নিথর থেমে থাকা রাস্তা দিয়ে শববাহী গাড়ির আনাগোনা আজকাল বড়ো বিচলিত করে। মৃত মানুষের লাশে ভেসে ওঠা সরযূ নদীতীরে রামমন্দিরের ভূমিপুজো হয়, ঐতিহ্যবাহী হাজিয়া সোফিয়াকে রাতারাতি মসজিদে পরিণত করে দেওয়া হয়, তার দেয়ালে জিশুকে নিয়ে আঁকা ফ্রেস্তকোগুলো কাপড় দিয়ে ঢাকা পড়ে যায় জুম্মা বারের প্রার্থনার সময়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যস্ত ভূমিপূজায় আর প্রেসিডেন্ট এরদোগান প্রার্থনায়। কোন্ দিকে যাচ্ছে পৃথিবী। ধর্মীয় অন্ধত্বের দিকে চলছে সবকিছু, যাকে করোনা ভাইরাসের মতো মহামারিও আটকাতে পারছে না। এত তীব্র, প্রকট, সবল তার হাত। আমরা বোকার মতো সাক্ষী হয়ে থাকছি। এত কিছুর মাঝখানে মানুষ মরছে, খেতে না পেয়ে, চিকিৎসা না পেয়ে, আত্মহত্যা করে। তাতে রাষ্ট্র নামক যন্ত্রটির কী? সে তো ব্যস্ত মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়তে অথবা কোথাও মিউজিয়ামকে মসজিদে পরিণত করতে। বোসফোরাস, সরয়ূ মিলেমিশে একাকার ধর্মের নামে।
ভারতবর্ষ, ইস্তানবুল কাউকেই আর চেনা যাচ্ছে না। ২০১৮ সালে যখন গিয়েছিলাম তখন আমার ট্যুর গাইড ছিল আলি। হাজিয়া সেফিয়ার ইতিহাস বর্ণনা করছিলেন তিনি। প্রতিটি ছবির বিশ্লেষণ শুনছিলাম ওর মুখ থেকে। এই আলিই বলছিলেন যে কিছুদিন আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে এখন গাইডের কাজ করছেন। একটি বিখ্যাত মিডিয়া সংস্থার সেকেন্ড হেড ছিলেন উনি, কিন্তু সরকার-বিরোধী মানুষ, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন। চাকরি থেকে তাড়াবেই, বাকস্বাধীনতা নেই, যা বলবেন প্রেসিডেন্ট সেই মতো চলতে হবে মিডিয়াকেও। তাই চাকরিও ছাড়লেন। তারপর গাইড হিসেবে কাজ করেন। চেষ্টা করেন নিরপেক্ষভাবে ইস্তানবুলের ইতিহাসকে তুলে ধরার। সেই আলি আজ থেকে দু-বছর আগেই আমার বিস্ফারিত চোখ দেখে ভবিষ্যতবাণী শুনিয়েছিলেন যে কতদিন এই সরকার হাজিয়া সোফিয়াকে মিউজিয়াম থাকতে দেবে ওনার সন্দেহ আছে, চর্চা চলছে মসজিদ বানিয়ে ফেলার। ওঁর কথাই সত্যি হল। হায় রে ধর্ম!
আমরা কীরকম ভুলে গেলাম ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার ঘটনা, ভুলে গেলাম হাজিয়া সোফিয়ার ইতিহাস। শুধু ধর্মের নামে ধ্বংসলীলায় মাতল মানুষ। একেও কি সভ্যতা বলব? যে-কোনো দেশের দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছে এই উগ্র সাম্রাজ্যবাদী ধর্মবিশ্বাসী শক্তির উত্থান, যার ফলে খুন হতে হয় জর্জ ফ্লয়েডেকে, যার ফলে বেকার হয়ে যেতে হয় অজস্র মানুষকে, যার ফলে লেবাননে সাংঘাতিক বিস্ফোরণে মানুষ মরে যায়। কিন্তু ভূমিপূজো থেমে থাকে না। জুম্মার নমাজের জন্য সান্তা সোফিয়ার দ্বার খুলে যায়। কী অদ্ভুত এক সমাপতন। ধর্ম এদের অন্ধ করে দিয়েছে। তারা সেই অন্ধত্বের দূরবিন দিয়ে দেখছে সমাজকে, তৈরি করছে সমাজ চালানোর দৃষ্টিভঙ্গি। এর চেয়ে বেশি আর কী আশা করা যায় ওদের কাছে। যত বেশি আপনি ধর্মে মেতে থাকবেন, তত আপনি বুঝতে পারবেন না, আপনার শিক্ষানীতি পালটে যাবে, আপনার সমস্ত সরকারি দপ্তর একে একে বেচে দেওয়া হবে বেসরকারি স্তরে, শেষ অবধি একদিন দেখা যাবে সবাই বিক্রি হয়ে গেছেন আপনারা, কিন্তু আপনি ঘণ্টা বাজিয়ে বেশ পুজো-টুজো করছেন। আপনার চোখে ঠুলি পরিয়ে রামরাজত্ব চালানো।
পরপর অনেক ঘটনাই এমন ঘটে চলেছে, যা এই পরিস্থিতিতেও মানুষকে পথে নামতে বাধ্য করছে। ভাইরাস, তা সংক্রান্ত মৃত্যু—তাকে উপেক্ষা করেই। যেমন তুরস্কের ২৭ বছরের তরুণী ছাত্রীর খুন হওয়া। এই দেশটার প্রতি আমার গভীর প্রেম সে কেমাল বে আর ফুসুনের হাত ধরেই হোক বা ফর্টি রুলস অফ লাভ-এর জন্যই হোক। প্রাচ্য-পাশ্চাত্যকে মিলিয়ে হাজার হাজার বছরের ইতিহাসের ভাঙচুরের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র এসেছিল এই দেশে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন কামাল আতাতুর্ক, যা তৈরি করেছিল আধুনিক তুরস্কের। আজকে তা হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। রাষ্ট্র যা চাইবে, সেভাবেই চলবে সবকিছু। ধর্মীয় গোঁড়ামিকে যতই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে, ততই সে সমাজের মধ্যে মানুষে মানুষে বিভেদ জাতপাত, লিঙ্গবৈষম্য তৈরি করবে। তার জড় ছড়িয়ে পড়বে আরও অনেক দূর পর্যন্ত। গুলতেকিনের মৃত্যুর পর আমাদের কাছে উন্মোচিত হয়েছে লিঙ্গবৈষম্যের সেই দিকটি, বিশেষ করে তা থেকে কীভাবে তৈরি হচ্ছে গার্হস্থ্য হিংসার। এই ঘটনাটার দিকে যদি একটু নজর করি তাহলে দেখব যে সে তার প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে খুন হল। ১৬ জুলাই দুপুর ৩ টের পর থেকে তার ফোন বন্ধ ছিল। পরিবারের তরফ থেকে মিসিং ডাইরি করা হয়। পাঁচদিন বাদে তার দেহ মেলে এক অরণ্যের ভেতরে। একটি লোহার বিনের মধ্যে অর্ধেক পোড়া অবস্থায়। কী সাংঘাতিক ও মর্মান্তিক। তাকে খুন করা হয়, কারণ সে তার প্রাক্তন প্রেমিক, বিবাহিত এবং এক সন্তানের বাবা, যেটা জানার পর এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসে কিন্তু কেমাল মেটিন তাকে ছাড়তে চায় না। একটা মেয়ে কি কখনও স্বাধীনভাবে বেরিয়ে আসতে পারে তার পার্টনারের সম্মতি ছাড়া। তার জেরেই এই খুন। ছেলেটি পরে স্বীকার করেছে সেই রাগের বশবর্তী হয়ে এই খুন। টেস্টিমনিতে সে আরও বলেছে যে প্রাক্তন প্রেমিকাই এই ঘটনার জন্য দায়ী, কারণ বিবাহিত জানার পর থেকে ওকে আর বউকে ব্ল্যাকমেইল করতে চেষ্টা করেছে। ও মারতে চায়নি। লক্ষ্মী মেয়ে হয়ে থাকলে তো মারত না। কী অপূর্ব যুক্তি! একে অনেকেই পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা বলছেন। ঘটনাটির ধারাবাহিকতা বিশ্লেষণ করলে তাই মনে হচ্ছে।
গুলতেকিনের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে সমাজে মেয়েদের অবস্থান কোথায়। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে ২০১৩ থেকে শুরু করে ২০১৯ অবধি কতজন মেয়ে মারা গেছে ফেমিসাইডের শিকার হয়ে। একটি উইমেন আ্যক্টিভিস্ট বডি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২০১৩-তে ২৩৭, ২০১৪-তে ২৯৪, ২০১৫-তে ৩০৩, ২০১৬-তে ৩২৮, ২০১৭-তে ৪০৯, ২০১৮-তে ৪৪০, ২০১৯-তে ৪৭৪। ২০২০-তে কোভিড লকডাউন, পরিস্থিতি আরও জটিল হল। তাই এখনই বলা যাচ্ছে না কত মহিলা এর শিকার। আপাত ঝকঝকে চেহারার তুরস্কে মনেই হয় না ভেতরে ভেতরে এতটা পচে গলে গেছে রাষ্ট্রব্যবস্থা, যার শিকার সবচেয়ে বেশি মহিলারা। আমার নিজের সঙ্গে ঘটে-যাওয়া কয়েকটা ঘটনা মনে পড়ছে আজ বেশি করে। ইস্তানবুল শহরে আমার চেনা মেয়ে মার্ভে। সেও খুব সরকার-বিরোধী, খোলামেলা মনের। মার্ভে তার এক বন্ধুর বিয়েতে নিয়ে যায় আমাকে। আমার পোশাক ছিল একটা স্লিভলেস টপ আর স্কার্ট ওপরে বিয়েবাড়ির জন্য বেনারসি স্কার্ফ। বেশ সুন্দর সাজানো-গোছানো একটা বড়ো হল। স্টেজে আধুনিক পোশাকে বর ও বউ। একটু বাদে লক্ষ করলাম বিয়েবাড়ির অন্য অতিথিদের কাছে আমি দ্রষ্টব্য, ভাবলাম অন্য দেশ থেকে এসেছি বলে বোধহয়, পরে জানলাম তা নয়। স্লিভলেস পরার চল মেয়েদের মধ্যে প্রায় নেই। তার ওপর কোনো অনুষ্ঠানে তো নয়ই। বড়ো বেমানান। মার্ভে বলেছিল, সে নিজে এসব বিশ্বাস করে না বা মানতে চায় না। তাই আমাকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি। আজ ভাবছি ঘটনাগুলোর সূত্রপাত তো এখান থেকেই হয়। ঠিক যেমন আমাদের এখানেও। খোলামেলা পোশাক পারলে রেপ করে দেওয়া যায়, কারণ মেয়েটির দায় শরীর ঢেকে রাখার। সমাজের কোনো দায় নেই তাকে সুরক্ষা দেওয়ার। নানারকম খবর ঘাঁটতে ঘাঁটতে যা পরিসংখ্যান উঠে আসছে, তাতে শিউরে উঠতে হয়। গার্হস্থ্য হিংসা বা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সকে রিপোর্ট করার জন্য একটি মোবাইল আ্যপলিকেশন চালু হয়েছে সরকারিভাবে। তার নাম কাদেস (KADES), যেখানে গত দুবছরে ৩০,৬০১ টা কেস নথিবদ্ধ হয়েছে। তাও যাদের কাছে স্মার্ট ফোন আছে তাঁরাই জানাতে পারল। তার বাইরেও তো থেকে গেল কত কত মেয়ে। রিপাবলিকান পিপলস পার্টির ভাইস চেয়ারপার্সন ২০ জুলাই জানিয়েছেন, প্রতিদিন ৩৪ টি করে কেস নথিবদ্ধ হচ্ছে মোবাইল আ্যপে, যারা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার। গুলতেকিনের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে ২০০৯-এ স্টাডিটা হয়েছিল ৪২% টার্কিশ মহিলা ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে শারীরিক অথবা মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হন তার পার্টনার অথবা বরের দ্বারা, অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। উইমেন রাইটস আ্যক্টিভিস্টরা অনেকেই মনে করেছিলেন যে গত ২০ বছরে তুরস্ক যতটা উন্নতি করেছে এমনকি মেয়েদের অবস্থানের দিক দিয়েও, যেমন মেয়েরা এখন অনেক বেশি কাজ করতে যাচ্ছে, ইউনির্ভাসিটিতে পড়তে যাচ্ছে, গুলতেকিনই তো ইউনির্ভাসিটির ছাত্রীই ছিল। তার পরিবারে পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সে-ই একমাত্র পড়াশোনা করেছিল। তাহলে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার কেন হচ্ছে তারপরেও। এর পেছনেও কারণ আছে।
টার্কি দেশ হিসেবে প্রথম ২০১১-এ কাউন্সিল অফ ইউরোপে ভিক্টিম প্রোটেকশন এবং গার্হস্থ্য হিংসা কমানোর জন্য অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ একটি লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে যা, ইস্তানবুল কনভেনশন নামে পরিচিত। ২০১২ সালে তা র্যাটিফাইও করা হয়। তারপর থেকেই এই এরদোগান সরকার এই কনভেনশনের পেছনে হাত ধুয়ে পড়ে আছে, যাতে তা কার্যকরী না হয়। সরকারের মতে এই আইন পারিবারিক মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিপরীতে দাঁড়িয়ে, যা চালু হলে সামাজিক মূল্যবোধও নষ্ট হবে। একজন উইমেন আ্যক্টিভিস্ট জানাচ্ছেন এরদোগান ও তার সরকারি মন্ত্রীরা মেয়েদের প্রতি অসম্মানসূচক মন্তব্য মাঝে মাঝেই জনগণের সামনেই করে থাকেন। প্রেসিডেন্টের মত অনুযায়ী নারী কখনোই পুরুষের সমতুল্য নয়।ন্য এগিয়ে আসছে, মেনে নিচ্ছে না সরকারের জোর করে চাপিয়ে দেওয়া নিয়ম। মানছে না বলেই হাজার হাজার মেয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে মহামারির প্রকোপকে তুচ্ছ করে মহিলাদের বাঁচাতে গুলতেকিনের ঘটনার পর। তাদের দাবি ইস্তানবুল কনভেনশন অনেকদিন ধরেই ফেলে রাখা হয়েছে। একে চালু করতে হবে অবিলম্বে। না হলে একটু মাথা গরম হয়ে গেলেই ক্রোধের বশবর্তী হয়ে গুলতেকিনের প্রাক্তন প্রেমিকের মতো আরও কত প্রেমিক নৃশংস হয়ে উঠবে। সমাজের ভেতরে ঢুকে থাকা দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। যেভাবে আমাদের দেশেও পরিসংখ্যান বলছে, এই লকডাউনে গার্হস্থ্য হিংসা বহুগুণ বেড়ে গেছে। পুরুষের হতাশার বলি সবসময় একটা মেয়েই কেন হবে? আজ ২০২০-তে দাঁড়িয়েও একটা মেয়ে কেন স্বাধীনভাবে নিজের বাঁচার অধিকার পাবে না। কেন তার পার্টনার মেয়েটিকে ছাড়তে পারবে না, কেন ছেলেটির ইগো স্যাটিস্ফাই না করতে পারলে সে খুন হয়ে যাবে। এই সমস্ত প্রশ্নের মুখে আমরা প্রত্যেকটি মেয়ে আজ দাঁড়িয়ে। ইস্তানবুল, ভারতবর্ষ, দেশ-সীমানা ব্যতিরেকেই।
এত কিছু লেখার একটাই কারণ আর সেটা হল ধর্মীয় গোঁড়ামি, জাতপাত, লিঙ্গবৈষম্য এদের সহাবস্থান বড়ো মধুর। সেই মধুরেণ সমাপয়েৎ ঘটাচ্ছেন সারা বিশ্ব জুড়ে মোদী, এরদোগান, বলসেনারো, ট্রাম্প ইত্যাদি প্রভৃতিরা। ডানপন্থী শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। তারা সমাজের মধ্যে ইনজেক্ট করছে পিতৃতান্ত্রিকতার বিষকে, যার ফলস্বরূপ এত গার্হস্থ্য হিংসা। শুধু তাই নয়, মেয়েদের পড়াশোনা করতে না দেওয়া, লিঙ্গবৈষম্য বেড়ে যাওয়া, সর্বোপরি তাদের প্রাপ্য সম্মান না দেওয়া।
এই লেখা লিখতে লিখতে ইস্তানবুল শহরটা চোখের সামনে ভেসে আসছে, এখন হাজার হাজার মেয়ের ভিড়, তাদের অধিকারের দাবি করছে তারা। পূর্ব ও পশ্চিমের সংযোগস্থাপনকারী বোসফরাসের ধারে সেদিন বসেছিলাম একা। নদীর জলে ঢেউ ওঠে পড়ে। সে বহতা জীবনের মতো। লঞ্চঘাটে কত মানুষের আনাগোনা। এপার ওপার করছে। কেউ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে, কেউ ব্যাবসা করতে। হাসি হাসি মুখ সব। সূর্য একটু একটু করে ডুবছে। কমলা রঙের আভা ছড়িয়ে পড়া সেই বিকেলে দেখি ফুটফুটে একটি মেয়ে টলটল চোখে আমার পাশে বসে ফোনে কার সঙ্গে ঝগড়া করছে। ভাষা বুঝতে না পারলেও অভিব্যক্তি জানান দিচ্ছল। তারপর দেখলাম ফোন নামিয়ে রেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। কেন জানি না আজ বড়ো মনে পড়ছে ওই অজানা মেয়েটিকে। হিজাবের ভেতরে লুকিয়ে থাকা তার মায়াময় চোখ কি আমার কাছে সেদিন কোনো সাহায্য চেয়েছিল?
ধর্মীয় গোঁড়ামি, জাতপাত, লিঙ্গবৈষম্য এদের সহাবস্থান বড়ো মধুর - হক কথা।
bolistho lekhati