আজ হিন্দীকবিতা থেকে রইল এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত কবি 'অনামিকা'জ্বীর চারটি কবিতা।
মহিলাকবি /
কবিতাও তো শেষমেশ একটি স্ত্রীলিঙ্গ
কেউ ওর কথা শুনতে চায় না
শুনলেও বুঝতে চায় না
সবাই ওর প্রেমিক বন্ধু কেউ নেই !
এতোটা একাকী ও
নিজের মাংসল নলিতে-
মাংসল,
কবুতরের ছোট দেহাংশে-
যে রাজা শিবি'র কাছে উড়ে এসেছিল
বাজপাখিটির তাড়া খেয়ে !
নুন /
নুন হল ধরিত্রীর দুঃখ আর ওর স্বাদও
পৃথিবী ঘিরে আছে তিনভাগ নোনতা জল
আর পুরুষের হৃদয় নুনের পাহাড়
কমজোরি এই হৃৎনুন
কতো যে দ্রুত গলে যায়!
টলে যায়
যখন ছুঁড়ে ফেলা হয় থালাগুলি
ডালে অধিক বা কম নুনের দরুন!
ওই যে দাঁড়িয়ে থাকা-
সরকারি দফতরগুলি-
ওগুলি হল শাহী নুনভাণ্ডার।
আমাদের জ্বালা-যন্ত্রণায়
সুচারুরূপে ওরা নুন ছিটকে দ্যায় হরদম
জিজ্ঞেস করো ওই মেয়েদের
যাঁদের মুখশ্রীতে লাবণ্য ফুটে আছে
তাদের কতোটা মূল্য চোকাতে হয় এই জন্য
কিম্বা যাদের নুনের হিসেব মিটিয়ে দিতে হয়-
সেইসব বিশ্বাসী লোকেদের
শোকে উথলে ওঠে মহাসাগর।
পৃথিবীতে বিপ্লবও হতে দেয় না ওরা
শত্রুদেরও ক্ষমা করে দেয়!
গান্ধী জানতেন নুনের মাহাত্ম্য
আর পেয়ারাকুড়োনি আমাদের মুনিয়াও!
পৃথিবীতে আর কিছু থাকুক- না থাকুক-
নুনটুকু থেকে যাবে-
ঈশ্বরের অশ্রু ও মানুষের ঘামে ভেজা
নুন-টুকুতেই-
অনড় থেকে যাবে এই পৃথিবী।
দরোজা
----------
আমি এক দরোজাই ছিলাম
আমাকে যতো আঘাত করা হয়েছে
আমি ভেতর থেকে ততোটাই খুলে গেছি
যারা এসেছে, এসে দেখে-
ভেতরে ঘুরছে এক বৃহৎচক্র-
চাকা থামে আর চরখা ঘুরে চলে
চরখা থামে আর চলে কাঁচি-সূঁচ
কথা হল কিছু না কিছু চলেই
অনবরত !
আর সব শেষে ঝাড়ু ঝাাট দিয়ে
তারাদের ছড়িয়ে দেয়
পাহাড়, বৃক্ষ, পাথর-
সৃষ্টির সব ভাঙা ছড়ানো টুকরো
এক ঝুড়িতে জমা করে চলে
মন,মনেরই এক তল ঘরের নীচে বসে
প্রথম ঋতুকাল
---------------------
ওর সফেদ ফ্রক
আর পেন্টে
কোন সে পরি মা ছিটিয়ে দিয়েছে
খয়ের-রঙা গোলাপ রাতের ঘোরে ?
আর রূপকথার ওই সাত বামন
কেন হুটোপুটি খেলছে
ওর পেটের ভেতর?
নাদ ব্রহ্ম শব্দে বেজে ওঠে মেয়েটি
কেঁপে কেঁপে।
লাগাতার ঝংকৃত
ওর জঙ্ঘার একতারা
চক্রের মতো নৃত্যপর ও
এক মহীয়সী মুদ্রায়
আর কোলে লুকানো
সৃষ্টির প্রথম সূর্যের মতো, ওই লাল লাল বালিশ
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।