির রাজনীতি দেওয়ার কথা। পরিচালক অনীক দত্ত বললেন নিজের হারিয়ে ফেলা শহর কলকাতাকে ফিরে পেতেই তিনি এ আন্দোলনের পাশে, এই কলকাতা তাকে বিশ্বাস যোগায় এ শহরে থাকতে চেয়ে ভুল করেননি তিনি। কিন্তু যে বয়স্ক মানুষটি বললেন আমরা অনশন করব তোমাদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনিই বোধহয় গোটা সভাগৃহটাকে এক্সুরে বেঁধে দিলেন , কিংবা যে অভিভাবক বললেন আমরা আছি তোমাদের পাশে, থাকব এ লড়াইয়ের শেষ পর্যন্ত। অন্যান্য কলেজ থেকে আসা পড়ুয়ার দল যারা স্লোগান তুলল গলা মেলাল স্লোগানে, তারাই আজকের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠল ক্রমশ। ব্যাকগ্রাউন্ডে পল্লব গাইলেন 'হোক লড়াই'। মৌসুমী গাইলেন তাঁর ক্লাসিক বহুস্বরের গান 'তুমি কোথায় ছিলে অনন্য'। গান আর স্লোগান, ভিড়ে ঠাসা সভাগৃহে ছাত্রছাত্রীদের অঙ্গীকার, এর পরে কনভেনশনই পরিণত হল মিছিলে। না হয়ে আর উপায় ছিলনা।
হ্যাঁ, কনভেনশন থেকেই শুরু হল মিছিল। দরকার ছিল এই মিচিলের, দরকার ছিল আন্দোলনকে রাজপথে পৌঁছে দেওয়ার, সারিবদ্ধ মুখ, শক্ত চোয়াল, একসঙ্গে চিৎকার করার। আর আমরা সাক্ষী হয়ে থাকলাম হোস্টেলের দাবীতে ভুখা পেটে লড়ে যাওয়া কিছু ছাত্রদের সংগ্রামের রাজপথে পৌঁছে যাওয়ার। অবশ্য গণ আন্দোলন এমনিভাবেই হয়। প্রতিটি জটলা, প্রতিটি জমায়েত, প্রতিটি জনসমষ্টির নিজস্ব মুড থাকে। আর সেই মুড অনুযায়ী কোন কোন জমায়েত কখনোসখনো মিছিল হয়ে ওঠে। কোনো কোনো মিছিল হয়ে ওঠে গণ আন্দোলন।
কনভেনশন থেকে ফিরে ( রবিবার রাত )
গৌতম চক্রবর্তী
হলটা ভিড়ে ফেটে পড়ছে তখন। সিঁড়িতে মানুষ দাঁড়িয়ে, গেটে প্রচণ্ড চাপ। মানুষ ঢুকতে চাইছে কিন্তু জায়গা নেই। আয়োজকেরা বার বার ক্ষমা চাইছেন জায়গার স্বল্পতার জন্য। বক্তব্য রাখছেন নানা মানুষ, ছাত্রদের সমর্থন জানিয়ে। হঠাৎ এক বৃদ্ধ উঠে দাঁড়ালেন "কি হবে আমাদের ছেলেদের? ওরা যে এখনো না খেয়ে আছে। তাহলে আমরাও বসব অনশনে, ওদের সাথে।" প্রচণ্ড রাগ আর জেদ ফুটে বের হচ্ছিল ওনার গলা থেকে। সাথে সাথে পুরো হল থেকে সমর্থন ভেসে এলো উঁচু গলায়। গণকনভেনশনের সুরটা ওখানেই বাঁধা হয়ে গেল।
আবেগ, স্রেফ নির্জলা আবেগ। আবেগ ছাড়া কোন আন্দোলনটা সফল হয়েছে? আজকের এই হিসাব নিকাশের দুনিয়ায় এখনো ওটাই মানুষের সব থেকে বড় অস্ত্র, দুর্বলতাও বটে। এই অনিকেতরা বারো দিন ভুখা পেটে, এটাও তো ওই আবেগ থেকেই। সমর্থন বা দ্বিমত থাক, আবেগটা তো অস্বীকার করা যায় না। ওই রাগী রাগী মুখের বাচ্চা ছেলেগুলো, যারা রাস্তা কাঁপিয়ে শ্লোগান দিচ্ছিল; ওটাও তো ওই আবেগেই ফল। একটা অসংগঠিত অরাজনৈতিক আন্দোলন স্রেফ ওই আবেগ থেকেই আজ ছড়াচ্ছে দাবানলের মত।
হলে জায়গা না পাওয়া হাজারের ওপর মানুষ বাইরে দাঁড়িয়ে মিটিং শুনলেন ভীষণ ধৈর্য নিয়ে। মানুষের চাপে, মানুষের দাবীতে হঠাৎ সংগঠিত হওয়া মিছিল যখন রাস্তা কাঁপায় তখন সেই আন্দোলন অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। গত যে দিন গেছিলাম, তিনশ মত মানুষ এসেছিলেন ওদের সমর্থনে। আজ সংখ্যাটা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। সাধারণ সব মানুষ, ছাপোষা মধ্যবিত্ত সব। ফেসবুকের প্রচার থেকে খবর পেয়েছেন ওরা। মিডিয়া এই কনভেনশনের কোন খবর প্রচার করেনি। তবু সংখ্যাটা বাড়ছে, মানুষ জানছে; অন্তর থেকে সমর্থন দিচ্ছে ওদের। এই বৃদ্ধির হারটা বিপদজনক, ভীষণ বিপদজনক। ইতিহাস কিন্তু তাই বলছে।
সবাই চাইছে এই অবস্থার অবসান। বাচ্চাগুলো বাঁচুক, ওদের ভীষণ প্রয়োজন আগামী সমাজের। সেটা ওরা ইতিমধ্যে প্রমান করে দিয়েছে। প্রমান করেছে আজকের যুগেও ওদের একটা শক্ত মেরুদণ্ড আছে। গত তিন বছরের আশ্বাস, নতুন বিল্ডিং হলেই সকলের ঠাই মিলবে। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের জন্য বাধ্য হয়ে ওরা গত এক মাস ধরে নানা ভাবে আন্দোলন করছে। শেষে আর কোন রাস্তা না থাকায় অনশনের সিদ্ধান্ত। ওদেরই বা দোষ দেব কি ভাবে?
বারো দিন ছাড়িয়ে তের দিন হল, এখনো ওরা অনশনে। ভাঙ্গা দুর্বল শরীর, কিন্তু হাসিটা অমলিন। গত পাঁচ দিন ধরে মনেপ্রাণে চাইছি এই অবস্থার অবসান হোক যে কোন মূল্যে। ওদের খেতে রাজি করাতে পারিনি, তাই হাল না ছেড়ে অন্য পন্থা নিয়েছি। চেয়েছি কলেজ প্রশাসন একটা সমঝোতায় আসুক। ওরা অনশন তুলে নিক। তাই ওদের ডাকে ছুটে গিয়েছি, যেমন আবার যাব। বার বার যাব। আপনারা যারা আমাদের সমালোচনা করছেন, তাঁরা কোন রাস্তা নিয়েছেন এই অনশন বন্ধ করার? স্পষ্ট উত্তর দিন। আমার কাছে নয়, নিজের কাছে। উত্তর না থাকলে আসুন, ওদের সমর্থনে রাস্তায় নামি।
আলোচনা ( রবিবার রাত পর্যন্ত )
ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী
গতকাল বিকাল থেকে রাত অব্দি আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলার পর 'সেভ ডেমোক্রেসী'-র তরফে অধ্যাপক অম্বিকেশ পাত্র, কবি মন্দাক্রান্তা সেন প্রমূখ এবং Ahsd WB-এর তরফে আমি ও ডাঃ ব্রতীন দত্ত বর্তমান কার্য্যনির্বাহী অধ্যক্ষ ডাঃ অশোক ভদ্রের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসি মধ্যস্থতার উদ্দেশ্যে। যে পয়েন্টগুলো উঠে এল
১) ক্যাম্পাসের ভিতরের নতুন হোস্টেলেই ফার্স্ট ইয়ার ছাত্রদের সবাইকে রাখতে বদ্ধপরিকর কর্তৃপক্ষ।
আমাদের যুক্তি - মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার কোনো নিয়মে বলা নেই যে তাদের ভিতরের হোস্টেলেই রাখতে হবে। বরং, ফার্স্ট এমবিবিএস (প্রথম দেড় বছর) ছাত্রদের শুধু সকাল থেকে বিকেল অ্যানাটমি, ফিজিওলজি ও বায়োকেমিষ্ট্রি থিওরি ও প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করে হোস্টেলে ফিরে যাওয়া ছাড়া কাজ নেই, হাসপাতালের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই নেই। তাদের বাইরের হোস্টেলগুলোতে রাখাই যায়। থার্ড ইয়ার থেকে ছাত্রদের বেড-সাইড ক্লিনিকস শুরু হয় বেশ সকালে, অনেক সময় ইভনিং রাউন্ডে বা তার পরেও স্যরেরা বা সিনিয়র ওদের ভালো কেস পেলে বেড-সাইডে পড়ান। ওদের ক্যাম্পাসে থাকলে সুবিধা।
২) অধ্যক্ষের বক্তব্য নতুন হোস্টেল তো সিনিয়র ছাত্রদের জন্য তৈরী হয়নি ! তৈরী হয়েছিল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনীদের জন্য।
আমাদের যুক্তি - নতুন হোস্টেল ফার্স্ট ইয়ারের জন্যেও তৈরী হয়নি। তাছাড়া পিজিটি ছেলেমেয়েদের তো নতুন হোস্টেলে মাত্র একটি করে ফ্লোরই যথেষ্ট। বাকিগুলো আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের দিতে অসুবিধে কোথায় ?
৩) অধ্যক্ষের বক্তব্য র়্যাগিং আটকাতে মেডিক্যাল কাউন্সিল ফার্স্ট ইয়ারকে আলাদা রাখতে বলেছেন।
আমাদের যুক্তি - মেডিক্যাল কাউন্সিলের নিয়মে ফার্স্ট ইয়ারের জন্য একই হোস্টেলে আলাদা ব্লকের কথা রয়েছে, আলাদা হোস্টেল নয়। নতুন হোস্টেলের একটা ফ্লোরেই ফার্স্ট ইয়ার এঁটে যায়, বাকী ফ্লোরগুলো কি করবেন ?
৪) অধ্যক্ষ জানালেন নতুন হোস্টেলের একেবারে উপরের দুটি তলা এক্সটার্ন্যাল এগজামিনারদের জন্য এয়ারকন্ডিশনড্ গেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহার হবে।
আমাদের যুক্তি - এক্সটার্ন্যাল পরীক্ষকরা বছরে একবার চার দিনের জন্য আসেন পরীক্ষা নিতে - ভালো হোটেলে রাখার খরচ খুব বেশী হলে লাখ খানেক টাকা। তাছাড়া, নতুন হোস্টেলের যে দুটো ফ্লোরে পিজিটি অর্থাৎ পরীক্ষার্থীরা থাকবে, তার ঠিক উপরের তলায় এক্সটার্ন্যাল পরীক্ষকদের রাখবেন, এটা মেডিক্যাল কাউন্সিল জানে ? অনুমোদন করে ? উনি নিরুত্তর !
৫) অধ্যক্ষের যুক্তি, মোট যতজন ছাত্র হোস্টেলের জন্য আবেদন করেছে, তাদের সব্বাইকে পুরনো হোস্টেলগুলোতে রেখেও ঐ হোস্টেলে সিট ফাঁকা থাকবে।
আমাদের যুক্তি - ক্যাম্পাসের ভিতর নতুন হোস্টেল অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আগে ভর্তি করেও যদি দরকার হয় তবেই বাইরের পুরানো ভগ্নপ্রায় হোস্টেলগুলোতে ছাত্রদের রাখার কথা ভাবছেন না কেন ?
অধ্যক্ষ বললেন, পুরনো হোস্টেলগুলি যথেষ্ট ভালো !
আমাদের যুক্তি - মেডিক্যাল কাউন্সিলের নিয়মে একটি ঘরে তিনজনের বেশী ছাত্র বা ছাত্রী থাকবে না। আপনারা চারজন করে রেখেছেন। প্রতি ঘর থেকে একজন করে বাড়তি ছাত্রকে নতুন হোস্টেলের ফাঁকা ফ্লোরগুলোতে রাখবেন না কেন ?
৬) অধ্যক্ষ বললেন, বেশ তবে নতুন হোস্টেলের দুটি ফ্লোর ওদের ছাড়তে পারি, তবে হোস্টেলগুলিতে ছাত্রদের বিন্যাস-বন্টন কিরকম হবে তা নিয়ে দুই ছাত্রগোষ্ঠীর বিবাদ রয়েছে, তাই এই বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্যসচিবের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন লাগবে।
আমাদের যুক্তি - কোন হোস্টেলে কোন ছাত্র থাকবে তা সাধারণতঃ ডিন বা অধ্যক্ষের ঠিক করে দেওয়া একটি গণতান্ত্রিক কমিটির উপরেই ছাড়া হয়, তাঁরা নীতি নির্ধারণ করে দেন - দূরে বাড়ি, সিনিয়রিটি, প্রতিবন্ধী কি না - এইসবের ভিত্তিতে ওপেন কাউন্সেলিং-এর মারফৎ বন্টন হয়। হোস্টেলের সিট বন্টন কি মুখ্যমন্ত্রীর কাজের মধ্যে পরে ?
৭) অধ্যক্ষের যুক্তি, অন্য ছাত্রগোষ্ঠীও (ইঙ্গিত শাসকদলের সংগঠন) অনশন শুরু করতে পারে তাদের দাবী না মানলে !
আমাদের প্রশ্ন - যারা ১৩ দিন অনশন করছে তাদের প্রতি উদাসীনতা দেখিয়ে 'অন্যগোষ্ঠী'ও অনশন করতে পারে এই আশঙ্কাতেই আপনি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছেন ?
৮) অধ্যক্ষ বললেন, রবিবার কিছু হবে না, সোমবাল স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে পাঠানো হবে হোস্টেলগুলিতে ছাত্রদের বর্তমান বিন্যাস ও নতুন বিন্যাসের প্রস্তাব, তিনি খতিয়ে দেখে স্বাস্থ্য সচিবের কাছে পাঠাবেন। সচিব সব দেখেশুনে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠাবেন।
আমাদের যুক্তি, বুদ্ধি, বিবেচনা বোধ আর কাজ করল না !
৯) অধ্যক্ষ বললেন, আত্মহত্যার চেষ্টা দন্ডনীয় অপরাধ। সরকার ও প্রশাসন যে কোনো মুহুর্তে বলপ্রয়োগ করে এই অপরাধ দমন করতে পারে।
আমাদের শেষ বক্তব্য - আত্মহত্যায় প্ররোচনাও দন্ডনীয় অপরাধ, মনে রাখবেন স্যর।
ইতিমধ্যে রবিবাসরীয় ছুটি যাপনে ব্যস্ত সকলে। ছাত্ররা আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছে, মরণের দিকে এগোচ্ছে তারা।
নাগরিক সমাজ এগিয়ে এসে গণ-কনভেনশন ও মিছিল করলেন আজ। আগামী পরশু বিকেল তিনটেয় আরো বড়ো মিছিল হবে। তবে এই আন্দোলনের স্ফূলিঙ্গ সব মেডিক্যাল কলেজে এবং অন্যান্য কলেজে দাবানলের মত ছড়িয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা খোলা দেখছি না।
কী ঘটছে ( রবিবার রাত পর্যন্ত )
ডাঃ অর্জুন দাশগুপ্ত
কাল বলেছিলাম , একটা আশা ছিল অনশন উঠে যাবার।
আজ আবার দুর্যোগের কালো মেঘ। প্রিন্সিপাল লিখিত দিয়েছেন যে ছাত্রদের দাবি সঠিক। কিন্তু হায়ার অথরিটির অনুমতি সাপেক্ষ।
এই হায়ার অথরিটিটা কি সেটা বুঝতে পারা যাচ্ছে না। আমরা ডাক্তারদের পক্ষ থেকে আজ প্রবীণ চিকিৎসক প্রফেসর বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী কে নিয়ে গেছিলাম। তিনি ছাত্রদের অনুরোধ করেন। এবং অসংখ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাব্যক্তি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কে ফোন করেন যাতে রবিবারের মধ্যে কিছু সমাধান হয়ে যায়। প্রায় সকলেই এই হায়ার অথরিটির কারণ দেখিয়ে তাদের অপারগতা জানান।
অতএব ১৩ দিন বাদেও অনশনের আরো একটা দিন। ওদের মুখের দিকে তাকাতে পারছি না, তবে ছেলেগুলোর কাছে অনেক কিছু শিখছি।