গল্পের চরিত্রগুলি যেমন সৃষ্টিকর্তার জবাবদিহি দাবি করে, একই ভাবে মর্ত্যে নামাবলী গায়ে যারা ধর্মের ধামাধরা তাদেরকেও লেখিকা নিন্দা, সমালোচনায় বিদ্ধ করেন। ‘ব্ল্যাক কোবরা’ গল্পে জুলেখা, এক আলোকপ্রাপ্ত নারী, আশরফকে বলে নবীর নিজের কন্যা সন্তান ছিল। বিবি ফতিমা তাঁর জান ছিলেন। শোনো, শুধুমাত্র যুদ্ধের সময় যখন অনেক পুরুষ মারা যায়, কিংবা কারো স্ত্রী যদি কোনো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, কিংবা বন্ধ্যা হয়, কিংবা স্ত্রী যদি তাকে সন্তুষ্ট না করতে পারে, তবেই সে চারটে বিয়ে করতে পারে। করলেও তাকে সব স্ত্রীকে সমান সুবিধা দিতে হবে, অর্থাৎ একজনের জন্য বাড়ি বানিয়ে দিলে, শাড়ি কিনলে, অন্যজনের জন্যও সেটা করতে হবে। আশরফ এত কিছু চায় না, সে শুধু তার রুগ্ন শিশুর চিকিৎসার জন্য কিছু পয়সা চায়। ... ...
জোহানেস ভার্মিয়েরের আঁকা, হ্যান্স এন্ডারসনের ছোট জলকন্যার গল্প, নরওয়ের দেবতা জেন্ডার ফ্লুইড লোকি, একানড়ে সব মিলেমিশে যায় এই দুনিয়ায়। সেখানে আলোর অন্যরকম রং। কথা বলা খরগোশ, ভেড়ার ছানা, জ্ঞানের পেঁচা লেখককে সেই দুনিয়ার দরজার সন্ধান দেয়। সেখানে লেখক 'রাইড দ্য ওয়াইল্ড হর্স' ধ্যানের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন যেখানে প্রতিটি অনুভূতি একেকটা উদ্দাম বুনো ঘোড়ার মত। অভিযোগ একটিই, বইটি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। ... ...
২০২১ থেকে ২০২৩ এর মধ্যে লেখা ষোলটি গল্পের সংকলন ইন্দ্রাণীর তৃতীয় গল্প সংকলন।হরিণের কাছাকাছি। পড়লেন দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়। ... ...
পুজোর লেখার তাড়া তো রয়েইছে। তাই বলে তো আর হুমড়ি খেয়ে সবসময় লেখা যায় না, তাই লেখা, পড়া, সংসারের কাজ, প্রায়ই বিরাট দেশটার অলিগলি চিনে নেবার জন্য বেরিয়ে পড়ার প্রস্তুতি, এইসবের ফাঁকে ফাঁকে খুব ভালো বই পেলে এখনও গোগ্রাসে পড়ে ফেলি। সেইরকম বইয়ের সংখ্যা দিন দিন আমার দেরাজে বর্ধমান! এবার আসানসোলে বসেই পড়ে নিলাম জয়া মিত্র-দির “স্বর্ণকুমারীর মৃত্যু ও জীবন” আর তার পরেই একেবারে অন্য স্বাদের আর একটি, অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামীর “নয়নজোড়া কৌমুদী।” ... ...
ঘৃণা, হিংসার এই বাতাবরণে একজন লেখক কী করবেন? রুশদি মিথিক্যাল গ্রিক পয়গম্বর, সংগীতকার অরফিউয়াসকে স্মরণ করছেন। তাঁর মাথা ছিন্ন করে যখন তাঁকে হেব্রাস নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল তখনও অরফিউয়াস গান থামাননি, তাঁর সংগীত দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই ভয়াবহতার আবহে আমাদেরও আজ গান গেয়ে যেতে হবে, জোয়ারের দিক পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ... ...
শুভদীপের প্রবন্ধগুলি কিন্তু সেইসব চলচ্চিত্রকারদের নিয়ে যাদের কাজ শৈল্পিক ভাবে নিপুণ। শুভদীপের প্রবন্ধে যেমন আছেন গোদার, বার্গম্যান, আন্তনিওনি, হিচকক, চ্যাপলিন তেমনই আছেন কিয়ারোস্তামি, ওজু, আমাদের সত্যজিৎ, মৃণাল এবং বর্তমান সময়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার নুরি বিলজ সিলান। যে কোন সফল প্রাবন্ধিকের লেখনীর একটা নিজস্ব স্টাইল থাকে। শুভদীপের লেখনীর দুটি বৈশিষ্ট্য আছে। দ্বিতীয়টির কথায় আমরা একটু পরে আসছি। শুভদীপ কোন প্রবন্ধের শুরুতেই সাধারণত মূল বিষয়ে সরাসরি প্রবেশ করেন না। এখানে মূল বিষয় বলতে বলা হয়েছে চলচ্চিত্র বা চলচ্চিত্রকার সম্পর্কিত আলোচনা। লেখকের একাধিক প্রবন্ধই শুরু হয় কোন উদাহরণ/ উপমা বা কোন সংজ্ঞার ব্যাখ্যা- বিশ্লেষণ দিয়ে। যেহেতু প্রবন্ধগুলি সময়কাল অনুযায়ী সাজানো (বইয়ের সর্বপ্রথম প্রবন্ধ তার সাম্প্রতিকতম লেখা), তাই বোঝা যায় সময়ের সাথে লেখক এই স্টাইলটি রপ্ত করেছেন। ... ...
অরুন্ধতী নির্লিপ্ত ভাবে সাজিয়েছেন দশটি গল্প। মেয়েদের গল্প বলব নাকি জীবনের গল্প বলব সে প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি এখনো। তবে সব কটি গল্পেই মেয়েরা তীব্র রকমের আছেন। খুব মোলায়েম ভাবে বলা, নিখুঁত ডিটেইলিং ওলা জীবন্ত দশটি গল্প। প্রতিটা গল্পেরই উপজীব্য জীবনের জটিল অন্ধকার এক একটা দিক । আর প্রায় প্রতিটা গল্প অব্যর্থসন্ধানী তীরন্দাজ। ... ...
প্রতিভা সরকার গল্প উপন্যাস লেখেন পাঠককে ভুলিয়েভালিয়ে মোহাবিষ্ট করে রাখতে নয়। চরিত্রগত ভাবে একজন পরিবেশ-কর্মী, মানবতাবাদী, নারীবাদী সংবেদনশীল লেখিকা হিসেবে পাঠককে ভাবিয়ে তোলাই প্রতিভার ‘হিডন এজেন্ডা’। সমাজের সমস্ত স্তরে জমাট বাঁধা অন্যায়ের বিরুদ্ধে পাঠক-সমাজকে মনে মনে আন্দোলনের ভাগীদার করে তোলাই প্রতিভার উদ্দেশ্য। ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসে প্রতিভা সে ব্যাপারে সফল। ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসটি দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করা হলে সমাজবিজ্ঞানের কিছু উপকার হতে পারত। জাত-পাতের রাজনীতির বিরুদ্ধে জন-জাগরণে মৃদু তরঙ্গ উঠলেও উঠতে পারত। বইটির ইংরেজি অনুবাদ করবেন, প্রকাশ করবেন, বৃহত্তর আঙিনায় পাঠকের হাতে তুলে দেবেন – এমন প্রকাশনা সংস্থা কবে উদ্যোগ নেবে জানা নেই। এনবিটি বা সাহিত্য অকাদেমী কি এগিয়ে আসবে? ... ...
“আকণ্ঠ কুয়োয় ডুবে আছে যে মানুষ সে জানে তার আকাশ বৃত্তাকার। তাকে দিগন্তরেখার লোভ দেখিও না।” পড়ে খটকা লাগলো যে আমার আকাশও কি বৃত্তাকার দেখছি বহুদিন? যে চিন্তা এতদিন টনক নড়ায় নি! স্মৃতি হাতড়ে মনে করার চেষ্টা করি আকাশের অন্য কোন আকার দেখেছিলাম কি না! কিন্তু এই স্মৃতিও খুব সহজে মনে পড়ার নয়। এ গত জন্মের আচ্ছন্নতা নিয়ে ইহজন্মে মাতৃ-জঠরে ভাসমান থাকার স্মৃতি। যা স্মৃতি আর বিস্মৃতির মাঝের গোধূলি! যা হৃদয়েরও যে একটি মস্তিষ্ক আছে, হৃদয় যার খোঁজ রাখে না, তাকে মনে করিয়ে দেয়। ... ...
সংকলনটি দেশভাগের অব্যবহিত পরবর্তীকালে জন্ম নেওয়া ছিন্নমূল প্রজন্মের নতুন দেশে বেড়ে ওঠার নতুন জনপদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এক জরুরী প্রয়াস। বইয়ের প্রচ্ছদে যেন দেখি - কালো বাংলা অক্ষরমালারা কাছাকাছি আসতে আসতে ধেবড়ে গেছে, তাদের গা বেয়ে গড়াচ্ছে রক্তের দাগ, সেই রক্ত আবার কালচে জমাট বেঁধে জন্ম নিয়েছে মানুষদের আবছা অবয়ব। বইয়ের ভূমিকাতেও সোমনাথ রায়ের মনে পড়েছে তার কলকাতার বাড়ির পাশের খলিসাকোটা কলোনির মানুষদের কথা, যারা বরিশালের খলিসাকোটা গ্রাম থেকে চলে এলেও নিজেদের গণস্মৃতি এবং গণশোক ছিন্ন হতে দেননি এবং কলোনির নামের মধ্যে দিয়ে নিজেদের গ্রামকে ধরে রাখতে চেয়েছিলেন। ... ...
এঁরা কোন সবজান্তা একপক্ষীয় আলোচনা না করে সমস্যার উপর বহুকৌণিক আলো ফেলেছেন। দেখিয়েছেন সমস্ত হাতে গরম সমাধানের সীমাবদ্ধতা। অথচ সবগুলোই প্রাসঙ্গিক। জমির মালিকানার একচেটিয়া অধিকারের ভিত্তিতে সামন্ততান্ত্রিক শোষণ যেমন কৃষির উন্নতির বাধা, কিন্তু আজকে তার চেয়ে বড় বাধা ভারতের কৃষকসমাজের ছোট এবং প্রান্তিক চাষিদের (ভারতে গড় ৮০% এবং বাংলায় ৯০%) জন্য সরকারি ব্যাংকের সেকেলে আইন এবং গরীবকে তাচ্ছিল্য করার সংস্কৃতি; যার ফলে ওদের জন্যে সুলভ সার, বীজ, এবং ট্রাক্টর বা হাল বলদের জন্য ঋণ পাওয়ার দরজা বন্ধ হয়ে থাকে। ... ...
পুজোর ছুটিতে দার্জিলিং মেলে AC 2 tier এ confirmed টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা কতটা বা এবারের ICC Test Championship এ ভারতের champion হওয়ার সম্ভাবনা কতটা --- এই ধরণের আলোচনা তো আমরা হামেশাই করে থাকি। যদুবাবু এই সব ধরণের সম্ভাবনা নিয়েই আলোচনা করেছেন। তবে তাঁর আলোচনাগুলো একেবারে আমাদের মত আনাড়ি সুলভ নয়। আবার যদুবাবু এই বিষয়ে পণ্ডিত হলেও তাঁর লেখার মধ্যে পণ্ডিতি ব্যাপার স্যাপার একেবারেই নেই। বরং দৈনন্দিন জীবনে, রকেট উৎক্ষেপণ বা যুদ্ধক্ষেত্রে, বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কারের পেছনে কিভাবে লুকিয়ে আছে সম্ভাবনা তত্ত্বের প্রয়োগ --- যদুবাবু পুরোটাই আলোচনা করেছেন বৈঠকি মেজাজে। ... ...
কিছু না জেনে বইটা হাতে তুলে নিলে প্রথমেই প্রচ্ছদে পাঠক দেখেন যেন দুদিনের জন্য ঘুরতে এসে রিসর্টের জানলার ব্লাইন্ডের ফাঁক দিয়ে তোলা এক অদেখা কল্পিত জীবন - এক নদীর ধারে এক যুবতীর দাঁড়িয়ে দূরের দিকে চেয়ে থাকা। তারপর পাতা ওল্টাবার পর পাঠক বুঝতে পারেন আমরা এবার এক বহিরাগত হিসেবে যেন ওই দূর থেকে দেখা মেয়েটিরই বাস্তব জীবনে প্রবেশ করতে চলেছি। ... ...
প্রথমদিন হাঁড়ি দুটো কথকের বাড়ির পাশে রক্তকরবী গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখা হল। তাদের খাবার দেওয়া হল দু-ঘটি জল আর দুমুঠো মাটি। টিভিতে শুনে তারা হিন্দি গান পটাপট গলায় তুলে ফেলল। কয়েকদিন পর তাদের স্থান হল মাটির হাঁড়ি থেকে অ্যালুমিনিয়ামের ডেচকিতে। সুষম খাদ্য তালিকা অনুযায়ী তাদের খাবার দেওয়া হতে থাকল। ভুজু ডিবরা গ্রামে ফিরে যাওয়ার সময় কথককে অনুরোধ করে গেল ‘গাঁইয়া ভূত’ বলে তাদের যেন অনাদর না করেন, সর্বদা যেন সন্তান স্নেহে ‘মানুষ’ করেন। সত্যিকারের কোনো দোষ করলে আচ্ছা করে কানমলা দিয়ে শাস্তি দিতেও যেন না ভুলে যান। ... ...
'দুষ্কালের আখ্যানমালা'র গল্পগুলো পড়তে পড়তে পাঠকের মনে হবে একটা ট্রেনে করে যেতে যেতে জানলা দিয়ে আচমকা কয়েকটি চরিত্রের ঝলক এবং কিছু দৃশ্য দেখছেন, আর এই যাত্রাপথে ট্রেনটা আসলে এগিয়ে যাচ্ছে এক দুষ্কাল থেকে আরেক দুষ্কালের দিকে। চরিত্রগুলোকে পড়তে পড়তে আসলে আমরা যখন এই সামগ্রিক যাত্রাপথের কথা অল্প সময়ের জন্য বিস্মৃত হই, তখনই মাঝে মাঝে দিনের বেলা আচমকা সূর্যগ্রহণের মত এই সমস্ত দুষ্কালের ছায়া নেমে আসে চরিত্র এবং দৃশ্যাবলীগুলির ওপর। ... ...
কথা বাড়াতে ইচ্ছে করবে না বলেই হাঁটব। আমার পাশেপাশে যারা ভীড় জমাবে তাদের গা থেকে উঠে আসা ধোঁয়া গন্ধে ভয় পাব না। না জেনে না চিনে অযথা ভয়ে একটা অভিশপ্ত জীবন আঁকব না, এটুকু অন্তত আমার উত্তরণ ঘটবে আমি নিশ্চিত। গুনিনের বুকের ভিতর কোন ঝড় গেঁথে তুলেছেন লেখিকা সেকথা ভাবতে ভাবতে বরং অন্ধকারের গায়ে আঙুল রাখব। কেউ হয়ত গল্প শোনাবে তাদের গুনিন হবার কাহিনী। ভুলভ্রান্তিতে ভরা ভয়ংকর দানবীয় ইতিবৃত্ত। লেখিকাও যে 'গুনিন' গল্পে বুক মুচড়ে ওঠা শব্দটুকু লিখেছেন, ভাবতে থাকব... ... ...
'এই ধরনের অপরাধে সেদিনই ছিল আমার হাতেখড়ি, যেজন্য বিপদটা হল।...' (শীতবন্দরে)। 'গোলমালটা ঠিক কীভাবে শুরু হল বলা খুব কঠিন।..' (পাইথনের গপ্পো)। 'কেলোটা হল বড়দিনে।...' (বড়দিন)। 'আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ঝড় আসার কথাই ছিল।...'(ক্যাম্পফায়ার, আমাদের রাতের উৎসব)। এই জাতীয় সূচনা লেখকের একটি বিশেষ স্টাইল। শুরুর এই কৌতূহল না মেটা পর্যন্ত পাঠক স্বস্তি পাবেন না। কিন্তু চিত্তাকর্ষক হল সেটা মিটে যাওয়ার পরে পাঠক টের পাবেন অতিরিক্ত কি একটা যেন বলা হল, যা প্লটের চাইতেও বেশি করে বেরিয়ে আসছে লেখকের অননুকরণীয় নির্মাণকৌশল থেকে! ... ...
ধুন্দুলের লতা বা আকন্দের চারা যদিবা দেখেছি, তাও মনে হয় যেন বিগত জন্মের স্মৃতি, কাউরি গ্রাম-ফেরতা কোন গুনিনের সঙ্গেই কোনদিন কোন লেনাদেনা গড়ে ওঠেনি। না ভয়ের, না ভালবাসার। অবশ্য সে দেখলে শ্যাখের বিবি হালিমার ঘরকন্নাই বা কোন সুতোয় চেনা! তবু একুশ বছরের দিদির বিয়ের দায় মাথায় চাপানো চৌদ্দর ছোটভাই এর শিশু শ্রমের গল্পটা চেনা চেনা লাগে যে! আর তারই মাঝে লেখক কেমন বুনে দেন শবেবরাতের মোমের আলো আর দোলের চাঁদের পৃথগন্ন হওয়ার কিসসা। ... ...
গত দেড়দশক ধরে ইন্দ্রাণী দত্তের ছোটগল্প প্রবুদ্ধজনের কাছে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে। তাঁর কাহিনীর বুনোট, গল্প বলার ধরণ, দৈনন্দিন জীবনের কাঁকর-বালি বেছে স্বর্ণরেণু আহরণের ক্ষমতা পাঠককে আবিষ্ট করে। এটা বললে অত্যুক্তি হবে না যে উনি বাংলাভাষার অগুনতি লেখকদের ভীড়ে হারিয়ে যান না। যে ক’জন সমসাময়িক ছোটগল্প লেখককে সিদ্ধিপ্রাপ্ত বলে আঙুলে কর গুনে চিহ্নিত করা যায়—নিঃসন্দেহে উনি তার অন্যতম। প্রথম গল্পসংগ্রহ ‘পাড়াতুতো চাঁদ’ গুরুচণ্ডা৯ প্রকাশনই ছেপে বের করেছিল। এটি সে’ হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় গ্রন্থ। যথারীতি, চটিবই সিরিজের, এবং ১২৮ পাতার বইটির দাম মাত্র ১৩০ টাকা। এটি বেরিয়েছিল করোনাকালে, ২০২০ সালের বইমেলায়। উনি লেখেন কম। সুদূর প্রবাসে জীবিকার এবং সংসারের দায় মিটিয়ে ফাঁকে ফোকরে চলতে থাকে তাঁর অধ্যয়ন এবং লেখাপত্তর। না, আমার ওপরের দুটো অবজার্ভেশন পরস্পরবিরোধী নয়। উনি যখন পাবলিক ফোরামে কোন লেখা পেশ করেন সেটা একবার পড়লেই বোঝা যায়—বড় যত্নে লেখা। ফরমাইশি লেখা নয়, ধর-তক্তা-মার-পেরেক গোছের তাড়াহুড়ো লেখা নয়। বোঝাই যায় এ লেখা অনেকদিন ধরে মনে মনে কম্পোজ হচ্ছে , কাটছাঁট হয়েছে। একটি শব্দ বা লাইনও অনাবশ্যক নয়। ... ...