
যাঁরা নানা কারণে লিখতে পারলেন না নবারুণারী তে, ফেসবুক ও গুরুচন্ডা৯ সাইটে তাদের নতুন-পুরোনো পোস্ট থেকে কিছু মতামত, কিছু আলাপ-আলোচনার নির্যাস রাখা রইল এই অংশে। এর অনেকগুলোই ভাটিয়া৯ অংশে অনেকের সাথে আলোচনার অংশ হিসেবে লেখা বলে এখানে একত্রে একটি লেখা হিসেবে পড়তে খানিক অদ্ভুত লাগতে পারে। সামান্য কিছু এডিটও করতে হল কথোপকথন থেকে বক্তব্য ও সময়কালের সাযুজ্য বজায় রেখে লেখাগুলো আলাদা করতে, তবু, যাঁরা লিখেছেন, তাঁদের মনোভাব আর বক্তব্যের সারবত্তা ধরে রাখা জরুরি মনে হাওয়ায় এবং অন্য কোন উপায় না থাকায় এগুলি এভাবেই রইল। আশা রাখি পরবর্তীতে এঁরা অন্যত্র কখনো নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বিস্তারিত লিখবেন।
আত্রেয়ী
(আগস্ট, ২০১৪)
নবারুণ ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পর আশা করছিলাম কোনো ক্রিটিকাল অবিচুয়ারি কোথাও পড়ব। দোষে গুণে তৈরি একজনের চিন্তা/লেখা এগুলোর মধ্যেও যে দ্বন্দ্ব, সেগুলো নিয়ে। বিশেষ করে এমন একজন যিনি নিজে স্পষ্ট কথা থেকে পিছিয়ে যাননি কখনও। পেলাম না।
হারবার্টকে ফ্রডস্টার বলে ঠিক ডেপিক্ট করতে চেয়েছেন বলে তো কখনো মনে হয়নি - মানে, পুরো চরিত্রর গড়ে ওঠা, ব্যাকগ্রাউন্ড, বিভিন্ন ইনফ্লুয়েন্স সব কিছু মিলিয়ে দেখলে। একটা অল্টার্নেট রিয়ালিটি তে বিশ্বাস করে এমন কেউ। তার সাথে যুক্তিবাদী সমিতিকে কিঞ্চিৎ খিল্লি, রিয়ালিটি কী - তা নিয়ে প্রশ্ন এবং অ্যাট দ্য এন্ড উত্তরাধুনিক ভাবধারায় সব রিয়ালিটিকেই গ্রাহ্য করা ও একই সাথে ক্রিটিসাইজ করার পরম্পরা।
(সেপ্টেম্বর ২০০৬)
হারবার্ট সিনেমাটার আমি একটু নিন্দে করি।
প্রথম প্রশ্ন, আমার খুব জানার ইচ্ছে যাঁরা বইটা পড়ে সিনেমা দেখেছেন ভার্সাস যাঁরা বইটা পড়েন নি (যেমন আমি) তাঁদের এই সিনেমা সম্বন্ধে বক্তব্য।
দ্বিতীয় কোশ্চেন - আধা স্বপ্ন, আধা জাগরণের ঐ সিকোয়েন্স গুলোতে ইউরোপিয়ান ইনফ্লুয়েন্স নিয়ে কোনো বক্তব্য?
তৃতীয়, এবং ক্যাঁইমাই করে উঠোনা, শুভাশিসের অভিনয় কোথাও কোথাও অতিনাটকীয়, ইন ফ্যক্ট excessive বলে মনে হয়নি? এবং এই প্রসঙ্গে, সুমনের নিজের ব্যাকগ্রাউন্ড কতটা দায়ী? স্টেজের ভাষা আর সিনেমার ভাষার তফাৎ কি মানবো আমরা?
চতুর্থ, ঐ র্যাশনালিটি বনাম স্কিজোফ্রেনিয়া, ঐটা যদি খেতেই হয়, তাহলে লাস্ট সিন'এ ডিরেক্টর একটি obvious ঘটনা, অর্থাৎ, গ্রেনেড কোত্থেকে তোষকে আমদানি হয়েছে, সেটা explain করা খুব কি জরুরী ছিল? ঐ পুরো সিকোয়েন্স, সাথে সব্যসাচীর গম্ভীর মুখ করে বলা, কখন কোথায় কি ফেটে যেতে পারে তা বোঝা মুশকিল, এই দুটো সিন সিনেমাটাকে আমার মতে অনেকটাই খেলো করেছে।
এবার সবচেয়ে petty কিন্তু বেশ বিরক্তিকর, কিছু ডায়লগ, ফ্যান তোলার সময় জোর করে উ: আ: আওয়াজ, তোষক টানার সময়, "হ্যাঁ এদিকটা ধর, টান" আবার "উ: আ:" বড্ড অ্যামেচারিস।
কিন্তু হক কথা, অনেকদিন পর কোনো বাংলা সিনেমা দেখে মনে হল, অন্যরকম কিছু হল একটা, প্রথম সুমনের গান শোনার পর যেমন হয়েছিল।
আরো দুইখান কথা কত্তা! একেবারেই নন-ন্যারেটিভ কোনো এলিমেন্ট সেরকম ভাবে এই সিনেমাতে আছে বলে মনে হয়নি আমার। আর কলকাতা? কলকাতার কথা বল্লেনা? যেভাবে ওতোপ্রোত ভাবে সারা সিনেমা জুড়ে লেপের মত?
মিঠু
(আগস্ট, ২০১৪)
আমার কখনোই হারবার্ট কে আতাক্যালানে মনে হয় না। মনে হয় একজন চলমান রহস্যময় লোক। যার অন্ধকার আর আলো দুটোতেই লুকিয়ে যাতায়াত।
সায়নী সিনহা রায়
(জুলাই, ২০১৬)
আমার মনে পড়ে যদ্দুর, নবারুণদা বলতেন - "বুঝলে ভাল, না বুঝলে আরও ভাল, কষ্ট কম হবে" আমি চেষ্টা করি না, বোঝার, আত্মঃস্থ করাতেই সুখ।
সঙ্গীতা দাশগুপ্ত রায়
(জুলাই, ২০১৬)
আমি নবারুণ খুব অল্প পড়েছি। কেন অল্প পড়েছি তার কারণ এটাই যে বেশি পড়ার তাগিদ পাইনি। আমি জানি এটা লিখলে অনেকেই আমাকে ব্রাত্য করতে পারেন, তবু এটাই সত্যি তাই এটাই লিখতে পারলাম। আমি শুধু ছোট গল্প পড়েছি ওঁর কিছু।
এবারেও ওঁকে নিয়ে লিখব ভেবেও লিখিনি। কারন লিখতে পারিনি। লিখতে পারিনি, কারণ পড়তে পারিনি বেশিক্ষণ। নেটে পাওয়া লিঙ্ক খুলে পড়তে বসেছিলাম কিন্তু প্রত্যেকবারই কয়েক পাতা পড়ার পর খেই হারিয়ে ফেলেছি। প্রচন্ড বিবমিষা বা প্রচন্ড বিরক্তি / ফ্রাস্টেশনের যে ছবি তার দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা আমার কম্ম না বুঝলাম।
নিজের মধ্যে অনেক ক্ষোভ নেই এমন না, বিরক্তি বা রাগ নেই তাও না। কিন্তু প্রতি লাইনে প্রতি পাতায় তার এমন রক্তাক্ত প্রকাশভংগীর সাথে আমি রিলেট করতে পারিনি। আর তাই তেমন কিছু লিখিনি। আমি জানি যদি এই কথা গুলো লিখি তো লোকে আমার টুঁটি টিপে ধরে বলবে কই অমুক লেখাটা পড়ে বলছ কি? কই তমুক লেখায় তো এত ঘৃণা নেই, তুমি কি সেটা পড়েছ?
আমি নির্ঘাত সেগুলো পড়িই নি, তাই জবাবও দিতে পারব না। কারন একাধিক পড়ার ইচ্ছা নবারুনের লেখনী আমার মধ্যে তৈরি করেন নি। হয়ত সে আমারই অক্ষমতা। কারন অমন প্রথিতযশা মানুষ আমার মধ্যে তাঁর লেখার প্রতি আকর্ষন তৈরি করতে পারেন নি একথা ভাবার সাহস আমার হয় না।
এক কথায় বলতে গেলে, নবারুনের লেখা আমার কাছে স্যামনের মত বা অ্যাভোক্যাডোর মত। সারা দুনিয়া এই দুইয়ের পুষ্টি ও গুণের গান গায় কিন্তু আমি বাজারে গেলে এ দুইয়ের কোনটাই কিনিনা। কারন দুইয়ের স্বাদই বোধহয় খানিক হ্যাবিট ফর্মিং। আর হ্যাবিট ফর্ম করতে গেলে কম্ফর্ট ভাবার কথাই না।
নবারুণ, সম্ভবতঃ হ্যাবিট ফর্মিং। তবে তিনি আমার কম্ফর্ট জোন নন।
সুচেতা মিশ্র
(জুলাই, ২০১৬)
প্রথমেই বলি যে, আমি নবারুণের লেখা খুব কম পড়েছি। পড়ার চেষ্টা করেছি, তারেকের জন্যই। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারিনি। কখনও হয়তো একটা প্যারাই বেশ কয়েকবার পড়েছি, আবার তারপর হয়তো এক লাইন ও এগোয়নি। শেষ করতে পারিনি। গদ্য ও কবিতা দুই। আর কোনও একজন লেখকের একটাও লেখা নিয়ে লিখতে হলে, তার বেশ কিছু লেখা না পড়লে ভাল করে বলা যায় না সেই লেখকের লেখা সম্পর্কে, এরকমই মনে করি আমি। রচনা লেখা তো নয় এসব। আর নবারুণের যা একটা বড়সড় সেক্ট, "ফ্যাতারু সেক্ট" তৈরী হয়ে গেছে, সেখানে আমার মতো কারোও লেখাও ঠিক হবে না - বাপস তারপরে সব ফ্যাতারুরা রাতের অন্ধকারে ঝাঁপিয়ে পড়ুক এককাট্টা হয়ে আর কী! তবে, বাংলা সাহিত্যের ঐখানে বসে, যেখানে বেশির ভাগ লেখক/সাহিত্যিকদের নিজের একহাত দূরের জিনিষ চোখে পড়ে না, সেখানে ওরকম লেখাও লিখে যাওয়ার গাটস এর জন্যই হয়তো কখনও নবারুণ পড়ার চেষ্টা করবো ভালভাবে। তবে, ওনার ইন্টারভিউগুলো খুব ভালভাবে পড়েছি, আর মনে হয়েছে ওনার সাথে কখনও কথা বলার সুযোগ পেলে খুব ভাল লাগতো।
আর একটা কথাও না বলে পারছি না, লেখক/পাঠককে "মহিলা" লেখক/পাঠক হিসেবে দাগিয়ে দেওয়াতেও আমার আপত্তি আছে।
পাঠক/লেখক হিসেবে মেয়েরা এখনও সংখ্যায় অনেক কম। এই নিয়ে কোন রিসার্চ হয়েছে কি? নবারুণেরও মহিলা পাঠক কম থাকবে, এটা কিছু আশ্চর্যের নয়। একটা বিশেষ age group এর পাঠক হয়তো কম পড়ছেন। পাঠক/লেখক কে একটা বলয়ের মধ্যে রাখতে আপত্তির কথা বলেছি।
শুচিস্মিতা সরকার
(জুলাই, ২০১৬)
হ্যাঁ, মেয়েদের নবারুণ পাঠ কোথায় আটকে যাচ্ছে সেটা খোঁজাটা গুরুত্বপূর্ণ। হারবার্ট ভালো লেগেছিল। ফ্যাতাড়ু সিরিজের কিছু পড়েছি। বা বলা ভালো অন্যেরা পড়েছে, আমি শুনেছি। "বাংলার পরে আছে উৎকল দেশ, রোজ রাতে যায় তথা পুরী এক্সপ্রেস" বা "সবাই জাঙ্গিয়া পরে, তুমি একা পরে আলখাল্লা" জাতীয় বিক্ষিপ্ত লাইন ছাড়া বিশেষ কিছু মনে নেই। খুব যে চেষ্টা করেছি নবারুণের পাঠক হয়ে ওঠার এমনটা নয়। কৌতুহলে নেড়েচেড়ে দেখেছি। তারপর আমার জিনিস নয় দেখে দূরে সরে গেছি। হারবার্ট আর ফ্যাতাড়ুর বাইরেও নবারুণ অনেক লিখেছেন এটা জানি। কিন্তু খুব একটা আগ্রহ হয়নি। সুচেতনা-দি যে কথাটা বলল সেটা গুরুত্বপূর্ণ। নবারুণ মনে হয় acquired taste।
ভাষা না। ফ্যাতাড়ু সিরিজের অ্যানার্কি আমার ফিলোসফির সাথে মেলেনি। তাই আর এগোনোর ইচ্ছা হয়নি। এই কারণটা হয়তো সাহিত্য আলোচনার ক্ষেত্রে যথাযথ হল না। কিন্তু এটা আগ্রহ হারানোর বড় কারণ।
মীনাক্ষী মন্ডল
(জুলাই, ২০১৬)
নবারুণ সেভাবে কোন দিন আকর্ষণ করেননি৷ গুটি কয়েক লেখা just পড়ার আগ্রহে পড়েছি কিন্তু ঐটুকুই৷আমার ক্ষেত্রে বলতে পারি এক তো লেখার ভাষা আমাকে আকর্ষণ করেনি আর তাছাড়া তখন পড়াশুনোর সূত্রে ইংরেজী সাহিত্যের বিভিন্ন দিকপালের লেখা পড়া শুরু করি যা আগে আমার কাছে অধরা ছিল৷ এরপর আর নবারুণের কাছে ফিরতে ইচ্ছে হয় নি৷
পারমিতা দাস
(মে, ২০০৬)
মসোলিয়মে ফাইনালি পয়েন্টটা মেক করতে পারলেন কি? পারলে সেটা কি? আগের ফ্যাতাড়ুতে পেরেছিলেন। লেখক বন্দী হচ্ছেন নিজের ভাষার ঊর্ণণাভ জালে, এমন না তো! নাকি এই মেসেজ মেসেজ করেই দেশ উচ্ছন্নে গেল!
ফ্যতাড়ুর মরাল? বাঙালীর করুণ অবস্থাটা তো ওনার সেই ওয়ান লাইনারেই ধরা আছে। বাঙালি শুধুই ড্যাশ ড্যাশ নয় তদুপরি অসহায়। সত্যের জয় আর মিথ্যার নাই তাই অধিকার। এইরকম অক্ষয় সত্যি কথা না থাকলে আমার বই পড়তে ভালো লাগেনা, আর আমাদের সমাজের কন্ডিশানিং নিশ্চয়ই অবগত আছেন, মেয়েরা স্ল্যাং ততটা আত্মস্থ করেনা যতটা ইয়ে আপনারা করেন (বিরাট জেনারালিজেশান জানি তবু) - কাজেই শুধু নুয়্যান্সের চমকে লাফিয়ে উঠতে ভালো লাগে না। একান্তই আমার মত।
হঠাৎ সুযোগ মিলে গেছে এ পরবাসে হারবার্ট দেখার, দেখলাম।
হারবার্ট। ছবিটা সম্পর্কে ভালোলাগা কোথা থেকে শুরু করবো ভাবতে পারছি না, ঠিক যেমন ছবিটা এক জায়গা থেকে শুরু হয়ে অনায়াসে অন্য জায়গায় চলে আয়, সময়ের মধ্যে এবং সময়কে অতিক্রম করে কোন পূর্বাভাষ বা ব্যাখ্যা ছাড়াই এবং সমস্ত কথাই বলে এক মায়াবী ভিজুয়াল ভাষায়, আলো আঁধারি আর রঙের ব্যবহার বইটাকে সযত্নে সিনেমা মাধ্যমে উঠিয়ে নিয়ে আসে।
ছবিটা নাকি ভালো ব্যবসা করেছে, সুখের কথা। কি করে জানি না। তবে ইদানীংকালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ছবির ধারা থেকে এ সম্পূর্ণ আলাদা।
গল্প একটা আছে কিন্তু নিটোল গল্প বলা নেই। ক্রোনোলজি মানার দায় নেই। শুরুটা হাই পিচে। হারবার্ট-এর আত্মহত্যার ঠিক আগে থেকে। প্রতিটা মৃত্যুদৃশ্য অত্যন্ত ভারী আর গ্রাফিক এই ছবির। বইএর চেয়ে একটু আলাদা, হারবার্ট হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যা করে আর তারপর পরেই ঘটে যায় সেই ঘটনা যাকে মিডিয়া আর পুলিশ "টেররিজম" আখ্যা দেয়। ঘটনাটা কি, তা অনেকক্ষণ না বলে দিয়ে (পুরোটা অ্যাকচুয়ালি একদম শেষে ক্লাইম্যাক্সে) সাসপেন্স তৈরী করা হয়েছে। এরপর ফ্ল্যাশব্যাকে হারবার্টের ছোটবেলা, একে একে বাবা-মাকে হারানো, যারাই তার কাছে আসে সবাই হয় চলে যায় নয় মরে যায়। সবাই এমনকি নকশাল বিনু পর্যন্ত হারবার্টকে ব্যবহার করে। একমাত্র ব্যতিক্রম বোধহয় জ্যাঠাইমার চরিত্রটি। হারবার্ট মৃতের সহিত কথোপকথনের বেওসা খুলে বসে কিন্তু এক অদৃশ্য কারণে লেখক, পরিচালক, পাঠক আর দর্শক এই দুনম্বরীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। নইলে পশ্চিমবঙ্গ যুক্তিবাদী সমিতিকে এমন ভিলেন করে আঁকা হয়?
হারবার্ট দুনম্বরী করছে তাও তার ওপর রাগ করা যায় না, করুণার পাত্রই হয় সে, আর শেষে তো শহিদ।
কিছু শট চোখে লেগে থাকার মতো, জ্যাঠাইমার সঙ্গে গানের দৃশ্যটি (ও রাগাশ্রয়ী গানটির সুর সুমনের নিজের দেওয়া), বিভিন্ন জায়গায় দোকানে ভাস্কর্য দেখে অপুর বিষ্ময়ে দাঁড়িয়ে পড়া, হারবার্টের একাকিত্ব, অসহায়তা আর তার সারল্য, তার ইডিওসিনক্রেসি সব ছাপিয়ে একটা রাগ ছবির সর্বাঙ্গ দিয়ে চুঁইয়ে পড়ে।
যেটা দেখলাম আনএডিটেড ভার্শান। স্ল্যাং-এর আধিক্য সেরম দেখিনি। শুনলাম নাকি সুমনের দুটো অপশান ছিলো গালগুলোকে সাইলেন্স করে দেওয়া অথবা রিপ্লেস করা, সুমন প্রথমটা বেছেছিলেন। ঐ শব্দগুলোয় শুধু ঠোঁট নাড়া দেখা যাবে কথা শোনা যাবে না। রিডিকুলাস।
হারবার্টের সুইসাইড নোট, যা মর্মোদ্ধারে পুলিশকে বিস্তর নাজেহাল হতে হয়েছিল সেটি এইরকম:
চৌবাচ্চার তেলাপিয়া সাগরে চলল।
দোবেড়ের চ্যাং দেকবি? দোবেড়ের চ্যাং
দেকাব? ক্যাট ব্যাট ওয়াটার ডগ ফিশ
আর এই গল্পের মরাল পুলিস অফিসার সব্যসাচীকে দিয়ে পরিচালক বলিয়েছেন :
কখন, কোথায়, কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটবে এবং কে তা ঘটাবে সে সম্বন্ধে জানতে রাষ্ট্রযন্ত্রের এখনও বাকি আছে। পরিচালক যেভাবে সব্যসাচীকে রাষ্ট্রযন্ত্রের রিপ্রেজেন্টিভস্বরূপ রিপোর্ট করিয়েছেন তাতে অথার ব্যাকড ভাষ্য এটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। আমার মতে, সকল ফ্যতাড়ু গপ্পের মূল উপপাদ্যও তাই। নবারুণ এই কথাই তাঁর সব লেখাগুলোর মধ্যে দিয়ে কি একের পর বলে চলেছেন না? বই খুলে দেখে নিলাম, এটা বইতে লেখকের শেষ প্রতিপাদ্য, এইটি বলে হারবার্ট নয়, কোন চরিত্র নয়, স্বয়ং লেখক নবারুণ বিদায় নেন।
হারবার্টের রক্তহীন মৃতদেহ দাহ করার সময় যে জঘন্য ঘটনা ঘটেছিল তা অবধারিতভাবে এই ইঙ্গিতই দিয়ে চলে যে কখন, কোথায়, কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটবে এবং তা কে ঘটাবে সে সমন্ধে জানতে রাষ্ট্রযন্ত্রের এখনও বাকি আছে।
(এর পর একটু ছোট পোস্টলগ আছে তবে মোটামুটিভাবে এই কথা বলে যান তিনি চলে)
তবে ওয়াচ আউট সুমন! শক্ত শক্ত উপন্যাসগুলো কি অবলীলায় ট্রান্সলেট করে ফেলছেন ছবি ও নাটকের ভাষায়। জয় হোক ওনার।
Sadharan Lok | unkwn.***.*** | ০৫ আগস্ট ২০১৬ ০৫:৩৫81256
Noname | unkwn.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০১৬ ০৪:৪৮81257
উৎসুক | unkwn.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০১৬ ০৫:৪৭81258
উৎসুক | unkwn.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০১৬ ০৫:৪৮81259
h | unkwn.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০১৬ ০৬:৩১81260
h | unkwn.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০১৬ ০৬:৩৫81261
h | unkwn.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০১৬ ০৬:০৩81262
skt | unkwn.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০১৬ ০৬:২৫81263
h | unkwn.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০১৬ ০৬:৫৫81264
AP | unkwn.***.*** | ১০ আগস্ট ২০১৬ ১০:০৫81265
r2h | 49.37.***.*** | ২৩ জুন ২০২০ ১৮:১৭94552আমার পিঠাপিঠি আপন বোন পারমিতা দি লিখলেন না কেন??
কইলকেতা বইমেলায় দুই বচ্ছর আগে পরথম দেখা, ভাই, ভাই বইলা কি ভীষণ মায়ায় না জড়াইলেন! এই কী গুরু ভগ্নীর কাজ? এতো দিনেও এক্কখান লেখা নামাইতে পারলা না দিদি!!
রৌহিন, মারিয়া -- তোরা স্বাক্ষী, কথা কস না কেরে? আঁ!! : পি
"কখন, কোথায়, কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটবে এবং কে তা ঘটাবে সে সম্বন্ধে জানতে রাষ্ট্রযন্ত্রের এখনও বাকি আছে। পরিচালক যেভাবে সব্যসাচীকে রাষ্ট্রযন্ত্রের রিপ্রেজেন্টিভস্বরূপ রিপোর্ট করিয়েছেন তাতে অথার ব্যাকড ভাষ্য এটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। আমার মতে, সকল ফ্যতাড়ু গপ্পের মূল উপপাদ্যও তাই। নবারুণ এই কথাই তাঁর সব লেখাগুলোর মধ্যে দিয়ে কি একের পর বলে চলেছেন না? বই খুলে দেখে নিলাম, এটা বইতে লেখকের শেষ প্রতিপাদ্য, এইটি বলে হারবার্ট নয়, কোন চরিত্র নয়, স্বয়ং লেখক নবারুণ বিদায় নেন।"
পুনশ্চঃ দিদি, তোমার এই কথাগুলো নবারুণ (ভট্টাচার্য?) এর মূল লেখাটি সম্পর্কে আগ্রহ জাগাচ্ছে। এই নিয়ে আরেকটু আলোকপাত করতে পারো?
"হারবার্ট " সিনেমাটি দেখেছি, খুবই বিক্ষিপ্ত ছবি, তবু গল্প, অভিনয় আর নির্মাণগুনে শেষ পর্যন্ত দর্শক ধরে রাখে। যদি ভুল বলে না থাকি, নকশাল বাড়ি আন্দোলনকে পুরো ছবিতে আরোপিত মনে হয়েছে, বিশেষ করে চিতায় গ্রেনেড বিস্ফোরণ!
অবশ্য চণ্ডালের প্রয়াত বাবা নকশাল নেতা ছিলেন, কারণটি ব্যক্তিগত হলেও হতে পারে। কাফি
উফফ | 2a0b:f4c2:2::***:*** | ২৪ জুন ২০২০ ০৮:৩৯94580আপনি ঠিক বলেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ