২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির শেষে ঝাড়গ্রাম থেকে ফেরার সময় ভাবছিলাম, এই প্রান্তিক জেলার সব মানুষের সমস্যা বা চাহিদাই কি আজ স্রেফ ব্যক্তিগত? যৌথ চাহিদা কিছু নেই? আমাদের সমস্যা বলে কি আর কিছুই নেই? যদি সত্যিই তাই হয়, তবে কিষেণজির মৃত্যুতেই কি শেষ এ রাজ্যে মাওয়িস্ট আন্দোলন? জানি না এই প্রশ্নের উত্তর মাওয়িস্ট শীর্ষ নেতৃত্ব জানেন কিনা। তবে নিশ্চিত জানি, এই প্রশ্নের উত্তর জানে একজন। সে ময়ূরঝর্ণা গ্রামের ধর্মাল মান্ডি। ... ...
এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কেন সফট টার্গেট হিসেবে বারবার এনকাউণ্টারের পর স্কোয়াডে থাকা মহিলাদের চরিত্র মূল্যায়নে এত সময় ব্যয় করেছে, তা নিয়ে কিন্তু মাথাব্যথা ছিল না মাওয়িস্ট শীর্ষ নেতৃত্বের। তাঁদের কাছে শশধর এবং কিষেণজি, দুই মৃত্যুই ছিল সমান গুরুত্বপূর্ণ। কেন এনকাউণ্টার হল, কীভাবে হল, কে খবর দিল পুলিশকে, সবই পরে তদন্ত করে দেখে মাওয়িস্ট নেতৃত্ব এবং তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্তে দু’বারই ক্লিনচিট পেয়েছেন সুচিত্রা মাহাতো। ... ...
'দেখুন আমাদের সমালোচনা ছিল মূলত দু'তিনটে জায়গায়। কোটেশ্বরের সাংগঠনিক ক্ষমতা, পার্টির প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কোনও কথা নেই। ওর মতো সাহসী সংগঠক পাওয়া মুশকিল। কিন্তু লালগড় আন্দোলনে ও সংযম রাখতে পারল না, তাই পার্টির মূল কাজ থেকে অনেকটা সরে গেল। ওকে আমরা বলেছিলাম, ভুল করছ। এভাবে মানুষ খুন করা ঠিক হচ্ছে না। যথেচ্ছভাবে মানুষ খুন করে দলের সংগঠনে বৃদ্ধি হবে না। বরং আমাদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা খারাপ হয়ে যাবে। তাছাড়া সংগঠনের বিস্তার করতে হবে গোপনে। গোপন পার্টিকে টেলিভিশন চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিয়ে, ফোনে ইন্টারভিউ দিয়ে প্রকাশ্যে এনে দিয়েছিল কোটেশ্বর। যা আমাদের পার্টির অনেক ক্ষতি করেছে। ... ...
একদিন বিকেলে অফিসে বসে আছি। পরিচিত এক ব্যক্তি বান্দোয়ান থেকে ফোন করলেন। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হল। বললেন, পরীক্ষার জন্য বড়ো মিটিং বন্ধ আছে, কিন্তু পরিস্থিতি খুব খারাপ। কেন? বললেন, পুরো আতঙ্কের পরিবেশ। বিধায়কই বাড়িতে থাকতে পারছেন না, আর আমাদের কী হবে? তাঁর কথা শুনে একটু অবাক হলাম। জিজ্ঞেস করলাম, মানে? তিনি বললেন, বান্দোয়ানের এমএলএ বাড়ি থেকে লুকিয়ে রাতে একটা লাইব্রেরিতে গিয়ে থাকেন মাওবাদীদের ভয়ে। ... ...
রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তের এক-দেড়টা মহকুমায় মাওবাদী আন্দোলনের যে উৎস সন্ধানে ঘুরছিলাম এত দিন ধরে, শেষ পর্যন্ত এক বাক্যে তারই জবাব মিলল কিনা শিবরামের কাছে! প্রথমেই ওঁর কাছে এলে তো কবেই কিষেণজি মৃত্যু রহস্যের অর্ধেক কিনারা হয়ে যেত। রামজীবন মুর্মুর বাড়ির উঠোনে বসে সাত-পাঁচ ভাবছি, আর কানে বাজছে শিবরামের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে উঠে আসা এক বাক্যের ব্যাখ্যা, ‘এখন সিপিআইএম নেই, মাওবাদী আসবে কেন?’ ... ...
২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে দাদা ফোন করল সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুকে। দীপক সরকারদের সমস্ত কার্যকলাপ জানাল। তারপর বলেছিল, বুদ্ধ ভকতকে ভোটে নির্দল হিসেবে ক্যান্ডিডেট করবে। সিপিআইএমের মুখোশ খুলে দেবে। বিমান বসু বললেন, রাগের মাথায় কিছু না করতে। বিমানবাবু টেলিফোনে দাদাকে বলেছিলেন, ‘‘তোমাদের পরিবারের প্রতি অনেক অবিচার হয়েছে। তুমি বুদ্ধকে বোঝাও এই সব না করতে। সূর্যকান্ত মিশ্র, দীপক সরকার তোমাদের বাড়ি যাবে সব ঝামেলার সমাধান করতে।’’ এর কয়েকদিন পরে সূর্যকান্ত মিশ্র আর ডহর সেন আমাদের বাড়িতে এলেন। ... ...
টেন্টকে টার্গেট করে ফোর্স মাটিতে শুয়ে আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল। ঠিক সাড়ে তিনটের সময় টেন্টকে টার্গেট করে শুরু হল ফায়ারিং। সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালিয়ে রিপ্লাই দিল সেন্ট্রিও। কিন্তু তা খুব সময়ের জন্য। সেন্ট্রিও তখন ফোর্সের নাইট ভিশন ডিভাইসের নাগালের মধ্যে এসে গেছে। সে দাঁড়াতেই পারল না বেশিক্ষণ। সেন্ট্রি মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর ফোর্স তখন পুরো রেঞ্জের মধ্যে পেয়ে গেছে টেন্টটাকে। মিনিট দশেকের টানা ফায়ারিং চলল টেন্টকে টার্গেট করে। টেন্ট থেকে কেউ কাউন্টারই করতে পারল না। ... ...
মিনিট খানেক বাদে এসপি ফোন ছেড়ে বললেন, ‘‘কিছু হয়নি তেমন। ইলেকট্রিকের তার ছিঁড়ে পড়েছে কনভয়ে পুলিশের গাড়ির ওপর। তাতেই টাল সামলাতে না পেরে পুলিশের গাড়ি রাস্তার ধারে পড়ে গিয়েছে।’’ এসপির কথায় আশ্বস্ত হলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফোন ছেড়ে প্রভীণ কুমার জানালেন, ‘‘স্যার, ব্লাস্ট হয়েছে। ব্লাস্টে ইলেকট্রিক তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়েছে। জোরে আওয়াজ হয়েছে, বড় ব্লাস্ট ছাড়া তা হতে পারে না।’’ ... ...
‘বুদ্ধদেববাবুর কনভয়ে ব্লাস্ট হয়েছে? একটা চ্যানেল দেখাচ্ছে।’ অফিস থেকে আসা এই এক লাইনের বার্তাই তখন যথেষ্ট ছিল। ড্রাইভারকে গাড়ি ঘোরাতে বলে সঙ্গে সঙ্গে ফোন করলাম মুখ্যমন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক জয়দীপ মুখার্জিকে। ‘বুদ্ধদেববাবুর কনভয়ে ব্লাস্ট হয়েছে?’ ‘কিছু একটা হয়েছে। তবে ব্লাস্ট না। এসপি বলছে, ইলেকট্রিক ওভারহেড তার ছিঁড়ে একটা পুলিশের গাড়ির ওপর পড়েছে। তাতে একটু আগুন ধরে যায়। টাল সামলাতে না পেরে গাড়িটা উল্টে গিয়েছে। তাতে তিন-চারজন পুলিশ ইনজিওরড। তবে সিএমের কনভয়ে না, এটা ঘটেছে রামবিলাস পাসোয়ানের কনভয়ে।’ ... ...
সেদিন ছিল ২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর। একদম সকাল সকাল একটা খুন হল জামবনির জামুই গ্রামে। দিবাকর মালাকার নামে এক স্থানীয় সিপিআইএম নেতা তাঁর দুই সঙ্গী মানিক শতপথী এবং হেনা শতপথীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে চেপে যাচ্ছিলেন। সকাল সাতটা-সাড়ে সাতটা হবে। দিবাকর মালাকার ছিলেন বাসু ভকতের অনুগামী এবং এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী নেতা। অত সকালে আক্রমণ হতে পারে ভাবতে পারেননি। খুব কাছ থেকে দিবাকর মালাকারকে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল দিবাকর মালাকারের। ... ...
ঝুপ করে অন্ধকার নামল জঙ্গলমহলে। সাপধরা বুথ পেরিয়ে বাসু ভকতের গাড়ি এগোচ্ছে পিচ রাস্তা ধরে, জামবনির দিকে। জঙ্গলে আবছা অন্ধকারে বাসু ভকত কিংবা চালক গাড়ির দূর থেকে দেখতেও পেলেন না, গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা আটকে রেখেছে ঝাড়খন্ড পার্টির লোকজন। বিকেল থেকেই রাস্তার ধারে গাছের আড়ালে অপেক্ষা করছিল প্রচুর মহিলা-পুরষ এবং তীর, ধনুক নিয়ে সশস্ত্র ঝাড়খন্ডি বাহিনী। সরকারি গাড়ি গাছের গুঁড়ির সামনে থামলেই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ব্যালট বাক্স নিয়ে চম্পট দেবে তারা। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের সন্ধ্যায় ব্যালট বাক্সের গাড়ি নয়, পাঁচামির জঙ্গলের ধারে ঝাড়খন্ডিদের তৈরি করা ব্যারিকেডের সামনে এসে থামল বাসুদেব ভকতের গাড়ি। ... ...
‘জামবনি থানা?’ ‘হ্যাঁ, কে বলছেন?’ ‘স্যার, গড়বেতা থেকে দুটো গাড়িতে ১০-১২ জন প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জামবনি গেছে ভোট করাতে। গাড়ির নম্বর দুটো লিখে নিন।’ ‘আপনি কে বলছেন?’ ‘স্যার, নাম বলতে পারব না। এটুকু বলছি, আমিও সিপিআইএম করি। গড়বেতায় থাকি। গড়বেতার সিপিআইএম অফিস থেকে দু’গাড়ি সশস্ত্র লোক আজ ভোরবেলা জামবনিতে গেছে। গাড়ির নম্বর আপনাকে বললাম। আপনি দেখে নিন।’ ... ...
’৭৪-৭৫ সাল থেকে টানা প্রায় ৭-৮ বছর গ্রামে রাত পাহারা দিয়েছি পালা করে। অনেকবার লড়াই হয়েছে ডাকাত দলের সঙ্গে। কুকুরশোল বলে একটা গ্রাম ছিল। একবার সেখানে ডাকাত পড়ল। পুলিশে কাজ করত এক চৌকিদার, থাকত সেখানে। চৌকিদার, তার ছেলে আর গ্রামের লোক লড়াই করে অনেককটা ডাকাতকে ধরে ফেলে। সাত-আটটা ডাকাত মারা যায় ওই দিন। তারপর ডাকাতি প্রায় বন্ধই হয়ে গেল।’ ‘কিন্তু, বলছিলেন যে, গ্রামে বেশিরভাগ লোকই গরিব ছিল। তবে ডাকাতি হত কেন? কী নিতে আসত ডাকাত?’ ‘কী আর নেবে? কারও বাড়িতে হয়তো কিছু চাল ছিল, নিয়ে গেল। মুড়ি, গুড়, কাপড়, তেল সব নিয়ে যেত। লন্ঠন, কুপিও ব্যাগে ভরে নিয়ে গেছে। ডাকাতও তো গরিব। ... ...
‘কারণ, কংগ্রসের তখন দিন দিন অবস্থা খারাপ হচ্ছে। যদ্দিন সরকার ছিল ঠিক ছিল। ভোটে হারার পর কংগ্রসের অনেক ছোটখাট নেতাই সিপিআইএমে চলে গেল। কিন্তু ঝাড়খন্ড পার্টি তখন শক্তিশালী হতে শুরু করেছে আমাদের এলাকায়। নরেন হাঁসদার পেছনে তখন অনেক লোক। আমরা বুঝে গেলাম, সিপিআইএমের সঙ্গে লড়তে পারলে একমাত্র ঝাড়খন্ড পার্টিই পারবে। গ্রামের সব লোক নিয়ে মিটিং হল, ছোটিকে শায়েস্তা করা হবে কিনা জানতে। সবাই হ্যাঁ বলল, গ্রামে ঝাড়খন্ড পার্টির পতাকা তোলা হল।’ ... ...
একদিকে ঝাড়খন্ড পার্টি। তার পেছনে কংগ্রেস। সঙ্গে পুরনো নকশালপন্থীদের প্রত্যক্ষ সমর্থন। অন্যদিকে, সিপিআইএম। তার সামনে পুলিশ। ছ’য়ের দশকের শেষে যে লড়াই শুরু হয়েছিল জমি রক্ষার এবং দখলের, তাই ১৯৭৭ সালে রাজ্যে সিপিআইএমের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার গঠনের কয়েক বছরের মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক লড়াইয়ে কনভার্ট করে গেল। প্রথমে জমির লড়াই, তারপর রাজনৈতিক লড়াই, আর এই দুইয়ের যোগফলে শুরু হল হিংসার রাজনীতি। হত্যা-পাল্টা হত্যা। ... ...
একদিন সন্ধ্যায় জামবনিতে ঝাড়খন্ড পার্টির এক কর্মী খুন হলেন। প্রায় মাঝরাতে মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারল পুলিশ। পরদিন সকাল থেকে এই নিয়ে উত্তেজনা পুরো জামবনি, বিনপুরে। সকালে অফিসে কিছু কাজ ছিল। তা শেষ করে দুপুরে মেদিনীপুর শহর থেকে রওনা দিলাম জামবনির উদ্দেশে। রাস্তায় যেতে যেতেই ওয়্যারলেসে খবর পেলাম বুদ্ধ ভকতের গুলি লেগেছে। তাঁকে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে মনে হল, পরিস্থিতি আজ হাতের বাইরে চলে যাবে। আগের রাতে ঝাড়খন্ডি খুন। আর তার বদলায় আজ বুদ্ধ ভকত গুলিবিদ্ধ! বুদ্ধদেব ভকত তখন বিনপুরের সিপিআইএম বিধায়ক। ... ...
সেদিনই বিকেলে কিষেণজির নেতৃত্বে মাওবাদীদের সঙ্গে আমাদের প্রথম এনকাউন্টার। বিকেল ৫টা নাগাদ। জঙ্গলে যে ফোর্স লুকিয়ে অপেক্ষা করছে তা কিষেণজি আন্দাজ করতে পারেননি। দূর থেকে মাওয়িস্টদের মুভমেন্ট আন্দাজ করে পুলিশ গুলি চালায়, প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ওরাও পালটা গুলি চালায়। কিষেণজিদের বেশ কিছুটা পেছনে মাওবাদীদের আরও একটা দল ছিল। সেটা আমাদের জানা ছিল না। কিষেণজি পেছনের দলটাকে নির্দেশ দেন, পুলিশকে অ্যাটাক করতে। ... ...
সন্ধে ছ’টা-সাড়ে ছ’টা বাজে। অফিসে বসে আছি। মানে, সেই সময়ের স্টার আনন্দ (পরবর্তীকালে এবিপি আনন্দ) অফিসে। হঠাৎ খবর এল, ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি এলাকায় পুলিশের কনভয়ে হামলা চালিয়েছে মাওবাদীরা। কয়েক মিনিটের মধ্যে খবরের গুরুত্ব বেড়ে গেল এক ধাক্কায়। প্রাথমিকভাবে জানা গেল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার অজয় নন্দের কনভয়ে হামলা হয়েছে। ... ...
আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা করলেন না সুচিত্রা মাহাতো এবং মঙ্গল। নেতার নির্দেশ। গুলি ছুঁড়তে, ছুঁড়তেই জঙ্গলের ভেতরে দৌড়লেন সুচিত্রা, সঙ্গে মঙ্গল মাহাতো। আলাদা দিকে দু’জনে। ঘাড় ঘুড়িয়ে একবার দেখলেনও না কিষেণজি। একটা ম্যাগাজিন শেষ। এ কে ৪৭ রাইফেলে নতুন ম্যাগাজিন ভরলেন তিনি। ফের শুরু করলেন এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে। কাউকে দেখতে পাচ্ছেন না। জওয়ানরা কিন্তু জঙ্গলের ভেতরে আলাদা আলাদা জায়গায় পজিশন নিয়ে নিয়েছেন ততক্ষণে। ঘিরে ফেলেছেন কিষেণজিকে। একজনের রেঞ্জের মধ্যে চলে এলেন তিনি। ব্যাস...। নিজের এ কে ৪৭ রাইফেলে সেকেন্ড ম্যাগাজিনটা শেষ করতেও পারলেন না। আধা সামরিক বাহিনীর ট্রেনড জওয়ানদের পরপর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে গেল শরীরটা। ধুপ করে একটা শব্দ হল শুধু। ... ...
‘স্যার, কিষেণজি ১০-১২ জনের দল নিয়ে কুশবনির জঙ্গলে ঢুকেছে।’ খবরটা এল ঝাড়গ্রামে সিআরপিএফের ১৮৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের অফিসে। এক লাইনের ইনফর্মেশন। সিআরপিএফের এক অফিসারের কাছে ফোনটা এল বিনপুরের একটা গ্রাম থেকে। যিনি টেলিফোনটা করলেন, তিনি তাঁর নাম বললেন না। সিআরপিএফের অফিসারকে শুধু বললেন, ‘স্যার, আমি নিজে দেখেছি। কিষেণজি ১০-১২ জনের একটা দল নিয়ে কুশবনির জঙ্গলে ঢুকেছে।’ ... ...